Announcement

Collapse
No announcement yet.

উম্মাহ নিউজ || ১২ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি || ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ঈসায়ী

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • উম্মাহ নিউজ || ১২ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি || ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ঈসায়ী

    ‘অনুশীলন’ হিসেবে গাজার ছেলেদের গোপন অঙ্গকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় বর্বর ইসরায়েলি সেনারা



    দিনে দিনে নৃশংসতার সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে দখলদার ইসরায়েলি সেনারা। বেসামরিকদের লক্ষ্য করে প্রতিনিয়তই বাড়ছে হত্যাযজ্ঞ। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. নিক মেনার্ড গাজায় ফিলিস্তিনি ছেলেদের ওপর গুলিবর্ষণকে ইসরায়েলি সেনাদের “ইচ্ছাকৃত লক্ষ্যবস্তু অনুশীলন” হিসেবে বর্ণনা করেছেন। ৫ সেপ্টেম্বর, শুক্রবার এ খবর জানিয়েছে আল জাজিরা।

    গাজায় ফিলিস্তিনি ছেলেদের গুলিবর্ষণের ক্ষত সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে ওই চিকিৎসক বলেন, অনেক ছেলেই এমন আঘাত নিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে যা স্পষ্টতই তাদের গোপন অঙ্গকে/অণ্ডকোষে লক্ষ্য করে গুলি করার কারণে হয়েছে।

    এদিকে গাজায় বরাবরের মতো থেমে নেই ইসরায়েলি সেনাদের বর্বর আগ্রাসন। শুক্রবার ভোর থেকে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় শুধু গাজা সিটিতেই অন্তত ৩০ জনসহ মোট ৪৪ ফিলিস্তিনি শহীদ হয়েছেন বলে চিকিৎসা সূত্রে আল জাজিরাকে জানানো হয়। এর মধ্যে অন্তত সাতজন শিশু রয়েছে।

    শহর দখলের জন্য বৃহৎ পরিসরে চালানো অভিযানে দখলদার ইসরায়েলি সেনারা বাস্তুচ্যুত পরিবারদের অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতেও হামলা চালাচ্ছে।

    শুধু গাজা সিটি নয়, মধ্য গাজার নুসাইরাতের অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রেও বর্বর ইসরায়েলি হামলায় বহু প্রাণহানি ঘটেছে। সেখানে উম্মে নাবিল আল-আইশ তার একাধিক আত্মীয়কে হারিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘তারা আমাদের না খাইয়ে রাখে, পানি থেকে বঞ্চিত করে, ঘরছাড়া করে এবং সন্তানদের হত্যা করে—আর বিশ্ব শুধু দেখছে।’


    তথ্যসূত্র:
    1. Palestinian boys shot in testicles as “target practice”
    https://tinyurl.com/u5p2hkta
    নিয়মিত খবর পড়তে ভিজিট করুনঃ https://alfirdaws.org

  • #2
    প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গানের শিক্ষক নিয়োগের সরকারি সিদ্ধান্ত- প্রজন্ম ধ্বংসের কৌশলগত ষড়যন্ত্রের অংশ: প্রতিবাদ আলেম-উলামার



    গত ২৮ আগস্ট, ২০২৫ তারিখে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধিনস্ত প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা-২০২৫’ নামে একটি প্রজ্ঞাপন গেজেট আকারে প্রকাশ করে। যাতে দেশের সকল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (প্রাইমারি স্কুল) এর জন্য ‘সহকারি শিক্ষক (সঙ্গীত)’ নামে আলাদা একটি পদ সৃষ্টি করা হয়েছে। তার সাথে ‘তৃতীয় লিঙ্গ’ কোটার মাধ্যমে ট্রান্সজেন্ডারদের শিক্ষক পদে নিয়োগের সুযোগ তৈরি করা হয়েছে।

    অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উক্ত বিতর্কিত সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছেন দেশের শিক্ষানুরাগী আলেম-উলামা ও সচেতন নাগরিক সমাজের নেতৃবৃন্দ। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গানের শিক্ষক নিয়োগের এই সরকারি প্রজ্ঞাপনকে সংস্কৃতি ও শিক্ষার নামে এক ধরনের কৌশলগত ষড়যন্ত্র হিসেবে অবিহিত করছেন তারা।

    আলেম-উলামা ও রাজনৈতিক অঙ্গনের নেতৃবৃন্দের অভিযোগ, এ উদ্যোগের মাধ্যমে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানদের ধর্মীয় মূল্যবোধ, সংস্কৃতি ও আত্মপরিচয়কে ধীরে ধীরে ধ্বংস করে দেয়ার প্রচেষ্টা চলছে। বিশেষত বিদেশি এনজিওপন্থী মহল দীর্ঘদিন ধরে যে ইসলামবিরোধী ধারা শিক্ষা ব্যবস্থায় প্রবেশ করানোর চেষ্টা করে আসছে, এ সিদ্ধান্তকে তারই অংশ হিসেবে দেখছেন তারা।

    তাদের মতে, গান শেখানোর পরিবর্তে শিশুদের নৈতিক ও ধর্মীয় শিক্ষায় শিক্ষিত করার জন্য প্রতিটি বিদ্যালয়ে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগই এখন সময়ের দাবি। কারণ ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মানসিক, আধ্যাত্মিক ও চারিত্রিক উন্নতির জন্য ধর্মীয় শিক্ষাই সবচেয়ে জরুরি ভিত্তি হতে পারে। তাই এই নিয়োগ প্রজ্ঞাপন দ্রুত বাতিলের আহ্বান উঠেছে সর্বমহল থেকে।

    প্রখ্যাত ইসলামিক স্কলার ও আস সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শায়খ আহমাদুল্লাহ হাফিযাহুল্লাহ অন্তর্বর্তী সরকারের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে সরকারের প্রতি প্রশ্ন রেখেছেন, “কাদের খুশি করার জন্য গানের শিক্ষক নিয়োগে প্রজ্ঞাপন জারি করা হলো?”



    তিনি আরও বলেন, ‘প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বিশেষায়িত ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হোক, এটা বহুকাল ধরে গণমানুষের প্রাণের দাবি ছিল। সেই দাবি আজও বাস্তবায়িত হয়নি। অধিকাংশ অভিভাবক চায়, বিদ্যালয়ে যেন তাদের সন্তানকে গান শেখানো না হয়। এদেশের প্রায় সকল অভিভাবক সন্তানের জন্য প্রাইভেট ধর্মীয় শিক্ষক রাখেন কিংবা সন্তানকে মক্তবে পাঠান। সরকার যদি স্কুলে বিশেষায়িত ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ দিত, তাহলে অভিভাবকদের এই বাড়তি খরচ ও ঝামেলা পোহাতে হতো না। শিক্ষার্থীদেরও সময় বেঁচে যেত।



    জনপ্রিয় দ্বায়ী ড. মিজানুর রহমান আজহারী বলেন, ‘মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এই দেশে প্রাথমিক স্তরে ইসলাম শিক্ষার জন্য বিশেষায়িত ধর্মীয় শিক্ষক নেই। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক। অথচ সংগীতের মতো বিষয়কে প্রাধান্য দিয়ে ডেডিকেটেড শিক্ষক নিয়োগ স্পষ্টতই জন আকাঙ্ক্ষা পরিপন্থী। আমরা আমাদের সন্তানদের বিশ্বাস ও মূল্যবোধের নিরাপত্তা চাই।’



    ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলম বলেন, ৯২ ভাগ মুসলমানের দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে সংগীতবিষয়ক শিক্ষক নিয়োগ জনআকাঙ্ক্ষা পরিপন্থী। অথচ বছরের পর বছর ধরে প্রাইমারি স্কুলগুলোতে একজন আরবী/নূরানি শিক্ষক নিয়োগের জন্য দেশের উলামায়ে কেরাম দাবি করে আসছেন।

    তিনি আরও বলেন, এ বিষয়টি চরম উদ্বেগজনক। সরকার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ইসলাম ধর্ম শিক্ষক নিয়োগে এদেশের অভিভাবকদের দীর্ঘদিনের দাবিকে উপেক্ষা করে, অযাচিতভাবে সংগীত শিক্ষক নিয়োগের ঘোষণা প্রদান করেছে। আমরা এই অবিবেচনাপ্রসূত সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।



    জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সভাপতি শাইখুল হাদিস মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক ও মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী বলেছেন, শিক্ষা একটি আদর্শিক ও মূল্যবোধসম্পন্ন খাত। এখানে ইসলাম ও বাঙালির আত্মপরিচয়ের বিপরীতমুখী উপকরণ সংযোজন সংবিধান, দেশের সংস্কৃতি ও সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের অনুভূতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

    নেতৃদ্বয় আরও বলেন, “ইসলামি সংস্কৃতিবিরোধী এই সিদ্ধান্ত ইসলামপ্রিয় জনতা কোনোভাবেই মেনে নেবে না। দেশের লক্ষ লক্ষ প্রাথমিক শিক্ষার্থীকে নৈতিকতা, ইসলামি মূল্যবোধ ও চরিত্র গঠনের শিক্ষার পরিবর্তে গান-বাজনার মাধ্যমে মন ও মানসিকতা ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে।”

    এদিকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সঙ্গীত শিক্ষক নিয়োগ এবং কোটার ভিত্তিতে তৃতীয় লিঙ্গদের মানুষদের শিক্ষক হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে মূল্যবোধ আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ।



    গত ৩ সেপ্টেম্বর সকাল ১১টায় রাজধানীতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে সংগঠনের বক্তারা এ প্রতিবাদ জানান। এতে সভাপতিত্ব করেন সাবেক সচিব রুল আলম। লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মূল্যবোধ আন্দোলনের আহ্বায়ক ড. মোহাম্মদ সরোয়ার হোসেন।

    লিখিত বক্তব্যে ড. মোহাম্মদ সরোয়ার হোসেন বলেন, আমরা গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি যে, সরকার একদিকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ইসলাম ধর্ম শিক্ষক নিয়োগে জনগণের দীর্ঘদিনের দাবিকে উপেক্ষা করে অযাচিতভাবে সংগীত শিক্ষক নিয়োগের ঘোষণা প্রদান করেছে, অন্যদিকে কোটার ভিত্তিতে তৃতীয় লিঙ্গ তথা (সমকামী) ট্রান্সজেন্ডারদের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। জন্মগত লিঙ্গ প্রতিবন্ধী বা হিজড়াদের সাথে আমাদের কোন বিরোধ নাই। কিন্তু, অসংজ্ঞায়িত ‘তৃতীয় লিঙ্গ’ কোটার মাধ্যমে ‘ট্রান্সজেন্ডার’ বা সমকামীদের সুযোগ প্রদান করা হবে বলে আমরা আশঙ্কা করছি এবং অবিবেচনাপ্রসূত এই সরকারি সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।

    তিনি আরও বলেন, গত ৬ অক্টোবর ২০২৪ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. শহিদুল ইসলাম মিলন দেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ধর্মীয় শিক্ষকের পদ সৃষ্টি করে নিয়োগ দেওয়ার ব্যবস্থা নিতে সরকারকে আইনি নোটিশ পাঠান। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব, জনপ্রশাসন সচিব, অর্থ সচিব এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে এ নোটিশ পাঠানো হয়। বিগত এক বছরেও সরকার এই বিষয়ে কোন উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। অথচ সাম্প্রতিক গেজেট অনুযায়ী সরকারি নিয়োগে ১% কোটা শারীরিক প্রতিবন্ধী ও ‘তৃতীয় লিঙ্গ’ প্রার্থী তথা সমকামীদের জন্য সংরক্ষণ করা হয়েছে।

    তিনি বলেন, আমরা মনে করি, মৌলিক শিক্ষায় যখন ভয়াবহ ঘাটতি, তখন সংগীতের শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া শিক্ষানীতির সাথে সাংঘর্ষিক এবং অগ্রাধিকারভিত্তিক জাতীয় স্বার্থবিরোধী। উল্লেখ্য, ইসলামে বাদ্যযন্ত্রের ব্যবহার নিষিদ্ধ হওয়া সত্ত্বেও ৯২% মুসলিমের ট্যাক্সের টাকায় তাদের সন্তানদের বাধ্যতামূলকভাবে সংগীতের নামে বাদ্যযন্ত্রের ব্যবহার শেখানো রাষ্ট্রের উগ্র ইসলামবিদ্বেষী সাম্প্রদায়িকতারই বহিঃপ্রকাশ। বাংলাদেশের ৯২% মুসলিম জনগোষ্ঠী থাকা সত্ত্বেও প্রাথমিক স্তরে ইসলাম শিক্ষার জন্য নির্দিষ্ট শিক্ষক নেই। অথচ সংগীতের মতো বিষয়কে প্রাধান্য দিয়ে শিক্ষক নিয়োগ স্পষ্টতই জাতীয় চাহিদা ও সাংস্কৃতিক বাস্তবতার সাথে অসামঞ্জস্যপূর্ণ।

    ড. মোহাম্মদ সরোয়ার হোসেন আরও বলেন, তৃতীয় লিঙ্গ কোটার মাধ্যমে (যার আইনগত সংজ্ঞাও এখনো অস্পষ্ট) শিক্ষাব্যবস্থায় সমকামিতার মতো সামাজ ও ঈমানবিধ্বংসী এজেন্ডার অনুপ্রবেশ ঘটানো হচ্ছে। এটি শিক্ষাক্ষেত্রে নতুন দ্বন্দ্ব ও বিভাজন তৈরি করবে।

    দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা মূল্যবোধ আন্দোলনের পক্ষ থেকে জোর দাবি জানাচ্ছি, প্রাথমিক স্তরে বাংলা, ইংরেজি ও গণিত শিক্ষার মানোন্নয়নকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হোক। ইসলামিক শিক্ষার জন্য নির্দিষ্ট শিক্ষক নিয়োগ নিশ্চিত করা হোক। দেশের ৬৫ হাজার ৫০০ এর বেশী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংগীত শিক্ষক নিয়োগ বাতিল করে মৌলিক বিষয়গুলিতে দক্ষ শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হোক। সরকারি নিয়োগে বিতর্কিত তৃতীয় লিঙ্গ কোটা বাতিল করা হোক। জাতির ভবিষ্যৎ প্রজন্মের শিক্ষা ও চরিত্র গঠনের স্বার্থে অবিলম্বে এই দাবিসমূহ মেনে নেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।

    অন্যদিকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ধর্ম শিক্ষক নিয়োগ না দিয়ে বরং জনগনের ধর্মীয় অনুভূতিকে উপেক্ষা করে গানের শিক্ষক নিয়োগের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে ইন্তিফাদা বাংলাদেশ।



    ৫ সেপ্টেম্বর গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে এ নিন্দা জানায় সংগঠনটি।

    বিবৃতিতে বলা হয়, “আমরা গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি যে, সরকার একদিকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ধর্ম শিক্ষক নিয়োগে জনগণের দীর্ঘদিনের দাবিকে উপেক্ষা করেছে, অন্যদিকে সংখ্যাগরিষ্ট জনগনের ধর্মীয় অনুভূতিকে উপেক্ষা করে সংগীত শিক্ষক নিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে। একই সাথে ‘তৃতীয় লিঙ্গ’ কোটার মাধ্যমে ট্রান্সজেন্ডারদের শিক্ষক পদে নিয়োগের সুযোগ তৈরি করে শিক্ষাক্ষেত্রে একটি বিতর্কিত সামাজিক এজেন্ডা চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে।”

    বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “দেশের প্রাথমিক শিক্ষায় যেখানে ১০% এর বেশি শিশু বাংলা পড়তে অক্ষম, ১৩% শিশু এক অঙ্কের সংখ্যা চিনতে পারে না, এবং প্রায় ১৫-১৭% শিশু ইংরেজির একটি বর্ণও পড়তে পারে না, সে প্রেক্ষাপটে মৌলিক শিক্ষা (বাংলা, ইংরেজি ও গণিত) নিশ্চিত করাই সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার হওয়া উচিত। অথচ এ অবস্থায় সংগীতকে প্রাধান্য দেওয়া জাতীয় স্বার্থবিরোধী এবং শিক্ষার প্রায়োগিক বাস্তবতার সাথে অসামঞ্জস্যপূর্ণ। বাংলাদেশের ৯২% মুসলিম জনগোষ্ঠীর দাবি উপেক্ষা করে ইসলাম ধর্মের জন্য নির্দিষ্ট শিক্ষক না রেখে সংগীত শিক্ষক নিয়োগ মুসলিম সন্তানের ধর্মীয় শিকড়কে দুর্বল করার সুস্পষ্ট প্রচেষ্টা।”

    দেশের সকল অভিভাবক ও জুমার নামাজের খতিবগণকে আহ্বান জানিয়ে সংগঠনটি বলে, “আজকের জুমার খুতবায় সম্মানিত ঈমাম সাহেবগনকে সরকার কর্তৃক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংগীত শিক্ষক নিয়োগের এই অযৌক্তিক সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে স্পষ্ট প্রতিবাদ জানানোর আহ্বান জানাচ্ছি। এ সিদ্ধান্ত মুসলিম সন্তানদের ধর্মহীনতার দিকে ঠেলে দেওয়ার চক্রান্ত। একই সাথে, আমরা দেশের অভিভাবকদের প্রতি আহ্বান জানাই-আপনারা আপনার সন্তানদের ভবিষ্যৎ ও ঈমানি পরিচয়ের প্রশ্নে সচেতন হোন। সরকারের এই হঠকারি সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ জানান এবং জনমত গড়ে তুলুন।”

    বিবৃতিতে সরকারের কাছে তিন দফা দাবি জানায় সংগঠনটি:
    ১. সংগীত শিক্ষক নিয়োগের হটকারি সিদ্ধান্ত থেকে অনতিবিলম্বে সরে আসতে হবে।
    ২. ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগের ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে।
    ৩. শিক্ষা ক্ষেত্রে বিতর্কিত সামাজিক এজেন্ডা চাপিয়ে দেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।


    তথ্যসূত্র
    ১. প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংগীত শিক্ষক নয়, ধর্মীয় শিক্ষকের দাবি জোরালো
    https://tinyurl.com/34av42zz
    ২. কাদের খুশি করতে গানের শিক্ষক নিয়োগে প্রজ্ঞাপন, প্রশ্ন আহমাদুল্লাহর
    https://tinyurl.com/mpt43vdr
    ৩. সংগীতের মতো বিষয়কে প্রাধান্য দিয়ে শিক্ষক নিয়োগ জনআকাঙ্ক্ষা পরিপন্থি : আজহারি
    https://tinyurl.com/yc6ts4zr
    ৪. সঙ্গীত ও ট্রান্সজেন্ডার শিক্ষক নিয়োগের পাঁয়তারা; তীব্র নিন্দা মূল্যবোধ আন্দোলনের
    https://tinyurl.com/d9m5x6j
    ৫. প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গানের শিক্ষক নিয়োগের ঘটনায় ইন্তিফাদা বাংলাদেশের তীব্র নিন্দা
    https://tinyurl.com/2ky663tb
    ৬. ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা-২০২৫’ – গেজেট লিঙ্ক
    https://tinyurl.com/yptcfcvb
    নিয়মিত খবর পড়তে ভিজিট করুনঃ https://alfirdaws.org

    Comment


    • #3
      ঢাকায় ঘুরতে এসে র‌্যাবের হাতে গুম দুই ইবি শিক্ষার্থী; ১৪ বছর পরেও অপেক্ষায় বাবা-মা



      গুম হওয়া অনেকেই চব্বিশের ৫ আগস্টের পর আয়নাঘর থেকে ফিরে এসেছে। ছেলে মুকাদ্দাসও ফোন করে জানাবে ‘মা আমি আসছি’। সেই বিশ্বাসে আল-মুকাদ্দাসের মা আয়েশা ছিদ্দিকা আজও কানের কাছে মোবাইল ফোন নিয়ে শুয়ে থাকেন। কিন্তু মুকাদ্দাস আসেন না।

      কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আল-ফিকহ অ্যান্ড ‘ল (এলএলবি) অনার্স ৪র্থ বর্ষের মেধাবী ছাত্র ছিল পিরোজপুর সদর উপজেলার খানাকুনিয়ারী গ্রামের অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুল হালিমের জ্যেষ্ঠ পুত্র আল-মুকাদ্দাস। তিন ভাই-বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার বড়। ছোট ভাই চট্টগ্রাম আই আই ইউ’র ছাত্র।

      ২০১১ সালের ১১ নভেম্বর একমাত্র বোন তাজরিয়ান জান্নাতের বিয়ে শেষে ১৩ নভেম্বর মুকাদ্দাস ফিরে যান তার বিশ্ববিদ্যালয়ে। তিনি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখার ছাত্রশিবিরের সাংস্কৃতিক সম্পাদক। মুকাদ্দাস ও তার বন্ধু ঝালকাঠী জেলার কাঁঠালিয়া গ্রামের ওয়ালিউল্লাহ ২০১২ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ব্যক্তিগত কাজে ঢাকায় যান।

      কাজ শেষে ৪ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ১১টায় ঢাকার কল্যাণপুর থেকে হানিফ পরিবহনের (ঝিনাইদহ-৩৭৫০) বাসে ওঠেন দুই বন্ধু। বাসের সুপারভাইজার সুমন মিয়ার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী বাসটি ছেড়ে আসার পর সাভারের নবীনগরে থামিয়ে কালো পোশাক পরিহিত র‌্যাব-৪ ও সাদা পোশাকের ৮-১০ জন ডিবি সদস্য বাসে উঠে মুকাদ্দাস ও ওয়ালিউল্লাহকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে নামিয়ে নেয়। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদের ছেড়ে দেওয়া হবে বলে একটি সাদা রঙের মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায়।

      মুকাদ্দাসের বাবা গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, বাসের সুপারভাইজার সুমন মিয়া লক্ষ্য করেছে র‌্যাবের নেতৃত্ব দেওয়া একজনের নেইম প্লেটে নাম লেখা ছিল ‘জামান’।

      ওদের বন্ধুরা জানত ৫ ফেব্রুয়ারি ভোরে তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছার কথা। কিন্তু তারা না পৌঁছায় পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারে র‌্যাব ও ডিবি পুলিশ দুজনকে তুলে নিয়ে গেছে। ৬ ফেব্রুয়ারি বন্ধুরা মুকাদ্দাসের বাবাকে ফোন দিয়ে ঢাকায় যেতে বলে।

      র‌্যাব ও ডিবি পুলিশ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে ছেলের নিখোঁজের বিষয়ে কোনো সদুত্তর না পেয়ে ৬ ফেব্রুয়ারি মুকাদ্দাসের পরিবার নিশ্চিত হয় যে, সে গুম হয়েছে এবং ওই দিনই ঢাকার দারুসসালাম থানায় জিডি (নং-৩১৭) করেন।

      মুকাদ্দাসের পরিবার তাকে হন্যে হয়ে খুঁজেছে। তার বাবা গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, তার ছেলেকে খুঁজতে র‌্যাবের এক লোক তাদের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরিয়েছে। ওই জায়গাগুলোকে তাদের কাছে মনে হয়েছে ‘আয়না ঘর’। পরিবারের কাছে মনে হয়েছে সব আয়না ঘর খুঁজতে পারলে হয়তো কোনো আলামত পাওয়া যেত। তাদের মনে হয়েছে তারা ছেলেকে আর ফিরে পাবেন না।

      র‌্যাব-১ এলাকায় খুঁজতে গিয়ে তারা দেখেন একজনকে কালো কাপড় দিয়ে মাথাসহ মুখমণ্ডল ঢেকে এক রুম থেকে অন্য রুমে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তখন তাদের মনে হয়েছে মুকাদ্দাস হয়তো ওই ক্যাম্পেই আছে। পরিবার বলেছে তাদের ছেলেকে ওখানে রেখে নির্যাতন করা হয়েছে।

      মুকাদ্দাস ও তার বন্ধু ওয়ালিউল্লাহকে ধরে কোথায় রাখল, ওরা বেঁচে আছে নাকি মেরে ফেলা হয়েছে, মেরে ফেললে কোথায় তাদের দাফন করা হয়েছে, না আদৌ দাফনের ব্যবস্থা হয়নি— স্বজনদের এসব প্রশ্নের সদুত্তর রাষ্ট্রের কেউ দিতে পারেনি।

      পুলিশ ও র‌্যাবসহ প্রশাসনের কাছে বারবার ধর্না দিয়ে, হাইকোর্টে রিট করে, এমনকি জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে প্রধানমন্ত্রী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে আকুল আবেদন জানিয়েও সন্ধান পাননি গুম হওয়া দুই শিক্ষার্থীর।

      মুকাদ্দাসের বাবা আ. হালিম জানিয়েছেন, জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের গুমবিষয়ক ওয়ার্কিং গ্রুপ বিভিন্ন সময়ে গুমের শিকার ৭৬ জনের একটি তালিকা দেয় বাংলাদেশ সরকারকে। ওই তালিকায় মুকাদ্দাস ও ওয়ালিউল্লাহর নাম থাকলেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গুমের বিষয় বেমালুম অস্বীকার করে।

      আব্দুল হালিম আরো বলেন, যারা দেশের শত শত মানুষকে গুম করেছে তাদের বিচার দেখে যেতে চান তিনি।

      গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধান ও ঘটনাগুলো তদন্তে গত বছরের ২৭ আগস্ট একটি কমিশন গঠন করেছিল অন্তর্বর্তী সরকার। এরপর নতুন করে আশার আলো দেখেন মুকাদ্দাসের বাবা-মা। হয়তো ছেলে ফিরে আসবে!


      তথ্যসূত্র:
      ১.গুম হওয়া ছেলে ফিরবে, সেই আশায় পথ চেয়ে বাবা-মা
      -https://tinyurl.com/mt5abna7
      নিয়মিত খবর পড়তে ভিজিট করুনঃ https://alfirdaws.org

      Comment


      • #4
        ‘আতঙ্কের নগরীতে’ পরিণত গাজা, একদিনেই শহীদ ৭৫



        ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় ইহুদিবাদী দখলদার ইসরায়েলের লাগাতার বোমাবর্ষণে একদিনে কমপক্ষে আরও ৭৫ জন শহীদ হয়েছেন। এর মধ্যে কেবল গাজা সিটিতেই শহীদ হয়েছেন ৪৪ জন। এদিকে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর তীব্র হামলায় গাজা সিটি পরিণত হয়েছে ‘আতঙ্কের নগরীতে’।

        টানা বোমাবর্ষণে বিধ্বস্ত হচ্ছে পাড়া-মহল্লা, প্রাণ হারাচ্ছেন বহু সংখ্যক ফিলিস্তিনি, আর আশ্রয়ের খোঁজে পালিয়েও নিরাপত্তা পাচ্ছেন না কেউ। ৫ সেপ্টেম্বর, শুক্রবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

        সংবাদমাধ্যমটি বলছে, বর্বর ইসরায়েলি বাহিনীর নির্বিচার বোমাবর্ষণে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হচ্ছে গাজা সিটির পাড়া-মহল্লা। আতঙ্কে বাড়ি ছাড়ছেন মানুষ, কিন্তু গোটা গাজা ভূখণ্ডে নিরাপদ আশ্রয় নেই। টানা ২৩ মাস ধরে চলছে এ নির্মম হামলা।

        জাতিসংঘ শিশু তহবিল ইউনিসেফ ইতোমধ্যেই গাজা সিটিকে আখ্যা দিয়েছে ‘আতঙ্কের নগরী’ বলে। ৪ সেপ্টেম্বর, বৃহস্পতিবার তাল আল-হাওয়া এলাকায় একটি তাঁবুতে ইসরায়েলি হামলায় একই পরিবারের পাঁচজন শহীদ হন, যাদের মধ্যে তিনজনই শিশু।

        গাজা সিটির জেইতুন, সাবরা, তুফাহ, নাসর ও শুজাইয়া এলাকায় ভয়াবহ বোমাবর্ষণের খবর পাওয়া গেছে। তুফাহ পাড়ায় অন্তত আটজন শহীদ ও বহু আহত হয়েছেন বলে জানান সিভিল ডিফেন্সের মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল। শুজাইয়ায় একটি আবাসিক ভবনে বিমান হামলায় দুইজন শহীদ হয়েছেন। আর জেইতুনে ধ্বংসস্তূপ থেকে আল-ঘাফ পরিবারের তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

        আল জাজিরার সাংবাদিক হানি মাহমুদ জানান, মানুষ এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় পালাচ্ছেন নিরাপত্তার খোঁজে, কিন্তু যেখানে যাচ্ছেন সেখানেও ইসরায়েলি বিমান ও গোলাবর্ষণ তাদের পিছু ছাড়ছে না। অনেকে আশ্রয় নিয়েছিলেন শেখ রাদওয়ান এলাকায়। কিন্তু সেখানে সন্ত্রাসী ইসরায়েলি ট্যাংক ঢুকে ঘরবাড়ি ধ্বংস করেছে, তাঁবুতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।

        তথ্যসূত্র:
        1. ‘City of fear’: Palestinians trapped as Israel intensifies Gaza City attack
        https://tinyurl.com/yfkz3mtp
        নিয়মিত খবর পড়তে ভিজিট করুনঃ https://alfirdaws.org

        Comment

        Working...
        X