প্রশ্ন
– আসসালামু আলাইকুম….আমি একজন ছাত্র।এইচ. এস. সি. পরীক্ষা দিলাম…সামনে এডমিশন টেস্ট…আমি গত প্রায় তিন বছর টিভি দেখি না।
আন্তর্জাতিক রাজনীতির অনেক কিছুই খোজ খবর রাখা হয় না।আমি আপনার কাছে জানতে চাই বর্ত্মান বিশ্বে কোথায় কোথায় মুসলিম ভাই ও বোনেরা অত্যাচারিত হচ্ছে এবং কাদের দ্বারা হচ্ছে।
যেমন আপনি ইতালির নাগরিক হত্যার বৈধতার যুক্তি দিলেন কোথায় জানি ইতালি মুসলিম হত্যায় সাহায্য করছে বলে। এটা একটা আরেকটা প্রশ্ন হলো ইতালি বা সেই নির্দিষ্ট দেশ মুসলিম দের উপর অত্যাচার করছে।ওকে।
তো সেই দেশের ক্ষমতাধর যারা সেগুলো নিয়ন্ত্রন করছে তাদের এটাক না করে,বা ঈসরাইল কে এটাক না করে নরমাল পিপল কে কেনো এটাক করা?
প্রশ্ন করেছেন – সাইনো অ্যাট্রিয়াল নোড
—-
#উত্তর
ওয়ালাইকুম আসসালাম,
আল্লাহ্ তা’আলা আপনাকে দ্বীনের উপর ইস্তেকামাত রাখুন।
বর্তমান বিশ্বে প্রায় সর্বত্রই মুসলমানদের উপর অত্যাচার হচ্ছে… ধারাবাহিকভাবে কিছু বিবরণ দেয়া হলো –
#১/ ৯০ এর দশকের শুরুতে সৌদি আরবের স্বার্থে আমেরিকা পরিচালিত উপসাগরীয় যুদ্ধে আরোপিত অবরোধের কারণে না খেয়ে মারা যাওয়ার শিশুর সংখ্যা দশ লক্ষাধিক।
৯/১১ পরবর্তী সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে শান্তিকামী অ্যামেরিকা এবং তার মিত্ররা ৪০ লক্ষ মুসলিম হত্যা করেছে।
এর আগে নব্বইয়ের দশকে আমেরিকা কর্তৃক ইরাকের উপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞার কারণে অনাহারে মারা যায় প্রায় ১০ লক্ষ মুসলিম শিশু “সন্ত্রাসী”
#২/ বসনিয়াতে মাত্র ৩দিনে ৮৩৭২ জন মুসলিম হত্যা করে সার্বিয়ান খ্রিস্টানরা(আন্তর্জাতিক হিসাব মতে, মূল সংখ্যা আরও বেশী)।
জাতিসংঘ ঘোষিত প্রথম নিরাপদ স্থান হিসেবে বিবেচিত বসনিয়ার সেব্রেনিতসায় সংঘটিত এ গণহত্যা সরাসরি আমেরিকা ও জাতিসংঘের মদদে পরিচালিত হয়।
#সুত্রঃ A Cry From The Grave, BBC নির্মিত ডকুমেন্টরি
#৩/ শুধুমাত্র সিরিয়াতে হত্যা করা হয়েছে ৫লক্ষাধিক মুসলমান। সিরিয়াতে কাফির নুসাইরি শাসক বাশার আল আসাদের মিত্র হিসেবে কাজ করছে আমেরিকা, রাশিয়া, চীন, ইরান, লেবানন, সৌদি আরব, আরব আমিরাত ও অন্যান্য আমেরিকান দালাল দেশ যাদেরকে মুসলিম রাষ্ট্র হিসেবে পরিচয় দিয়ে অজ্ঞ মুসলিমদের ধোকা দিয়ে থাকে কাফির মিডিয়াগুলো।
রাশিয়ান টিভি চ্যনেলগুলোতে আবহাওয়া ভালো থাকলে উপস্থাপক রাশিয়ান সেনাদের আহ্বান জানায় অধিক হারে বোমা হামলা করতে।
#৪/ ইয়েমেন সৌদি বিমান হামলায় কয়েক হাজার নিরীহ মুসলমান নিহত হয়। শিয়া দমনের নামে সুন্নিদের উপর চালানো এই নির্মম গণহত্যা চাপা পরে যায় সৌদি দালাল আলেমদের মিথ্যা ফতোয়ার কারণে।
বাংলাদেশে মতিউর রহমান মাদানি, আবদুল্লাহ শাহেদ মাদানি সহ অনেকে ইয়েমেনে সৌদির গণহত্যাকে সরাসরি সমর্থন জানিয়েছে। গোটা বিশ্বব্যাপীই সৌদি বেতনভোগী আলেমরা সৌদি তাগুত শাসকদের অপরাধের সাফাই গেয়েছে।
এছাড়াও ৯০ এর দশকে প্রথমবারের মত আল্লাহ’র রাসুল (সা) এর নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও কাফির আমেরিকাকে যুদ্ধঘাটি নির্মাণের অনুমতি দেয়। এবং তৎকালীন গ্র্যান্ড মুফতি এর বৈধতা দান করে।
যে আলেমরাই এর বিরোধিতা করেছিল তাদের সকলকেই হত্যা অথবা বন্দী করা হয়। শায়খ উসামা বিন লাদিন (রহ)’র জাতিয়তা কেড়ে নেয়া হয় কেবলমাত্র “জাজিরাতুল আরবে কাফিরদের উপস্থিতি”র বিরোধিতা করার কারণে।
এছাড়াও সৌদির অন্যতম শ্রেষ্ঠ আলেম শায়খ হামুদ বিন উক্কলা আশ শুয়াইবি (রহ) কে হত্যা করে সৌদি তাগুত গোষ্ঠী। বন্দী করে শায়খুল আল্লামা সুলাইমান আল উলওয়ান, আলি বিন খুদাইর আল খুদাইর, নাসির বিন হামদ আল ফাহাদ সহ আরও অনেককেই।
#৫/ আফগানিস্তানে ২০০১ এর অক্টোবরে আক্রমণের পর ন্যাটো জোটকে সাথে নিয়ে আমেরিকা এখন পর্যন্ত পাঁচ লক্ষাধিক মুসলমান হত্যা করেছে। ইতালি ন্যাটো জোটের অন্যতম সদস্য।
#৬/ ইরাকে ২০০৩ এর পর কয়েক লক্ষ মুসলমান হত্যা করে আমেরিকা-ইরান-ইরাকি শিয়া জোট।
#৭/ সোমালিয়াতে কেনিয়া, আফ্রিকান ইউনিওন, ইথিওপিয়া, উগান্ডা মিলে হত্যা করেছে অসংখ্য মুসলমানকে। সাক্ষাৎ মোসাদ সেখানে কেনিয়ান সৈন্যদের প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে।
দেখুন – আল জাজিরার ডকুমেন্টরি – Inside Kenya’s Death Squad. ইউটিউবেই পাবেন।
#৮/ বার্মাতে মুসলিম নিধন সবারই জানা। প্রায় ৬লক্ষাধিক মুসলমান নারীকে যৌনদাসী বানিয়েছে নাপাক বৌদ্ধ রাখাইনরা। অথচ পাশের দেশ বাংলাদেশে আছে ১৬কোটি মুসলমান!! ইন্না লিল্লাহ।
বিস্তারিত বিবরণ – http://time.com/…/burma-rohingya-genocide-report-documenta…/
#৯/ সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকে খ্রিস্টানরা প্রকাশ্যে দিনের আলোটে মুসলমানদের হত্যা করার পর লাশ চিবিয়ে খেয়েছে। মিডীয়াতেও এসেছে। ইন্টারনেটে খুজলেই পাবেন।
#১০/ মালিতে ফ্রান্স ২০১৩ সালে বিনা উস্কানিতে হামলা করে এখন পর্যন্ত কয়েক হাজার মুসলিম কে হত্যা ও বন্দী করেছে। সেখানে ১০-১২ বছরের মেয়েদেরকেও খাবার ও পানি দেয়ার কথা বলে ধর্ষণ করেছে। বেশীদিন আগের খবর না। খুজলেই পাওয়া যাবে।
এছাড়াও ফিলিস্তিন, ইয়েমেন, লিবিয়া, ভারত, বার্মা, নাইজেরিয়া, চীনের জিংজিয়াং প্রদেশ, তাজিকিস্তান, উজবেকিস্তান সহ ইউরোপের সকল দেশে আজ মুসলিমদের উপর হচ্ছে নির্মম অত্যাচার। ইউরোপ-আমেরিকার জেলগুলোতে বিনা বিচারে পচে মরছে অসংখ্য আলেম-উলামা ও ইসলামের দা’ঈরা।
লেখা অধিক বড় হয়ে যাওয়ার আশংকায় এখানেই থামতে হলো।
মেইনস্ট্রিম মিডিয়াতে আসা খবরগুলো সামনে আনাতেই এতটুকু আর যে সকল খবর মিডিয়া ঢেকে রাখে সেগুলোর ব্যাপারে আলোচনা করলে এক সাগর কালি দিয়ে লিখে শেষ করা যাবে কি না আল্লাহই ভালো জানেন।
আল্লাহ্ তা’আলা সকল মুসলমানদের হিফাজত করুন। আমীন।
#দ্বিতীয়ত, কোনো দেশের নাগরিক হত্যা করা হলে সে দেশের রাষ্ট্রপ্রধান ও শাসকদের উপরও চাপ পরে। কেননা দেশের নাগরিকেরা অন্য দেশে কাজ করতে না গেলে দেশের অর্থনীতি ধসে পরবে। বেসামরিকদের প্রতি মুসলমানদের কঠোর আচরণ দেখে সামরিক সদস্যদের মনোবল কমে যাবে।
এছাড়াও আরও অন্যান্য কিছু কারণ আছে যার বিস্তারিত আলোচনা এখানে সম্ভব নয়।
একটি উদাহারণ – স্পেনের মাদ্রিদে ইরাক যুদ্ধ চলাকালীন আল-কায়েদা বোমা হামলা চালায়। সেই হামলার পর স্পেন ইরাক থেকে সকল সৈন্য প্রত্যাহার করে নেয়। এবং আমেরিকাপন্থী শাসকের পতন ঘটে।
মূলতঃ আল-কায়েদা ও অন্যান্য মুজাহিদিন গ্রুপ অনেক বিষয় সামনে রেখেই এধরণের হামলাগুলো পরিচালনা করে।
আই এসের কার্যক্রমের ব্যাপারে আমার তেমন কিছু বলার নেই। তারা অন্যত্র মুজাহিদিনদেরও হত্যা করছে। তাড়াহুড়াপ্রবণ হামলাও তারা করে থাকে। তাই বেশী কিছু বলতে পারলাম না।
বাহ্যত যা সামনে আসে তার উপর ভিত্তি করে, শুধুমাত্র শার’ঈ দৃষ্টিকোণ থেকে এটা বলা যেতে পারে যে, আমানপ্রাপ্ত ও আহাদপ্রাপ্ত কাফির ব্যাতিত অন্য কাফির হত্যা করা ইসলামে বৈধ। নিন্দা জানানোর সুযোগ নেই।
গুলশান হামলায় নিহত কাফিরদের জন্য সমবেদনা জানানোর কিছু নেই। আল্লাহ্ তা’আলার কিতাব ও সুন্নাহ থেকে প্রদত্ত দলীল যাদের জন্য যথেষ্ট হয়না তাদের জন্য আমার কী করার আছে!?
আল্লাহ্ তা’আলা বলেন সুরা মায়িদার ৬৮ নং আয়াতে –
“কাফির সম্প্রদায়ের জন্য তুমি আফসোস করো না।“
বিস্তারিত দলীল – https://goo.gl/BA8LnF
#পরবর্তী_প্রসঙ্গ – ইজরায়েলকে কেন আক্রমণ করা হচ্ছে না?
আল-কায়েদার অন্যতম মূল লক্ষ্য ইজরায়েলকে নিশ্চিহ্ন করা। কিন্তু, আপনাকে জানতে হবে ইজরায়েলকে সুরক্ষা দিয়ে যাচ্ছে মিশর, সিরিয়া, জর্ডান। ম্যাপ খুলে দেখুন এই দেশগুলোর সাথে সীমান্তের অবস্থা কেমন।
এছাড়াও আমেরিকা প্রতি বছর সর্বোচ্চ পরিমাণ আর্থিক সহায়তা দিয়ে থাকে ইজরায়েলকে। এবছর আমেরিকা তিন বিলিয়ন ডলারেরও অধিক আর্থিক সহায়তা দিয়েছে ইজরায়েলকে।
এবং মিশর, সিরিয়া, জর্ডানের কাফির শাসকগোষ্ঠীকে রক্ষার ওয়াদা করেছে আমেরিকা। সেখানকার শাসকেরা আক্রান্ত হওয়া মাত্রই আমেরিকা ও সৌদি আরব বিলিয়ন ডলারের সহায়তা নিয়ে যায়। মিশরের শাসক সিসিকে আমেরিকা ও সৌদি আরব প্রদত্ত সহায়তার পরিমাণ গুগল করলেই পেয়ে যাবেন।
সুতরাং, এটা স্পষ্ট আমেরিকার পতন না ঘটিয়ে ইজরায়েল ও অন্যান্য মুসলিম ভুখন্ডে জগদ্দল পাথরের মত চেপে বসা মুরতাদ শাসকগোষ্ঠীর পতন কার্যত অসম্ভব।
তাই, আল-কায়েদার মানহাজ সাপের মাথা আমেরিকা ও তার মিত্র ক্রুসেডার জোটকে আক্রমণ। বিগত ১৫বছরের যুদ্ধের ফলে, আমেরিকা এখন ঋণগ্রস্ত। এবং বিজয় খুব কাছেই ইনশা’আল্লাহ।
#তবে, আল-কায়েদা পরিচালিত ৯/১১ হামলায় নিহত ইহুদির সঙ্খ্যাও কম নয়। আনুমানিক ২৭০+। আমেরিকার স্টেইট ডিপার্টমেন্ট ৭৬ জন ইহুদির নামও প্রকাশ করেছে। এদের মধ্যে ৫জন ইজরায়েলের নাগরিক।
#সুত্রঃ http://www.jcpa.org/phas/phas-13.htm
৯/১১ কোনো ইনসাইড জব নয়। এব্যাপারে বিস্তারিত জানতে আল জাজিরা এরাবিকের Road To September 11 ডকুমেন্টরটি দেখা যেতে পারে।
নিচের লেখা দুটিও পড়া যেতে পারে –
#এছাড়াও, ইজরায়েলের এজেন্ট ড্যনিয়েল পার্লকে ২০০২ সালের ১ই ফেব্রুয়ারিতে জবাই করে হত্যা করে আল-কায়েদা। আলহামদুলিল্লাহ। ৯/১১ হামলার মূল পরিকল্পনাকারী খালিদ শায়খ মুহাম্মাদ (আল্লাহ্ উনার মুক্তি ত্বরান্বিত করুন) নিজ হাতে তাকে হত্যা করেন। আলহামদুলিল্লাহ।
সুত্রঃ https://en.wikipedia.org/wiki/Daniel_Pearl
আপনি যদি কাফিরদের পত্রিকাগুলোও খোজ করেন তাহলে এমন প্রশ্ন আর করতে পারবেন না। তিউনিশিয়ার জারবায় ইহুদিদের উপর, কেনিয়ার মোম্বাসায় ইজরায়েলি টুরিস্টদের উপর, ইজরায়েলি নাগরিক বহনকারী আল-এল এয়ারলাইনেসের উপর আল-কায়েদার আক্রমণ তো চোখের সামনে। তাহলে ইজরায়েলিদের আক্রমণ করা হচ্ছে একথা কিভাবে বলা যেতে পারে?
আর! আপনারা তো ফিলিস্তিনি মুজাহিদিনদের কখনো বললেন না তারা যাতে আফগানিস্তান কিংবা সিরিয়া গিয়ে জিহাদ করে। ফিলিস্তিনের চেয়ে সেখানে অত্যাচার তো আরও বেশী হচ্ছে। উল্টো সিরিয়ান, আফগান মুজাহিদিনদের বলছেন ফিলিস্তিন যেতে।
যদি, এটা আল-কায়েদার প্রতি সুধারণা থেকে বলা হয় তবে আলহামদুলিল্লাহ। অপেক্ষা করুন, শায়খ উসামা বিন লাদিন (রহ) প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করতে আল-কায়েদা শীঘ্রই ইজরায়েলের পতন ঘটাবে।
বি;ইজনিল্লাহ।
আলহামদুলিল্লাহ! আমরা শেখ হাসিনার মত নই, নই খালেদা জিয়ার মত। যারা ইজরায়েলের সাথে সম্পর্কচ্ছেদ করতে পেরে জনসম্মুখে ভাব নেয় অথচ ভারত/আমেরিকার সহায়তায় শাসনক্ষমতা হাতে পেলেই ইজরায়েলের ঘনিষ্ঠতম মিত্র আমেরিকা ও ভারতকে হাজার কোটি টাকার জ্বালানী সম্পদ ও ট্রানজিট ফ্রিতে দিয়ে দেয়।
এপ্রসঙ্গে বিস্তারিত জানতে কল্লোল মুস্তফা, আনু মুহাম্মাদ ও তেল-গ্যাস রক্ষা কমিটির প্রকাশিত লেখাগুলো পড়ে নিতে পারেন।
আওয়ামী, বি এন পি-জামাত, এরশাদ পরিচালিত গণতান্ত্রিক দলগুলোই মূলতঃ আমেরিকা-ইজরায়েলের সবচেয়ে বড় দালাল।
ওয়াল্লাহু ‘আলাম।
আশা করি আপনার প্রশ্নের উত্তর পেয়েছেন।
ওয়াসসালাম।
– আসসালামু আলাইকুম….আমি একজন ছাত্র।এইচ. এস. সি. পরীক্ষা দিলাম…সামনে এডমিশন টেস্ট…আমি গত প্রায় তিন বছর টিভি দেখি না।
আন্তর্জাতিক রাজনীতির অনেক কিছুই খোজ খবর রাখা হয় না।আমি আপনার কাছে জানতে চাই বর্ত্মান বিশ্বে কোথায় কোথায় মুসলিম ভাই ও বোনেরা অত্যাচারিত হচ্ছে এবং কাদের দ্বারা হচ্ছে।
যেমন আপনি ইতালির নাগরিক হত্যার বৈধতার যুক্তি দিলেন কোথায় জানি ইতালি মুসলিম হত্যায় সাহায্য করছে বলে। এটা একটা আরেকটা প্রশ্ন হলো ইতালি বা সেই নির্দিষ্ট দেশ মুসলিম দের উপর অত্যাচার করছে।ওকে।
তো সেই দেশের ক্ষমতাধর যারা সেগুলো নিয়ন্ত্রন করছে তাদের এটাক না করে,বা ঈসরাইল কে এটাক না করে নরমাল পিপল কে কেনো এটাক করা?
প্রশ্ন করেছেন – সাইনো অ্যাট্রিয়াল নোড
—-
#উত্তর
ওয়ালাইকুম আসসালাম,
আল্লাহ্ তা’আলা আপনাকে দ্বীনের উপর ইস্তেকামাত রাখুন।
বর্তমান বিশ্বে প্রায় সর্বত্রই মুসলমানদের উপর অত্যাচার হচ্ছে… ধারাবাহিকভাবে কিছু বিবরণ দেয়া হলো –
#১/ ৯০ এর দশকের শুরুতে সৌদি আরবের স্বার্থে আমেরিকা পরিচালিত উপসাগরীয় যুদ্ধে আরোপিত অবরোধের কারণে না খেয়ে মারা যাওয়ার শিশুর সংখ্যা দশ লক্ষাধিক।
৯/১১ পরবর্তী সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে শান্তিকামী অ্যামেরিকা এবং তার মিত্ররা ৪০ লক্ষ মুসলিম হত্যা করেছে।
এর আগে নব্বইয়ের দশকে আমেরিকা কর্তৃক ইরাকের উপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞার কারণে অনাহারে মারা যায় প্রায় ১০ লক্ষ মুসলিম শিশু “সন্ত্রাসী”
#২/ বসনিয়াতে মাত্র ৩দিনে ৮৩৭২ জন মুসলিম হত্যা করে সার্বিয়ান খ্রিস্টানরা(আন্তর্জাতিক হিসাব মতে, মূল সংখ্যা আরও বেশী)।
জাতিসংঘ ঘোষিত প্রথম নিরাপদ স্থান হিসেবে বিবেচিত বসনিয়ার সেব্রেনিতসায় সংঘটিত এ গণহত্যা সরাসরি আমেরিকা ও জাতিসংঘের মদদে পরিচালিত হয়।
#সুত্রঃ A Cry From The Grave, BBC নির্মিত ডকুমেন্টরি
#৩/ শুধুমাত্র সিরিয়াতে হত্যা করা হয়েছে ৫লক্ষাধিক মুসলমান। সিরিয়াতে কাফির নুসাইরি শাসক বাশার আল আসাদের মিত্র হিসেবে কাজ করছে আমেরিকা, রাশিয়া, চীন, ইরান, লেবানন, সৌদি আরব, আরব আমিরাত ও অন্যান্য আমেরিকান দালাল দেশ যাদেরকে মুসলিম রাষ্ট্র হিসেবে পরিচয় দিয়ে অজ্ঞ মুসলিমদের ধোকা দিয়ে থাকে কাফির মিডিয়াগুলো।
রাশিয়ান টিভি চ্যনেলগুলোতে আবহাওয়া ভালো থাকলে উপস্থাপক রাশিয়ান সেনাদের আহ্বান জানায় অধিক হারে বোমা হামলা করতে।
#৪/ ইয়েমেন সৌদি বিমান হামলায় কয়েক হাজার নিরীহ মুসলমান নিহত হয়। শিয়া দমনের নামে সুন্নিদের উপর চালানো এই নির্মম গণহত্যা চাপা পরে যায় সৌদি দালাল আলেমদের মিথ্যা ফতোয়ার কারণে।
বাংলাদেশে মতিউর রহমান মাদানি, আবদুল্লাহ শাহেদ মাদানি সহ অনেকে ইয়েমেনে সৌদির গণহত্যাকে সরাসরি সমর্থন জানিয়েছে। গোটা বিশ্বব্যাপীই সৌদি বেতনভোগী আলেমরা সৌদি তাগুত শাসকদের অপরাধের সাফাই গেয়েছে।
এছাড়াও ৯০ এর দশকে প্রথমবারের মত আল্লাহ’র রাসুল (সা) এর নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও কাফির আমেরিকাকে যুদ্ধঘাটি নির্মাণের অনুমতি দেয়। এবং তৎকালীন গ্র্যান্ড মুফতি এর বৈধতা দান করে।
যে আলেমরাই এর বিরোধিতা করেছিল তাদের সকলকেই হত্যা অথবা বন্দী করা হয়। শায়খ উসামা বিন লাদিন (রহ)’র জাতিয়তা কেড়ে নেয়া হয় কেবলমাত্র “জাজিরাতুল আরবে কাফিরদের উপস্থিতি”র বিরোধিতা করার কারণে।
এছাড়াও সৌদির অন্যতম শ্রেষ্ঠ আলেম শায়খ হামুদ বিন উক্কলা আশ শুয়াইবি (রহ) কে হত্যা করে সৌদি তাগুত গোষ্ঠী। বন্দী করে শায়খুল আল্লামা সুলাইমান আল উলওয়ান, আলি বিন খুদাইর আল খুদাইর, নাসির বিন হামদ আল ফাহাদ সহ আরও অনেককেই।
#৫/ আফগানিস্তানে ২০০১ এর অক্টোবরে আক্রমণের পর ন্যাটো জোটকে সাথে নিয়ে আমেরিকা এখন পর্যন্ত পাঁচ লক্ষাধিক মুসলমান হত্যা করেছে। ইতালি ন্যাটো জোটের অন্যতম সদস্য।
#৬/ ইরাকে ২০০৩ এর পর কয়েক লক্ষ মুসলমান হত্যা করে আমেরিকা-ইরান-ইরাকি শিয়া জোট।
#৭/ সোমালিয়াতে কেনিয়া, আফ্রিকান ইউনিওন, ইথিওপিয়া, উগান্ডা মিলে হত্যা করেছে অসংখ্য মুসলমানকে। সাক্ষাৎ মোসাদ সেখানে কেনিয়ান সৈন্যদের প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে।
দেখুন – আল জাজিরার ডকুমেন্টরি – Inside Kenya’s Death Squad. ইউটিউবেই পাবেন।
#৮/ বার্মাতে মুসলিম নিধন সবারই জানা। প্রায় ৬লক্ষাধিক মুসলমান নারীকে যৌনদাসী বানিয়েছে নাপাক বৌদ্ধ রাখাইনরা। অথচ পাশের দেশ বাংলাদেশে আছে ১৬কোটি মুসলমান!! ইন্না লিল্লাহ।
বিস্তারিত বিবরণ – http://time.com/…/burma-rohingya-genocide-report-documenta…/
#৯/ সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকে খ্রিস্টানরা প্রকাশ্যে দিনের আলোটে মুসলমানদের হত্যা করার পর লাশ চিবিয়ে খেয়েছে। মিডীয়াতেও এসেছে। ইন্টারনেটে খুজলেই পাবেন।
#১০/ মালিতে ফ্রান্স ২০১৩ সালে বিনা উস্কানিতে হামলা করে এখন পর্যন্ত কয়েক হাজার মুসলিম কে হত্যা ও বন্দী করেছে। সেখানে ১০-১২ বছরের মেয়েদেরকেও খাবার ও পানি দেয়ার কথা বলে ধর্ষণ করেছে। বেশীদিন আগের খবর না। খুজলেই পাওয়া যাবে।
এছাড়াও ফিলিস্তিন, ইয়েমেন, লিবিয়া, ভারত, বার্মা, নাইজেরিয়া, চীনের জিংজিয়াং প্রদেশ, তাজিকিস্তান, উজবেকিস্তান সহ ইউরোপের সকল দেশে আজ মুসলিমদের উপর হচ্ছে নির্মম অত্যাচার। ইউরোপ-আমেরিকার জেলগুলোতে বিনা বিচারে পচে মরছে অসংখ্য আলেম-উলামা ও ইসলামের দা’ঈরা।
লেখা অধিক বড় হয়ে যাওয়ার আশংকায় এখানেই থামতে হলো।
মেইনস্ট্রিম মিডিয়াতে আসা খবরগুলো সামনে আনাতেই এতটুকু আর যে সকল খবর মিডিয়া ঢেকে রাখে সেগুলোর ব্যাপারে আলোচনা করলে এক সাগর কালি দিয়ে লিখে শেষ করা যাবে কি না আল্লাহই ভালো জানেন।
আল্লাহ্ তা’আলা সকল মুসলমানদের হিফাজত করুন। আমীন।
#দ্বিতীয়ত, কোনো দেশের নাগরিক হত্যা করা হলে সে দেশের রাষ্ট্রপ্রধান ও শাসকদের উপরও চাপ পরে। কেননা দেশের নাগরিকেরা অন্য দেশে কাজ করতে না গেলে দেশের অর্থনীতি ধসে পরবে। বেসামরিকদের প্রতি মুসলমানদের কঠোর আচরণ দেখে সামরিক সদস্যদের মনোবল কমে যাবে।
এছাড়াও আরও অন্যান্য কিছু কারণ আছে যার বিস্তারিত আলোচনা এখানে সম্ভব নয়।
একটি উদাহারণ – স্পেনের মাদ্রিদে ইরাক যুদ্ধ চলাকালীন আল-কায়েদা বোমা হামলা চালায়। সেই হামলার পর স্পেন ইরাক থেকে সকল সৈন্য প্রত্যাহার করে নেয়। এবং আমেরিকাপন্থী শাসকের পতন ঘটে।
মূলতঃ আল-কায়েদা ও অন্যান্য মুজাহিদিন গ্রুপ অনেক বিষয় সামনে রেখেই এধরণের হামলাগুলো পরিচালনা করে।
আই এসের কার্যক্রমের ব্যাপারে আমার তেমন কিছু বলার নেই। তারা অন্যত্র মুজাহিদিনদেরও হত্যা করছে। তাড়াহুড়াপ্রবণ হামলাও তারা করে থাকে। তাই বেশী কিছু বলতে পারলাম না।
বাহ্যত যা সামনে আসে তার উপর ভিত্তি করে, শুধুমাত্র শার’ঈ দৃষ্টিকোণ থেকে এটা বলা যেতে পারে যে, আমানপ্রাপ্ত ও আহাদপ্রাপ্ত কাফির ব্যাতিত অন্য কাফির হত্যা করা ইসলামে বৈধ। নিন্দা জানানোর সুযোগ নেই।
গুলশান হামলায় নিহত কাফিরদের জন্য সমবেদনা জানানোর কিছু নেই। আল্লাহ্ তা’আলার কিতাব ও সুন্নাহ থেকে প্রদত্ত দলীল যাদের জন্য যথেষ্ট হয়না তাদের জন্য আমার কী করার আছে!?
আল্লাহ্ তা’আলা বলেন সুরা মায়িদার ৬৮ নং আয়াতে –
“কাফির সম্প্রদায়ের জন্য তুমি আফসোস করো না।“
বিস্তারিত দলীল – https://goo.gl/BA8LnF
#পরবর্তী_প্রসঙ্গ – ইজরায়েলকে কেন আক্রমণ করা হচ্ছে না?
আল-কায়েদার অন্যতম মূল লক্ষ্য ইজরায়েলকে নিশ্চিহ্ন করা। কিন্তু, আপনাকে জানতে হবে ইজরায়েলকে সুরক্ষা দিয়ে যাচ্ছে মিশর, সিরিয়া, জর্ডান। ম্যাপ খুলে দেখুন এই দেশগুলোর সাথে সীমান্তের অবস্থা কেমন।
এছাড়াও আমেরিকা প্রতি বছর সর্বোচ্চ পরিমাণ আর্থিক সহায়তা দিয়ে থাকে ইজরায়েলকে। এবছর আমেরিকা তিন বিলিয়ন ডলারেরও অধিক আর্থিক সহায়তা দিয়েছে ইজরায়েলকে।
এবং মিশর, সিরিয়া, জর্ডানের কাফির শাসকগোষ্ঠীকে রক্ষার ওয়াদা করেছে আমেরিকা। সেখানকার শাসকেরা আক্রান্ত হওয়া মাত্রই আমেরিকা ও সৌদি আরব বিলিয়ন ডলারের সহায়তা নিয়ে যায়। মিশরের শাসক সিসিকে আমেরিকা ও সৌদি আরব প্রদত্ত সহায়তার পরিমাণ গুগল করলেই পেয়ে যাবেন।
সুতরাং, এটা স্পষ্ট আমেরিকার পতন না ঘটিয়ে ইজরায়েল ও অন্যান্য মুসলিম ভুখন্ডে জগদ্দল পাথরের মত চেপে বসা মুরতাদ শাসকগোষ্ঠীর পতন কার্যত অসম্ভব।
তাই, আল-কায়েদার মানহাজ সাপের মাথা আমেরিকা ও তার মিত্র ক্রুসেডার জোটকে আক্রমণ। বিগত ১৫বছরের যুদ্ধের ফলে, আমেরিকা এখন ঋণগ্রস্ত। এবং বিজয় খুব কাছেই ইনশা’আল্লাহ।
#তবে, আল-কায়েদা পরিচালিত ৯/১১ হামলায় নিহত ইহুদির সঙ্খ্যাও কম নয়। আনুমানিক ২৭০+। আমেরিকার স্টেইট ডিপার্টমেন্ট ৭৬ জন ইহুদির নামও প্রকাশ করেছে। এদের মধ্যে ৫জন ইজরায়েলের নাগরিক।
#সুত্রঃ http://www.jcpa.org/phas/phas-13.htm
৯/১১ কোনো ইনসাইড জব নয়। এব্যাপারে বিস্তারিত জানতে আল জাজিরা এরাবিকের Road To September 11 ডকুমেন্টরটি দেখা যেতে পারে।
নিচের লেখা দুটিও পড়া যেতে পারে –
#এছাড়াও, ইজরায়েলের এজেন্ট ড্যনিয়েল পার্লকে ২০০২ সালের ১ই ফেব্রুয়ারিতে জবাই করে হত্যা করে আল-কায়েদা। আলহামদুলিল্লাহ। ৯/১১ হামলার মূল পরিকল্পনাকারী খালিদ শায়খ মুহাম্মাদ (আল্লাহ্ উনার মুক্তি ত্বরান্বিত করুন) নিজ হাতে তাকে হত্যা করেন। আলহামদুলিল্লাহ।
সুত্রঃ https://en.wikipedia.org/wiki/Daniel_Pearl
আপনি যদি কাফিরদের পত্রিকাগুলোও খোজ করেন তাহলে এমন প্রশ্ন আর করতে পারবেন না। তিউনিশিয়ার জারবায় ইহুদিদের উপর, কেনিয়ার মোম্বাসায় ইজরায়েলি টুরিস্টদের উপর, ইজরায়েলি নাগরিক বহনকারী আল-এল এয়ারলাইনেসের উপর আল-কায়েদার আক্রমণ তো চোখের সামনে। তাহলে ইজরায়েলিদের আক্রমণ করা হচ্ছে একথা কিভাবে বলা যেতে পারে?
আর! আপনারা তো ফিলিস্তিনি মুজাহিদিনদের কখনো বললেন না তারা যাতে আফগানিস্তান কিংবা সিরিয়া গিয়ে জিহাদ করে। ফিলিস্তিনের চেয়ে সেখানে অত্যাচার তো আরও বেশী হচ্ছে। উল্টো সিরিয়ান, আফগান মুজাহিদিনদের বলছেন ফিলিস্তিন যেতে।
যদি, এটা আল-কায়েদার প্রতি সুধারণা থেকে বলা হয় তবে আলহামদুলিল্লাহ। অপেক্ষা করুন, শায়খ উসামা বিন লাদিন (রহ) প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করতে আল-কায়েদা শীঘ্রই ইজরায়েলের পতন ঘটাবে।
বি;ইজনিল্লাহ।
আলহামদুলিল্লাহ! আমরা শেখ হাসিনার মত নই, নই খালেদা জিয়ার মত। যারা ইজরায়েলের সাথে সম্পর্কচ্ছেদ করতে পেরে জনসম্মুখে ভাব নেয় অথচ ভারত/আমেরিকার সহায়তায় শাসনক্ষমতা হাতে পেলেই ইজরায়েলের ঘনিষ্ঠতম মিত্র আমেরিকা ও ভারতকে হাজার কোটি টাকার জ্বালানী সম্পদ ও ট্রানজিট ফ্রিতে দিয়ে দেয়।
এপ্রসঙ্গে বিস্তারিত জানতে কল্লোল মুস্তফা, আনু মুহাম্মাদ ও তেল-গ্যাস রক্ষা কমিটির প্রকাশিত লেখাগুলো পড়ে নিতে পারেন।
আওয়ামী, বি এন পি-জামাত, এরশাদ পরিচালিত গণতান্ত্রিক দলগুলোই মূলতঃ আমেরিকা-ইজরায়েলের সবচেয়ে বড় দালাল।
ওয়াল্লাহু ‘আলাম।
আশা করি আপনার প্রশ্নের উত্তর পেয়েছেন।
ওয়াসসালাম।
Comment