Announcement

Collapse
No announcement yet.

উম্মাহ নিউজ || ২২ সফর, ১৪৪৭ হিজরী || ১৭ আগস্ট, ২০২৫ ঈসায়ী​

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • উম্মাহ নিউজ || ২২ সফর, ১৪৪৭ হিজরী || ১৭ আগস্ট, ২০২৫ ঈসায়ী​

    চরম অনাহারে গাজার ১০ লাখ নারী ও শিশু



    ইহুদিবাদী দখলদার ইসরায়েলের দীর্ঘমেয়াদি অবরোধ ও বিধ্বংসী হামলার কারণে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় কমপক্ষে ১০ লাখ নারী ও কিশোরী ভয়াবহ অনাহারের মুখে পড়েছে। জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা (ইউএনআরডব্লিউএ) এর বরাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।

    ১৬ আগস্ট, শনিবার এক বিবৃতিতে সংস্থাটি জানায়, “গাজার নারী ও মেয়েরা গণঅনাহার এবং সহিংসতার শিকার হচ্ছেন। তারা জীবন বাঁচাতে ক্রমেই বিপজ্জনক কৌশল নিতে বাধ্য হচ্ছেন। তাদের খাবার ও পানি খুঁজতে বাইরে এমন স্থানে যেতে হচ্ছে যেখানে গুলি বা হামলায় নিহত হওয়ার আশঙ্কা সবচেয়ে বেশি।”

    গাজা বর্তমানে ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের মধ্যে পড়েছে। যুদ্ধের ধ্বংসযজ্ঞের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে দুর্ভিক্ষ। চলতি বছরের ২ মার্চ থেকে ইসরায়েল গাজার সব সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে। এতে সীমান্তে হাজার হাজার সহায়তা-ট্রাক আটকে থাকলেও সেগুলো প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। সীমিত আকারে যে সামান্য সরবরাহ ঢুকতে পারছে, তা লাখো ক্ষুধার্ত মানুষের চাহিদার তুলনায় অনেক কম।

    এর আগে চলতি মাসের শুরুতে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি সতর্ক করেছিল, গাজার মোট ২৪ লাখ মানুষের মধ্যে এক-তৃতীয়াংশ কয়েকদিন ধরে কোনো খাবার পাচ্ছে না।

    বিশ্বব্যাপী ক্ষুধা পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা ইন্টিগ্রেটেড ফুড সিকিউরিটি ফেজ ক্লাসিফিকেশন (আইপিসি) নিশ্চিত করেছে, গাজার কিছু অংশে, বিশেষ করে গাজা শহরে দুর্ভিক্ষের সীমা অতিক্রম করেছে। এটি এই পরিস্থিতিকে অবরুদ্ধ উপত্যকার ‘সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি’ হিসেবে বর্ণনা করেছে আইপিসি।

    ২০২৩ সালের অক্টোবরে বর্বর ইসরায়েলি আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় প্রায় ৬১ হাজার ৯০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এ আগ্রাসন গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে এবং জনগণকে দুর্ভিক্ষের কিনারায় ঠেলে দিয়েছে।

    তথ্যসূত্র:
    1. UN agency warns 1M women, girls in Gaza facing mass starvation
    https://tinyurl.com/4xt7x9z9


    নিয়মিত খবর পড়তে ভিজিট করুনঃ https://alfirdaws.org

  • #2
    রক্ষকের বেশে রক্ত খেকো সিরিয়াল কিলার জিয়াউল; সরকারি ছত্রচ্ছায়ায় ১০৩০ জনকে খুন



    ‘একজন আসামি আছে যার ব্যাপারে তদন্ত করে পেয়েছি সে মাথায় গুলি করে এক হাজার ৩০ জন মানুষকে হত্যা করেছে। গুম করে মানুষদের আয়নাঘরে রাখা হয়েছিল। তার একটা নেশা ছিল এই গুম ব্যক্তিদের হাত-পা-চোখ বেঁধে নৌকায় করে মাঝ বুড়িগঙ্গায় নিয়ে যেত। গুলি করে লাশটা নদীতে ফেলত। গুলিটা ভিকটিমের মাথার কাছে নিয়ে করত। আমি জিজ্ঞাসা করলাম-সেটা কেন? তার জবাব-গুলি করার পর নিহত ব্যক্তির মগজ ও রক্তের গরম ছিটা হাতে লাগলে দারুণ ফিলিংস অনুভব হতো।’

    কে এই ভয়ানক খুনি, কে এই সিরিয়াল কিলার? আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলামের এ বক্তব্যের সূত্র ধরে আমার দেশ অনুসন্ধান চালায়। অনুসন্ধানে জানা গেছে, এই হিংস্র খুনি বরখাস্ত সেনা কর্মকর্তা মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান। ২০০৯ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত র‌্যাবের বিভিন্ন পদে কর্মরত থাকা অবস্থায় নিজের টিম নিয়ে এই খুনগুলো করেছে সে। গুম করা ব্যক্তিকে খুন করতে সে বলতো-‘গলফ করো’।

    অর্থাৎ ওকে খুন করো। জিয়াউল আহসান এখন কেরানীগঞ্জ বিশেষ কারাগারের ধলেশ্বরী ভবনে ডিভিশনপ্রাপ্ত সেলে বন্দি আছে। টেলিফোনে জানতে চাইলে বিশেষ কেন্দ্রীয় কারাগারের জেল সুপার সায়েফ উদ্দিন নয়ন জানান, সুনির্দিষ্ট কী অপরাধে সে কারাগারে আছে তা বলতে পারছি না। তবে সে ১৫টি মামলায় (ধারা ৩০২, ৩০৭, ১০৯, ৩২৬) বন্দি আছে।

    এ সম্পর্কে অনুসন্ধান করতে গিয়ে জিয়াউল আহসানের নৃশংসতার অসংখ্য কাহিনি জানা গেছে। পলাতক শেখ হাসিনা এবং তার নিরাপত্তা উপদেষ্টা তারিক সিদ্দিকের নির্দেশেই বেশি মানুষকে গুম-খুন করেছে জিয়াউল আহসান। সে হাসিনা ও তারিক সিদ্দিকের একান্ত অনুগত ও বিশ্বস্ত ছিল। তাদের নির্দেশে গুম করে আয়নাঘরে রাখতো ভিকটিমদের। সেখান থেকে বিভিন্ন কায়দায় খুন করে লাশ গুম করে দেওয়া হতো। জিয়াউল আহসান গুম হওয়া ব্যক্তিদের যমটুপি পরিয়ে মাইক্রোবাসে করে পোস্তগোলা ব্রিজ, কাঞ্চন ব্রিজ কিংবা কাঁচপুর ব্রিজে নিয়ে গিয়ে গুলি করে লাশ ফেলে দিত শীতলক্ষ্যা ও বুড়িগঙ্গা নদীতে। একদিনে একজনকে দিয়ে ১১টি এবং আরেকজনকে দিয়ে ১৩টি খুন করারও রেকর্ড আছে। কখনো মাইক্রোবাসেই ইনজেকশন দিয়ে মেরে ফেলা হতো। এরপর লাশ রেললাইনের ওপর শুইয়ে দিতেন। ট্রেন এসে লাশ দ্বিখণ্ডিত, ত্রিখণ্ডিত করত।

    ২০১১ থেকে ২০১৫ পর্যন্ত সময়ে কমলাপুর থেকে টঙ্গি পর্যন্ত ট্রেনে কাটা যত অজ্ঞাত পরিচয়ের লাশ পাওয়া যেত, তা সবই জিয়াউল আহসানের খুন করা। বেশিরভাগ খুন করা হয়েছে বুড়িগঙ্গা ও শীতলক্ষ্যা নদীতে। একটি নির্দিষ্ট নৌকা ছিল। সেই নৌকায় করে যমটুপি পরা ব্যক্তিদের মাঝনদীতে নিয়ে টুপি খুলতো। চোখ বাঁধা অবস্থায়ই থাকত। মাথার একেবারে কাছে অস্ত্র উঁচিয়ে গুলি করতেন। ফিনকি দিয়ে রক্ত ও মগজ এসে পড়ত জিয়াউল আহসানের হাতে। তখন সে উল্লাস করতো। কখনো আবার দেখা যেত আগেই হত্যা করা লাশ নৌকায় তুলে নিচে ও উপরে সিমেন্টভর্তি বস্তার সঙ্গে বেঁধে বুড়িগঙ্গায় ফেলে দিত, যাতে লাশ পানির নিচে তলিয়ে যায়। হতভাগ্য বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলীর শেষ পরিণতিও ঘটে জিয়াউলের হাতে।

    শুধু তা-ই নয়, ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’-এর চাহিদা অনুযায়ী বিভিন্ন ব্যক্তিকে ধরে সীমান্তের ওপারে তাদের হাতে তুলে দেওয়ারও অনেক ঘটনা আছে। সিলেট সীমান্তে এমন ৭ জনকে তুলে দেওয়ার নজির একটি রেকর্ডে উল্লেখ আছে। একবার মেজর জেনারেল (অব.) তারিক সিদ্দিকের ক্যান্টনমেন্টের বাসা থেকে ৫০ কেজিরও বেশি ওজনের একটি বস্তা পাঠানো হয় জিয়াউল আহসানের বাসায়। গাড়িতে করে যিনি এই বস্তা জিয়াউলের বাসায় নিয়ে যান, তার বর্ণনায় উল্লেখ করা হয়, ‘এটি ছিল টাকার বস্তা’।

    কে এই মেজর জেনারেল (বরখাস্ত) জিয়াউল আহসান? তার চাকরিজীবন সম্পর্কে খোঁজ করে জানা গেছে, সে সেনাবাহিনীর ২৪তম লং কোর্সের কর্মকর্তা। পরিচিতি নম্বর বিএ-৪০৬০। ২০০৯ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত বাংলাদেশে যেকোনো বাহিনী কর্তৃক সংঘটিত বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গুম, আয়নাঘর, টেলিমনিটরিং ইত্যাদি সব অপরাধের চিহ্নিত অন্যতম প্রধান ব্যক্তি এই জিয়াউল আহসান। তারিক সিদ্দিকই তার প্রধান বস। সে তাকে ‘মনস্টার’ বা দানব বানিয়েছে।

    জিয়াউল আহসান ২০০৯ সালে এলিট ফোর্স হিসেবে পরিচিত র‌্যাব-২ এর টুআইসি হিসেবে যোগদান করে। লে. কর্নেল পদে পদোন্নতি পেয়ে র‌্যাব সদর দপ্তরে গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করে। ২০১৩ সালে কর্নেল পদে পদোন্নতি পেয়ে র‌্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক হয়। ওই বছরের মে মাসে শাপলা চত্বরে হেফাজতের সমাবেশে গণহত্যায় সে র‌্যাবের অভিযান পরিচালনা করে। ২০১৪ সালে নারায়ণগঞ্জে ৭ খুনের ঘটনাও তার নির্দেশনায় ঘটে। ২০১৫ সালে তিনি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পদে পদোন্নতি পায়। তাকে রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআইর পরিচালক (প্রশিক্ষণ) পদে পদায়ন করা হয়। এক বছর পর তাকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) পরিচালক করা হয়। ২০২১ সালে মেজর জেনারেল পদে পদোন্নতির পর সে এনটিএমসির মহাপরিচালক হয়।

    জিয়াউল আহসানের গুম সংক্রান্ত অপরাধ সম্পর্কে জানার জন্য যোগাযোগ করা হলে গুম কমিশনের সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, কমিশন নির্দিষ্ট কোনো ব্যক্তিকে নিয়ে নয়, সামগ্রিক গুমের তদন্ত করছে। গুম কমিশনের রিপোর্ট পর্যালোচনা করে জানা গেছে, কীভাবে গুম করা হতো, গুমের পর খুন করা হতো এবং লোমহর্ষক নির্যাতন করা হতো। গুমে ‘সুপিরিয়র কমান্ড’ ছিল শেখ হাসিনা। সে তারেক সিদ্দিকের মাধ্যমে গুমের কিংবা খুন করার নির্দেশগুলো দিত। কমিশনের রিপোর্টে বিভিন্ন কেস স্টাডি তুলে ধরা হয়েছে। সাদা পোশাকে এক বাহিনীর সদস্যরা গুম করত, প্রচার করা হতো অন্য বাহিনীর নাম। এক বাহিনীর সাদা পোশাকধারীরা তুলে নিয়ে আসত টার্গেট মানুষটিকে, হস্তান্তর করত অন্য বাহিনীর হাতে। যত গুম হয়েছে তার মধ্যে জিয়াউল আহসানের টিমই বেশি করেছে। গুমের শিকার হওয়া মানুষদের মধ্যে জিয়াউল আহসান ও তার টিম হত্যাই করেছে এক হাজার ৩০ জনকে। এজন্য বুড়িগঙ্গার পোস্তগোলা ঘাট নীরব সাক্ষী হয়ে আছে। কত মানুষকে তিনি গুম করেছে এ পরিসংখ্যান থেকেই বোঝা যায়।

    বরখাস্ত মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান শেখ হাসিনার পনেরো বছরের শাসনকালে এক মূর্তিমান আতঙ্কের নাম। শেখ হাসিনা ও তার নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল তারিক সিদ্দিক বড় বড় যত অপকর্ম করিয়েছে, তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিল জিয়াউল আহসান। অপহরণ, গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এবং রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের ফোনে আড়ি পেতে কল রেকর্ড করা সবকিছুতেই তার সংশ্লিষ্টতা ছিল। জুলাই-আগস্টের গণহত্যায়ও অভিযুক্ত হয়েছে এই কর্মকর্তা। সাবেক সেনাপ্রধান ইকবাল করিম ভূঁইয়ার (আইকেবি) লেখাতেও জিয়াউল আহসানের অপরাধের বর্ণনা রয়েছে। জিয়াউল আহসান তাকে মেরে ফেলতে পারে এমন তথ্যে তিনি আতঙ্কিত ছিলেন। একদিন সেনাপ্রধানের কার্যালয়ে বোমা আতঙ্কও দেখা দেয়।

    গুম-খুনে জড়িত জিয়াউলসহ বিভিন্ন বাহিনীর ২৩ কমান্ডারকে চিহ্নিত গুম কমিশনের

    গত পনেরো বছরে বিপুলসংখ্যক মানুষ গুমের শিকার হয়েছেন। এই গুমের সঙ্গে রাষ্ট্রের পাঁচটি বাহিনীর চিহ্নিত কিছু কর্মকর্তা জড়িত ছিল। এর মধ্যে র‌্যাবের কর্মকর্তারা ৬০ শতাংশ গুমে জড়িত ছিল। গত ৬ জানুয়ারি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গুমে জড়িত ১১ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। তাদের মধ্যে রয়েছে ছয়জন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা। পাঁচজনই ডিজিএফআইর সাবেক মহাপরিচালক ও পরিচালক। তারা হলেন- লে. জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ আকবর হোসেন, মেজর জেনারেল (অব.) মো. সাইফুল আলম, লে. জেনারেল (অব.) আহমেদ তাবরেজ শামস চৌধুরী, মেজর জেনারেল (অব.) হামিদুল হক ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) তৌহিদুল ইসলাম। অন্তর্বর্তী সরকার গুমের ঘটনাগুলো তদন্তের জন্য বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে গুমসংক্রান্ত তদন্ত কমিটি গঠন করে গত বছরের ২৭ আগস্ট। কমিশনকে ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত গুমের ঘটনা তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়। কমিশন ‘আনফোল্ডিং দ্য ট্রুথ : অ্যা স্ট্রাকচারাল ডায়াগনসিস অব এনফোর্সড ডিজঅ্যাপিয়ারেন্স ইন বাংলাদেশ’ শিরোনামে দুটি অন্তর্বর্তী রিপোর্ট প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জমা দিয়েছে। কমিশনের চেয়ারম্যান বিচারপতি মইনুল ইসলাম আমার দেশকে জানিয়েছেন, আগামী ডিসেম্বরে কমিশন গুমসংক্রান্ত চূড়ান্ত রিপোর্ট সরকারের কাছে পেশ করবে।

    গুম কমিশনের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে গুম করা হতো তিনটি ধাপে। প্রথম ধাপে ছিল ‘কৌশলগত নেতৃত্ব’। এরা হলো- ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার নিরাপত্তা উপদেষ্টা তারিক সিদ্দিক এবং পলাতক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ আওয়ামী লীগ সরকারের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা। দ্বিতীয় ধাপে ছিলেন- বিভিন্ন বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার চিহ্নিত কর্মকর্তারা। তৃতীয় ধাপে বিভিন্ন বাহিনী ও সংস্থার সদস্যরা ঊর্ধ্বতনদের নির্দেশ বাস্তবায়ন করতো। গুম কমিশন গুমের এক হাজার ৮৫০টি অভিযোগ পেয়েছে। এই অভিযোগগুলোর মধ্যে এখনো ৩৪৫ জন নিখোঁজ রয়েছেন। নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, গুম কমিশনে যারা অভিযোগ দায়ের করেছেন, এখনো তাদের অনেককে হুমকি বা ‘থ্রেট’ করা হচ্ছে। ভিকটিমরা ভয়ে আছে। এসব থ্রেট করার প্রমাণ গুম কমিশনে রয়েছে। কমিশন গুম-খুনের জন্য জিয়াউল আহসানসহ ২৩ জন কমান্ডারকে চিহ্নিত করেছে।

    জিয়াউল আহসান সম্পর্কে সাবেক সেনাপ্রধান ইকবাল করিম ভূঁইয়া

    র‌্যাবে কর্মরত থাকাকালে জিয়াউল আহসান কীভাবে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডে লিপ্ত হয়েছিল, সে সম্পর্কে লিখেছেন সাবেক সেনাপ্রধান ইকবাল করিম ভূঁইয়া। তিনি তার ফেসবুক পোস্টে ‘বিজিবি, র‌্যাব, এসএসএফ ও আনসার নিয়ে আমার যত অভিজ্ঞতা’ বিষয়ে জিয়াউল আহসানকে নিয়ে লেখেন : “যে বিষয়টি আমাকে সবচেয়ে বেশি পীড়া দিত, তা ছিল র‍্যাব-এ প্রেষণে থাকা আমাদের অফিসারদের দ্বারা সাধারণ নাগরিক, রাজনৈতিক কর্মী বা সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের অপহরণ ও হত্যা।

    তরুণ, ক্যারিয়ারমুখী অফিসারদের র‍্যাবে পাঠানো হতো, সেখানে কিছুদিন কাজ করে তারা এমন এক চরিত্র নিয়ে ফিরত, যেন তারা পেশাদার খুনি। একই প্রবণতা পরিলক্ষিত হয়েছিল জুনিয়র কমিশন্ড অফিসার (জেসিও), নন-কমিশন্ড অফিসার (এনসিও) এবং সৈনিকদের মধ্যেও। আমি সেনাপ্রধানের দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই চাইছিলাম তাদের সেনাবাহিনীতে ফিরিয়ে আনা হোক। বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীকে জানালে তিনি আমার কথায় সম্মতিসূচক ইঙ্গিত দিলেন, এমনকি বললেন জাতীয় রক্ষীবাহিনী থেকেও র‍্যাব খারাপ। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কিছুই বাস্তবে রূপ নেয়নি।

    কয়েক দিন পর আমি কর্নেল (পরে লেফটেন্যান্ট জেনারেল ও ডিজি এসএসএফ) মুজিবকে—যিনি তখন র‍্যাবের এডিজি (ADG) ছিলেন—ডেকে বলি যেন তিনি লেফটেন্যান্ট কর্নেল (এখন মেজর জেনারেল) জিয়াউল আহসানকে নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং আর যেন কোনো ‘ক্রসফায়ার’ না ঘটে। কর্নেল মুজিব এ ব্যাপারে আমাকে কথা দেন এবং বিদায় নেওয়ার সময় তাকে বেশ উদ্বিগ্ন মনে হয়। পরের কয়েক দিন পত্র-পত্রিকা লক্ষ করলাম, নতুন কোনো ক্রসফায়ারের খবর নেই—এতে মানসিকভাবে কিছুটা স্বস্তি পেলাম।

    এরপর কর্নেল মুজিব একাধিকবার আমাকে এসে জানিয়েছিলেন, সত্যিই ক্রসফায়ারের ঘটনা বন্ধ হয়েছে। কিছুদিন পর আমি বুঝতে পারি ঘটনা ঠিকই ঘটছে কিন্তু সেগুলোর খবর চাপা দেওয়া হচ্ছে। পরিস্থিতির আরো অবনতি ঘটে যখন কর্নেল মুজিব র‍্যাব ছেড়ে অন্যত্র বদলি হয়ে যান, আর কর্নেল জিয়াউল আহসান যে আগে র‍্যাবের গোয়েন্দা শাখার দায়িত্বে ছিল নতুন ডিজি বেনজীর আসার সঙ্গে সঙ্গে এডিজি র‍্যাব হিসেবে দায়িত্ব নেয়।

    এরপর আর্মি নিরাপত্তা ইউনিট (ASU) সূত্রে খবর পাই যে, কর্নেল জিয়া নিজের আবাসিক টাওয়ারে একজন গার্ড রেখেছে, বাসায় অস্ত্র রাখছে এবং পুরো ফ্ল্যাটে সিসিটিভি বসিয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে তাকে বলা হয় গার্ড সরিয়ে নিতে, ক্যামেরাগুলো খুলে ফেলতে, বাসায় অস্ত্র রাখা থেকে বিরত থাকতে এবং অফিসিয়াল কোয়ার্টারে যে সামরিক নিয়মকানুন আছে, সেগুলো মেনে চলতে।

    পরবর্তীকালে তার আচরণ আরো উচ্ছৃঙ্খল হয়ে ওঠে। ডাইরেক্টর মিলিটারি ইন্টেলিজেন্স (DMI) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জগলুল তাকে বোঝানোর চেষ্টা করেন কিন্তু তাতে কর্নেল জিয়া কোনো কর্ণপাত করেনি। পরে আর্মি নিরাপত্তা ইউনিটের (ASU) কমান্ড্যান্ট ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফজল তাকে আলাপের জন্য ডাকেন। ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফজল আমাকে জানান, জিয়ার সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে মনে হয়েছে যেন সে এমন একজনের সঙ্গে কথা বলছে যার মস্তিষ্ক পাথর বা ইটের টুকরো দিয়ে ঠাসা—বোঝানোর কোনো উপায় নেই।”

    সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল ইকবাল করিমের লেখা থেকে আরো জানা যায়, ঢাকা সেনানিবাসের গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় জিয়াউল আহসানকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছিলেন তিনি। তিনি এও লেখেন, প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেনারেল তারিক সিদ্দিক, প্রধানমন্ত্রী মিলিটারি সেক্রেটারি ও অ্যাসিসট্যান্ট মিলিটারি সেক্রেটারির সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার সুযোগে জিয়াউল আহসান তার নির্দেশকে তখন চ্যালেঞ্জ করা শুরু করে।

    এত বড় সিরিয়াল কিলার বিশ্বে নেই

    পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে কুখ্যাত ১৫ জন সিরিয়াল কিলারের কাহিনি পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, তাদের মধ্যে সর্বোচ্চ ৩০০ জনকে পর্যন্ত খুন করার ইতিহাস রয়েছে। যে তিন বা ততোধিক ব্যক্তিকে হত্যা করে অস্বাভাবিক মানসিক তৃপ্তিলাভ করে, পুলিশের ভাষায় সেই ব্যক্তি ‘সিরিয়াল কিলার’। অর্থাৎ, যে ধারাবাহিক বা একের পর এক মানুষ হত্যা করে, তাকেই সিরিয়াল কিলার বলা হয়।।

    খুনের নেশায় মত্ত থাকে সিরিয়াল কিলাররা। বিশ্বের কুখ্যাত এই সিরিয়াল কিলারদের ভয়ংকর কাহিনিকে ম্লান করে দিয়েছে কিলার জিয়াউল আহসান। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিপ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলামের বক্তব্যে এসেছে, জিয়াউল আহসান ১ হাজার ৩০ জনকে গুম-খুন করেছেন অত্যন্ত নৃশংস বীভৎসতায়। এর আগে বাংলাদেশে সিরিয়াল কিলার হিসেবে খুলনার এরশাদ শিকদার ও চাঁদপুরের রসুখাঁর কাহিনি চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছিল।

    ক্ষমতার অপব্যবহার করে দুর্নীতি, দুদকের মামলা

    শুধু গুম-খুন, নৃশংসতাই নয়, মেজর জেনারেল (বরখাস্ত) জিয়াউল আহসানের নামে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার অপব্যবহার, অনিয়ম-দুর্নীতি ও ঘুস নেওয়ার মাধ্যমে বিপুল সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। একটি সূত্রে জানা গেছে, স্ত্রী নুসরাত জাহান ও জিয়াউল আহসানের নামে-বেনামে অন্তত ৫ হাজার কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশন তাদের নামে ২৪ জানুয়ারি মামলা করেছে। তাদের ১২টি ব্যাংক হিসাবে প্রায় ৩৪২ কোটি টাকার অস্বাভাবিক লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে।

    দুদক অনুসন্ধান করে জানিয়েছে, জিয়াউল আহসান অ্যান্টিগা অ্যান্ড বারবুডার নাগরিকত্ব নিয়ে সেদেশে বিপুল টাকা বিনিয়োগ করেছে। সে দুবাই, মালয়েশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রেও বিপুল টাকা পাচার করেছেন। দুদক সূত্র জানায়, স্পেস ইনোভেশন লিমিটেড নামে জিয়াউল আহসানের স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের নামে একটি ব্যাংক হিসাবেও ২৭ কোটি ১০ লাখ টাকা লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে। এছাড়া তার দুটি প্রতিষ্ঠান এআই ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড ও এআই ল্যান্ডস্কেপ লিমিটেডের নামে ২৫ কোটি টাকার অস্বাভাবিক লেনদেনের তথ্য রয়েছে।

    তথ্যসূত্র:

    নিয়মিত খবর পড়তে ভিজিট করুনঃ https://alfirdaws.org

    Comment


    • #3
      এক বছরেও প্রকাশ করা হয়নি উপদেষ্টাদের আয় ও সম্পদের হিসাব



      ঘটনাটা অনেকটা শেখ হাসিনার মতো হলো। কারণ উনিও উনার নির্বাচনি ইশতেহারে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে, উনার পুরো যে মন্ত্রিপরিষদ হবে, তাদের তথ্য দিবেন বিত্ত-বৈভব ও আয়ের বিষয়ে এবং উনি সেটা রক্ষা করেননি, এমন মন্তব্য করেছে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।

      ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার সরকারের টানা সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে বিদেশে কত টাকা পাচার করা হয়েছে এবং এর ফলে বাংলাদেশের অর্থনীতি কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তা জনগণের সামনে তুলে ধরতে অন্তর্বর্তী সরকার যে শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি গঠন করেছিল, ভট্টাচার্য সেটির নেতৃত্ব দিয়েছিল। খবর বিবিসি বাংলার।

      সে বলছিল, আওয়ামী লীগ আমলে দলটির মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের বিরুদ্ধে যেভাবে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠতে দেখা গেছে, সেটার বিপরীতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার নজির স্থাপন করার সুযোগ ছিল ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকারের সামনে।

      ‘অনেক প্রত্যাশা ছিল যে, বর্তমান সরকার একটা নতুন নজির স্থাপন করবে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে সেটাও হয়নি, হতাশ কন্ঠে বলেছে ভট্টাচার্য।

      অথচ ক্ষমতা গ্রহণের দুই সপ্তাহের মাথায় গত বছরের ২৫ শে আগস্ট সন্ধ্যায় ইউনূস জাতির উদ্দেশে প্রথম যে ভাষণ দিয়েছিলেন, সেখানে তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে, শিগগিরই তার উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যরা নিজেদের আয় ও সম্পদের বিবরণী জনগণের সামনে প্রকাশ করবেন।

      ‘বর্তমান সরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে স্পষ্ট অবস্থান গ্রহণ করেছে। আমাদের সব উপদেষ্টা দ্রুততম সময়ের মধ্যে তাদের সম্পদের বিবরণ প্রকাশ করবেন। পর্যায়ক্রমে এটি সব সরকারি কর্মকর্তাদের ক্ষেত্রেও নিয়মিত ও বাধ্যতামূলক করা হবে, ভাষণে বলেছিলেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস।

      তার ওই ভাষণের পর উপদেষ্টাদের আয় ও সম্পদ বিবরণী প্রকাশে সরকার আলাদা করে একটি নীতিমালাও তৈরি করেছিল। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের এক বছর পর এসে দেখা যাচ্ছে, উপদেষ্টাদের কারও আয় ও সম্পদের হিসাব জনগণের সামনে প্রকাশ করা হয়নি।

      এর মধ্যেই উপদেষ্টা, তাদের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা ও পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের একের পর এক অভিযোগ উঠতে দেখা যাচ্ছে। যদিও উপদেষ্টারা অভিযোগগুলো অস্বীকার করেছেন।

      ‘কিন্তু যদি (সম্পদের তথ্য) প্রকাশ করা না হয়, তাহলে প্রশ্নটা থেকে যায় যে, কেন লুকানো হচ্ছে? কেন প্রকাশ করা হচ্ছে না? তাহলে কি লুকানোর কিছু আছে?,

      বলেন দুর্নীতিবিরোধী বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান।

      অন্যদিকে ড. ইউনূস ক্ষমতায় বসার পর তার হাতে প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান যেভাবে সুযোগ-সুবিধা পেয়েছে, সেটি নিয়ে নানান সমালোচনা ও প্রশ্ন উঠতে দেখা যাচ্ছে।

      ‘তাহলে পরিবর্তনের কী নমুনা এখানে হাজির হলো?, প্রশ্ন অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আনু মুহাম্মদের।

      দুর্নীতি-চাঁদাবাজির যত অভিযোগ

      আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে যেভাবে একের পর এক অনিয়ম, দুর্নীতি ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে বাংলাদেশে সেটির অবসান ঘটবে বলেই প্রত্যাশা করেছিলেন অনেকে।

      সাধারণ মানুষের মধ্যেও এক ধরনের প্রত্যাশা জন্ম নিয়েছিল যে, অন্তর্বর্তী সরকার দেশে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার সংস্কৃতি গড়ে তুলতে সক্ষম হবে। প্রধান উপদেষ্টা নিজেও তার প্রথম ভাষণে সেই প্রতিশ্রুতিই দিয়েছিল।

      কিন্তু গণঅভ্যুত্থানের পর এক বছর না পেরোতেই ইউনূসের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যদের বিরুদ্ধেও একই ধরনের অস্বচ্ছতা ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠতে দেখা যাচ্ছে।

      সবশেষ গত ১৩ আগস্ট (বুধবার) রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়তে দেখা গেছে, যেখানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের সাবেক এক সংসদ সদস্যের বাসায় চাঁদাবাজির ঘটনায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার জড়িত থাকার অভিযোগ তোলা হয়েছে।

      যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা উপদেষ্টা আসিফ। জানে আলম অপু নামে গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) বহিষ্কৃত যে নেতা অভিযোগটি তুলেছে তার সঙ্গে দীর্ঘদিন কোনো যোগাযোগ নেই বলেও দাবি করেছে উপদেষ্টা আসিফ।

      ‘৫ আগস্ট ২০২৪-এর পরে ওর সঙ্গে আমার কখনো দেখা হয়নি, কথাও হয় নাই এবং রিয়াদ নামে আরেকজনের কথা যে বলা হচ্ছে, তাকে আমি চিনি না এবং ওরও আমাকে চেনার কথা না। কারণ আমাদের কখনো দেখা হয় নাই, বৃহস্পতিবার এ কথা বলে আসিফ।

      সে মনে করে যে, চাঁদাবাজির ঘটনায় তার নাম জড়ানোটা ‘সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’।


      তথ্যসূত্র:


      নিয়মিত খবর পড়তে ভিজিট করুনঃ https://alfirdaws.org

      Comment


      • #4
        গাজায় বর্বর ইসরায়েলি হামলায় নিহত অন্তত ৭০, ক্ষুধা-অপুষ্টিতে মৃত্যু ১১ জনের


        গাজায় বর্বর ইসরায়েলি হামলায় একদিনে আরও অন্তত ৭০ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ২৬ জন ছিলেন ত্রাণের সন্ধানে। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বেড়ে চলা খাদ্য সংকটের মধ্যে একই দিনে অনাহার ও অপুষ্টিতে আরও ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।

        গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাতে বার্তাসংস্থাটি বলছে, গাজায় ইসরায়েলের চলমান হামলায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৬১ হাজার ৮৯৭ জনে দাঁড়িয়েছে। ১৬ আগস্ট, শনিবার আরও ৭০ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে আটটি মরদেহ। একই সময়ে আহত হয়েছেন ৩৮৫ জন। এ নিয়ে ২০২৩ সালের অক্টোবরে হামলা শুরু হওয়ার পর থেকে মোট আহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এক লাখ ৫৫ হাজার ৬৬০ জনে।

        এছাড়া শনিবার অনাহার ও অপুষ্টিজনিত কারণে আরও ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে একজন শিশু রয়েছে। এ নিয়ে দুর্ভিক্ষে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৫১ জনে, এর মধ্যে ১০৮ জনই শিশু। অবিরাম বিমান হামলার কারণে উদ্ধারকাজ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। সরঞ্জামের ঘাটতিতে সীমান্তরক্ষী ও সিভিল ডিফেন্স টিম অনেক মৃতদেহ ধ্বংসস্তূপে বা রাস্তায় ফেলে রাখতে বাধ্য হচ্ছে।


        তথ্যসূত্র:
        1. Gaza death toll nears 61,900 as Israel continues genocidal war on Palestinians
        https://tinyurl.com/3mtrmspe
        নিয়মিত খবর পড়তে ভিজিট করুনঃ https://alfirdaws.org

        Comment


        • #5
          ভারতে স্বাধীনতা দিবস বর্জন ৪ প্রদেশে, পালিত ‘কালো দিবস



          ভারতের উত্তর–পূর্বাঞ্চলে ৪ প্রদেশে দেশটির স্বাধীনতা দিবস (১৫ আগস্ট) ব্যাপকভাবে বর্জন করা হয়েছে। আসাম, নাগাল্যান্ড, মণিপুর ও অরুণাচল প্রদেশে জনগণ ঘরে অবস্থান করে দিনটিকে ‘কালো দিবস’ হিসেবে পালন করেছে।

          গত ১৬ আগস্ট ভারতীয় গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অব আসাম (উলফা), ন্যাশনাল সোশ্যালিস্ট কাউন্সিল অব নাগাল্যান্ড (এনএসসিএন) এবং মণিপুরের ‘অ্যালায়েন্স ফর সোশ্যালিস্ট ইউনিটি কাংলিপাক’সহ বড় বড় বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনগুলো জনগণকে সরকারি কর্মসূচি বর্জনের আহ্বান জানিয়েছিল।

          এ সময় আসামে নিরাপত্তা বাহিনী ২২ জনকে গ্রেপ্তার করে। অন্যান্য রাজ্যেও দমন–পীড়ন চালানো হয়। তবুও মণিপুরে ১২ ঘণ্টার সাধারণ ধর্মঘট পালিত হয় এবং দিনটিকে ‘কলোনিয়াল ফ্রিডম ডে’ হিসেবে পালন করা হয়।

          এর আগে, নাগাল্যান্ডে ১৪ আগস্ট পৃথক স্বাধীনতা দিবস উদযাপিত হয়। সেখানে গণসমাবেশে নাগা পতাকা উত্তোলন করা হয়। অরুণাচল প্রদেশের তিরাপ, চাংলাং ও লংডিং জেলায় সরকারি নিয়ন্ত্রণ দুর্বল দেখা যায় এবং সরকারি কর্মচারীদের জোর করে আয়োজনে যোগ দিতে বাধ্য করা হয়।

          রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, উত্তর–পূর্বাঞ্চলে ‘এক ভারত’ স্লোগান দুর্বল হয়ে পড়ছে। স্থানীয় জনগণ নিজেদের স্বতন্ত্র পরিচয় ও স্বাধীনতার দাবিতে ভারতের জাতীয় দিবস বর্জন করছে।

          এদিকে, জম্মু–কাশ্মীরেও ভারতের স্বাধীনতা দিবসকে ‘কালো দিবস’ হিসেবে পালন করা হয়। বিভিন্ন স্থানে কালো পতাকা উত্তোলন ও স্বাধীনতার পক্ষে স্লোগান দেওয়া হয়।


          তথ্যসূত্র:
          1. ULFA, NSCN factions call for boycott of Independence Day in Northeast
          https://tinyurl.com/5n758w4b
          2. Security Tightened In Northeast States After Boycott Independence Day Call
          https://tinyurl.com/59kfw3c6
          3. Kashmiris observe India’s Independence Day as Black Day
          https://tinyurl.com/3z2p2evz
          4. Assam Police arrest 22 Ulfa-I, NSCN-KYA cadres in July: IGP
          https://tinyurl.com/94m2udx2
          নিয়মিত খবর পড়তে ভিজিট করুনঃ https://alfirdaws.org

          Comment


          • #6
            পাকিস্তানে ভয়াবহ বন্যা, নিহতের সংখ্যা ৩০০ ছাড়ালো



            পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে টানা বৃষ্টির কারণে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যা ও ভূমিধসে মৃতের সংখ্যা ৩০০ ছাড়িয়েছে। এর মধ্যে খাইবার পাখতুনখোয়াতে সবচেয়ে বেশি প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে।

            ১৭ আগস্ট পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম জিও নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়, বন্যায় এখনো বহু মানুষ নিখোঁজ রয়েছে।

            কর্তৃপক্ষের আশঙ্কা, ভয়াবহ বন্যা এবং ভূমিধসের কারণে বুনের, সোয়াত, মানসেহরা, বাজাউর এবং বাটাগ্রামে ঘরবাড়ি, দোকানপাট এবং অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ফলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

            প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, খাইবার পাখতুনখোয়া ছাড়াও গিলগিট বালতিস্তানে ১২ জন এবং আজাদ কাশ্মিরে ১১ জন মারা গেছেন।

            প্রাদেশিক উদ্ধার সংস্থা এএফপিকে জানিয়েছে, প্রায় ২ হাজার উদ্ধারকর্মী ধ্বংসস্তূপ থেকে মৃতদেহ উদ্ধার এবং নয়টি ক্ষতিগ্রস্ত জেলায় ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনায় নিয়োজিত রয়েছেন।

            খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের বুনের জেলার বেশন্ত্রি গ্রামের বাসিন্দারা জানান, পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ ছিল যে দাফন-জানাজার জন্যও গ্রামে কাউকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। পাশের গ্রামের মানুষ এসে সহায়তা করেছেন। তারা জানান, প্রায় প্রতিটি পরিবারেই রয়েছে হতাহতের খবর।


            তথ্যসূত্র:
            1. Gandapur vows no let-up in relief efforts as PMD warns of more intense rains in KP
            https://tinyurl.com/yrf4nx2y
            নিয়মিত খবর পড়তে ভিজিট করুনঃ https://alfirdaws.org

            Comment

            Working...
            X