আবুল সরকারের সর্বোচ্চ আইনি শাস্তি নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের অপরিহার্য দায়িত্ব: ইসলামী দলগুলোর বিবৃতি

মহান আল্লাহর শানে জঘন্য শব্দ ব্যবহার করে ধর্ম অবমাননার অপরাধে গ্রেফতারকৃত বাউল আবুল সরকারের দৃষ্টান্তমূলক কঠোর শাস্তির দাবি করেছেন হেফাজতে ইসলামসহ বিভিন্ন ইসলামী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। গতকাল পৃথক পৃথক বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, মহান আল্লাহর শানে জঘন্য শব্দ ব্যবহার করে বাউল আবুল সরকার সুস্পষ্টভাবেই ধর্ম অবমাননা করেছে। এটি কেবল ফৌজদারি অপরাধ নয়, বরং বাংলাদেশের কোটি কোটি ধর্মপ্রাণ মুসলিমের হৃদয়ে আঘাত হানার শামিল। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের এই গুরুতর অপরাধের জন্য বাউল আবুল সরকারের সর্বোচ্চ আইনি শাস্তি নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের অপরিহার্য দায়িত্ব।
হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব আল্লামা সাজিদুর রহমান হাফিযাহুল্লাহ গতকাল (২৫ নভেম্বর) এক বিবৃতিতে বলেন, ভণ্ড বাউল আবুল সরকার প্রকাশ্যে আল্লাহকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য ও মিথ্যাচার করে স্থানীয় সচেতন মুসলিমদের প্রতিবাদের মুখে গ্রেফতার হয়েছে, যা আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। তাকে কেন্দ্র করে কোনো ধরনের সাংঘর্ষিক পরিস্থিতি কাম্য নয়। মুসলিমদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের দায়ে আমরা উসকানিদাতা আবুল সরকারের দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করছি, যাতে ভবিষ্যতে আর কেউ এভাবে ধর্মীয় উত্তেজনা সৃষ্টিকারী বক্তব্য দেয়া থেকে বিরত থাকে।
তিনি আরো বলেন, এ ঘটনায় প্রশাসনের কেউ স্থানীয় প্রতিবাদী আলেমসমাজ ও ধর্মপ্রাণ জনতাকে হয়রানি করলে তার পরিণতি ভালো হবে না বলে আমরা কঠোরভাবে সরকারকে হুঁশিয়ারি দিচ্ছি। ধর্ম অবমাননার ক্ষেত্রে কোনো ছাড় দেয়া হবে না।
তিনি বলেন, স্যোশাল মিডিয়ায় এক ভিডিওতে সচেতন বাউলশিল্পীরাও আবুল সরকারের ইসলামবিরোধী কথাবার্তার সমালোচনা করে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। ফলে আবুল সরকারের ইসলাম অবমাননার বিষয়টি আড়াল করার সুযোগ নেই। আমাদের প্রশ্ন বাউল আবুল সরকারের পক্ষে দাঁড়ানো সেক্যুলার প্রগতিশীলরা কি সমাজে ধর্ম অবমাননা করার অধিকার চান?
হেফাজত মহাসচিব আরো বলেন, তাসাউফ বা সূফিবাদ ইসলামের আত্মদার্শনিক রূপ। কিন্তু বাউলবাদের আড়ালে কারো ইসলাম বিকৃতি ও অবমাননা সমর্থনযোগ্য নয়। কথিত বাউল আবুল সরকারের সুস্পষ্ট ধর্ম অবমাননা সত্ত্বেও তার পক্ষে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদী মুসলিমদের কলঙ্কিত করা এদেশে ইন্ডিয়ার স্বার্থ রক্ষার শামিল। এ ঘটনায় ইন্ডিয়াপন্থি উগ্র বামরাও সরব হয়েছে। জুলাই বিপ্লব বানচাল করতে ইন্ডিয়ার চক্রান্তে দেশে যেকোনো অস্থিরতা তৈরির চেষ্টা প্রতিহত করা হবে ইন শা-আল্লাহ।
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ ঢাকা জেলা উত্তরের সভাপতি হাফেজ মাওলানা আলী আকবর কাসেমী ও সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আলী আজম (হাফিযাহুমুল্লাহ) বলেন, মহান আল্লাহর শানে জঘন্য শব্দ ব্যবহার করে বাউল আবুল সরকার সুস্পষ্টভাবেই ধর্ম অবমাননা করেছে। এটি কেবল ফৌজদারি অপরাধ নয়, বরং বাংলাদেশের কোটি কোটি ধর্মপ্রাণ মুসলিমের হৃদয়ে আঘাত হানার শামিল। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের এই গুরুতর অপরাধের জন্য বাউল আবুল সরকারের সর্বোচ্চ আইনি শাস্তি নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের অপরিহার্য দায়িত্ব। আল্লাহর শানে বেয়াদবি ও ধর্মীয় বিশ্বাসের প্রতি আঘাত কখনোই মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হতে পারে না। এটা স্পষ্টই ইসলাম বিদ্বেষ। নব্বই ভাগ মুসলিমদের দেশে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার নামে ইসলাম বিদ্বেষ বরদাশত করা হবে না। প্রভাবশালী কিছু মিডিয়া জঘন্য এই অপরাধ হালকা করতে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সংবাদ প্রচার করছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই। অপরাধীকে রক্ষা করা, তার দোষ হালকা করা কিংবা জনতার ন্যায়সঙ্গত ক্ষোভকে উল্টো দোষারোপ করে তাদের হয়রানির চেষ্টা এসবই ন্যায়বিচারের পথ রুদ্ধ করার শামিল, যা কারোর জন্যই সুখকর হবে না।
বিবৃতিতে বলা হয়, ধর্ম অবমাননার মতো গুরুতর অপরাধের পর প্রশাসনের নির্লিপ্ততার সুযোগে আবুল সরকারের অনুসারীরা মানববন্ধনের দুঃসাহস দেখালে সাধারণ জনগণ সেটাকে প্রতিহত করেন। বিচ্ছিন্ন এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে মানিকগঞ্জের বিভিন্ন পর্যায়ের আলেমদের প্রশাসনের কর্মকর্তারা গ্রেফতারের হুমকিসহ নানাবিধ হয়রানি করছেন। অবিলম্বে আলেম ওলামা ও ইসলামপ্রিয় ব্যক্তিদের অহেতুক হয়রানি বন্ধ করতে হবে। তারা বলেন, ধর্মদ্রোহী বাউল আবুল সরকারের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত এবং মানিকগঞ্জের আলেম উলামা ও জনসাধারণকে হয়রানি বন্ধ না করলে ঢাকা আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে অচল করে দেয়া হবে ইন শা-আল্লাহ।
এছাড়াও আন্তর্জাতিক মজলিসে তাহাফফুজে খতমে নবুওয়ত বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা মুহিউদ্দীন রাব্বানী হাফিযাহুল্লাহ ভণ্ড বাউল আবুল সরকারের শাস্তির দবিতে বিবৃতি দিয়েছেন।
বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা সাইফুল ইসলাম ফরিদী হাফিযাহুল্লাহও এক বিবৃতিতে বাউলদের রুখে দেয়ার এখনই মুখ্যম সময় বলে উল্লেখ্য করেন।
তথ্যসূত্র:
১। ধর্ম অবমাননার অপরাধে বাউল আবুল সরকারের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে :বিভিন্ন ইসলামী নেতৃবৃন্দ
– https://tinyurl.com/2u225emm






Comment