Announcement

Collapse
No announcement yet.

কাশ্মীর জিহাদের কিংবদন্তি নেতা: শহীদ কমাণ্ডার ইলিয়াস কাশ্মীরি (রহ.) (শেষ পর্ব)

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • কাশ্মীর জিহাদের কিংবদন্তি নেতা: শহীদ কমাণ্ডার ইলিয়াস কাশ্মীরি (রহ.) (শেষ পর্ব)

    কাশ্মীর জিহাদের কিংবদন্তি নেতা: শহীদ কমাণ্ডার ইলিয়াস কাশ্মীরি (রহ.) (শেষ পর্ব)










    কারাগারে কমান্ডার ইলিয়াস কাশ্মীরি:

    ১৯৯৪ সালে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লীতে ‘আল-হাদিদ’ অপারেশন চালান কমান্ডার ইলিয়াস কাশ্মীরি রহিমাহুল্লাহ। ভারতীয় মুশরিক বাহিনী উক্ত হামলার বদলা নিতে কমান্ডার ইলিয়াস কাশ্মরীর ৩১৩-ব্রিগেডের গোপন আস্তানায় হামলা চালায়।এসময় শায়খ উমার আহত অবস্থায় ধরা পড়েন। (পরবর্তীতে ইন্ডিয়ান এয়ারক্রাফট হাইজ্যাকের মাধ্যমে অপহৃত যাত্রীদের সাথে বিনিময় চুক্তির ভিত্তিতে তাঁকে মুক্তি দেওয়া হয়।) অপরদিকে ইলিয়াস কাশ্মীরি অক্ষত অবস্থায় নিরাপদে সরে যেতে সক্ষম হন।তবে পরবর্তীতে দখলকৃত কাশ্মীরে ভারতীয় সেনাবাহিনী অন্য একটি অভিযানের মাধ্যমে ইলিয়াস কাশ্মীরি ও তাঁর এক সাথী নাসরুল্লাহ মনসুর লাংরাইলকে গ্রেফতার করে। ভারতীয় মুশরিক সেনাবাহিনী দুজনকেই জেলে পাঠায়। তাঁকে দু বছরে ভারতের বিভিন্ন জেলে রাখা হয়। একদিন অবশেষে তাঁর সাথী নাসরুল্লহ মনসুর লাংরাইল জেলে থাকা অবস্থায় আল্লাহর সাহায্যে জেল ভেঙে পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। ভারতীয় জেল থেকে পালানোর পর তিনি বিশেষ খ্যাতি লাভ করেন। কাশ্মীর জিহাদের উপর লেখা প্রকাশনাগুলোতে তাঁকে একজন বীর নায়ক হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়।এরপর ২০০৩ এ গাদ্দার পারভেজ মোশাররফের উপর হামলার মিথ্যা অপবাদ দিয়ে ইলিয়াস কাশ্মীরিকে গ্রেফতার করে পাকিস্তান। অথচ বাস্তবতা হলো পারভেজ মোশাররফের উপর হামলার সময় ইলিয়াস কাশ্মীরি, উপত্যকায় অবস্থান করছিলেন। সেখানে তিনি জাম্মুর টাণ্ডা এলাকায় ভারতীয় সেনাবাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের উপর হামলা করেন ও অনেককে হত্যা করেন। যাইহোক, গাদ্দার পাকিস্তানি সামরিক সংস্থা তাঁর বিরুদ্ধে কিছু প্রমান না করতে পেরে অবশেষে তাঁকে ছেড়ে দেয়।এরপরও পাকিস্তানের গাদ্দার সামরিক বাহিনী তাঁর পিছু ছাড়েনি। পাকিস্তান গোয়েন্দা সংস্থা ISI তাকে কাশ্মীরে অপারেশন বন্ধ করতে চাপ দিতে থাকে। কিন্তু তিনি প্রতিবারের মতোই অস্বীকৃতি জানান এবং কাশ্মীরে ভারতীয় মুশরিকদের বিরুদ্ধে অভিযান জারি রাখেন। ফলে গাদ্দার পাকিস্তানের ISI দ্বিতীয়বার তাঁকে আটক করে। পাকিস্তানের কারাগারে বন্দী অবস্থায় তাঁর উপর চালানো হয় মারাত্মক নির্যাতন। তাঁকে বিভিন্নভাবে অপমান করা হয়। তাঁর উপর চালানো এসব লোমহর্ষক নির্যাতন দেখে হিজবুল মুজাহিদিনের উপরস্থ একজন নেতা বলতে বাধ্য হন যে, ভারত ও পাকিস্তানের জেলের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। এই লোকগুলো আমাদের বিশ্বাস করে না, কারণ আমরা কাশ্মীরি।যাইহোক, এক বছর কারানির্যাতনের পর ২০০৫ সালে তিনি দ্বিতীয় বারের মত গাদ্দার পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তি লাভ করেন।
    উত্তর ওয়াজিরিস্তান, কাশ্মীরির নতুন যুদ্ধের ময়দান:
    ২০০৮ সালে আল-কায়দা ও তালিবানদের কোণঠাসা করতে তোড়জোড় প্রস্তুতি এবং ‘অপারেশন শেরদিল’ শুরু করে ক্রুসেডার মার্কিন বাহিনী ও গাদ্দার পাকিস্তান। এদিকে আল-কায়েদার কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা, যেমন উসামা আল কেনী, খালিদ হাবিব, আবু লাইস আল-লিব্বিসহ বেশকিছু দুর্লভ মেধা শত্রুর ড্রোন হামলায় শহীদ হন।আর এমন এক পরিস্থিতিতে পাকিস্তান গাদ্দার প্রশাসন কর্তৃক দ্বিতীয়বার গ্রেফতারি থেকে রেহাই পাওয়া কমান্ডার ইলিয়াস (রহ) কাশ্মীর ছেড়ে উত্তর ওয়াজিরিস্তানে হিজরত করেন। পাক-আফগান সীমান্ত অঞ্চলের সঙ্কীর্ণ গিরিপথে ইলিয়াস কাশ্মীরির উপস্থিতির সংবাদ ওয়াশিংটনের মেরুদণ্ডে শীতল স্রোত প্রবাহিত করে দেয়। কেননা তারা জানত যে, ইলিয়াস কাশ্মীরি রহ. তাঁর ব্যাপক অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে আফগানিস্তানের যুদ্ধে নতুন মাত্রা আনতে সক্ষম। আর ইলিয়াস কাশ্মীরিও উত্তর ওয়াজিরিস্তানে এসে সিদ্ধান্ত নে যে, ক্রুসেডার ন্যাটো বাহিনীর বিরুদ্ধে আফগান তালিবানদের সহায়তা করার।
    আল-কায়েদার নতুন মিশনে ইলিয়াস কাশ্মীরি:
    ইলিয়াস কাশ্মীরি রহিমাহুল্লাহ মত প্রকাশ করেন-যুদ্ধের পরিধিকে বিস্তৃত করে দেওয়া হোক। তাঁর বিশ্লেষণ ছিল, ভারতে এত বড় আকারের অপারেশন পরিচালনা করা হোক, যেন ভারত আর পাকিস্তান যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ে। এর ফলে আল-কায়েদার বিরুদ্ধে তৈরি করা সব অপারেশন প্ল্যান নিমিষেই ধ্বংস হয়ে যাবে।ভারতের ওপর হামলা চালানোর সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। হামলা চালানোর দায়িত্ব লাভ করেন সেনাবাহিনীর প্রাক্তন অভিজ্ঞ মেজর হারুণ আশেক। প্রাক্তন এই সেনা অফিসার মেজর হারুণ ২০০৮ সালের ২৬ নভেম্বর ভয়াবহ মুম্বাই হামলা পরিচলনা করেন। এই অভিযানে তাদের টার্গেট ছিল সম্রাট শিবাজী টার্মিনাল, লিওপোল্ড ক্যাফে, তাজমহল প্যালেস হোটেল, দ্য ওবেরয় হোটেল এবং ইহুদি জনবসতি নরম্যান হাউস। তাঁরা নিজেদের লক্ষ্যস্থানে অপারেশন শুরু করলে তা ৭২ ঘন্টা চলমান থাকে। ২৬ নভেম্বরের এই ঘটনা ভারতসহ পুরো বিশ্ব কেঁপে ওঠে।২৬/১১-এর এই হামলা ছিল ৯/১১-এর হামলার মতোই। এর উদ্দেশ্য ছিল ভারতকে পাকিস্তানের বিপক্ষে যুদ্ধে অবতীর্ণ করানো এবং পাকিস্তানের দৃষ্টিকে ওয়ার অন টেরর থেকে সরিয়ে নেওয়া, যাতে আল-কায়েদা আফগানিস্তানে ন্যাটো বিরোধী যুদ্ধে এই অবস্থা থেকে ফায়দা হাসিল করতে পারে। ওয়াশিংটনের নীতি নির্ধারকরা এই ঘটনার পেছনের উদ্দেশ্য ধরে ফেলতে সক্ষম হয়। তারা সাথে সাথেই ভারত-পাকিস্তানে দৌড়ে আসে এবং দুই দেশের যুদ্ধের মাঝে ঢাল হয়ে দাঁড়ায়। ভারত আর পাকিস্তানের সেনাবাহিনী যখন একে অপরের দিকে বিষদৃষ্টিতে তাকিয়ে দাঁড়িয়েছিল, তখন পাকিস্তান সেনাবাহিনী আর আল-কায়েদার মধ্যকার যুদ্ধ একেবারেই বন্ধ হয়ে যায়। দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়েন শুরু হয়। সেই সুযোগে আল-কায়েদা যোদ্ধারা খাইবার এজেন্সিতে ন্যাটোর সাপ্লাই লাইনে আক্রমণ শুরু করে দেয়। এর ফলে পাক-আফগান সীমান্তে বেশ কয়েকদিনের জন্য রসদ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। আর এর প্রভাব আফগানিস্তানে বিশেষ করে গজনী , ওয়ারদাক ও হেলমান্দে ন্যাটো সেনাবাহিনীর ওপর বিরাট আকারে গিয়ে পড়ে। ন্যাটোর কাছে রসদ না পৌঁছার কারণে তাদের অপারেশন রীতিমত বন্ধ হয়ে যায়। ইলিয়াস কাশ্মীরি রহিমাহুল্লাহ ছিলেন একজন প্রকৃত চিন্তাবিদ, তিনি অস্থিরপ্রবণ ছিলেন না এবং গভীর চিন্তাভাবনার প্রেক্ষিতে তিনি তার সিদ্ধান্তে উপনীত হতেন। আল-কায়েদার সাথে তাঁর যে আলাপ হয়েছিল, তা তাঁর চিন্তাধারার সীমানাকে বিস্ফোরিত করেছিল। ২০০৭ সালের মাথায় তিনি আল-কায়েদা শুরা কমিটির একজন স্থায়ী ও পূর্ণ সদস্যে পরিণত হন। তিনি আল-কায়েদার সেনা অভিযান শাখার প্রধান হিসেবেও দায়িত্বপ্রাপ্ত হন।
    শাহাদাত বরণ-
    ২০১১ সালের এপ্রিলে ইউএস স্টেট ডিপার্টমেন্ট থেকে ঘোষণা প্রদান করা হয় যে, ইলিয়াস কাশ্মীরি রহ. সম্পর্কে কোনো তথ্য প্রদানকারীকে পুরস্কার হিসেবে ৫০ লাখ ইউএস ডলার প্রদান করা হবে। এই ঘোষণার পর, ওই বছরের জুলাই মাসে দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তানের অন্যতম প্রধান শহর ওয়ানা থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে লামান গ্রামে শুক্রবার রাতে ঘটনাস্থলে একটি ড্রোন থেকে প্রথমে দুটি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়। এর কিছুক্ষণ পর ছোড়া হয় আরও দুটি ক্ষেপণাস্ত্র। এতে ইলিয়াস কাশ্মীরি রহ. সহ নয়জন মুজাহিদ শহীদ হন। ইনশা আল্লাহ্।হুজির তৎকালীন মুখপাত্র আবু হানজালা পাকিস্তান টেলিভিশন সেন্টারে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আমরা নিশ্চিত, আমাদের আমির (নেতা) ও কমান্ডার ইন চিফ মোহাম্মদ ইলিয়াস কাশ্মীরি ও তাঁর বন্ধুরা শুক্রবার রাত ১১টা ১৫ মিনিটে মার্কিন ড্রোন হামলায় শহীদ হয়েছেন। আল্লাহ তাঁর মঙ্গল করুন…আমিন।
    (শেষ)

    লেখক : ত্বহা আলী আদনান

    পড়ুন আগের পর্বগুলো-

    প্রথম পর্ব-https://alfirdaws.org/2022/03/30/56384/

    দ্বিতীয় পর্ব-https://alfirdaws.org/2022/06/04/57387/









    আপনাদের নেক দোয়ায় আমাদের ভুলবেন না। ভিজিট করুন আমাদের ওয়েবসাইট: alfirdaws.org

  • #2
    আসসালামু আলাইকুম,
    ভাই মাওলানা সালেহ মাহমুদ হাফিজাহুল্লাহ এর আত্মশুদ্ধি সিরিজের ১৫, এবং ১৯ নাম্বার পর্ব পেতে পারি!!!!!!!!

    Comment

    Working...
    X