বিয়ানীবাজারের ঘটনা: হিন্দুত্ববাদী ভয়াল থাবায় মুসলিম বোনেরা

আল ফিরদাউসের সম্পাদক মুহতারাম ইবরাহীম হাসান হাফিযাহুল্লাহ’র কলাম:
গত ১২ সেপ্টেম্বর, সিলেটের বিয়ানীবাজারে একটি হৃদয়বিদারক ঘটনা আমাদের হৃদয়কে ক্ষতবিক্ষত করেছ। সন্দিপ পাল নামে এক হিন্দু পুরোহিত, ১২ বছরের এক মুসলিম বোনকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেছে। স্থানীয় গণমাধ্যমের বরাতে জানা যায়, পুরোহিত টেইলার্স সন্দিপ পাল ভুক্তভোগী ওই মুসলিম বোনকে কাপড় দেওয়ার কথা বলে নিজের দোকানে ডেকে নেয় । তারপর জোরপূর্বক তার তাঁর হাত ও মুখ বেঁধে তাকে ধ*র্ষণ করে পুরোহিত নরপশু সন্দিপ পাল।সিসিটিভি ফুটেজ ও মেডিকেল রিপোর্ট এই ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছে। জুমার নামাজ শেষে ওই পথে যাওয়ার সময় দুই মুসল্লি ওই মুসলিম কিশোরীর চিৎকারের আওয়াজ শুনে এগিয়ে এসে দেখে দোকানের শাটার লাগানো। পরে তারা দোকানে শাটার খুলে হাতেনাতে ধরে নরপশু সন্দিপ পালকে।
কিন্তু এরপর যা ঘটেছে, তা আরও ভয়াবহ—স্থানীয় প্রভাবশালী হিন্দু গোষ্ঠী ভুক্তভোগীর পরিবারকে হুমকি দিয়ে ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে!
এই ঘটনা কি শুধু একটি বিচ্ছিন্ন অপরাধ? না, এটি হিন্দুত্ববাদীদের পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের একটি অংশ, যার লক্ষ্য মুসলিম উম্মাহকে দুর্বল করা, হিন্দুত্ববাদী অখন্ড ভারত প্রতিষ্ঠা করা।
হিন্দুত্ববাদীদের ষড়যন্ত্র: ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি
ইতিহাস সাক্ষী, হিন্দুত্ববাদী শক্তি বারবার মুসলিম নারীদের ওপর অত্যাচার চালিয়েছে। এই ঘটনা নতুন নয়। ভারতের গুজরাট দাঙ্গা (২০০২), যেখানে হিন্দুত্ববাদী জনতা মুসলিম নারীদের ওপর নির্মম ধর্ষণ ও হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল। সেই সময় মুসলিমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে আইনি ও সামাজিক লড়াইয়ের মাধ্যমে ন্যায়বিচারের জন্য সংগ্রাম করেছিল। বাংলাদেশেও এমন ঘটনা নতুন নয়। আজও এই ষড়যন্ত্র চলছে—হিন্দুত্ববাদী শক্তি মুসলিম নারীদের টার্গেট করে তাদের ইজ্জত ও সম্মান ধ্বংস করতে চায়। এই ঘটনায় সন্দিপ পালের পেছনে প্রভাবশালী গোষ্ঠীর হুমকি প্রমাণ করে যে এটি কোনো ব্যক্তিগত অপরাধ নয়, বরং একটি সমন্বিত পরিকল্পনা।
সুশীল সমাজ ও মিডিয়ার নীরবতা: এই ঘটনায় বাংলাদেশের তথাকথিত সুশীল সমাজ ও নারীবাদীদের নীরবতা হৃদয়ে দাগ কাটে। যখন অমুসলিমদের কেউ নির্যাতিত হয়, তখন এই সুশীলরা রাস্তায় নেমে আসে, মিডিয়া হৈচৈ করে, নারীবাদীরা “জাস্টিস ফর অল” স্লোগানে মুখরিত হয়। কিন্তু যখন শিকার মুসলিম কন্যা, তখন তাদের কণ্ঠ রুদ্ধ! এই নীরবতা কি প্রমাণ করে না যে তাদের নৈতিকতা দ্বিমুখী? যখন মুসলিম নারী ধর্ষিত হয়, তখন মিডিয়া বলে, “এটা তো ছোট ঘটনা!” নারীবাদীরা ভুলে যায় যে নারী অধিকার মানে সকল নারীর অধিকার, শুধু তাদের পছন্দের কেউ নয়। এই নীরবতা শুধু উদাসীনতা নয়, এটি মুসলিম উম্মাহর প্রতি ঘৃণার বহিঃপ্রকাশ।
ইসলামের ইতিহাসের দিকে তাকালে আমরা দেখি
৭১২ খ্রিস্টাব্দে হিন্দুস্তানে যখন আমাদের এক বোন হিন্দুত্ববাদীদের দ্বারা নির্যাতনের শিকার হয়েছিল তখন তার ডাকে সাড়া দিয়ে ইরাক থেকে ছুটে এসেছিলেন মুহাম্মাদ বিন কাসিম।
প্রিয় উম্মাহ, আমরা আপনাদের আহ্বান জানাই আপনারা জেগে উঠুন, সচেতন হোন, কাফেরদের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে নিজেদের হাতকে মুষ্টিবদ্ধ করুন। হিন্দুত্ববাদীদের ষড়যন্ত্রের ব্যাপারে সবাইকে সচেতন করুন।
এবং ভুক্তভোগীর পরিবারকে আইনি সহায়তা দিন এবং হিন্দুত্ববাদী ধর্ষক পুরোহিত সন্দিপ পাল কে সর্বোচ্চ শাস্তির আওতায় আনার জন্য প্রশাসনকে সর্বোচ্চ চাপ দিন।
হিন্দুত্ববাদীদের ভাগওয়া লাভ ট্র্যাপ (অর্থাৎ মুসলিম মা বোনদের বিভিন্ন কৌশলে যৌন নির্যাতন) সম্পর্কে ব্যাপক আকারে প্রচার-প্রচারণা চালান।
হিন্দুত্ববাদীদের ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রের এবং অপকর্মের ব্যাপারেও সামাজিকভাবে রুখে দাঁড়ান।
Comment