ধ্বংসস্তূপের মধ্যেও গাজার অদম্য প্রতিরোধ; আগ্রাসী সেনাদের মৃত্যু

আল ফিরদাউসের সম্পাদক মুহতারাম ইবরাহীম হাসান হাফিযাহুল্লাহ’র কলাম:
গাজার রক্তাক্ত মাটিতে আজও জ্বলছে প্রতিরোধের অগ্নিশিখা। আধুনিক অস্ত্র, বিমান হামলা, নিষ্ঠুর অবরোধ—কোনো কিছুই গাজার সাহসী যোদ্ধাদের দমিয়ে রাখতে পারেনি। দিনের পর দিন মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েও তারা লড়ে চলেছে অসম এক যুদ্ধে, যেখানে ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়ানোই একমাত্র অস্ত্র। অন্যদিকে, দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর মধ্যে দেখা দিচ্ছে গভীর বিভ্রান্তি, ক্লান্তি ও লক্ষ্যহীনতা। এরই ধারাবাহিকতায় গাজা সিটিতে প্রতিরোধ যোদ্ধাদের গ্রেনেড (RPG) হামলায় এক ইসরায়েলি অফিসার নিহত হয়েছে। ট্যাংক ও ভারী অস্ত্রের চাদরে আড়াল থাকলেও প্রতিরোধ যোদ্ধাদের ক্ষুদ্র অথচ কৌশলী আক্রমণের মুখে দখলদার সেনারা কার্যত অরক্ষিত হয়ে পড়ছে।
২৭ বছর বয়সী ইসরায়েলি সেনা শহার নেটানেল বোজাগলি গাজা সিটির একটি স্থল অভিযানে অংশ নেওয়ার সময় হামাসের নিক্ষেপ করা RPG হামলায় গুরুতর আহত হয়। পরবর্তীতে হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।
দখলদার ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ইতোমধ্যেই স্বীকার করেছে যে, গাজায় তাদের সৈন্য মৃত্যুর সংখ্যা ৯১১ জনে পৌঁছেছে। যদিও হতাহতের প্রকৃত সংখ্যা এর চেয়ে বহুগুণ বেশি কিন্তু নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে ইহুদিবাদী দখলদার পক্ষ বরাবরের মত এ সংক্রান্ত তথ্য গোপন করে আসছে।
গাজার ভেতরে প্রবেশ করে ট্যাংক, যুদ্ধবিমান ও প্রযুক্তি-নির্ভর নজরদারির মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে সন্ত্রাসী ইসরায়েল। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে—শহরের প্রতিটি অলিগলি প্রতিরোধযোদ্ধাদের কৌশলী আঘাতের জন্য একেকটি যুদ্ধক্ষেত্র। ফলে দখলদার বাহিনী বারবার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, অথচ ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ শক্তি হারাচ্ছে না তাদের অবস্থানগত সুবিধা।
গাজা সিটিতে ইসরায়েলি অফিসারের নিহত হওয়ার ঘটনা ফিলিস্তিনি প্রতিরোধের কার্যকারিতা ও শক্তি আবারও প্রমাণ করল। একদিকে পশ্চিমা বিশ্বের সমর্থনপুষ্ট দখলদার রাষ্ট্র—অপরদিকে অবরুদ্ধ অথচ দৃঢ়চেতা জনগণের প্রতিরোধ। এই বৈপরীত্য প্রতিদিন আরও গভীর হচ্ছে, আর তারই ফলাফল দেখা যাচ্ছে ইসরায়েলি সেনাদের মৃত্যুর তালিকায়। গাজায় আগ্রাসন চালিয়ে যাওয়ার অর্থ এখন আর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা নয়, বরং আত্মঘাতী রাজনৈতিক ও সামরিক ব্যর্থতার দিকেই অগ্রসর হওয়া।
তথ্যসূত্র
1. Israeli soldier killed in Gaza City by anti-tank weapon: Media
– https://tinyurl.com/5yaederk
Comment