Announcement

Collapse
No announcement yet.

টিটিপি ও পাক-সরকারের মধ্যে শান্তি আলোচনা, আলোর মুখ দেখবে তো?

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • টিটিপি ও পাক-সরকারের মধ্যে শান্তি আলোচনা, আলোর মুখ দেখবে তো?

    টিটিপি ও পাক-সরকারের মধ্যে শান্তি আলোচনা, আলোর মুখ দেখবে তো?

    ইমারতে ইসলামিয়া আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে ইসলামাবাদ সরকার এবং সশস্ত্র ইসলামি প্রতিরোধ বাহিনী টিটিপির মধ্যে চলছে শান্তি আলোচনা। ইমারাতে ইসলামিয়ার মধ্যস্থতায় দ্বিতীয় দফায় চলমান আলোচনা উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে বলেও জানা যায়।

    উভয় বাহিনীর মধ্যে শান্তি আলোচনা ফলপ্রসূ করতে গত ১ মে থেকে কয়েক দফায় যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে টিটিপি। সর্বশেষ যার সময়সীমা ৩০ মে পর্যন্ত করা হয়। আর এই যুদ্ধবিরতির মধ্যেই চলতে থাকে কাবুলে দ্বিপাক্ষিক শান্তি আলোচনা। যেখানে প্রতিরোধ বাহিনী তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান ও ইসলামাবাদ সরকার ছাড়াও উপজাতীয় প্রবীণরা রয়েছেন।

    আলোচনায় এখন পর্যন্ত বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উঠে এসেছে। যার কিছু শর্ত উভয় পক্ষ মেনে নিয়েছে এবং কিছু বিষয়ে এখনো উভয় পক্ষ কোন সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেনি। যেগুলো নিয়ে আলোচনা এখনো চলছে। আর এগুলো এমন কিছু চাওয়া পাওয়ার শর্ত, যা পাকিস্তান সহ উপমহাদেশের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

    প্রতিরোধ বাহিনী তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তানের (টিটিপি) পক্ষ থেকে এখনো পর্যন্ত যেসব দাবি করা হয়েছে, তারমধ্যে অন্যতম কয়েকটি হচ্ছে-

    ১- বৃহত্তর মালাকান্দ অঞ্চলগুলো ইসলামী শরীয়াহ্ শাসন দ্বারা চলবে। সেখানে পাকিস্তানের মানবরচিত সাংবিধানিক আইন চলবে না।

    পাকিস্তানের বৃহত্তর মালাকান্দ হল খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের একটি প্রশাসনিক ইউনিট। এই প্রশাসনিক ইউনিটে বাজোর, বান্নু, চিত্রাল, দির, মালাকান্দ, শেংলা এবং সোয়াত অঞ্চলগুলো অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। অতীতে (২০০৯) এই অঞ্চলকে ঘিরে টিটিপি ও ইসলামাবাদ সরকারের মধ্যে একই ধরনের চুক্তি হয়। যা কিছুদিন কার্যকর হলেও পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর গাদ্দারির ফলে তা স্থায়ী হয় নি। বরং আলোচনা থেকে ফেরার পথে প্রতিরোধ বাহিনী টিটিপির প্রাক্তন আমীরকে ড্রোন হামলার মাধ্যমে শহিদ করা হয়।

    ২- টিটিপি সদস্যদের বিরুদ্ধে সমস্ত মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।

    ৩- গোত্রীয় অঞ্চল থেকে পাকিস্তানী সামরিক বাহিনীকে সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাহার করতে হবে।

    ৪- আলোচনা প্রক্রিয়ায় উলামায়ে কেরামকে সংযুক্ত করতে হবে। জানা যায় যে, এতে এখন পর্যন্ত ১৫০ জনের নাম উল্লেখ করেছে টিটিপি।

    ৫- কারাবন্দী টিটিপির সকল যোদ্ধাদের মুক্তি দিতে হবে।

    ৬- ড. আফিয়া সিদ্দিকীর মুক্তির জন্য পাকিস্তান সরকারের পক্ষ থেকে আইনী ও কূটনৈতিক উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। রাষ্ট্রীয় খরচে তাঁর জন্য আইনজীবি দল গঠন করতে হবে। এক্ষেত্রে টিটিপি এখন পর্যন্ত ৩ আইজীবির নাম পস্তাব করেছে।

    ৭- টিটিপি এর পুরো সাংগঠনিক কাঠামো নিয়ে এই অঞ্চলে স্বাধীনভাবে প্রত্যাবর্তন করবে।

    ৮- খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের সাথে উপজাতীয় অঞ্চলকে একীভূত করাতে হবে।

    ৯- এই অঞ্চলে ড্রোন হামলা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করতে হবে।

    টিটিপির এসব শর্তের কয়েকটিতে পরিপূর্ণ এবং কয়েকটিতে এখন পর্যন্ত আংশিক সম্মত হয়েছে পাকিস্তান সরকার। সম্মত হওয়া বিষয়গুলো নিম্নরূপ:

    – টিটিপির সমস্ত বন্দীদের মুক্তি দেওয়া হবে।

    – উপজাতীয় এলাকায় পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সামরিক শক্তি ৬০ শতাংশ কমানো হবে।

    – পাকিস্তানের সংবিধানের শরিয়াহ্ পরিপন্থী অনুচ্ছেদগুলো টিটিপির জন্য অ-বাস্তবায়ন যোগ্য বলে বিবেচিত হবে।

    – মালাকান্দ অঞ্চলে নিজাম-ই আদল বাস্তবায়ন করা হবে।

    – টিটিপি সদস্যদের বিরুদ্ধে সমস্ত মামলা প্রত্যাহার করা হবে।

    দ্বিপাক্ষিক এই আলোচনা শেষ পর্যন্ত কতটুকু ফলপ্রসূ হবে, তা নিয়ে রয়েছে জনমনে বিভিন্ন শংকা। কারণ পাকিস্তান প্রশাসনের রয়েছে দীর্ঘ গাদ্দারি আর মুনাফেকির ইতিহাস। বাধ্য হয়ে টিটিপির সাথে এখন আলোচনার টেবিলে বসলেও, ভবিষ্যতে যে এই চুক্তি যে পাক প্রশাসন ভাঙ্গবে না তার কোন নিশ্চয়তা নেই। কেননা ইতিপূর্বেও তারা আফগান তালিবান ও পাক তালিবান উভয়ের সাথে গাদ্দারি ও বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। আলোচনা চলাকালে ড্রোন হামলা চালিয়েছে। চুক্তির কিছুদিনের মধ্যেই তা ভঙ্গ করেছে।

    অপরদিকে প্রতিরোধ বাহিনী তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান তাঁদের শর্ত বাস্তবায়নে এবং শরীয়াহ শাসন প্রতিষ্ঠার ব্যাপারেও দৃঢ়। যে ব্যপারে তাঁরা কোনরূপ ছাড় দিতে প্রস্তুত নয়। মোট কথা টিটিপি তাদের দাবি থেকে পিছু হটবে না। আর সবদিক বিবেচনায় বলা যায় পাকিস্তান সরকার শেষ পর্যন্ত টিটিপির সবগুলো দাবি মেনে নিবে না। কারণ এটি তাদের ভোগবাদী সমাজ ব্যাবস্থাকে ধ্বংস করে দিবে। সেই সাথে পাকিস্তানে টিটিপির জনসমর্থন যেকোন সময়ের চাইতে বেড়ে যাবে। যা পাকিস্তান সরকারগুলি কখনোই চাইবে না।

    আর অলৌকিকভাবে সরকার যদি টিটিপির দাবি মানতে রাজিও হয়ে যায়, তবু তাদের “মনিব” আমেরিকা মেনে নিবে না। কারণ এতে বছরের পর বছর ধরে পাকিস্তান ভূখন্ডে আমেরিকার খরচ করা কোটি কোটি ডলার জলে যাবে। ভারতও সবসময় আতংকে থাকবে। কারণ চুক্তি স্বাক্ষরিত হলে টিটিপি সম্পূর্ণভাবেই কাশ্মীরের দিকে মনোনিবেশ করবে। যেই জাগরণ ও প্রতিরোধ হিন্দুত্ববাদী ভারতের জন্য সামাল দেওয়া অনেকটাই অসম্ভব হয়ে পড়বে। যেখানে ৩৭০ ধারা বাতিলের পর কাশ্মীরকে নিয়ন্ত্রণ করতে কয়েক শত কাশ্মীরি প্রতিরোধ যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে গত দুই বছরে ভারতের খরচ হয়েছে ৯ হাজার কোটিরও বেশি। সেখানে এই যুদ্ধে যদি টিটিপিও তারা হাজার হাজার যোদ্ধাদের নিয়ে এই যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে তবে সেটি হবে ভারতের জন্য বড়ই চ্যালেঞ্জিং বিষয়।

    সব মিলিয়ে এই আলোচনা যদি ফলপ্রসু নাও হয় তবুও এটি পাকিস্তানের রাজনীতি অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। কেননা এই আলোচনার একদিকে রয়েছে পরমাণু শক্তিধর পাকিস্তান অন্যদিকে রয়েছে বৃহৎ কোন অঞ্চলের উপর নিয়ন্ত্রণ না থাকা একটি গেরিলা প্রতিরোধ বাহিনী। যারা পাকিস্তানের মত একটি দেশকে আলোচনার টেবিলে বসতে বাধ্য করেছে। যা থেকে প্রতিরোধ বাহিনীর শক্তি ও ভবিষ্যত ইসলামি শরিয়াহ্ ভিত্তিক পাকিস্তান গড়ার স্বপ্ন দেখবে দেশটির জনগণ। কারণ এই আলোচনার মাধ্যমে মানুষের সামনে এটি স্পষ্ট হয়ে যাবে যে, প্রতিরোধ বাহিনী টিটিপি কি কেন আর কিভাবে চায়। আর সেই সাথে মানুষের সামনে এটাও স্পষ্ট হয়ে যাবে যে, এই দুই বাহিনীর কারা কিসের জন্য এবং কাদের জন্য যুদ্ধ করছে।

    লেখক: ত্বহা আলী আদনান

    আপনাদের নেক দোয়ায় আমাদের ভুলবেন না। ভিজিট করুন আমাদের ওয়েবসাইট: alfirdaws.org

  • #2
    জাযাকাল্লাহ শ্রদ্ধেয় আল ফেরদৌস টিম ভাইদেরকে,
    আল্লাহ সব ভাইদের মেহনত কে কবুল করুন।

    Comment


    • #3
      মা শা আল্লাহ, খুব-ই চমৎকার প্রতিবেদন লিখেছেন মুহতারাম ত্বলা আলী আদনান হাফিযাহুল্লাহ।
      মহান আল্লাহ তা‘আলা সারা বিশ্বের মুজাহিদীন ও মুসলিমদের বিজয়কে ত্বরান্বিত করুন। আমীন।

      “ধৈর্যশীল সতর্ক ব্যক্তিরাই লড়াইয়ের জন্য উপযুক্ত।”-শাইখ উসামা বিন লাদেন রহ.

      Comment


      • #4
        Originally posted by Munshi Abdur Rahman View Post
        মা শা আল্লাহ, খুব-ই চমৎকার প্রতিবেদন লিখেছেন মুহতারাম ত্বলা আলী আদনান হাফিযাহুল্লাহ।
        মহান আল্লাহ তা‘আলা সারা বিশ্বের মুজাহিদীন ও মুসলিমদের বিজয়কে ত্বরান্বিত করুন। আমীন।
        ইয়া সামিউল আলিম

        Comment


        • #5
          মুহতারাম একটি বিষয় সম্পর্কে আমি অনেকদিন ধরেই প্রতিবেদন আশা করছি। বিষয়টি হলো বর্তমানে রাশিয়া ইউক্রেনের উপর আগ্রাসন চালাচ্ছে। এবং আমরা দেখতে পাচ্ছি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন মুসলিম সৈন্য বাহিনী অর্থাৎ চেচেন বাহিনীকে কাজে লাগিয়ে ভয়াবহ আক্রমণ গুলো করছে। বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেক মুসলিমদের কেই দেখা যাচ্ছে চেচেন বাহিনীর এসব কার্যক্রম তারা সাপোর্ট করছে। আসলে চেচেন বাহিনীর এসব কার্যক্রম ইসলামের আলোকে কতটা যুক্তিযুক্ত বিষয়টা নিয়ে একটি প্রতিবেদন লেখার আবেদন করছি।

          Comment


          • #6
            ভিডিওগুলোর কথা মনে হলে এখনো শরীর শিউরে ওঠে। পাকিস্তানের ইউএস ঘাটি থেকে বোমারু বিমানগুলো উড়ে গিয়ে আফগানের মাঠিতে বোম্বিং করত, এবং ড্রোনের মাধ্যেমে মুজাহিদ লিডারদের শহিদ করে দিত। আলহামদুলিল্লাহ, এখন টিটিপির ভাইয়েরা, তাদের পাওনা বুঝিয়ে দিচ্ছে।
            বিলাসিতা জিহাদের শুত্রু,শাইখ উসামা রাহ।

            Comment


            • #7
              জাযাকাল্লাহু খাইরান ভাই ত্বহা আলী আদনান ও আল-ফিরদাঊস টিম ভাইদেরকে। ইনশাআল্লাহ খুব শিঘ্রি মুজাহিদ বাহিনি গাদ্দার পাক বাহিনিকে পরাজিত করে মানব রচিত সংবিধান বাদ দিতে বাধ্য করবেন। আর কাশ্মিরি মজলুমদের মুক্ত করে আনবেন ইনশাআল্লাহ।

              Comment


              • #8
                চুক্তি লঙ্ঘন হলে ইনশাআল্লাহ টিটিপি পাকিস্তানে গাদ্দারদের রক্তের বন্যা বইয়ে দিবে। আর বাস্তবায়ন হলে কাশ্মীরে মালাউনদের রক্তের বন্যা বইয়ে দিবে।

                দলটির উপর অনেক আশাবাদী, আল্লাহ তাঁদের কাজ সহজ করে দিন, আমীন।

                Comment

                Working...
                X