সাম্প্রতিক সময়ে ভারতে ইসলামবিদ্বেষের মাত্রা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। একদিকে মুসলিমদের উপর চলছে আক্রমণ, অপরদিকে চলছে মুসলিমদের দ্বীন ইসলামকে মুছে ফেলার প্রচেষ্টা। আবার, মুসলিমদের চোখের শীতলতা মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ব্যাপারেও কুৎসা রটানো হচ্ছে। এমন মুহূর্তেও মুসলিমরা ঘুমিয়ে থাকতে পারেন না। তাই, হয়তো জেগেই উঠেছেন মুহাম্মদ বিন মাসলামার উত্তরসূরীরা। বাংলাদেশের পর এবারে ভারতে এক হিন্দু সন্ত্রাসী শাতিমে রাসূলকে হত্যা করা হয়েছে, আলহামদুলিল্লাহ।
শুক্রবার সকালে বরকতময়ী এই হামলার ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের উত্তরপ্রদেশের রাজধানী লখনউয়ে। হত্যার শিকার “কমলেশ তিওয়ারি” ইসলাম ও মুসলিম বিদ্বেষী ভারতীয় সন্ত্রাসী হিন্দু সংগঠন “হিন্দু মহাসভার” প্রাক্তন স্থানীয় প্রধান হওয়ার পাশাপাশি “হিন্দু সমাজ পার্টি” নামে মুসলিম বিদ্বেষী একটি রাজনৈতিক দলের নেতাও ছিল।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার সকালে লখনউয়ের খুরশিদ বাগ অফিসে বসেছিল কমলেশ তিওয়ারি। সেসময় অজ্ঞাত পরিচয়ের কয়েকজন বীর হামলাকারী তার অফিস আসেন। প্রথমে তার সঙ্গে ভালভাবে কথা বলে অফিসে বসে চা খান তারা। পরে আচমকা ওই উগ্র হিন্দুত্ববাদী সন্ত্রাসী নেতাকে লক্ষ্য করে গুলি চালান তারা। এরপর একটি ধারালো অস্ত্র দিয়ে উক্ত শাতীমে রাসূল (সা.) এর গলা কেটে এলাকা থেকে সরে পড়েন তারা। কমলেশের চিৎকারে ছুটে আসে আশপাশের লোকেরা। তারপর তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে সঙ্গে সঙ্গে কাছের একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই জাহান্নামের টিকিট নিশ্চিত করে কমলেশ। পরে ঘটনাস্থলে গিয়ে একটি দেশীয় পিস্তল ও কয়েকটি কার্তুজ উদ্ধার করে উগ্র হিন্দুত্ববাদী ভারতীয় সন্ত্রাসী পুলিশ বাহিনী।
নিহত কমলেশ ইসলাম ও মুসলিমদের প্রতি প্রচণ্ড বিদ্বেষ লালন করতো। এমনকি জাহান্নামের এই কীট মুসলিমদের চোখের শীতলতা, জীবনের চেয়ে প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের শানে কটুক্তি করে। তাই, বাংলাদেশে যেভাবে অভিজিত, ওয়াশিকুর বাবুসহ আরো কতিপয় শাতিমে রাসূলকে আল্লাহর সিংহরা হত্যা করেছিলেন, সেভাবেই হত্যা করা হয়েছে ভারতের ঐ শাতিমে রাসূল হিন্দুনেতাকে।
২০১৫ সালে বিশ্ব মুসলিমদের প্রাণের স্পন্দন ও সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মানব হযরত মুহম্মদ (সা.) এর নামে কুরুচি ও অশ্লীল ভাষা ব্যবহার করে কমলেশ নামের এই শাতিমে রাসূল। পরে মুসলিমদের আন্দোলনের মুখে সাময়িক সময়ের জন্য লোক দেখানো বন্দী করা হয় তাকে। সম্প্রতি জামিন পায় এই শাতিমে রাসূল ও ইসলাম বিদ্বেষী হিন্দু সন্ত্রাসী নেতা। এলাহাবাদ হাই কোর্টের তরফে তার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া জাতীয় নিরাপত্তা আইনের ধারাগুলিও খারিজ করে দেয়।
ভারতীয় মিডিয়ার তথ্য মতে, এই মাসে কমলেশ তিওয়ারি হত্যাকাণ্ড হল ইসলাম ও মুসলিম বিদ্বেষী হিন্দু নেতার চতুর্থ হত্যা। এর আগে চরম ইসলাম ও মুসলিম বিদ্বেষী বিজেপির নেতা চৌধুরী যশপাল সিংকে একইভাবে ৮ ই অক্টোবর দেওবন্দে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল। এছাড়াও, ১০ ই অক্টোবর, আরেক বিজেপি নেতা এবং প্রাক্তন ছাত্রনেতা কবির তিওয়ারিওকে বস্তিতে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল। ১৩ ই অক্টোবর বিজেপির কাউন্সিলর ধারা সিংহ (৪)) সাহারানপুরের দেওবন্দে অজ্ঞাত হামলাকারীরা গুলি করে হত্যা করেছিলেন। হামলাগুলো কারা করছেন তা এখনো নিশ্চিত করতে পারেনি কেউ।
তবে, ইতিপূর্বে ইসলামবিদ্বেষী নাস্তিক ও শাতিমে রাসূলদের উপর এই ধরণের হামলা চালিয়েছেন আল-কায়েদা উপমহাদেশের বাংলাদেশ শাখার মুজাহিদগণ। বাংলাদেশে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের শানে কটুক্তিকারীদের বিরুদ্ধে চালানো ঐসকল বরকতময়ী হামলার পরে ইসলামবিদ্বেষীরা দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়।
সেই ধারাবাহিকতায় এবার ভারতেও ইসলামবিদ্বেষী ও শাতিমে রাসূলদের উপর একই ধরণের হামলা চালানো শুরু হয়েছে আলহামদুলিল্লাহ। বিগত কিছুদিনের মধ্যেই ৪ ইসলামবিদ্বেষী নেতার নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
উল্লেখ্য, কমলেশ তেওয়ারীর উপর চালানো হামলাটির দায়ভার এখনো কেউ গ্রহণ করেননি। হতে পারে লোন উলফ হামলার শিকার হয়েছে ঐ সন্ত্রাসী হিন্দু নেতা। এদিকে, গত মার্চ মাসেই লোন-উলফ হামলা কীভাবে চালাতে হবে এ বিষয়ে বিস্তারিত একটি ম্যাগাজিন প্রকাশ করে আল-কায়েদা উপমহাদেশের বাংলাদেশ শাখার বালাকোট মিডিয়া। এরপরই ভারতে লোন-উলফ প্রকারের বেশ কিছু হামলার ঘটনা ঘটতে থাকে।
Source: https://alfirdaws.org/2019/10/18/28051/
Comment