Announcement

Collapse
No announcement yet.

৯/১১ অভিযান : জিহাদি মেরুকরণের শক্তিশালী অনুঘটক

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • ৯/১১ অভিযান : জিহাদি মেরুকরণের শক্তিশালী অনুঘটক

    ৯/১১ অভিযান : জিহাদি মেরুকরণের শক্তিশালী অনুঘটক



    ১১ সেপ্টেম্বর, ২০০১ সাল। বিশ্ব “শক্তির কেন্দ্র বিন্দুতে” একদল মুসলিম যুবকের যুগান্তকারী হামলা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর পরাশক্তি হিসেবে আবির্ভূত অ্যামেরিকার সবচাইতে গুরত্বপূর্ণ ৩টি (অর্থনৈতিক, সামরিক ও রাজনৈতিক) অবস্থান লক্ষ্য করে বরকতময় অপারেশনটি চালানো হয়। এর আগে যার কল্পনাও কেউ করেনি। এই হামলার মধ্য দিয়ে নতুন এক যুগের সূচনা হয়। যা বিশ্ব মঞ্চে ব্যাপক পরিবর্তন আনে। পৃথিবীকে ইসলাম ও কুফরের দুই তাবুতে মেরুকরণ করতে ভূমিকা রাখে।



    এই হামলার ফলে ক্রুসেডার আমেরিকা কর্তৃক ইসলাম ও মুসলিমদের বিরুদ্ধে পরিচালিত দীর্ঘদিনের ক্রুসেড যুদ্ধ প্রকাশ্যে চলে আসে। যা তারা নানান সব ভুয়া অজুহাত দেখিয়ে একের পর এক স্বাধীন ভূখণ্ডে বুদ্ধিভিত্তিক ও সামরিক আগ্রাসনের মাধ্যমে চালিয়ে আসছিল। চরম ইসলাম বিদ্বেষ আর সম্পদের লোভে আমেরিকার চালানো এই আগ্রাসনের সবচেয়ে বেশী শিকার হয় খনিজ সম্পদ সমৃদ্ধ মুসলিম দেশগুলো।

    তবে ৯/১১ এর আগে ধূর্ত অ্যামেরিকা মুসলিমদের সাথে স্ব-শরীরে যুদ্ধের ময়দানে তেমনভাবে আসেনি; আসলেও এসেছে ভিন্ন অজুহাতে। কিন্তু পরোক্ষভাবে সে প্রতিটি মুসলিম রাষ্ট্রে পরিচালিত হত্যাযজ্ঞের নেতৃত্ব দিয়েছে। যার শিকার হয়েছে ফিলিস্তিন, ইয়েমেন, ইরাক, সুদান, লিবিয়া, সোমালিয়া, চেচনিয়া, বসনিয়াসহ বিশ্বের বহু মুসলিম দেশ। এতোগুলি রাষ্ট্রে আগ্রাসন চালানোর পরেও অ্যামেরিকা বিশ্ববাসীর কাছে ছিলো ‘মানবতাবাদী ও জনদরদী’।

    ৯/১১ এর হামলা তাই ছিলো পর্দার আড়ালে লুকিয়ে থাকা মুসলিম হত্যাজ্ঞের খলনায়ক অ্যামেরিকাকে জনসম্মুখে নিয়ে আসার যুগান্তকারী একটি সামরিক সিদ্ধান্ত।



    কেননা এই হামলার জের ধরেই আমেরিকা ঐবছর আফগানিস্তান এবং একই এজেন্ডা সামনে নিয়ে ২০০৩ সালে ইরাকে সামরিক আগ্রাসন চালায়। ফলে বিশ্বের সামনে চলে আসে পর্দার অন্তরালে লুকিয়ে থাকা আমেরিকা। সচেতন মুসলিমরাও তাদের শত্রুকে স্পষ্টভাবে চিনতে পারে। ফলে বিভিন্ন ময়দানে মুসলিম যুবকরা আমেরিকার বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করে। শেষপর্যন্ত সোমালিয়া, ইরাক ও আফগানিস্তানের ময়দানে মহান আল্লাহ তাআ’লা এই ক্রুসেডার বাহিনীকে পরাজিত করেন। এর ফলে ক্রুসেডার আমেরিকার সামরিক, অর্থনৈতিক এবং সারা বিশ্বের তার রাজনৈতিক আধিপত্য নড়বড়ে হয়ে পড়ে।

    আজ বরকতময় ৯/১১ হামলার ২১ বছর পূর্ণ হতে চলছে, অনেক অবুঝ মুসলিম মনে করেন উক্ত হামলাটি ছিলো একটি ভুল পদক্ষেপ। যার কারণে আমেরিকা মুসলিম দেশগুলোতে আক্রমণ চালিয়েছে। কিন্তু তারা ভুলে যান যে, ৯/১১ই মার্কিন আগ্রাসন শুরু না, বরং এই আক্রমণটি ছিলো মার্কিন আগ্রাসনের বিরুদ্ধে নতুন করে প্রতিরোধ গড়ে তুলার প্রথম কোনো কার্যকরী সামরিক পদক্ষেপ। যা আমেরিকা দীর্ঘদিন ধরে (ফিলিস্তিন, ইয়েমেন, ইরাক, সুদান, লিবিয়া, সোমালিয়া, চেচনিয়া, বসনিয়া) মুসলি বিশ্বে চালিয়ে আসছিলো।

    বরকতময় এই হামলার পূর্বে কেউ কল্পনাও করতে পারেনি যে, মুসলিমরাও আমেরিকার মতো একটি পরাশক্তিধর রাষ্ট্রে হামলা চালাতে পারেন। বা মুসলিমরা চাইলেই বিশ্বব্যাপী মার্কিন আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারেন।



    কিন্তু ৯/১১ হামলা সেই অসম্ভব ধারণাকেই পরিবর্তন করে দিয়েছে। মুসলিম যুবকরা আমেরিকার ভূমি থেকেই প্রথম আগ্রাসন বিরোধী অভিযান শুরু করেছেন। ফলে আফগানিস্তান থেকে শুরু করে ইরাক, ইয়েমেন, সোমালিয়া, সিরিয়া ও পশ্চিম আফ্রিকার দেশগুলোতে আগ্রাসন বিরোধী প্রতিরোধ যুদ্ধ শুরু হয়।

    তাই এটি ভাববার কোনো কারণ নেই যে, ৯/১১ হামলার কারণে আমেরিকা মুসলিম দেশগুলোতে আক্রমণ চালিয়েছে। বরং আমাদের জানতে ও বুঝতে হবে যে, ৯/১১ ছিলো আমেরিকা কর্তৃক শুরু করা আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার সূচনা মাত্র। এরপর বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে মুসলিমরা ক্রুসেডারদের এসব অবৈধ আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ঘুরে দাড়াতে শুরু করেছেন।

    ৯/১১ হামলার পূর্বে আমেরিকা যখন যেখানে যেভাবে চাইতো সেভাবেই আগ্রাসন চালাতো। এর প্রতিবাদ করার কেউ ছিলো না। কিন্তু বরকতময় এই হামলার পরবর্তি বছরগুলি আমেরিকার এই একচেটিয়া আগ্রাসনী মনোভাবকে পরিবর্তন করে দিতে সক্ষম হন মহান মুজাহিদগণ। কেননা মুসলিম যুবকরা দিকে দিকে আগ্রাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে শুরু করেন।

    বিরোচিত এই হামলার পূর্বে মুসলিমদের শক্তিশালে মুজাহিদ বাহিনী বা সামরিক অত্যাধুনিক কোন ইউনিট ছিলোনা। কিন্তু আজ তাদের একটি পূর্ণাঙ্গ ইসলামি রাষ্ট্র আছে, অঘোষিত ৩টি ইসলামি ইমারাত আছে। ঐক্যবদ্ধ একটি সামরিক বাহিনী আছে। যারা পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে সম্মিলিত কুফ্ফার জোটগুলির বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। যার নেতৃত্ব দিচ্ছে জনপ্রিয় বৈশ্বিক ইসলামি প্রতিরোধ বাহিনী আল-কায়েদা।

    আর আল-কায়েদা পূর্বের যেকোনো সময়ের চাইতে এখন আরও বেশি শক্তিশালী, ঐক্যবদ্ধ ও বিস্তৃত। যার সামরিক কর্যক্রম পূর্ব থেকে শুরু করে পশ্চিমে আটলান্টিক মহাসাগরের তীর পর্যন্ত প্রসারিত। যার একটি অংশ দূর্বল হয়ে পড়লে অন্যটি আরও শক্তিশালী হয়ে উঠে দাঁড়াচ্ছে। যা কুফ্ফার বিশ্বের মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাড়িয়েছে। কুফ্ফার দেশগুলো এখন পারছেনা তাদের সৈন্যদেরকে মুসলিম ভূমি থেকে উঠিয়ে নিতে, আবার পারছেনা রেখে দিতেও। ফলে তারা এখন সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছে। যার বাস্তবিক উদাহরণ বর্তমানে ইমারাতে ইসলামিয়া আফগানিস্তান, সোমালিয়া, মালি ও বুরকিনা ফাঁসো।

    তাইতো জাতিসংঘ কিছুদিন পরপরই আল-কায়েদার শক্তিমত্তা নিয়ে পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা প্রতিবেদন তৈরি করছে। সাম্প্রতিক মাসগুলোতেও ‘জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ’ আল-কায়েদার সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে ২৩ পৃষ্ঠার একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। যাতে আল-কায়েদার নেতৃত্ব থেকে শুরু করে, এর কার্যক্ষমতা ও বিভিন্ন দেশে আল-কায়েদা শাখাগুলোর অর্থনৈতিক ও সামরিক শক্তি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা রয়েছে।

    মূলত ৯/১১ এর বরকতময় অভিযানের ফলেই রচিত হয়েছে মুসলিম উম্মাহর শক্তিমত্তার এই ভিত। এই ভিতের উপর দাঁড়িয়ে নিকট ভবিষ্যতে পূর্ব আফ্রিকা, পশ্চিম আফ্রিকা, শাম, মধ্য-এশিয়া, আরব উপদ্বিপ, এবং দক্ষিন এশিয়াজুড়ে অনেকগুলো ইসলামি ইমারত প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখছে উম্মাহ। এর মধ্যে অনেকগুলোর বাস্তবায়ন হয়তো খুবই নিকটবর্তী, যার ধারাবাহিক আলোচনা আমরা সামনের কিছু প্রবন্ধে করবো ইনশাআল্লাহ্‌। আর বিশ্বজুড়ে এসকল ছোট বড় ইমারা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সুগম হবে বৈশ্বিক খিলাফা প্রতিষ্ঠার পথ, ইনশাআল্লাহ্‌।

    ৯/১১ এর অভিযানকে তাই বৈশ্বিক জিহাদি জাগরণের অন্যতম শক্তিশালী অনুঘটক বলা যেতেই পারে।


    লেখক : ত্বহা আলী আদনান
    আপনাদের নেক দোয়ায় আমাদের ভুলবেন না। ভিজিট করুন আমাদের ওয়েবসাইট: alfirdaws.org

  • #2
    জাযাকাল্লাহু খাইরান
    Last edited by tahsin muhammad; 09-19-2022, 04:08 PM.

    Comment

    Working...
    X