যায়নবাদী ইসরাইল কি হিজবুল্লাহর কাছে হেরে গেল?
তাহলে কী ইসরাইল শেষ পর্যন্ত লেবাননে হিজবুল্লাহর হাতে হেরে গেল? কারণ, মহাশক্তিধর নৃশংস ঘাতক নেতানিয়াহু হিজবুল্লাহর সঙ্গে যুদ্ধবিরতি চুক্তি করতে বাধ্য হয়েছে। বর্তমানে মার্কিন ও ফ্রান্সের মধ্যস্থতায় লেবাননের উপর বর্বর আক্রমণ বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে যায়নবাদী ইসরাইল।
অবশ্য তার কারণও রয়েছে। নেতৃবৃন্দের হত্যা, ধ্বংসযজ্ঞ, সাধারণ নাগরিকদের হত্যা সহ্য করে হিজবুল্লাহ ফিনিক্স পাখির মতো আবার জেগে উঠেছে। আরও সংহত হয়ে হিজবুল্লাহর যোদ্ধারা ইসরাইলের উপর ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে যে আক্রমণ শানিয়েছে, তাতে ত্রাহি ত্রাহি রব উঠেছে তেল আবিব ও হাইফায়। তারা লেবাননে ৪০০০ নারী, পুরুষ, শিশুকে হত্যা করার পর যখন দেখেছে হিজবুল্লাহর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে কিন্তু তাদের ঈমানী তেজ ও লড়াইয়ের ক্ষমতা বিন্দুমাত্র হ্রাস পায়নি। ইসরাইলের আয়রন ডোমের তথাকথিত সুরক্ষাকে ভেদ করে হিজবুল্লাহর রকেটগুলি ইসরাইলের ভেতর সঠিক লক্ষ্যে আঘাত হানছে।
ইসরাইলের 'অবৈধ পিতা' মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, ব্রিটেন বুঝতে পারে লেবাননে হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে অভিযান চালানো ভুল হয়ে গেছে। আর এভাবে চললে ইসরাইলের পতন নিশ্চিত। তাই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, ফ্রান্স তড়িঘড়ি তাদের অবৈধ সন্তান ইসরাইলকে বাঁচানোর জন্য যুদ্ধবিরতি চুক্তি করতে নেতানিয়াহুকে বাধ্য করেছে।
অবস্থা দেখে সারা পৃথিবী অন্তত তাই বলছে। কারণ, সাইয়েদ নাসরুল্লাহর হাতে গড়া হিজবুল্লাহ যেভাবে ইসরাইলের সেনা ও বিমানবাহিনী এবং ক্ষেপণাস্ত্র আক্রমণের মোকাবিলা করেছে এবং নেতৃবৃন্দ ও কমান্ডারদের গুপ্তহত্যা সত্ত্বেও পরাজয় স্বীকার কিংবা আত্মসমর্পণ করেনি তা দুনিয়ার যুদ্ধগুলির ইতিহাসে অবশ্যই একটি নজির হয়ে থাকবে।
ইসরাইল ভেবেছিল, অবরুদ্ধ গাজায় যেভাবে তারা জাতি-সাফাই অভিযান, শিশু ও নারীর নিধন, মানুষের জীবনের জন্য প্রয়োজনীয় সব পরিকাঠামো ধ্বংস করে ফেলেছে, তাতে তারা বিজয় হাসিল করেছে। আর তাই তারা লেবাননের হিজবুল্লাহ এবং ইয়েমেনের হুথি আনসারুল্লাহর দিকে নজর ঘুরিয়ে ছিল।
হিজবুল্লাহর আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত ইসরাইল প্রথমে কাপুরুষের মতো পেজার বিস্ফোরণ পরে হিজবুল্লাহ সর্বাধিনায়ক সাইয়েদ নাসরুল্লাহকে হত্যা করে। হত্যা করে পরবর্তী নেতৃত্বকেও। ইসরাইল উল্লাসের সঙ্গে সারাবিশ্বকে জানান দিয়েছিল, হিজবুল্লাহ খতম। আসলে ইসরাইল পশ্চিম এশিয়ার মধ্যে সবথেকে বেশি ভয় করত হিজবুল্লাহকে।
অকুতোভয় হিজবুল্লাহর যোদ্ধারা ২০০৬ সালে মাসব্যাপী যুদ্ধে ইসরাইলকে পরাজিত করেছিল। মারাত্মক ক্ষতির স্বীকার করে ইসরাইল হিজবুল্লাহর সঙ্গে যুদ্ধবিরতি চুক্তি করতে বাধ্য হয়েছিল। তখন থেকে হিজবুল্লাহ নাম শুনলেই ইসরাইলিদের মনে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেনের অনুরোধ মতো ইসরাইল বুধবার ভোর ৪টের সময় যুদ্ধবিরতি করছে বলে ঘোষণা দেয়।
ইসরাইলের আশঙ্কা ছিল, হিজবুল্লাহ কি শেষ পর্যন্ত এই যুদ্ধবিরতি মেনে নেবে? তারা কী দুর্ধর্ষ ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা বন্ধ করবে? কারণ, হিজবুল্লাহ সরাসরি কোনও যুদ্ধবিরতি আলোচনায় অংশ নেয়নি। তাদের হয়ে লেবানন পার্লামেন্টের স্পিকার নাবি বেরী ইসরাইল ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির আলোচনা করেন।
এই নাবি বেরী যুদ্ধবিরতি চুক্তি ঘোষণা মাত্রই দেশবাসী যারা ইসরাইলের আক্রমণে ঘরহারা হয়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছিলেন, তাদের আহ্বান জানিয়েছে, আপনারা নিজেদের জমিনে ফিরে আসুন। আপনাদের উপস্থিতি আপনাদের জমিনকে আরও শক্তিশালী করবে। আপনারা অবশ্যই ফিরে আসুন। যে জমি শহিদের রক্তে স্নাত হয়েছে, তাকে আপনাদের রক্ষা করতে হবে। আপনারা নিজ ভূমিতেই প্রত্যাবর্তন করলেই আপনাদের বিজয় আরও মজবুত হবে।
পুরো লেবানন জুড়ে এখন বিজয় উৎসব চলছে। লেবাননি ও হিজবুল্লাহ যোদ্ধাদের পরিবার যারা বাঁচার জন্য সিরিয়া, ইরাক-সহ অন্যান্য জায়গায় বিধ্বস্ত ঘরবাড়ি ছেড়ে আশ্রয় নিতে বাধ্য হচ্ছিল, তারা 'ভি সাইন' বা বিজয় চিহ্ন দেখিয়ে ফিরে আসছে। প্রিয়জনকে হারিয়ে তাদের চোখে অশ্রু। আবার ইসরাইল ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো দানবীয় শক্তিকে পরাজিত করতে পারায় যে আনন্দ, তা তাদের চোখে-মুখে ফুটে উঠছে। তাই ৪০০০-এরও বেশি নিরস্ত্র লেবাননি নাগরিকের শাহদত সত্ত্বেও তারা এখন খুশি। তারা আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করে স্লোগান দিচ্ছে 'আল্লাহ হু আকবর'।
তা কী করে হল এই যুদ্ধবিরতি? আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পলাতক বলে ঘোষিত শিশু ও নারী ঘাতক নেতানিয়াহু একটি ভাষণ দিয়ে বলেন, তিনি ও তাঁর মন্ত্রিসভা লেবাননের সঙ্গে এক যুদ্ধবিরতি করতে চলেছেন। নেতানিয়াহু কৈফিয়ত দেন, হিজবুল্লাহর সঙ্গে এই যুদ্ধবিরতির সুযোগে ইসরাইল নিজেকে পুনরায় অস্ত্রসজ্জিত করতে পারবে। হামাস এবং ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধতে আরও বেশি নজর দিতে পারবে। নেতানিয়াহুর মন্ত্রিসভা তড়িঘড়ি এই যুদ্ধবিরতির পক্ষে ভোট দেয়। নেতানিয়াহুর ক্যাবিনেটে ১০-১ ভোটে এই যুদ্ধবিরতি স্বীকার করে।
এই যুদ্ধবিরতির ফলে ইসরাইলি সেনাবাহিনী লেবাননের যে অঞ্চল দখল করেছিল তা পরিত্যাগ করবে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন বড় মহত্ত্ব দেখিয়ে বলেছেন, তিনি প্রেসিডেন্ট পদ ছাড়ার আগে আর একবার গাজায় যুদ্ধবিরতির জন্য ভরপুর চেষ্টা করবেন। বড় বড় রাষ্ট্রনায়করা বোধহয় এতই দ্বিচারী মহৎ হন।
মাত্র দিন কয়েক আগে নিরাপত্তা পরিষদে সমস্ত সদস্য গাজা ও লেবাননে যুদ্ধবিরতির পক্ষে ভোট দিলেও শুধুমাত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাতে ভেটো প্রদান করে। নইলে যুদ্ধবিরতি ও হত্যাযজ্ঞ বন্ধের ঘোষণা গাজাতেও প্রসারিত হত।
লেবাননে হিজবুল্লাহর সঙ্গে যুদ্ধবিরতি মেনে নেওয়ার এক সাফাই দিয়েছেন শিশু ও নারী ঘাতক নেতানিয়াহু। তিনি বলেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হুমকিতেই তিনি হিজবুল্লাহর সঙ্গে যুদ্ধবিরতি মেনে নিতে বাধ্য হয়েছেন। কিন্তু হিজবুল্লাহর কাছে যে ইসরাইলি বাহিনী পরাজয়ের মুখে এসে দাঁড়িয়েছিল সেই সম্পর্কে কোনও কথা এই যায়নবাদী প্রধানমন্ত্রী উচ্চারণ করেননি।
এ দিকে ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ বাহিনীগুলি হিজবুল্লাহ ও লেবানিজ জনগণকে তাদের বিজয়ের জন্য অভিনন্দন জানিয়েছেন। সেইসঙ্গে ধন্যবাদ জানিয়েছেন গাজার যোদ্ধা ও জনগণের পাশে দাঁড়ানোর জন্য। এ দিকে গাজা যুদ্ধের ৪১৮ দিন অতিক্রান্ত হল। গাজায় এখন নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ৪৪ হাজার এবং আহতের সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে ১,০৪,৮৮০।
ইসরাইল গাজাতে এখনও পর্যন্ত বিজয় হাসিল করতে পারেনি। হামাসের যোদ্ধারা এত ক্ষয়ক্ষতি স্বীকার করেও তাদের সমানে প্রতিরোধ করে যাচ্ছে। আর সারাবিশ্বে শিশু ও নারী ঘাতক ইসরাইলিদের বিরুদ্ধে ঘৃণা ও বিদ্বেষ ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে।
তাহলে কী ইসরাইল শেষ পর্যন্ত লেবাননে হিজবুল্লাহর হাতে হেরে গেল? কারণ, মহাশক্তিধর নৃশংস ঘাতক নেতানিয়াহু হিজবুল্লাহর সঙ্গে যুদ্ধবিরতি চুক্তি করতে বাধ্য হয়েছে। বর্তমানে মার্কিন ও ফ্রান্সের মধ্যস্থতায় লেবাননের উপর বর্বর আক্রমণ বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে যায়নবাদী ইসরাইল।
অবশ্য তার কারণও রয়েছে। নেতৃবৃন্দের হত্যা, ধ্বংসযজ্ঞ, সাধারণ নাগরিকদের হত্যা সহ্য করে হিজবুল্লাহ ফিনিক্স পাখির মতো আবার জেগে উঠেছে। আরও সংহত হয়ে হিজবুল্লাহর যোদ্ধারা ইসরাইলের উপর ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে যে আক্রমণ শানিয়েছে, তাতে ত্রাহি ত্রাহি রব উঠেছে তেল আবিব ও হাইফায়। তারা লেবাননে ৪০০০ নারী, পুরুষ, শিশুকে হত্যা করার পর যখন দেখেছে হিজবুল্লাহর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে কিন্তু তাদের ঈমানী তেজ ও লড়াইয়ের ক্ষমতা বিন্দুমাত্র হ্রাস পায়নি। ইসরাইলের আয়রন ডোমের তথাকথিত সুরক্ষাকে ভেদ করে হিজবুল্লাহর রকেটগুলি ইসরাইলের ভেতর সঠিক লক্ষ্যে আঘাত হানছে।
ইসরাইলের 'অবৈধ পিতা' মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, ব্রিটেন বুঝতে পারে লেবাননে হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে অভিযান চালানো ভুল হয়ে গেছে। আর এভাবে চললে ইসরাইলের পতন নিশ্চিত। তাই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, ফ্রান্স তড়িঘড়ি তাদের অবৈধ সন্তান ইসরাইলকে বাঁচানোর জন্য যুদ্ধবিরতি চুক্তি করতে নেতানিয়াহুকে বাধ্য করেছে।
অবস্থা দেখে সারা পৃথিবী অন্তত তাই বলছে। কারণ, সাইয়েদ নাসরুল্লাহর হাতে গড়া হিজবুল্লাহ যেভাবে ইসরাইলের সেনা ও বিমানবাহিনী এবং ক্ষেপণাস্ত্র আক্রমণের মোকাবিলা করেছে এবং নেতৃবৃন্দ ও কমান্ডারদের গুপ্তহত্যা সত্ত্বেও পরাজয় স্বীকার কিংবা আত্মসমর্পণ করেনি তা দুনিয়ার যুদ্ধগুলির ইতিহাসে অবশ্যই একটি নজির হয়ে থাকবে।
ইসরাইল ভেবেছিল, অবরুদ্ধ গাজায় যেভাবে তারা জাতি-সাফাই অভিযান, শিশু ও নারীর নিধন, মানুষের জীবনের জন্য প্রয়োজনীয় সব পরিকাঠামো ধ্বংস করে ফেলেছে, তাতে তারা বিজয় হাসিল করেছে। আর তাই তারা লেবাননের হিজবুল্লাহ এবং ইয়েমেনের হুথি আনসারুল্লাহর দিকে নজর ঘুরিয়ে ছিল।
হিজবুল্লাহর আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত ইসরাইল প্রথমে কাপুরুষের মতো পেজার বিস্ফোরণ পরে হিজবুল্লাহ সর্বাধিনায়ক সাইয়েদ নাসরুল্লাহকে হত্যা করে। হত্যা করে পরবর্তী নেতৃত্বকেও। ইসরাইল উল্লাসের সঙ্গে সারাবিশ্বকে জানান দিয়েছিল, হিজবুল্লাহ খতম। আসলে ইসরাইল পশ্চিম এশিয়ার মধ্যে সবথেকে বেশি ভয় করত হিজবুল্লাহকে।
অকুতোভয় হিজবুল্লাহর যোদ্ধারা ২০০৬ সালে মাসব্যাপী যুদ্ধে ইসরাইলকে পরাজিত করেছিল। মারাত্মক ক্ষতির স্বীকার করে ইসরাইল হিজবুল্লাহর সঙ্গে যুদ্ধবিরতি চুক্তি করতে বাধ্য হয়েছিল। তখন থেকে হিজবুল্লাহ নাম শুনলেই ইসরাইলিদের মনে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেনের অনুরোধ মতো ইসরাইল বুধবার ভোর ৪টের সময় যুদ্ধবিরতি করছে বলে ঘোষণা দেয়।
ইসরাইলের আশঙ্কা ছিল, হিজবুল্লাহ কি শেষ পর্যন্ত এই যুদ্ধবিরতি মেনে নেবে? তারা কী দুর্ধর্ষ ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা বন্ধ করবে? কারণ, হিজবুল্লাহ সরাসরি কোনও যুদ্ধবিরতি আলোচনায় অংশ নেয়নি। তাদের হয়ে লেবানন পার্লামেন্টের স্পিকার নাবি বেরী ইসরাইল ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির আলোচনা করেন।
এই নাবি বেরী যুদ্ধবিরতি চুক্তি ঘোষণা মাত্রই দেশবাসী যারা ইসরাইলের আক্রমণে ঘরহারা হয়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছিলেন, তাদের আহ্বান জানিয়েছে, আপনারা নিজেদের জমিনে ফিরে আসুন। আপনাদের উপস্থিতি আপনাদের জমিনকে আরও শক্তিশালী করবে। আপনারা অবশ্যই ফিরে আসুন। যে জমি শহিদের রক্তে স্নাত হয়েছে, তাকে আপনাদের রক্ষা করতে হবে। আপনারা নিজ ভূমিতেই প্রত্যাবর্তন করলেই আপনাদের বিজয় আরও মজবুত হবে।
পুরো লেবানন জুড়ে এখন বিজয় উৎসব চলছে। লেবাননি ও হিজবুল্লাহ যোদ্ধাদের পরিবার যারা বাঁচার জন্য সিরিয়া, ইরাক-সহ অন্যান্য জায়গায় বিধ্বস্ত ঘরবাড়ি ছেড়ে আশ্রয় নিতে বাধ্য হচ্ছিল, তারা 'ভি সাইন' বা বিজয় চিহ্ন দেখিয়ে ফিরে আসছে। প্রিয়জনকে হারিয়ে তাদের চোখে অশ্রু। আবার ইসরাইল ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো দানবীয় শক্তিকে পরাজিত করতে পারায় যে আনন্দ, তা তাদের চোখে-মুখে ফুটে উঠছে। তাই ৪০০০-এরও বেশি নিরস্ত্র লেবাননি নাগরিকের শাহদত সত্ত্বেও তারা এখন খুশি। তারা আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করে স্লোগান দিচ্ছে 'আল্লাহ হু আকবর'।
তা কী করে হল এই যুদ্ধবিরতি? আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পলাতক বলে ঘোষিত শিশু ও নারী ঘাতক নেতানিয়াহু একটি ভাষণ দিয়ে বলেন, তিনি ও তাঁর মন্ত্রিসভা লেবাননের সঙ্গে এক যুদ্ধবিরতি করতে চলেছেন। নেতানিয়াহু কৈফিয়ত দেন, হিজবুল্লাহর সঙ্গে এই যুদ্ধবিরতির সুযোগে ইসরাইল নিজেকে পুনরায় অস্ত্রসজ্জিত করতে পারবে। হামাস এবং ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধতে আরও বেশি নজর দিতে পারবে। নেতানিয়াহুর মন্ত্রিসভা তড়িঘড়ি এই যুদ্ধবিরতির পক্ষে ভোট দেয়। নেতানিয়াহুর ক্যাবিনেটে ১০-১ ভোটে এই যুদ্ধবিরতি স্বীকার করে।
এই যুদ্ধবিরতির ফলে ইসরাইলি সেনাবাহিনী লেবাননের যে অঞ্চল দখল করেছিল তা পরিত্যাগ করবে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন বড় মহত্ত্ব দেখিয়ে বলেছেন, তিনি প্রেসিডেন্ট পদ ছাড়ার আগে আর একবার গাজায় যুদ্ধবিরতির জন্য ভরপুর চেষ্টা করবেন। বড় বড় রাষ্ট্রনায়করা বোধহয় এতই দ্বিচারী মহৎ হন।
মাত্র দিন কয়েক আগে নিরাপত্তা পরিষদে সমস্ত সদস্য গাজা ও লেবাননে যুদ্ধবিরতির পক্ষে ভোট দিলেও শুধুমাত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাতে ভেটো প্রদান করে। নইলে যুদ্ধবিরতি ও হত্যাযজ্ঞ বন্ধের ঘোষণা গাজাতেও প্রসারিত হত।
লেবাননে হিজবুল্লাহর সঙ্গে যুদ্ধবিরতি মেনে নেওয়ার এক সাফাই দিয়েছেন শিশু ও নারী ঘাতক নেতানিয়াহু। তিনি বলেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হুমকিতেই তিনি হিজবুল্লাহর সঙ্গে যুদ্ধবিরতি মেনে নিতে বাধ্য হয়েছেন। কিন্তু হিজবুল্লাহর কাছে যে ইসরাইলি বাহিনী পরাজয়ের মুখে এসে দাঁড়িয়েছিল সেই সম্পর্কে কোনও কথা এই যায়নবাদী প্রধানমন্ত্রী উচ্চারণ করেননি।
এ দিকে ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ বাহিনীগুলি হিজবুল্লাহ ও লেবানিজ জনগণকে তাদের বিজয়ের জন্য অভিনন্দন জানিয়েছেন। সেইসঙ্গে ধন্যবাদ জানিয়েছেন গাজার যোদ্ধা ও জনগণের পাশে দাঁড়ানোর জন্য। এ দিকে গাজা যুদ্ধের ৪১৮ দিন অতিক্রান্ত হল। গাজায় এখন নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ৪৪ হাজার এবং আহতের সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে ১,০৪,৮৮০।
ইসরাইল গাজাতে এখনও পর্যন্ত বিজয় হাসিল করতে পারেনি। হামাসের যোদ্ধারা এত ক্ষয়ক্ষতি স্বীকার করেও তাদের সমানে প্রতিরোধ করে যাচ্ছে। আর সারাবিশ্বে শিশু ও নারী ঘাতক ইসরাইলিদের বিরুদ্ধে ঘৃণা ও বিদ্বেষ ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে।