মুজাহিদদের জন্য রবের প্রতিশ্রুত বিজয় : মালি থেকে ক্রুসেডার সৈন্যদের পলায়ন
পশ্চিম আফ্রিকার দেশ মালিতে প্রায় এক দশক ধরে বহুজাতিক ক্রুসেডার জোটের বিরুদ্ধে তীব্র লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন বৈশ্বিক ইসলামি প্রতিরোধ বাহিনী আল-কায়েদা। অঞ্চলটিতে সক্রিয় আল-কায়েদা শাখা জামাআত নুসরাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলিমিনি (জেএনআইএম)-এর বীর মুজাহিদদের একের পর এক সফল হামলায় নাস্তানাবুদ হচ্ছে মুসলিমদের সম্পদ লুটকারী ক্রুসেডার জোট।
দীর্ঘ এই যুদ্ধের ব্যয় বহন করতে এবং মুসলিম যোদ্ধাদের ধারাবাহিক হামলায় নিহত সৈন্যদের কফিন টানতে টানতেই ক্লান্ত-শ্রান্ত হয়ে পড়েছে ক্রুসেডার জোট৷ তাই এখন যে যার মতো করে অজুহাত দাঁড় করিয়ে কোনোরকমে নিজেদের মান-ইজ্জত নিয়ে পালাতে পারলেই যেন হাঁপ ছেড়ে বাঁচলো অবস্থা।
২০২১ সাল থেকে মালি থেকে সৈন্য প্রত্যাহার করতে শুরুও করেছে বিভিন্ন দেশ। যার প্রথম কাতারে রয়েছে পশ্চিম আফ্রিকায় উপনিবেশ কায়েমকারী ক্রুসেডার ফ্রান্স। তারা এখানে এসেছিল ১৮৮৫-১৯১২ সালের মধ্যে। এ সময়ের মধ্যে তারা ইথিওপিয়া ও লাইবেরিয়া ছাড়া পুরো আফ্রিকা দখল করে নেয়। ক্রুসেডার এই দেশটি ইতোমধ্যে মালির সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ উত্তরাঞ্চলীয় ৩টি রাজ্য ছেড়ে চলে গেছে। রাজ্যগুলো হলো: কিদাল, গাও ও টিম্বুকটো। একই বছরের ডিসেম্বরে মালি থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে সৈন্য প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয় অপর এক ক্রুসেডার রাষ্ট্র জার্মানি।
এবার চলতি বছরের (২০২২) প্রথমেই মালি থেকে সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছে ডেনিশ প্রশাসন। সম্প্রতি দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেপ্পে কফোদের এক বিবৃতিতে এমন ঘোষণা এসেছে।
আঞ্চলিক সূত্র জানিয়েছে, ক্রুসেডার ফ্রান্সের গোলাম মালি প্রশাসন ঘোষণা করেছে যে, তারা ডেনিশ সৈন্যদের সাহেল অঞ্চলে অভিযানের অনুমতি দেবে না। সেই সাথে তাদেরকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ‘তাকোবা ফোর্সের অধীনেও অভিযানে অংশ নিতে দেওয়া হবে না।
মালি কর্তৃপক্ষের এমন ঘোষণার পর দেশটি থেকে দখলদার ডেনিশ সৈন্যদের ফিরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে ঘোষণা দিয়েছে পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
গত ১৮ জানুয়ারি ডেনিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী কফোদ মালি থেকে সৈন্য প্রত্যাহারের বিষয়ে যুক্তি দিয়েছে যে, তারা মালি প্রশাসনের অনুরোধে এই অঞ্চলে সৈন্য পাঠিয়েছিল। কিন্তু মালির জান্তা (সেনা) বাহিনী তাদের উপর “একটি নোংরা রাজনৈতিক খেলা খেলেছে”।
এই পরিস্থিতিতে তারা মালিতে থাকতে পারবে না জানিয়ে কফোদ বলেছিল যে, তার দেশ আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই মালি থেকে নিজেদের দখলদার সৈন্যদেরকে প্রত্যাহার করবে। এসময় দখলদার দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মালি জান্তার কঠোর ভাষায় সমালোচনাও করেছে। সবমিলিয়ে ডেনিশ বাহিনী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে মালি ছেড়ে চলে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এদিকে বিশ্লেষকরা মনে করেন, মালি থেকে ক্রুসেডার দেশগুলোর একে একে সৈন্য প্রত্যাহারের ২টি কারণ হতে পারে।
প্রথমত, দেশটিতে আল-কায়েদার ক্রমবর্ধমান শক্তি বৃদ্ধি। কারণ, আল-কায়েদার যোদ্ধাদের হাতে গত এক দশক ধরে কঠিন মার খেয়ে আসছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। ফলশ্রুতিতে ফ্রান্স ও ইউরোপীয় জোট বাহিনীর অর্থনীতিতে এখন চরম ধস নেমেছে। তাই দখলদার দেশগুলো নিজেদের সৈন্যদের মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচাতে এবং অর্থনৈতিক বিপর্যয় থেকে নিজেদেরকে উদ্ধার করতে মরিয়া হয়ে ওঠেছে। আর সেই লক্ষ্যেই এখন কোনো অজুহাতে মান-ইজ্জত নিয়ে সাহেল আফ্রিকা ছাড়তে শুরু করেছে ইউরোপীয় জোটের সদস্য দেশগুলো।
দ্বিতীয়ত, মালিতে পশ্চিমাদের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রুশদের প্রভাব বিস্তার। এই সেনা প্রত্যাহারের মাধ্যমে পশ্চিমা দেশগুলো চাচ্ছে মালি প্রশাসনের উপর রুশদের ব্যাপারে চাপ সৃষ্টি করতে। কেননা পশ্চিমারা এটা ভালো করেই জানে যে, মালি প্রশাসন পশ্চিমাদের সহায়তা ছাড়া ইসলামি প্রতিরোধ বাহিনী আল-কায়েদার সামনে বেশিদিন টিকতে পারবে না।
সেনা প্রত্যাহারের কারণ হিসেবে দেওয়া জার্মান প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর বিবৃতিতে এ বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয়েছে।
জার্মান প্রতিরক্ষামন্ত্রী ‘ক্রিস্টিন ল্যামব্রেখট’ গত বছরের ১৯ ডিসেম্বরে মালি থেকে আনুষ্ঠানিক ভাবে সৈন্য প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয়। এসময় সেনা প্রত্যাহারের কারণ হিসাবে সে উল্লেখ করেছিল যে, “জার্মান সরকারের কাছে তাদের সৈন্যদের নিরাপত্তা প্রথম অগ্রাধিকার।”
জার্মান প্রতিরক্ষামন্ত্রী সেনা প্রত্যাহারের যে কারণ উল্লেখ করেছে তা থেকে এটা স্পষ্ট যে, মালিতে তার দেশের সৈন্যরা মুজাহিদদের হামলা থেকে নিরাপদ নয়। অর্থাৎ ক্রুসেডার সৈন্যদেরকে মালি-যুদ্ধে যুক্ত হওয়ায় অর্থনৈতিক ও সামরিক খাতে চড়া মূল্য দিতে হচ্ছে। আর এ কারণেই ক্রুসেডার দেশগুলো এখন যে যার মতো করে অজুহাত দাঁড় করিয়ে মালি থেকে নিজ দেশের সৈন্যদেরকে সরিয়ে নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে।
উল্লেখ্য যে, পশ্চিম আফ্রিকার দেশ মালিতে ৯০ দশকে শুরু হয় ক্রুসেডার ফ্রান্স ও তাদের গোলাম সরকার বিরোধী বিক্ষোভ-মিছিল। এই বিক্ষোভই ধীরে ধীরে পবিত্র জিহাদে রূপ নেয়। আর ২০১৩ সালের মধ্যে আল-কায়েদা (AQIM)সহ কয়েকটি জিহাদী দল মালির রাজধানী বামাকো পর্যন্ত পৌঁছে যান। তাঁরা রাজধানীর রেডিও-স্টেশন ও বিমান বন্দরসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ স্থানের উপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেন। সাথে সাথে উত্তর মালি পরিপূর্ণরূপে নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পাশাপাশি মালির ৭৫% এলাকার উপরই নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেন মুজাহিদগণ।
এমন সময় মালিতে মুজাহিদদের বিজয় অভিযান ও প্রতিষ্ঠিত হতে যাওয়া ইসলামি ইমারতকে রুখতে সামরিক অভিযান শুরু করে একাধিক ক্রুসেডার জোট। এসব জোটের মধ্যে রয়েছে ফ্রান্সের নেতৃত্বাধীন বোরখান ফোর্স, ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতৃত্বাধীন তাকোবা ফোর্স ও ট্টাস্ক ফোর্স। এছাড়াও রয়েছে আঞ্চলিক জোট ‘G5’ ও কুফ্ফার জাতিসংঘের ‘মিনসুমা’ জোট বাহিনী। এই জোটে বাংলাদেশের ৯ শতাধিক সেনা সদস্যও রয়েছে। তারা কুফ্ফার জাতিসংঘের পক্ষ নিয়ে মালিতে ইসলামি প্রতিরোধ যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে লড়াই করছে।
ক্রুসেডারদের এই বহুজাতিক সম্মিলিত সামরিক জোটের হামলায় মুজাহিদগণ কিছু সময়ের জন্য পিছু হটলেও ২০১৭ থেকে তাঁরা আবারো মালির নিয়ন্ত্রণ নিতে শুরু করেছেন। মুজাহিদগণ পূর্বের তুলনায় আরও শক্তিশালী এবং ঐক্যবদ্ধ হয়ে এখন ক্রুসেডারদের বিরুদ্ধে লড়াই করে যাচ্ছেন। একের পর এক এলাকা বিজয় করছেন। আর এখন তো কুফ্ফার এই জোটগুলোর অংশীদার দেশগুলো নানান অজুহাতে একে একে মালি থেকে পালাতে শুরু করেছে।
আসমান ও জমিনের অধিপতি মহান রব্বুল আলামীন এভাবেই মুজাহিদদের ক্ষুদ্র একটি বাহিনীকে কয়েকটি বিশাল ক্রুসেডার জোটের উপর বিজয়ী করছেন বলে মনে করেন হক্বপন্থী আলেমগণ। ইসলামি চিন্তাবিদগণ বলেন, আল্লাহ পবিত্র কুরআনে মুসলিমদের ক্ষুদ্র বাহিনীকেও কাফেরদের বিশাল বাহিনীর উপর বিজয় দানের যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তা তিনি সর্বকালেই যে বাস্তবায়িত করবেন সেটারই উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত আফ্রিকার দেশগুলোতে মুজাহিদগণের বিজয়যাত্রা।
লেখক: ত্বহা আলী আদনান
পশ্চিম আফ্রিকার দেশ মালিতে প্রায় এক দশক ধরে বহুজাতিক ক্রুসেডার জোটের বিরুদ্ধে তীব্র লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন বৈশ্বিক ইসলামি প্রতিরোধ বাহিনী আল-কায়েদা। অঞ্চলটিতে সক্রিয় আল-কায়েদা শাখা জামাআত নুসরাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলিমিনি (জেএনআইএম)-এর বীর মুজাহিদদের একের পর এক সফল হামলায় নাস্তানাবুদ হচ্ছে মুসলিমদের সম্পদ লুটকারী ক্রুসেডার জোট।
দীর্ঘ এই যুদ্ধের ব্যয় বহন করতে এবং মুসলিম যোদ্ধাদের ধারাবাহিক হামলায় নিহত সৈন্যদের কফিন টানতে টানতেই ক্লান্ত-শ্রান্ত হয়ে পড়েছে ক্রুসেডার জোট৷ তাই এখন যে যার মতো করে অজুহাত দাঁড় করিয়ে কোনোরকমে নিজেদের মান-ইজ্জত নিয়ে পালাতে পারলেই যেন হাঁপ ছেড়ে বাঁচলো অবস্থা।
২০২১ সাল থেকে মালি থেকে সৈন্য প্রত্যাহার করতে শুরুও করেছে বিভিন্ন দেশ। যার প্রথম কাতারে রয়েছে পশ্চিম আফ্রিকায় উপনিবেশ কায়েমকারী ক্রুসেডার ফ্রান্স। তারা এখানে এসেছিল ১৮৮৫-১৯১২ সালের মধ্যে। এ সময়ের মধ্যে তারা ইথিওপিয়া ও লাইবেরিয়া ছাড়া পুরো আফ্রিকা দখল করে নেয়। ক্রুসেডার এই দেশটি ইতোমধ্যে মালির সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ উত্তরাঞ্চলীয় ৩টি রাজ্য ছেড়ে চলে গেছে। রাজ্যগুলো হলো: কিদাল, গাও ও টিম্বুকটো। একই বছরের ডিসেম্বরে মালি থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে সৈন্য প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয় অপর এক ক্রুসেডার রাষ্ট্র জার্মানি।
এবার চলতি বছরের (২০২২) প্রথমেই মালি থেকে সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছে ডেনিশ প্রশাসন। সম্প্রতি দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেপ্পে কফোদের এক বিবৃতিতে এমন ঘোষণা এসেছে।
আঞ্চলিক সূত্র জানিয়েছে, ক্রুসেডার ফ্রান্সের গোলাম মালি প্রশাসন ঘোষণা করেছে যে, তারা ডেনিশ সৈন্যদের সাহেল অঞ্চলে অভিযানের অনুমতি দেবে না। সেই সাথে তাদেরকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ‘তাকোবা ফোর্সের অধীনেও অভিযানে অংশ নিতে দেওয়া হবে না।
মালি কর্তৃপক্ষের এমন ঘোষণার পর দেশটি থেকে দখলদার ডেনিশ সৈন্যদের ফিরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে ঘোষণা দিয়েছে পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
গত ১৮ জানুয়ারি ডেনিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী কফোদ মালি থেকে সৈন্য প্রত্যাহারের বিষয়ে যুক্তি দিয়েছে যে, তারা মালি প্রশাসনের অনুরোধে এই অঞ্চলে সৈন্য পাঠিয়েছিল। কিন্তু মালির জান্তা (সেনা) বাহিনী তাদের উপর “একটি নোংরা রাজনৈতিক খেলা খেলেছে”।
এই পরিস্থিতিতে তারা মালিতে থাকতে পারবে না জানিয়ে কফোদ বলেছিল যে, তার দেশ আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই মালি থেকে নিজেদের দখলদার সৈন্যদেরকে প্রত্যাহার করবে। এসময় দখলদার দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মালি জান্তার কঠোর ভাষায় সমালোচনাও করেছে। সবমিলিয়ে ডেনিশ বাহিনী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে মালি ছেড়ে চলে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এদিকে বিশ্লেষকরা মনে করেন, মালি থেকে ক্রুসেডার দেশগুলোর একে একে সৈন্য প্রত্যাহারের ২টি কারণ হতে পারে।
প্রথমত, দেশটিতে আল-কায়েদার ক্রমবর্ধমান শক্তি বৃদ্ধি। কারণ, আল-কায়েদার যোদ্ধাদের হাতে গত এক দশক ধরে কঠিন মার খেয়ে আসছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। ফলশ্রুতিতে ফ্রান্স ও ইউরোপীয় জোট বাহিনীর অর্থনীতিতে এখন চরম ধস নেমেছে। তাই দখলদার দেশগুলো নিজেদের সৈন্যদের মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচাতে এবং অর্থনৈতিক বিপর্যয় থেকে নিজেদেরকে উদ্ধার করতে মরিয়া হয়ে ওঠেছে। আর সেই লক্ষ্যেই এখন কোনো অজুহাতে মান-ইজ্জত নিয়ে সাহেল আফ্রিকা ছাড়তে শুরু করেছে ইউরোপীয় জোটের সদস্য দেশগুলো।
দ্বিতীয়ত, মালিতে পশ্চিমাদের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রুশদের প্রভাব বিস্তার। এই সেনা প্রত্যাহারের মাধ্যমে পশ্চিমা দেশগুলো চাচ্ছে মালি প্রশাসনের উপর রুশদের ব্যাপারে চাপ সৃষ্টি করতে। কেননা পশ্চিমারা এটা ভালো করেই জানে যে, মালি প্রশাসন পশ্চিমাদের সহায়তা ছাড়া ইসলামি প্রতিরোধ বাহিনী আল-কায়েদার সামনে বেশিদিন টিকতে পারবে না।
সেনা প্রত্যাহারের কারণ হিসেবে দেওয়া জার্মান প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর বিবৃতিতে এ বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয়েছে।
জার্মান প্রতিরক্ষামন্ত্রী ‘ক্রিস্টিন ল্যামব্রেখট’ গত বছরের ১৯ ডিসেম্বরে মালি থেকে আনুষ্ঠানিক ভাবে সৈন্য প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয়। এসময় সেনা প্রত্যাহারের কারণ হিসাবে সে উল্লেখ করেছিল যে, “জার্মান সরকারের কাছে তাদের সৈন্যদের নিরাপত্তা প্রথম অগ্রাধিকার।”
জার্মান প্রতিরক্ষামন্ত্রী সেনা প্রত্যাহারের যে কারণ উল্লেখ করেছে তা থেকে এটা স্পষ্ট যে, মালিতে তার দেশের সৈন্যরা মুজাহিদদের হামলা থেকে নিরাপদ নয়। অর্থাৎ ক্রুসেডার সৈন্যদেরকে মালি-যুদ্ধে যুক্ত হওয়ায় অর্থনৈতিক ও সামরিক খাতে চড়া মূল্য দিতে হচ্ছে। আর এ কারণেই ক্রুসেডার দেশগুলো এখন যে যার মতো করে অজুহাত দাঁড় করিয়ে মালি থেকে নিজ দেশের সৈন্যদেরকে সরিয়ে নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে।
উল্লেখ্য যে, পশ্চিম আফ্রিকার দেশ মালিতে ৯০ দশকে শুরু হয় ক্রুসেডার ফ্রান্স ও তাদের গোলাম সরকার বিরোধী বিক্ষোভ-মিছিল। এই বিক্ষোভই ধীরে ধীরে পবিত্র জিহাদে রূপ নেয়। আর ২০১৩ সালের মধ্যে আল-কায়েদা (AQIM)সহ কয়েকটি জিহাদী দল মালির রাজধানী বামাকো পর্যন্ত পৌঁছে যান। তাঁরা রাজধানীর রেডিও-স্টেশন ও বিমান বন্দরসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ স্থানের উপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেন। সাথে সাথে উত্তর মালি পরিপূর্ণরূপে নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পাশাপাশি মালির ৭৫% এলাকার উপরই নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেন মুজাহিদগণ।
এমন সময় মালিতে মুজাহিদদের বিজয় অভিযান ও প্রতিষ্ঠিত হতে যাওয়া ইসলামি ইমারতকে রুখতে সামরিক অভিযান শুরু করে একাধিক ক্রুসেডার জোট। এসব জোটের মধ্যে রয়েছে ফ্রান্সের নেতৃত্বাধীন বোরখান ফোর্স, ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতৃত্বাধীন তাকোবা ফোর্স ও ট্টাস্ক ফোর্স। এছাড়াও রয়েছে আঞ্চলিক জোট ‘G5’ ও কুফ্ফার জাতিসংঘের ‘মিনসুমা’ জোট বাহিনী। এই জোটে বাংলাদেশের ৯ শতাধিক সেনা সদস্যও রয়েছে। তারা কুফ্ফার জাতিসংঘের পক্ষ নিয়ে মালিতে ইসলামি প্রতিরোধ যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে লড়াই করছে।
ক্রুসেডারদের এই বহুজাতিক সম্মিলিত সামরিক জোটের হামলায় মুজাহিদগণ কিছু সময়ের জন্য পিছু হটলেও ২০১৭ থেকে তাঁরা আবারো মালির নিয়ন্ত্রণ নিতে শুরু করেছেন। মুজাহিদগণ পূর্বের তুলনায় আরও শক্তিশালী এবং ঐক্যবদ্ধ হয়ে এখন ক্রুসেডারদের বিরুদ্ধে লড়াই করে যাচ্ছেন। একের পর এক এলাকা বিজয় করছেন। আর এখন তো কুফ্ফার এই জোটগুলোর অংশীদার দেশগুলো নানান অজুহাতে একে একে মালি থেকে পালাতে শুরু করেছে।
আসমান ও জমিনের অধিপতি মহান রব্বুল আলামীন এভাবেই মুজাহিদদের ক্ষুদ্র একটি বাহিনীকে কয়েকটি বিশাল ক্রুসেডার জোটের উপর বিজয়ী করছেন বলে মনে করেন হক্বপন্থী আলেমগণ। ইসলামি চিন্তাবিদগণ বলেন, আল্লাহ পবিত্র কুরআনে মুসলিমদের ক্ষুদ্র বাহিনীকেও কাফেরদের বিশাল বাহিনীর উপর বিজয় দানের যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তা তিনি সর্বকালেই যে বাস্তবায়িত করবেন সেটারই উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত আফ্রিকার দেশগুলোতে মুজাহিদগণের বিজয়যাত্রা।
লেখক: ত্বহা আলী আদনান