তাগুতি পুলিশের ধারণা সীমান্ত পথে ভারত-মিয়ানমার থেকে বিস্ফোরক ও স্থানীয় বাজার থেকে উপকরন সংগ্রহ করে অভিঝানের কিছুদিন পূর্বে ঘাটিতেই বোমা-গ্রেনেড বানাচ্ছে "নব্য জেএমবি"র জঙ্গিরা।
অনলাইন নিউজপোর্টাল বাঙলা ট্রিবিউনের এক প্রতিবেদনে এখবর পাওয়া গেছে। প্রতিবেদনে বলা হয় গুলশান হামলা সহ বিভিন্ন অভিঝানে জঙ্গিদের তৈরি করা বিস্ফোরিত ও অবিস্ফোরিত বোমা গ্রেনেড বানানোর কৌশল তাগুতি পুলিশ বাহিনীকে হতবাক করে দিয়েছে। চরম হতবাক হলেও তাগুতি পুলিশ বাহিনী দাবী করে জঙ্গিরা বোমা ও গ্রেনেড তৈরিতে চূড়ান্ত দক্ষ হয়ে গড়ে উঠতে পারে নি। তার আগেই নাকি তাগুতি পুলিশ বাহিনী বোমা ও গ্রেনেড বানানোর অনেক জঙ্গি কারিগরকে ধরাশায়ী করে ফেলেছে। বিশেষত গুলশান হামলার পর তাগুতি পুলিশের কয়েকটি অভিযানে অনেক দক্ষ কারিগর নিহত হওয়ার দাবী করেছে অভিযানে অংশ নেওয়া তাগুতি গোয়েন্দা কর্মকর্তারা।
গত ১ জুলাই গুলশান হামলায় নিহত দুই তাগুতি পুলিশ কর্মকর্তাও নিহত হয়েছিলো জঙ্গিদের হাতে তৈরি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইসের (আইইডি) স্প্লিন্টারের আঘাতে। যেটাকে আমরা হ্যান্ডমেইড গ্রেনেড বলে থাকি। ওই হামলার পর সেখানে অভিযান চালিয়ে তাগুতি পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা একে-২২ রাইফেল, ৪টি নাইন এমএম পিস্তল, ৪টি অবিস্ফোরিত হ্যান্ডমেইড গ্রেনেড জব্দ করে। এছাড়াও ব্যবহৃত গুলির খোসা ও বিস্ফোরিত বোমা ও গ্রেনেডের বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করে। গুলশান হামলার এক সপ্তাহ পর ৭ জুলাই শোলাকিয়ার হামলাতেও জঙ্গিরা একই ধরনের অস্ত্র ও গ্রেনেড ব্যবহার করে। পরে রাজধানীর কল্যাণপুর ও নারায়নগঞ্জের পাইকপাড়ায় পুলিশের অভিযানের সময়েও জঙ্গিরা হ্যান্ডমেইড গ্রেনেড ব্যবহার করেছে। এসব জায়গা থেকেও অবিস্ফোরিত কিছু গ্রেনেড উদ্ধার ও নিস্ক্রিয় করেন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। সবচেয়ে বেশি বিস্ফোরক জব্দ করা হয় কল্যাণপুর থেকে। সেখান থেকে অস্ত্র ও গুলি ছাড়াও ১২টি অবিস্ফোরিত গ্রেনেড ও ৫ কেজি বিস্ফোরক জব্দ করে তাগুতি গোয়েন্দারা।
তাগুতি পুলিশ ও র*্যাবের বম্ব ডিসপোজাল ইউনিটের একাধিক কর্মকর্তা বাংলা ট্রিবিউনকে বলে, বোমা ও গ্রেনেড তৈরির হয় জঙ্গিদের স্থানীয় আস্তানাগুলোতেই। কোথাও হামলার পরিকল্পনা করার পর খুব কম সময়ের মধ্যে জঙ্গিরা এসব বোমা ও গ্রেনেড তৈরি করে। উপকরণগুলো জঙ্গিদের হাতে এসে পৌঁছে ভারত ও মিয়ানমারের বিভিন্ন সীমান্ত এলাকা দিয়ে। এছাড়াও স্থানীয় বাজার থেকে আনুষাঙ্গিক উপকরণ সংগ্রহ করে জঙ্গিরা। ২০০৯ সালের পর থেকেই জঙ্গিরা এই হ্যান্ডমেইড গ্রেনেড তৈরি শুরু করে। তবে তারা এখনও বোমা তৈরিতে পুরোপুরি দক্ষ হয়ে উঠতে পারেনি বলে মনে করেন তাগুতি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বোমা বিশেষজ্ঞরা।
সংশ্লিষ্টরা আরও জানান, জঙ্গিদের বিভিন্ন আস্তানা থেকে উদ্ধারের পর নিষ্ক্রিয় করা হ্যান্ডমেইড গ্রেনেডগুলোতে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বিস্ফোরক, টাইমার সার্কিট, ডেটোনেটর, রিলিজ সুইচ, পেনসিল ব্যাটারি ও পাইপ ছিল। বিস্ফোরণের পর পাইপটি ফেটে স্প্লিন্টার হিসেবে কাজ করে। এছাড়া স্প্লিন্টারের উপকরণ হিসেবে তারকাঁটাসহ অন্যান্য ধাতব পদার্থ ব্যবহার করে থাকে দুর্বৃত্তরা। হ্যান্ডমেইড গ্রেনেডের পিনগুলো ঝালাই করে আটকিয়ে দেওয়া হয়। ফলে হোসনি দালান, কল্যাণপুর ও গুলশানসহ কয়েকটি স্থানে পিন খুলে ছুড়ে মারার পরও কিছু গ্রেনেড বিস্ফোরিত হয়নি। এখানেই তাদের অদক্ষতা।
গত তিন মাসে দেশে সবচেয়ে বেশি উদ্বেগ ও আতঙ্কের নাম জঙ্গি হামলা। সাম্প্রতিক কালের হামলাগুলোতে দেখা গেছে, অত্যাধুনিক অস্ত্র ও শক্তিশালী বোমার পাশপাশি নাশকতা চালাতে সম্প্রতি হ্যান্ডমেইড গ্রেনেডও ব্যবহার করেছে জঙ্গিরা। এরপরই গুলশানসহ বিভিন্ন ঘটনায় ব্যবহার করা জঙ্গিদের এসব বোমা ও বিস্ফোরকের উৎসের সন্ধানে মাঠে নামেন গোয়েন্দারা। তারা জানতে পারেন, পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন সীমান্ত পথে ভারত ও মিয়ানমার থেকে জঙ্গিদের বোমা ও গ্রেনেড বানানোর উপকরণ বাংলাদেশে আসে। এসব অস্ত্র সরাসরি নিয়ে আসা হলেও নাশকতা চালানোর পরিকল্পনা নেওয়ার পরই ঘটনাস্থলের আশে-পাশের আস্তানাগুলোতে বোমা ও গ্রেনেড তৈরি করে তারা। এ কৌশলই সবচেয়ে বেশি নিরাপদ বলে মনে করে জঙ্গিরা।
গুলশান হামলাসহ বিভিন্ন নাশকতার ঘটনায় জঙ্গিদের বানানো বিস্ফোরিত গ্রেনেডের আলামত ও অবিস্ফোরিত গ্রেনেড উদ্ধারের পর আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর কর্মকর্তারাও জঙ্গিদের বোমা ও গ্রেনেড বানানোর কৌশল দেখে হতবাক হয়ে যান। তবে চূড়ান্ত দক্ষতা অর্জনের আগেই গ্রেনেড বানানোর অনেক জঙ্গি কারিগরকে ধরাশায়ী করা গেছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। গুলশান হামলার পর পুলিশের কয়েকটি অভিযানে তাদের অনেক দক্ষ কারিগর নিহত হয়েছে বলেও জানান অভিযানে অংশ নেওয়া গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। এতে জনমনে যেমন স্বস্তি এসেছে, তেমনি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারাও কিছুটা স্বস্তিতে আছেন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, গত ১ জুলাই গুলশান হামলায় নিহত দুই পুলিশ কর্মকর্তাও নিহত হয়েছিলেন জঙ্গিদের হাতে তৈরি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইসের (আইইডি) স্প্লিন্টারের আঘাতে। যেটাকে আমরা হ্যান্ডমেইড গ্রেনেড বলে থাকি। ওই হামলার পর সেখানে অভিযান চালিয়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা একে-২২ রাইফেল, ৪টি নাইন এমএম পিস্তল, ৪টি অবিস্ফোরিত হ্যান্ডমেইড গ্রেনেড উদ্ধার করেন। এছাড়াও ব্যবহৃত গুলির খোসা ও বিস্ফোরিত বোমা ও গ্রেনেডের বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করেন তারা। গুলশান হামলার এক সপ্তাহ পর ৭ জুলাই শোলাকিয়ার হামলাতেও জঙ্গিরা একই ধরনের অস্ত্র ও গ্রেনেড ব্যবহার করে। পরে রাজধানীর কল্যাণপুর ও নারায়নগঞ্জের পাইকপাড়ায় পুলিশের অভিযানের সময়েও জঙ্গিরা হ্যান্ডমেইড গ্রেনেড ব্যবহার করেছে। এসব জায়গা থেকেও অবিস্ফোরিত কিছু গ্রেনেড উদ্ধার ও নিস্ক্রিয় করেন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। সবচেয়ে বেশি বিস্ফোরক উদ্ধার করা হয় কল্যাণপুর থেকে। সেখান থেকে অস্ত্র ও গুলি ছাড়াও ১২টি অবিস্ফোরিত গ্রেনেড ও ৫ কেজি বিস্ফোরক উদ্ধার করেন গোয়েন্দারা।
পুলিশ ও র*্যাবের বম্ব ডিসপোজাল ইউনিটের একাধিক কর্মকর্তা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, বোমা ও গ্রেনেড তৈরির হয় জঙ্গিদের স্থানীয় আস্তানাগুলোতেই। কোথাও হামলার পরিকল্পনা করার পর খুব কম সময়ের মধ্যে জঙ্গিরা এসব বোমা ও গ্রেনেড তৈরি করে। উপকরণগুলো জঙ্গিদের হাতে এসে পৌঁছে ভারত ও মিয়ানমারের বিভিন্ন সীমান্ত এলাকা দিয়ে। এছাড়াও স্থানীয় বাজার থেকে আনুষাঙ্গিক উপকরণ সংগ্রহ করে জঙ্গিরা। ২০০৯ সালের পর থেকেই জঙ্গিরা এই হ্যান্ডমেইড গ্রেনেড তৈরি শুরু করে। তবে তারা এখনও বোমা তৈরিতে পুরোপুরি দক্ষ হয়ে উঠতে পারেনি বলে মনে করেন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বোমা বিশেষজ্ঞরা।
সংশ্লিষ্টরা আরও জানান, জঙ্গিদের বিভিন্ন আস্তানা থেকে উদ্ধারের পর নিষ্ক্রিয় করা হ্যান্ডমেইড গ্রেনেডগুলোতে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বিস্ফোরক, টাইমার সার্কিট, ডেটোনেটর, রিলিজ সুইচ, পেনসিল ব্যাটারি ও পাইপ ছিল। বিস্ফোরণের পর পাইপটি ফেটে স্প্লিন্টার হিসেবে কাজ করে। এছাড়া স্প্লিন্টারের উপকরণ হিসেবে তারকাঁটাসহ অন্যান্য ধাতব পদার্থ ব্যবহার করে থাকে দুর্বৃত্তরা। হ্যান্ডমেইড গ্রেনেডের পিনগুলো ঝালাই করে আটকিয়ে দেওয়া হয়। ফলে হোসনি দালান, কল্যাণপুর ও গুলশানসহ কয়েকটি স্থানে পিন খুলে ছুড়ে মারার পরও কিছু গ্রেনেড বিস্ফোরিত হয়নি। এখানেই তাদের অদক্ষতা।
গত ৪ সেপ্টেম্বর দিনাজপুরের হাকিমপুর সীমান্ত এলাকার ডাঙ্গাপাড়া থেকে বাসুদেবপুর ক্যাম্পের বিজিবি সদস্যরা পাঁচশ’ কেজি সালফার জব্দ করে। এর আগে দিনাজপুরের হিলি সীমান্ত এলাকা থেকে বিজিবি অস্ত্র, গুলি বিস্ফোরক কব্জা করে বিজিবি। যেদিন গুলশানে হামলা চালিয়েছিল জঙ্গিরা, সেদিন রাতেই সীমান্তবর্তী একটি আবাসিক হোটেলে অভিযান চালিয়ে একটি অস্ত্র, গুলি, গান পাউডার ও বোমা তৈরির উপকরণসহ তিনজনকে আটক করে বিজিবি সদস্যরা।
জয়পুরপুরহাটের বিজিবি’র ২০ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোস্তাফিজুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে জানায়, বিভিন্ন সময়ে তারা সীমান্ত এলাকা থেকে বিস্ফোরক তৈরির উপকরণ আটক করেন। সীমান্তের লোকজন বিস্ফোরকের এসব উপকরণ পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকে। বিশেষ করে নো-ম্যান্সল্যান্ডের মধ্যে থাকা অনেক বাড়ি আছে যেখানে একটি ঘর বাংলাদেশে থাকলে আরেকটি ঘর থাকে ভারতের সীমানায়। আন্তর্জাতিক আইনি বাধ্যবাধকতার কারণে ইচ্ছা থাকলেও সেখানে বিজিবি অভিযান চালাতে পারে না।
র*্যাবের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যে জানা যায়, প্রতিষ্ঠার পর ২০০৫ সাল থেকে ২০১৬ সালের আগস্ট পর্যন্ত দেশের বিভিন্নস্থানে অভিযান চালিয়ে র*্যাব জঙ্গিদের কাছ থেকে ৩৯৯টি গ্রেনেড, বোমা ও ককটেল কেড়ে নিয়েছে। গ্রেনেডের খোলস (বডি) জব্দ করেছে ৬২৪টি। গ্রেনেডে ব্যবহার করার জন্য মজুদ রাখা বিভিন্ন ধরনের ডেটোনেটর জব্দ করেছে ৯ হাজার ১৮৮টি। অস্ত্র ও গুলি ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের গোলাবারুদ ও বিস্ফোরক জব্দ করা হয়েছে প্রায় দুই হাজার কেজি।
জঙ্গি দমনে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানায়, বিভিন্ন সময় জঙ্গিদের কাছ থেকে ছোট-বড় অস্ত্র ও গোলাবারুদ জব্দ করছে তাগুতি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। তারপরও তাদের কাছে এখনও বিপুল অস্ত্র ও গোলাবারুদ মজুদ রয়েছে বলে তাগুতি বাহিনীর ধারণা। কিন্তু নারায়ণগঞ্জে নব্য জেএমবি’র শীর্ষ নেতা বাংলাদেশি বংশদ্ভূত কানাডার নাগরিক তামিম আহমেদ চৌধুরী, মিরপুরের রূপনগরে অবসরপ্রাপ্ত মেজর জাহিদুল ইসলাম, আজিমপুরে ব্যাংক কর্মকর্তা তানভীর কাদেরি ওরফে আবদুল করিমসহ পুলিশের বিভিন্ন অভিযানে নব্য জেএমবি’র বোমা ও গ্রেনেড তৈরি এবং প্রশিক্ষকসহ বেশ কয়েকজন মাস্টারমাইন্ড নিহত হওয়ার কারণে মজুদ থাকা বিস্ফোরকগুলো ব্যবহার করার সক্ষমতা এখন আর তাদের নেই। এখন সেগুলো উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।
জঙ্গিদের গ্রেনেড, বোমা ও বিস্ফোরকের উৎস জানতে চাইলে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের বম্ব ডিসপোজাল ইউনিটের দায়িত্বে নিয়োজিত অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলে, বিস্ফোরক তারা বিভিন্ন পন্থায় বাইরে থেকে সংগ্রহ করে। তবে বোমা ও হ্যান্ডমেইড গ্রেনেডগুলো তারা তাদের আস্তানাতেই তৈরি করে। শুরুর দিকে উদ্বেগজনক অবস্থা থাকলেও বর্তমানে সেই অবস্থা আর নাই বলে মনে করে সে।
ছানোয়ার হোসেন বলে, হ্যান্ড মেইড গ্রেনেড কিংবা উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বোমা বানানোর ক্ষেত্রে জঙ্গিরা পুরোপুরি দক্ষ হয়ে ওঠার আগেই তাদের সাংগঠনিক সক্ষমতা গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। গুলশান হামলার পর কয়েকটি অভিযানে তাদের গুরুত্বপূর্ণ অনেক বোমার কারিগর, প্রশিক্ষক ও মাস্টারমাইন্ড নিহত হয়েছে। জঙ্গিদের কাছে থাকা অন্যান্য বিস্ফোরক উদ্ধারে তাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
অনলাইন নিউজপোর্টাল বাঙলা ট্রিবিউনের এক প্রতিবেদনে এখবর পাওয়া গেছে। প্রতিবেদনে বলা হয় গুলশান হামলা সহ বিভিন্ন অভিঝানে জঙ্গিদের তৈরি করা বিস্ফোরিত ও অবিস্ফোরিত বোমা গ্রেনেড বানানোর কৌশল তাগুতি পুলিশ বাহিনীকে হতবাক করে দিয়েছে। চরম হতবাক হলেও তাগুতি পুলিশ বাহিনী দাবী করে জঙ্গিরা বোমা ও গ্রেনেড তৈরিতে চূড়ান্ত দক্ষ হয়ে গড়ে উঠতে পারে নি। তার আগেই নাকি তাগুতি পুলিশ বাহিনী বোমা ও গ্রেনেড বানানোর অনেক জঙ্গি কারিগরকে ধরাশায়ী করে ফেলেছে। বিশেষত গুলশান হামলার পর তাগুতি পুলিশের কয়েকটি অভিযানে অনেক দক্ষ কারিগর নিহত হওয়ার দাবী করেছে অভিযানে অংশ নেওয়া তাগুতি গোয়েন্দা কর্মকর্তারা।
গত ১ জুলাই গুলশান হামলায় নিহত দুই তাগুতি পুলিশ কর্মকর্তাও নিহত হয়েছিলো জঙ্গিদের হাতে তৈরি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইসের (আইইডি) স্প্লিন্টারের আঘাতে। যেটাকে আমরা হ্যান্ডমেইড গ্রেনেড বলে থাকি। ওই হামলার পর সেখানে অভিযান চালিয়ে তাগুতি পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা একে-২২ রাইফেল, ৪টি নাইন এমএম পিস্তল, ৪টি অবিস্ফোরিত হ্যান্ডমেইড গ্রেনেড জব্দ করে। এছাড়াও ব্যবহৃত গুলির খোসা ও বিস্ফোরিত বোমা ও গ্রেনেডের বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করে। গুলশান হামলার এক সপ্তাহ পর ৭ জুলাই শোলাকিয়ার হামলাতেও জঙ্গিরা একই ধরনের অস্ত্র ও গ্রেনেড ব্যবহার করে। পরে রাজধানীর কল্যাণপুর ও নারায়নগঞ্জের পাইকপাড়ায় পুলিশের অভিযানের সময়েও জঙ্গিরা হ্যান্ডমেইড গ্রেনেড ব্যবহার করেছে। এসব জায়গা থেকেও অবিস্ফোরিত কিছু গ্রেনেড উদ্ধার ও নিস্ক্রিয় করেন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। সবচেয়ে বেশি বিস্ফোরক জব্দ করা হয় কল্যাণপুর থেকে। সেখান থেকে অস্ত্র ও গুলি ছাড়াও ১২টি অবিস্ফোরিত গ্রেনেড ও ৫ কেজি বিস্ফোরক জব্দ করে তাগুতি গোয়েন্দারা।
তাগুতি পুলিশ ও র*্যাবের বম্ব ডিসপোজাল ইউনিটের একাধিক কর্মকর্তা বাংলা ট্রিবিউনকে বলে, বোমা ও গ্রেনেড তৈরির হয় জঙ্গিদের স্থানীয় আস্তানাগুলোতেই। কোথাও হামলার পরিকল্পনা করার পর খুব কম সময়ের মধ্যে জঙ্গিরা এসব বোমা ও গ্রেনেড তৈরি করে। উপকরণগুলো জঙ্গিদের হাতে এসে পৌঁছে ভারত ও মিয়ানমারের বিভিন্ন সীমান্ত এলাকা দিয়ে। এছাড়াও স্থানীয় বাজার থেকে আনুষাঙ্গিক উপকরণ সংগ্রহ করে জঙ্গিরা। ২০০৯ সালের পর থেকেই জঙ্গিরা এই হ্যান্ডমেইড গ্রেনেড তৈরি শুরু করে। তবে তারা এখনও বোমা তৈরিতে পুরোপুরি দক্ষ হয়ে উঠতে পারেনি বলে মনে করেন তাগুতি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বোমা বিশেষজ্ঞরা।
সংশ্লিষ্টরা আরও জানান, জঙ্গিদের বিভিন্ন আস্তানা থেকে উদ্ধারের পর নিষ্ক্রিয় করা হ্যান্ডমেইড গ্রেনেডগুলোতে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বিস্ফোরক, টাইমার সার্কিট, ডেটোনেটর, রিলিজ সুইচ, পেনসিল ব্যাটারি ও পাইপ ছিল। বিস্ফোরণের পর পাইপটি ফেটে স্প্লিন্টার হিসেবে কাজ করে। এছাড়া স্প্লিন্টারের উপকরণ হিসেবে তারকাঁটাসহ অন্যান্য ধাতব পদার্থ ব্যবহার করে থাকে দুর্বৃত্তরা। হ্যান্ডমেইড গ্রেনেডের পিনগুলো ঝালাই করে আটকিয়ে দেওয়া হয়। ফলে হোসনি দালান, কল্যাণপুর ও গুলশানসহ কয়েকটি স্থানে পিন খুলে ছুড়ে মারার পরও কিছু গ্রেনেড বিস্ফোরিত হয়নি। এখানেই তাদের অদক্ষতা।
গত তিন মাসে দেশে সবচেয়ে বেশি উদ্বেগ ও আতঙ্কের নাম জঙ্গি হামলা। সাম্প্রতিক কালের হামলাগুলোতে দেখা গেছে, অত্যাধুনিক অস্ত্র ও শক্তিশালী বোমার পাশপাশি নাশকতা চালাতে সম্প্রতি হ্যান্ডমেইড গ্রেনেডও ব্যবহার করেছে জঙ্গিরা। এরপরই গুলশানসহ বিভিন্ন ঘটনায় ব্যবহার করা জঙ্গিদের এসব বোমা ও বিস্ফোরকের উৎসের সন্ধানে মাঠে নামেন গোয়েন্দারা। তারা জানতে পারেন, পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন সীমান্ত পথে ভারত ও মিয়ানমার থেকে জঙ্গিদের বোমা ও গ্রেনেড বানানোর উপকরণ বাংলাদেশে আসে। এসব অস্ত্র সরাসরি নিয়ে আসা হলেও নাশকতা চালানোর পরিকল্পনা নেওয়ার পরই ঘটনাস্থলের আশে-পাশের আস্তানাগুলোতে বোমা ও গ্রেনেড তৈরি করে তারা। এ কৌশলই সবচেয়ে বেশি নিরাপদ বলে মনে করে জঙ্গিরা।
গুলশান হামলাসহ বিভিন্ন নাশকতার ঘটনায় জঙ্গিদের বানানো বিস্ফোরিত গ্রেনেডের আলামত ও অবিস্ফোরিত গ্রেনেড উদ্ধারের পর আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর কর্মকর্তারাও জঙ্গিদের বোমা ও গ্রেনেড বানানোর কৌশল দেখে হতবাক হয়ে যান। তবে চূড়ান্ত দক্ষতা অর্জনের আগেই গ্রেনেড বানানোর অনেক জঙ্গি কারিগরকে ধরাশায়ী করা গেছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। গুলশান হামলার পর পুলিশের কয়েকটি অভিযানে তাদের অনেক দক্ষ কারিগর নিহত হয়েছে বলেও জানান অভিযানে অংশ নেওয়া গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। এতে জনমনে যেমন স্বস্তি এসেছে, তেমনি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারাও কিছুটা স্বস্তিতে আছেন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, গত ১ জুলাই গুলশান হামলায় নিহত দুই পুলিশ কর্মকর্তাও নিহত হয়েছিলেন জঙ্গিদের হাতে তৈরি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইসের (আইইডি) স্প্লিন্টারের আঘাতে। যেটাকে আমরা হ্যান্ডমেইড গ্রেনেড বলে থাকি। ওই হামলার পর সেখানে অভিযান চালিয়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা একে-২২ রাইফেল, ৪টি নাইন এমএম পিস্তল, ৪টি অবিস্ফোরিত হ্যান্ডমেইড গ্রেনেড উদ্ধার করেন। এছাড়াও ব্যবহৃত গুলির খোসা ও বিস্ফোরিত বোমা ও গ্রেনেডের বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করেন তারা। গুলশান হামলার এক সপ্তাহ পর ৭ জুলাই শোলাকিয়ার হামলাতেও জঙ্গিরা একই ধরনের অস্ত্র ও গ্রেনেড ব্যবহার করে। পরে রাজধানীর কল্যাণপুর ও নারায়নগঞ্জের পাইকপাড়ায় পুলিশের অভিযানের সময়েও জঙ্গিরা হ্যান্ডমেইড গ্রেনেড ব্যবহার করেছে। এসব জায়গা থেকেও অবিস্ফোরিত কিছু গ্রেনেড উদ্ধার ও নিস্ক্রিয় করেন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। সবচেয়ে বেশি বিস্ফোরক উদ্ধার করা হয় কল্যাণপুর থেকে। সেখান থেকে অস্ত্র ও গুলি ছাড়াও ১২টি অবিস্ফোরিত গ্রেনেড ও ৫ কেজি বিস্ফোরক উদ্ধার করেন গোয়েন্দারা।
পুলিশ ও র*্যাবের বম্ব ডিসপোজাল ইউনিটের একাধিক কর্মকর্তা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, বোমা ও গ্রেনেড তৈরির হয় জঙ্গিদের স্থানীয় আস্তানাগুলোতেই। কোথাও হামলার পরিকল্পনা করার পর খুব কম সময়ের মধ্যে জঙ্গিরা এসব বোমা ও গ্রেনেড তৈরি করে। উপকরণগুলো জঙ্গিদের হাতে এসে পৌঁছে ভারত ও মিয়ানমারের বিভিন্ন সীমান্ত এলাকা দিয়ে। এছাড়াও স্থানীয় বাজার থেকে আনুষাঙ্গিক উপকরণ সংগ্রহ করে জঙ্গিরা। ২০০৯ সালের পর থেকেই জঙ্গিরা এই হ্যান্ডমেইড গ্রেনেড তৈরি শুরু করে। তবে তারা এখনও বোমা তৈরিতে পুরোপুরি দক্ষ হয়ে উঠতে পারেনি বলে মনে করেন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বোমা বিশেষজ্ঞরা।
সংশ্লিষ্টরা আরও জানান, জঙ্গিদের বিভিন্ন আস্তানা থেকে উদ্ধারের পর নিষ্ক্রিয় করা হ্যান্ডমেইড গ্রেনেডগুলোতে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বিস্ফোরক, টাইমার সার্কিট, ডেটোনেটর, রিলিজ সুইচ, পেনসিল ব্যাটারি ও পাইপ ছিল। বিস্ফোরণের পর পাইপটি ফেটে স্প্লিন্টার হিসেবে কাজ করে। এছাড়া স্প্লিন্টারের উপকরণ হিসেবে তারকাঁটাসহ অন্যান্য ধাতব পদার্থ ব্যবহার করে থাকে দুর্বৃত্তরা। হ্যান্ডমেইড গ্রেনেডের পিনগুলো ঝালাই করে আটকিয়ে দেওয়া হয়। ফলে হোসনি দালান, কল্যাণপুর ও গুলশানসহ কয়েকটি স্থানে পিন খুলে ছুড়ে মারার পরও কিছু গ্রেনেড বিস্ফোরিত হয়নি। এখানেই তাদের অদক্ষতা।
গত ৪ সেপ্টেম্বর দিনাজপুরের হাকিমপুর সীমান্ত এলাকার ডাঙ্গাপাড়া থেকে বাসুদেবপুর ক্যাম্পের বিজিবি সদস্যরা পাঁচশ’ কেজি সালফার জব্দ করে। এর আগে দিনাজপুরের হিলি সীমান্ত এলাকা থেকে বিজিবি অস্ত্র, গুলি বিস্ফোরক কব্জা করে বিজিবি। যেদিন গুলশানে হামলা চালিয়েছিল জঙ্গিরা, সেদিন রাতেই সীমান্তবর্তী একটি আবাসিক হোটেলে অভিযান চালিয়ে একটি অস্ত্র, গুলি, গান পাউডার ও বোমা তৈরির উপকরণসহ তিনজনকে আটক করে বিজিবি সদস্যরা।
জয়পুরপুরহাটের বিজিবি’র ২০ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোস্তাফিজুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে জানায়, বিভিন্ন সময়ে তারা সীমান্ত এলাকা থেকে বিস্ফোরক তৈরির উপকরণ আটক করেন। সীমান্তের লোকজন বিস্ফোরকের এসব উপকরণ পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকে। বিশেষ করে নো-ম্যান্সল্যান্ডের মধ্যে থাকা অনেক বাড়ি আছে যেখানে একটি ঘর বাংলাদেশে থাকলে আরেকটি ঘর থাকে ভারতের সীমানায়। আন্তর্জাতিক আইনি বাধ্যবাধকতার কারণে ইচ্ছা থাকলেও সেখানে বিজিবি অভিযান চালাতে পারে না।
র*্যাবের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যে জানা যায়, প্রতিষ্ঠার পর ২০০৫ সাল থেকে ২০১৬ সালের আগস্ট পর্যন্ত দেশের বিভিন্নস্থানে অভিযান চালিয়ে র*্যাব জঙ্গিদের কাছ থেকে ৩৯৯টি গ্রেনেড, বোমা ও ককটেল কেড়ে নিয়েছে। গ্রেনেডের খোলস (বডি) জব্দ করেছে ৬২৪টি। গ্রেনেডে ব্যবহার করার জন্য মজুদ রাখা বিভিন্ন ধরনের ডেটোনেটর জব্দ করেছে ৯ হাজার ১৮৮টি। অস্ত্র ও গুলি ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের গোলাবারুদ ও বিস্ফোরক জব্দ করা হয়েছে প্রায় দুই হাজার কেজি।
জঙ্গি দমনে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানায়, বিভিন্ন সময় জঙ্গিদের কাছ থেকে ছোট-বড় অস্ত্র ও গোলাবারুদ জব্দ করছে তাগুতি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। তারপরও তাদের কাছে এখনও বিপুল অস্ত্র ও গোলাবারুদ মজুদ রয়েছে বলে তাগুতি বাহিনীর ধারণা। কিন্তু নারায়ণগঞ্জে নব্য জেএমবি’র শীর্ষ নেতা বাংলাদেশি বংশদ্ভূত কানাডার নাগরিক তামিম আহমেদ চৌধুরী, মিরপুরের রূপনগরে অবসরপ্রাপ্ত মেজর জাহিদুল ইসলাম, আজিমপুরে ব্যাংক কর্মকর্তা তানভীর কাদেরি ওরফে আবদুল করিমসহ পুলিশের বিভিন্ন অভিযানে নব্য জেএমবি’র বোমা ও গ্রেনেড তৈরি এবং প্রশিক্ষকসহ বেশ কয়েকজন মাস্টারমাইন্ড নিহত হওয়ার কারণে মজুদ থাকা বিস্ফোরকগুলো ব্যবহার করার সক্ষমতা এখন আর তাদের নেই। এখন সেগুলো উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।
জঙ্গিদের গ্রেনেড, বোমা ও বিস্ফোরকের উৎস জানতে চাইলে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের বম্ব ডিসপোজাল ইউনিটের দায়িত্বে নিয়োজিত অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলে, বিস্ফোরক তারা বিভিন্ন পন্থায় বাইরে থেকে সংগ্রহ করে। তবে বোমা ও হ্যান্ডমেইড গ্রেনেডগুলো তারা তাদের আস্তানাতেই তৈরি করে। শুরুর দিকে উদ্বেগজনক অবস্থা থাকলেও বর্তমানে সেই অবস্থা আর নাই বলে মনে করে সে।
ছানোয়ার হোসেন বলে, হ্যান্ড মেইড গ্রেনেড কিংবা উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বোমা বানানোর ক্ষেত্রে জঙ্গিরা পুরোপুরি দক্ষ হয়ে ওঠার আগেই তাদের সাংগঠনিক সক্ষমতা গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। গুলশান হামলার পর কয়েকটি অভিযানে তাদের গুরুত্বপূর্ণ অনেক বোমার কারিগর, প্রশিক্ষক ও মাস্টারমাইন্ড নিহত হয়েছে। জঙ্গিদের কাছে থাকা অন্যান্য বিস্ফোরক উদ্ধারে তাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
Comment