সোমালিয়ার মুরতাদ সরকারের থেকেও অধিক রাজস্ব পায় আশ-শাবাব
পূর্ব আফ্রিকা ভিত্তিক আল-কায়েদা শাখা হারাকাতুশ শাবাব আল-মুজাহিদিন প্রতিষ্ঠিত সোমালিয়ার ইসলামি ইমারত দেশটির জাতিসংঘ সমর্থিত মুরতাদ সরকারের চেয়েও অধিক রাজস্ব আদায় করছে। হিরাল ইনস্টিটিউটের বরাতে সম্প্রতি বিবিসির এক প্রতিবেদনে বিষয়টি উঠে আসে।
হিরাল ইনস্টিটিউটের রিপোর্টে বলা হয়েছে, হারাকাতুশ-শাবাব প্রতিমাসে অন্তত ১৫ মিলিয়ন ডলার রাজস্ব আদায় করে। যার অধিকাংশই আসে রাজধানী মোগাদিসু থেকে। শহরের কিছু ব্যবসায়ী সোমালীয় মুরতাদ সরকার ও মুজাহিদিন কর্তৃপক্ষ উভয়কেই রাজস্ব প্রদান করছেন।
আশ-শাবাব মুজাহিদিন একদশকেরও বেশি সময় ধরে জাতিসংঘ অরোপিত পুতুল সরকার ও ক্রুসেডার বাহিনীর বিরুদ্ধে ইসলাম প্রতিষ্ঠা ও দেশকে স্বাধীন করার জন্য লড়াই করে আসছেন। বর্তমানে তাঁরা সোমালিয়ার মধ্য ও দক্ষিণের বিস্তৃত অঞ্চল নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি পুতুল সরকারের কেন্দ্র রাজধানী মোগাদিসুতেও প্রভাব বিস্তার করেছেন।
হিরাল ইনস্টিটিউটের প্রতিবেদন অনুসারে, সোমালি পুতুল সরকারের বিপরীতে আল-শাবাবের অর্থ সংগ্রহের পরিমাণ প্রতি বছর ক্রমশ বাড়ছে, যদিও তাদের অপারেশন পরিচালনা ব্যয় মোটামুটি স্থিতিশীল।
হারাকাতুশ শাবাব সদস্য, সরকারি কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী ও অন্যান্য পেশাজীবীদের সাথে সরাসরি কথা বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, সোমালিয়ার প্রধান ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো মুজাহিদদের অর্থ প্রদান করে থাকে, তারা মাসিক ও বাৎসরিক ভিত্তিতে ডোনেশন প্রদান করেন। সোমালিয়ার ধনাঢ্য মুসলিমরাও মুজাহিদদের পরিচালিত ইসলামি ইমারতের বায়তুল-মালে যাকাত প্রদান করেন।
সোমালি পুতুল সরকারের রাজস্ব আয়ের প্রধান উৎস হলো মোগাদিসুর সমুদ্র বন্দর হতে কর উত্তোলন। এদিকে বন্দর কর্তৃপক্ষের তথ্যানুযায়ী, আল-শাবাব মুজাহিদীন সমুদ্রবন্দর থেকেও শুল্ক উত্তোলন করে থাকেন।
হিরাল ইনস্টিটিউটের মতে সোমালি সরকারের বহু কর্মকর্তা ও সামরিক অফিসাররাও নিরাপত্তার আশায় মুজাহিদদের অর্থ প্রদান করে থাকেন।
অপরদিকে সোমালিয়ার বিস্তীর্ণ গ্রামাঞ্চলে রাজস্ব আদায়ের একমাত্র বৈধ কর্তৃপক্ষ হচ্ছেন মুজাহিদীন প্রতিষ্ঠিত ইসলামী সরকার। তারা প্রাণিসম্পদ, উৎপাদিত ফসল ও পানির সম্পদ ব্যবহারের জন্য শরিয়াহ নির্ধারিত রাজস্ব (ওশর) সংগ্রহ করে থাকেন। মুজাহিদ সংগঠনের মতে, যারা নদী ও খালের পানি সেচের সাহায্যে কৃষিকার্য করেন কেবলমাত্র তারাই এর জন্য নির্দিষ্ট ফি পরিশোধ করেন।
সোমালিয়ার জনগণের মতে, মুজাহিদদের রাজস্ব প্রদান করলে দেশের সমগ্র জনগণ উপকৃত হতে পারে। মুজাহিদরা সংগৃহীত অর্থ যথাযথভাবে বন্টন ও সেবা খাতে ব্যয় করেন। মুরতাদ সরকারের বিপরীতে মুজাহিদরা সাধারণ মানুষকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা প্রদান করেন।
আফ্রিকার এই ইসলামী ইমারত ধনীদের থেকে যাকাত সংগ্রহ করে গরীবদের মাঝে বন্টন করে দেওয়ার ফটো-ভিডিও বিভিন্ন সময়ে মিডিয়ায় তুলে ধরেছেন।
মুজাহিদরা কীভাবে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের মধ্যে সৃষ্ট বিরোধ সফলভাবে মীমাংসা করেন এবং লেবু বা অন্যান্য রপ্তানি দ্রব্যের উৎপাদন সুষ্ঠু নিয়মাধীন করেন—তাও উল্লেখিত প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। কিছুদিন আগে দীর্ঘদিন যাবৎ যুদ্ধরত দুটি সম্প্রদায়ের মাঝে হারাকাতুশ শাবাব মুজাহিদগণের মধ্যস্থতায় শান্তি স্থাপিত হওয়ার বিষয়টিও বিশ্ববাসীর হৃদয় ছুঁয়েছে।
সর্বোপরি মুজাহিদগণ সোমালিয়ার সাধারণ মানুষের ভালোবাসা ও আস্থার প্রতীকে পরিণত হয়েছেন। তাঁদের অধীনে ইসলামী শাসনের ছায়াতলে থাকতে পারাকে নিজেদের জন্য সৌভাগ্য মনে করেন। সোমালিয়ার জনগণ ও হারাকাতুশ শাবাব মুজাহিদিন এক দেহে পরিণত হয়েছেন।
প্রতিবেদনকারীদের মতে, যেখানে সোমালিয়ার জনগণ থাকবে সেখানে আশ-শাবাব মুজাহিদিনের অর্থপ্রাপ্তির কোনো অসুবিধা হবে না।
প্রতিবেদনটির মাধ্যমে স্পষ্ট হয়ে যায় যে, আফগানিস্তানে তালেবানের প্রতিষ্ঠিত ইসলামী ইমারতের মতোই হারাকাতুশ শাবাব মুজাহিদিন ধারাবাহিক ও একনিষ্ঠভাবে সোমালিয়াতে ইসলামী শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন, এবং অচিরেই হয়তো তাঁদের নেতৃত্বে নতুন এক অধ্যায়ের সূচনা হতে যাচ্ছে।
Comment