ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে হত্যা বন্ধে যৌথ পদক্ষেপের সিদ্ধান্ত
২৪ অগাস্ট ২০১৪
শুভজ্যোতি ঘোষ,
বিবিসি বাংলা, দিল্লি
শুভজ্যোতি ঘোষ,
বিবিসি বাংলা, দিল্লি
ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিহত কিশোরী ফেলানি খাতুনের হত্যার ঘটনায় দ্রুত সুবিচার নিশ্চিত করা হবে বলে ভারতের সীমান্ত রক্ষা বাহিনী বিএসএফ বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষা বাহিনী বিজিবিকে আশ্বস্ত করেছে।
বিএসএফ প্রধান ডি. কে. পাঠক জানিয়েছেন, ওই মামলায় ভারতের দিকের সাক্ষীদের আবার নতুন করে জেরা শুরু হয়েছে। এখন বাংলাদেশের দিকের সাক্ষীদেরও আবার শুনানিতে ডাকার প্রস্তুতি চলছে।
ফেলানি হত্যা মামলায় অভিযুক্ত বিএসএফ জওয়ানকে বেকসুর খালাস দিয়ে বাহিনীর অভ্যন্তরীণ আদালত যে রায় দিয়েছিল, বিএসএফের তদানীন্তন প্রধান সেই রায়ের সঙ্গে একমত হতে না পেরে পুনর্বিচারের নির্দেশ দিয়েছিলেন। তার পর প্রায় বছর ঘুরতে চললেও সেই পুনর্বিচারে বিশেষ অগ্রগতি হয়নি।
ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে হত্যার ঘটনা শূন্যে নামিয়ে আনতে দু'দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী একযোগে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিতে রাজি হয়েছে।
ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে হত্যার ঘটনা যে একেবারে শূন্যে নামিয়ে আনা দরকার, দিল্লিতে বিএসএফ ও বিজিবির মহাপরিচালকদের দীর্ঘ বৈঠকের শেষে সে কথাটা স্বীকার করা হয়েছে যৌথ বিবৃতিতেই। বিজিবি'র পক্ষ থেকে এই দাবি তোলা হচ্ছে দীর্ঘদিন ধরেই, তাতে এবার সায় দিয়েছে বিএসএফও। কিন্তু সেই সঙ্গেই বিএসএফ প্রধান জানাতে ভোলেননি নিতান্ত বাধ্য না হলে তারা গুলি ছোঁড়েন না।
বিএসএফের মহাপরিচালক ডি. কে.পাঠক বলেন, ''কোন্* পটভূমিতে আর কেন গুলি চালানো হচ্ছে সেটা কিন্তু দেখতে হবে। সীমান্তে অপরাধমূলক কাজকর্ম বা এক দেশের নাগরিকের অন্যায়ভাবে অন্য দেশে যাওয়া ঠেকানোটাই সীমান্তরক্ষীদের ম্যান্ডেট। সেই কাজেও আমরা প্রথমেই কিন্তু গুলি চালাই না। অন্য কিছুতে কাজ না-হলে বা বাহিনীর সদস্যদের জীবন বিপন্ন হলে কখনও কখনও আত্মরক্ষার্থে গুলি চালাতে হয়।''
সীমান্ত হত্যার যৌথ তদন্তের সিদ্ধান্ত থেকে সরে গেলো
বিজিবি-বিএসএফ
বিএসএফ–এর মহাপরিচালক বলেন, “প্রাণঘাতী নয়, এমন কৌশল অবলম্বন করার ফলে মৃত্যুর ঘটনা কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। কিন্তু বিএসএফের সদস্যদের ওপর আক্রমণের ঘটনা উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে।”
তবে ভারতের এই দাবিকে বাংলাদেশের ওপর চাপ প্রয়োগ করতে ভারতের কৌশল হিসেবেই দেখছেন তাঁরা।
এ প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. দেলোয়ার হোসেন বেনারকে বলেন, “বিএসএফ–এর এই দাবি বাংলাদেশের ওপর চাপ সৃষ্টির কৌশল হতে পারে। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশি নাগরিকদেরই বেশি হত্যা করা হয়, যা বন্ধের প্রতিশ্রুতিও দিলেও সবটুকু পূরণ করছে না ভারত।”
গত বছর ১৬ মে ঢাকায় ছয় দিনব্যাপী সম্মেলনে দীর্ঘ আলোচনার পর সীমান্তে হত্যাগুলোর তদন্ত যৌথভাবে করার সিদ্ধান্ত নেয় বিজিবি ও বিএসএফ। বিএসএফ—এর আপত্তির মুখে মহাপরিচালক পর্যায়ের এবারের সম্মেলনে দুপক্ষ সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে।
এদিকে যৌথ তদন্তের বিষয় থেকে সরে দাঁড়ানোর কারণ জানতে চাইলে বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবুল হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, “কোনো হত্যাকাণ্ডের ঘটনার তদন্ত বিএসএফ বা বিজিবি করতে পারে না। তদন্তের কাজ করে উভয় দেশের পুলিশ।”
বিজিবি-বিএসএফের শীর্ষ পর্যায়ে দফায় দফায় বৈঠকের পরও সীমান্ত হত্যা বন্ধ না হওয়ার কারণ জানতে চাইলে বিজিবির মহাপরিচালক বলেন, “প্রতিটি ঘটনায় বিজিবির পক্ষ থেকে কড়া প্রতিবাদ জানানো হয়। আর বিএসএফের পক্ষ থেকে বলা হয় আত্মরক্ষার্থে গুলি চালানোর কথা।
বিএসএফ প্রধান ডি. কে. পাঠক জানিয়েছেন, ওই মামলায় ভারতের দিকের সাক্ষীদের আবার নতুন করে জেরা শুরু হয়েছে। এখন বাংলাদেশের দিকের সাক্ষীদেরও আবার শুনানিতে ডাকার প্রস্তুতি চলছে।
ফেলানি হত্যা মামলায় অভিযুক্ত বিএসএফ জওয়ানকে বেকসুর খালাস দিয়ে বাহিনীর অভ্যন্তরীণ আদালত যে রায় দিয়েছিল, বিএসএফের তদানীন্তন প্রধান সেই রায়ের সঙ্গে একমত হতে না পেরে পুনর্বিচারের নির্দেশ দিয়েছিলেন। তার পর প্রায় বছর ঘুরতে চললেও সেই পুনর্বিচারে বিশেষ অগ্রগতি হয়নি।
ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে হত্যার ঘটনা শূন্যে নামিয়ে আনতে দু'দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী একযোগে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিতে রাজি হয়েছে।
ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে হত্যার ঘটনা যে একেবারে শূন্যে নামিয়ে আনা দরকার, দিল্লিতে বিএসএফ ও বিজিবির মহাপরিচালকদের দীর্ঘ বৈঠকের শেষে সে কথাটা স্বীকার করা হয়েছে যৌথ বিবৃতিতেই। বিজিবি'র পক্ষ থেকে এই দাবি তোলা হচ্ছে দীর্ঘদিন ধরেই, তাতে এবার সায় দিয়েছে বিএসএফও। কিন্তু সেই সঙ্গেই বিএসএফ প্রধান জানাতে ভোলেননি নিতান্ত বাধ্য না হলে তারা গুলি ছোঁড়েন না।
বিএসএফের মহাপরিচালক ডি. কে.পাঠক বলেন, ''কোন্* পটভূমিতে আর কেন গুলি চালানো হচ্ছে সেটা কিন্তু দেখতে হবে। সীমান্তে অপরাধমূলক কাজকর্ম বা এক দেশের নাগরিকের অন্যায়ভাবে অন্য দেশে যাওয়া ঠেকানোটাই সীমান্তরক্ষীদের ম্যান্ডেট। সেই কাজেও আমরা প্রথমেই কিন্তু গুলি চালাই না। অন্য কিছুতে কাজ না-হলে বা বাহিনীর সদস্যদের জীবন বিপন্ন হলে কখনও কখনও আত্মরক্ষার্থে গুলি চালাতে হয়।''
সীমান্ত হত্যার যৌথ তদন্তের সিদ্ধান্ত থেকে সরে গেলো
বিজিবি-বিএসএফ
২১ ফেব্রুয়ারী ২০১৭
ঢাকা থেকে পুলক ঘটক
ঢাকা থেকে পুলক ঘটক
বছর না যেতেই সীমান্ত হত্যার যৌথ তদন্তের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে বাংলাদেশ ও ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি এবং বিএসএফ। দুই পক্ষের মত হচ্ছে, সীমান্ত হত্যা বন্ধ হয়নি, তবে কমে এসেছে।
তবে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর সদস্যরা সীমান্তে ইদানিং বেশি আক্রান্ত হচ্ছে বলে দাবি করেছেন বিএসএফ–এর মহাপরিচালক কে কে শর্মা।
জবাবে বাংলাদেশের বিশ্লেষকেরা বলছেন, নিরস্ত্র মানুষ সশস্ত্র বিএসএফ–এর জওয়ানদের ওপর হামলা করতে পারে—এটা বিশ্বাসযোগ্য নয়।
জবাবে বাংলাদেশের বিশ্লেষকেরা বলছেন, নিরস্ত্র মানুষ সশস্ত্র বিএসএফ–এর জওয়ানদের ওপর হামলা করতে পারে—এটা বিশ্বাসযোগ্য নয়।
বিএসএফ–এর মহাপরিচালক বলেন, “প্রাণঘাতী নয়, এমন কৌশল অবলম্বন করার ফলে মৃত্যুর ঘটনা কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। কিন্তু বিএসএফের সদস্যদের ওপর আক্রমণের ঘটনা উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে।”
তবে ভারতের এই দাবিকে বাংলাদেশের ওপর চাপ প্রয়োগ করতে ভারতের কৌশল হিসেবেই দেখছেন তাঁরা।
এ প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. দেলোয়ার হোসেন বেনারকে বলেন, “বিএসএফ–এর এই দাবি বাংলাদেশের ওপর চাপ সৃষ্টির কৌশল হতে পারে। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশি নাগরিকদেরই বেশি হত্যা করা হয়, যা বন্ধের প্রতিশ্রুতিও দিলেও সবটুকু পূরণ করছে না ভারত।”
গত বছর ১৬ মে ঢাকায় ছয় দিনব্যাপী সম্মেলনে দীর্ঘ আলোচনার পর সীমান্তে হত্যাগুলোর তদন্ত যৌথভাবে করার সিদ্ধান্ত নেয় বিজিবি ও বিএসএফ। বিএসএফ—এর আপত্তির মুখে মহাপরিচালক পর্যায়ের এবারের সম্মেলনে দুপক্ষ সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে।
এদিকে যৌথ তদন্তের বিষয় থেকে সরে দাঁড়ানোর কারণ জানতে চাইলে বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবুল হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, “কোনো হত্যাকাণ্ডের ঘটনার তদন্ত বিএসএফ বা বিজিবি করতে পারে না। তদন্তের কাজ করে উভয় দেশের পুলিশ।”
বিজিবি-বিএসএফের শীর্ষ পর্যায়ে দফায় দফায় বৈঠকের পরও সীমান্ত হত্যা বন্ধ না হওয়ার কারণ জানতে চাইলে বিজিবির মহাপরিচালক বলেন, “প্রতিটি ঘটনায় বিজিবির পক্ষ থেকে কড়া প্রতিবাদ জানানো হয়। আর বিএসএফের পক্ষ থেকে বলা হয় আত্মরক্ষার্থে গুলি চালানোর কথা।
মানবাধিকার সংস্থা অধিকারের প্রতিবেদন অনুযায়ী, |
২০১৫ সালে সীমান্তে নিহত হয়েছে ৪৪জন, ২০১৪ সালে ৩৫ জন, ২০১৩ সালে ২৯ জন এবং ২০১২ সালে ৩৮ জন। |
আইন ও সালিশ কেন্দ্রের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। |
বিএসএফ–এর হাতে গত এক বছরে সীমান্তে ৩১ বাংলাদেশি নিহত এবং ৩৯ জন আহত হয়েছেন বলে একই সময়ে অপহৃত হয়েছেন ২৪ জন বাংলাদেশি। গত বছর নিহতদের মধ্যে ২৩জনকে গুলি করে এবং সাতজনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। |
Comment