Announcement

Collapse
No announcement yet.

পশুর মতো খুন হওয়ার চেয়ে লড়াই শ্রেয় প্রতিরোধে প্রস্তুত রোহিঙ্গারা

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • পশুর মতো খুন হওয়ার চেয়ে লড়াই শ্রেয় প্রতিরোধে প্রস্তুত রোহিঙ্গারা

    পশুর মতো খুন হওয়ার চেয়ে লড়াই শ্রেয় প্রতিরোধে প্রস্তুত রোহিঙ্গারা
    টেকনাফে ২৩ রোহিঙ্গার লাশ উদ্ধার
    প্রকাশের সময় : ১ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

    প্রাণ বাঁচাতে দেশ ছাড়তে হচ্ছে। ওখানে রেখে এসেছি পিতা-মাতাকে। তারা কি অবস্থায়, কোথায় কিভাবে আছে তার খবর নেই। আদো বেঁচে আছে কি না তার খবর পাওয়া যাচ্ছে না। আমাদের এখন ভরসা শুধু আল্লাহ। আমরা আল্লাহর গায়েবি মদদ আশা করছি। সীমান্তে আশ্রয় অসহায় মানুষ এভাবে প্রতি মুহূর্তে মৃত্যু প্রহর গুনছেন আর আপন জনকে ফিরে পাওয়ায় আশার সৃষ্টিকর্তার কাছে ফরিয়াদ করছেন। মিয়ানমারে এখনো জ্বলছে আগুন। গতকাল বেলা প্রায় সাড়ে ১১টা থেকে মিয়ানমারের মংডু এলাকার আকাশে দেখা যাচ্ছে ২ টি সামরিক হেলিকপ্টার। হেলিকপ্টার ২ টি থেকে মাঝে মাঝে বোমা নিক্ষেপ করতেও দেখা যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন সীমান্তে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গারা। পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী গণহারে তরুণদের আটক করে নিয়ে যাচ্ছে। যাদের ধরতে পারছে না তাদের গুলি করা হচ্ছে। বাড়িঘরে আগুন ধরিয়ে সব পুড়িয়ে দেয়া হচ্ছে।
    রাখাইনের রোহিঙ্গারা জানিয়েছেন, ইতিমধ্যে মংডু এলাকার হরর ডেইল, হাইর পাড়া, জামবইন্যা, বইন্যাপাড়া, হেতল্যা পাড়া, কড়ইতলি, জামবইন্যা পাড়া, দারোগা পাড়া, হুতখালী, কইল্যাভাঙ্গা পাড়াসহ আরো অনেক পাড়া পুড়িয়ে দিয়েছে মিয়ানমার বাহিনী। বাড়িঘর থেকে মুলবান জিনিষপত্র লুট করে নিয়ে যাচ্ছে রাখাইনেরা। রাখাইন নারী-পুরুষরাও মিলিটারির পাশাপাশি মুসলিম বাড়িঘরে হামলা চালাচ্ছে। টেকনাফ- মিয়ানমার ট্রানজিট জেটি ঘাটে দায়িত্বরত এক বিজিবি সদস্য জানান, বিকট শব্দ গুলো হ্যান্ড গ্রেনেট’র আওয়াজের মতো মনে হয়।
    এদিকে, মুহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান,টেকনাফ থেকে জানান, কক্সবাজারের টেকনাফের নাফ নদীতে রোহিঙ্গাবাহী নৌকাডুবির ঘটনায় গত দুই দিনে ২৩ জন রোহিঙ্গার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গত বুধবার সকালে ৪ জন ও বৃহস্পতিবার ভোররাতে নাফ নদীর শাহপরীর দ্বীপসহ বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে স্থানীয়দের সহযোগিতায় ১৯ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ নিয়ে গত দুইদিনে মৃততের সংখ্যা বেড়ে ২৩ জনে দাঁড়িয়েছে।
    টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাইন উদ্দিন খাঁন বলেন, ‘আজ ভোররাত পর্যন্ত নাফ নদীর বিভিন্ন এলাকা থেকে ১৯ জন নারী ও শিশুদের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এরমধ্যে ১০ শিশু ও ৯ জন নারী রয়েছে। এর আগে বুধবার সকালে একইভাবে ৪ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। সাবরাং ইউনিয়নের মহিলা মেম্বার ছেনুয়ারা জানান, বুধবার রাতে নাফ নদীর জলসীমানা অতিক্রম করে বাংলাদেশে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশের চেষ্টাকালে রোহিঙ্গাবোঝাই একটি নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় গত দুইদিনে ২৩ জন রোহিঙ্গার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।
    অন্যদিকে বিভিন্ন আর্ন্তজাতিক গনমাধ্যম সূত্রে জানা যায়. কয়েক দশক ধরে চলা রোহিঙ্গা নির্যাতনের পর এবার মিলছে প্রতিরোধের আভাস। শুধু পালিয়ে বেড়ানো নয়, অস্ত্র হাতে রুখে দাঁড়াচ্ছেন রোহিঙ্গারা। গত ২৫ আগস্ট ভোরে বিদ্রোহীরা অন্তত ৩০টি পুলিশ ও সেনা ঘাঁটিতে হামলা চালানোর পর সীমানা পেরিয়ে আবারও দলে দলে বাংলাদেশে আসতে শুরু করলেও এবার শরণার্থীদের ঢলে একটু পরিবর্তন দেখছেন বিজিবি সদস্যরাও। অন্যবার পুরো পরিবারসহ রোহিঙ্গারা পালিয়ে এলেও এবার শরণার্থীদের দলে পুরুষদের সংখ্যা একেবারেই কম বলে আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা এএফপিকে জানিয়েছেন বিজিবি কর্মকর্তারা।
    নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা এএফপিকে জানিয়েছেন, পুরুষদের কী হয়েছে, আমরা তাদের (রোহিঙ্গা নারীদের) জিজ্ঞেস করেছিলাম। আমাদের জানানো হয়েছে লড়াই করার জন্য পুরুষরা রয়ে গেছে। সীমান্তে আসা রোহিঙ্গা নেতা শাহ আলম জানান, আশপাশের তিন গ্রাম থেকে অন্তত ৩০ জন যুবক ‘স্বাধীনতার যুদ্ধে’ যোগ দিয়েছে এআরএসএতে।

    তিনি প্রশ্ন করেন, ‘তাদের কী-ইবা করার ছিল! পশুর মতো খুন হওয়ার চেয়ে লড়াই করে মারা যাওয়ার পথ বেছে নিয়েছেন তারা। মিয়ানমারের নেতা অং সান সু চি এআরএসএকে জঙ্গি ও সন্ত্রাসী সংগঠন বলে উল্লেখ করেছেন। সংগঠনটির বিরুদ্ধে শিশু যোদ্ধা ব্যবহারের অভিযোগও করেছেন তিনি। তবে এআরএসএ এ ধরনের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। আনুষ্ঠানিকভাবেই এখন বিশ্বজুড়ে এআরএসএকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে পরিচিত করানোর উদ্যোগ নিয়েছে মিয়ানমার সরকার। কঠোর বিবৃতি এবং এআরএসএ’র গুলিতে নিহত বেসামরিক নাগরিকদের ছবি প্রকাশ করে বিশ্বে জনমত গড়ে তোলারও চেষ্টা চালাচ্ছে মিয়ানমার। কিন্তু পাল্টা প্রচার চালাচ্ছে এআরএসএ-ও। শুধু মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যেই নয়, বিভিন্ন শরণার্থী ক্যাম্পে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের কাছেও পৌঁছে গেছে যুদ্ধের ডাক। এআরএসএ বিদ্রোহীদের ভারি অস্ত্র বলতে কিছুই নেই। এখন পর্যন্ত বিভিন্ন হামলায় ব্যবহার করা হয়েছে ছুরি, ঘরে তৈরি বোমা এবং আগ্নেয়াস্ত্র। ফলে মিয়ানমারের সুসজ্জিত সেনাবাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধে কতটুকু টিকতে পারবে বিদ্রোহীরা, সে সন্দেহ থেকেই যাচ্ছে।
    কিন্তু তাতে দমছেন না রোহিঙ্গারা। সীমান্তে এএফপিকে এক রোহিঙ্গা যোদ্ধা জানিয়েছেন, আমাদের শত শত যোদ্ধা পাহাড়ে অবস্থান নিয়েছে। আমরা আরাকানকে রক্ষায় শপথ নিয়েছি, সেটা চাকু এবং লাঠি দিয়ে হলেও আমরা করব। কুতুপালং ক্যাম্পে এক রোহিঙ্গা যুবকের মন্তব্য ছিল এমন, আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। আমাদের তরুণরাও চিন্তা করছেন যুদ্ধে যোগ দেওয়ার। আমরা প্রতিজ্ঞা করেছি, প্রথম সুযোগেই আমরা সীমান্ত অতিক্রম করব। হাজেরা বেগম তিন ছেলেকে নিয়ে গত মাসে সীমানা অতিক্রম করে বাংলাদেশে এসেছেন। তার আরও দুই ছেলে রয়ে গেছেন যুদ্ধ করবেন বলে। বাংলাদেশে আসার এক সপ্তাহের মধ্যে তার আরেক ছেলেও যোগ দেন লড়াইয়ে।
    এএফপিকে তিনি বলেন, ‘ওরা (মিয়ানমার সেনাবাহিনী) আমাদের এমনিতেই মারবে। এরা (এআরএসএ) আমাদের অধিকারের জন্য লড়াই করছে। আমি আমার ছেলেদের পাঠিয়েছি স্বাধীনতার জন্য লড়াই করতে। তিনি বলেন, ‘আমি তাদের উৎসর্গ করেছি, আরাকানের জন্য।
    চমেক হাসপাতালে আরও দুই আহত রোহিঙ্গা এক শিশুর মৃত্যু
    চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, মিয়ানমারে সেনাদের নিষ্ঠুর অভিযানে গুলিবিদ্ধ ও অগ্নিদগ্ধ আরও দুই রোহিঙ্গা যুবককে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সেখানে আহত এক রোহিঙ্গা শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে গত এক সপ্তাহে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা ২৫ জনকে চমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হলো।
    হাসপাতাল সূত্র জানায় টেকনাফে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত এক রোহিঙ্গা শিশু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে। নিহত রোহিঙ্গা শিশু মো. শোয়েব (১২) মিয়ানমারের মংডু এলাকার এনায়েত উল্লাহর ছেলে। টেকনাফের সোহানী ক্যাম্পে থাকত এই শিশু। মেডিকেল পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই আলাউদ্দিন তালুকদার বলেন, মিয়ানমার থেকে আসার পর শোয়েবের পরিবার টেকনাফের সোহানী ক্যাম্পে ছিল। টেকনাফে ক্যাম্পের কাছে রাস্তা পার হওয়ার সময় অটোরিকশার ধাক্কায় শোয়েব আহত হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় বুধবার রাত সাড়ে ১২টায় হাসপাতালে আনার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাতেই শোয়েবের মৃত্যু হয় বলে জানান পুলিশ সদস্য আলাউদ্দিন।
    এদিকে রাখাইনের চলমান সংঘাতে আহত হয়ে পালিয়ে আসা নতুন যে দুই রোহিঙ্গা চিকিৎসার জন্য এসেছেন, তার একজন ভর্তি হয়েছে বুধবার রাতে, হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে। মো. জোবায়ের নামের ওই রোহিঙ্গা যুবক মিয়ানমারের মংডু এলাকার মীর আহমদেরে ছেলে। আর সাইমুল (১৮) নামের আরেকজনকে হাসপাতালের ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে গতকাল ভোর ৫টার দিকে ভর্তি করা হয়েছে। গুলিবিদ্ধ সাইমুল মিয়ানমারের আকিয়াব জেলার মংডুর লাল মোহনের ছেলে।
    হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে গতকাল সকাল পর্যন্ত মোট ২৫ জন মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গা চট্টগ্রাম মেডিকেলে ভর্তি হয়েছেন। ২৬ আগস্ট ভোর রাতে মিয়ানমার থেকে আসা গুলিবিদ্ধ চার রোহিঙ্গা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়। তাদের মধ্যে মুছা নামের একজন সেদিনই মারা যান।



    Source: https://www.dailyinqilab.com/article...A6%B0%E0%A6%BE

  • #2
    জাজাকাল্লাহ

    Comment


    • #3
      জাযাকাল্লাহু খাইরান "কেউ হেদায়েতের দিকে আহ্বান করলে যতজন তার অনুসরণ করবে প্রত্যেকের সমান সওয়াবের অধিকারী সে হবে, তবে যারা অনুসরন করেছে তাদের সওয়াবের কোন কমতি হবে না।" [সহিহ মুসলিমঃ ২৬৭৮]
      ( গাজওয়া হিন্দের ট্রেনিং) https://dawahilallah.com/showthread.php?9883

      Comment

      Working...
      X