শাহ ওয়া আরুস বাঁধ নির্মাণ প্রকল্পটি আফগানিস্তানে অন্যতম একটি মেগা প্রকল্প। কাবুল প্রদেশের শাকারদারা জেলায় এটির অবস্থান। শাকারদারা নদীতে নির্মিত এই বাঁধটির উচ্চতা ৭৫ মিটার ও প্রশস্ত ৬০ মিটার। এটির প্রকল্প ব্যয় ধার্য হয়েছিল প্রায় ৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০১০ সালে তৎকালীন সরকারের শাসনামলে এটির নির্মাণ কাজ আরম্ভ হয়। অতঃপর দীর্ঘ ঘাত প্রতিঘাত অতিক্রম করে অবশেষে ইমারতে ইসলামিয়া সরকারের শাসনামলে এটি নির্মাণের চূড়ান্ত পর্যায়ে উপনীত হয়েছে।
এই বহুমুখী বাঁধ নির্মাণ প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত প্রধান কয়েকটি কাজ হলোঃ
১) সংশ্লিষ্ট রাস্তা, ব্রীজ অবকাঠামো নির্মাণ;
২) আরসিসি নির্মিত বাঁধ নির্মাণ;
৩) পাওয়ার হাউজ ও জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাঠামো নির্মাণ;
৪) পানি নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা;
৫) পাওয়ার হাউজ ও বিদ্যুৎ উৎপাদনের সরঞ্জামাদি স্থাপন।
পাওয়ার হাউজ ও বিদ্যুৎ উৎপাদন সরঞ্জামাদি স্থাপনের কাজ শুরু করার মধ্য দিয়ে গত ৭ মার্চ সংশ্লিষ্ট বাঁধ নির্মাণ প্রকল্পের চূড়ান্ত পর্যায়ের কাজ আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়। প্রকল্পের সার্বিক তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব রয়েছে ইমারতে ইসলামিয়া প্রশাসনের পানি ও বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়। উদ্বোধন উপলক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাবৃন্দের উপস্থিতিতে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। উপস্থিত কর্মকর্তাবৃন্দের মধ্যে অন্যতম ছিলেন পানি সম্পদ মন্ত্রী মুজিবুর রহমান উমর আখুন্দজাদা, কৃষি, সেচ ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী মৌলভী সাদর আযাম উসমানী, অর্থ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ড. আব্দুল লতিফ নাযারী, শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রী মৌলভী কুদরাতুল্লাহ জামাল, শাকার দার জেলার তিন জেলা গভর্ণর এবং প্রযুক্তি বিদ্যায় পারদর্শী একাধিক কর্মী।
পাওয়ার হাউজের সরঞ্জামাদি স্থাপন হওয়ার মাধ্যমে অতি শীঘ্রই সেচ কার্যক্রম পরিচালনায় সংশ্লিষ্ট বাঁধটির ব্যবহার শুরু হবে। অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে পানি সম্পদ মন্ত্রী বলেন, বৃহৎ পরিসরে আরও বাঁধ নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা ইমারতে ইসলামিয়ার নিকট অগ্রাধিকারপূর্ণ একটি বিষয়। শাহ ওয়া আরুস ড্যামের সাথে নিকট ভবিষ্যতে আরও বাঁধ নির্মাণ প্রকল্প শুরু হবে বলেও তিনি প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
উল্লেখ্য যে, পাওয়ার হাউজ ও বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি ইতিমধ্যেই নির্মাণ সাইটে পৌঁছে গেছে। দ্রুত এগুলোর ইনস্টলেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
শাহ ওয়া আরুস বাঁধটির বার্ষিক পানি ধারণ ক্ষমতা ৩০ মিলিয়ন ঘনমিটার। এটির মাধ্যমে বার্ষিক প্রায় ৫ মিলিয়ন ঘনমিটার বিশুদ্ধ খাবার পানি সরবরাহ করা সম্ভব হবে। একই সাথে বাঁধটি পানি নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার মাধ্যমে প্রায় ২৭০০ হেক্টর জমিতে কৃষি আবাদ করা যাবে। এছাড়াও বাঁধের আটকানো পানির হাইড্রোলিক শক্তিকে ব্যবহার করে নির্মিতব্য ১.২ মেগাওয়াট ক্ষমতার জলবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব হবে ইনশাআল্লাহ।
তথ্যসূত্র:
1. Final Phase of Shah Aw Arus Dam Construction Commenced
– https://tinyurl.com/2knj94ne
Comment