সামান্য ভিন্নমত পোষণ করার কারণে সাজা পেল বিশ্ববিদ্যালয়ছাত্রী
গতকাল ঢাকা থেকে গ্রেফতার করা হয় তাগুত স্বৈরাচারী শেখ মুজিবুর রহমানের সাহসী হত্যাকারী ক্যাপ্টেন আব্দুল মাজেদকে। এক সময়ের মাজলুমদের পক্ষের এই নেতাকে ফাসির আদেশ দেওয়া হযেছে ইতিপূর্বেই। এখন তার নিষ্ঠুর বাস্তবায়নও হবে। আর গতকাল কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সাজ্জাদ হোসেন সেই নিষ্ঠুর ফাঁসির পক্ষে একটি স্ট্যাটাস দেয়। অত:পর তানজিদা সুলতানা ছন্দ নামে আরেক শিক্ষার্থী তাতে অতি সাধারণ মত প্রকাশ করে একটি কমেন্ট করে। কমেন্টটি ছিল:
“ভাই শেখ মুজিব যদি খুন না হতো তাহলে কি সে এখনো পর্যন্ত বেঁচে থাকতো?, মুজিবুর রহমান অনেক বয়স পরই মারা গেছেন, কিন্তু আমরা আদিখ্যেতা জাতি একজনের খুনের বিচার করতে করতে ভুলেই যায় প্রতিদিন কতশত মানুষ আমাদের আশপাশের খুন হচ্ছে, গুম হচ্ছে। আমরা পুরাতন কাসুন্দী নিয়ে খুব বেশি ঘাটাঘাটি করতে পছন্দ করি। ”
ব্যস, এতটুকু মুজিব বিরোধী মত প্রকাশের কারণে সাজা পেতে হল উক্ত ছাত্রীকে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাকে সাময়িকভাবে বহিস্কার করে। শুধু তাই নয়, এটা তদন্ত করার জন্য তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়। উক্ত ছাত্রীকে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার ৭ কার্যদিবসের মধ্যে কারণ দর্শাতে বলা হয়।
লা হওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ। এদেশে স্বৈরাচার ও একনায়কতন্ত্র কোন মাত্রায় গিয়ে পৌঁছেছে, যার কারণে ক্ষমতাসীন দলের কার্যকলাপের বিপরীতে এতটুকু মত প্রকাশ করলেও সমস্যা। পক্ষান্তরে বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, যাকে সৃষ্টি না করা হলে আকাশ বাতাস কিছুই সৃষ্টি করা হত না, তাকে নিয়ে আরো মারাত্মক কটুক্তি করলেও সমস্যা হয় না। বরং উল্টো প্রতিবাদকারীদেরকেই মেরে হাত পা ভেঙ্গে দেওয়া হয়।
অথচ এই মুজিবকে যখন হত্যা করা হয়, তখন সারা দেশের মানুষ খুশি হয়। সে সময়ের পেপার পত্রিকাগুলোই তার প্রমাণ বহন করে। সে সময় যারা স্বৈরাচারী শেখ মুজিবকে হত্যা করে, তারা মাজলুম জনগণের অন্তরকেই শীতল করেছিল। কিন্তু এক সময়ের জালিম তাগুত স্বৈরাচারীকে আজ জাতির পিতা বানিয়ে আবার তার বিপক্ষে সামান্য ভিন্নমত পোষণ করলেও শাস্তি পেতে হয়। আর এক সময়ের মজলুমানের নেতাকে এখন ভয়ংকর খুনি হিসাবে চিত্রায়িত করে ফাঁসি দেওয়া হয়। ঠিক মুজিব যেমন বাকশাল কায়েম করেছিল, এখনও তেমনটাই হচ্ছে।
Comment