আশ-শাবাবের সামরিক উত্থান : নয়া ইমারাতের অভ্যুদয়
পূর্ব আফ্রিকার সবচাইতে জনপ্রিয় ও সক্রিয় ইসলামি প্রতিরোধ বাহিনী হারাকাতুশ শাবাব আল-মুজাহিদিন। দলটিকে অর্থনৈতিক ও সামরিক খাতে আল-কায়েদার সবচাইতে শক্তিশালী শাখা হিসাবে গণ্য করা হয়। দলটির উত্থান ৯০ এর দশকে হলেও ২০০৮ সাল থেকে এটি আল-কায়েদার একটি অঙ্গসংগঠন হিসাবে কাজ শুরু করে।দলটির ব্যপারে বলা হতো যে, দীর্ঘ এই সময়ে আল-কায়েদা যদি তাদেরকে আর্থিক-সামরিক সহায়তা আর পরামর্শ না দিয়ে দলটিকে সাহায্য না করতো, তাহলে এতদিনে প্রতিরোধ বাহিনীটি বিলুপ্ত হয়ে যেতো। কিন্তু আল্লাহ্র ইচ্ছায় আল-কায়েদা সেটি হতে দেয়নি। ফলে একসময়ের দূর্বল এই দলটিই আজকের বিশ্বমঞ্চে সবচাইতে শক্তিশালী প্রতিরোধ বাহিনী হয়ে উঠেছে। যারা বিশ্বের তাবত শক্তিধর দেশগুলোকে পূর্ব আফ্রিকার মাটিতে নাকানিচুবানি খাওয়াচ্ছেন, আলহামদুলিল্লাহ্।
সম্প্রতি ইসলামি প্রতিরোধ বাহিনীটি ব্যাপকভাবে তাদের শক্তিমত্তাও প্রদর্শন করতে শুরু করছে। যেখানে দলটি গত দুই মাসে শাইখ “কাসিম আর-রিমি ও সাঈদ মোহাম্মদ আবদুল্লাহ হাসান” রহিমাহুমুল্লাহ্ সামরিক ক্যাম্প থেকে পরপর দুটি ভিডিও প্রকাশ করেছে।আশ-শাবাবের সামরিক প্রশিক্ষণের এই ভিডিওগুলি দেখলে আফগানিস্তান বিজয়ের শুরুর মাসগুলোর কথা মনে পড়ে যায়।
কেননা তালিবান মুজাহিদগণও আফগান বিজয়ের শুরুর দিকে এধরণের একাধিক সামরিক ভিডিও প্রকাশ করেছিলেন। যাইহোক, আশ-শাবাবের এই ভিডিওগুলো দেখার পর কয়েকটি পয়েন্ট আপনাদের সামনে উপস্থাপন করা সমীচীন মনে করছি।
১ – প্রথমত ভিডিওগুলি সুমধুর কণ্ঠে পবিত্র কোরানের আয়াত দিয়ে শুরু হয়েছে। তারপর কোনো একটি দেশের প্রধান সামরিক বাহিনীর মতো বিপুল সংখ্যক সৈন্য প্রশিক্ষণ ক্যাস্পে অগ্রসর হয়। যেখানে সৈন্যদেরকে উন্নত সামরিক পোশাকে সজ্জিত অবস্থায় দেখা গেছে। যা প্রথম দেখাতেই যেকেউ বলতে বাধ্য হবেন যে, তারা উচ্চ প্রশিক্ষিত একটি বিশেষ সামরিক বাহিনী।যেখানে সোমালি গাদ্দার বাহিনী ও তাদের অফিসাররা তুরস্ক, উগান্ডা, ইথিওপিয়া, ইতালি ও আমেরিকার মতো দেশগুলোতে সামরিক প্রশিক্ষণ নিচ্ছে।
সেখানে আশ-শাবাব দেখিয়ে দিয়েছে যে, সোমালিয়ার প্রকৃত যুবকরাও স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে পারেন আলহামদুলিল্লাহ্; আর তা দেশের বন, পাহাড় এবং সমভূমিতে থেকেই। যারা আন্তর্জাতিক স্তরের সামরিক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে দেশ ও জাতি রক্ষায় বীরদর্পে লড়াই চালিয়ে যেতে সক্ষম।
আমরা অনেক বছর ধরেই আশ-শাবাবের সামরিক প্রশিক্ষণ শিবির থেকে প্রকাশিত ভিডিওগুলি পর্যবেক্ষণ করে আসছি।
কিন্তু বর্তমান ভিডিওগুলো একেবারেই আলাদা; এখানে হাজারেরও অধিক মুসলিম যুবক একসাথে প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। ফলে আমরা বলতে পারি যে, আশ-শাবাবের ইতিহাসে কোন প্রশিক্ষণ শিবির থেকে একবারে বের হওয়া মুজাহিদদের সংখ্যায় মধ্যে এই দুটিই সবচেয়ে বড় সংখ্যা। আমাদের বাহ্যিক অনুমান, এই শিবিরগুলো থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে বের হওয়া নতুন যোদ্ধার সংখ্যা ৩ হাজার এর মধ্যে।অথচ সেদেশটির পুতুল সরকার বলছে, আশ-শাবাব পলাতক রয়েছে, তাদের সেনাবাহিনীর সংখ্যা কমে গেছে, তাদের সাথে যোগ দেওয়ার কেউ নেই- ইত্যাদি। কিন্তু আশ-শাবাবের দুর্দান্ত এই সামরিক ভিডিওগুলো কথিত রাজনীতিবিদ এবং মিডিয়ার হিংসাত্মক প্রচারনা ও মিথ্যার মুখোশ উন্মোচন করে দিয়েছে।
২ – দ্বিতীয় ভিডিওটিতে বলা হয়েছে যে, এই সৈন্যরা “সৈয়দ মুহাম্মদ আবদুল্লাহ হাসান” প্রশিক্ষণ শিবির থেকে স্নাতক হয়েছেন। যেখানে প্রতিরোধ বাহিনীর সামরিক কমান্ডার তাঁর বক্তব্যে হাসান (রহি.) এর সংগ্রামী জীবন নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা করেছেন। যিনি একাধারে ক্রুসেডার ব্রিটেন, ইতালি ও ইথিওপিয়ার বিরুদ্ধে দেশ ও ঈমান রক্ষায় মৃত্যুর আগ পর্যন্ত জিহাদ চালিয়ে গেছেন। যার নেতৃত্বে ১৯ শতকের শুরু থেকে একাধারে ২০ বছর যাবৎ বৃহত্তর সোমালিয়াজুড়ে একটি ইসলামি ইমারাত পরিচালিত হয়েছে।আর আশ-শাবাব সাইয়্যেদ হাসান (রহি.) এর মতোই দখলদার শক্তির বিরুদ্ধে সোমালিয়ায় জিহাদ পরিচালনা করে যাচ্ছে। এবং এখানে একটি বৃহত্তর ইসলামি ইমারাত প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে আলহামদুলিল্লাহ্।
ফলে প্রত্যেক ঐসমস্ত সোমালি জনগণ আশ-শাবাবের কর্মপদ্ধতি ও লক্ষ্য নিয়ে খুবই সন্তুষ্ট ও আন্তরিক, যারা দেশকে ভালোবাসেন এবং ঔপনিবেশিক গোলামদের ঘৃণা করেন। তারা এজন্য খুবই খুশি যে, এই ভূমিতে আল্লাহর নাম এখনও বুলন্দ রেখেছে আশ-শাবাবের মতো সাহসী বীরেরা। যারা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে শত্রুর বিরুদ্ধে সীসা ঢালা প্রাচীরের নেয় দাঁড়িয়ে আছেন।
৩ – এদিকে সোমালিয়ার রাষ্ট্রপতি ‘হাসান শেখ মহমুদ’, গত সত্তর বছর ধরে রাজত্ব করা ব্রিটিশ রানির মৃত্যুতে শোকসভায় অংশ নিতে লন্ডন সফরে গিয়েছে। আর সেই মহূর্তেই আশ-শাবাব “হাসান” (রহ.) এর সামরিক ক্যাম্প থেকে নতুন ভিডিও প্রকাশ করেছে। যে হাসান (রহি.) মৃত্যুর আগ পর্যন্ত এই ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে দেশ ও ঈমান রক্ষায় যুদ্ধ করে গেছেন। অপরদিকে দেশটির বর্তমান গাদ্দার সরকার সেখানে শোক প্রকাশের নামে আনুগত্য প্রকাশ করতে চলে গেছে। এটি জনগণের সামনে এই বিষয়টি স্পষ্ট করে দেয় যে, সোমালিয়ায় এখনো পশ্চিমাশক্তির বা ব্রিটিশদের গোলামি করে, আর কারইবা দেশ ও জনগণের প্রকৃত রাহবার।
৪ – আশ-শাবাবের সামরিক কমান্ডার শাইখ আলী মাহমুদ রাজী হাফিজাহুল্লাহ্। বক্তব্যকালে তাঁর পিছনে বসে ছিলেন প্রতিরোধ বাহিনীর এমন অনেক নেতা এবং প্রবীণরা, যাদেরকে হন্যে হয়ে খুঁজছে বিশ্বের বৃহত্তর সামরিক বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। যাদের মাথার মূল্য মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার ঘোষণা করে রেখেছে সন্ত্রাসী অ্যামেরিকা। যাদের খোঁজে সদা তৎপর আমেরিকার সামরিক ড্রোনগুলি। আর এমন সব গুরুত্বপূর্ণ নেতাকর্মীদের সাথে নিয়েই শাইখ রাজী (হাফি.) দীর্ঘ ২৫ মিনিট এমন একটি বক্তব্য দিয়েছেন, যা অনেক বিষয়কে স্পর্শ করে।বক্তব্যে তিনি দেশের চলমান রাজনীতি, নিরাপত্তা, খরা ও সংঘাত নিয়ে কথা বলেছেন। এসময় প্রশিক্ষণ শিবির থেকে স্নাতক হওয়া শত শত ইসলামের সৈনিকগণ তাঁর বক্তব্য মনযোগ সহকারে শুনছিলেন। নেতাকর্মীদের এই স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি এবং বিশাল এই সমাবেশই স্পষ্ট করে দেয় যে, দেশের মানুষ আশ-শাবাবকে কতটা বিশ্বাস করে। আর নেতারাও তাদের যোদ্ধাদের বিষয়ে কতটা আত্মবিশ্বাসী।
৫ – ভিডিওর এক পর্যায়ে “কাতিবাতুল ইস্তিশ-হাদিইয়িন” এর যোদ্ধাদের দেখানো হয়। আমাদের বাহ্যিক অনুমান, এখানে এই ব্রিগেডের ৩০০ থেকে ৪০০ সদস্য উপস্থিত ছিলেন। যদি কমান্ডারের নির্দেশে তাঁরা সবাই আল্লাহর রাহে তাদের জীবন উৎসর্গ করতে শুরু করেন, তাহলে গাদ্দার প্রশাসনের ঘুম হারাম হয়ে যাবে। তাদের মধ্যে অধিকাংশই হয়তো নিশ্চিতভাবে দেশ ছেড়ে বিদেশে পালিয়ে যাবে। কেননা তখন তাদের জন্য কোনো হোটেল, সামরিক ঘাঁটি আর সরকারি ভবন নিরাপদ থাকবে না।
৬ – আশ-শাবাবের মুখপাত্র সোমালি উপজাতিদের কাছে সম্প্রতি একটি বার্তা পাঠিয়েছেন। তাঁর বার্তাটি এমন সময়ে এসেছে, যখন দুটি সোমালি উপজাতি গাদ্দার সরকারের প্ররোচনায় মুজাহিদদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছে। যাদেরকে আশ-শাবাবের বিরুদ্ধে ময়দানে দাঁড় করাতে হাসান শেখের সরকার এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কঠোর পরিশ্রম করেছে। আর বাকি উপজাতিদের আশ-শাবাবের বিরুদ্ধে দাঁড় করাতে প্রচুর অর্থ ব্যয় করছে সরকার।
কিন্তু আশ-শাবাব মুখপাত্রের বার্তা প্রেরণ এবং যুদ্ধের বাস্তবতা দেখে বাকি উপজাতিরা ‘যুদ্ধে জড়ালে তাদের সামনের দিনগুলোর কেমন কাটবে’- সেটি অনেকাংশেই বুঝে গেছে। ফলে সরকার এসব উপজাতিদের পেছনে প্রচুর অর্থ ব্যয় করা সত্যেও কোন লাভ হচ্ছে না।বর্তমানে যে ২টি সম্প্রদায় সরকারের হয়ে লড়াই করছে, তাদের করুণ অবস্থা অন্যদের জন্য শিক্ষনীয় হয়ে উঠেছে। কেননা তারা লড়াই শুরু করেছে ঠিকই, কিন্তু এর শেষ তারা করতে পারছে না। প্রতিদিনই তারা নতুন নতুন সমস্যায় পড়ছে। নেতারা নিহত, আহত এবং বন্দী হচ্ছে। তাদের এলাকা ও সম্পত্তি ধ্বংস হচ্ছে। তাদের সমাজ যুবক-শূন্য হয়ে পড়ছে। তারা এখন অবিভাবক-শূন্য হয়ে পড়ছে; কেননা যুদ্ধে আশ-শাবাবের অন্তর্ভুক্তি হওয়ার পর তাদের প্রবীণরা সব আত্মগোপনে চলে গেছে।এটা নিশ্চিত যে, এই ২টি উপজাতির বর্তমান পরিস্থিতি দেখার পর, অন্যান্য উপজাতিরা আশ-শাবাবের কথাগুলো মনযোগ সহকারে শুনবে। তারা হাজার বার চিন্তা করবে সেই রাজনীতিবিদদের আহ্বানে সাড়া দেওয়ার বিষয়ে, যারা আশ-শাবাবের হামলা শুরুর পর নিজেরাই আগে পালিয়েছে এবং উপজাতি মিলিশিয়াদের ময়দানে একা ছেড়ে গেছে। ফলে তাদের সম্প্রদায় এবং জীবন এখন জলাবদ্ধতায় পরিণত হয়েছে। আর নতুন ইসলামি ইমারত প্রতিষ্ঠার লক্ষে বীরদর্পে এগিয়ে চলেছেন হারাকাতুশ-শাবাব আল মুজাহিদিন।
পূর্ব আফ্রিকার সবচাইতে জনপ্রিয় ও সক্রিয় ইসলামি প্রতিরোধ বাহিনী হারাকাতুশ শাবাব আল-মুজাহিদিন। দলটিকে অর্থনৈতিক ও সামরিক খাতে আল-কায়েদার সবচাইতে শক্তিশালী শাখা হিসাবে গণ্য করা হয়। দলটির উত্থান ৯০ এর দশকে হলেও ২০০৮ সাল থেকে এটি আল-কায়েদার একটি অঙ্গসংগঠন হিসাবে কাজ শুরু করে।দলটির ব্যপারে বলা হতো যে, দীর্ঘ এই সময়ে আল-কায়েদা যদি তাদেরকে আর্থিক-সামরিক সহায়তা আর পরামর্শ না দিয়ে দলটিকে সাহায্য না করতো, তাহলে এতদিনে প্রতিরোধ বাহিনীটি বিলুপ্ত হয়ে যেতো। কিন্তু আল্লাহ্র ইচ্ছায় আল-কায়েদা সেটি হতে দেয়নি। ফলে একসময়ের দূর্বল এই দলটিই আজকের বিশ্বমঞ্চে সবচাইতে শক্তিশালী প্রতিরোধ বাহিনী হয়ে উঠেছে। যারা বিশ্বের তাবত শক্তিধর দেশগুলোকে পূর্ব আফ্রিকার মাটিতে নাকানিচুবানি খাওয়াচ্ছেন, আলহামদুলিল্লাহ্।
সম্প্রতি ইসলামি প্রতিরোধ বাহিনীটি ব্যাপকভাবে তাদের শক্তিমত্তাও প্রদর্শন করতে শুরু করছে। যেখানে দলটি গত দুই মাসে শাইখ “কাসিম আর-রিমি ও সাঈদ মোহাম্মদ আবদুল্লাহ হাসান” রহিমাহুমুল্লাহ্ সামরিক ক্যাম্প থেকে পরপর দুটি ভিডিও প্রকাশ করেছে।আশ-শাবাবের সামরিক প্রশিক্ষণের এই ভিডিওগুলি দেখলে আফগানিস্তান বিজয়ের শুরুর মাসগুলোর কথা মনে পড়ে যায়।
কেননা তালিবান মুজাহিদগণও আফগান বিজয়ের শুরুর দিকে এধরণের একাধিক সামরিক ভিডিও প্রকাশ করেছিলেন। যাইহোক, আশ-শাবাবের এই ভিডিওগুলো দেখার পর কয়েকটি পয়েন্ট আপনাদের সামনে উপস্থাপন করা সমীচীন মনে করছি।
১ – প্রথমত ভিডিওগুলি সুমধুর কণ্ঠে পবিত্র কোরানের আয়াত দিয়ে শুরু হয়েছে। তারপর কোনো একটি দেশের প্রধান সামরিক বাহিনীর মতো বিপুল সংখ্যক সৈন্য প্রশিক্ষণ ক্যাস্পে অগ্রসর হয়। যেখানে সৈন্যদেরকে উন্নত সামরিক পোশাকে সজ্জিত অবস্থায় দেখা গেছে। যা প্রথম দেখাতেই যেকেউ বলতে বাধ্য হবেন যে, তারা উচ্চ প্রশিক্ষিত একটি বিশেষ সামরিক বাহিনী।যেখানে সোমালি গাদ্দার বাহিনী ও তাদের অফিসাররা তুরস্ক, উগান্ডা, ইথিওপিয়া, ইতালি ও আমেরিকার মতো দেশগুলোতে সামরিক প্রশিক্ষণ নিচ্ছে।
সেখানে আশ-শাবাব দেখিয়ে দিয়েছে যে, সোমালিয়ার প্রকৃত যুবকরাও স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে পারেন আলহামদুলিল্লাহ্; আর তা দেশের বন, পাহাড় এবং সমভূমিতে থেকেই। যারা আন্তর্জাতিক স্তরের সামরিক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে দেশ ও জাতি রক্ষায় বীরদর্পে লড়াই চালিয়ে যেতে সক্ষম।
আমরা অনেক বছর ধরেই আশ-শাবাবের সামরিক প্রশিক্ষণ শিবির থেকে প্রকাশিত ভিডিওগুলি পর্যবেক্ষণ করে আসছি।
কিন্তু বর্তমান ভিডিওগুলো একেবারেই আলাদা; এখানে হাজারেরও অধিক মুসলিম যুবক একসাথে প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। ফলে আমরা বলতে পারি যে, আশ-শাবাবের ইতিহাসে কোন প্রশিক্ষণ শিবির থেকে একবারে বের হওয়া মুজাহিদদের সংখ্যায় মধ্যে এই দুটিই সবচেয়ে বড় সংখ্যা। আমাদের বাহ্যিক অনুমান, এই শিবিরগুলো থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে বের হওয়া নতুন যোদ্ধার সংখ্যা ৩ হাজার এর মধ্যে।অথচ সেদেশটির পুতুল সরকার বলছে, আশ-শাবাব পলাতক রয়েছে, তাদের সেনাবাহিনীর সংখ্যা কমে গেছে, তাদের সাথে যোগ দেওয়ার কেউ নেই- ইত্যাদি। কিন্তু আশ-শাবাবের দুর্দান্ত এই সামরিক ভিডিওগুলো কথিত রাজনীতিবিদ এবং মিডিয়ার হিংসাত্মক প্রচারনা ও মিথ্যার মুখোশ উন্মোচন করে দিয়েছে।
২ – দ্বিতীয় ভিডিওটিতে বলা হয়েছে যে, এই সৈন্যরা “সৈয়দ মুহাম্মদ আবদুল্লাহ হাসান” প্রশিক্ষণ শিবির থেকে স্নাতক হয়েছেন। যেখানে প্রতিরোধ বাহিনীর সামরিক কমান্ডার তাঁর বক্তব্যে হাসান (রহি.) এর সংগ্রামী জীবন নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা করেছেন। যিনি একাধারে ক্রুসেডার ব্রিটেন, ইতালি ও ইথিওপিয়ার বিরুদ্ধে দেশ ও ঈমান রক্ষায় মৃত্যুর আগ পর্যন্ত জিহাদ চালিয়ে গেছেন। যার নেতৃত্বে ১৯ শতকের শুরু থেকে একাধারে ২০ বছর যাবৎ বৃহত্তর সোমালিয়াজুড়ে একটি ইসলামি ইমারাত পরিচালিত হয়েছে।আর আশ-শাবাব সাইয়্যেদ হাসান (রহি.) এর মতোই দখলদার শক্তির বিরুদ্ধে সোমালিয়ায় জিহাদ পরিচালনা করে যাচ্ছে। এবং এখানে একটি বৃহত্তর ইসলামি ইমারাত প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে আলহামদুলিল্লাহ্।
ফলে প্রত্যেক ঐসমস্ত সোমালি জনগণ আশ-শাবাবের কর্মপদ্ধতি ও লক্ষ্য নিয়ে খুবই সন্তুষ্ট ও আন্তরিক, যারা দেশকে ভালোবাসেন এবং ঔপনিবেশিক গোলামদের ঘৃণা করেন। তারা এজন্য খুবই খুশি যে, এই ভূমিতে আল্লাহর নাম এখনও বুলন্দ রেখেছে আশ-শাবাবের মতো সাহসী বীরেরা। যারা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে শত্রুর বিরুদ্ধে সীসা ঢালা প্রাচীরের নেয় দাঁড়িয়ে আছেন।
৩ – এদিকে সোমালিয়ার রাষ্ট্রপতি ‘হাসান শেখ মহমুদ’, গত সত্তর বছর ধরে রাজত্ব করা ব্রিটিশ রানির মৃত্যুতে শোকসভায় অংশ নিতে লন্ডন সফরে গিয়েছে। আর সেই মহূর্তেই আশ-শাবাব “হাসান” (রহ.) এর সামরিক ক্যাম্প থেকে নতুন ভিডিও প্রকাশ করেছে। যে হাসান (রহি.) মৃত্যুর আগ পর্যন্ত এই ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে দেশ ও ঈমান রক্ষায় যুদ্ধ করে গেছেন। অপরদিকে দেশটির বর্তমান গাদ্দার সরকার সেখানে শোক প্রকাশের নামে আনুগত্য প্রকাশ করতে চলে গেছে। এটি জনগণের সামনে এই বিষয়টি স্পষ্ট করে দেয় যে, সোমালিয়ায় এখনো পশ্চিমাশক্তির বা ব্রিটিশদের গোলামি করে, আর কারইবা দেশ ও জনগণের প্রকৃত রাহবার।
৪ – আশ-শাবাবের সামরিক কমান্ডার শাইখ আলী মাহমুদ রাজী হাফিজাহুল্লাহ্। বক্তব্যকালে তাঁর পিছনে বসে ছিলেন প্রতিরোধ বাহিনীর এমন অনেক নেতা এবং প্রবীণরা, যাদেরকে হন্যে হয়ে খুঁজছে বিশ্বের বৃহত্তর সামরিক বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। যাদের মাথার মূল্য মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার ঘোষণা করে রেখেছে সন্ত্রাসী অ্যামেরিকা। যাদের খোঁজে সদা তৎপর আমেরিকার সামরিক ড্রোনগুলি। আর এমন সব গুরুত্বপূর্ণ নেতাকর্মীদের সাথে নিয়েই শাইখ রাজী (হাফি.) দীর্ঘ ২৫ মিনিট এমন একটি বক্তব্য দিয়েছেন, যা অনেক বিষয়কে স্পর্শ করে।বক্তব্যে তিনি দেশের চলমান রাজনীতি, নিরাপত্তা, খরা ও সংঘাত নিয়ে কথা বলেছেন। এসময় প্রশিক্ষণ শিবির থেকে স্নাতক হওয়া শত শত ইসলামের সৈনিকগণ তাঁর বক্তব্য মনযোগ সহকারে শুনছিলেন। নেতাকর্মীদের এই স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি এবং বিশাল এই সমাবেশই স্পষ্ট করে দেয় যে, দেশের মানুষ আশ-শাবাবকে কতটা বিশ্বাস করে। আর নেতারাও তাদের যোদ্ধাদের বিষয়ে কতটা আত্মবিশ্বাসী।
৫ – ভিডিওর এক পর্যায়ে “কাতিবাতুল ইস্তিশ-হাদিইয়িন” এর যোদ্ধাদের দেখানো হয়। আমাদের বাহ্যিক অনুমান, এখানে এই ব্রিগেডের ৩০০ থেকে ৪০০ সদস্য উপস্থিত ছিলেন। যদি কমান্ডারের নির্দেশে তাঁরা সবাই আল্লাহর রাহে তাদের জীবন উৎসর্গ করতে শুরু করেন, তাহলে গাদ্দার প্রশাসনের ঘুম হারাম হয়ে যাবে। তাদের মধ্যে অধিকাংশই হয়তো নিশ্চিতভাবে দেশ ছেড়ে বিদেশে পালিয়ে যাবে। কেননা তখন তাদের জন্য কোনো হোটেল, সামরিক ঘাঁটি আর সরকারি ভবন নিরাপদ থাকবে না।
৬ – আশ-শাবাবের মুখপাত্র সোমালি উপজাতিদের কাছে সম্প্রতি একটি বার্তা পাঠিয়েছেন। তাঁর বার্তাটি এমন সময়ে এসেছে, যখন দুটি সোমালি উপজাতি গাদ্দার সরকারের প্ররোচনায় মুজাহিদদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছে। যাদেরকে আশ-শাবাবের বিরুদ্ধে ময়দানে দাঁড় করাতে হাসান শেখের সরকার এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কঠোর পরিশ্রম করেছে। আর বাকি উপজাতিদের আশ-শাবাবের বিরুদ্ধে দাঁড় করাতে প্রচুর অর্থ ব্যয় করছে সরকার।
কিন্তু আশ-শাবাব মুখপাত্রের বার্তা প্রেরণ এবং যুদ্ধের বাস্তবতা দেখে বাকি উপজাতিরা ‘যুদ্ধে জড়ালে তাদের সামনের দিনগুলোর কেমন কাটবে’- সেটি অনেকাংশেই বুঝে গেছে। ফলে সরকার এসব উপজাতিদের পেছনে প্রচুর অর্থ ব্যয় করা সত্যেও কোন লাভ হচ্ছে না।বর্তমানে যে ২টি সম্প্রদায় সরকারের হয়ে লড়াই করছে, তাদের করুণ অবস্থা অন্যদের জন্য শিক্ষনীয় হয়ে উঠেছে। কেননা তারা লড়াই শুরু করেছে ঠিকই, কিন্তু এর শেষ তারা করতে পারছে না। প্রতিদিনই তারা নতুন নতুন সমস্যায় পড়ছে। নেতারা নিহত, আহত এবং বন্দী হচ্ছে। তাদের এলাকা ও সম্পত্তি ধ্বংস হচ্ছে। তাদের সমাজ যুবক-শূন্য হয়ে পড়ছে। তারা এখন অবিভাবক-শূন্য হয়ে পড়ছে; কেননা যুদ্ধে আশ-শাবাবের অন্তর্ভুক্তি হওয়ার পর তাদের প্রবীণরা সব আত্মগোপনে চলে গেছে।এটা নিশ্চিত যে, এই ২টি উপজাতির বর্তমান পরিস্থিতি দেখার পর, অন্যান্য উপজাতিরা আশ-শাবাবের কথাগুলো মনযোগ সহকারে শুনবে। তারা হাজার বার চিন্তা করবে সেই রাজনীতিবিদদের আহ্বানে সাড়া দেওয়ার বিষয়ে, যারা আশ-শাবাবের হামলা শুরুর পর নিজেরাই আগে পালিয়েছে এবং উপজাতি মিলিশিয়াদের ময়দানে একা ছেড়ে গেছে। ফলে তাদের সম্প্রদায় এবং জীবন এখন জলাবদ্ধতায় পরিণত হয়েছে। আর নতুন ইসলামি ইমারত প্রতিষ্ঠার লক্ষে বীরদর্পে এগিয়ে চলেছেন হারাকাতুশ-শাবাব আল মুজাহিদিন।
Comment