![](https://alfirdaws.org/wp-content/uploads/2023/09/attac-on-nurairi-troops-1-696x479.jpg)
সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় ফ্রন্টে সাম্প্রতিক সময়ে প্রতিরোধ বাহিনী ও নুসাইরি শিয়া বাহিনীর মাঝে তীব্র লড়াই ছড়িয়ে পড়েছে। যার দরুণ প্রতিরোধ বাহিনী আনসারুত তাওহীদের ৪ দিনের অভিযানে নুসাইরি বাহিনীর অন্তত ৭৫ সৈন্য নিহত এবং আরও অনেক সৈন্য আহত হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রমতে, গত আগস্টের শেষ দশক থেকে শামের কসাই খ্যাত আসাদ সরকারের শিয়া মিলিশিয়ারা সিরিয়ার মুক্ত অঞ্চলগুলোতে অভিযানের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। বিশেষ করে ইদলিব সিটির একাধিক এলাকায় রাতের আঁধারে হামলা চালিয়ে অগ্রসর হওয়ার চেষ্টা করে তারা। এসময় মুক্ত অঞ্চলের উত্তরের জনবহুল এলাকায় বোমাবর্ষণ ও বিমান হামলা বাড়িয়ে দিয়েছে রাশিয়ান যুদ্ধবিমানগুলোও। ইদলিব ও আলেপ্পো সিটির মুক্ত অঞ্চলের চারপাশে দখলদার ও নুসাইরিদের এধরণের হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন অনেক বেসামরিক মুসলিম।
![](https://alfirdaws.org/wp-content/uploads/2023/09/Al-Malajah-300x206.jpg)
আল-মালাজাহ জেলার অবস্থান ও সামরিক পরিস্থিতি
অপরদিকে দখলদার রাশিয়া ও নুসাইরি শিয়া বাহিনীর বর্বরোচিত এসব হামলার প্রতিক্রিয়ায় আনসারুত তাওহীদের মুজাহিদগণও নুসাইরিদের বিরুদ্ধে পাল্টা আক্রমণ শুরু করেন। এই লক্ষ্যে মুজাহিদগণ ইদলিব সিটির দক্ষিণাঞ্চলীয় আল-মালাজাহ জেলায় নুসাইরিদের কৌশলগত সামরিক পয়েন্টগুলোকে আক্রমণের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেন।
আর মুজাহিদদের এই অভিযানের প্রথমটি চালানো হয় মালাজাহ জেলার উপকন্ঠে পাহাড়ে অবস্থিত নুসাইরিদের একটি সামরিক ঘাঁটি লক্ষ্য করে। অভিযানটি একটি টানেল খনন করে ঘাঁটির তলদেশ থেকে শক্তিশালী বোমা বিস্ফোরণের মাধ্যমে চালানো হয়েছিল। আনসারুত তাওহীদের মুজাহিদগণ সফল এই টানেল বিস্ফোরণের মাধ্যমে শত্রু বাহিনীর সামরিক ঘাঁটি সম্পূর্ণরূপে উড়িয়ে দিতে সক্ষম হন। এর ফলে কুখ্যাত নুসাইরি শিয়া মিলিশিয়াদের অনেক অফিসার সহ অন্তত ২০ সদস্য নিহত হয় এবং আরও অনেক সৈন্য আহত হয়।
এই ঘটনা সম্পর্কে বিস্তারিত জান্তে পড়ুন – “টানেল বিস্ফোরণে আসাদ বাহিনীর ঘাঁটি উড়িয়ে দিল আনসারুত তাওহীদ“
![](https://alfirdaws.org/wp-content/uploads/2023/09/tunnel-blast-1-300x169.jpg)
টানেল দিয়ে বিস্ফোরক বহন করছেন একজন মুজাহিদ
সফল এই টানেল বিস্ফোরণের পর এলাকাটিতে মুজাহিদগণ কয়েক ঘন্টার তীব্র লড়াইয়ে অবতীর্ণ হন। এতে শত্রু বাহিনীর আরও অনেক সংখ্যক সদস্য হতাহত হয় এবং অন্যরা পালিয়ে যায়। আসাদের নুসাইরি সেনাদের পলায়নের পর মুজাহিদগণ এই এলাকায় শত্রুর সামরিক পয়েন্টগুলির নিয়ন্ত্রণ নিতে সক্ষম হন।
এরপর আনসারুত তাওহীদের আর্টিলারি ও ক্ষেপণাস্ত্র ব্যাটালিয়নের মুজাহিদগণ ইদলিবের হাজারিন, মারাত হারমাহ এবং মারাত আস-সিনা সহ আশপাশের আরো ৩টি এলাকায় নুসাইরিদের অবস্থান ও সমাবেশস্থল লক্ষ্য করে তীব্র গোলাবর্ষণ করেন।
এতে এসব এলাকায় শত্রুদের অবস্থান নড়বড়ে হয়ে যায় এবং অনেক স্থান থেকে তারা পিছু হটে। এলাকাগুলোতে মুজাহিদদের ভারী আঘাতে শত্রু বাহিনীর অন্তত ২৫ সৈন্য নিহত হয় এবং এরও বেশি সংখ্যক সদস্য আহত হয়। সেই সাথে মুজাহিদগণ শত্রুর ১টি ট্যাঙ্ক, ১টি আর্টিলারি, ১টি গ্যাড লঞ্চার এবং ১টি ১৩০ ক্যালিবারের কামান ধ্বংস করতে সক্ষম হন।
![](https://alfirdaws.org/wp-content/uploads/2023/09/IMG_20230904_221639_793-300x170.jpg)
নুসাইরি বাহিনীর অবস্থানে আর্টিলারি নিক্ষেপ করছেন আনসারুত তাওহীদের একজন প্রতিরোধ যোদ্ধা
মুজাহিদদের কাছে এই অঞ্চলে শোচনীয় পরাজয় বরণ ও পলায়নের পর হারানো এলাকাগুলো পুনরুদ্ধার করতে আরও বেশি সংখ্যক সৈন্য নিয়ে এলাকাগুলোতে অভিযান চালানোর চেষ্টা করে নুসাইরি বাহিনী। এসময় আনসারুত তাওহীদের মুজাহিদগণ বীরত্বের সাথে নুসাইরিদের অনুপ্রবেশ চেষ্টা ব্যর্থ করে দেন। সেই সাথে মুজাহিদগণ অন্তত ১৫ নুসাইরি সেনাকে হত্যা এবং আরও অনেককে আহত করতে সক্ষম হন।
মুজাহিদগণ তাদের বীরত্বপূর্ণ এই অভিযানগুলো গত ২৯ আগস্ট থেকে ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পরিচালনা করেছেন। এসময়টাতে আনসারুত তাওহীদের স্নাইপার যোদ্ধারা তাদের দক্ষতা প্রদর্শন করেছেন। কেননা স্নাইপার মুজাহিদগণ গ্রাউন্ড অ্যাটাক পরিচালনাকারী মুজাহিদদের অবস্থানগুলোকে পেছন থেকে নিরাপদ রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। তারা শত্রুর গুরত্বপূর্ণ অবস্থানগুলিতে আঘাত করে তাদের মনোবল ভেঙে দিয়েছেন। মুজাহিদদের এধরণের স্নাইপার হামলায় নুসাইরি বাহিনীর আরও ১৫ সৈন্য নিহত হয়েছিল।
সার্বিক পরিস্থিতিতে এই বার্তা স্পষ্ট হয়েছে যে, সিরিয়া অঞ্চলে মুজাহিদগণ আবার ঘুরে দাঁড়াচ্ছেন। দীর্ঘ বিরতির পর তাঁরা আসাদ-রাশিয়া সহ শত্রুবাহিনীর যেকোন হামলা-পাল্টাহামলাকে চ্যালেঞ্জ জানানোর সক্ষমতা অর্জনের পর্যায়ে পৌঁছে গেছেন বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। আল্লাহু ‘আলাম।