তৃতীয় কিস্তি | পাকিস্তান সম্পর্কে তালিবানদের দৃষ্টিভঙ্গি, দ্বন্দ্ব ও নিকট ভবিষ্যৎ
পাকিস্তান সম্পর্কে তালিবানদের দৃষ্টিভঙ্গি
আগের প্রকাশিত দুই কিস্তিতে উল্লেখিত বিষয়গুলোর সাথে সামঞ্জস্য রেখে আমরা বলতে পারি যে, পাকিস্তান সম্পর্কে আফগান তালিবানের দৃষ্টিভঙ্গি দুটি প্রধান অক্ষে অংকিত।১- পাকিস্তানের মাটি ও মানুষের ক্ষেত্রে দৃষ্টিভঙ্গি। এটা বলা যায় যে, তালিবানরা পাকিস্তানের ধর্মীয়, জাতিগত ও সাংস্কৃতিক বুননের দিক দিয়ে খুব কাছাকাছি। অধিকন্তু, পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিম অংশটি পশতুনদের নিয়ে গঠিত। এখানে দেওবন্দি মাসলাকের প্রচুর মাদ্রাসা রয়েছে। আর এসবকিছু তালিবানদের সাথে পাকিস্তানি মুসলমানদের সম্পর্ক জোরদার করতে বড় ভূমিকা পালন করে।২- পাকিস্তান সরকার, গোয়েন্দা এবং সামরিক বাহিনীর ক্ষেত্রে দৃষ্টিভঙ্গি। পাকিস্তানের সরকারগুলি বিগত ২০ বছর সময়কালে আফগান যুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে যে সম্পর্ক স্থাপন করেছে, তা মোটেই তালিবানদের নিকট বোধগম্য নয়। কেননা এ ক্ষেত্রে পাকিস্তানের গাদ্দার সেনাবাহিনীকে দেখা যায় যে, তারা তালিবান সদস্যদের অপহরণ ও নির্যাতন করেছে মুজাহিদদেরকে বন্দী করে ও বেসামরিক মুসলমানদের বোমা মেরে শহিদ এবং মসজিদ ও মাদ্রাসা ধ্বংস করেছে।এছাড়াও পাকিস্তান কর্তৃক আফগানিস্তানের সীমান্ত লঙ্ঘন এবং ডুরান্ড লাইনে সামরিক চৌকি স্থাপন আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। বিষয়টি বর্তমান সময়ে পাকিস্তানের প্রতি তালিবানদের দৃষ্টিভঙ্গি স্পষ্ট করে তুলছে। কেননা তালিবান যোদ্ধারা বর্তমানে গাদ্দার সৈন্যদের অপকর্মের কঠিন জবাব দিচ্ছেন। ১৯৪৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল পাকিস্তান। তখন ব্রিটিশদের দ্বারা আফগান সীমান্তে টানা ডুরান্ড লাইনকে তারা সরকারি সীমানা হিসাবে স্বীকার করে। অপরদিকে তালিবান প্রশাসন এই সীমান্তগুলিকে মেনে নেয় না। তালেবানরা ডুরান্ড লাইনকে আফগানিস্তানের প্রাকৃতিক সীমানা নয়- বরং অত্র অঞ্চলকে বিভক্তকারী একটি কৃত্রিম সীমান্ত বলে মনে করেন। (১)এদিকে ইমারতে ইসলামিয়ার তালিবান সরকার পাকিস্তানের সাথে একটি ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক চায়। তবে এটা বলা যেতে পারে যে, এই অঞ্চলে পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় যে কাঠামো, সেটি সবচেয়ে ভালভাবে জানে তালিবান। উপরে বর্ণিত অভিজ্ঞতার কারণে তালিবানরা পাকিস্তানকে খুব ভালোভাবে জানতে পেরেছিলেন। এর ফলে, তালিবানরা পাকিস্তান সরকারের সাথে রাজনৈতিক সম্পর্ক বজায় রাখলেও, পাকিস্তান কর্তৃক ডুরান্ড লাইন দখল করে রাখা এবং সীমান্তে সামরিক শক্তি প্রয়োগ করাকে শান্তি-শৃঙ্খলার লঙ্ঘন হিসাবেই দেখছেন। তাই তালিবানরা পাকিস্তানের এমন পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়া জানাতেও দ্বিধা করছে না।আমরা যদি উপরোক্ত বিষয়গুলোর সাথে যোগ করি যে, পাকিস্তান সরকার এখনও তালিবানদের প্রতিষ্ঠিত ইমারতে ইসলামিয়াকে স্বীকৃতি দেয়নি, তখন চিত্রটি আরও পরিষ্কার হয়ে যায়।সেই সাথে সীমান্তে গাদ্দার সেনা ও তালিবানদের চলমান লড়াইয়ের সময়কার কিছু বক্তব্য যদি দেখি, তখন পাকিস্তান সরকারের প্রতি তালিবানদের দৃষ্টিভঙ্গির বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয়ে যাবে। যেমন: সম্প্রতি (০৩/০১/২০২২) ডুরান্ড লাইনের চলমান সংঘর্ষের বিষয়ে তালিবান যোদ্ধাদের উদ্দেশ্য করে একটি বার্তা প্রকাশ করেন আফগান প্রতিরক্ষা মন্ত্রী মোল্লা মোহাম্মদ ইয়াকুব।তিনি উক্ত বার্তায় বলেন, ডুরান্ড লাইনে চৌকি স্থাপন করা এবং তা অতিক্রম করার কোনো অধিকার পাকিস্তানের নেই। এগুলো সুস্পষ্ট নিয়ম-নীতির পরিপন্থী।এবিষয়ে তিনি ইমারতে ইসলামিয়ার সীমান্তরক্ষী তালিবান যোদ্ধাদের বলেন, পাকিস্তান সেনাবাহিনী যদি আমাদের মাটির দিকে এক পা অগ্রসর হয়, তাহলে আমার আদেশের জন্য আপনারা অপেক্ষা করবেন না! এখন থেকে এটা আমাকে জানানোর দরকার নেই!” আপনারা মুসলিম ভূমির প্রতিরক্ষার জন্য যা প্রয়োজন তা করবেন। আর যখন তাদেরকে নির্মূল করবেন এবং তাদেরকে আপনাদের দেশ থেকে তাড়িয়ে দেবেন, শুধু তখনই কাবুলে রিপোর্ট করবেন”।এর আগে (১৫/১২/২০২১) পাক-আফগান সীমান্ত লড়াইয়ের সময় একজন তালিবান যোদ্ধাকে বলতে শুনা যায়, যিনি পাকিস্তান সেনাদের লক্ষ করে বলছিলেন,– তোদের থেকে এখনো অনেক হিসাব নেওয়া বাকি আছে, ইহুদিদের চাইতে তোদের থেকে এখন আমাদের হিসাব নেয়া অধিক গুরুত্বপূর্ণ।এর আগে গত সেপ্টেম্বরে, পাক-আফগান তুরখাম সীমান্ত অতিক্রমকালে একটি ট্রাক থেকে পাকিস্তানের জাতীয়তাবাদী পতাকা নামিয়ে ফেলেন তালিবান মুজাহিদিন। এসময় তাঁরা তাকবির ধ্বনি দিতে থাকেন। তখন একজন তালিবান মুজাহিদকে বলতে শুনা যায় যে, এটি (জতিয়তাবাদী পতাকা) পুড়িয়ে ফেলা উচিত। এ বিষয়ে তালিবান সংশ্লিষ্ট অ্যাকাউন্টগুলো থেকে মন্তব্য করা হয় যে,– পাকিস্তানিরা তাদের মাটিতে ইসলামের পতাকা সহ্য করতে পারেনা। তারা রাসূল (সাঃ) এর রয়াতুত তাওহীদ এই কারণে প্রত্যাখ্যান করেছে যে, এটি তালিবান মুজাহিদরা ব্যবহার করছে! তাই তালিবানরা কিভাবে পাকিস্তানের পতাকা আফগানের মাটিতে উড়তে দিতে পারেন?একই মাসে সীমান্তে সংঘর্ষ হলে একজন তালিবান কমান্ডার পাকিস্তান সেনাদের লক্ষ করে বলেন,– যদি তোমরা আমাদের ভূমিতে আক্রমণ কর, তাহলে আমিও বাধ্য হব আমাদের নিরাপত্তার জন্য এই এম-ফোর রাইফেল দিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে।– ওয়াল্লাহি! আমি যদি তোমাদের সীমান্তে প্রবেশ না করে তোমাদেরকে এটি (নিজের রাইফেলকে দেখিয়ে) দিয়ে ধাওয়া না করি, তাহলে আমিও আমার বাপের বেটা না! বিষয়টি ভালোভাবে বুঝে রেখো!– তোমাদেরকে সতর্ক করে বলছি, শেলিং করা বন্ধ কর, গোলাগুলি থামাও। আর যদি তোমরা না থাম, আমি তোমাদেরকে এই অস্ত্র দিয়ে দেখাবো কিভাবে থামতে হয়, আমি যদি বদলা না নেই তাহলে আমিও আমার পিতার সন্তান নই, বুঝতে পারলে?– ভালো করে শুনে রাখো, আমি পূর্বের দূর্নীতিবাজ আফগান ন্যাশনাল আর্মির বর্ডার গার্ডের সৈন্য নই যে, আমাকে ঘুষ দিবে আর আমি চুপ হয়ে যাব। ন্যাটোভুক্ত ৫২টি দেশের সেনাকে হাঁটু গেড়ে বসতে বাধ্য করেছে যারা, আমি তাদের দলের সৈন্য। তোমরা এরূপ করতে থাকলে তাদের মত একই পরিণতি তোমাদেরও ভোগ করতে হবে।– যদি আমি তোমাদের শত্রুর চোখে দেখতে শুরু করি, ওয়াল্লাহি! তোমাদের আমি বাজোর এজেন্সির রাজধানী পর্যন্ত তাড়া করব।এমনিভাবে (৩০/১০/২০২১) পাক-আফগান স্পিন বোল্দাক সীমান্তে পাকিস্তানি গাদ্দার সৈন্যরা নারীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করায় তালিবান মুজাহিদরা ৩ পাকিস্তানী সেনাকে গুলি করে হত্যা করেন।এরপর গত ২৭ ও ৩১/১২/২০২০ তারিখেও পাক-আফগান সীমান্তে দুই দেশের সীমান্তরক্ষীদের মাঝে কয়েক দফায় সংঘর্ষ হয়। প্রতিবারই তালিবানদের হামলার সীমান্ত ছেড়ে পালায় গাদ্দার পাকিস্তান সৈন্যরা। সংঘর্ষে কারণ ছিল ডুরান্ড লাইনে পাকিস্তান কর্তৃক কাঁটা-তার ও পীলার স্থাপন। এসময় তালিবানরা পাকি সৈন্যদের ঘিরে হামলা চালান, এবং কাঁটা-তার ও পীলার সহ সমস্ত সরঞ্জাম জব্দ করেন।অপরদিকে গত ১১/১২/২০২১ তারিখে ইমারতে ইসলামিয়া আফগানিস্তানের তালিবান সরকারের মুখপাত্র- মুহতারাম জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ হাফিজাহুল্লাহ্ একটি সাক্ষাতকারে বলেছেন যে, “পাকিস্তান সরকার ও এর ব্যবস্থাপনা ইসলামিক নয়, এটি এমন একটি ব্যবস্থা যা আফগানিস্তানে গত দুই দশক ধরে ছিল, যার বিরুদ্ধে আমরা লড়াই করেছি। মুলত পাকিস্তান কর্তৃপক্ষের কাছে ইসলামের কোনো গুরুত্ব নেই।” পাক-আফগান দ্বন্দ্ব ও এর নিকট ভবিষ্যত
সংক্ষিপ্তভাবে এই অঞ্চলের পরিস্থিতি বিশ্লেষণের পরে, তালিবান ও পাকিস্তান গাদ্দার সেনাদের মধ্যকার দ্বন্দ্ব এই অঞ্চলের ভবিষ্যতে কী নিয়ে আসতে পারে সে দিকে দৃষ্টি দেওয়া যাক!প্রথমত, চলমান এই দ্বন্দ্বে একে অপরের বিরুদ্ধে বিভিন্ন আগ্নেয়াস্ত্রের পাশাপাশি আর কি ধরনের অস্ত্র ব্যাবহার করতে পারে সেদিকে দৃষ্টি রাখতে হবে। উদাহরণ স্বরূপ, আফগানিস্তানের প্রায় ৭০ শতাংশ খাদ্য চাহিদা পূরণকারী দেশ হিসেবে পাকিস্তানের আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে গুরুতর কার্ড রয়েছে। তবে অবশ্যই, আফগানিস্তানও এই রপ্তানির জন্য অর্থ প্রদান করে। আর পাকিস্তানও তাৎক্ষণিকভাবে অন্য দেশে এই সমস্ত খাদ্যপণ্য বিক্রি করতে পারে না।অপরদিকে তালিবান সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে এই পরিস্থিতিটি মোকাবিলা করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ হাতে নিয়ে কাজ শুরু করেছেন। যেমন তাঁরা কৃষকদেরকে চাষাবাদের জন্য প্রচুর পরিমাণ কৃষি বীজ ও সরকারি জমি দিচ্ছেন। সেইসাথে এই কাজে প্রয়োজনীয় অর্থ সহায়তা করারও আশা দিয়েছেন। তাই আশা করা যায়, খুব শীগ্রই আফগানিস্তান পাকিস্তান থেকে খাদ্য আনা কমিয়ে দিবে, এবং নিজ দেশের কৃষিতে স্বনির্ভর হয়ে উঠবে।এদিকে আফগান তালিবান পাকিস্তানি তালিবান (টিটিপি) এর সমর্থনের জন্যও পরিচিত। যারা বর্তমানে উত্তর-পশ্চিম পাকিস্তানে সক্রিয়। সম্প্রতি টিটিপি তাদের প্রভাব মারাত্মকভাবে বৃদ্ধি করেছে। সেই সাথে টিটিপি-র শক্তিও বাড়ছে। তাঁরা পুনরায় পাকিস্তানে ঐক্যবদ্ধ হচ্ছেন। অনুমান করা হচ্ছে যে, আফগানিস্তান থেকে কিছু তালিবান কমান্ডার টিটিপিকে সহায়তা করছে। বিশেষ করে কুনার, নানগারহার ও পাকতিকা প্রদেশ থেকে।বর্তমানে এই অঞ্চলের লড়াই একটি মনস্তাত্ত্বিক লড়াইয়ে পরিণত হয়েছে। কেননা একদিকে আফগান তালিবান পাকিস্তানকে অনৈসলামিক রাষ্ট্র এবং ইসলামিক শাসনব্যবস্থার শত্রু বলে প্রচার করছে। অন্যদিকে টিটিপিও প্রচার করছে যে, পাকিস্তান সরকার শান্তি চায় না, তাইতো তারা যুদ্ধবিরতি ও চুক্তির শর্তগুলো মানেনি। এর মাধ্যমে পাকিস্তান তালিবান জনসমর্থন আদায়ের চেষ্টা করছেন। আর সাধারণ মুসলমানরা গাদ্দার পাকিস্তানি সেনাদের ঘৃণা করতে শুরু করেছেন। বিশেষ করে উপজাতিয় অঞ্চলগুলোতে তালিবানদের সমর্থন ও প্রভাব খুব দ্রুততার সাথেই বৃদ্ধি পাচ্ছে।অপরদিকে অনেক তালিবান মনে করেন যে, পাকিস্তান প্রশাসন বর্তমানে এই অঞ্চলে আইএস’এর পৃষ্ঠপোষকতা করছে। গাদ্দার সরকার এই সন্ত্রাসী গোষ্ঠীটির মাধ্যমে আফগানে একটি অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করে রাখার চেষ্টা করছে। এটা দেখা যায় যে, টিটিপি যখন গত আগস্ট মাস থেকে পাকিস্তানে হামলা বাড়িয়েছে, তখন আফগানিস্তানে মুজাহিদ ও বেসামরিক লোকদের লক্ষ্য করে আইএস হামলা চালাচ্ছে। তাই অনেকে মনে করেন যে, আফগানিস্তানের উপর চাপ সৃষ্টির উপাদান হিসাবে আইএসকে ব্যবহার করা হচ্ছে।এই মুহুর্তে, তালিবানরা পাকিস্তান থেকে প্রথম যা অর্জনের চেষ্টা করছেন তা হচ্ছে- ডুরান্ড লাইন থেকে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর উপস্থিতি ক্ষতম করা এবং এসব এলাকা ইমারতের অধীনে নিয়ে আসা। আফগানিস্তানের কুনার, নানগারহার এবং পাকতিকা প্রদেশের ডুরান্ড লাইনে পাকিস্তানি সেনারা চৌকি স্থাপন করেছে। তালিবানদের মতে, ডুরান্ড লাইনের এসব চৌকি স্থাপনের মাধ্যমে পাকিস্তান মুলত আফগানিস্তানের মুল ভূখন্ডের সীমানা লঙ্ঘন করছে। তাই দেখা যায় যে, গত আগস্ট থেকে তালিবানরা পাকিস্তানি সেনাদের উপর হামলা চলিয়ে এসব ফাঁড়িগুলির মধ্যে বেশ কয়েকটির নিয়ন্ত্রণ নিয়েছেন৷ এমনিভাবে ইরানের দখলে থাকা কিছু এলাকাও নতুন করে নিয়ন্ত্রণে নিয়েছেন তালিবান মুজাহিদরা। পাকিস্তান সীমান্তে যে কাঁটাতারের ব্যবস্থা এবং বেড়া নির্মাণের চেষ্টা করেছিল, তা তালিবানরা সরিয়ে দিয়েছেন এবং গাদ্দার সেনাদের অনেক সরঞ্জাম জব্দ করেছেন।এটা বলা যেতে পারে যে, তালিবানরা ডুরান্ড লাইন থেকে বর্তমানে পাকিস্তানকে সরিয়ে দেওয়ার পূর্ণ চেষ্টা শুরু করেছেন। এতে পাকিস্তান সরকার কর্তৃক তালিবানদের চাপে রাখার কৌশল ধীরে ধীরে ভেস্তে যাবে। অপরদিকে তালিবান সম্ভবত টিটিপির সাথে তার সম্পর্ক আরও জোরদার করবে। এই সম্পর্কের মাধ্যমে টিটিপি ডুরান্ড লাইনে হামলা বৃদ্ধি করবে। অপরদিকে আফগান তালিবান ধীরে ধীরে পুরো ডুরান্ড লাইন নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিবেন। এমনিভাবে টিটিপির সাথে নিজেদের ভূ-রাজনৈতিক কৌশল অব্যাহত রাখবে তালিবান। তবে এটি আরও অধিক গোপনে। আর পাকিস্তানও এই পদক্ষেপগুলির জবাব দেওয়ার চেষ্টা করবে। কিন্তু ততক্ষণে টিটিপি অনেক দূর এগিয়ে যাবে।শেষ পর্যন্ত, দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা অব্যাহত থাকবে, যতক্ষণ না পাকিস্তানের শাসনব্যবস্থায় পরিবর্তন আসে এবং এখানে শরিয়াহ্ শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়। সেই সাথে ডুরান্ড লাইন সীমান্তের উভয় পাশের জনগণ কাঁটাতারের বিভক্তি থেকে মুক্তি লাভ করেন। সেই সাথে কারো এটা বলা উচিৎ হবে না যে, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তালিবান যুদ্ধ শুরু করেছে। কেননা এই যুদ্ধের সূচনা ২০০১ সালে পাকিস্তানই শুরু করেছে। তাই বর্তমান এই সামরিক উত্তেজনা কোথায় পৌঁছাবে তা সময়ই বলে দেবে।