মালিতে বাড়ছে আল-কায়েদার প্রভাব: ইসলাম বিরোধী শক্তি আতংকিত
পশ্চিম আফ্রিকার দেশ মালিতে ক্রমেই বেড়ে চলেছে বৈশ্বিক ইসলামি প্রতিরোধ বাহিনী জামা’য়াত নুসরাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলিমীন (জেএনআইএম) এর প্রভাব। আল-কায়েদা সংশ্লিষ্ট মুজাহিদদের আক্রমণের তীব্রতা ও নানামুখী তৎপরতায় প্রচণ্ড চাপের মুখে পড়েছে পশ্চিমা সমর্থিত গাদ্দার মালিয়ান সেনা ও তাদের দোসর রাশিয়ান ওয়াগনার মার্সেনারিরা।
এর একটি নমুনা দেখা যায় গত ১৯ নভেম্বর। বিপদ আঁচ করতে পেরে সেদিন মালির হোমবোরি অঞ্চলে অবস্থানরত রাশিয়ার ভাড়াটে ওয়াগনার সেনারা নিজেদের অবস্থান ছেড়ে চলে যায়। ঘন্টাখানেকের মধ্যে পুরো অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েন জেএনআইএম মুজাহিদগণ। অল্প সময়ের মধ্যেই তারা হোমবোরি অঞ্চল দখল করে ফেলেন। তারপর জনসাধারণের মাঝে দাওয়াতি কার্যক্রম চালানোর পাশাপাশি মাসজিদে খুতবা চালু করেন।
হোমবোরি অঞ্চল আল-কায়েদার নিয়ন্ত্রণে চলে যাওয়ায় চাপের মুখে পড়েছে নিকটবর্তী সিনকে অঞ্চলে অবস্থানরত মালিয়ান সরকারি বাহিনী। কেননা এখন মুজাহিদগণ আগের থেকেও অধিক হারে তাদের উপর আক্রমণ চালাতে পারবেন।
সূত্র মতে, জেএনআইএম এর বীর যোদ্ধারা বর্তমানে সিনকে অঞ্চলেও মোটরবাইক দিয়ে টহল দিচ্ছেন ও রেকি করে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করে আক্রমণের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। অঞ্চলটিতে রাশিয়ান ওয়াগনার সেনারা মুজাহিদদের সামনে খুব একটা সুবিধা করতে পারছে না। সংঘর্ষ হলে মুজাহিদগণ আত্মবিশ্বাসের সাথেই ওয়াগনার সেনাদের মোকাবেলা করেন।
অতি সম্প্রতি, জেএনআইএম এর মুজাহিদগণ মোপ্তি রাজ্যের বানকাস অঞ্চলে সরকারি বাহিনী, ওয়াগনার ও ‘দান-না-আম্বাসাগো’ মিলিশিয়াদের নিয়ে গঠিত একটি জোট বাহিনীর উপর ডুয়াল-আইইডি দিয়ে শক্তিশালী বোমা হামলা চালিয়েছেন। এই হামলায় জোট বাহিনীর অন্তত ১৫ সেনা নিহত হয় এবং দুটি গাড়ি পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যায়।
জেএনআইএম এর ক্রমবর্ধমান প্রভাবের আরেকটি প্রমাণ হচ্ছে একের পর এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের বন্দী করা ও মুক্তিপণ আদায়। এর ধারাবাহিকতায় মুজাহিদগণ রাজধানী বামাকো থেকে খ্রিষ্টান পাদ্রী পরিচয়ধারী গোয়েন্দা সংস্থার এক কর্মকর্তাকে আটক করেছেন। এর আগে থাইল্যান্ডের নাগরিক ডক্টর সং কে তিন সপ্তাহ আটক করে রাখার পর মুক্তিপণের বিনিময়ে ছেড়ে দেন। বলা হয় যে, তার মুক্তিপণ হিসাবে মুজাহিদগণ ১,৫০,০০০ ডলার লাভ করেছেন। কিছু সূত্র মতে, এই বিশাল অর্থের পাশাপাশি আল-কায়েদার কয়েকজন যোদ্ধাকেও মুক্তি দিতে বাধ্য হয়েছে গাদ্দার সরকার।
বিদেশি এসব নাগরিকদের আটকের কারণ হচ্ছে, তারা পশ্চিমা সমর্থিত সরকারের সাথে আঁতাত করে মুজাহিদদের অগ্রগতিকে বাঁধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করছে। তারা পশ্চিমাদের উদ্দেশ্য বাস্তবায়নকারী এনজিওগুলোর সাথে সম্পৃক্ত। তাই তাদের আটক করে মুক্তিপণ আদায়ের পর ছেড়ে দেয়া হয়।
এভাবে মালির রাজধানী বামাকো থেকে বিদেশী নাগরিকদের আটক করে মুক্তিপণ আদায় করার বিষয়টি মূলত দেশটিতে পশ্চিমা সমর্থিত পুতুল সরকারের তুলনায় আল-কায়েদা সংশ্লিষ্ট জেএনআইএম মুজাহিদদের অধিক শক্তিমত্তারই বহিঃপ্রকাশ।
সার্বিকভাবে, মালিয়ান সেনাবাহিনী এখন চতুর্মূখী সংকটে জর্জরিত। একদিকে ওয়াগনারদের উপস্থিতির কারণে পশ্চিমা প্রভুরা অসন্তুষ্ট এবং অনেক দেশ সেনা প্রত্যাহার করেছে। অপরদিকে মুজাহিদদের কার্যকরভাবে “দমন” করার যে উদ্দেশ্য নিয়ে রাশিয়া থেকে ওয়াগনারদের ভাড়া করে আনা হয়েছিল, সেই উদ্দেশ্যও সফল হচ্ছে না। মালিয়ান সেনাদের অভিযোগ, ওয়াগনার সেনারা পর্যাপ্ত সাহায্য করছে না।
বিশ্লেষকরা বলছেন, পূর্বের যেকোনো সময়ের চেয়ে এখন মালিয়ান সেনারা সবচেয়ে খারাপ সময় পার করছে। এই সুযোগে নতুন নতুন এলাকা দখল করে দাওয়াতি কার্যক্রম চালিয়ে ক্রমেই নিজেদের অবস্থান আরো শক্ত করছে প্রতিরোধ বাহিনী জেএনআইএম প্রশাসন। তারা বর্তমানে মালির ৭০ শতাংশেরও বেশি ভূমি নিয়ন্ত্রণ করছেন। একই সাথে প্রতিরোধ বাহিনীটি সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মালির সীমান্ত পেড়িয়ে প্রতিবেশি ৭টি দেশেও নিজেদের প্রভাব বিস্তার করে চলছেন।
পশ্চিম আফ্রিকায় আল-কায়েদার ক্রমবর্ধমান এই প্রভাব প্রতিপত্তির ফলে গোটা ইউরোপ সহ পশ্চিমা বিশ্বের কপালে দেখা দিয়েছে দুশ্চিন্তার বলিরেখা। কেননা আল-কায়েদা মুজাহিদগণ এমন জায়গায় নিজেদের শক্তিমত্তা প্রদর্শন করছেন, যার একদিকে ইউরোপ অপরদিকে সাগর পেরোলেই পশ্চিমাদের আস্তানা। তাই বলা যায় যে, এক রকম নাকের ডগায় বসেই আল-কায়েদার শাখা জেএনআইএম তাদের শক্তিবৃদ্ধি করছেন এবং ক্রুসেডারদের বহুকালের মিত্র পুতুল সরকারগুলিকে নাস্তানাবুদ করছেন।
লিখেছেন: ত্বহা আলী আদনান
পশ্চিম আফ্রিকার দেশ মালিতে ক্রমেই বেড়ে চলেছে বৈশ্বিক ইসলামি প্রতিরোধ বাহিনী জামা’য়াত নুসরাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলিমীন (জেএনআইএম) এর প্রভাব। আল-কায়েদা সংশ্লিষ্ট মুজাহিদদের আক্রমণের তীব্রতা ও নানামুখী তৎপরতায় প্রচণ্ড চাপের মুখে পড়েছে পশ্চিমা সমর্থিত গাদ্দার মালিয়ান সেনা ও তাদের দোসর রাশিয়ান ওয়াগনার মার্সেনারিরা।
এর একটি নমুনা দেখা যায় গত ১৯ নভেম্বর। বিপদ আঁচ করতে পেরে সেদিন মালির হোমবোরি অঞ্চলে অবস্থানরত রাশিয়ার ভাড়াটে ওয়াগনার সেনারা নিজেদের অবস্থান ছেড়ে চলে যায়। ঘন্টাখানেকের মধ্যে পুরো অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েন জেএনআইএম মুজাহিদগণ। অল্প সময়ের মধ্যেই তারা হোমবোরি অঞ্চল দখল করে ফেলেন। তারপর জনসাধারণের মাঝে দাওয়াতি কার্যক্রম চালানোর পাশাপাশি মাসজিদে খুতবা চালু করেন।
হোমবোরি অঞ্চল আল-কায়েদার নিয়ন্ত্রণে চলে যাওয়ায় চাপের মুখে পড়েছে নিকটবর্তী সিনকে অঞ্চলে অবস্থানরত মালিয়ান সরকারি বাহিনী। কেননা এখন মুজাহিদগণ আগের থেকেও অধিক হারে তাদের উপর আক্রমণ চালাতে পারবেন।
সূত্র মতে, জেএনআইএম এর বীর যোদ্ধারা বর্তমানে সিনকে অঞ্চলেও মোটরবাইক দিয়ে টহল দিচ্ছেন ও রেকি করে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করে আক্রমণের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। অঞ্চলটিতে রাশিয়ান ওয়াগনার সেনারা মুজাহিদদের সামনে খুব একটা সুবিধা করতে পারছে না। সংঘর্ষ হলে মুজাহিদগণ আত্মবিশ্বাসের সাথেই ওয়াগনার সেনাদের মোকাবেলা করেন।
অতি সম্প্রতি, জেএনআইএম এর মুজাহিদগণ মোপ্তি রাজ্যের বানকাস অঞ্চলে সরকারি বাহিনী, ওয়াগনার ও ‘দান-না-আম্বাসাগো’ মিলিশিয়াদের নিয়ে গঠিত একটি জোট বাহিনীর উপর ডুয়াল-আইইডি দিয়ে শক্তিশালী বোমা হামলা চালিয়েছেন। এই হামলায় জোট বাহিনীর অন্তত ১৫ সেনা নিহত হয় এবং দুটি গাড়ি পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যায়।
জেএনআইএম এর ক্রমবর্ধমান প্রভাবের আরেকটি প্রমাণ হচ্ছে একের পর এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের বন্দী করা ও মুক্তিপণ আদায়। এর ধারাবাহিকতায় মুজাহিদগণ রাজধানী বামাকো থেকে খ্রিষ্টান পাদ্রী পরিচয়ধারী গোয়েন্দা সংস্থার এক কর্মকর্তাকে আটক করেছেন। এর আগে থাইল্যান্ডের নাগরিক ডক্টর সং কে তিন সপ্তাহ আটক করে রাখার পর মুক্তিপণের বিনিময়ে ছেড়ে দেন। বলা হয় যে, তার মুক্তিপণ হিসাবে মুজাহিদগণ ১,৫০,০০০ ডলার লাভ করেছেন। কিছু সূত্র মতে, এই বিশাল অর্থের পাশাপাশি আল-কায়েদার কয়েকজন যোদ্ধাকেও মুক্তি দিতে বাধ্য হয়েছে গাদ্দার সরকার।
বিদেশি এসব নাগরিকদের আটকের কারণ হচ্ছে, তারা পশ্চিমা সমর্থিত সরকারের সাথে আঁতাত করে মুজাহিদদের অগ্রগতিকে বাঁধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করছে। তারা পশ্চিমাদের উদ্দেশ্য বাস্তবায়নকারী এনজিওগুলোর সাথে সম্পৃক্ত। তাই তাদের আটক করে মুক্তিপণ আদায়ের পর ছেড়ে দেয়া হয়।
এভাবে মালির রাজধানী বামাকো থেকে বিদেশী নাগরিকদের আটক করে মুক্তিপণ আদায় করার বিষয়টি মূলত দেশটিতে পশ্চিমা সমর্থিত পুতুল সরকারের তুলনায় আল-কায়েদা সংশ্লিষ্ট জেএনআইএম মুজাহিদদের অধিক শক্তিমত্তারই বহিঃপ্রকাশ।
সার্বিকভাবে, মালিয়ান সেনাবাহিনী এখন চতুর্মূখী সংকটে জর্জরিত। একদিকে ওয়াগনারদের উপস্থিতির কারণে পশ্চিমা প্রভুরা অসন্তুষ্ট এবং অনেক দেশ সেনা প্রত্যাহার করেছে। অপরদিকে মুজাহিদদের কার্যকরভাবে “দমন” করার যে উদ্দেশ্য নিয়ে রাশিয়া থেকে ওয়াগনারদের ভাড়া করে আনা হয়েছিল, সেই উদ্দেশ্যও সফল হচ্ছে না। মালিয়ান সেনাদের অভিযোগ, ওয়াগনার সেনারা পর্যাপ্ত সাহায্য করছে না।
বিশ্লেষকরা বলছেন, পূর্বের যেকোনো সময়ের চেয়ে এখন মালিয়ান সেনারা সবচেয়ে খারাপ সময় পার করছে। এই সুযোগে নতুন নতুন এলাকা দখল করে দাওয়াতি কার্যক্রম চালিয়ে ক্রমেই নিজেদের অবস্থান আরো শক্ত করছে প্রতিরোধ বাহিনী জেএনআইএম প্রশাসন। তারা বর্তমানে মালির ৭০ শতাংশেরও বেশি ভূমি নিয়ন্ত্রণ করছেন। একই সাথে প্রতিরোধ বাহিনীটি সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মালির সীমান্ত পেড়িয়ে প্রতিবেশি ৭টি দেশেও নিজেদের প্রভাব বিস্তার করে চলছেন।
পশ্চিম আফ্রিকায় আল-কায়েদার ক্রমবর্ধমান এই প্রভাব প্রতিপত্তির ফলে গোটা ইউরোপ সহ পশ্চিমা বিশ্বের কপালে দেখা দিয়েছে দুশ্চিন্তার বলিরেখা। কেননা আল-কায়েদা মুজাহিদগণ এমন জায়গায় নিজেদের শক্তিমত্তা প্রদর্শন করছেন, যার একদিকে ইউরোপ অপরদিকে সাগর পেরোলেই পশ্চিমাদের আস্তানা। তাই বলা যায় যে, এক রকম নাকের ডগায় বসেই আল-কায়েদার শাখা জেএনআইএম তাদের শক্তিবৃদ্ধি করছেন এবং ক্রুসেডারদের বহুকালের মিত্র পুতুল সরকারগুলিকে নাস্তানাবুদ করছেন।
লিখেছেন: ত্বহা আলী আদনান
Comment