বাংলাদেশের সঙ্গে ব্যবসা প্রসারের সুযোগ ও সম্ভাবনা যাচাই করছে অষ্টাদশ শতাব্দীর বিশ্বের অন্যতম সেরা সম্পদশালী পরিবার অ্যাডমন্ড ডি রথসচাইল্ড। এ পরিবারের মালিকানায় সুইজারল্যান্ডে গড়ে উঠেছে অ্যাডমন্ড ডি রথসচাইল্ড গ্রুপ।
বিনিয়োগ সম্ভাবনা খুঁজতে বর্তমানে বাংলাদেশ সফরে রয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির শীর্ষ দুই নির্বাহী।
তাঁরা হলেন অ্যাডমন্ড ডি রথসচাইল্ড করপোরেট ফিন্যান্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জুলিয়েন পিটন ও রথসচাইল্ড গ্রুপ জেনেভার ব্যবস্থাপনা পরিচালক যোগেশ্বর সিং। সম্ভাবনা যাচাইয়ের অংশ হিসেবে গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর নিকুঞ্জে গড়ে ওঠা নতুন একটি পাঁচতারকা হোটেলে বাংলাদেশের তরুণ উদ্যোক্তাদের সঙ্গে তাঁরা মতবিনিময়ে মিলিত হন।
দেশের বেসরকারি দি সিটি ব্যাংক এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভী।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বর্তমানে রথসচাইল্ড পরিবারের সপ্তম প্রজন্মের সদস্যরা এ পারিবারিক ব্যবসা পরিচালনা করছেন। একেবারে পারিবারিকভাবে সম্পদের ওপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠা প্রতিষ্ঠানটির বর্তমানে বিশ্বের ১৭টি দেশে ব্যবসায়িক কার্যক্রম রয়েছে। ২০০৮ সালের হিসাবে প্রতিষ্ঠানটি এককভাবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ১০০ বিলিয়ন ইউরো অর্থায়ন করেছে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে গওহর রিজভী বলেন, বাংলাদেশে বিদেশি যেকোনো প্রতিষ্ঠান বিনিয়োগ করলে ওই বিনিয়োগ থেকে অর্জিত মুনাফা নিয়ে যাওয়ার সহজ ব্যবস্থা রয়েছে। বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশ এখন উৎকৃষ্ট দেশ। কারণ, এখানে নীতি ধারাবাহিকতা যেমন রয়েছে, তেমনি রয়েছে সামাজিক স্থিতি। তবে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে জমি ও বিদ্যুতের কিছুটা সমস্যা রয়েছে। সেই সমস্যা সমাধানে কাজ করছে সরকার। এ সময় তিনি এ দেশের নারীর ক্ষমতায়নকে অর্থনীতির জন্য বড় একটি শক্তির দিক বলেও উল্লেখ করেন।
মতবিনিময়কালে জুলিয়েন পিটন বলেন, সারা বিশ্বে রথসচাইল্ড গ্রুপ করপোরেট ও ব্যক্তিগত অর্থায়ন, সম্পদ ব্যবস্থাপনা ও ব্যক্তিগত মূলধন জোগানে কাজ করে থাকে। অর্থায়নের ক্ষেত্রে পারিবারিক ব্যবসায়িক ঐতিহ্যকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে এ দেশের ব্যবসায়ীরা সফরকারী রথসচাইল্ড গ্রুপের প্রতিনিধিদের কাছে জানতে চান, বাংলাদেশের কোন কোন খাতে তাঁদের বিনিয়োগের আগ্রহ রয়েছে। জবাবে গ্রুপটির শীর্ষ দুই নির্বাহী বলেন, সরাসরি বিনিয়োগের কোনো সিদ্ধান্ত এখনো নেওয়া হয়নি। তবে এ দেশের কোনো ব্যবসায়ী বা উদ্যোক্তা যদি ভালো কোনো ব্যবসায়িক প্রকল্পে অর্থায়নের জন্য তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করে, তবে তাঁরা সব ধরনের সহায়তা দেবেন।
যোগেশ্বর সিং বলেন, যেকোনো দেশে অর্থায়নের আগে সে দেশের বিনিয়োগ ঝুঁকি, সম্ভাবনা, অর্থায়নের মানকে সর্বাগ্রে বিবেচনায় নেওয়া হয়। ব্যাংকের মতো প্রচলিত ব্যবস্থায় কোনো ব্যবসায়িক বিনিয়োগ বা অর্থায়ন করে না রথসচাইল্ড গ্রুপ। পারস্পরিক সহযোগিতার ভিত্তিতে কাজ করে এ গ্রুপ। তাই অর্থায়নের ক্ষেত্রে নিজস্ব কিছু মানদণ্ড রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির।
যোগেশ্বর সিং আরও বলেন, ‘যেসব দেশে আমাদের ব্যবসায়িক কার্যক্রম রয়েছে, সেসব দেশের আইনকানুনকে আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে থাকি। আইন লঙ্ঘন করে বা সঠিকভাবে কর পরিশোধ করে না, এমন কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে রথসচাইল্ড গ্রুপ কাজ করে না। বিশ্বজুড়ে আমাদের বৃহৎ একটি গ্রাহকগোষ্ঠী রয়েছে।’ এ সময় তিনি বাংলাদেশের তরুণ উদ্যোক্তাদের এ দেশের বড় সম্পদ হিসেবে উল্লেখ করেন।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী বলেন, সামরিক, পারমাণবিক জ্বালানি, বনশিল্প ও সিকিউরিটি প্রিন্টিং খাত ছাড়া বাংলাদেশে অন্য সব খাতে বিদেশি বিনিয়োগ উন্মুক্ত। বিদেশি বিনিয়োগকারীরা যাতে সহজে তাদের বিনিয়োগের অংশ ও মুনাফা ফেরত নিতে পারে সেটিরও নিশ্চয়তা রয়েছে। এ সময় তিনি বলেন, বাংলাদেশে বর্তমানে বিদ্যুৎ, অবকাঠামো, তথ্যপ্রযুক্তি, ওষুধ, তৈরি পোশাক, টুরিজম, হোটেলসহ বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগের সম্ভাবনা ও বিপুল সুযোগ রয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ বিরূপাক্ষ পাল বলেন, বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপি প্রবৃদ্ধি দীর্ঘদিন ধরেই স্থিতিশীল রয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বর্তমানে বাংলাদেশের মূল্যস্ফীতি সর্বনিম্ন পর্যায়ে রয়েছে। সামগ্রিক অর্থনীতিতেও স্থিতিশীলতা বজায় আছে।
অনুষ্ঠানের আয়োজক দি সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সোহেল আর কে হুসেইন বলেন, দেশে বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে যাচ্ছে সিটি ব্যাংক। এ জন্য কয়েক বছর ধরে বিদেশে ধারাবাহিকভাবে বিনিয়োগ সম্মেলনের আয়োজন করা হচ্ছে। অবকাঠামো, জ্বালানি, টেলিযোগাযোগসহ বাংলাদেশের বিনিয়োগের বিভিন্ন খাত তুলে ধরে তিনি বলেন, এসব খাতে বিনিয়োগে ঝুঁকি কম। কিন্তু সম্ভাবনা বিপুল। তথ্যপ্রযুক্তি খাতসহ বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ আকর্ষণে সরকার নানা প্রণোদনাও দিয়ে থাকে।
http://www.prothom-alo.com/economy/a...A7%8D%E0%A6%A1
বিনিয়োগ সম্ভাবনা খুঁজতে বর্তমানে বাংলাদেশ সফরে রয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির শীর্ষ দুই নির্বাহী।
তাঁরা হলেন অ্যাডমন্ড ডি রথসচাইল্ড করপোরেট ফিন্যান্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জুলিয়েন পিটন ও রথসচাইল্ড গ্রুপ জেনেভার ব্যবস্থাপনা পরিচালক যোগেশ্বর সিং। সম্ভাবনা যাচাইয়ের অংশ হিসেবে গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর নিকুঞ্জে গড়ে ওঠা নতুন একটি পাঁচতারকা হোটেলে বাংলাদেশের তরুণ উদ্যোক্তাদের সঙ্গে তাঁরা মতবিনিময়ে মিলিত হন।
দেশের বেসরকারি দি সিটি ব্যাংক এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভী।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বর্তমানে রথসচাইল্ড পরিবারের সপ্তম প্রজন্মের সদস্যরা এ পারিবারিক ব্যবসা পরিচালনা করছেন। একেবারে পারিবারিকভাবে সম্পদের ওপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠা প্রতিষ্ঠানটির বর্তমানে বিশ্বের ১৭টি দেশে ব্যবসায়িক কার্যক্রম রয়েছে। ২০০৮ সালের হিসাবে প্রতিষ্ঠানটি এককভাবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ১০০ বিলিয়ন ইউরো অর্থায়ন করেছে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে গওহর রিজভী বলেন, বাংলাদেশে বিদেশি যেকোনো প্রতিষ্ঠান বিনিয়োগ করলে ওই বিনিয়োগ থেকে অর্জিত মুনাফা নিয়ে যাওয়ার সহজ ব্যবস্থা রয়েছে। বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশ এখন উৎকৃষ্ট দেশ। কারণ, এখানে নীতি ধারাবাহিকতা যেমন রয়েছে, তেমনি রয়েছে সামাজিক স্থিতি। তবে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে জমি ও বিদ্যুতের কিছুটা সমস্যা রয়েছে। সেই সমস্যা সমাধানে কাজ করছে সরকার। এ সময় তিনি এ দেশের নারীর ক্ষমতায়নকে অর্থনীতির জন্য বড় একটি শক্তির দিক বলেও উল্লেখ করেন।
মতবিনিময়কালে জুলিয়েন পিটন বলেন, সারা বিশ্বে রথসচাইল্ড গ্রুপ করপোরেট ও ব্যক্তিগত অর্থায়ন, সম্পদ ব্যবস্থাপনা ও ব্যক্তিগত মূলধন জোগানে কাজ করে থাকে। অর্থায়নের ক্ষেত্রে পারিবারিক ব্যবসায়িক ঐতিহ্যকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে এ দেশের ব্যবসায়ীরা সফরকারী রথসচাইল্ড গ্রুপের প্রতিনিধিদের কাছে জানতে চান, বাংলাদেশের কোন কোন খাতে তাঁদের বিনিয়োগের আগ্রহ রয়েছে। জবাবে গ্রুপটির শীর্ষ দুই নির্বাহী বলেন, সরাসরি বিনিয়োগের কোনো সিদ্ধান্ত এখনো নেওয়া হয়নি। তবে এ দেশের কোনো ব্যবসায়ী বা উদ্যোক্তা যদি ভালো কোনো ব্যবসায়িক প্রকল্পে অর্থায়নের জন্য তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করে, তবে তাঁরা সব ধরনের সহায়তা দেবেন।
যোগেশ্বর সিং বলেন, যেকোনো দেশে অর্থায়নের আগে সে দেশের বিনিয়োগ ঝুঁকি, সম্ভাবনা, অর্থায়নের মানকে সর্বাগ্রে বিবেচনায় নেওয়া হয়। ব্যাংকের মতো প্রচলিত ব্যবস্থায় কোনো ব্যবসায়িক বিনিয়োগ বা অর্থায়ন করে না রথসচাইল্ড গ্রুপ। পারস্পরিক সহযোগিতার ভিত্তিতে কাজ করে এ গ্রুপ। তাই অর্থায়নের ক্ষেত্রে নিজস্ব কিছু মানদণ্ড রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির।
যোগেশ্বর সিং আরও বলেন, ‘যেসব দেশে আমাদের ব্যবসায়িক কার্যক্রম রয়েছে, সেসব দেশের আইনকানুনকে আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে থাকি। আইন লঙ্ঘন করে বা সঠিকভাবে কর পরিশোধ করে না, এমন কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে রথসচাইল্ড গ্রুপ কাজ করে না। বিশ্বজুড়ে আমাদের বৃহৎ একটি গ্রাহকগোষ্ঠী রয়েছে।’ এ সময় তিনি বাংলাদেশের তরুণ উদ্যোক্তাদের এ দেশের বড় সম্পদ হিসেবে উল্লেখ করেন।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী বলেন, সামরিক, পারমাণবিক জ্বালানি, বনশিল্প ও সিকিউরিটি প্রিন্টিং খাত ছাড়া বাংলাদেশে অন্য সব খাতে বিদেশি বিনিয়োগ উন্মুক্ত। বিদেশি বিনিয়োগকারীরা যাতে সহজে তাদের বিনিয়োগের অংশ ও মুনাফা ফেরত নিতে পারে সেটিরও নিশ্চয়তা রয়েছে। এ সময় তিনি বলেন, বাংলাদেশে বর্তমানে বিদ্যুৎ, অবকাঠামো, তথ্যপ্রযুক্তি, ওষুধ, তৈরি পোশাক, টুরিজম, হোটেলসহ বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগের সম্ভাবনা ও বিপুল সুযোগ রয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ বিরূপাক্ষ পাল বলেন, বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপি প্রবৃদ্ধি দীর্ঘদিন ধরেই স্থিতিশীল রয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বর্তমানে বাংলাদেশের মূল্যস্ফীতি সর্বনিম্ন পর্যায়ে রয়েছে। সামগ্রিক অর্থনীতিতেও স্থিতিশীলতা বজায় আছে।
অনুষ্ঠানের আয়োজক দি সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সোহেল আর কে হুসেইন বলেন, দেশে বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে যাচ্ছে সিটি ব্যাংক। এ জন্য কয়েক বছর ধরে বিদেশে ধারাবাহিকভাবে বিনিয়োগ সম্মেলনের আয়োজন করা হচ্ছে। অবকাঠামো, জ্বালানি, টেলিযোগাযোগসহ বাংলাদেশের বিনিয়োগের বিভিন্ন খাত তুলে ধরে তিনি বলেন, এসব খাতে বিনিয়োগে ঝুঁকি কম। কিন্তু সম্ভাবনা বিপুল। তথ্যপ্রযুক্তি খাতসহ বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ আকর্ষণে সরকার নানা প্রণোদনাও দিয়ে থাকে।
http://www.prothom-alo.com/economy/a...A7%8D%E0%A6%A1
Comment