আপনাদের আরেকটি ঘটনার কথা বলি, ঘটনাটি গত বছর, ২০১৮এর সেপ্টেম্বর মাসের ২১ তারিখের।যেটি খবরে আসে এর ২ দিন পর। insaf24 নামক একটি অনলাইন পত্রিকাতে আসা ঘটনাটি হুবুহু এখানে দিচ্ছি-
"বাংলাদেশে ঢুকে গুলি চালিয়েছে ভারতের সীমান্ত রক্ষা বাহিনী বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স ,(বিএসএফ)। ।জানা গেছে, বিএসএফ’র এক সদস্য ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় ঢুকে গরু ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। এ সময় এলাকাবাসী বাধা দিলে বিএসএফ সদস্যরা গুলিবর্ষণ করে। পাশাপাশি বাড়িঘরে হামলা চালায়। এতে চার বাংলাদেশি গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়। এ সময় বিএসএফ খালেক মিয়া নামে এক বৃদ্ধকে ধরে নিয়ে যায়।শুক্রবার বিকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার বায়েক ইউনিয়নে মাদলা সীমান্তে এ ঘটনা ঘটে।গুলিবিদ্ধ হয়ে উপজেলার বায়েক ইউনিয়নের মাদলা গ্রামের শাজাহান, রাসেল, নান্নু ও ফারুকসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। আহতদের ওইদিন সন্ধ্যায় কসবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। তবে শাজাহান ও ফারুকের অবস্থা অবনতি হলে রাতেই উন্নত চিকিৎসার জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে ।" -----------(3)
হে আমার জাতি, এই নিরীহ বৃদ্ধটির কি অপরাধ ছিল? কি অপরাধ ছিল শাজাহান, রাসেল সহ অন্যান্য ভাইদের? তাঁরা কি কোন চোরাকারবারি দলের সদস্য? তাঁরা কি বিএসএফ এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে গিয়েছিল? তাঁরা কি ফিলিস্তিনি কিংবা কাশ্মীরি মুসলিমদের মত পাথর ছুড়ে মেরেছিল? এর সবগুলি প্রশ্নের উত্তর হল-না! না এবং না!
শুধু এসব ঘটনা নয়, ফেলানি সহ গত ২০ বছরে এই ভয়াবহ সীমান্তে অগণিত নিরীহ মুসলিমদের হত্যা করা হয়েছে। শুধু হত্যা নয়, অমানবিক নির্যাতন, ধর্ষণ, লুটপাট এমন কোন কার্যকলাপ নেই যা কিনা বিএসএফ করতে বাকি রেখেছে। আর এসবের সাথে নিখোঁজ হয়েছেন অগণিত! হয়ত এর বেশিরভাগই আমাদের দালাল মিডিয়া সেভাবে প্রচার করেনা। করলেও ট্যাগ থাকে- গরুর দালাল, চোরাকারবারি ইত্যাদি!
উপরে আপনাদের বলা দুটি ঘটনা ছাড়াও আরও অজস্র ঘটনা আছে যেগুলি হয়ত বলে শেষ করা যাবেনা, এরকম বেশ কিছু ঘটনা আছে এমন যেখানে নিরীহ মুসলিমকে ধরে নিয়ে গিয়ে উলঙ্গ করে অমানুষিক নির্যাতন করে লজ্জাস্থানে পেট্রোল ঢেলে দেওয়া হয়েছে, এমনও ঘটনা আছে যাদের চোখ উপড়ে ফেলা হয়েছে, সারাজীবনের জন্য হাত- পা ভেঙ্গে পঙ্গু করে দেওয়া হয়েছে! আপনারা শুধু বলেন- কি অপরাধ ছিল এই নিরীহ মানুষগুলির? ---- (4)
বাংলাদেশের তাগুতি দালাল মিডিয়া ও প্রশাসনের দাবি অনুযায়ী গত দেড় দশকে এই হত্যাকাণ্ডের সংখ্যা প্রায় দেড় হাজার। বাস্তবে যে এই সংখ্যাটা আরও অনেক এবং অনেক বেশি এই ব্যাপারে কারো সন্দেহ থাকা উচিত নয়। যে মিডিয়া প্রচার করে শাপলা চত্বরে কারো লাশ পড়েনি, সবাই রঙ মেখে শুয়েছিল, তারাই যদি বলে দেড় হাজার তাহলে বাস্তবে কত হতে পারে সেটি আপনারা চিন্তা করে দেখেন!
প্রিয় উম্মাহ! তারপরেও এই দালাল মিডিয়া ও এদেশের অন্যান্য মানবাধিকার সংস্থার পরিসংখ্যান অনুসারেই আপনাদের নিচে কিছু হিসাব দিচ্ছি ইনশাআল্লাহ। আপনাদের এটা মনে রাখতে হবে উপরের পরিসংখ্যানটি কোনভাবেই প্রকৃত পরিসংখ্যান হতে পারেনা। বাস্তবে এই সংখ্যাটা অবশ্যই অনেক বেশি!
(আল্লাহই সর্বজ্ঞ।)
পরিসংখ্যান বলছে- শুধুমাত্র ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০১ সালের এপ্রিল পর্যন্ত সীমান্তে ৩শ ১২ বার হামলা চালানো হয়। আরেকবার বলছি সংখ্যাটা- ৩১২ বার, মাত্র ৫ বছরে। তাহলে ২০ বছরে কতবার হামলা হতে পারে??
আর ৯৬-২০০১ পর্যন্ত ১২৪ বাংলাদেশী মুসলিমদের হত্যা করা হয়।
মানবাধিকার সংস্থা "অধিকার" এর প্রতিবেদন অনুযায়ী-
২০০০ সালে- ৩৯ জন,
২০০১ সালে- ৯৪ জন,
২০০২ সালে- ১০৫ জন
২০০৩ সালে- ৪৩ জন,
২০০৫ সালে- ১০৪ জন,
২০০৬ সালে- ১৪৬ জন,
২০০০৭ সালে- ১২০ জন,
২০০৮ সালে- ৬২ জন,
২০০৯ সালে- ৯৮ জন
২০১০ সালে- ৭৪ জন,
২০১১ সালে- ৩১ জন,
এই নিহত হওয়া ছাড়াও এই কবছরে বিএসএফএর হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন ৯২৩জন,ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ১৫ জন, অপহরণের শিকার ৯৩৩ জন, নিখোঁজ হয়েছেন ১৮৬ জন!
বাংলাদেশের মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) হিসেব অনুযায়ী, ২০১৩ সালে মোট ২৭ জন বাংলাদেশীকে হত্যা করে বিএসএফ সদস্যরা। তাদের মধ্যে ১২ জনকে গুলি করে এবং ১৪ জনকে নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করা হয়। ২০১৪ সালে হত্যা করা হয়েছে ৩৩ জন বাংলাদেশীকে। এরমধ্যে গুলি ও নির্যাতনে সমান সংখ্যক বাংলাদেশীকে হত্যা করা হয়। ২০১৫ সালে হত্যা করা হয়েছে ৪৬ জনকে। এদের মধ্যে ৩২ জনকে গুলী এবং ১৪ জনকে নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করা হয়!
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এর প্রতিবেদন অনুসারে- এই কয়েক বছরে এমন হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করার জন্য বিএসএফ গুলি ব্যবহার করা সহ, পিটিয়ে,ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে এবং বেয়নেট নিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে অমানুষিক নির্যাতন করে হত্যা করেছে এদেশীয় মুসলিমদের।
দ্যা ফিনানশিয়াল এক্সপ্রেসের মতে- প্রতি চারদিনে একজন করে বাংলাদেশিদের সীমান্তে হত্যা করেছে ভারত!
মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) এর মতে- সীমান্তে নিরীহ বাংলাদেশিদের হত্যাকাণ্ড শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে 'সম্ভাব্য সব রকমের পদক্ষেপ নেওয়ার ' আশ্বাস দেওয়ার পরেও বিএসএফএর গুলি বর্ষণ আর নির্যাতন বন্ধ না হয়ে বরং তা আগের মতই অব্যাহত আছে। আর বিএসএফএর ট্রিগারের শিকার হওয়া কিংবা নির্মম নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন যেসব বাংলাদেশি নাগরিক তাঁরা সবসময় নিরস্ত্র অবস্থায় ছিল!
----------- (5)
----------------------------------(চলবে ইনশাআল্লাহ)
রেফারেন্সঃ
(4)
5)
"বাংলাদেশে ঢুকে গুলি চালিয়েছে ভারতের সীমান্ত রক্ষা বাহিনী বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স ,(বিএসএফ)। ।জানা গেছে, বিএসএফ’র এক সদস্য ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় ঢুকে গরু ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। এ সময় এলাকাবাসী বাধা দিলে বিএসএফ সদস্যরা গুলিবর্ষণ করে। পাশাপাশি বাড়িঘরে হামলা চালায়। এতে চার বাংলাদেশি গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়। এ সময় বিএসএফ খালেক মিয়া নামে এক বৃদ্ধকে ধরে নিয়ে যায়।শুক্রবার বিকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার বায়েক ইউনিয়নে মাদলা সীমান্তে এ ঘটনা ঘটে।গুলিবিদ্ধ হয়ে উপজেলার বায়েক ইউনিয়নের মাদলা গ্রামের শাজাহান, রাসেল, নান্নু ও ফারুকসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। আহতদের ওইদিন সন্ধ্যায় কসবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। তবে শাজাহান ও ফারুকের অবস্থা অবনতি হলে রাতেই উন্নত চিকিৎসার জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে ।" -----------(3)
হে আমার জাতি, এই নিরীহ বৃদ্ধটির কি অপরাধ ছিল? কি অপরাধ ছিল শাজাহান, রাসেল সহ অন্যান্য ভাইদের? তাঁরা কি কোন চোরাকারবারি দলের সদস্য? তাঁরা কি বিএসএফ এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে গিয়েছিল? তাঁরা কি ফিলিস্তিনি কিংবা কাশ্মীরি মুসলিমদের মত পাথর ছুড়ে মেরেছিল? এর সবগুলি প্রশ্নের উত্তর হল-না! না এবং না!
শুধু এসব ঘটনা নয়, ফেলানি সহ গত ২০ বছরে এই ভয়াবহ সীমান্তে অগণিত নিরীহ মুসলিমদের হত্যা করা হয়েছে। শুধু হত্যা নয়, অমানবিক নির্যাতন, ধর্ষণ, লুটপাট এমন কোন কার্যকলাপ নেই যা কিনা বিএসএফ করতে বাকি রেখেছে। আর এসবের সাথে নিখোঁজ হয়েছেন অগণিত! হয়ত এর বেশিরভাগই আমাদের দালাল মিডিয়া সেভাবে প্রচার করেনা। করলেও ট্যাগ থাকে- গরুর দালাল, চোরাকারবারি ইত্যাদি!
উপরে আপনাদের বলা দুটি ঘটনা ছাড়াও আরও অজস্র ঘটনা আছে যেগুলি হয়ত বলে শেষ করা যাবেনা, এরকম বেশ কিছু ঘটনা আছে এমন যেখানে নিরীহ মুসলিমকে ধরে নিয়ে গিয়ে উলঙ্গ করে অমানুষিক নির্যাতন করে লজ্জাস্থানে পেট্রোল ঢেলে দেওয়া হয়েছে, এমনও ঘটনা আছে যাদের চোখ উপড়ে ফেলা হয়েছে, সারাজীবনের জন্য হাত- পা ভেঙ্গে পঙ্গু করে দেওয়া হয়েছে! আপনারা শুধু বলেন- কি অপরাধ ছিল এই নিরীহ মানুষগুলির? ---- (4)
বাংলাদেশের তাগুতি দালাল মিডিয়া ও প্রশাসনের দাবি অনুযায়ী গত দেড় দশকে এই হত্যাকাণ্ডের সংখ্যা প্রায় দেড় হাজার। বাস্তবে যে এই সংখ্যাটা আরও অনেক এবং অনেক বেশি এই ব্যাপারে কারো সন্দেহ থাকা উচিত নয়। যে মিডিয়া প্রচার করে শাপলা চত্বরে কারো লাশ পড়েনি, সবাই রঙ মেখে শুয়েছিল, তারাই যদি বলে দেড় হাজার তাহলে বাস্তবে কত হতে পারে সেটি আপনারা চিন্তা করে দেখেন!
প্রিয় উম্মাহ! তারপরেও এই দালাল মিডিয়া ও এদেশের অন্যান্য মানবাধিকার সংস্থার পরিসংখ্যান অনুসারেই আপনাদের নিচে কিছু হিসাব দিচ্ছি ইনশাআল্লাহ। আপনাদের এটা মনে রাখতে হবে উপরের পরিসংখ্যানটি কোনভাবেই প্রকৃত পরিসংখ্যান হতে পারেনা। বাস্তবে এই সংখ্যাটা অবশ্যই অনেক বেশি!
(আল্লাহই সর্বজ্ঞ।)
পরিসংখ্যান বলছে- শুধুমাত্র ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০১ সালের এপ্রিল পর্যন্ত সীমান্তে ৩শ ১২ বার হামলা চালানো হয়। আরেকবার বলছি সংখ্যাটা- ৩১২ বার, মাত্র ৫ বছরে। তাহলে ২০ বছরে কতবার হামলা হতে পারে??
আর ৯৬-২০০১ পর্যন্ত ১২৪ বাংলাদেশী মুসলিমদের হত্যা করা হয়।
মানবাধিকার সংস্থা "অধিকার" এর প্রতিবেদন অনুযায়ী-
২০০০ সালে- ৩৯ জন,
২০০১ সালে- ৯৪ জন,
২০০২ সালে- ১০৫ জন
২০০৩ সালে- ৪৩ জন,
২০০৫ সালে- ১০৪ জন,
২০০৬ সালে- ১৪৬ জন,
২০০০৭ সালে- ১২০ জন,
২০০৮ সালে- ৬২ জন,
২০০৯ সালে- ৯৮ জন
২০১০ সালে- ৭৪ জন,
২০১১ সালে- ৩১ জন,
এই নিহত হওয়া ছাড়াও এই কবছরে বিএসএফএর হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন ৯২৩জন,ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ১৫ জন, অপহরণের শিকার ৯৩৩ জন, নিখোঁজ হয়েছেন ১৮৬ জন!
বাংলাদেশের মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) হিসেব অনুযায়ী, ২০১৩ সালে মোট ২৭ জন বাংলাদেশীকে হত্যা করে বিএসএফ সদস্যরা। তাদের মধ্যে ১২ জনকে গুলি করে এবং ১৪ জনকে নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করা হয়। ২০১৪ সালে হত্যা করা হয়েছে ৩৩ জন বাংলাদেশীকে। এরমধ্যে গুলি ও নির্যাতনে সমান সংখ্যক বাংলাদেশীকে হত্যা করা হয়। ২০১৫ সালে হত্যা করা হয়েছে ৪৬ জনকে। এদের মধ্যে ৩২ জনকে গুলী এবং ১৪ জনকে নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করা হয়!
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এর প্রতিবেদন অনুসারে- এই কয়েক বছরে এমন হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করার জন্য বিএসএফ গুলি ব্যবহার করা সহ, পিটিয়ে,ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে এবং বেয়নেট নিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে অমানুষিক নির্যাতন করে হত্যা করেছে এদেশীয় মুসলিমদের।
দ্যা ফিনানশিয়াল এক্সপ্রেসের মতে- প্রতি চারদিনে একজন করে বাংলাদেশিদের সীমান্তে হত্যা করেছে ভারত!
মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) এর মতে- সীমান্তে নিরীহ বাংলাদেশিদের হত্যাকাণ্ড শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে 'সম্ভাব্য সব রকমের পদক্ষেপ নেওয়ার ' আশ্বাস দেওয়ার পরেও বিএসএফএর গুলি বর্ষণ আর নির্যাতন বন্ধ না হয়ে বরং তা আগের মতই অব্যাহত আছে। আর বিএসএফএর ট্রিগারের শিকার হওয়া কিংবা নির্মম নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন যেসব বাংলাদেশি নাগরিক তাঁরা সবসময় নিরস্ত্র অবস্থায় ছিল!
----------- (5)
----------------------------------(চলবে ইনশাআল্লাহ)
রেফারেন্সঃ
(4)
5)
Comment