Announcement

Collapse
No announcement yet.

পুলিশ আমার ছেলেকে মেরেছে | সম্ভল দাঙ্গায় নিহত মুসলিম তরুণরা অন্যান্য দিনের মতোই বাড়ি থেকে কাজে বেরিয়েছিল।

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • পুলিশ আমার ছেলেকে মেরেছে | সম্ভল দাঙ্গায় নিহত মুসলিম তরুণরা অন্যান্য দিনের মতোই বাড়ি থেকে কাজে বেরিয়েছিল।

    পুলিশ আমার ছেলেকে মেরেছে।
    সম্ভল দাঙ্গায় নিহত মুসলিম তরুণরা অন্যান্য দিনের মতোই বাড়ি থেকে কাজে বেরিয়েছিল।


    রবিবার উত্তরপ্রদেশের সম্ভলে কয়েক শতাব্দী প্রাচীন জামা মসজিদে সার্ভে করার নামে যে উত্তেজনার পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় তাতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন পাঁচ জন। কী বলছেন স্থানীয় মানুষজন ও সন্তান হারা পরিবারের লোকজন?

    রবিবার সম্ভলের ওই প্রাচীন জামা মসজিদকে কেন্দ্র করে উত্তেজনার সময় পুলিশ নির্বিচারে মুসলিম তরুণদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়। ঘটনার শুরু হয়, সম্ভলের ওই প্রাচীন মসজিদটিকে হিন্দু মন্দির বলে দাবি করে ইউপি-র আদালতে একটি মামলা করা হয় যেন মসজিদটি গেরুয়া পক্ষের হাতে তুলে দেওয়া হয়। আর আদালতও সঙ্গে সঙ্গে এক সার্ভে রিপোর্ট করার জন্য আদেশ দেয়।

    রবিবার মসজিদে সার্ভে বা জরিপ করতে আসে সমীক্ষকদের একটি টিম। এই পরিস্থিতিতে পরীক্ষকদের টিম আসতেই স্থানীয় মুসলিমরা প্রতিবাদ জানাতে শুরু করে। পুলিশ বিক্ষোভকারীদের হটাতে প্রথমে বেপরোয়া লাঠিচার্জ শুরু করে। আর এতেই পরিস্থিতি তপ্ত হয়ে ওঠে। পুলিশ কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে। কিন্তু, তারপরই হঠাৎ পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনী একযোগে প্রতিবাদী জনতাকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। তাতেই ৫ জনের মৃত্যুর হয়। আহত আরও অনেক।

    রবিবার সকালে, ১৮ বছর বয়সী মুহাম্মদ কাইফ বাজারের উদ্দেশ্যে রওনা হন, সেখানেই কাইফ একটি প্রসাধনীর দোকানে কাজ করেন। এটাই তাঁর বাড়ি থেকে শেষবারের মতো বের হওয়া এবং এই শেষবার তাঁর পরিবার তাঁকে দেখেছিল। সম্ভলের প্রাচীন জামা মসজিদের কাছে অশান্তির খবর পেয়ে, কাইফের মা আনিশা তার কনিষ্ঠ পুত্রের সন্ধানে রওনা হন। কিন্তু মাগরিবের নামাজের পর, পুলিশ কর্মকর্তারা তাঁর বাড়িতে পৌঁছে তাঁকে দুঃসংবাদ দেন যে কাইফ আর নেই।

    বাড়িতে কাইফের বড় ভাই মুহাম্মদ জায়েদ আহত অবস্থায় ছিলেন, তাঁর হাত ও বাহু ব্যান্ডেজ করা হয়েছে। তাঁর স্ত্রী ফারহানা ও তাঁর মা তাঁর দেখাশোনা করছিলেন। মহিলারা জানান, সহিংসতার পর পুলিশ ওই দিন সম্ভলের তুর্তেপুরা এলাকায় তাঁদের বাড়িতে হানা দেয় এবং জায়েদকে জোর করে তুলে নিয়ে যায়। এমনকি তাঁর মা আনিশা বলেন, 'ওরা দরজা ভেঙে তাঁকে নিয়ে গেছে। পরে বাড়ির লোকজন থানায় গিয়ে তাঁর ভাই মারা যাওয়ায় জায়েদকে ছেড়ে দিতে অনুরোধ করে। এরপর পুলিশ তাঁকে ছেড়ে দেয়।' আনিশা এই কথাগুলো বললেও কাইফের বাবা বাধা দেন তাঁকে। তিনিও কিচ্ছু বলতে চান না। তাদের চোখেমুখে স্পষ্ট আতঙ্কের ছাপ।

    কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে খুনি পুলিশ অফিসারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে প্রশাসন উলটে নিরীহ মুসলিমদের গ্রেফতার করে।
    এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত দুই মহিলা ও বেশ কয়েকজন নাবালকসহ ২৫ জনেরও বেশি লোককে আটক করা হয়েছে। মসজিদ কমিটির সদর (প্রধান) অ্যাডভোকেট জাফর আলীকেও পুলিশ আটক করেছে।

    এখনও পর্যন্ত সাতটি এফআইআর নথিভুক্ত করা হয়েছে এবং সম্ভল সমাজবাদী পার্টির সাংসদ জিয়া-উর-রহমান বার্ক এবং স্থানীয় এসপি বিধায়ক ইকবাল মেহমুদের ছেলের বিরুদ্ধেও একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

    এদিকে, সম্বলে সহিংসতার পর ওই রাজকীয় জামে মসজিদের আশেপাশের এলাকায় হাই অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। এছাড়াও বিপুল সংখ্যক নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। ইন্টারনেট পরিসেবাও বন্ধ রয়েছে। সম্ভলের এসপি কৃষ্ণা বিষ্ণোই রবিবার সকালে যে সহিংসতা শুরু হয়েছিল তাতে এ পর্যন্ত চারজনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। যদিও পরে আরও একজনের মৃত্যু হয়। স্থানীয় বাসিন্দা জাররা হোসেনের মতে, সহিংসতা শুরু হয়েছিল পুলিশ অফিসারদের দ্বারা 'দুর্ব্যবহার' দিয়ে। তিনি বলেন, 'এটি একটি তর্কের মাধ্যমে শুরু হয়েছিল। কিন্তু আচমকা তারা লাঠিসোঁটা নিয়ে লোকজনের ওপর হামলা শুরু করলে লোকজন পাল্টা ঢিল ছুঁড়তে থাকে।'

    কাইফের মতো, ১৭ বছর বয়সী আয়ানও তার কাজের জন্য হানিফ বিরিয়ানি নামক একটি রেস্তোরাঁয় যাওয়ার জন্য রবিবার সকালে মহল্লা কোর্টপুরার বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন। তার সঙ্গে ছিলেন তার প্রতিবেশী ১৮ বছর বয়সী বাসিম, যিনি সেখানে কাজ করতেন। দাঙ্গার সময় দুজনেই আহত হন। বাসিম এখনও চিকিৎসাধীন, আয়ান মারা গেছে।

    তাঁর ছবি হাতে নিয়ে তাঁর মা নাফিশা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, 'মাদ্রাসায় পড়ার পর রেস্তোরাঁয় কাজ পান ছেলে। আয়ান ও বাসিম দুজনেই একসাথে বাড়ি থেকে বের হয়। পরে সন্ধ্যায় আমাদের জানানো হয় আয়ান মারা গেছে। রবিবার সকালে তাঁকে কাজে যেতে দেওয়া আমার উচিত হয়নি। কে ভেবেছিল পুলিশ আমার ছেলেকে মেরে ফেলবে।' অপরদিকে বাসিমের বাবা রিকশাচালক নাঈম কাঁদছিলেন। তিনি বলেন' বাসিমকে দুবার গুলি করা হয়। তাঁর অবস্থা এখনও ঝুঁকিপূর্ণ। আমি শুধু চাই আমার ছেলে জীবিত ফিরে আসুক।'

    সহিংসতায় নিহত অন্যদের মধ্যে বিলাল ও নাঈম রয়েছে। ৩৫ বছর বয়সী নাঈম চার সন্তানের পিতা এবং একটি মিষ্টির দোকান চালাতেন। সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে তাঁর ভাই তসলিম বলেন, 'নাঈম আটা ও তেল কিনতে দোকানে গিয়েছিলেন। আমাদের ধারণা ছিল না যে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে। বাজার জামে মসজিদ এলাকায় পড়ে। নাঈম দোকানে যাওয়ার সময় পুলিশ তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়।'

    নাঈমের বাড়ি থেকে মাত্র ২ কিলোমিটার দূরে ফরমান তার স্ত্রী, মা ও বোনদের নিয়ে থাকেন। পুলিশের হাতে আটক ব্যক্তিদের মধ্যে তিনি একজন। ফরমানের এক বোন ফারহিন বলেন, 'আমার ভাই আমাদের মহিষকে ঘাস খাওয়াচ্ছিলেন। দুজন ছুটে এলে পুলিশ তাদের ধাওয়া করে। তাদের আটক করার সময় তারা আমাদের ভাইকেও নিয়ে যায়। নাঈম ও ফরমান আত্মীয় বলে পরিবার জানিয়েছে।
    یہ قُرآن اُن سب چیزوں سے بہتر ہے جنہیں لوگ سمیٹ
    رہے ہیں۔

  • #2
    মুহতারাম ভাই, এই অবস্থায় আমাদের করণীয় কি?
    ‘যার গুনাহ অনেক বেশি তার সর্বোত্তম চিকিৎসা হল জিহাদ’-শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ.

    Comment

    Working...
    X