আল কায়েদা কীভাবে পশ্চিম আফ্রিকায় প্রভাব বিস্তার করছে
পশ্চিমা বিশ্ব ও তাদের তাঁবেদার সরকারগুলোর দীর্ঘ প্রচেষ্টা ও বল প্রয়োগ সত্ত্বেও পশ্চিম আফ্রিকার দেশ মালি ও বুরকিনা ফাসোতে ক্রমাগত বিস্তার লাভ করছে আল কায়েদা। এত বাধা-বিপত্তি সত্ত্বেও বৈশ্বিক ভাবে শীর্ষ সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে তকমা পাওয়া আল কায়েদা আফ্রিকার এই অঞ্চলটিতে সাংগঠনিক ভাবে নিজেদের অবস্থানকে ক্রমেই দৃঢ় থেকে দৃঢ়তর করছে।
পশ্চিম আফ্রিকায় আল-কায়েদার সাংগঠনিক নেতৃত্ব দিচ্ছে কারা?
সাহসী, অভিজ্ঞ এবং দূরদৃষ্টি সম্পন্ন নেতৃত্ব না থাকলে একটি গেরিলা সংগঠন স্থায়ী সফলতা লাভ করতে পারে না। পত্রিকা খুললেই আপনি দেখতে পাবেন মালি ও বুরকিনা ফাসোতে আল কায়েদার কার্যক্রম ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই অঞ্চলে আল-কায়েদা প্রধান শাইখ আবু মুসাব আবদুল ওয়াদুদ রহমাতুল্লাহি আলাইহি শাহাদাত বরণ করার পর পশ্চিমা বিশ্ব ও তাদের তাঁবেদার সরকারগুলো ভেবেছিল, অঞ্চলটিতে আল কায়েদার কার্যক্রম হয়তো স্তিমিত হয়ে যাবে। কিন্তু বাস্তবে হয়েছে ঠিক তার উল্টো। পশ্চিম আফ্রিকায় আল কায়েদার নেতৃত্বে আসেন শাইখ আবু উবাইদা ইউসুফ আল-আননাবি হাফিযাহুল্লাহ। তাঁর দক্ষ নেতৃত্বে আল কায়েদা পূর্বের চেয়ে আরও গতিশীল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে সক্ষম হয়।
শাইখ আননাবি মালিতে তার প্রধান সহযোগী হিসেবে নিযুক্ত করেন শাইখ আইয়াদ আগ ঘালি হাফিযাহুল্লাহকে, যিনি তুয়ারেগ সম্প্রদায়ের একজন বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব এবং গুরুত্বপূর্ণ ও প্রবীণ রাজনীতিবিদ। শাইখ আইয়াদের সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসাবে নিযুক্ত করা হয় মোহাম্মদ কাউফা হাফিযাহুল্লাহকে, যিনি বৃহত্তর ফুলানি গোত্রের একজন বিশিষ্ট ধর্ম প্রচারক। তৃতীয় ডেপুটি নিযুক্ত করা হয় আল-কায়েদার বৃহত্তর সাহারা শাখার আমির শাইখ আবু আল-হুমামকে, যিনি একজন আলজেরিয়ান এবং প্রবীণ জিহাদি সামরিক কমান্ডার।
বাম থেকে শাইখ আইয়াদ আগ ঘালি ও শাইখ কাউফা (হাফিজাহুমুল্লাহ)
অপরদিকে, শাইখ জাফর ডিকো হাফিযাহুল্লাহকে বুরকিনা ফাসোতে জেএনআইএম এর প্রধান হিসাবে নিযুক্ত করা হয়, যিনি মোহাম্মদ কাউফা হাফিযাহুল্লাহর ঘনিষ্ঠ ভাজন। শাইখ জাফর ডিকো হাফিযাহুল্লাহ দীর্ঘদিন মালিতে যুদ্ধ করেছেন। এখানে তিনি শাইখ কাউফা ও আইয়াদ আগ ঘালি হাফিযাহুল্লাহর সংস্পর্শে থেকে সামরিক ও রাজনৈতিক পরিপক্বতা অর্জন করেন। তিনি বুরকিনা ফাসোতে পঙ্গপালের মতো ধেয়ে আসা আইএস ফেতনাকে সফলভাবে মোকাবিলা করার পাশাপাশি দেশটির দক্ষিণে আল-কায়েদার কার্যক্রম প্রসারিত করছেন।
ফ্রান্স-২৪ এর সাক্ষাতকারে শাইখ ইউসুফ আল-আননাবি (হাফি.)
কোন কৌশলে আগাচ্ছে আল কায়েদা?
শাইখ আবু উবাইদা ইউসুফ আল-আননাবি হাফিযাহুল্লাহ মালি ও বুর্কিনা ফাসো ছাড়াও বেনিন, টোগো, ঘানা এবং আইভরি কোস্টের মতো গিনি উপসাগরীয় দেশগুলিতেও আল কায়েদার কার্যক্রম প্রসারিত করেছেন। তিনি যে কৌশল অবলম্বন করেছেন তা হচ্ছে, স্থানীয় সম্প্রদায়গুলোর মধ্য থেকে নেতা ও যোদ্ধাদের নিয়োগের পাশাপাশি স্থানীয় আলেমদেরকে নিজেদের কাতারে শামিল করতে সক্ষম হয়েছেন। আর এসব উলামা ও কমান্ডারদের মাধ্যমেই পরিচালিত হচ্ছে সামরিক প্রশিক্ষণ থেকে শুরু করে অসংখ্য দ্বীনি মাদারেস। এভাবে স্থানীয় জনগণের আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন তারা।
জিহাদের কাজে স্থানীয় গ্রহণযোগ্য উলামাদের একত্রিত করা – এটি হচ্ছে আল কায়েদার জনসমর্থন অর্জনের এখন পর্যন্ত সবচেয়ে সফল কৌশল। আলেমগণ জনগণের সামনে শরিয়ার গুরুত্ব, আইএসের ফেতনা এবং জিহাদের ফজিলত তুলে ধরছেন। পাশাপাশি, আল-কায়েদার নিজেদের যোদ্ধাদের দ্বীনি ইলম অর্জনেও ভূমিকা রাখছেন এই আলেম সম্প্রদায়। বলা যায় যে, যদি আলেমদের প্রচেষ্টা একত্রিত করা সম্ভব না হতো, তাহলে আল-কায়েদা হয়তো এতো দ্রুত বুরকিনা ফাসোতে নিজেদের প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম হতো না।
রাজনৈতিক ভাবে এই অঞ্চলে সফলতা লাভ করার জন্য আল কায়েদা অপর যে গুরুত্বপূর্ণ কাজটি করেছে তা হচ্ছে, দীর্ঘ সময় ধরে চলে আসা এই অঞ্চলের গোত্রীয় দ্বন্দ্বগুলো নিরসন করা। সাহেলে পরস্পর যুদ্ধরত এই গোত্রগুলোর বিভেদ নিরসন করার মাধ্যমে এখানে নিরাপত্তা নিশ্চিত হওয়ার পাশাপাশি এই গোত্রগুলো এখন আল কায়েদার পক্ষে সম্মুখ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করছে। তারা এখন তাদের অস্ত্রগুলো নিজেদের দিকে তাক না করে সেক্যুলার ও আগ্রাসী বাহিনীর দিকে তাক করেছে।
আল কায়েদা নেতৃত্বের এই রাজনৈতিক কৌশলের ফলে আরব এবং তুয়ারেগ সম্প্রদায়ের বাইরেও ফুলানি সম্প্রদায় থেকে হাজার হাজার যোদ্ধা আল কায়েদার প্রতিরোধ বাহিনীতে যোগ দিয়েছে। ফলশ্রুতিতে সামরিক ভাবেও আল-কায়েদা বুরকিনা ফাসোর দক্ষিণে এবং প্রতিবেশী সেনেগাল এবং আইভরি কোস্টেও অভূতপূর্ব অগ্রগতি লাভ করেছে। এর আগে, ২০২০ সালের মাঝামাঝি যখন শাইখ আবু মুসাব আব্দুল ওয়াদুদ রহমাতুল্লাহি আলাইহি মালিতে শহিদ হন, তখন তিনি ডোগন সম্প্রদায়ের সাথেও সুসম্পর্ক তৈরি করতে সক্ষম হন।
শহিদ শাইখ আবু মুস’আব আব্দুল ওয়াদুদ (রহি.)
এই ধারাবাহিকতায়, পশ্চিম আফ্রিকায় আজ আল-কায়েদার সামরিক ও রাজনৈতিক কার্যক্রম আরও বিকশিত হচ্ছে। ফলশ্রুতিতে, মালির উত্তরে আলজেরিয়া, পশ্চিমে মৌরিতানিয়া ও পূর্বে নাইজার সীমান্তেও বিস্তৃত হয়েছে আল কায়েদার উপস্থিতি।
পশ্চিমা বিশ্ব ও তাদের তাঁবেদার সরকারগুলোর দীর্ঘ প্রচেষ্টা ও বল প্রয়োগ সত্ত্বেও পশ্চিম আফ্রিকার দেশ মালি ও বুরকিনা ফাসোতে ক্রমাগত বিস্তার লাভ করছে আল কায়েদা। এত বাধা-বিপত্তি সত্ত্বেও বৈশ্বিক ভাবে শীর্ষ সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে তকমা পাওয়া আল কায়েদা আফ্রিকার এই অঞ্চলটিতে সাংগঠনিক ভাবে নিজেদের অবস্থানকে ক্রমেই দৃঢ় থেকে দৃঢ়তর করছে।
পশ্চিম আফ্রিকায় আল-কায়েদার সাংগঠনিক নেতৃত্ব দিচ্ছে কারা?
সাহসী, অভিজ্ঞ এবং দূরদৃষ্টি সম্পন্ন নেতৃত্ব না থাকলে একটি গেরিলা সংগঠন স্থায়ী সফলতা লাভ করতে পারে না। পত্রিকা খুললেই আপনি দেখতে পাবেন মালি ও বুরকিনা ফাসোতে আল কায়েদার কার্যক্রম ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই অঞ্চলে আল-কায়েদা প্রধান শাইখ আবু মুসাব আবদুল ওয়াদুদ রহমাতুল্লাহি আলাইহি শাহাদাত বরণ করার পর পশ্চিমা বিশ্ব ও তাদের তাঁবেদার সরকারগুলো ভেবেছিল, অঞ্চলটিতে আল কায়েদার কার্যক্রম হয়তো স্তিমিত হয়ে যাবে। কিন্তু বাস্তবে হয়েছে ঠিক তার উল্টো। পশ্চিম আফ্রিকায় আল কায়েদার নেতৃত্বে আসেন শাইখ আবু উবাইদা ইউসুফ আল-আননাবি হাফিযাহুল্লাহ। তাঁর দক্ষ নেতৃত্বে আল কায়েদা পূর্বের চেয়ে আরও গতিশীল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে সক্ষম হয়।
শাইখ আননাবি মালিতে তার প্রধান সহযোগী হিসেবে নিযুক্ত করেন শাইখ আইয়াদ আগ ঘালি হাফিযাহুল্লাহকে, যিনি তুয়ারেগ সম্প্রদায়ের একজন বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব এবং গুরুত্বপূর্ণ ও প্রবীণ রাজনীতিবিদ। শাইখ আইয়াদের সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসাবে নিযুক্ত করা হয় মোহাম্মদ কাউফা হাফিযাহুল্লাহকে, যিনি বৃহত্তর ফুলানি গোত্রের একজন বিশিষ্ট ধর্ম প্রচারক। তৃতীয় ডেপুটি নিযুক্ত করা হয় আল-কায়েদার বৃহত্তর সাহারা শাখার আমির শাইখ আবু আল-হুমামকে, যিনি একজন আলজেরিয়ান এবং প্রবীণ জিহাদি সামরিক কমান্ডার।
বাম থেকে শাইখ আইয়াদ আগ ঘালি ও শাইখ কাউফা (হাফিজাহুমুল্লাহ)
অপরদিকে, শাইখ জাফর ডিকো হাফিযাহুল্লাহকে বুরকিনা ফাসোতে জেএনআইএম এর প্রধান হিসাবে নিযুক্ত করা হয়, যিনি মোহাম্মদ কাউফা হাফিযাহুল্লাহর ঘনিষ্ঠ ভাজন। শাইখ জাফর ডিকো হাফিযাহুল্লাহ দীর্ঘদিন মালিতে যুদ্ধ করেছেন। এখানে তিনি শাইখ কাউফা ও আইয়াদ আগ ঘালি হাফিযাহুল্লাহর সংস্পর্শে থেকে সামরিক ও রাজনৈতিক পরিপক্বতা অর্জন করেন। তিনি বুরকিনা ফাসোতে পঙ্গপালের মতো ধেয়ে আসা আইএস ফেতনাকে সফলভাবে মোকাবিলা করার পাশাপাশি দেশটির দক্ষিণে আল-কায়েদার কার্যক্রম প্রসারিত করছেন।
ফ্রান্স-২৪ এর সাক্ষাতকারে শাইখ ইউসুফ আল-আননাবি (হাফি.)
কোন কৌশলে আগাচ্ছে আল কায়েদা?
শাইখ আবু উবাইদা ইউসুফ আল-আননাবি হাফিযাহুল্লাহ মালি ও বুর্কিনা ফাসো ছাড়াও বেনিন, টোগো, ঘানা এবং আইভরি কোস্টের মতো গিনি উপসাগরীয় দেশগুলিতেও আল কায়েদার কার্যক্রম প্রসারিত করেছেন। তিনি যে কৌশল অবলম্বন করেছেন তা হচ্ছে, স্থানীয় সম্প্রদায়গুলোর মধ্য থেকে নেতা ও যোদ্ধাদের নিয়োগের পাশাপাশি স্থানীয় আলেমদেরকে নিজেদের কাতারে শামিল করতে সক্ষম হয়েছেন। আর এসব উলামা ও কমান্ডারদের মাধ্যমেই পরিচালিত হচ্ছে সামরিক প্রশিক্ষণ থেকে শুরু করে অসংখ্য দ্বীনি মাদারেস। এভাবে স্থানীয় জনগণের আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন তারা।
জিহাদের কাজে স্থানীয় গ্রহণযোগ্য উলামাদের একত্রিত করা – এটি হচ্ছে আল কায়েদার জনসমর্থন অর্জনের এখন পর্যন্ত সবচেয়ে সফল কৌশল। আলেমগণ জনগণের সামনে শরিয়ার গুরুত্ব, আইএসের ফেতনা এবং জিহাদের ফজিলত তুলে ধরছেন। পাশাপাশি, আল-কায়েদার নিজেদের যোদ্ধাদের দ্বীনি ইলম অর্জনেও ভূমিকা রাখছেন এই আলেম সম্প্রদায়। বলা যায় যে, যদি আলেমদের প্রচেষ্টা একত্রিত করা সম্ভব না হতো, তাহলে আল-কায়েদা হয়তো এতো দ্রুত বুরকিনা ফাসোতে নিজেদের প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম হতো না।
রাজনৈতিক ভাবে এই অঞ্চলে সফলতা লাভ করার জন্য আল কায়েদা অপর যে গুরুত্বপূর্ণ কাজটি করেছে তা হচ্ছে, দীর্ঘ সময় ধরে চলে আসা এই অঞ্চলের গোত্রীয় দ্বন্দ্বগুলো নিরসন করা। সাহেলে পরস্পর যুদ্ধরত এই গোত্রগুলোর বিভেদ নিরসন করার মাধ্যমে এখানে নিরাপত্তা নিশ্চিত হওয়ার পাশাপাশি এই গোত্রগুলো এখন আল কায়েদার পক্ষে সম্মুখ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করছে। তারা এখন তাদের অস্ত্রগুলো নিজেদের দিকে তাক না করে সেক্যুলার ও আগ্রাসী বাহিনীর দিকে তাক করেছে।
আল কায়েদা নেতৃত্বের এই রাজনৈতিক কৌশলের ফলে আরব এবং তুয়ারেগ সম্প্রদায়ের বাইরেও ফুলানি সম্প্রদায় থেকে হাজার হাজার যোদ্ধা আল কায়েদার প্রতিরোধ বাহিনীতে যোগ দিয়েছে। ফলশ্রুতিতে সামরিক ভাবেও আল-কায়েদা বুরকিনা ফাসোর দক্ষিণে এবং প্রতিবেশী সেনেগাল এবং আইভরি কোস্টেও অভূতপূর্ব অগ্রগতি লাভ করেছে। এর আগে, ২০২০ সালের মাঝামাঝি যখন শাইখ আবু মুসাব আব্দুল ওয়াদুদ রহমাতুল্লাহি আলাইহি মালিতে শহিদ হন, তখন তিনি ডোগন সম্প্রদায়ের সাথেও সুসম্পর্ক তৈরি করতে সক্ষম হন।
শহিদ শাইখ আবু মুস’আব আব্দুল ওয়াদুদ (রহি.)
এই ধারাবাহিকতায়, পশ্চিম আফ্রিকায় আজ আল-কায়েদার সামরিক ও রাজনৈতিক কার্যক্রম আরও বিকশিত হচ্ছে। ফলশ্রুতিতে, মালির উত্তরে আলজেরিয়া, পশ্চিমে মৌরিতানিয়া ও পূর্বে নাইজার সীমান্তেও বিস্তৃত হয়েছে আল কায়েদার উপস্থিতি।
Comment