নামাজ পড়তে আসছি, না শ্যুটিং দেখতে আসছি?
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বাংলামেইল২৪ডটকম
ঢাকা : আমরা কি নামাজ পড়তে আসছি না শ্যুটিং দেখতি আসছি? এভাবে তো নামাজ হয় না। নামাজের বদলে গুনাহর কাজ হচ্ছে এখানে- এভাবেই জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম কর্তৃপক্ষের প্রতি খেদ প্রকাশ করেছেন মুসল্লিরা।
আজ শুক্রবার (১৫ জুলাই) জুমার নামাজের সময় টেলিভিশন ক্যামেরা পারসনদের যা’চ্ছে তা আচরণ ও নামাজের নিমগ্নতা ভঙ্গ করে ভিডিও ধারণ করতে গেলে ক্ষুব্ধ মুসল্লিরা এভাবেই নিজেদের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের (ইফা) নির্দেশনা অনুযায়ী জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমসহ দেশের মসজিদগুলোতে মুসল্লিদের উদ্দেশ্যে জঙ্গিবাদবিরোধী খুতবা পাঠ করার দিন ছিল শুক্রবার। সে খবর ও ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করার জন্য জুমার নামাজের আগে থেকেই হুমড়ি খেয়ে পড়েছিলেন বিভিন্ন চ্যানেলের প্রতিবেদক ও ক্যামেরা পারসনরা।
নামাজের আগে ফুটেজ সংগ্রহ নিয়ে মুসল্লিদের মধ্যে তেমন একটা বিরক্তির উদ্রেক না ঘটলেও নামাজ শুরুর পর কাতারের সামনে ক্যামেরা পারসনদের যাচ্ছে তা ছুটাছুটি ও ফুটেজ সংগ্রহ নিয়ে যারপরনাই বিরক্ত হন সাধারণ মুসল্লিরা। তারা জানিয়েছেন ক্যামেরা পারসনদের নিয়ম বহির্ভূত আচরণে নামাজে ব্যাঘাত ঘটেছে। এর জন্য অবশ্য ক্যামেরা পারসনদের দোষারোপ করেননি মুসল্লিরা। তারা বলেছেন-এটা মসজিদ কৃর্তৃপক্ষেরই ভুল। তারা আগে থেকেই একটা নির্দেশনা দিতে পারতেন সাংবাদিকদের। একটা নির্দিষ্ট স্থানে দাঁড়িয়ে ফুটেজ সংগ্রহ করা যেতো। কিন্তু কোনো নির্দেশনা বা নিয়ন্ত্রণ না থাকায় ক্যামেরা পারসনরা যাচ্ছে তা ভাবে ছুটাছুটি করেছেন। এতে নামাজের মগ্নতা ও পবিত্রতা নষ্ট হয়েছে।
দেখা গেছে, জুমার নামাজকে ঘিরে বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলগুলো মসজিদের ভিতরে গিয়ে ভিডিও ধারণ করছিল। এমনকি খতিবের সামনে গিয়ে মুসল্লিদের আড়াল করে তারা বিভিন্নভাবে ভিডিওধারণ করতে থাকে। এতে করে মুসল্লীরা ক্যমেরার পিছনে পড়ে যায়। দীর্ঘ সময় এভাবেই চলতে থাকে। খতিব যখন তার বয়ান এবং জুমার খুতবা পাঠ করছেন তখন ১০ থেকে ১৫টি চ্যানেলের ক্যামেরা পারসনরা খতিবের সামনে তাকে ঘিরে ধরেই ছবি নিচ্ছিলেন। খুতবা শেষ হতেই আবার ক্যামেরাপারনরা ছুটাছুটি করে বিভিন্ন স্থান থেকে ছবি ধারণ করছিলেন। এর পর জুমার নামাজ চলাকালে ক্যামেরা পারসনরা নামাজের চিত্রও ধারণ করতে থাকেন। বিশেষ করে মিম্বরের আশপাশে, মুসল্লিদের কাতারের সামনে ক্যামেরা নিয়ে ছুটাছুটির বিষয়টি ছিল খুবই দৃষ্টিকটু ও নামাজে বিঘ্ন সৃষ্টি করার মতো।
এছাড়াও নামাজ শেষে বায়তুল মোকাররমের পেশ ইমাম মুফতি মাওলানা মহিউদ্দিন কাসেমী যখন মোনাজাত শুরু করলেন সেই সময়ও বেশ কয়েকটি চ্যানেল সামনে চলে যায়। আবার কিছু চ্যানেল বিভিন্ন জায়গায় দাঁড়িয়ে চিত্র ধারণ করে।
জাতীয় মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করতে আসা ধানমন্ডি ৭ নম্বর রোডের বাসিন্দ লুৎফর রহমান বলেন, ‘মসজিদ হচ্ছে পবিত্র স্থান। কিন্তু আজকে এটা কি দেখলাম। নামাজের সময় কাতারের সামনে ক্যামেরা নিয়ে যেভাবে যাওয়া আসা করেছে, তাতে তো নামাজের পরিবেশটাই নষ্ট হয়েছে। মনে হচ্ছিল এখানে নামাজ হচ্ছে না, সিনেমার শ্যুটিং হচ্ছে। এটা কি শ্যুটিং স্পট? এটা তো আল্লাহ ঘর।’
খিলগাঁও এলাকার বাসিন্ধা রকিবউদ্দিন বলেন, ‘টেলিভিশনগুলো নামাজ ভিডিও করতেই পারে। কিন্তু সেটা দূর থেকে দাঁড়িয়ে করুক। কিন্তু যেভাবে বিশৃঙ্খলভাবে তারা ( ক্যামেরাপারনরা) ভিডিও করলো, তাতে নামাজে ব্যাঘাত ঘটেছে। এটা বাংলাদেশ ছাড়া পৃথিবীর আর কোনো দেশে পাবেন না।’
তিনি বলেন, ‘এ দোষ সাংবাদিক বা ক্যামেরা পারসনদের নয়। এ দোষ পুরোটাই মসজিদ কর্তৃপক্ষের। বায়তুল মোকাররম মসজিদ কর্তৃপক্ষের গাফলতির কারণেই এটা ঘটেছে। তারা ভেবেছে- আমাদেরকে টিভিতে দেখাচ্ছে, দেশবাসি দেখছে, এটা তাদের আনন্দ। কিন্তু এটা গোনাহ।’
শুধু লুৎফর রহমান ও রকিবউদ্দিনই নয়, এরকম আরো বহু মুসল্লি এ ঘটনায় বিরক্তি প্রকাশ করেছেন। এভাবে মসজিদের ভিতরে নামাজের সময় কাতারবন্দি মুসল্লিদের সামনে দিয়ে বারবার যাওয়া-আসায় ইবাদতে বিঘ্ন ঘটেছে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেক মুসল্লি।
বায়তুল মোকাররম ছাড়াও রাজধানীর বেশ কয়েকটি মসজিদে একই ধরনের ঘটনার ঘটেছে বলে শোনা গেছে।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার ইসলামিক ফাউন্ডেশনের (ইফা) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শুক্রবার বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে পঠিতব্য খুতবা বাংলাদেশের সকল মসজিদে অনুকরণ ও অনুসরণের জন্য বলা হয়।
‘অশান্তি, জঙ্গিবাদ এবং সন্ত্রাস সম্পর্কে সতর্কীকরণ’ শিরোনামে দুই পৃষ্ঠার একই খুতবা দেশের মসজিদগুলোতে পাঠানো হয়।
link:- http://banglamail24.com/news/161780
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বাংলামেইল২৪ডটকম
ঢাকা : আমরা কি নামাজ পড়তে আসছি না শ্যুটিং দেখতি আসছি? এভাবে তো নামাজ হয় না। নামাজের বদলে গুনাহর কাজ হচ্ছে এখানে- এভাবেই জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম কর্তৃপক্ষের প্রতি খেদ প্রকাশ করেছেন মুসল্লিরা।
আজ শুক্রবার (১৫ জুলাই) জুমার নামাজের সময় টেলিভিশন ক্যামেরা পারসনদের যা’চ্ছে তা আচরণ ও নামাজের নিমগ্নতা ভঙ্গ করে ভিডিও ধারণ করতে গেলে ক্ষুব্ধ মুসল্লিরা এভাবেই নিজেদের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের (ইফা) নির্দেশনা অনুযায়ী জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমসহ দেশের মসজিদগুলোতে মুসল্লিদের উদ্দেশ্যে জঙ্গিবাদবিরোধী খুতবা পাঠ করার দিন ছিল শুক্রবার। সে খবর ও ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করার জন্য জুমার নামাজের আগে থেকেই হুমড়ি খেয়ে পড়েছিলেন বিভিন্ন চ্যানেলের প্রতিবেদক ও ক্যামেরা পারসনরা।
নামাজের আগে ফুটেজ সংগ্রহ নিয়ে মুসল্লিদের মধ্যে তেমন একটা বিরক্তির উদ্রেক না ঘটলেও নামাজ শুরুর পর কাতারের সামনে ক্যামেরা পারসনদের যাচ্ছে তা ছুটাছুটি ও ফুটেজ সংগ্রহ নিয়ে যারপরনাই বিরক্ত হন সাধারণ মুসল্লিরা। তারা জানিয়েছেন ক্যামেরা পারসনদের নিয়ম বহির্ভূত আচরণে নামাজে ব্যাঘাত ঘটেছে। এর জন্য অবশ্য ক্যামেরা পারসনদের দোষারোপ করেননি মুসল্লিরা। তারা বলেছেন-এটা মসজিদ কৃর্তৃপক্ষেরই ভুল। তারা আগে থেকেই একটা নির্দেশনা দিতে পারতেন সাংবাদিকদের। একটা নির্দিষ্ট স্থানে দাঁড়িয়ে ফুটেজ সংগ্রহ করা যেতো। কিন্তু কোনো নির্দেশনা বা নিয়ন্ত্রণ না থাকায় ক্যামেরা পারসনরা যাচ্ছে তা ভাবে ছুটাছুটি করেছেন। এতে নামাজের মগ্নতা ও পবিত্রতা নষ্ট হয়েছে।
দেখা গেছে, জুমার নামাজকে ঘিরে বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলগুলো মসজিদের ভিতরে গিয়ে ভিডিও ধারণ করছিল। এমনকি খতিবের সামনে গিয়ে মুসল্লিদের আড়াল করে তারা বিভিন্নভাবে ভিডিওধারণ করতে থাকে। এতে করে মুসল্লীরা ক্যমেরার পিছনে পড়ে যায়। দীর্ঘ সময় এভাবেই চলতে থাকে। খতিব যখন তার বয়ান এবং জুমার খুতবা পাঠ করছেন তখন ১০ থেকে ১৫টি চ্যানেলের ক্যামেরা পারসনরা খতিবের সামনে তাকে ঘিরে ধরেই ছবি নিচ্ছিলেন। খুতবা শেষ হতেই আবার ক্যামেরাপারনরা ছুটাছুটি করে বিভিন্ন স্থান থেকে ছবি ধারণ করছিলেন। এর পর জুমার নামাজ চলাকালে ক্যামেরা পারসনরা নামাজের চিত্রও ধারণ করতে থাকেন। বিশেষ করে মিম্বরের আশপাশে, মুসল্লিদের কাতারের সামনে ক্যামেরা নিয়ে ছুটাছুটির বিষয়টি ছিল খুবই দৃষ্টিকটু ও নামাজে বিঘ্ন সৃষ্টি করার মতো।
এছাড়াও নামাজ শেষে বায়তুল মোকাররমের পেশ ইমাম মুফতি মাওলানা মহিউদ্দিন কাসেমী যখন মোনাজাত শুরু করলেন সেই সময়ও বেশ কয়েকটি চ্যানেল সামনে চলে যায়। আবার কিছু চ্যানেল বিভিন্ন জায়গায় দাঁড়িয়ে চিত্র ধারণ করে।
জাতীয় মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করতে আসা ধানমন্ডি ৭ নম্বর রোডের বাসিন্দ লুৎফর রহমান বলেন, ‘মসজিদ হচ্ছে পবিত্র স্থান। কিন্তু আজকে এটা কি দেখলাম। নামাজের সময় কাতারের সামনে ক্যামেরা নিয়ে যেভাবে যাওয়া আসা করেছে, তাতে তো নামাজের পরিবেশটাই নষ্ট হয়েছে। মনে হচ্ছিল এখানে নামাজ হচ্ছে না, সিনেমার শ্যুটিং হচ্ছে। এটা কি শ্যুটিং স্পট? এটা তো আল্লাহ ঘর।’
খিলগাঁও এলাকার বাসিন্ধা রকিবউদ্দিন বলেন, ‘টেলিভিশনগুলো নামাজ ভিডিও করতেই পারে। কিন্তু সেটা দূর থেকে দাঁড়িয়ে করুক। কিন্তু যেভাবে বিশৃঙ্খলভাবে তারা ( ক্যামেরাপারনরা) ভিডিও করলো, তাতে নামাজে ব্যাঘাত ঘটেছে। এটা বাংলাদেশ ছাড়া পৃথিবীর আর কোনো দেশে পাবেন না।’
তিনি বলেন, ‘এ দোষ সাংবাদিক বা ক্যামেরা পারসনদের নয়। এ দোষ পুরোটাই মসজিদ কর্তৃপক্ষের। বায়তুল মোকাররম মসজিদ কর্তৃপক্ষের গাফলতির কারণেই এটা ঘটেছে। তারা ভেবেছে- আমাদেরকে টিভিতে দেখাচ্ছে, দেশবাসি দেখছে, এটা তাদের আনন্দ। কিন্তু এটা গোনাহ।’
শুধু লুৎফর রহমান ও রকিবউদ্দিনই নয়, এরকম আরো বহু মুসল্লি এ ঘটনায় বিরক্তি প্রকাশ করেছেন। এভাবে মসজিদের ভিতরে নামাজের সময় কাতারবন্দি মুসল্লিদের সামনে দিয়ে বারবার যাওয়া-আসায় ইবাদতে বিঘ্ন ঘটেছে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেক মুসল্লি।
বায়তুল মোকাররম ছাড়াও রাজধানীর বেশ কয়েকটি মসজিদে একই ধরনের ঘটনার ঘটেছে বলে শোনা গেছে।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার ইসলামিক ফাউন্ডেশনের (ইফা) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শুক্রবার বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে পঠিতব্য খুতবা বাংলাদেশের সকল মসজিদে অনুকরণ ও অনুসরণের জন্য বলা হয়।
‘অশান্তি, জঙ্গিবাদ এবং সন্ত্রাস সম্পর্কে সতর্কীকরণ’ শিরোনামে দুই পৃষ্ঠার একই খুতবা দেশের মসজিদগুলোতে পাঠানো হয়।
link:- http://banglamail24.com/news/161780
Comment