Announcement

Collapse
No announcement yet.

তালিবানের চীন সফর- কিছু কথা...

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • তালিবানের চীন সফর- কিছু কথা...

    তালিবানের চীন সফর- কিছু কথা...
    তা লি বা ন একটি কুফরি রাষ্ট্রের আমন্ত্রণে সে দেশে সফরে গিয়েছে। এটি একটি রাজনৈতিক সফর। এটাকে নাজায়েজ মনে করার কি কারণ খারেজি ও খারেজিমনাদের কাছে?

    এরা একটি ইস্যু আনছে যে চীন উইঘুরদের হত্যাকারী! নিঃসন্দেহে ওরা উইঘুরদের হত্যাকারী, তো হত্যাকারীদের দেশে যাওয়া, তার চোখে চোখ রেখে ইসলামি শাসনের কথা বলে আসা কেন নাজায়েজ?

    তাছাড়া এই বেকুবরা কি জানে উইঘুরদের প্রধান জি হাদি গোষ্ঠী তা লি বা ন দের অধীনে কাজ করে? তা লি বা ন দের হাতে বাইয়াতবদ্ধ? তা লি বা ন দের আশ্রয়ে থেকে চীনে হামলা চালায়? এগুলা তো খোদ উইঘুর জি হা দি দে র পক্ষ থেকেই প্রমাণ রয়েছে! আমার বুঝে আসে না তালিবের বিজয়ে এই নাদানদের মনকষ্টের কারণ কি?

  • #2
    আল্লাহ আমাদের সঠিক বুঝ দান করুন, এবং সকল প্রকার গোমড়াহি থেকে হেফাজত করুন।

    Comment


    • #3
      নিচের লেখাটি পড়ুন-

      আল কায়েদা সম্পর্কে আপনার জিজ্ঞাসার জবাব-১ | একিউ উইঘুরদের জন্য কি করছে?

      উত্তর-
      ভাই আতিকুর রহমান প্রশ্ন করেছেন “একিউ উইঘুরদের জন্য কি করছে?”। উত্তরটি আমি সবার বুঝার সুবিধার্থে ৪ টি পয়েন্টে একটু বিস্তারিত লিখছি। আশা করি সহজেই বুঝে আসবে ইনশা আল্লাহ।

      পয়েন্ট-১
      প্রথমেই আমাদের জানতে হবে যে উইঘুর মুসলিমদের জন্য একটি সংগঠন কাজ করছে। আর সেটি হল তুর্কিস্তান ইসলামিক পার্টি। উল্লেখ্য তুর্কিস্তান ইসলামিক পার্টি একাধিক শাখায় কাজ করে, পূর্ব তুর্কিস্তান (চীনা দখলকৃত জিনজিয়ান) আফগানিস্তান ও সিরিয়াতে।
      এই জামাআতের আমীর শাইখ আবদুল হক তুরকিস্তানি এক সাক্ষাৎকারে “শামে আলহিযবুল ইসলামী আত-তুর্কিস্তানী’র একটি শাখা গঠন করা হয়েছে৷ তো এই শাখার কাজ কি?” প্রশ্নের উত্তরে বলেন-
      “আল্লাহ্ তাআলার দয়া ও অনুগ্রহে আমরা শামের ভূমিতে একটি শাখা গঠন করতে সক্ষম হয়েছি৷ আমরা কিছুকাল যাবৎ জিহাদের পরিধি প্রশস্ত করার ও খোরাসানের বাহিরে আলহিযবুল ইসলামী আত-তুর্কিস্তানী’র কিছু নতুন শাখা খোলার চিন্তা-ভাবনা করছিলাম এবং আমরা চেষ্টা-তদবিরও চালিয়ে গিয়েছিলাম৷ তারপর আল্লাহ্ তাআলা আমাদেরকে শামের জিহাদ দান করে আমাদের প্রতি ইহসান করলেন৷”

      এই দলের অফিসিয়াল আরবি ম্যাগাজিনে অপর আরেকটি সাক্ষাৎকারে জামাআতের নায়েবে আমীর শাইখ আব্দুল্লাহ মানসুর “কেউ কেউ বলে থাকে যে, আপনারা বিশ বৎসর যাবৎ তুর্কিস্তানের জন্য কিছুই করেননি, সেখানে কোন ফ্রন্ট খুলেননি বরং আফগানিস্তান ও শাম নিয়েই আপনারা ব্যতিব্যস্ত৷ তাদের এ বক্তব্য সম্বন্ধে আপনাদের অভিমত কি?” প্রশ্নের উত্তরে বলেন-
      “দ্বিতীয়তঃ আমরা কি কাজ শুরু করার ক্ষেত্রে কোনরকম অবহেলা করেছি, নাকি কারণ বশতঃ ও পরিস্থিতির শিকার হয়ে আমরা করতে পারিনি?”
      “বিশ বছরের বাঁকে বাঁকে আল হিজবুল ইসলামী আত তুর্কিস্তানী তুর্কিস্তান ও চীনের অভ্যন্তরেও বেশ কয়েকটি সামরিক অপারেশন চালিয়েছে৷ মিডিয়া যার সাক্ষী৷ চাই আমাদের মিডিয়া হোক বা শত্রুদের”৷
      “সকলেরই জেনে নেওয়া উচিত যে, আল হিজবুল ইসলামী আত তুর্কিস্তানীর যে কোন সদস্য জীবিত থাকা মাত্রই তা প্রমাণ বহন করে যে, চীনের সাথে আমাদের লড়াই অব্যাহত রয়েছে”৷
      “আল হিজবুল ইসলামী আত তুর্কিস্তানী সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে থাকে তুর্কিস্তানের ভেতর কাজ শুরু করার জন্য”৷

      সুতরাং উইঘুর মুজাহিদদের দলটি কোথায় কোথায় কাজ করে, সে সম্পর্কে আমরা অফিসিয়াল সুত্র থেকে প্রমাণ পেশ করলাম।

      পয়েন্ট-২
      মৌলিকভাবে মূল তুর্কিস্তান ইসলামিক পার্টির শাখাটি তালিবান মুজাহিদদের অধিনস্ত। তালিবানদের হাতে তাদের বাইয়াত রয়েছে। যার স্বীকারোক্তি দিয়েছেন এই পার্টির উচ্চপদস্ত শাইখগণ।
      এই জামাআতের আমীর শাইখ আবদুল হক তুরকিস্তানি এক সাক্ষাৎকারে বলেন-
      “প্রথমদিকে ইমারতে ইসলামী আফগানিস্তানের অধিনে আমরা ও তাঁরা (উজবেকিস্তান ইসলামিক মুভমেন্ট) কাছাকাছিই অবস্থান করতাম৷ অধিকাংশ সময় শাইখ হাসান মাখদুম রহিমাহুল্লাহ তাঁদের মধ্যকার অমিল ও ঝগড়া-বিবাদে মিটমাট করে দিতেন৷”

      একই সাক্ষাৎকারের আরেক স্থানে বলেন-
      “সম্প্রতি আলহারকাতুল ইসলামিয়্যাহ আলউযবিকিয়্যাহ (উজবেকিস্তান ইসলামিক মুভমেন্ট) ইমারতে ইসলাম’র বাইআত ভঙ্গ করেছে এবং তাঁদের বিরুদ্ধেই লড়াইয়ের পথ বেছে নিয়েছে৷ ইমারতে ইসলামী তাদের নিকট ওলামায়ে কেরামদের পাঠিয়েছিলেন; কিন্তু তাঁদের এ প্রচেষ্টা কোনই ফল বয়ে আনতে পারেনি৷ বরং তারা আরো অগ্রসর হয়ে তাদের মিডিয়ায় ইমারতে ইসলামী’র আমীরদেরকে কাফের পর্যন্ত আখ্যা দিয়ে বেড়াচ্ছে৷ পরিশেষে উম্মাহ এই আলহারকাতুল ইসলামিয়্যাহ আলউযবিকিয়্যাহ’র প্রতি যে বুকভরা আশা রেখেছিল তাদের আমীরদের ভুল সিদ্ধান্তের দরুণ তা ছিন্নভিন্ন ও নিঃশেষ হয়ে গিয়েছে৷”

      সুতরাং বুঝা যাচ্ছে উইঘুর মুজাহিদদের দলটি ইমারতে ইসলামী আফগানিস্তানের হাতে বাইয়াতবদ্ধ। আর আমরা এটাও জানি যে, একিউও তালিবান মুজাহিদদের হাতে বাইয়াতবদ্ধ।

      পয়েন্ট-৩
      যদিও তুর্কিস্তান ইসলামিক পার্টি তালিবানদের হাতে বাইয়াতবদ্ধ। কিন্তু ইতিহাস ও বিভিন্ন সুত্র এটি প্রমাণ করে যে, এই দলটির নেতৃত্ব ও সদস্যরা (সম্ভবত তালিবানদের অনুমতি ও নির্দেশে) একিউর কাছ থেকে সামরিক প্রশিক্ষণ, শিক্ষাগত প্রশিক্ষণ ও আর্থিকসহ নানা ধরণের সহযোগিতা নিয়েছেন। হয়তোবা বর্তমানেও তা চালু আছে।
      শাইখ আবদুল হক তুরকিস্তানি তার আত্মজীবনীতে বলেন-
      “আমি কিছু সংখ্যক আরব ভাইদের সাথে ক্যাম্পে গেলাম৷ তন্মধ্যে ক্যাম্পের শরয়ী বিভাগের জিম্মাদার শাইখ আবু আব্দুল্লাহ মুহাজিরও ছিলেন৷ আমাদের অভ্যর্থনায় ক্যাম্পের আমীর ছিলেন৷ সেখানে আমার ভিত্তি কোর্স শুরু হয়ে যায়৷ আমি লক্ষ্য করি যে, ক্যাম্পের ভাইদের মধ্যে যারা জামাতে পিছে পড়ে যায় তাদেরকে শাস্তি প্রদান করা হয়৷ একবার আমার তাকবিরে তাহরিমা ছুটে গেলে জিম্মাদার ভাই আমাকে ‘যাকীবীক পাহাড়ে’ আরোহণ করিয়ে শাস্তি প্রদান করেন৷ নামাযের জামাতের প্রতি তাদের গুরুত্বের কারণে এই শাস্তিতে আমি আনন্দিত হই৷”

      একই আত্মজীবনীর আরেক স্থানে বলেন-
      “আমি যখন কাবুলে পৌছলাম তখন আবু মুহাম্মাদ আমাকে ভাই বিলাল রহঃ এর মত নতুন ভাইদের মুখপাত্র স্বরুপ ক্যাম্পের শরয়ী বিভাগে যেতে নির্দেশ দিলেন৷ ক্যাম্পের জিম্মাদার ভাইয়েরা আমাকে অভ্যর্থনা জানালেন এবং সে বিভাগে আমি চার মাস পর্যন্ত বাকি থাকি৷ এ সময়ে আমি ক্যাম্পের শরয়ী বিভাগের জিম্মাদার শাইখ আবু আব্দুল্লাহ মুহাজিরের নিকট জিহাদের মাসআলা-মাসায়েল ও আহলুস্ সুন্নাহ্ ওয়াল জামাত অনুযায়ী ঈমানের মূলনীতিগুলো অধ্যায়ন করি এবং সামরিক জ্ঞানের মধ্য থেকে ট্যাংক সম্পর্কিত কোর্সটি পূনরায় সম্পন্ন করি৷”

      উল্লেখ্য এই আত্মজীবনী লেখার সময় শাইখ সম্ভবত ইরানের কারাগারে বন্দী ছিলেন, তবে অনুবাদক যখন অনুবাদ করছেন, তার অন্তত দেড় বছর আগেই শাইখ সিরিয়ায় মার্কিন বিমান হামলায় শাহাদাত বরণ করেছেন। সে সময় শাইখ সিরিয়ার একিউ শাখা জাবহাতুন নুসরাহ’র শরিয়াহ বোর্ডের একজন সদস্য ছিলেন।

      শাইখ একই জীবনীর আরেক স্থানে বলেন-
      “২০০১ সালের সেপ্টেম্বর মাসের চার তারিখে ভাইয়েরা আমাকে তোড়াবোড়া পর্বতের ঘাঁটিতে সেখানকার ভাইদের মনোভাব চাঙ্গা করে রাখার জন্য প্রেরণ করতে চাইলেন৷
      ... ... ...
      সেপ্টেম্বর মাসের আট তারিখে আমরা কুন্দুয এয়ারপোর্ট থেকে বিমানে চড়ে কাবুলে পৌছি এবং সেদিনই আমি আবু মুহাম্মাদ (হাসান মাখদুম রহঃ) -এর সাথে সাক্ষাৎ করি ও তাঁকে বলি, আমি তোড়াবোড়ার ক্যাম্প সাজানোর জন্য সেখানে যেতে এসেছি৷ তিনি বললেন, সেখানে আমিও যেতে চেয়েছিলাম৷ তাহলে তুমি বিলম্ব কর, আগামীকাল আমরা একসাথে যাবো৷
      ... ... ...
      দুই দিন পর আমরা ১১ সেপ্টেম্বরের আনন্দদায়ক ও প্রফুল্লকর সংবাদ শুনে তাকবীর দিয়ে উঠি এবং আমাদের আত্মবিশ্বাস অনেক ওপরে উন্নীত হয়”৷
      উল্লেখ্য এখানে যে সময়ের কথা বলা হচ্ছে, সে সময় তোরাবোরা ঘাঁটিটি শাইখ উসামা’র সরাসরি তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হচ্ছিল। এটাই সেই বিখ্যাত তোরাবোরা ঘাঁটি, যেখানে আমেরিকা একিউর ভাইদের ঘিরে ফেলেছিল। কিন্তু মুজাহিদগণ তাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে আল্লাহর রহমে নিরাপদে বের হয়ে পাকিস্তান ও অন্যান্য অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়তে সক্ষম হয়েছিলেন।


      পয়েন্ট-৪
      উপরের তথ্যগুলোর পাশাপাশি উইকিপিডিয়ার তথ্যনুসারে আমরা আরও কিছু তথ্য পাই-
      শাইখ আব্দুল হক হাফিজাহুল্লাহকে আল-কায়দার কেন্দ্রীয় সার্কেলে একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তাঁকে পাকিস্তানের উপজাতী এলাকায় তালেবানের বিভিন্ন গ্রুপের মধ্যে মধ্যস্থতা ও গুরুত্বপুর্ণ সামরিক বিষয়াদিতে মজলিসে শুরার প্রতিনিধিত্ব করার জন্য পাকিস্তানের দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তানে পাঠানো হয়। এ সময় তিনি আল-কায়দা অন্যতম কমান্ডার, দ্বীনের দাঈ শাইখ আবু ইয়াহ্*ইয়া আল-লিবী রহিমাহুল্লাহ, তেহরিকে তালেবান পাকিস্তানের (ttp) আমীর শাইখ বায়তুল্লাহ মেহসুদ রহিমাহুল্লাহ এবং তালেবানের আরেক গুরুত্বপুর্ণ নেতা হাক্কানি নেটওয়ার্কের প্রধান শাইখ সিরাজুদ্দীন হাক্কানি হাফিজাহুল্লাহর সাথে দেখা করেন।
      আল-কায়দার আরব উপদ্বীপ শাখার (aqap) আল মাসরা রিসালা’র ৩৪তম সংখ্যায় তাঁর ব্যাপারে একটি লেখা ছাপা হয়। tip এর একটি ভিডিওতে শাইখ আবু মুহাম্মাদ আল-মাক্বদিসি, শাইখ আবু কুদামা, হাকিমুল উম্মাহ শাইখ ড. আইমান আয-যাওয়াহিরী, শাইখ হানি-আস-সিবাঈ, শাইখ আব্দুল্লাহ আল-মুহাইসিনি, শাইখ নাসির বিন আলী আল-আনসি’র সাথে শাইখ আব্দুল হক হাফিজাহুল্লাহকেও দেখা যায়।

      এই সকল তথ্য প্রমাণ করে একিউ’র সাথে উইঘুর মুজাহিদদের ভালো রকম সম্পর্ক রয়েছে। এবং একিউ বরাবর-ই তাদেরকে প্রশিক্ষণসহ সব রকম সহায়তা দিয়ে এসেছেন। বিশেষ করে আরও তিনটি পয়েন্ট আমি উল্লেখ করতে চাই-
      ১- দীর্ঘদিন তুর্কিস্তান ইসলামিক পার্টির প্রকাশনাগুলো রিলিজ হত একিউর অন্যতম গ্লোবাল মিডিয়া হাউজ গ্লোবাল ইসলামিক মিডিয়া ফ্রন্টের মাধ্যমে। যা শামে একিউ থেকে জাওলানির বের হয়ে যাওয়ার কিছু দিন পর সম্ভবত হাইয়াত তাহরির আশ শামের চাপে অথবা অন্য কোন কারণে উইঘুর ভাইরা-ই বন্ধ করতে বাধ্য হোন।
      ২- তুর্কিস্তান ইসলামিক পার্টির সিরিয়ান শাখাটি দীর্ঘদিন সিরিয়াতে একিউর শাখা জাবহাতুন নুসরাহ’র সরাসরি আশ্রয়ে ও তাদের সাথে পরিকল্পনা করে সামরিক অপারেশনসহ অন্যান্য কাজ করে আসছিলেন। যা শামের বাইয়াহ ভঙ্গের বেদনাদায়ক ঘটনার পর ভিন্ন দিকে মোড় নিয়েছে। তাহরির অনেকটা চাপ প্রয়োগ করে তাদেরকে নিজেদের কন্ট্রোলে নেওয়ার চেষ্টা করেছে। অপরদিকে সিরিয়াতে তাদের অসংখ্য মুহাজির পরিবার রয়েছে, ফলে সঙ্গত কারণেই তারা সর্বাত্মক বিবাদ এড়িয়ে যেতে সচেষ্ট আছেন।
      ৩- কেন্দ্রীয় একিউর শাইখদের অসংখ্য কিতাবাদি , বয়ান ও বিভিন্ন প্রকাশনা উনারা অফিসিয়াল ও আনঅফিসিয়াল উইঘুর ভাষায় প্রকাশ করেছেন, যা তাদেরকে উইঘুর মুসলিম ও মুজাহিদদেরকে একিউর আরও কাছে এনেছে।

      তো সম্মানিত ভাই! উপরোক্ত আলোচনা থেকে আশা করি- দখলদার চীনের হাতে মারাত্মক জুলুমের শিকার উইঘুর মুসলিমদের পাশে একিউ নিজেদের সাধ্যের সবটুকু দিয়ে দাঁড়িয়েছে। তাদেরকে প্রশিক্ষিত করতে সচেষ্ট ছিল। এতো দিনে হয়তোবা তারা নিজেরাই নিজেদের পায়ে অনেকটা দাড়িয়ে গেছে। যদিও খোদ উনাদের মূল ভূমিতে অবস্থান এখনো শক্তিশালী করতে পারেন নি। ইনশা আল্লাহ অচিরেই নাস্তিক এই চাইনিজদের অপরাধের শাস্তি উনারা বুঝিয়ে দিবেন বলেই আশা করি ইনশা আল্লাহ।

      সুত্র-
      ১- আল-লিকাউল খাস মাআশ শাইখ আবদুল হক, ২০১৬ সালের জুনে একটি ভিডিও সাক্ষাৎকারটি “ খিলাফাহ প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে উইঘুর মুসলমানরা!” নামে বাংলায় প্রকাশিত হয়েছে। অনুবাদ-মাওলানা হামিদুর রহমান, প্রকাশক- উসামা মিডিয়া
      ২- হিওয়ার মা-আশ শাইখ আব্দুল্লাহ মানসুর, মাজাল্লাহ তুর্কিস্তান-আল-ইসলামিয়া, মুহাররাম ১৪৪০, ২৪তম সংখ্যা, আল হিজবুল ইসলামি আত-তুরকিস্তানী (তুর্কিস্তান ইসলামিক পার্টি) এর ম্যাগাজিন। এটি উসামা মিডিয়া থেকে ‘উইঘুরদের আর্তনাদ’ পুস্তিকা হিসেবে প্রকাশিত হয়েছে।
      ৩- তারজামাতুশ শাইখ আব্দুল্লাহ আত-তুরকিস্তানি, সিরিয়া থেকে পরিচালিত প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান নুখবাতুল ফিকর রবিউল আওয়াল ১৪৩৮ হিজরী — ডিসেম্বর ২০১৬ ঈসায়ীতে আত্মজীবনীটি প্রথম প্রকাশ করে। উসামা মিডিয়া থেকে ‘পূর্ব তুর্কিস্তান থেকে খোরাসান’ নামে এটির বাংলা প্রকাশিত হয়েছে।
      ৪- উইকিপিডিয়া

      নোট- হয়তো অনেক সম্মানিত ভাই এই সূত্রগুলোর মূল সুত্র ও বাংলা অনুবাদ চাইবেন, এটি আসলে এই মুহূর্তে আমার দ্বারা খুঁজে বের করে দেওয়া বেশ কঠিন। তবে মূল সুত্রগুলো আপাতত জিহাদলজি সাইট ও বাংলাগুলো গাজওয়া সাইট এ পাবেন ইনশা আল্লাহ। অনুগ্রহ করে খুঁজে নিলে ভালো হবে।

      Comment


      • #4
        এটি বেশ আগের একটি লেখা, আশা করি আপনি উত্তর পেয়ে গেছেন!

        Comment


        • #5
          জাযাকুমুল্লাহু খইরন মুহতারাম ভাই। আল্লাহ ﷻ আমাদেরকে বোঝার তাউফিক দিন এবং বিভ্রান্তি থেকে হিফাজতে রাখুন।
          সাহসিকতা আয়ু কমায় না আর কাপুরুষতা আয়ু বৃদ্ধি করে না। জিহাদের মাধ্যমেই উম্মাহ জীবন লাভ করে।

          Comment


          • #6
            তালিবান কি ইমরান খানদের মত উইঘুর বা কাশ্মীরি মুসলিমদের সাথে চলা জুলুম সমর্থন করেছে? এরকম বক্তব্যের প্রমাণ পাওয়া যায় কি?
            তালিবান কি শরীয়াহ আইন ভিন্ন অন্য আইনে শাসন করা শুরু করে দিয়েছে?
            তালিবান কি মুসলিমদের বিরুদ্ধে কুফফারকে কথা ও অস্ত্রের মাধ্যমে সহায়তা করা শুরু করে দিয়েছে?

            Comment


            • #7
              রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম স্বপ্নে দেখলেন, তিনি বাইতুল্লাহয় উমরা পালন করছেন, তাওয়াফ করছেন। তখন তিনি ও তাঁর চৌদ্দশ' বা পনেরশ' সাহাবী মক্কার পথে রওনা হলেন। ষষ্ঠ হিজরীর জিলক্বদ মাসে তাঁরা যাত্রা শুরু করলেন। কুরাইশরা যখন শুনল, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাওয়াফ করতে আসছেন, তাদের উপস্থিতিতে মুসলমানরা মক্কায় প্রবেশ করবে, তখন তারা দারুণ ক্ষিপ্ত হল। বলল আমাদের উপস্থিতিতে কিছুতেই তারা মক্কায় প্রবেশ করতে পারবে না। এ পরিস্থিতিতে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হুদায়বিয়ার যে অংশ হারামের অন্তর্ভূক্ত নয়, সেখানে অবস্থান নিলেন। নামাযের সময় হলে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হারামের অংশে প্রবেশ করে নামায আদায় করতেন। তারপর পূর্বের স্থানে ফিরে আসতেন। হারামে নামায আদায়ের ফযীলত অর্জনের জন্য রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তা করেছিলেন।

              রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্সাম কাফেরদের প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হওয়ার কথা শুনে বললেন, “হায় কুরাইশের ধ্বংস! যুদ্ধই তাদের তিলে তিলে শেষ করে দিল! তাদের কী হত, যদি আরবদের জন্য আমার পথ উন্মুক্ত করে দিত? তাদের কী ক্ষতি হত, যদি আবরদের জন্য আমাকে ছেড়ে দিত? যদি তারা আমার উপর বিজরী হয়, তবে তারা তাদের ইচ্ছা পূরণ করতে পারবে । আর যদি আমি বিজয়ী হই, তবে তারা ইসলাম গ্রহণে বাধ্য হবে । আর যদি তারা আমার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে, তবে তাদের তা করার শক্তি আছে। কিন্তু কুরাইশরা কী ধারণা করে? যিনি আমাকে সত্য সহ প্রেরণ করেছেন, তাঁর শপথ করে বলছি, আল্লাহ আমাকে বিজয়ী করা পর্যন্ত আমি এই ধর্মের প্রচার করতেই থাকব কিংবা এ পথেই আমি নিঃশেষ হয়ে যাব।'

              হুদায়বিয়ায় পৌঁছলে রাসূলের উট বসে পড়ল। প্রহার করার পরও তা উঠল না। সবাই বলাবলি করতে লাগল, “কাছওয়া (রাসূলের উষ্ট্রীর নাম) অবাধ্য হয়ে গেছে। কাছওয়া অবাধ্য হয়ে গেছে।' রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, 'কাছওয়া অবাধ্য হয়নি। এটা তার চরিত্রও নয়। তবে আবরাহার হাতিকে যিনি আটকিয়েছিলেন, তিনিই তাকে আটকিয়েছেন।' তারপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, আজ কুরাইশরা যে প্রস্তাব নিয়ে আসবে, আমি তা-ই মেনে নেব। কুরাইশরা একের পর এক লোক পাঠাতে লাগল। তারা উরওয়া ইবনে মাসউদকে পাঠাল। উরওয়া ছকীফ গোত্রের প্রভাবশালী ব্যক্তি। তায়েফের সম্পদশালী ও সরদারদের অন্যতম । সে ছিল অন্ধ। সে এসে বলল, “মুহাম্মদ! তুমি কি আরবের বিভিন্ন গোত্রের লোকদের একত্রিত করে নিজের গোত্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে এসেছ, সে হাত বাড়িয়ে রাসূলের দাড়ি মোবারক ধরতে চাচ্ছিল। সে যখনই দাড়ি ধরার জন্য হাত বাড়াত, তখনই মুগীরা ইবনে শো'বা (রাঃ) তরবারীর বাট দ্বারা তা প্রতিহত করতেন। মুগীরা (রাঃ)ও ছাকীফ গোত্রেরই লোক ছিলেন।

              অবশেষে তিনি বললেন, তুমি রাসূলুল্লাহ সান্রাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দাড়ি স্পর্শ কর না। উরওয়া বলল, কে এই লোকটি? উপস্থিত সাহাবীগণ বললেন, মুগীরা । তখন উরওয়া বলল, হে লজ্জায় কাতর ব্যক্তি! তুমি কি তোমার লজ্জা বিষয়টি ঢেকে রেখেছ? জাহেলী যুগে মুগীরা (রাঃ) লুষ্ঠন করতেন। অত্যন্ত শক্তিধর ছিলেন। একদা তিনি কতিপয় লোককে হত্যা করে ফেললে উরওয়া ইবনে মাসউদ তাদের রক্তপণ আদায় করে দিয়েছিল এবং বিষয়টি গোপন রেখেছিল উরওয়া সে দিকেই ইঙ্গিত করেছিল ।

              মক্কার লোকেরা একের পর এক লোক পাঠাতে লাগল। অবশেষে সুহাইল ইবনে আমরকে পাঠাল। তার সাথেই সন্ধিচুক্তির বিষয় চূড়ান্ত হয় এবং চারটি শর্তে সন্ধিচুক্তি লিপিবদ্ধ হয়-
              ১. মুসলমানদের কেউ ইসলাম ত্যাগ করে কুরাইশদের নিকট ফিরে এলে কুরাইশরা তাকে গ্রহণ করে নিবে। কাফেরদের কেউ মুসলমান হয়ে রাসূলের নিকট এলে রাসূল তাকে গ্রহণ করবেন না।
              ২. এ সন্ধিচুক্তির বলে যে কোন গোত্র রাসূলের সঙ্গে যোগ দিতে চাইলে যোগ দিতে পারবে । আর কুরাইশদের সাথে শামিল হতে চাইলে শামিল হতে পারবে । এ ধারা মতে খুজা'আ গোত্র রাসূলের সাথে শামিল হল আর বনু বকর গোত্র কুরাইশদের সাথে শামিল হল।
              ৩. দশ বৎসরের জন্য পরস্পরের মধ্যে যুদ্ধ বিরতি ঘোষণা করা হল।
              ৪. এ বৎসর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও তাঁর সঙ্গীগণ মদীনায় ফিরে যাবেন। উমরা আদায় করবেন না। আগামী বৎসর তরবারী কোষবদ্ধ করে আসবেন এবং উমরা পালন করবেন।

              এ ধরনের শর্তের কথা শুনে সাহাবীগণ অত্যন্ত ব্যথিত হলেন। ওমর (রাঃ) ধারণা করলেন যে, এতে মুসলমানদের লাঞ্ছনা ও ক্ষতি রয়েছে। তাই তিনি অত্যন্ত ক্রোধান্বিত হয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিকট এলেন। বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমরা কি সত্যের উপর প্রতিষ্ঠিত নই? রাসূল বললেন, হ্যাঁ, আমরা সত্যের উপর প্রতিষ্ঠিত। ওমর (রাঃ) বললেন, তারা কি মিথ্যার উপর প্রতিষ্ঠিত নয়? রাসূল বললেন, হ্যাঁ, তারা মিথ্যার উপর প্রতিষ্ঠিত। এবার ওমর পোঃ) বললেন, তাহলে আমরা কেন আমাদের ধর্মে লাঞ্ছনার বিষয় অনুপ্রবেশের সুযোগ দিব? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, নিশ্চয় তিনি আমার রব । তিনি আমার ক্ষতি করবেন না। নিশ্চয় তিনি আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন । আমি কিছুতেই তাঁর নির্দেশ অমান্য করব না।

              এরপর ওমর (রাঃ) আবূ বকর রোঃ)-এর নিকট গেলেন। বললেন, আমরা কি সত্যের উপর প্রতিষ্ঠিত নই? আবু বকর (রাঃ) বললেন, হ্যাঁ, আমরা সত্যের উপর প্রতিষ্ঠিত। ওমর (রাঃ) বললেন, তারা কি মিথ্যার উপর

              প্রতিষ্ঠিত নয়? আবু বকর (রাঃ) বললেন, হ্যাঁ, তারা মিথ্যার উপর প্রতিষ্ঠিত। তখন ওমর (রাঃ) বললেন, তাহলে কেন আমরা আমাদের ধর্মে লাঞ্ছনার বিষয় অনুপ্রবেশের সুযোগ দিব?

              আবু বকর (রাঃ) বললেন, “নিশ্চয় তিনি সত্যের উপর রয়েছেন। সুতরাং তাঁর সিদ্ধান্ত মেনে নিন। নিশ্চয় তিনি সত্যের উপর রয়েছেন। সুতরাং তাঁর সিদ্ধান্ত মেনে নিন।

              মুসলমানদের মনোকষ্ট আরো তীব্র আকার ধারণ করল যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সুহাইল ইবনে আমরকে বললেন, লিখ “বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম" আর সুহাইল বলল, আমি “বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম' বলে কিছু জানি না। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তাহলে “বিসমিল্লাহ' বা “বিইসমিকা আল্লাহুম্মা” লিখ । সুহাইল বলল, বেশ বেশ এটা লিখছি। তারপর রাসূল বললেন, লিখ, আল্লাহর রাসূল মুহাম্মদ এই কথায় চুক্তিবদ্ধ হচ্ছেন। সুহাইল বলল, আমি এ কথা স্বীকার করি না যে, আপনি আল্লাহর রাসূল। যদি স্বীকারই করতাম, তাহলে তো আপনারই অনুসরণ করতাম। তখন রাসূল বললেন, তাহলে লিখ, মুহাম্মদ ইবনে আবুল্লাহ এই কথায় চুক্তিবদ্ধ হচ্ছেন।

              এভাবে সন্ধিচুক্তি লিপিবদ্ধ হচ্ছিল। ঠিক তখন আবু জানদাল ইবনে সুহাইল ইবনে আমর (রাঃ) শিকলে আবদ্ধ অবস্থায় এসে উপস্থিত হলেন। পিতা সুহাইল তার পুত্র আবু জানদালকে দেখেই বলে উঠল, ইয়া মুহাম্মদ! সন্ধিচুক্তি লিপিবদ্ধ হয়ে গেছে? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, হ্যাঁ। তখন আবু জানদাল (রাঃ) চিৎকার করে বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! যদি আপনি আমাকে তাদের নিকট ফিরিয়ে দেন, তাহলে তারা আমাকে নির্মম নিপীড়ন ও নির্যাতন করবে । আমাকে ধর্মচ্যূত হতে বাধ্য করবে। রাসূল বললেন, “হে আবু জানদাল! তুমি ধৈর্য ধারণ কর। আল্লাহ তোমার ও তোমার মত অন্যান্যদের জন্য পরিত্রাণের পথ খুলে দেবেন।

              রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাহাবীদেরকে তাদের উট কুরবানী করতে হুকুম দিলেন। কিন্তু সাহাবীগণ ইতস্তত করছিলেন। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উম্মে সালামা (রাঃ)-এর নিকট গমন করে বললেন, আমার সম্প্রদায়ের লোকেরা তো ধ্বংস হয়ে গেল! এরা ধ্বংস হয়ে গেল! এরা আমার অবাধ্য হয়েছে। এরা ধ্বংস হয়ে গেল! উম্মে সালামা রোঃ) বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনি আপনার উট যবাহ করুন এবং চুল কেঁটে ফেলুন। তাহলে তারা আপনার অনুসরণ করবে। তখন রাসূলুল্লানু সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম গিয়ে তার উট যবাহ করলেন। মাথার চুল কাঁটালেন। সাহাবীগণও তার অনুসরণ করলেন। তারপর রাসূল মক্কা থেকে চলে এলেন। তখন সূরা ফাতাহ নাধিল হয়। আল্লাহ বলেন-
              إِنَّا فَتَحْنَا لَكَ فَتْحًا مُّبِيْنًا
              অর্থ : ‘নিশ্চয় আমি আপনাকে সুস্পষ্ট বিজয় দান করেছি।‘

              এবং এ সূরায়-ই আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন-
              وَعَدَكُمُ اللَّهُ مَغَانِمَ كَثِيرَةً تَأْخُذُونَهَا فَعَجَّلَ لَكُمْ هَذِهِ وَكَفَّ أَيْدِيَ النَّاسِ عَنكُمْ وَلِتَكُونَ آيَةً لِّلْمُؤْمِنِينَ وَيَهْدِيَكُمْ صِرَاطًا مُّسْتَقِيمًا
              وَأُخْرَى لَمْ تَقْدِرُوا عَلَيْهَا قَدْ أَحَاطَ اللَّهُ بِهَا وَكَانَ اللَّهُ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرًا
              অর্থ : “আল্লাহ তোমাদেরকে বিপুল পরিমাণ যুদ্ধলব্ধ সম্পদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, যা তোমরা লাভ করবে। তিনি তা তোমাদের জন্য ত্বরান্বিত করবেন। আর শত্রুদের হাত তোমাদের থেকে বিরত রেখেছেন, যেন এটা মুমিনদের জন্য নিদর্শন হয় আর তোমাদের সরল পথে পরিচালিত করেন। এবং আরো কিছু বিজয় রয়েছে, যা তোমরা এখনো অর্জন করতে পারনি । আর আল্লাহ তা বেষ্টন করে আছেন।” (সূরা তাওবা ২০-২১)

              আল্লাহ তাআলা এ আয়াতে রোম ও পারস্য সাম্রাজ্য এবং অন্যান্য বিজয়ের প্রতি ইংগিত করেছেন।

              তারপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জিলহজ্জ মাসে মদীনায় পৌছলেন এবং জিলহজ্জ মাস মদীনায়ই অবস্থান করলেন। এরপর খায়বারের যুদ্ধে গেলেন। এ যুদ্ধে রাসূল শুধুমাত্র তাদেরই অংশগ্রহণের অনুমতি দিলেন, যারা হুদায়বিয়ায় অংশগ্রহণ করেছিলেন। কারণ, তিনি কুরআনের আয়াতের ইঙ্গিতে বুঝেছিলেন যে, খায়বারের যুদ্ধে মুসলমানরা বিজয় লাভ করবে । খায়বার বিজয়ের পর খায়বারের সমুদয় বিষয়- সম্পত্তিকে দুই ভাগে ভাগ করলেন। এক ভাগ খায়বারের ইহুদীদের প্রদান করলেন। তবে তারা উৎপন্ন শস্যাদির অর্ধাংশ রাজস্ব স্বরূপ মদীনায় পাঠাবে । আরেক ভাগ সাহাবীদের মাঝে বন্টন করে দিলেন। খায়বারের যুদ্ধে চৌদ্দশ' সাহাবী অংশগ্রহণ করেছিলেন। তাদের মধ্যে দুশ' সাহাবী অশ্বারোহী ছিলেন। প্রত্যেক অশ্বারোহী তিন ভাগ পায়। এক ভাগ নিজের আর দুইভাগ অশ্বের। আর পদাতিকদের প্রত্যেকে এক ভাগ পায়। তাই যুদ্ধলব্ধ সম্পত্তির দ্বিতীয় অংশকে সর্বমোট ১৮শত ভাগে ভাগ করে পদাতিক ১২শত সাহাবীকে ১২শত ভাগ দেয়া হল আর ২শত অশ্বীরোহী সাহাবীকে ৬শত ভাগ দেয়া হল।

              খায়বারের যুদ্ধের পর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মদীনায় অবস্থান করছিলেন। তখন আবুল বাছীর (রাঃ) মক্কা থেকে পালিয়ে মদীনায় পৌঁছেন। এদিকে কুরাইশরা তাকে ফিরিয়ে নেয়ার জন্য দু'জন লোক পাঠাল। তারা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিকট এসে বলল, সন্ধিচুক্তি অনুযায়ী আমরা আবুল বাহীরকে ফিরিয়ে নিতে চাই। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তখন আবুল বাছীর (রাঃ)কে তাদের সাথে ফিরিয়ে দিলেন। আবুল বাছীর রোঃ) রাসূলকে বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমাকে তাদের নিকট ফিরিয়ে দিচ্ছেন! তারা তো আমাকে নির্যাতন-নিপীড়ন করে ধর্ম থেকে ফিরাতে চাইবে । রাসূল তখন সান্তনা দিয়ে বললেন-
              اصبر فإن الله جاعل لك و لمن معك مخرجا
              অর্থ : ধৈর্য ধারণ কর! নিশ্চয় আল্লাহ তোমার ও তোমার মত অন্যান্যদের জন্য মুক্তির পথ সৃষ্টি করবেন।

              দু'জন কাফেরের সাথে আবুল বাছীর (রাঃ) ফিরে চললেন। পথে তাদের একজন এক বাগানে খেজুর খেতে গেল আরেকজন তার সাথে বসে ছিল। তখন আবুল বাছীর (রাঃ) তার পাশের লোকটিকে বললেন, আরে তোমার তরবারীটি তো ভারী চমৎকার! একটু দেখি তো। দেখার জন্য আবুল বাছীর (রাঃ) তরবারিটি হাতে নিয়েই কাফেরের গর্দানে আঘাত করলেন এবং অপরজনকেও আঘাত করতে উদ্যত হলেন। কিন্তু সে অক্ষত অবস্থায় পালিয়ে মদীনায় ফিরে গেল এবং রাসূলকে ঘটনা শুনাল। ঘটনা শুনে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিস্মিত হয়ে বললেন-
              ويح... إنه مسعر حرب ، لو كان معه رجال...
              অর্থ : হায়, হায়, সে তো যুদ্ধের আগুন জ্বালিয়ে দিল। হায়! নিহত ব্যক্তিটির সাথে যদি আরো লোক থাকত।

              তারপর সেই লোকটি মক্কায় ফিরে গেলেও আবুল বাছীর (রাঃ) আর মদীনায় ফিরে এলেন না । তিনি মদীনার পশ্চিমে লোহিত সাগরের উপকূলে ঈ‘সের জঙ্গলে গিয়ে আশ্রয় নিলেন। সেখানে একটি সামরিক ঘাঁটি স্থাপন করলেন, যার সদস্য সংখ্যা মাত্র একজন। এ ঘাঁটির সেনাপ্রধান যিনি, সিপাহীও তিনি। তিনি হলেন আবুল বাছীর (রাঃ)।

              মক্কার নিপীড়িত মুসলমানদের নিকট সংবাদ পৌছল, আবুল বাছীর (রাঃ) ঈ'সের জঙ্গলে আশ্রয় নিয়েছেন। ব্যাস! আবু জানদাল (রাঃ)ও এসে তাঁর সাথে মিলিত হলেন। এভাবে একে একে বেশ কয়েকজন সাহাবী এসে একত্রিত হলেন। তারপর তারা প্রতিজ্ঞা করলেন, আমরা কুরাইশদের বাণিজ্য কাফেলার উপর আক্রমণ করব, শামের বাণিজ্যের পথ রুদ্ধ করে দিব। তারপর থেকে কুরাইশদের যে কাফেলাই শামে যেত বা শাম থেকে আসত, তার উপর আবুল বাছীর (রাঃ)-এর বাহিনী আক্রমণ করে অর্থ-সম্পদ ছিনিয়ে আনত । কুরাইশদের বাণিজ্যের পথ রুদ্ধ হয়ে গেল। খাদ্যের অনটন দেখা দিল। বাধ্য হয়ে মক্কার লোকেরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিকট দূত পাঠিয়ে আবেদন করল, হে মুহাম্মদ! আপনি তাদেরকে মদীনায় ফিরিয়ে আনুন। তাদের অনিষ্ট থেকে আমাদের মুক্তি দিন।

              ইয়া আল্লাহ! মাত্র অল্প কয়েকজন যুবক। অথচ একটি শহরকে শাসাচ্ছে। মক্কার সব কাফের তাদের ভয়ে কাঁপছে। এ যুগেও এমনটি সম্ভব ৷ কিছু লোক মৃত্যুর জন্য শপথ নিলে আল্লাহ তা'আলা তাদের সাহসী জীবন দান করবেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তখন আবুল বাছীর (রাঃ)-এর নিকট চিঠি লিখে পাঠালেন, “তুমি এবং তোমার সঙ্গী-সাথীরা আমার নিকট চলে এসো।"

              ইতিপূর্বেই আবুল বাছীর রোঃ) কাফেরদের এক কাফেলায় হামলা করেছিলেন। কয়েকজনকে হত্যা করেছিলেন। কয়েকজনকে আহত করেছিলেন। নিজেও আহত হয়েছিলেন। মারাত্মক আঘাত পেয়েছিলেন। মৃত্যুশয্যায় শায়িত অবস্থায় তিনি রাসূলের পত্র পেলেন এবং পত্রটি বুকে রেখেই ইন্তেকাল করলেন।

              এদিকে আরেকটি ঘটনা ঘটে গেল। হুদাইবিয়ার সন্ধিচুক্তিতে বনু বকর গোত্র কুরাইশদের সাথে ছিল আর বনু খুজা'আ গোত্র ছিল রাসূলের সাথে । বনু বকর ও বনু খুজা'আ গোত্র দু'টির মাঝে দীর্ঘদিন যাবৎ দ্বন্দ্ব চলে আসছিল । হঠাৎ একদিন বনু বকর গোত্রের লোকেরা রাতের অন্ধকারে বনু খুজাআ গোত্রের উপর আক্রমণ করে বসে। তারা তখন ওতীর নামক স্থান থেকে পানি সংগ্রহ করছিল। আকস্মিক আক্রমণের কারণে বনু খুজা'আ গোত্রের অনেক লোক নিহত হল। এ আক্রমণে কুরাইশরা অস্ত্র ও জনবল ছারা বনু বকর গোত্রকে সাহায্য করেছিল।

              আক্রমণের সময় আমর ইবনে খুজায়ী পালিয়ে মদীনায় গিয়ে উপস্থিত হল এবং মসজিদে নববীর আঙিনায় দাঁড়িয়ে অত্যন্ত মর্মস্পর্শী ভাষায় কবিতা আবৃতি করে রাসূলকে শুনাল-
              ياربي إن ناشد محمدا حلف أبينا و أبيه ألا تلد
              و قدكنتم ولدا وكنا ولدا ثم أسلمنا فلم نبزع يدا
              إن قريشا أخلفوك الموعدا و نقضوا ميثاقك المؤيد
              وزعموا أن لست أدعو أحدا وهم أقل و أذل عددا
              وهم بينونا بالوتير جهدا و قتلونا ركعا و سجدا

              অর্থ : হে আমার রব! আমি মুহাম্মদকে আমাদের ও তাঁর পূর্বপুরুষদের কসম দিয়ে বলছি, তোমরা সন্তান ছিলে আর আমরা পিতা ছিলাম। অর্থাৎ আমাদের মাঝে আত্মীয়তা সম্পর্ক বিদ্যমান। তারপর আমরা আত্মসমর্পণ করলাম। অতঃপর আমরা প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করিনি। নিশ্চয় কুরাইশরা আপনার সাথে ওয়াদা ভঙ্গ করেছে এবং আপনার সাথে কৃত মজবুত প্রতিশ্রুতি লঙ্ঘন করেছে। আর তারা ধারণা করেছে যে, আমি কাউকে ডাকব না। অথচ তারা সংখ্যায় অল্প, মর্যাদায় নিচু। তারা রাতের অন্ধকারে ওতীর-এ আমাদের উপর আক্রমণ করেছে । আমাদেরকে নত ও শায়িত অবস্থায় নির্মমভাবে হত্যা করেছে।

              রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার কবিতা শুনে অত্যন্ত মর্মাহত হলেন এবং বললেন-
              نصرت ، يا عمرو بن سالم
              অর্থ : হে আমর ইবনে সালেম! আল্লাহর সাহায্য এসে গেছে।

              তারপর রাসূল একখণ্ড মেঘের দিকে তাকিয়ে বললেন, এই মেঘখণ্ড বনু খুজা'আর সাহায্যের সংবাদ নিয়ে আসছে। এরপর রাসূল তাদের সংবাদ দিলেন যে, সত্বর আবূ সুফিয়ান সন্ধিচুক্তি নবায়ন করতে আসবে।

              সত্যিই আবু সুফিয়ান এলেন এবং তার মেয়ে উম্মুল মু'মিনীন উম্মে হাবীবা রাদিআল্লাহু আনহা-এর গৃহে বিছানায় গিয়ে বসলেন। উন্মে হাবীবা রাদিআল্লাহু আনহা তখন বিছানা সরিয়ে ফেলতে লাগলেন। আবু সুফিয়ান তার মেয়ের আচরণে বিস্মিত হয়ে বললেন, হে মেয়ে! এই শয্যা আমার অযোগ্য নাকি আমি এর যোগ্য নই?

              উম্মে হাবীবা রাদিআল্লাহু আনহা বললেন, এটা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বিছানা আর আপনি একজন নাপাক মুশরিক।

              কী আশ্চর্য! মক্কার শাসক তার পিতা । অথচ পিতাকে এমন কথা বলছেন। তার নেতৃত্বের প্রভাব ব্যাপক । তার সম্পদ প্রচুর । মর্যাদায় সে অনেক উঁচু আবু জাহেলের মৃত্যুর পর এখন তিনি মক্কা শাসন করছেন। অথচ তাকে লক্ষ্য করে তার মেয়ে বলছেন, আপনি একজন নাপাক মুশরিক। নিশ্চয় এমন কঠিন কথা স্বচ্ছ আকীদা ও দৃঢ় বিশ্বাসের কারণেই সম্ভব হয়েছিল। অন্য কিছুর কারণে নয় ।

              অথচ আজকে পৃথিবীর পরিস্থিতি অন্য রকম । আজ পিতার খাতিরে ভাই তার মুসলমান ভাইয়ের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে । পিতার সামনে ছেলে নামায না পড়ে সিগারেট পান করে । কেউ জাতীয়তাবাদী, কেউ সমাজতন্ত্রী, কেউ গণতন্ত্রী । কেউ পিতার পক্ষ হয়ে নিজের মুবাল্লিগ মুজাহিদ ভাইয়ের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে, ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। ইসলামের সেই আকীদা বিশ্বাস আজ কোথায়? কোথায় ঈমানী শক্তি? কোথায় মুমিনদের মর্যাদাবোধ?

              এরপর মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মক্কায় গেলেন। অষ্টম হিজরীতে মক্কা বিজয় হল! তারপর হুনাইনের যুদ্ধে গেলেন। অষ্টম হিজরীর শাওয়াল মাসে তাদের সাথে যুদ্ধ সংঘটিত হয়। এরপর তায়েফ অবরোধ করেন । কিন্তু তা বিজয় করতে সক্ষম হননি : তায়েফের যুদ্ধে রাসূল মিনজানিক (প্রস্তর নিক্ষেপণযোগ্য অস্ত্র) ব্যবহার করেন! সালমান ফারসী রোঃ)-এর পরামর্শক্রমেই রাসূল মিনজানিক ব্যবহার করেছিলেন।

              এ দিকে ছাকীফ গোত্রের যোদ্ধার সাহাবীদের উপর তীর বর্ষণ করছিল । অনেক সাহাবীর চোখে তীর বিদ্ধ হয়েছিল। আবূ সুফিয়ান (রাঃ) সে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন তিনি মক্কা বিজয়ের সময় ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন। তার চোখেও কাফেরদের নিক্ষিপ্ত তীর বিদ্ধ হল । তিনি চোখটি হাতে করে নিয়ে রাসূলের নিকট এসে বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! ক্বাতাদাহ ইবনে নুহয়েরের চেখের ন্যায় আমার চোখটিও ভাল করে দিন। সম্ভবত খায়বারের যুদ্ধে কাতাদাহ (রাঃ)-এর চোখ কোটর থেকে বেরিয়ে এলে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তা যথাস্থানে রেখে হাত দিয়ে মুছে দিয়েছিলেন। ফলে তার চোখ পূর্বের চেয়েও সুন্দর ও স্বচ্ছ হয়ে গিয়েছিল। আবু সুফিয়ান (রাঃ)-এর কথা শুনে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, আপনি চাইলে আমি আপনার চোখ ভাল করে দিতে পারি। আর যদি চান, তবে এর সওয়াব আল্লাহর নিকট থেকে গ্রহণ করতে পারেন। এ ব্যাপারে আপনার মত কি হে আবু সুফিয়ান?

              আবু সুফিয়ান (রাঃ) একথা শুনে বললেন, আমি আল্লাহর নিকটই এর সওয়াব চাই। তারপর তিনি তার চোখটি পায়ের নীচে রেখে পিষে ফেললেন।

              আবু সুফিয়ান (রাঃ) যথার্থরূপে ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন। কিন্তু তার বয়স ছিল বেশি । আশির কম ছিল না। ইয়ারমুকের যুদ্ধেও তিনি অংশগ্রহণ করলেন। কিন্ত যুদ্ধ করা তার দ্বারা সম্ভব ছিল না। তাই তিনি মহিলাদের সাথে লাঠি নিয়ে রণাঙ্গনের পশ্চাতে দাঁড়িয়ে ছিলেন। মুসলমানদের কেউ পালিয়ে পিছনে গেলে তিনি লাঠি দ্বারা পিটিয়ে তাড়িয়ে তাকে রণক্ষেত্রে পাঠাতেন।

              তাবূকের যুদ্ধ থেকে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মদীনায় ফিরে আসার পর সূরা “বারাআ" অবতীর্ণ হয়। অষ্টম হিজরীতে মক্কা বিজয়ের পর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বাইতুল্লাহকে বরং গোটা মক্কাকে মূর্তির জঞ্জাল থেকে পবিত্র করেন। তিনি আততাব ইবনে উসাইদ (রাঃ) কে মক্কার শাসক নিয়োগ করেন আততাব (রাঃ) ছিলেন অত্যন্ত সৎ ও পরহেযগার লোক । সে বৎসর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হজ্জ করেন । আততাব ইবন উসাইদ (রাঃ)-ও সে বৎসরই হজ্জ করেন।



              সূত্রঃ
              তাফসীরে সূরা তওবা
              تفسير في ظلال سورة التوبة
              ড. শহীদ আব্দুল্লাহ আযযাম (রহঃ)
              (পৃষ্ঠা নং ২১-২৪)
              হে পরাক্রমশালী শক্তিধর! কৃপণতা আর কাপুরুষতা থেকে আশ্রয় চাই সর্বক্ষণ।

              Comment


              • #8
                জিহাদী মিডিয়ার লক্ষ্য উদ্যেশ্য।
                ====================
                জিহাদী মিডিয়ার অনেকগুলো এজেন্ডা থাকে, গুরুত্বপূর্ণ এজেন্ডা হচ্ছে, সঠিক দাওয়াত মুমিনদের কাছে পৌঁছে দেওয়া। জিহাদের ক্ষতিকর কোন কথা/ কাজ প্রকাশ না করা, লেখনীগুলো আদব বজায় রাখা কর্তব্য। শুধু মিডিয়া / অনলাইন বিভিন্ন পেইজের বিভিন্ন পোস্ট এর উপর ভিত্তি করে কোন গ্রুপকে বাতিল বলা, তাও আবার একটি সাধারণ আইডি থেকে এগুলো কিসের আলামত আমার বুঝে আসে না। জিহাদের স্বার্থে বিভ্রান্ত ছড়ায় এমন আইডিকে সতর্ক করা, সতর্ক না হলে উম্মাহ'র উপকারের জন্য আইডি বেন্ড করে দেওয়াই উত্তম। আল্লাহ আমাদের সঠিক বুঝ দান করুন আমীন।
                বিলাসিতা জিহাদের শুত্রু,শাইখ উসামা রাহ।

                Comment


                • #9
                  [centre]
                  এভাবে সন্ধিচুক্তি লিপিবদ্ধ হচ্ছিল। ঠিক তখন আবু জানদাল ইবনে সুহাইল ইবনে আমর (রাঃ) শিকলে আবদ্ধ অবস্থায় এসে উপস্থিত হলেন। পিতা সুহাইল তার পুত্র আবু জানদালকে দেখেই বলে উঠল, ইয়া মুহাম্মদ! সন্ধিচুক্তি লিপিবদ্ধ হয়ে গেছে? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, হ্যাঁ। তখন আবু জানদাল (রাঃ) চিৎকার করে বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! যদি আপনি আমাকে তাদের নিকট ফিরিয়ে দেন, তাহলে তারা আমাকে নির্মম নিপীড়ন ও নির্যাতন করবে । আমাকে ধর্মচ্যূত হতে বাধ্য করবে। রাসূল বললেন, “হে আবু জানদাল! তুমি ধৈর্য ধারণ কর। আল্লাহ তোমার ও তোমার মত অন্যান্যদের জন্য পরিত্রাণের পথ খুলে দেবেন। [-সীরাতুন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহী ওয়া সাল্লাম]
                  সীরাহ থেকে শিক্ষা:
                  শত্রুর সাথে অনাক্রম্য চুক্তি করা প্রয়োজন হলে শক্তি সঞ্চয়কে লক্ষ্য রেখে আমীর তা করতে পারেন, যদিওবা শত্রুর হাতে কিছু মুসলিম থেকে যায়। উল্লেখ্য যে, তালিবানের প্রশিক্ষণের ভিডিও প্রকাশ্যে আসা তাদের উদ্দেশ্যকে জানান দেয় না কি? অতএব, এ চুক্তিকে মুসলিমদের বিরুদ্ধে কাফিরদের সহায়তা বলা চলে না। মুসলিমদের উপর কুফফারদের জুলুমে স্পষ্ট ও প্রকাশ্য সংহতি আর, এধরণের চুক্তি একই পর্যায়ের নয়। ওয়াল্লাহ আ’লাম। প্রথমটি কুফর, দ্বিতীয়টির অবকাশ আছে।


                  (সন্ধির পর দিয়ে) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাহাবীদেরকে তাদের উট কুরবানী করতে হুকুম দিলেন। কিন্তু সাহাবীগণ ইতস্তত করছিলেন। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উম্মুল মু’মিনীন উম্মে সালামা (রাঃ)-এর নিকট গমন করে বললেন, আমার সম্প্রদায়ের লোকেরা তো ধ্বংস হয়ে গেল! এরা ধ্বংস হয়ে গেল! এরা আমার অবাধ্য হয়েছে। এরা ধ্বংস হয়ে গেল! উম্মে সালামা (রাঃ) বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনি আপনার উট যবাহ করুন এবং চুল কেঁটে ফেলুন। তাহলে তারা আপনার অনুসরণ করবে। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম গিয়ে তার উট যবাহ করলেন। মাথার চুল কাঁটালেন। সাহাবীগণও তার অনুসরণ করলেন। তারপর রাসূল মক্কা থেকে চলে এলেন। তখন সূরা ফাতাহ নাযিল হয়। [-সীরাতুন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহী ওয়া সাল্লাম]
                  বুঝা গেল, সাহাবীদের (আল্লাহ তাদের সকলের উপর সন্তুষ্ট হন) আবদার ছিল কোনপ্রকার চুক্তিতে আবদ্ধ না হওয়া। আমরা যদি সীরাহ অধ্যয়ন করে থাকি- অবাক হয়ে দেখতে পাব হুদায়বিয়ার শান্তিচুক্তি বা সন্ধি সম্পদিত হয়েছিল ক্রমিক বদর, বনু কাইনুকা, উহুদ, বনু নাযীর বহিষ্কার, খন্দক, বনু কুরাইযা অভিযান ইত্যাদি বড় যুদ্ধসহ ছোট-মাঝারী বিভিন্ন অভিযানের পর দিয়ে! একদম শুরুর দিকেই নয়! এ সময়ে সাহাবীরা আল্লাহর অসংখ্য নিয়ামত ও সাহায্য লাভ করেছিলেন। এমনকি খন্দক যুদ্ধ শেষে আল্লাহর রাসূল (সাঃ) বলেছিলেন, ‘‘এরপর কুরাইশরা আর কখনো তোমাদের উপর আক্রমণ চালাবে না বরং এরপর তোমরাই তাদের উপর আক্রমণ চালাবে। ’’ অর্থাৎ মুসলিমদের অবস্থান পূর্বের মত একদম দূর্বল নেই, কিছুটা শক্তিশালী হয়েছে। তবে কেন এই চুক্তি? কারণ, মুসলিমরা শুধু গায়ের জোরে যুদ্ধ করে না, আর যুদ্ধ বিরতির মধ্যেই কল্যাণ ছিল।

                  সাহাবীদের অনিচ্ছা থেকে আমরা আরও জানতে পারি, এটা এমন বিষয় যাতে মতপার্থক্য হতে পারে। তাই মতপার্থক্য থাকা মানেই কাউকে খারেজী বলা বৈধ হতে পারে না। হ্যাঁ, কেউ যদি বাড়াবাড়ি করে তালিবানকে মুরতাদ বলে ফেলে সে হবে ‘তাকফীরি’। এবং এ তাকফীর মুসলিমের রক্ত পর্যন্ত গড়ালে তবে সে ‘খারেজী’। অতএব, এটা নিয়ে কোন পক্ষেরই বাড়াবাড়িতে লিপ্ত হওয়া বৈধ নয়।[/centre]

                  Comment


                  • #10
                    সাহাবীদের অনিচ্ছা থেকে আমরা আরও জানতে পারি, এটা এমন বিষয় যাতে মতপার্থক্য হতে পারে। তাই মতপার্থক্য থাকা মানেই কাউকে খারেজী বলা বৈধ হতে পারে না। হ্যাঁ, কেউ যদি বাড়াবাড়ি করে তালিবানকে মুরতাদ বলে ফেলে সে হবে ‘তাকফীরি’। এবং এ তাকফীর মুসলিমের রক্ত পর্যন্ত গড়ালে তবে সে ‘খারেজী’। অতএব, এটা নিয়ে কোন পক্ষেরই বাড়াবাড়িতে লিপ্ত হওয়া বৈধ নয়।
                    অধমের জানা মতে খারেজী হওয়ার জন্য তাকফীরী হওয়া তথা কোনো মুসলিমের অন্যায় তাকফীর করাই যথেষ্ট। আরেকটু ভেঙে বললে কাফির নয় এমন কাউকে অন্যায় ভাবে কাফির বলাটাই যথেষ্ট। হত্যা পর্যন্ত যাওয়া লাগবে না। যেমন, অতীতের সব খারীজী ব্যক্তিগতভাবে হত্যার সাথে যুক্ত থাকত না। অথচ কেবল আকীদার কারণে তারা খারীজী সাব্যস্ত হয়েছে। কারণ, যখন কাউকে তাকফীর করা হয়, তাকে মুরতাদ সাব্যস্ত করে জান মাল বৈধ ঘোষণা করা হয়। বাস্তবায়ন হোক বা না হোক। এর উদাহরণ ঐ হাদীস; যাতে মাকতূলকে জাহান্নামী বলা হয়েছে, প্রতিপক্ষ কে অন্যায়ভাবে হত্যার নিয়ত থাকায়।

                    যারা তালিবানকে বাতিল বলছে, (কিছু ব্যতিক্রম থাকতে পারে।) তারা নিশ্চয়ই কেবল বিদআতী বলছে না। বরং তাগুতের সহযোগিতা ও বন্ধুত্বের মত ভয়াবহ অপবাদ দিচ্ছে। এর ফলাফল কি তাকফীর ছাড়া অন্য কিছু? হ্যাঁ, কেউ যদি এই লাইনে নতুন হয় বা জানার চেষ্টা করে সেটা ভিন্ন। কিন্তু জ্ঞান প্রত্যাশী আর অপবাদ আরোপকারীর মাঝে আছে আসমান যমীনের ফরক।

                    তালিবান কি (আফগান) জাতীয়তাবাদী? আইএস কেন খারিজী?
                    Last edited by আবু আব্দুল্লাহ; 07-30-2021, 06:55 PM.

                    Comment


                    • #11
                      সম্মানিত @sunni jihaadi আপনি সব পোস্ট কমেন্টে নিচের এগুলা দেন কেন? একাধিকবার মুছে দিছি, তাও আপনি খেয়াল করছেন না? প্রসঙ্গের বাইরে সবখানে এগুলা কপিপেস্ট করলে কি সুন্দর দেখায়?
                      -------------------
                      মুখতাসার আসাসুল জিহাদ (সকল পর্ব)।
                      সংক্ষেপে জিহাদ সংক্রান্ত নীতিমালা (বাংলা)।

                      Comment


                      • #12
                        Originally posted by Muwahhid Muhammad Saifullah View Post
                        জাযাকুমুল্লাহু খাইরান মুহতারাম ভাই। আল্লাহ ﷻ আমাদেরকে বোঝার তাউফিক দিন এবং বিভ্রান্তি থেকে হিফাজতে রাখুন।
                        আমিন ইয়া রব্বাল আলামিন

                        Comment


                        • #13
                          খুবই গুরত্বপূর্ণ আলোচনা সকলকে জাযাকাল্লাহ
                          ( গাজওয়া হিন্দের ট্রেনিং) https://dawahilallah.com/showthread.php?9883

                          Comment


                          • #14
                            হামজা ইবনে আব্দুল মুত্তালিব ভাইকে অন্তর থেকে অনেক অনেক জাযাকাল্লাহ।মডারেট ভাইদের প্রতি অনুরোধ রইল এ সব আইডি কে সতর্ক করা।আর সতর্ক না হলে আইডি বেন্ড করে দেওয়া ।

                            Comment


                            • #15
                              জিহাদের উপকারের জন্য কখনো জায়েজ/ মুবাহ কাজকেও প্রকাশ করা থেকে বিরত থাকতে হয়। যেমনঃ জবাই করার দৃশ্য দেখানো! / খাচাই ভরে পানিতে চুবানো! ইত্যাদি। যেই কাজ/ ভিডিওগুলো জিহাদের দাওয়াতের জন্য ক্ষতিকর সেগুলো প্রকাশ না করা। উম্মাহ'র বৃহত স্বার্তের(স্বার্থের) জন্য ছোট্র খাট ইখতিলাফ থেকে বিরত থাকা। ফিকহী মাসায়ীল নিয়ে তর্কবিতর্ক না করা। আল্লাহ আমাদের বুঝার তাওফিক দান করুন আমীন।
                              ولو ارادوا الخروج لاعدواله عدةولکن کره الله انبعاثهم فثبطهم وقیل اقعدوا مع القعدین.

                              Comment

                              Working...
                              X