৩৪ বছর আগের আগের কথা .....
১৯৮২ সালে, প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশনকে (PLO) উতখাত করার উদ্দেশ্যে ইসরায়েল লেবাননে হামলা করে ও বৈরুত দখল করে নেয়। অ্যারিয়েল শ্যারন তখন প্রতিরক্ষামন্ত্রী। তার মদদে, ফ্যালাঞ্জিস্ট নামক খ্রিস্টান জঙ্গিবাহিনী ১৯৮২ সালের ১৬ই সেপ্টেম্বর শাবরা ও শাতিলা নামক দুটি ফিলিস্তিনী শরণার্থী শিবিরে এক নির্মম গণহত্যা চালায় যেখানে প্রায় ৫০০০ ফিলিস্তনী নারী-পুরুষ-বৃদ্ধ-শিশুসহ শখানেক লেবানিজ নিহত হয়। ইসরায়লী আর্মি এই সময় শিবিরগুলোকে ঘিরে রেখেছিল যেন কেউ বের না হতে পারে। এবং তারা হত্যাকারীদের সবধরনের রসদ সরবরাহ করছিল। ঘটনার আগেরদিন ১৫ই সেপ্টেম্বর ৬৩জন ফিলিস্তিনী বুদ্ধিজীবি, আইনজীবি, ডাক্তার, নার্স এবং শিক্ষককে চিহ্নিত করে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়।
রবার্ট ফ্রিস্কের বর্ণনা অনুযায়ী, যেসব সাংবাদিক এই গণহত্যার পর ঘুরে ঘুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছিলেন, বাকরুদ্ধ হয়ে গিয়েছিলেন সবাই, নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছিলেন না তারা। সংঘর্ষে ডজনখানেক মৃতদেহ মেনে নেয়া যায়, কিন্তু হাজার হাজার মানুষের অর্থহীন হত্যা? সারি সারি নারীর দেহ পড়েছিল যাদের শরীরের ছিন্নপোষাক আর দেহের ভঙ্গি শারীরিক অত্যাচারের ইঙ্গিত করছিল, আরো ছিল গলাকাটা শিশুর মরদেহ। সারি সারি করে দেয়ালের সামনে পড়ে থাকা তরুণদের লাশের পিঠে ছিল গুলির চিহ্ন। ইউএস আর্মির রেশন টিন, ইসরায়লী আর্মির যন্ত্রপাতি আর হুইস্কির খালি বোতলের পাশে জঞ্জালের মতো স্তুপ করে রাখা হয়েছিল ছোট ছোট বাচ্চাদের পচা গলা দেহ।
বিশ্ব মিডিয়া বরাবরের মতোই এটিকে ছোট্ট একটি ঘটনা হিসেবে পাশ কাটিয়ে গেছে। নীরব থেকেছে বিশ্ব। When does an atrocity become a massacre? রবার্ট ফ্রিস্ক প্রশ্ন করেছেন, how many killings make a massacre? একশ, তিনশ, হাজার? When is a massacre not a massacre? When the figures are too low? Or when the massacre is carried out by Israel’s friends rather than Israel's enemies? বিশ্ব আবারও নিশ্চুপ!
আজকে খ্রিস্টানদের বিরুদ্ধে মুসলিম কোন জঙ্গিবাহিনী এই যজ্ঞ চালালে যুগ যুগ ধরে আমাদের প্রতি পদে পদে এই কথা মনে করিয়ে দেয়া হতো, ইসরায়েলের ১০ জন নারী-শিশু মুসলমানদের হাতে মারা গেলে ১০০০০ মুসলমানের প্রাণ নিয়ে তার শোধ দিতে হতো। কিন্তু বিশ্বের ১ বিলিয়ন মুসলমানের কয়জন শাবরা-শাতিলার কথা জানি? ৫০০০ ফিলিস্তিনীর, খ্রিস্টান জঙ্গিবাহিনী কর্তৃক হত্যাযজ্ঞের দিনটিও তাই নিরবে চলে যায়। আমরা মুসলমানরা কে কার চেয়ে বড় মুসলমান সেই দ্বন্দ্বে ব্যস্ত আছি। ছোট্ট শিশুর মৃতদেহ কাদায় না, কিন্তু ভাইদের দাড়ির দৈর্ঘ্য নিয়ে আমি চিন্তিত থাকি, ধর্ষণ আমাকে বিব্রত করেনা, কিন্তু আপারা নিকাব না পড়লে তলোয়ার নিয়ে নেমে পড়তে ইচ্ছা করে। ৫০০০ ভাইবোনের হত্যার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার মুরোদ নাই, কিন্তু হামাস ইসলামের ইমেজ নষ্ট করে ফেলল কিনা সেই চিন্তায় রাতের ঘুম হারাম হয়ে যায়। পাছে বিশ্ব আমাকে জঙ্গি মনে করে? আরে বোকার দল, বিশ্বতো তোমাদের মানুষই মনে করেনা, জঙ্গি মনে করবে কি?
কবে এই মরণ ঘুম ভাঙ্গবে আমাদের? কবে মানুষ হিসেবে নিজেদের অধিকার আদায় করে নিতে পারব? শাবরা-শাতিলার শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি, আর এক দুর্বল মুসলমান হিসেবে আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ জানাই প্রতিটি রক্তের হিসাব যেন ঐ হত্যাকারীদের কাছ থেকে নেয়া হয়।
(collected)
( picture courtesy by brother umar mukhtar )
১৯৮২ সালে, প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশনকে (PLO) উতখাত করার উদ্দেশ্যে ইসরায়েল লেবাননে হামলা করে ও বৈরুত দখল করে নেয়। অ্যারিয়েল শ্যারন তখন প্রতিরক্ষামন্ত্রী। তার মদদে, ফ্যালাঞ্জিস্ট নামক খ্রিস্টান জঙ্গিবাহিনী ১৯৮২ সালের ১৬ই সেপ্টেম্বর শাবরা ও শাতিলা নামক দুটি ফিলিস্তিনী শরণার্থী শিবিরে এক নির্মম গণহত্যা চালায় যেখানে প্রায় ৫০০০ ফিলিস্তনী নারী-পুরুষ-বৃদ্ধ-শিশুসহ শখানেক লেবানিজ নিহত হয়। ইসরায়লী আর্মি এই সময় শিবিরগুলোকে ঘিরে রেখেছিল যেন কেউ বের না হতে পারে। এবং তারা হত্যাকারীদের সবধরনের রসদ সরবরাহ করছিল। ঘটনার আগেরদিন ১৫ই সেপ্টেম্বর ৬৩জন ফিলিস্তিনী বুদ্ধিজীবি, আইনজীবি, ডাক্তার, নার্স এবং শিক্ষককে চিহ্নিত করে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়।
রবার্ট ফ্রিস্কের বর্ণনা অনুযায়ী, যেসব সাংবাদিক এই গণহত্যার পর ঘুরে ঘুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছিলেন, বাকরুদ্ধ হয়ে গিয়েছিলেন সবাই, নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছিলেন না তারা। সংঘর্ষে ডজনখানেক মৃতদেহ মেনে নেয়া যায়, কিন্তু হাজার হাজার মানুষের অর্থহীন হত্যা? সারি সারি নারীর দেহ পড়েছিল যাদের শরীরের ছিন্নপোষাক আর দেহের ভঙ্গি শারীরিক অত্যাচারের ইঙ্গিত করছিল, আরো ছিল গলাকাটা শিশুর মরদেহ। সারি সারি করে দেয়ালের সামনে পড়ে থাকা তরুণদের লাশের পিঠে ছিল গুলির চিহ্ন। ইউএস আর্মির রেশন টিন, ইসরায়লী আর্মির যন্ত্রপাতি আর হুইস্কির খালি বোতলের পাশে জঞ্জালের মতো স্তুপ করে রাখা হয়েছিল ছোট ছোট বাচ্চাদের পচা গলা দেহ।
বিশ্ব মিডিয়া বরাবরের মতোই এটিকে ছোট্ট একটি ঘটনা হিসেবে পাশ কাটিয়ে গেছে। নীরব থেকেছে বিশ্ব। When does an atrocity become a massacre? রবার্ট ফ্রিস্ক প্রশ্ন করেছেন, how many killings make a massacre? একশ, তিনশ, হাজার? When is a massacre not a massacre? When the figures are too low? Or when the massacre is carried out by Israel’s friends rather than Israel's enemies? বিশ্ব আবারও নিশ্চুপ!
আজকে খ্রিস্টানদের বিরুদ্ধে মুসলিম কোন জঙ্গিবাহিনী এই যজ্ঞ চালালে যুগ যুগ ধরে আমাদের প্রতি পদে পদে এই কথা মনে করিয়ে দেয়া হতো, ইসরায়েলের ১০ জন নারী-শিশু মুসলমানদের হাতে মারা গেলে ১০০০০ মুসলমানের প্রাণ নিয়ে তার শোধ দিতে হতো। কিন্তু বিশ্বের ১ বিলিয়ন মুসলমানের কয়জন শাবরা-শাতিলার কথা জানি? ৫০০০ ফিলিস্তিনীর, খ্রিস্টান জঙ্গিবাহিনী কর্তৃক হত্যাযজ্ঞের দিনটিও তাই নিরবে চলে যায়। আমরা মুসলমানরা কে কার চেয়ে বড় মুসলমান সেই দ্বন্দ্বে ব্যস্ত আছি। ছোট্ট শিশুর মৃতদেহ কাদায় না, কিন্তু ভাইদের দাড়ির দৈর্ঘ্য নিয়ে আমি চিন্তিত থাকি, ধর্ষণ আমাকে বিব্রত করেনা, কিন্তু আপারা নিকাব না পড়লে তলোয়ার নিয়ে নেমে পড়তে ইচ্ছা করে। ৫০০০ ভাইবোনের হত্যার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার মুরোদ নাই, কিন্তু হামাস ইসলামের ইমেজ নষ্ট করে ফেলল কিনা সেই চিন্তায় রাতের ঘুম হারাম হয়ে যায়। পাছে বিশ্ব আমাকে জঙ্গি মনে করে? আরে বোকার দল, বিশ্বতো তোমাদের মানুষই মনে করেনা, জঙ্গি মনে করবে কি?
কবে এই মরণ ঘুম ভাঙ্গবে আমাদের? কবে মানুষ হিসেবে নিজেদের অধিকার আদায় করে নিতে পারব? শাবরা-শাতিলার শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি, আর এক দুর্বল মুসলমান হিসেবে আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ জানাই প্রতিটি রক্তের হিসাব যেন ঐ হত্যাকারীদের কাছ থেকে নেয়া হয়।
(collected)
( picture courtesy by brother umar mukhtar )
Comment