সিরীয় যুদ্ধে আবারও বিষাক্ত গ্যাস ব্যবহারের আলামত সময়ঃ ৪ এপ্রিল ২০১৭ আন্তর্জাতিক আইন এবং যুদ্ধনীতি অস্বীকার করে আবারও সিরিয়ায় রাসায়নিক গ্যাস ব্যবহারের আলামত মিলেছে। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বলছে, ২০১৩ সালের আগস্টে সারিন গ্যাস হামলার অভিযোগ ওঠার পর এটিই সবচেয়ে ভয়াবহ রাসায়নিক হামলা। আসাদবিরোধী বিদ্রোহীরা এই হামলায় সরকারী বাহিনী ও রাশিয়াকে দুষলেও এই দাবি অস্বীকার করেছে সিরীয় সেনাসূত্র ও রুশ কর্তৃপক্ষ। হামলায় সবশেষ ১০০ জনের নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় অঞ্চল ইদলিবে ওই সম্ভাব্য রাসায়নিক গ্যাস হামলা সংঘটিত হয়। হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১০০ জনে দাঁড়িয়েছে। এদের মধ্যে ১১ জন এর বেশী শিশুও রয়েছে যাদের বয়স আট বছরের কম। যুক্তরাজ্যভিত্তিক মানবাধিকার পর্যবেক্ষক সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস এবং চিকিৎসা কর্মীদের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স হতাহতের সবশেষ সংখ্যা নিশ্চিত করে। আগে নিহতের সংখ্যা ৩৫ বলা হয়েছিল। সিরিয়ান অবজারভেটরি জানিয়েছে, ওই হামলায় ৬০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছে। তবে ইদলিবের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ আহতের সংখ্যা ৫০০ বলে উল্লেখ করেছে। মেডিক্যাল সূত্রকে উদ্ধৃত করে সিরিয়ান অবজারভেটরি জানিয়েছে, হামলার কারণে অনেকের শ্বাসরুদ্ধ হয়, কেউ কেউ জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন, কারও কারও আবার মুখ দিয়ে ফেনা বের হয়ে আসে। ওই মেডিক্যাল সূত্র জানিয়েছে, এটি রাসায়নিক গ্যাস হামলা ছিল বলে আলামত মিলেছে। সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদবিরোধী বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে ইদলিব। ফ্রি সিরিয়ান আর্মি এবং সাবেক আল কায়েদা সংশ্লিষ্ট নুসরা ফ্রন্টসহ বিভিন্ন গোষ্ঠী এখানে আধিপত্য করছে। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে সরকার আলেপ্পো শহর ও দামেস্কের আশেপাশের এলাকা দখল করে নিলে হাজার হাজার বিদ্রোহী যোদ্ধা ইদলিবে আশ্রয় নেয়। আর সেকারণে ইদলিবের জনসংখ্যা বেশ বেড়ে গেছে। সেনা সূত্রকে উদ্ধৃত করে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম জানায়, এ ধরনের রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছে সিরিয়ার সেনাবাহিনী। আর মঙ্গলবার রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রীও দাবি করেছেন, রাশিয়া ইদলিবে কোনও বিমান হামলা চালায়নি। ইদলিবের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের প্রধান মোনজের খলিল এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘সকাল সাড়ে ৬টার দিকে খান শেইখৌন এলাকায় যুদ্ধবিমান থেকে গ্যাস হামলা চালানো হয়। এগুলো সারিন ও ক্লোরিন গ্যাস ছিল বলে মনে করা হচ্ছে।’ এ হামলায় ১০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত এবং ৫০০ মানুষ আহত হয়েছে বলে জানান তিনি। মোনজের আরও জানান, আহতদের চিকিৎসা দিতে ইদলিব প্রদেশের হাসপাতালগুলো হিমশিম খাচ্ছে। সিরিয়ান অবজারভেটরি ও সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরা বলছেন, আহতদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে এমন একটি মেডিক্যাল পয়েন্টের কাছে পরে যুদ্ধবিমান থেকে হামলা চালানো হয়েছে। আর উদ্ধারকারী সংগঠন হোয়াইট হেলমেটস জানিয়েছে, তাদের কেন্দ্রগুলোর একটি এবং একটি মেডিক্যাল পয়েন্টও হামলার শিকার হয়েছে। এ হামলাকে ২০১৩ সালের আগস্টে চালানো সারিন গ্যাস হামলা পরবর্তী সবচেয়ে ভয়াবহ রাসায়নিক হামলা বলে মনে করা হচ্ছে। ওই হামলায় কয়েকশো মানুষ নিহত হয়। হামলার জন্য পরস্পরকে দায়ী করেছিল সরকার ও বিদ্রোহীরা।
(সম্পাদিত) banglatribune

Comment