ব্লগারদের শাস্তি সরকারের নিরামিষ ভেল্কি
“মুক্তমনা” ব্লগে অনেকেই লেখেন এবং পড়েন । এর সবসদস্যরা সকলেই নাস্তিক তা বলা যায়না। তবে অধিকাংশ সদস্যসরা পরক্ষ বা প্রত্যক্ষ ভাবে নাস্তিক। কেউ স্বঘোষিত নাস্তিক আর কেউ সাপোরটার, সব মিলিয়ে,এ কথা বলা যায়,এটিএকটি নাস্তিক বা নাস্তিক্যবাদের আড্ডাখানা। বরাবরই সরকার দাবি করে আসছে, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত সহ্য করা হবেনা। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানলে আইনের আউতায় এনে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করাহবে। কিছু দিন আগে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এ ধরনেএকটি ঘোষনা দেন। তার এ ঘোষনার প্রেক্ষিতে আওয়ামিলীগের সাধারন সম্পাদক আলহাজ্ব মাওলানা আব্দুসসাত্তার শীয়তপুরী এবং সম্মিলিত ইসলামী গবেষনা সংগঠনের সাধারন সম্পাদক সহ আরো অনেকে সরকারকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন । যারা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানে তাদের কে নজর দারীতে রাখা হবে। আপনারা যারা ব্লগে লিখেন সবার কাছে অনুরোধ আমরা যেন ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত না করি। কিন্তু এসব সরকারের নিরামিষ ভেল্কি । আদৌ তা বাস্তবতার মুখ দেখবে কিনা সেটাই আজ প্রশ্ন বিদ্ধ। যখনই কোন নাস্তিকের বিরোদ্ধে গন আন্দোলন রুপ নেয়। কিংবা স্বঘোষিত কোন নাস্তিককে হত্যার ঘটনা পুনরাবৃত্তি হয়। তখনই সরকার রাজনীতির সূরে কথাবলেন । এবং ধর্ম ব্যাবসাকে কাজে লাগিয়ে ক্ষমতার মসনদকে মজবুত করার প্রয়াস চালান। নাস্তিক ব্লগারের মত সরকারের এম পি মন্ত্রীরাও আল্লাহ-রাসূল এবং দ্বীন ধর্ম নিয়ে কুটুক্তি করতে পিছিয়ে নেই। তারাও হারহামেশা মিথ্যাচার করে চলছে। আওয়ামিলিগের যুগ্ন সাধারন সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ প্রধানমন্ত্রীর সেই ঘোষনার ৫ দিন পরেই রাসূল সাঃ এর শিক্ষা ও দর্শন নিয়ে চরম মিথ্যাচার করেছে। সে বক্তব্য দিয়েছে বঙ্গবন্ধু রাসূল (সাঃ) এর কাছ থেকে ধর্মনিপেক্ষতা শিখেছেন। এবং “মদীনাসনদে” ধর্মনিপেক্ষতার কথা আছে। খোদারকসম! এটা একটা চরম মিথ্যাচার এবং গভীর ষড়যন্ত্র মূলক কথা। কারন, রাসূল (সাঃ) পৃথিবীতে আগমন করেছেন ইসলাম নিয়ে। আর ধর্মনিরপেক্ষ মতবাদ একটি কুফুরী মতবাদ।ইসলামে তার বিন্দু পরিমান স্থান নেই। যে ধর্মনিরপেক্ষ মতবাদ কে সাপোর্ট করে এবং এই মতবাদকে লালন করে সে নাস্তিক এবং মুরতাদ। এতে কোনসন্দেহ নেই। সুতরাং মিস্টার হানিফ তার বক্তব্য অনুযায়ী কোন পথে পা বাড়িয়েছেন সেটা আপনারাই বলুন।
যাইহোক বলছিলাম, নাস্তিক ব্লগারদের শাস্তির কথা। এ ব্যাপারে যদি সরকারের সদিচ্ছা থাকতো, সরকার অবশ্যই দ্রুত বিচারব্যবস্থা কার্যকর করতো। কিন্তু সরকার আজো পর্যন্ত কোন নাস্তিকেরশাস্তি মৃত্যুদন্ড আইনপাশকরেনি। যদি শাস্তি প্রদানের আগ্রহ সরকারের থেকে থাকে তাহলে আমরাও সরকারের সাথে আছি। কিন্তু বাস্তবসত্য হলো , সরকারের এমন সদিচ্ছা নেই। নেই বলেই সরকারের তাগুতবাহিনী ৫ই মে রাতে আল্লাহ ও রাসূল(সাঃ) প্রেমী সরলপ্রান মুসলমানদের উপর শাপলা চত্বরে গনহত্যা চালিয়েছিল।
এই সরকারের আমলে নাস্তিক মুরতাদের ঢল নেমেছে। সরকারের দাপুটেএমপি, মন্ত্রিদের ছত্র ছায়ায় ওরা মাথা গুঁজানোর ঠাই পেয়েছে। আজ সারা বাংলায় তাদের বিষবাষ্প ছড়িয়েপড়েছে জ্যামিতিক হারে। তাদের প্রতিবাদ ও প্রতিরোধে যখন তাওহীদী জনতা এগিয়ে আসে, তাদের আশ্রয় ও নিরাপত্তা দেয়ার জন্য সরকারের মাথা ব্যাথা শুরু হয়ে যায়। সরাসরি নাস্তিকদের পক্ষনিলে সরকারকে চড়া মূল্যে মাশুল দিতে হবে। তাই সরকার তখন ঠান্ডা মাথায় মিথ্যা অভিনয় ও অজুহাত দেখিয়ে বলে, আপনারা শান্ত হোন। আমরা ব্লগারদের গ্রেফতার করছি। আইনগতভাবে তাদের বিচার শুরু করছি। আপনারা আন্দোলন বন্ধ করুন। এখানে একটা প্রশ্নহলো, আসলেই কি সরকার তাদেরকে শাস্তি দেয়ার জন্য বন্দি করেছে নাকি নিরাপত্তা দেয়ারজন্য? সবাই বলবে সরকার তাদেরকে নিরাপত্তা দেয়ার জন্যই বন্দি করেছে। বাস্তবতা এটাই যে,কারাগারেবন্দি রেখে ওদেরকে জামাইআদরে লালন করা হয়। বর্তমান ও অতীত ঘটনা থেকেই আমরা এ কথা বলার সাহসপাই।
আমরা যে যাই হইনা কেন, আমাদের মনে রাখতে হবে, পৃথিবীতে যতদিন বাতিল থাকবে, হক ও সত্যবাহী মুজাহিদরাও ততদিন থাকবে। শাতেমে রাসূল বা রাসূল(সাঃ) এর কটুক্তিকারী ব্যঙ্গোবিদ্রোপকারী যতদিন থাকবে, তাদের নির্মূল ও নিঃশেষকারী মুজাহিদরাও ততদিন থাকবে। এ ঘোষনা আল্লাহ ও তার রাসূলের(সাঃ)। সুরায়ে মায়েদা ৫৩-৫৪ নংআয়াতে ঘোষনা করা হয়েছে, হে ঈমানদারগন! তোমাদের মধ্য থেকে কেউ যদি মুরতাদ হয়ে যায় (তাদের শাস্তির জন্য) আল্লাহ এমন মুজাহিদ সৃষ্টি করে দিবেন যারা আল্লাহ কে ভালবাসে এবংঅল্লাহ ও তাদের কে ভালবাসেন। তারা মুমিনদের প্রতি নরম এবংকাফের-মুরতাদদের ব্যাপারে কঠোর। রাসূল(সাঃ)যুগে কটুক্তি কারীদেরশাস্তি যেমন ছিলমৃত্যুদন্ড এবং গুপ্ত হত্যা আজো তাদের শাস্তি সেটাই বহাল রাখতে হবে। আর না হয় রাসূল প্রেমে পাগলপারা মরদে মুজাহিদরা তাদের দাবি এবং আমলী অভিযান থেকে এক বিন্দুও পিছপাহবে না। তারা বুকের তাজাঈমানের রক্ত দিয়ে হলেও নাস্তিক-মুরতাদদের শাস্তি কার্যকর করে যাবে ইনশাআল্লাহ। বলাতো যায় না কোথায় কোন পাগল ওঁৎ পেতে বসে আছে প্রতিষোধের প্রতিক্ষায়, আল্লাহ দ্রোহীদের দমন অভিযানে। আল্লাহর আদালতে যেমন পাগলেরবিচার নেই, তেমনি দুনিয়াতে তাকে কোন আইনআদালত,মামলা,মুকাদ্দামা ও শাস্তিরভয় দেখিয়ে কোনলাভ নেই। সুতরাং কোন রাসূল প্রেমীপাগল কে উস্কানী না দিয়ে তার ব্যাথা প্রশমিত করার চেষ্টাকরুন। নাহয় যেভাবে নাস্তিক উইকেট পরা শুরুকরেছে আগামীতে খেলাকিন্তু সেখানেই সীমাদ্ধ থাকবেনা। তার ডালপালা ছড়িয়ে পড়বে প্রতিটি শাখা-প্রশাখায়।
Comment