Announcement

Collapse
No announcement yet.

উম্মাহ নিউজ || ১৯ রবিউল আখির, ১৪৪৭ হিজরি || ১২ অক্টোবর, ২০২৫ ঈসায়ী​​

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • উম্মাহ নিউজ || ১৯ রবিউল আখির, ১৪৪৭ হিজরি || ১২ অক্টোবর, ২০২৫ ঈসায়ী​​

    আ.লীগ নেতার সুপারিশে চাকুরি পেয়ে ‘পত্রিকার হকারের ছেলে’ থেকে অর্ধশত কোটি টাকার মালিক হিন্দু কর্মকর্তা


    বিআরটিএর মেকানিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্ট পদে চাকরিতে যোগ দিয়েছিল সৌরভ কুমার সাহা। সংস্থাটির নোয়াখালী কার্যালয়ে শুরু তার চাকরি জীবন। তখনই খুলে যায় তার ভাগ্যের দুয়ার। এরপর আর তাকে পেছনে তাকাতে হয়নি। অবৈধপথে উপার্জন করেছে দুহাত ভরে। ইতোমধ্যে সে নামে-বেনামে অর্ধশত কোটি টাকার সম্পদ গড়েছে।

    ফরিদপুর সদর উপজেলার বাসিন্দা সৌরভের বাবা ছিল পত্রিকার হকার। তার সামান্য আয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে টানাটানির মধ্যে চলত সংসার। আওয়ামী পরিবারের সদস্য হওয়ায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হসিনার বেয়াই সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেনের সুপারিশে ২০১৪ সালে বিআরটিএ অফিসে চাকরি পায় সৌরভ । গত ১১ বছরে সে বাবা, শ্বশুর, শ্যালকসহ বিভিন্নজনের নামে-বেনামে অর্ধশত কোটি টাকার সম্পদ গড়েছে। কিনেছে ১০টি বাস, চারটি প্রাইভেট কার। আছে বেশ কয়েকটি সিএনজিচালিত অটোরিকশাও। ফরিদপুরে সৌরভের ভগ্নিপতি এসব অটোরিকশা দেখাশোনা করে। এছাড়া নিজের চলাচলের জন্য কিনেছে অর্ধকোটি টাকা মূল্যের বিলাসবহুল পাজেরো গাড়ি।

    জানা যায়, আওয়ামী পরিবারের সন্তান ও ফরিদপুরের বাসিন্দা হওয়ায় অল্পদিনেই পদোন্নতি পায় সৌরভ। মেকানিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্ট থেকে বিআরটিএর পরিদর্শক হয়ে ঢাকার উত্তরা, গোপালগঞ্জ, চাঁদপুর, মাদারীপুরসহ বিভিন্ন জেলায় চাকরি করে। সর্বশেষ মাদারীপুর থেকে ২০২৩ সালের শুরুতে বরিশাল বিআরটিএর ইন্সপেক্টর পদে যোগ দেয়। গত ১১ বছরে ড্রাইভিং লাইসেন্স, ফিটনেস ও রেজিস্ট্রেশন থেকে ঘুসবাণিজ্যের মাধ্যমে দুহাত ভরে কামিয়েছেন অঢেল অর্থ। আর অবৈধ এ অর্থ দিয়ে নিজের নামে কিছুই করেনি সুচতুর সৌরভ। আত্মীয়স্বজনসহ নামে-বেনামে কিনেছেন ১০টি বাস, প্রাইভেট কার, সিএনজি, জমিসহ অর্ধশত কোটি টাকার সম্পদ। শুধু তাই নয়, বিপুল অঙ্কের টাকা খরচ করে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে মা কৃষ্ণা রানী সাহাকে বানিয়েছিল ফরিদপুর পৌরসভার কাউন্সিলর। পরে সৌরভের পিতা বিজয় কৃষ্ণ সাহা ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের নেতাদের আর্থিক সহায়তা করা শুরু করে।

    জানা গেছে, সৌরভের বেতন ২৬-২৭ হাজার টাকা হলেও মাসে অবৈধভাবে কামায় ৩০-৩৫ লাখ টাকা। বরিশাল বিআরটিএর অধীনে প্রতি মাসে লাইসেন্স দিতে ছয় থেকে আটটি বোর্ড বসে। প্রতি বোর্ডে লিখিত, ভাইভা ও ফিল্ড টেস্ট পরীক্ষায় ১৮০-২০০ জন অংশ নেয়। বোর্ডে হাতেগোনা কয়েকজনকে পাস করানো হয়। পরে বিআরটিএর চিহ্নিত দালাল ও সৌরভের ব্যক্তিগত ড্রাইভার রিয়াজ খান, আলাউদ্দীন, জাকির, আসাদুল, হৃদয়সহ ২০-২৫ জন পরীক্ষায় ফেল করা ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে। তারা পাস করানোর জন্য তিন-চার হাজার টাকার চুক্তি করে। এর মধ্যে লাইসেন্সপ্রতি সৌরভকে দিতে হয় আড়াই হাজার টাকা।

    গণমাধ্যমের বরাতে জানা যায়, ওই পরীক্ষায় একজন ম্যাজিস্ট্রেট উপস্থিত থাকার কথা। কোনো কোনো সময় ম্যাজিস্ট্রেট উপস্থিত না থেকে প্রতিনিধি পাঠিয়ে পরীক্ষার কাজ শেষ করে। ফলে বিআরটিএ কর্মকর্তা সৌরভ খুব সহজেই নিজের করা তালিকায় ম্যাজিস্ট্রেটের সই করিয়ে নেয়।

    অভিযোগ রয়েছে, অন্যদের ম্যানেজ করে প্রতি বোর্ড থেকে পাঁচ-ছয় লাখ টাকা অবৈধভাবে আয় করে সৌরভ। এভাবে মাসে তার অবৈধ আয় দাঁড়ায় ৩০-৩৫ লাখ টাকা।

    আরও জানা যায়, সিএনজি অটোরিকশা রেজিস্ট্রেশনের জন্য ফাইলপ্রতি ৪০-৫০ হাজার টাকা নেয় সৌরভ। প্রতিটি ট্রাকের রেজিস্ট্রেশনের জন্য ঘুস নেয় পাঁচ থেকে ১০ হাজার টাকা এবং বিভিন্ন শোরুমের মোটরসাইকেলের ফাইলপ্রতি নেয় এক হাজার থেকে দেড় হাজার টাকা। এছাড়া বাস, ট্রাক, প্রাইভেট কার ও সিএনজির ফিটনেস থেকে পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত আদায় করে। সৌরভের এমন ঘুসবাণিজ্যের বিষয়টি সম্প্রতি ধরা পড়ে।

    আরও জানা যায়, গত বছর বিআরটিএর প্রধান কার্যালয় থেকে সিএনজির টাইপ অনুমোদনের আগেই ১৯১টি সিএনজির রেজিস্ট্রেশন করে সৌরভ। অভিযোগ রয়েছে, প্রতিটি সিএনজি থেকে সে ৫০ হাজার টাকা করে ঘুস নিয়েছে । বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই চলতি বছরের জানুয়ারিতে বরিশালের দুদক কর্মকর্তা রাজকুমার সাহা বাদী হয়ে সৌরভকে প্রধান আসামি করে মামলা করে। মামলায় বিআরটিএর সহকারী পরিচালক রোকনুজ্জামান, ঢাকার তেজগাঁও এলাকার ‘রানার অটো’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক নজরুল ইসলামকে আসামি করা হয়। মামলায় বলা হয়, পরস্পরের যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার করে লাভবান হওয়ার জন্য অসৎ উদ্দেশ্যে প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছে তারা। ওই মামলায় সৌরভ গ্রেপ্তার হলেও রহস্যজনক কারণে জামিন হয়।

    সূত্র জানায়, বরিশালের নতুনবাজার এলাকায় আধুনিক এক ভবনে ২৭ হাজার টাকার ভাড়া বাসায় থাকে সে। অফিসে যাওয়ার জন্য রয়েছে দামি প্রাইভেট কার। এ গাড়ির রেজিস্ট্রেশন তার পিতা বিজয় সাহার নামে। তবে গাড়ির কাগজে রয়েছে সৌরভের ফোন নম্বর। নগরীর নথুল্লাবাদ এলাকায় রয়েছে সৌরভের ‘হাওলাদার পরিবহন’-এর বাস কাউন্টার। মাদারীপুরের টেকেরহাটের হিরো হাওলাদার ও মনির হাওলাদারের কাছ থেকে চার বছর আগে ‘হাওলাদার পরিবহন’-এর ব্যানার (রুট) কিনে নেয় সৌরভ । সে এটি তার বাবা ও শ্বশুরের নামে কিনেছেন বলে গণমাধ্যমকে জানায় হিরো হাওলাদার। টাকা-পয়সা লেনদেন থেকে শুরু করে সবকিছুই সৌরভ করে বলেও জানায় হিরো হাওলাদার।

    হাওলাদার পরিবহনের মাদারীপুরের মোস্তফাপুর স্ট্যান্ডের চেকার জাহাঙ্গীর গণমাধ্যমকে জানায়, চার বছর আগে সৌরভ সাহা হাওলাদার পরিবহন কিনেছে বাবা এবং শ্বশুরের নামে। হাওলাদার পরিবহনে সৌরভের পাঁচটি, আশিক পরিবহনের ব্যানারে চারটি এবং ফরিদপুর বাস মালিক সমিতিতে একটি বাস রয়েছে। এ বাসগুলোর মধ্যে ঢাকা রুটে চারটি এবং বরিশাল-ফরিদপুর-ভাঙ্গা-খুলনা-গোপালগঞ্জ রুটে ১০টি বাস রয়েছে তার। এর মধ্যে ছয়মাস আগে দুটি নতুন বাস কিনেছে বলে জানা গেছে।

    গাড়িভাড়া নেওয়ার কথা জানিয়ে গণমাধ্যমের এক প্রতিবেদক যোগাযোগ করে সৌরভের ম্যানেজার রিয়াজ খানের সঙ্গে। এ সময় রিয়াজ খান এ প্রতিবেদকের কাছে সৌরভের ১০টি বাস থাকার কথা এবং নতুন তিনটি চেচিস ইঞ্জিন কেনার কথা অকপটে স্বীকার করে। সে বলে, বাসের মালিক বিজয় সাহা ও তার ছেলে সৌরভ সাহা কখনোই ভাড়ার বিষয়ে কারো সঙ্গে কথা বলে না। বলে, ‘সবকিছুই আমিই দেখাশুনা করি’ ।

    তথ্যসূত্র:
    ১. ১১ বছরেই অর্ধশত কোটি টাকার সম্পদের মালিক
    https://tinyurl.com/yp8bhdx3
    নিয়মিত খবর পড়তে ভিজিট করুনঃ https://alfirdaws.org

  • #2
    দক্ষিণ চট্টগ্রামে আওয়ামী শাসন আমলে এস আলমের বিদ্যুৎকেন্দ্র রক্ষায় ১০ গ্রামবাসীকে হত্যা করে পুলিশ



    চট্টগ্রাম শহর থেকে কর্ণফুলী নদী পার হয়ে একদিকে কক্সবাজার আর অন্যদিকে বান্দরবানের আগের সাতটি উপজেলা দক্ষিণ চট্টগ্রাম হিসেবে পরিচিত। অসংখ্য নদী ও খালবেষ্টিত সবুজ পাহাড়ের পাদদেশে বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠসমৃদ্ধ এলাকাটি রাজনৈতিক সহাবস্থান ও শান্তির জনপদ হিসেবে পরিচিত ছিল।

    তবে বিগত দেড় দশক এ অঞ্চলকে রাজনৈতিক সহিংসতার প্রতীকে পরিণত করে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার পুলিশ প্রশাসন ও আওয়ামী সন্ত্রাসীরা। দক্ষিণ চট্টগ্রামের বাঁশখালী, আনোয়ারা, কর্ণফুলী, সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, চন্দনাইশ, পটিয়া এবং বোয়ালখালী উপজেলার মধ্যে সাতকানিয়া ও লোহাগাড়া উপজেলা সবচেয়ে বেশি ক্ষতবিক্ষত হয় আওয়ামী লীগের ফ্যাসিবাদী শাসনামলে।

    রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে দমনের নামে এখানে যা ঘটেছে, তা মানবতার ইতিহাসে এক কলঙ্কজনক অধ্যায়। এই দুই উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে হামলা, মামলা ও অপহরণের ঘটনা ছিল নিত্যনৈমিত্তিক বিষয়। এর বাইরে জামায়াতের দুই সক্রিয় কর্মীকে অপহরণের পর নির্মমভাবে হত্যার ঘটনাও ঘটে সাতকানিয়ায়।

    জামায়াতে ইসলামীর নেতা আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মুক্তি আন্দোলনে সাতকানিয়ায় নিহত হয় চারজন। এর মধ্যে একদিনেই পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারায় কিশোরসহ তিনজন। ধরে নিয়ে পায়ে গুলি করে চিরতরে পঙ্গু করে দেওয়া হয় একাধিক নেতাকর্মীকে।

    অপহরণের পর দুই জামায়াতকর্মীকে হত্যা

    সাতকানিয়ার জামায়াতকর্মী আব্দুল হাকিম (৪৫) এবং কামাল উদ্দিনকে (৪০) ২০১১ সালের ১ সেপ্টেম্বর আওয়ামী লীগের শীর্ষ সন্ত্রাসী বশির বাহিনীর প্রধান বশিরের নেতৃত্বে অপহরণ করা হয়। পরদিন আব্দুল হাকিমের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করা হয় সাতকানিয়া সদর ইউনিয়নের রূপকানিয়া এলাকার হাতিয়ার খাল থেকে। এর একদিন পর একই খালের ডলুনদীর মোহনা থেকে উদ্ধার করা হয় কামাল উদ্দিনের লাশ।

    পুলিশের গুলিতে ঝরে পড়া প্রাণ

    ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ফাঁসির রায়ের প্রতিবাদে সাতকানিয়া ও লোহাগাড়া এলাকায় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে অবরোধ করে স্থানীয় জনতা। এ সময় সাতকানিয়া থানা পুলিশের একটি বিশাল দল কোনো ধরনের সতর্কতা জারি ছাড়াই রাস্তার দুপাশে দাঁড়িয়ে থাকা উৎসুক জনতার ওপর নির্বিচারে গুলি চালাতে থাকে। এতে আহত হন অন্তত অর্ধশত মানুষ। গ্রেপ্তার করা হয় বেশ কয়েকজনকে। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কিশোর শহীদুল ইসলাম (১৩) ও আবু তাহেরের (২৭) মৃত্যু হয়। উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান ওসমান গনি (৩০) নামে আরেকজন। এছাড়া পুলিশের গুলিতে মৃত্যুবরণ করেন একই এলাকার বাসিন্দা আবু ছালেহ (৩৮)। গুলিবিদ্ধ অনেকে এখনো দুঃসহ যন্ত্রণা বয়ে বেড়াচ্ছেন।

    কথিত ক্রসফায়ারে হত্যা

    ২০১৪ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি সাতকানিয়ার বার্মা কলোনি এলাকায় পুলিশের গুলিতে নিহত হন ছদাহা ইউনিয়ন জামায়াতের নেতা মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন। একই সময় পুলিশের গুলিতে গুরুতর আহত হয়ে পরে এক পা হারিয়ে চিরতরে পঙ্গু হয়ে যান মোহাম্মদ রফিক। পঙ্গু মোহাম্মদ রফিক গণমাধ্যমকে বলেন, জসিমকে খুব কাছ থেকে গুলি করে হত্যা করে পুলিশ। পায়ের সঙ্গে পিস্তল ঠেকিয়ে গুলি করে আমাকে চিরতরে পঙ্গু করে দেয়।

    ২০১৬ সালের ১৬ অক্টোবর ভোরে পুলিশ পশ্চিম সাতকানিয়া থেকে কাঞ্চনা ইউনিয়নের মধ্যম কাঞ্চনা এলাকার জামায়াতকর্মী আবুল বশরকে (৪০) গ্রেপ্তার করে। পরে অস্ত্র উদ্ধারের নামে তাকে ওই দিন ভোরে এওচিয়া ইউনিয়নের ছনখোলা এলাকায় নিয়ে গুলি করে হত্যা করে কথিত ক্রসফায়ারে নিহত হয়েছে বলে দাবি করে পুলিশ। সাতকানিয়া থানার তৎকালীন ওসি ফরিদ উদ্দিন খন্দকারের নেতৃত্বে এএসআই হিরু বিকাশ দে গুলি করে বশরকে হত্যা করেন বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।

    জঙ্গি নাটক

    বাঁশখালী উপজেলার সাধনপুর ইউনিয়নের দুর্গম লটমণি পাহাড়ে মুরগির খামার করে জীবিকা নির্বাহ করতেন মোবারক আলী। ২০১৫ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি সকালে হঠাৎ কয়েক হাজার র‌্যাব সদস্য ঘিরে ফেলে পুরো এলাকা। বলা হয়, খামারের আড়ালে জঙ্গি প্রশিক্ষণ চলত সেখানে। কয়েক ঘণ্টার নাটকীয়তা শেষে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র উদ্ধারের দাবি করা হয় সেখান থেকে। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ধরে আনা পাঁচ যুবককে কথিত জঙ্গি আস্তানা থেকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। গ্রেপ্তারদের মধ্যে ছিলেন ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার মিঠাপুকুর গ্রামের আইয়ুব আলীর ছেলে মোবাশ্বের হোসেন (১৭), ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলার গাছোয়াপাড়া গ্রামের নূর মোহাম্মদের ছেলে আব্দুল খালেক হুরাইরা (২১), টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার উড়িয়াবাড়ী গ্রামের চান মিয়ার ছেলে আমিনুল ইসলাম হামজা (২২), একই জেলার মির্জাপুরের মাহমুদপুর গ্রামের দরবেশ আলীর ছেলে হাবিবুর রহমান তাসিম (১৯) এবং গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ার কয়েখাঁ গ্রামের মোফাজ্জল হোসেনের ছেলে আমির হোসেন ইসহাক (২৫)।

    তথাকথিত অভিযান শেষে র‌্যাব দাবি করে, লটমণি পাহাড়ে জঙ্গি আস্তানা তৈরি করে অস্ত্র, বোমা তৈরি ও জঙ্গি প্রশিক্ষণ হচ্ছিল আজিজুল হক ও পারভেজ নামে দুজনের নেতৃত্বে।

    ওই ঘটনার পর চট্টগ্রামের আলেম-ওলামাদের ওপর চলে আরেক দফা নির্যাতন। এর কয়েকদিন পর হাটহাজারীর একটি মাদরাসা থেকে ২৫ জনকে আটক করে র‌্যাব। এর মধ্যে ১২ জনকে লটমণি পাহাড়ের কথিত জঙ্গিসংশ্লিষ্টতায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

    ছাদ থেকে ফেলে হত্যা

    ২০১৩ সালের ১৩ মার্চ গভীর রাতে নগরীর রাহাত্তারপুল এলাকার সৌরভী আবাসিকের একটি বাড়ি ঘিরে ফেলে পুলিশ। বাড়িটিতে জামায়াত নেতা শাহজাহান চৌধুরীর ছোট ভাই সাপ্তাহিক সময়ের প্রয়াস পত্রিকার প্রকাশক মোহাম্মদ হোসেন চৌধুরী ও তার পরিবারের সদস্যরা বসবাস করত।

    প্রত্যক্ষদর্শীরা গণমাধ্যমকে জানান, পুলিশ সদস্যরা শাহজাহান চৌধুরীর খোঁজে প্রতিটি রুমে তল্লাশি শুরু করে। তাকে না পেয়ে ওই বাড়ির নারীদের সঙ্গেও অশোভন আচরণ করে। অভিযানের একপর্যায়ে শাহজাহান চৌধুরীর ভাগনে সাতকানিয়া সরকারি কলেজের মেধাবী ছাত্র মঈনুদ্দিন হাসান মুন্নাকে আটক করে ভবনের ছাদে নিয়ে যায় পুলিশ। সেখানে শাহজাহান চৌধুরীর সন্ধান দেওয়ার জন্য মুন্নার ওপর চলে অকথ্য নির্যাতন। একপর্যায়ে তাকে ভবনের ছাদ থেকে লাথি মেরে নিচে ফেলে হত্যা করে।

    নদভীর গজবি শাসনে চিরতরে পঙ্গু অনেকে

    আওয়ামী শাসনামলে এই এলাকায় পুলিশের গুলিতে গুরুতর আহত হন অন্তত ৩৫ জন। এর মধ্যে চিরতরে পঙ্গু হয়েছেন নারীসহ পাঁচজন। আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আবু রেজা মোহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভীর ইন্ধনে পুলিশ বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীদের ওপর বর্বর নির্যাতন চালায়।

    ২০১৩ সালের ৯ অক্টোবর রাতে সাতকানিয়ার এওচিয়া-মার্দাশা ইউনিয়নসংলগ্ন পাহাড়তলী আলীনগর এলাকায় চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (দক্ষিণ) নাজমুল হাসান ও চট্টগ্রামের রিজার্ভ অফিসার কাজী শফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে একদল পুলিশ আবু তাহের নামে একজনের খামারবাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে। কথিত অস্ত্র উদ্ধারের নামে পাহাড়ের পাদদেশে নিয়ে পায়ে অস্ত্র ঠেকিয়ে গুলি করে। পরে তার পা কেটে ফেলতে হয়।

    গায়েবি মামলা

    আওয়ামী লীগের ১৫ বছরের শাসনামলে দক্ষিণ চট্টগ্রামের সাত থানায় পাঁচ শতাধিক গায়েবি মামলায় বিএনপি ও জামায়াতের অন্তত ২৫ হাজার নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়। বাদ যাননি এলডিপির নেতাকর্মীরাও। এর মধ্যে সাতকানিয়ায় জামায়াতের বিরুদ্ধে ২৮৮টি, বিএনপির বিরুদ্ধে ৩৭টি, চন্দনাইশে এলডিপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ১৫টি, জামায়াত নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে অন্তত ১০টি, লোহাগাড়ায় জামায়াত ও বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে মামলা হয় দুই শতাধিক। পটিয়ায় বিএনপি ও জামায়াত নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলার সংখ্যা অর্ধশতাধিক। এসব মামলায় রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের পাশাপাশি মসজিদের ইমাম এবং মাদরাসার শিক্ষকদেরও আসামি করা হতো।

    এস আলমের বিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরিতে ১০ জনকে গুলি করে হত্যা

    বাঁশখালী উপজেলার গন্ডামারা এলাকায় সরকারি জমির পাশাপাশি সাধারণ মানুষের জমি দখল ও সাগর ভরাট করে বিদ্যুৎকেন্দ্র নিমার্ণের কাজ শুরু করেছিল শিল্প গ্রুপ এস আলম। পরিবেশবিধ্বংসী ওই প্রকল্পের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন স্থানীয়রা। এ সময় গ্রামবাসীর ওপর দুই দফায় নির্বিচারে গুলি করে ১০ জনকে হত্যা করে পুলিশ।

    প্রথম সংঘর্ষ হয় প্রকল্পের শুরুতে ২০১৬ সালের ৪ এপ্রিল। দুদিন ধরে চলা সংঘর্ষে নিহত হন চারজন। ২০২১ সালের ১৭ এপ্রিল প্রকল্পের শেষ সময়ে এস আলম গ্রুপের দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে ফের ফুঁসে ওঠেন এলাকাবাসী। এবারো দানবীয় ভূমিকায় অবতীর্ণ হয় পুলিশ। গুলি করে হত্যা করে ছয়জনকে। দুই ঘটনায় পুলিশ ও এস আলম গ্রুপের ভাড়া করা সন্ত্রাসীদের হামলায় আহত হন শতাধিক গ্রামবাসী।

    তথ্যসূত্র:
    ১. এস আলমের বিদ্যুৎকেন্দ্র রক্ষায় ১০ গ্রামবাসীকে হত্যা পুলিশের
    -https://tinyurl.com/yrtbj5d6
    নিয়মিত খবর পড়তে ভিজিট করুনঃ https://alfirdaws.org

    Comment


    • #3
      পুলিশের সামনেই ভুয়া ডিবি পরিচয়ে ডাকাতি, কোনো পদক্ষেপ নেয়নি পুলিশ


      চট্টগ্রামের কর্ণফুলীতে ‘ডিবি পুলিশ’ পরিচয়ে একদল সশস্ত্র ডাকাত বিয়ে বাড়িতে তাণ্ডব চালিয়েছে।

      শনিবার (১১ অক্টোবর) গভীর রাতে বড়উঠান ইউনিয়নের শাহমীরপুর এলাকায় মোহাম্মদ মিয়ার বাড়িতে এই ঘটনা ঘটে।

      স্থানীয়রা গণমাধ্যমকে জানান, ১০–১৫ জনের একটি দল নিজেদের ‘ডিবি পুলিশ’ পরিচয় দিয়ে বাড়িতে প্রবেশ করে। তারা তল্লাশির নামে নারী-পুরুষ সবাইকে অস্ত্রের মুখে বন্দি করে আলমারি ও লকার ভেঙে প্রায় ১১ ভরি স্বর্ণালঙ্কার, দু’লাখ টাকা এবং দুটি স্মার্টফোন লুট করে নিয়ে যায়।

      বিয়েবাড়ির স্বজনরা অভিযোগ করেছেন, ঘটনাস্থলের কাছেই পুলিশ উপস্থিত থাকলেও তারা কোনো প্রতিরোধ করেনি।

      বর আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘পুলিশ ডাকাতদের সামনেই ছিল, কিন্তু কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। অস্ত্র তাক করলে তারা পিছিয়ে যায়।’

      তথ্যসূত্র:
      ১. ডিবি পরিচয়ে ডাকাতি, পুলিশের সামনেই নগদ টাকা স্বর্ণালঙ্কার লুট
      -https://tinyurl.com/muyeu6p2
      নিয়মিত খবর পড়তে ভিজিট করুনঃ https://alfirdaws.org

      Comment


      • #4
        লক্ষ্মীপুরে অবৈধভাবে একত্রে বালু উত্তোলন করছে আ.লীগ ও বিএনপি নেতারা, ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী


        লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার ২ নম্বর উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের ২নম্বর ওয়ার্ডে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলছে অবৈধ বালু উত্তোলনের মহোৎসব।

        স্থানীয়রা গণমাধ্যমকে জানিয়েছে, এসব ড্রেজার পরিচালনা করছে এলাকার প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতারা। তাদের মধ্যে বিএনপি নেতা মেহেদী কবিরাজ, শামীম গাজী, মোহাম্মদ আলী খান, এল এম সোহাগ এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মিলন সর্দার ও শিমুল লস্কর–এর নাম উঠে এসেছে।

        প্রতিদিন এসব ড্রেজারে তোলা বালু ট্রাকে করে বিভিন্ন নির্মাণ প্রকল্পে বিক্রি হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এতে নদীর পাড় ও আশপাশের কৃষিজমি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

        স্থানীয় এক কৃষক গণমাধ্যমকে বলে, ‘দিনরাত বালু তোলা হচ্ছে। খালের পাড় ভেঙে আমাদের ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। কেউ প্রতিবাদ করলে হুমকি দেওয়া হয়।’

        তথ্যসূত্র:
        ১. রায়পুরে আওয়ামী লীগ–বিএনপি নেতাদের ১৩টি ড্রেজারে অবৈধ বালু উত্তোলন
        https://tinyurl.com/yp8bhdx3
        নিয়মিত খবর পড়তে ভিজিট করুনঃ https://alfirdaws.org

        Comment


        • #5
          মিয়ানমার সীমান্তে স্থল মাইন বিস্ফোরণে বিজিবি সদস্যের গোড়ালি বিচ্ছিন্ন


          বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার মিয়ানমার সীমান্তবর্তী তুমব্রু এলাকায় মাইন বিস্ফোরণে গুরুতর আহত হয়েছেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) এক সদস্য। রোববার (১২ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে ৪১ নম্বর পিলারের কাছাকাছি এ দুর্ঘটনা ঘটে। আহত বিজিবি সদস্য নায়েক আকতার হোসেন। সে ৩৪ বিজিবির রেজু আমতলী বিওপিতে কর্মরত।

          স্থানীয় ও বিজিবি সূত্র গণমাধ্যমকে জানায়, রেজু আমতলী বিওপির আওতাধীন বাংলাদেশের অভ্যন্তরে একটি প্রস্তাবিত অস্থায়ী চৌকিতে টহল দেওয়ার সময় হঠাৎ করে মাইন বিস্ফোরণ ঘটে। এতে নায়েক আকতার হোসেনের ডান পায়ের গোড়ালি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এবং বাম পা গুরুতরভাবে জখম হয়।

          তাৎক্ষণিকভাবে সহকর্মীরা তাকে উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে রামু সেনানিবাসের সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তি করে।

          তথ্যসূত্র:
          ১. মিয়ানমার সীমান্তে মাইন বিস্ফোরণে আহত বিজিবি সদস্য
          https://tinyurl.com/bd38eptn
          নিয়মিত খবর পড়তে ভিজিট করুনঃ https://alfirdaws.org

          Comment

          Working...
          X