রাজধানীর টিএসসি এলাকায় ব্লগার অভিজিৎ রায় ও সিলেটে ব্লগার অনন্ত বিজয় দাসকে হত্যায় জড়িত সন্দেহে আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের বর্তমান প্রধানসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে র*্যাব। তারা হলো প্রধান নেতা আবুল বাশার, মিডিয়া শাখার সদস্য জুলহাস বিশ্বাস ও জাফরান আল হাসান। গতকাল ভোরে ফকিরাপুল এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত আবুল বাশার আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের আধ্যাত্মিক নেতা জসিম উদ্দিন রাহমানীর ছোট ভাই। এর আগে গত ১৭ই আগস্ট ব্লগার অভিজিৎ ও অনন্ত হত্যার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের অর্থদাতা তৌহিদুর রহমান, সাদেক আলী মিঠু এবং আমিনুল মল্লিককে গ্রেপ্তার করে র*্যাব।
র*্যাব কর্মকর্তাদের দাবি, গ্রেপ্তারকৃত তৌহিদুর, সাদেক ও আমিনুলকে গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানায়, ব্লগার হত্যা ও আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সব কার্যক্রম পরিচালিত হতো জসিম উদ্দিন রাহমানীর নির্দেশে। জসিম উদ্দিন রাহমানীর ছোট ভাই আবুল বাশার এসব নির্দেশনা সদস্যদের কাছে পৌঁছে দিত। এ ছাড়া জুলহাস বিশ্বাস ও জাফরান আল হাসান আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের মিডিয়া শাখার কাজ তদারকি করতো। আনসারুল্লাহ বাংলা টিম কর্তৃক কোন হত্যাকাণ্ড পরিচালিত হলে জুলহাস ও জাফরানের কাজ ছিল বিভিন্ন নামে এসব হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করা।
র*্যাব কর্মকর্তারা জানান, র*্যাব গোয়েন্দা দল জানতে পারে, মিডিয়াতে এদের নাম প্রকাশিত হওয়ার পর বাশার, জাফরান ও জুলহাস একত্রিত হয়ে দেশ ত্যাগের পরিকল্পনা করছে। এ গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র*্যাবের গোয়েন্দা শাখা ও র*্যাব-৩-এর একটি যৌথ দল গতকাল ভোরে ফকিরাপুল এলাকা অভিযান চালিয়ে বাশার, জুলহাস ও জাফরানকে গ্রেপ্তার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতরা জানায়, রমজান ও নাঈম নামের দুই ব্যক্তি ব্লগার অভিজিৎ রায় ও ব্লগার অনন্ত বিজয় দাশ হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশগ্রহণ করেছিল। এ ছাড়া তাদের জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা যায়, তারা আল-কায়েদা ও আইএস সম্পর্কে আলোচনার জন্য মাঝেমধ্যে সাদেক আলী মিঠুর বাসায় যেত। সাদেক আলী মিঠু তাদের বাসায় ডেকে বিভিন্ন জিহাদি বই প্রদান করতো এবং আইএস কর্তৃক বিভিন্ন দেশ দখল, মুসলমানদের নির্যাতন ও জিহাদি ভিডিও দেখাতো।
প্রসঙ্গত, গত ২৬শে ফেব্রুয়ারি টিএসসি এলাকায় অভিজিৎ রায়কে এবং ১২ই মে সিলেটের সুবিদবাজারে অনন্ত বিজয় দাসকে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। অভিজিৎ হত্যাকাণ্ডের মামলাটি ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ ও অনন্ত বিজয় দাস হত্যা মামলা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডি তদন্ত করছে।
Comment