তৎপরতা বাড়াচ্ছে জঙ্গিরা
নব্য জেএমবির নতুন কৌশল সিঙ্গেল অ্যাটাক, হুজির তৎপরতা চালাচ্ছে আফগান ফেরত কিছু মুজাহিদ
ঘুরে দাঁড়ানোর প্রাণান্তকর চেষ্টায় নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠনগুলো। দীর্ঘদিন ধরে ৪-৫ জনের দলে হামলা করলেও বর্তমানে অস্তিত্ব জানান দিতে সিঙ্গেল অ্যাটাকের দিকেই ঝুঁকছে জঙ্গিরা। হামলার জন্য দূরবর্তী স্থানে হিজরত করলেও বর্তমানে জঙ্গিরা নিজেদের এলাকায় থেকেই হামলার চেষ্টা চালাচ্ছে। সম্প্রতি গ্রেফতারকৃত জঙ্গিদের কাছ থেকে এমনই তথ্য পেয়েছেন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা। তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আর্থিক এবং সাংগঠনিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ায় অল্প খরচে বেশি সফলতার নীতি অনুসরণ করছে জঙ্গি সংগঠনগুলো। অন্যদিকে, ২০০৪ সালের ২১ শে আগস্টের বোমা হামলার সংগঠন হরকাতুল জিহাদ বাংলাদেশ-হুজিবি ঝিমিয়ে পড়লেও কিছু আফগান ফেরত মুজাজিদ পুনরায় সংগঠনটিকে প্রাণ দেওয়ার পরিকল্পনা করছেন এমন খবরও রয়েছে গোয়েন্দাদের কাছে।
গোয়েন্দা সূত্র বলছে, আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠনগুলোর আহ্বানে সাড়া দিয়ে গত ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশেও জঙ্গিরা হামলা করার পরিকল্পনা করেছিল। গুলশানের একটি অভিজাত শপিংমল ছিল তাদের টার্গেট। এ কারণে ঈদের সময় রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে জঙ্গিরা হামলা করতে পারে বলে পুলিশ সদর দফতর থেকে একটি সতর্কবার্তা দেওয়া হয়। একই সঙ্গে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। এ কারণে জঙ্গিরা বড় কোনো হামলা করার সুযোগ পায়নি। তবে গত ২৪ জুলাই পল্টনে প্রথম দিন একটি বোমা বিস্ফোরিত হয়। একদিন পর একই এলাকা থেকে একটি বোমাসদৃশ্য বস্তু উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়া সিলেটের শাহজালালের মাজারেও একটি বোমা নিক্ষেপ করা হলেও তা বিস্ফোরিত হয়নি। প্রায় একই সময়ে নওগাঁতেও একটি বোমা বিস্ফোরিত হয়েছে। এসব ঘটনায় গ্রেফতারকৃতরা জানিয়েছে, একক হামলার নতুন কৌশল নিয়েছে জঙ্গি সংগঠন নব্য জেএমবি। যদিও এর আগে আনসার আল ইসলাম সিঙ্গেল অ্যাটাকের পরিকল্পনা করেছিল। একাধিক ব্যক্তি একসঙ্গে হামলার বদলে একজন সদস্যকে একাই হামলা করার জন্য প্রস্তুত করছে সংগঠনগুলো। আর্থিক দুর্বলতার কারণে স্থান পরিবর্তন না করে বর্তমানে নিজেদের এলাকায় অবস্থান করিয়েই অনলাইনের মাধ্যমে ম্যানুয়াল পাঠিয়ে বোমা তৈরির প্রশিক্ষণও দেওয়া হচ্ছে। কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট-সিটিটিসির প্রধান ও ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেন, হুজিবির তৎপরতা একেবারে শূন্যের কোঠায় বলা যায়। কারণ, ২০০৫ সাল পর্যন্ত তৎকালীন ক্ষমতাসীন সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা ছিল ওই সংগঠনে। পরবর্তীতে তাদের শীর্ষ নেতারা গ্রেফতার এবং আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার বিশেষ তৎপরতায় তারা সাংগঠনিক তৎপরতা বন্ধ করতে বাধ্য হয়। তিনি আরও বলেন, আইন প্রয়োগকারী সংস্থার নজরদারি এড়াতে জঙ্গিরা সব সময় নিত্যনতুন কৌশল অবলম্বন করে আসছে। বর্তমানে শক্তিশালী হামলা করার মতো সক্ষমতা কোনো জঙ্গি সংগঠনেরই নেই। সিটিটিসি শুরু থেকেই এ বিষয়টি নিয়ন্ত্রণে আনতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছে। বর্তমানে আমরা ডি-রেডিক্যালাইজেশনের দিকে বিশেষ নজর দিচ্ছি। আমরা জঙ্গিদের ভ্রান্ত ধারণা থেকে বের করার চেষ্টা করছি। তাদের পুনর্বাসনের জন্যও আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। তবে সমাজে এখনো উগ্রবাদের অনেক উপকরণ রয়ে গেছে। সিটিটিসি সূত্র বলছে, অতি সম্প্রতি সিলেটে জঙ্গি হামলার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার যুবকদের অন্যতম সানাউল ইসলাম সাদিক ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। বুধবার তাদের দুজনকে তিন দিনের রিমান্ডে নিয়েছে সিটিটিসি। গ্রেফতার হওয়া জঙ্গিরা সবাই নব্য জেএমবির সামরিক শাখার সদস্য ছিল। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে শেখ সুলতান মোহাম্মদ নাইমুজ্জামান নামে এক তরুণ নব্য জেএমবির সামরিক শাখার দায়িত্বশীল ছিল। ছাত্রশিবিরের সাবেক কর্মী নাইমুজ্জামান সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ থেকে গত বছর ¯œাতক সম্পন্ন করেছেন। নাইমুজ্জামান অনলাইনে রিক্রুট করা সদস্যদের মধ্যে যারা সামরিক শাখায় কাজ করতে ও সরাসরি হামলা করতে আগ্রহী তাদের আলাদা করত। এরপর অনলাইনে প্রত্যেকের কাছে একটি বোমা তৈরির ম্যানুয়াল পাঠানো হতো। নাইমুজ্জামানের সঙ্গে গ্রেফতার হওয়া সানাউল ইসলাম সাদিককেও বোমা তৈরির প্রশিক্ষণ দেয়। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী সাদিক নিজেই একটি বোমা তৈরি করে গত ২৩ জুলাই শাহজালালের মাজারে তা বিস্ফোরণ ঘটাতে যায়। কিন্তু সেখানে পুলিশ দেখে সে ভেতরে প্রবেশ না করে বাইরে থেকেই বোমাটি নিক্ষেপ করে। কিন্তু ‘কাঁচা হাতে’ তৈরি বোমাটি সেখানে বিস্ফোরিত হয়নি। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র জামালই বোমা তৈরির ওই ম্যানুয়াল তৈরি করেছিলেন। গত ৩১ জুলাই নওগাঁর সাপাহার এলাকার একটি হিন্দু মন্দিরে জঙ্গিরা বোমা হামলা করে। আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন আইএস ওই হামলার দায়ও স্বীকার করেছিল। জিজ্ঞাসাবাদে নাইমুজ্জামান জানিয়েছে, নওগাঁয় হামলার পরিকল্পনাও তার ছিল। সে নওগাঁয় অবস্থানকারী তাদের সামরিক শাখার এক সদস্যের কাছে বোমা তৈরির ম্যানুয়াল পাঠিয়ে অনলাইনে নির্দেশনা দিয়ে বোমাটি তৈরি করায়। সিটিটিসির কর্মকর্তারা বলছেন, গ্রেফতার হওয়া নাইমুজ্জামানের সঙ্গে নব্য জেএমবির বর্তমান আমীর আবু মোহাম্মদ আল বাঙালীর সরাসরি যোগাযোগ রয়েছে। কোনো ঘটনার পরপরই নাইমুজ্জামান বিষযটি তাদের আমীর আবু মোহাম্মদ আল বাঙালীকে জানাত। আবু মোহাম্মদ তা সিরিয়ায় অবস্থানকারী আইএসের কাছে তথ্য পাঠিয়ে দায় স্বীকার করতে বলত। আবু মোহাম্মদের সঙ্গে নাইমুজ্জামানের যোগাযোগ থাকলেও কখনো দেখা হয়নি বলে জানিয়েছে সে। পুলিশ কর্মকর্তারা ধারণা করছেন, আবু মোহাম্মদ বাংলাদেশের বাইরে কোনো দেশে অবস্থান করে নব্য জেএমবিকে সংগঠিত করার চেষ্টা করছে। নাইমুজ্জামানের নির্দেশে ঢাকার পল্টনে যে জঙ্গি সদস্য হামলা করেছিল তাকে নজরদারির মধ্যে রাখা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে নাইমুজ্জামান জানিয়েছে, সে ঢাকার ওই তরুণকে অনলাইনে প্রশিক্ষণ দিয়েছিল। এ ছাড়া লোন উলফ্্-এর হামলা নকশা মাথায় নিয়ে আনসার আল ইসলামের বেশ কিছু তরুণ তাদের তৎপরতা অব্যাহত রেখেছে। গ্রেফতারকৃতদের সবারই দাবি, তাদের সবাই পলাতক মেজর (বরখাস্ত) জিয়ার অনুসারী। সূত্র বলছে, শুরুর দিকে হুজিবির ১০ হাজার সদস্য থাকলেও বর্তমানে কিছু আফগান ফেরত মুজাহিদ হুজিবি আদর্শ অন্তরে ধারণ করছেন। তবে সুযোগ পেলে তারাও আগের চেহারায় ফিরে যেতে পারেন এমনটাই তথ্য পাচ্ছেন গোয়েন্দারা। তবে দুই দফায় আফগানগামী এবং ফেরত সেই ৩০ এবং ৪৩ জন মুজাহিদদের যারা এখনো জীবিত তাদের ওপরই নজরদারি অব্যাহত রয়েছে। দুবাই প্রবাসী মুফতি শহীদুলের পরোক্ষ প্ররোচনায় রোহিঙ্গা ইস্যুতে মাওলানা আতিকুল্লাহ নতুন মিশন নিয়ে দেশে ফিরলেও তিনি সিটিটিসির কাছে গ্রেফতার হন। তবে বর্তমানে কিছু আফগান ফেরত মুজাহিদের তৎপরতা সন্দেহজনক বলছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা।
র*্যাবের গোয়েন্দা শাখার পরিচালক লে. কর্নেল সারওয়ার বিন কাশেম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, র*্যাব কখনো জঙ্গিবাদের ওপর থেকে নজর সরিয়ে নেয়নি। জঙ্গিবাদ একটি বৈশ্বিক ইস্যু হলেও তাদের সবকিছুই আমাদের নজরদারিতে রয়েছে। তবে জঙ্গিরা এখন অত্যাধুনিক কৌশলে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছে। নিজস্ব ইয়ানতের (অর্থ) মাধ্যমেই তারা নতুন নতুন সাথী সংগ্রহের চেষ্টা চালাচ্ছে। তবে শঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। ট্রান্স বর্ডার প্রেক্ষাপটকে মাথায় রেখে র*্যাবের প্রতিটি সদস্যই জঙ্গিবাদ দমনে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ।
তথ্যসুত্রঃ https://www.bd-pratidin.com/first-pa...0/08/23/559336 (অবশ্যই ভিপিএন অথবা টর ব্রাউযার দিয়ে প্রবেশ করবেন )
নব্য জেএমবির নতুন কৌশল সিঙ্গেল অ্যাটাক, হুজির তৎপরতা চালাচ্ছে আফগান ফেরত কিছু মুজাহিদ
ঘুরে দাঁড়ানোর প্রাণান্তকর চেষ্টায় নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠনগুলো। দীর্ঘদিন ধরে ৪-৫ জনের দলে হামলা করলেও বর্তমানে অস্তিত্ব জানান দিতে সিঙ্গেল অ্যাটাকের দিকেই ঝুঁকছে জঙ্গিরা। হামলার জন্য দূরবর্তী স্থানে হিজরত করলেও বর্তমানে জঙ্গিরা নিজেদের এলাকায় থেকেই হামলার চেষ্টা চালাচ্ছে। সম্প্রতি গ্রেফতারকৃত জঙ্গিদের কাছ থেকে এমনই তথ্য পেয়েছেন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা। তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আর্থিক এবং সাংগঠনিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ায় অল্প খরচে বেশি সফলতার নীতি অনুসরণ করছে জঙ্গি সংগঠনগুলো। অন্যদিকে, ২০০৪ সালের ২১ শে আগস্টের বোমা হামলার সংগঠন হরকাতুল জিহাদ বাংলাদেশ-হুজিবি ঝিমিয়ে পড়লেও কিছু আফগান ফেরত মুজাজিদ পুনরায় সংগঠনটিকে প্রাণ দেওয়ার পরিকল্পনা করছেন এমন খবরও রয়েছে গোয়েন্দাদের কাছে।
গোয়েন্দা সূত্র বলছে, আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠনগুলোর আহ্বানে সাড়া দিয়ে গত ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশেও জঙ্গিরা হামলা করার পরিকল্পনা করেছিল। গুলশানের একটি অভিজাত শপিংমল ছিল তাদের টার্গেট। এ কারণে ঈদের সময় রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে জঙ্গিরা হামলা করতে পারে বলে পুলিশ সদর দফতর থেকে একটি সতর্কবার্তা দেওয়া হয়। একই সঙ্গে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। এ কারণে জঙ্গিরা বড় কোনো হামলা করার সুযোগ পায়নি। তবে গত ২৪ জুলাই পল্টনে প্রথম দিন একটি বোমা বিস্ফোরিত হয়। একদিন পর একই এলাকা থেকে একটি বোমাসদৃশ্য বস্তু উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়া সিলেটের শাহজালালের মাজারেও একটি বোমা নিক্ষেপ করা হলেও তা বিস্ফোরিত হয়নি। প্রায় একই সময়ে নওগাঁতেও একটি বোমা বিস্ফোরিত হয়েছে। এসব ঘটনায় গ্রেফতারকৃতরা জানিয়েছে, একক হামলার নতুন কৌশল নিয়েছে জঙ্গি সংগঠন নব্য জেএমবি। যদিও এর আগে আনসার আল ইসলাম সিঙ্গেল অ্যাটাকের পরিকল্পনা করেছিল। একাধিক ব্যক্তি একসঙ্গে হামলার বদলে একজন সদস্যকে একাই হামলা করার জন্য প্রস্তুত করছে সংগঠনগুলো। আর্থিক দুর্বলতার কারণে স্থান পরিবর্তন না করে বর্তমানে নিজেদের এলাকায় অবস্থান করিয়েই অনলাইনের মাধ্যমে ম্যানুয়াল পাঠিয়ে বোমা তৈরির প্রশিক্ষণও দেওয়া হচ্ছে। কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট-সিটিটিসির প্রধান ও ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেন, হুজিবির তৎপরতা একেবারে শূন্যের কোঠায় বলা যায়। কারণ, ২০০৫ সাল পর্যন্ত তৎকালীন ক্ষমতাসীন সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা ছিল ওই সংগঠনে। পরবর্তীতে তাদের শীর্ষ নেতারা গ্রেফতার এবং আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার বিশেষ তৎপরতায় তারা সাংগঠনিক তৎপরতা বন্ধ করতে বাধ্য হয়। তিনি আরও বলেন, আইন প্রয়োগকারী সংস্থার নজরদারি এড়াতে জঙ্গিরা সব সময় নিত্যনতুন কৌশল অবলম্বন করে আসছে। বর্তমানে শক্তিশালী হামলা করার মতো সক্ষমতা কোনো জঙ্গি সংগঠনেরই নেই। সিটিটিসি শুরু থেকেই এ বিষয়টি নিয়ন্ত্রণে আনতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছে। বর্তমানে আমরা ডি-রেডিক্যালাইজেশনের দিকে বিশেষ নজর দিচ্ছি। আমরা জঙ্গিদের ভ্রান্ত ধারণা থেকে বের করার চেষ্টা করছি। তাদের পুনর্বাসনের জন্যও আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। তবে সমাজে এখনো উগ্রবাদের অনেক উপকরণ রয়ে গেছে। সিটিটিসি সূত্র বলছে, অতি সম্প্রতি সিলেটে জঙ্গি হামলার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার যুবকদের অন্যতম সানাউল ইসলাম সাদিক ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। বুধবার তাদের দুজনকে তিন দিনের রিমান্ডে নিয়েছে সিটিটিসি। গ্রেফতার হওয়া জঙ্গিরা সবাই নব্য জেএমবির সামরিক শাখার সদস্য ছিল। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে শেখ সুলতান মোহাম্মদ নাইমুজ্জামান নামে এক তরুণ নব্য জেএমবির সামরিক শাখার দায়িত্বশীল ছিল। ছাত্রশিবিরের সাবেক কর্মী নাইমুজ্জামান সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ থেকে গত বছর ¯œাতক সম্পন্ন করেছেন। নাইমুজ্জামান অনলাইনে রিক্রুট করা সদস্যদের মধ্যে যারা সামরিক শাখায় কাজ করতে ও সরাসরি হামলা করতে আগ্রহী তাদের আলাদা করত। এরপর অনলাইনে প্রত্যেকের কাছে একটি বোমা তৈরির ম্যানুয়াল পাঠানো হতো। নাইমুজ্জামানের সঙ্গে গ্রেফতার হওয়া সানাউল ইসলাম সাদিককেও বোমা তৈরির প্রশিক্ষণ দেয়। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী সাদিক নিজেই একটি বোমা তৈরি করে গত ২৩ জুলাই শাহজালালের মাজারে তা বিস্ফোরণ ঘটাতে যায়। কিন্তু সেখানে পুলিশ দেখে সে ভেতরে প্রবেশ না করে বাইরে থেকেই বোমাটি নিক্ষেপ করে। কিন্তু ‘কাঁচা হাতে’ তৈরি বোমাটি সেখানে বিস্ফোরিত হয়নি। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র জামালই বোমা তৈরির ওই ম্যানুয়াল তৈরি করেছিলেন। গত ৩১ জুলাই নওগাঁর সাপাহার এলাকার একটি হিন্দু মন্দিরে জঙ্গিরা বোমা হামলা করে। আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন আইএস ওই হামলার দায়ও স্বীকার করেছিল। জিজ্ঞাসাবাদে নাইমুজ্জামান জানিয়েছে, নওগাঁয় হামলার পরিকল্পনাও তার ছিল। সে নওগাঁয় অবস্থানকারী তাদের সামরিক শাখার এক সদস্যের কাছে বোমা তৈরির ম্যানুয়াল পাঠিয়ে অনলাইনে নির্দেশনা দিয়ে বোমাটি তৈরি করায়। সিটিটিসির কর্মকর্তারা বলছেন, গ্রেফতার হওয়া নাইমুজ্জামানের সঙ্গে নব্য জেএমবির বর্তমান আমীর আবু মোহাম্মদ আল বাঙালীর সরাসরি যোগাযোগ রয়েছে। কোনো ঘটনার পরপরই নাইমুজ্জামান বিষযটি তাদের আমীর আবু মোহাম্মদ আল বাঙালীকে জানাত। আবু মোহাম্মদ তা সিরিয়ায় অবস্থানকারী আইএসের কাছে তথ্য পাঠিয়ে দায় স্বীকার করতে বলত। আবু মোহাম্মদের সঙ্গে নাইমুজ্জামানের যোগাযোগ থাকলেও কখনো দেখা হয়নি বলে জানিয়েছে সে। পুলিশ কর্মকর্তারা ধারণা করছেন, আবু মোহাম্মদ বাংলাদেশের বাইরে কোনো দেশে অবস্থান করে নব্য জেএমবিকে সংগঠিত করার চেষ্টা করছে। নাইমুজ্জামানের নির্দেশে ঢাকার পল্টনে যে জঙ্গি সদস্য হামলা করেছিল তাকে নজরদারির মধ্যে রাখা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে নাইমুজ্জামান জানিয়েছে, সে ঢাকার ওই তরুণকে অনলাইনে প্রশিক্ষণ দিয়েছিল। এ ছাড়া লোন উলফ্্-এর হামলা নকশা মাথায় নিয়ে আনসার আল ইসলামের বেশ কিছু তরুণ তাদের তৎপরতা অব্যাহত রেখেছে। গ্রেফতারকৃতদের সবারই দাবি, তাদের সবাই পলাতক মেজর (বরখাস্ত) জিয়ার অনুসারী। সূত্র বলছে, শুরুর দিকে হুজিবির ১০ হাজার সদস্য থাকলেও বর্তমানে কিছু আফগান ফেরত মুজাহিদ হুজিবি আদর্শ অন্তরে ধারণ করছেন। তবে সুযোগ পেলে তারাও আগের চেহারায় ফিরে যেতে পারেন এমনটাই তথ্য পাচ্ছেন গোয়েন্দারা। তবে দুই দফায় আফগানগামী এবং ফেরত সেই ৩০ এবং ৪৩ জন মুজাহিদদের যারা এখনো জীবিত তাদের ওপরই নজরদারি অব্যাহত রয়েছে। দুবাই প্রবাসী মুফতি শহীদুলের পরোক্ষ প্ররোচনায় রোহিঙ্গা ইস্যুতে মাওলানা আতিকুল্লাহ নতুন মিশন নিয়ে দেশে ফিরলেও তিনি সিটিটিসির কাছে গ্রেফতার হন। তবে বর্তমানে কিছু আফগান ফেরত মুজাহিদের তৎপরতা সন্দেহজনক বলছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা।
র*্যাবের গোয়েন্দা শাখার পরিচালক লে. কর্নেল সারওয়ার বিন কাশেম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, র*্যাব কখনো জঙ্গিবাদের ওপর থেকে নজর সরিয়ে নেয়নি। জঙ্গিবাদ একটি বৈশ্বিক ইস্যু হলেও তাদের সবকিছুই আমাদের নজরদারিতে রয়েছে। তবে জঙ্গিরা এখন অত্যাধুনিক কৌশলে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছে। নিজস্ব ইয়ানতের (অর্থ) মাধ্যমেই তারা নতুন নতুন সাথী সংগ্রহের চেষ্টা চালাচ্ছে। তবে শঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। ট্রান্স বর্ডার প্রেক্ষাপটকে মাথায় রেখে র*্যাবের প্রতিটি সদস্যই জঙ্গিবাদ দমনে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ।
তথ্যসুত্রঃ https://www.bd-pratidin.com/first-pa...0/08/23/559336 (অবশ্যই ভিপিএন অথবা টর ব্রাউযার দিয়ে প্রবেশ করবেন )
Comment