আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ.
মুহতারাম ভাইয়েরা আশা করি সবাই ভালো আছেন।
পর কথা-
পুরো বিশ্ব আফগানিস্তানের দিকে তাকিয়ে আছে। মার্কিনীরা চলে গেলে আফগান ও আফগানের জনগণের কি হবে? এই চিন্তায় তাদের ঠিকমত ঘুম হয় না! তজ্জন্য তারা বিশ্ব মিডিয়াতে বিভিন্ন রিপোর্ট প্রকাশ করছে। যার মাধ্যমে তারা তাদের ভয়, উৎকণ্ঠা ইত্যাদি প্রকাশ করেছে। কারণ, মার্কিনীরা চলে যাওয়া মানে তালেবানের ইসলামী ইমারত ক্ষমতায় আসা। আর এতে বিশ্ব মোড়লদের মাথা ব্যথা চরমে রয়েছে। পাশাপাশি আশেপাশের তাগুতী রাষ্ট্রগুলোও ভীষণ ভয়ের মধ্যে রয়েছে। যেমন চীন, ভারত প্রভৃতি।
অন্যদিকে বিশ্ব সুপার পাওয়ার রাষ্ট্রগুলোও তালেবানদেরকে উৎখাত করতে চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে। বরং তালেবান দিনদিন শক্তিশালী হয়ে উঠছে!
তবে সারা বিশ্বের মুসলিমরা আনন্দিত। আর ইমারতে ইসলামী ক্ষমতায় আসলে তো আনন্দের কোন সীমা থাকবে না।
তাই আমরা দীপ্ত কণ্ঠে বলি- ইসলামী ইমারাত- জিন্দাবাদ, ইসলামী ইমারাত- জিন্দাবাদ, জিন্দাবাদ-জিন্দাবাদ-জিন্দাবাদ
ইনশাআল্লাহ, আল্লাহ চাহে তো ইসলামী ইমারতের বিজয় অতি নিকটে। কারণ, ইতিমধ্যে মার্কিনীরা নিজেদের নাকে খত দিয়ে চলে যাচ্ছে। আলহামদুলিল্লাহ।
প্রশ্ন হচ্ছে- তারা কি নিয়ে ফিরে যাচ্ছে? তাদের প্রাপ্তি কী? আসুন দেখে নেই-
মার্কিনীদের আফগান যুদ্ধের প্রাপ্তির ছোট একটি পরিসংখ্যান-
১. যুদ্ধের মেয়াদ ২০ বছর
২. মার্কিন সেনার মৃত্যু ২৩০০ শ
৩. আহত ২০,০০০
৪. আফগান সেনা নিহত ৬০ হাজার
৫. ৭৭৮ বিলিয়ন ডলার খরচ, একটি সংস্থার মতে, ২,ট্রিলিয়ন ডলার।
এটা শুধু মার্কিনীদের অবস্থা এ ছাড়াও ন্যাটোর অন্য সদস্যদেরও অবস্থা তথৈবচ।
এই জন্য ঘোষণা দিয়ে লেজ গুটিয়ে পলায়ন করছে মার্কিন সেনারা। যদিও তারা ইতিপূর্বে ওয়াদা ভঙ্গ করেছে।
এবার আশা করা যায় নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই তারা চলে যাবে। নিচে একটি জাতীয় দৈনিকের অনলাইন সংস্করণ থেকে একটি রিপোর্ট হুবহু তুলে ধরছি-
১ মের মধ্যে সব মার্কিন সেনা আফগানিস্তান ছাড়া কথা থাকলে এখনো অর্ধেক সেনা রয়ে গেছে। তবে দ্রুত আফগানিস্তান ছেড়ে যাচ্ছে মার্কিন সেনারা। সামরিক পরিকল্পনাকারীদের বরাত দিয়ে ভয়েস অব আমেরিকা জানায়, প্রায় অর্ধেক সৈন্যকে দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে এবং সাজ সরঞ্জামগুলো হয় দেশে পাঠানো হয়েছে নয়তো নষ্ট করে ফেলা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় কমান্ড বা সেন্টকম মঙ্গলবার জানায়, ৩০ থেকে ৪৪ শতাংশ সৈন্য প্রত্যাহার এখন সম্পন্ন হয়েছে এবং ছয়টি স্থাপনা আফগান নিরাপত্তা বাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আরও অনেকগুলো ঘাঁটি সামনের দিনে হস্তান্তর করা হবে।
এক বিবৃতিতে সেন্টকম বলছে, “অনুমান করছি, আফগান জাতীয় প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা বাহিনী যখন দেশটিকে স্থিতিশীল ও নিরাপদ রাখার চেষ্টা করছে, তখন ভবিষ্যতে তাদের সাহায্য করতে পারে এমন আরও ঘাঁটি এবং সামরিক সম্পদ আমরা তাদের কাছে হস্তান্তর করতে পারবো।”
হালনাগাদ তথ্যে জানা গেছে যুক্তরাষ্ট্র ৩০০টি সি-সেভেন্টিন বিমানের ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন সরঞ্জাম আফগানিস্তান থেকে সরাতে সক্ষম হয়েছে। আরও ১৩ হাজার সাজসরঞ্জাম নষ্ট করে দেওয়ার জন্য পাঠানো হয়েছে।
মাত্র এক সপ্তাহ আগে সেন্টকম বলেছে, প্রত্যাহারের প্রায় ৪৪ শতাংশ সম্পন্ন করা হয়েছে । ওয়াশিংটনে আইন প্রণেতাদের সামনে সাক্ষ্য দেওয়ার সময়ে প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন বলেন যে সৈন্য প্রত্যাহারের গতি খানিকটা এগিয়ে আছে।
আরেকটি খবরে আফগান ও আমেরিকান কর্মকর্তাদের উদ্ধৃত করে বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, যুক্তরাষ্ট্র ২০ দিনের মধ্যে বাগরাম বিমান ঘাঁটি আফগান সরকারকে বুঝিয়ে দেবে।
মঙ্গলবার পেন্টাগনের প্রেস সচিব জন কারবি কোনোরকম সময়সীমা নিশ্চিত করতে অস্বীকৃতি জানান। তবে সংবাদদাতাদের বলেন, “স্পষ্টতই বাগরাম তাদের হাতে তুলে দেওয়া হবে।”
২০ বছরের সামরিক সংশ্লিষ্টতার পর আমেরিকান সৈন্যরা ১১ সেপ্টেম্বরের মধ্যেই আফগানিস্তান ত্যাগ করবে। এপ্রিলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এ ঘোষণা দেন। এরপর একই ঘোষণা দেয় ন্যাটো বাহিনী।
যুক্তরাষ্ট্রের আগের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে হওয়া চুক্তি অনুসারে, নির্দিষ্ট শর্ত সাপেক্ষে গত ১ মে’র মধ্যে সেনা প্রত্যাহার হওয়ার কথা ছিল। বাইডেনের নতুন ঘোষণার পর ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখায় তালিবানরা।
ঘোষণা অনুযায়ী, ১ মে যুক্তরাষ্ট্র সৈন্য প্রত্যাহার শুরু করে। সে দিন থেকে একাধিক সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে আফগানিস্তানে, নিহত ও আহত হয়েছে অসংখ্য বেসামরিক মানুষ।
প্রত্যাহারের ঘোষণার সময় আফগানিস্তানে আড়াই হাজার মার্কিন সেনা ছিল। ২০০১ সালে দেশটিতে সামরিক অভিযান শুরুর সময় এই সংখ্যা ছিল ১ লাখ। এই যুদ্ধে ২ হাজার ৪০০ মার্কিন সেনা নিহত হন। আহত হন আরও কয়েক হাজার।
সূত্র: একটি দৈনিক পত্রিকা, অনলাইন সংস্করণ
Comment