মালিতে শত্রুর ভিত কাপিয়ে আল-কায়েদার ৫৭ অভিযান
ফাইল ছবি: জেএনআইএম'এর শীর্ষ নেতৃবৃন্দ
বিগত কয়েক মাস ধরেই পশ্চিম আফ্রিকার দেশ মালিতে সামরিক অপারেশন জোরদার করেছে আল-কায়েদা পশ্চিম আফ্রিকা সংশ্লিষ্ট ইসলামি প্রতিরোধ বাহিনী জেএনআইএম। তবে মুজাহিদদের আক্রমণের ধরণ ও প্রচার কৌশলে ভিন্নতা পরিলক্ষিত হচ্ছে।
স্থানীয় গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, ‘জেএনআইএম’ মুজাহিদিন গত ১ এপ্রিল থেকে ২১ মে পর্যন্ত মালিতে অন্তত ৫৭টি অভিযান পরিচালনা করছেন। তবে দলটির অফিসিয়াল সংবাদ মাধ্যম “আয-যাল্লাকা” এসময়ের মাঝে, বিশেষ করে গত শাওয়াল মাসে মাত্র ২১টি অভিযানের তথ্য নিশ্চিত করেছে। কৌশলগত কারণেই তাঁরা হয়তো অনেকগুলো গুরত্বপূর্ণ অভিযানে শত্রু বাহিনীর হতাহতের সুনির্দিষ্ট সংখ্যাও এড়িয়ে গেছন।
উদাহরণস্বরূপ, এসময়ের মাঝে জেএনআইএমের প্রতিরোধ যোদ্ধারা তাদের সবচেয়ে বড় অভিযানটি পরিচালনা করছেন গত ২২ এপ্রিল। মাসিনা রাজ্যে রাশিয়ান ওয়াগনার বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে থাকা ‘সেওয়ারি’ সামরিক বিমানবন্দর ও এর আশেপাশে অবস্থিত জাতিসংঘ এবং মালিয়ান সামরিক ব্যারাকগুলিতে ২জন ইস্তেশহাদী মুজাহিদ ও ৩০ জন ইনগিমাসী যোদ্ধা একযোগে আক্রমণ চালান বলে জানা যায়।
দুই ঘন্টার এই অভিযানে ২৫ রাশিয়ান ওয়াগনার সেনা সহ অন্তত দেড় শতাধিক (১৫০) মালিয়ান সেনা হতাহত হয়। ধ্বংস করা হয় বিমানবন্দরে থাকা ৮টি হেলিকপ্টার ও বিমান, সামরিক বাহিনীর বিশাল অস্ত্রের মজুত, অন্যান্য সামরিক সরঞ্জাম ও লজিস্টিক্যাল গুদাম।মুজাহিদদের মাঝে ১৫ জন শত্রু বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়তে লড়তে শাহাদাত বরণ করেন, বাকিরা অভিযান সম্পন্ন করে নিরাপদে ঘাঁটিতে ফিরে আসেন।
বিমানবন্দরে পরিচালিত অপারেশনে অংশগ্রহণকারী মুজাহিদদের কয়েকজন
‘জেএনআইএম’ এর অফিসিয়াল সূত্র থেকে জানা যায়, বিমানবন্দরে পরিচালিত অভিযানটি ছাড়াও গত শাওয়াল মাসে মুজাহিদদের পরিচালিত বাকি ২২টি অভিযানে দখলদার বাহিনী ও তাদের সমর্থিত মালিয়ান সামরিক বাহিনীর অন্তত ৮৯ সেনা নিহত হয়, আর আহত সেনাসংখ্যা কমপক্ষে ২১ জন। এই অভিযানগুলিতে শত্রু বাহিনীর বিভিন্ন ধরনের ১৮টি সাঁজোয়া যান ধ্বংস করতে সক্ষম হন মুজাহিদগণ।
অপরদিকে মুজাহিদগণ গনিমত হিসাবে জব্দ করেন ৬টি সাঁজোয়া যান, ১০৮টি মোটরসাইকেল, ১৫টি আরপিজি, ১৩৫টি মাঝারি অস্ত্র এবং ৮টি পিস্তল।
মুজাহিদগণ এক সেনা সদস্যকে বন্দী করতেও সক্ষম হন। পশ্চিম আফ্রিকার যুদ্ধ পর্যবেক্ষণ করছেন এমন সামরিক বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন, জেএনআইএম মুজাহিদগণ শাওয়াল মাস পরবর্তী গত মে মাসের ২১ থেকে ৩১ তারিখ পর্যন্ত এবং মার্চ মাসের প্রথম দশকে মালিতে বড়সড় আরও ৫টি অভিযান এবং ছোট-বড় অন্তত ৩৫টি অভিযান পরিচালনা করেছেন। এসকল অভিযানেও আরও অসংখ্য দখলদার ও মিলিশিয়া সেনা হতাহত হয়েছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বর্তমানে মালির জান্তা সরকারি বাহিনীর অধিনে দেশের মাত্র ১০ শতাংশ অঞ্চলের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ রয়েছে, যেখানে আল-কায়েদা সহ অন্যান্যদের নিয়ন্ত্রণে দেশের ৯০ শতাংশ এলাকা। অথচ এমন পরিস্থিতিতে পুনরায় নির্বাচনের কথাও ভাবছে সরকার।
সবুজ ও লাল জায়গাগুলো নিয়ন্ত্রণ করছে আল-কায়েদা
বিষয়টি আরও স্পষ্টভাবে বুঝতে উপরে দেওয়া মালির ও বুরকিনা ফাসো সহ পশ্চিম আফ্রিকার এই সাম্প্রতিক ম্যাপটি দেখতে পারেন। মানচিত্রে স্পষ্টই দেখা যাচ্ছে যে, মালি ও বুরকিনা ফাসো ছাড়াও প্রতিবেশি দেশগুলোর সীমান্ত এলাকার উপর আল-কায়েদা নিজেদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছে। এর বাইরে সামান্য কিছু এলাকাই দখল করে রেখেছে সরকারি বাহিনী, আঞ্চলিক মিলিশিয়া ও আইএস।
এমন পরিস্থিতিতে অপ্নেক বিশ্লেষক বলছেন, আল-কায়েদার সবচাইতে সক্রিয় এবং শক্তিশালী শাখা হিসাবে আশ-শাবাবকে মনে করা হলেও, পশ্চিম আফ্রিকার ‘জেএনআইএম’ তাদের চেয়ে কোনো অংশে পিছিয়ে নেই। অনেকাংশে এটি বর্তমানে হারাকাতুশ শাবাবকেও ছাড়িয়ে গেছে। হারাকাতুশ শাবাব এখন পর্যন্ত কেনিয়ায় ও সোমালিয়ায় তাদের সামরিক অভিযান সীমাবদ্ধ রাখলেও জেএনআইএম’ এর টার্গেট পুরো পশ্চিম আফ্রিকা।
ফাইল ছবি: জেএনআইএম'এর শীর্ষ নেতৃবৃন্দ
বিগত কয়েক মাস ধরেই পশ্চিম আফ্রিকার দেশ মালিতে সামরিক অপারেশন জোরদার করেছে আল-কায়েদা পশ্চিম আফ্রিকা সংশ্লিষ্ট ইসলামি প্রতিরোধ বাহিনী জেএনআইএম। তবে মুজাহিদদের আক্রমণের ধরণ ও প্রচার কৌশলে ভিন্নতা পরিলক্ষিত হচ্ছে।
স্থানীয় গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, ‘জেএনআইএম’ মুজাহিদিন গত ১ এপ্রিল থেকে ২১ মে পর্যন্ত মালিতে অন্তত ৫৭টি অভিযান পরিচালনা করছেন। তবে দলটির অফিসিয়াল সংবাদ মাধ্যম “আয-যাল্লাকা” এসময়ের মাঝে, বিশেষ করে গত শাওয়াল মাসে মাত্র ২১টি অভিযানের তথ্য নিশ্চিত করেছে। কৌশলগত কারণেই তাঁরা হয়তো অনেকগুলো গুরত্বপূর্ণ অভিযানে শত্রু বাহিনীর হতাহতের সুনির্দিষ্ট সংখ্যাও এড়িয়ে গেছন।
উদাহরণস্বরূপ, এসময়ের মাঝে জেএনআইএমের প্রতিরোধ যোদ্ধারা তাদের সবচেয়ে বড় অভিযানটি পরিচালনা করছেন গত ২২ এপ্রিল। মাসিনা রাজ্যে রাশিয়ান ওয়াগনার বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে থাকা ‘সেওয়ারি’ সামরিক বিমানবন্দর ও এর আশেপাশে অবস্থিত জাতিসংঘ এবং মালিয়ান সামরিক ব্যারাকগুলিতে ২জন ইস্তেশহাদী মুজাহিদ ও ৩০ জন ইনগিমাসী যোদ্ধা একযোগে আক্রমণ চালান বলে জানা যায়।
দুই ঘন্টার এই অভিযানে ২৫ রাশিয়ান ওয়াগনার সেনা সহ অন্তত দেড় শতাধিক (১৫০) মালিয়ান সেনা হতাহত হয়। ধ্বংস করা হয় বিমানবন্দরে থাকা ৮টি হেলিকপ্টার ও বিমান, সামরিক বাহিনীর বিশাল অস্ত্রের মজুত, অন্যান্য সামরিক সরঞ্জাম ও লজিস্টিক্যাল গুদাম।মুজাহিদদের মাঝে ১৫ জন শত্রু বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়তে লড়তে শাহাদাত বরণ করেন, বাকিরা অভিযান সম্পন্ন করে নিরাপদে ঘাঁটিতে ফিরে আসেন।
বিমানবন্দরে পরিচালিত অপারেশনে অংশগ্রহণকারী মুজাহিদদের কয়েকজন
‘জেএনআইএম’ এর অফিসিয়াল সূত্র থেকে জানা যায়, বিমানবন্দরে পরিচালিত অভিযানটি ছাড়াও গত শাওয়াল মাসে মুজাহিদদের পরিচালিত বাকি ২২টি অভিযানে দখলদার বাহিনী ও তাদের সমর্থিত মালিয়ান সামরিক বাহিনীর অন্তত ৮৯ সেনা নিহত হয়, আর আহত সেনাসংখ্যা কমপক্ষে ২১ জন। এই অভিযানগুলিতে শত্রু বাহিনীর বিভিন্ন ধরনের ১৮টি সাঁজোয়া যান ধ্বংস করতে সক্ষম হন মুজাহিদগণ।
অপরদিকে মুজাহিদগণ গনিমত হিসাবে জব্দ করেন ৬টি সাঁজোয়া যান, ১০৮টি মোটরসাইকেল, ১৫টি আরপিজি, ১৩৫টি মাঝারি অস্ত্র এবং ৮টি পিস্তল।
মুজাহিদগণ এক সেনা সদস্যকে বন্দী করতেও সক্ষম হন। পশ্চিম আফ্রিকার যুদ্ধ পর্যবেক্ষণ করছেন এমন সামরিক বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন, জেএনআইএম মুজাহিদগণ শাওয়াল মাস পরবর্তী গত মে মাসের ২১ থেকে ৩১ তারিখ পর্যন্ত এবং মার্চ মাসের প্রথম দশকে মালিতে বড়সড় আরও ৫টি অভিযান এবং ছোট-বড় অন্তত ৩৫টি অভিযান পরিচালনা করেছেন। এসকল অভিযানেও আরও অসংখ্য দখলদার ও মিলিশিয়া সেনা হতাহত হয়েছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বর্তমানে মালির জান্তা সরকারি বাহিনীর অধিনে দেশের মাত্র ১০ শতাংশ অঞ্চলের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ রয়েছে, যেখানে আল-কায়েদা সহ অন্যান্যদের নিয়ন্ত্রণে দেশের ৯০ শতাংশ এলাকা। অথচ এমন পরিস্থিতিতে পুনরায় নির্বাচনের কথাও ভাবছে সরকার।
সবুজ ও লাল জায়গাগুলো নিয়ন্ত্রণ করছে আল-কায়েদা
বিষয়টি আরও স্পষ্টভাবে বুঝতে উপরে দেওয়া মালির ও বুরকিনা ফাসো সহ পশ্চিম আফ্রিকার এই সাম্প্রতিক ম্যাপটি দেখতে পারেন। মানচিত্রে স্পষ্টই দেখা যাচ্ছে যে, মালি ও বুরকিনা ফাসো ছাড়াও প্রতিবেশি দেশগুলোর সীমান্ত এলাকার উপর আল-কায়েদা নিজেদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছে। এর বাইরে সামান্য কিছু এলাকাই দখল করে রেখেছে সরকারি বাহিনী, আঞ্চলিক মিলিশিয়া ও আইএস।
এমন পরিস্থিতিতে অপ্নেক বিশ্লেষক বলছেন, আল-কায়েদার সবচাইতে সক্রিয় এবং শক্তিশালী শাখা হিসাবে আশ-শাবাবকে মনে করা হলেও, পশ্চিম আফ্রিকার ‘জেএনআইএম’ তাদের চেয়ে কোনো অংশে পিছিয়ে নেই। অনেকাংশে এটি বর্তমানে হারাকাতুশ শাবাবকেও ছাড়িয়ে গেছে। হারাকাতুশ শাবাব এখন পর্যন্ত কেনিয়ায় ও সোমালিয়ায় তাদের সামরিক অভিযান সীমাবদ্ধ রাখলেও জেএনআইএম’ এর টার্গেট পুরো পশ্চিম আফ্রিকা।
Comment