গাজওয়াতুল হিন্দের এক টুকরো বিশ্লেষণ
হিন্দুস্তানের এই যুদ্ধটি হবে একটি সর্বদলীয়, সর্বগ্রাসী দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধ। এই যুদ্ধ কিছুতেই মুষ্টিমেয় মুজাহিদীন এবং হিন্দুত্ববাদী ভারতের মাঝে সীমাবদ্ধ থাকবেনা।
বরং এতে অংশ নিবে ভারত, পাকিস্থান, আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, মায়ানমার, শ্রীলংকা। বিদেশি শক্তি হিসেবে চীন, রাশিয়া, আমেরিকা। এবং এটি ভারতীয় উপমহাদেশের কোন একটি অলি-গলিকেও নিস্তার দিবেনা। কোন নবজাতকই তার বিভীষিকা থেকে রেহাই পাবেনা। হাজার বছর ধরে ধূমায়িত যুদ্ধাগ্নি একটুখানি খোঁচাতেই বিষ্ফোরিত হয়ে লেলিহান ছড়াবে। আফগান থেকে বঙ্গ, যেখানেই এর সূচনা হোক না কেন ক্ষণ মুহুর্তেই তা সব দিকে ছড়িয়ে পড়বে!
এ যুদ্ধে অংশগ্রহণকারীদের আমরা সাদরণভাবে তিনটি শ্রেণীতে দেখতে পাব।
এক গণতান্ত্রিক আদর্শ, আধিপত্য, সার্বভৌমত্ব, জাতিয়তাবাদের জন্যে লড়াইকারী পাকিস্থান। বাংলাদেশও এ ক্ষেত্রে অভিন্ন।
দুই হিন্দুত্ববাদের জন্যে লড়াইকারী ভারত। উপমহাদেশীয় সকল ফাসাদের মূলে যারা, যারা ইসলাম ও মুসলিমদের জন্যে তাদের দেশে এক নারকীয় জাহান্নাম বানিয়ে রেখেছে
তিন ইসলাম ও মুসলিমদের হেফাজত এবং বিজয়ের জন্যে জিহাদকারী মুজাহিদীন। যারা আল্লাহর কালেমা সমুন্নত করার উদ্দেশ্যে সবরকম পার্থিব স্বার্থের ঊর্ধে থেকে লড়াই করবে।
এবং বাকি যারা এই যুদ্ধে অংশগ্রহণ করবে তারাও এই তিন শ্রেণীর ছায়াতলেই অংশগ্রহণ করবে। হোক আমেরিকা, রাশিয়া, চীন, মায়ানমার বা দুনিয়ার দূর প্রান্তের হিজরতকারী মুজাহিদীন। প্রত্যেকেই নিজ নিজ মিত্রদের সাথে সমবেত হবে।
যদিও যুদ্ধটির নামকরণ রাসূল (সল্লাল্লাহু আলাইহি) করেছেন। যদিও যুদ্ধটি হবে মালাউন হিন্দুদের সাথে মুসলিমদের যুদ্ধ। যদিও মুজাহীদিনরাই হবে এই যুদ্ধের বরপুত্র ও বিজয়ী। তথাপিও এটি একটি সর্বদলীয় যুদ্ধ হবে। জাত-পাত নির্বিশেষে সবাই এতে অংশ নিবে। সামরিক-বেসামরিক কেউই বাদ যাবেনা মোদ্দা কথা দুনিয়া সৃষ্টি তথা মুহাম্মাদ (সল্লাল্লাহু আলাইহি) এর নবুওয়ত প্রাপ্তির পর থেকে আজ অবধি এবং ক্বিয়ামত পর্যন্ত এমন যুদ্ধ ভারতবাসী প্রত্যক্ষ্য করেনি। আর কখনো করবেনা। নানা কারণেই শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে ভারতীয় উপমহাদেশে বহুমুখী শক্তির উত্থান, আধিপত্য, জ্যেত্যাভিমান, আন্তঃধর্মীয় সংঘর্ষ এক ভয়াবহ যুদ্ধের দিকে ধাবিত করছে ভারতের ভবিষ্যতকে।
তাই গাজওয়াতুল হিন্দ শুধু একদিনের এক আকষ্মিক যুদ্ধ নয় যে কেউ চাইলেই মুখ ফিরিয়ে নিবে বা অজ্ঞতার দোহাই দিয়ে ঘরে বসে থাকবে। বরং এই যুদ্ধ সকল ধর্মের, সকল মতের, সকল পথের, সকল বয়সের প্রতিজনের কাছে উপস্থিত হবে এবং যুদ্ধের উত্তপ্ততা পরখ করাবে।
উপর্যুপরি বৃটিশদের হিন্দুস্থান শাসন, ভারতকে মনস্তাত্ত্বিক দিক দিয়ে বিভক্তি, হিন্দু-মুসলিম বৈষম্য সৃষ্টি, অখন্ড হিন্দুস্থানকে খন্ড-বিখন্ড করণ, বৃটিশদের থেকে হিন্দুস্থানের স্বাধীনতা উদ্ধার।
হিন্দু-মুসলিম আলাদা রাষ্ট্রের চেতনায় ভারত-পাকিস্থান নামের আলাদা রাষ্ট্রের জন্ম হওয়া, দেশ ভাগের সময়
ধর্মীয় দাঙ্গা, নতুন করে ভারতের হিন্দুত্ত্ববাদ রাষ্ট্র হিসেবে আবির্ভাব,
ইসলামের প্রতি চরম বিদ্বেষ ও যুদ্ধংদেহী মনোভাব, অনেকগুলি দাঙ্গা ও হাজারে হাজারে মুসলিম হত্যা, বাবরি মাসজিদের মতো শত মসজিদকে শহীদ ও বিলীন করে দেয়া,
১৯৭১ এ বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্ম, ত্রিমুখী নীতির মেরুকরণ, ৭১ সালে পাকিস্থানের বিরুদ্ধে বাংলাদেশকে ভারতের সহায়তা, পাকিস্থানের পরাজয় ও প্রতিশোধপরায়ণতা, ভারত-পাকিস্থানের পরমাণু অস্ত্রধর রাষ্ট্র হওয়া,
বিশ্ব ক্ষমতা দ্বিমেরুকরণ হওয়া এবং চীন-রাশিয়া ও আমেরিকা-ন্যাটু বেল্টে ভারত-পাকিস্থান আলাদা আলাদা বেল্টের অন্তর্ভুক্ত হওয়া, চিত্রঃ পাকিস্থানের আত্নসমর্পন
উপমহাদেশের সার্বিক আধিপত্য,
কাশ্মির স্বাধীনতা ইস্যুতে ভারত-পাকিস্থানের বিপরীত অবস্থা ও একটি দীর্গ যুদ্ধের মাঝ দিয়ে যাওয়া ভারত-পাকিস্থানের সার্বভৌমত্ব
কাশ্মির ইস্যু উত্তপ্ত হওয়া, কাশ্মির স্বাধীনতা আন্দোলন জোরদার হওয়া, কাশ্মির নিয়ে ভারত-পাকিস্থানের ইঁদুর-বেড়াল নীতি, বিশ্ব
মুসলিমদের কাশ্মিরের প্রতি সংহতি, মুজাহিদীনদের কাশ্মির জিহাদের আগ্রহ, নীতিগতভাবে কাশ্মির ইস্যুতে আস্থা হারানো
পাকিস্থান-জাতিসংঙ্গের চালাকি প্রচেষ্টা, সশস্ত্র লড়াই-ই একমাত্র কাশ্মির সমস্যার সমাধান অনুধাবিত হওয়া, বাংলাদেশের ভারতের প্রতি একমুখী সমর্থন, গোলামি নীতি, বাংলাদেশকে ভারতের দাস রাষ্ট্রে পরিণত করা, একটি মুসলিম প্রধান রাষ্ট্রে সর্বাংশে হিন্দুত্বকরণ,
একনিষ্ট আলিম ও তাওহিদী জনতাকে নিগৃহীত করা, আরাকানে বৌদ্ধদের দ্বারা মুসলিমদের জাতিগত ধর্ষণ-উচ্ছেদ ও গণহত্যা, ভারতের প্রকাশ্য সমর্থন, ভারত-মায়ানমার মিলে যৌথ সামরিক মহড়া, আসামের মুসলিমদের গ্রেপ্তার, নাগিরিকত্ব বাতিল, ঘর-বাড়ি ধবংস করা, ভারতের সাতটি অঙ্গের(Seven Sisters) স্বাধীনতার দাবী ও সংগ্রাম, পানি নিয়ে ভারতের সাথে বাংলাদেশ পাকিস্থানের দ্বন্দ্ব, ভারত-পাকিস্থান উভয় রাষ্ট্রের
কিন্তু সিরিয়া যুদ্ধের কোনই লক্ষণ নেই। ইমাম আনোয়ার আল আওলাকি (রাহিঃ) ইরাক অবরোধের পর পরই বলেছিলেন এখন আমাদের সিরিয়ার দিকে তাকানো উচিত, কেননা হাদীস অনুযায়ী শীঘ্রয় সিরিয়া অবরুদ্ধ হবে! সুবহানাল্লাহ! শাইখ আওলাকি ২০১১ সালে শহীদ হোন এবং সিরিয়া অবরোধ দেখার আগেই!
২০১২ সাল। আরব বসন্তের ধোয়া ক্রমেই বিস্তৃত হচ্ছে। অতঃপর সিরিয়ায় তা পৌঁছাল এবং সশস্ত্র লড়াইয়ে রুপান্তরিত হল। শুরু হল গৃহ যুদ্ধ। কালব বংশের নুসাইরিদের আগ্রাসন, লাখো আহলে সুন্নাহর মৃত্যু, এক কোটি সিরিয়ানদের দেশান্তরি, রাশিয়া, ইরান আর আমেরিকার সিরিয়া যুদ্ধে অংশগ্রহণ এবং স্মরণকালের ভয়াবহ অবরোধ আরোপিত হলো সিরিয়া বাসীর ওপর।
অতঃপর আজ ৬ বছর অতিবাহিত হয়েছে সিরিয়া যুদ্ধের। ১০ লাখ নিহত, এর অধিক সংখ্যায় আহত। ২০১৫ সালেই অবরোধে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ৫০০ জন প্রায়! এটি হচ্ছে হাদীসের বাকি অংশের বাস্তবায়ন
তিনি আবার বললেন অচিরেই শামবাসীর নিকট কোন দীনার আসবে না এবং কোন খাদ্যশস্যও আসবে না। আমরা প্রশ্ন করলাম, এ বিপদ কোন দিক থেকে আগমন করবে? তিনি বললেন, রোমের দিক থেকে। অতঃপর তিনি কিছুক্ষণ চুপ থেকে বললেন, আমার উম্মাতের শেষভাগে একজন খলীফা (ইমামুল মাহদি) হবে। সে হাত ভরে ভরে অর্থ সম্পদ দান করবে, গণনা করবে না।
এখন শুধু খলীফা ইমাম আল মাহদীর আগমন বাকি আছে!
সিরিয়া যুদ্ধই হবে শেষ যুদ্ধ, মহাযুদ্ধ। এই যুদ্ধের শেষ ভাগে ইমাম মাহদীর আগমন ঘটবে। ইমাম মাহদী দামেষ্কের উপকণ্ঠে গুতা শহরে
দুটি ভয়ংকর -নিকৃষ্ট-ভোগবাদী গোয়েন্দা সংস্থা 'র' এবং 'আইএসআই' এর কুট-কৌশল ও চক্রান্ত, বিদেশি পরাশক্তির এজেন্ট হওয়া, ভারত রাষ্ট্রে চরম মুসলিম বিদ্বেষী ও হিন্দু জঙ্গীসংগঠনের ক্ষমতাসীন হওয়া, আরএসএস, শিবসেনা, বজরংদের মুসলিম নিধন মানসিকতা ও একটি চূড়ান্ত যুদ্ধের প্রস্তুতি গ্রহণ, ভারতের সাথে ইজরাইলের বন্ধুত্ত্ব ও একাত্নতা, ভারত-পাকিস্থান সীমান্ত উত্তেজনা ও বার কয়েকের চাপা যুদ্ধ, মায়ানমারের বৌদ্ধ ও ভারতের হিন্দুদের জোটবদ্ধ হওয়া এবং মুসলিমদের বিরুদ্ধে নিজেদের আগ্রাসনসহ জানা-অজানা অসংখ্য কারণ যুগের পর যুগ ধরে গাজওয়াতুল হিন্দ'কে অত্যাবশ্যকীয় করে তুলেছে।
এর বাইরে শাহ নি'আমতুল্লাহর গাজওয়াতুল হিন্দ নিয়ে ৮০০ বছর আগে করে যাওয়া ভবিষ্যদ্বাণী, ইসলামের পুনরায় বিজয়ী হওয়ার যে জাগরণ প্রাচ্য থেকে প্রাশ্চাত্য, সিন্দু থেকে ইউফ্রেটিস নদীর তীর, আর বঙ্গপোসাগর থেকে আটলান্টিক মহাসাগর, ইন্দোনেশিয়া থেকে স্পেন তথা পৃথিবীর সর্বত্রই শুরু হয়েছে তারই ঢেউ আছড়ে পড়েছে উপমহাদেশেও। তাওহীদ ও জিহাদের এক নব জাগরন শুরু হয়েছে। বাশেঁরকেল্লা-বালাকোট বিজয়ের বার্তা নিয়ে ফিরে এসেছে, হিন্দের সমুদ্রে জিঞ্জির ছেঁড়া উচ্চ্বাসের গর্জন ওঠেছে। কাশ্মির থেকে আরাকান আজ জিহাদের জন্যে উর্বর ভূমি হিসেবে আবাদ হয়েছে। মুহাম্মাদ বিন কাসিমের উত্তরসুরীরা আজ হিন্দুস্তানের প্রতিটি ঘরে তাওহীদের কালেমা পৌছে দিতে বদ্ধপরিকর। সাম্রাজ্যবাদী শক্তির পর তৃতীয় শক্তি হিসেবে আজ আবির্ভূত হয়েছে উম্মতের মুজাহিদরা। সবাই তটস্থ। কি চায় তারা! ইসলামের বিজয়, কালিমার বুলন্দি আর মুসলিমদের মুক্তি। আল্লাহর ভূমিতে আল্লাহর আইনের শাসনই কেবল সক্ষম এতে! সুতরাং ভারত-পাকিস্থানের শত্রুতার সাথে আরেকটি নতুন খেলোয়ার মাঠে এসেছে, যারা এতটাই তীব্র, বাঁধভাঙা আর বে-পরোয়া যে সারা বিশ্ব পেরেশান, হয়রান। তারা আল্লাহ ও মুমিন ব্যতীত সবার সাথেই যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। তারা নতুন যুদ্ধা, যুদ্ধের সব পক্ষই তাদের প্রতিপক্ষ, না ভারত, না রাশিয়া-আমেরিকা আর না ইসলামের নাম ব্যবহারকারী পাকিস্থান! সবাই শত্রু। তারাই কেবল বন্ধু যারা আল্লাহর শরীয়তের জন্যে লড়াই করে। সুবহানাল্লাহ!
সুতরাং এইসব কিছু আল্লাহর রাসূলের ভবিষ্যদ্বাণী'কৃত যুদ্ধকে বাধ্যতামূলক ও অবশ্যম্ভাবী করেছে এবং আমাদের প্রজন্মে তা সংগঠিত হবার সব ধাপ পূরণ করেছে। হিন্দ এখন এক অভূতপূর্ব ভয়ংকর যুদ্ধের জন্যে প্রস্তুত!
কে আছ.....কাফেলা বদ্ধ হবে!
কিন্তু বন্ধু, তুমি কি জান যুদ্ধটি কিভাবে তোমাকে নাড়া দিবে এবং কি অবস্থায় তোমার সাথে সাক্ষাত করবে?
তুমি তো ভেবেই নিয়েছ-"একটা যুদ্ধ হয়তো হবে, কিছুটা ভয়ংকর হতেও পারে, কিন্তু তুমি বা তোমার পরিবার পার পেয়ে যাবে, ফাঁক গলে বেড়িয়ে যাবে(!) আরে, এটা তো গাজওয়াতুল হিন্দ, এটি মহাযুদ্ধ/বিশ্বযুদ্ধ হাদীসের ভাষায় মালহামাতুল কুবরা তো আর নয়......!"
না বন্ধু, তুমি ভুলই ভেবেছ, আর ভুলেই থেকে গেলে মাশুল টা চড়া হয়ে যাবে! তুমি কি জান- 'গাজওয়াতুল হিন্দ' মালহামাতুল কুবরা অর্থাৎ বিশ্বযুদ্ধের অংশই হবে! যখন শামে ইমাম মাহদী মালহামা/বিশ্বযুদ্ধে লিপ্ত থাকবেন তখন তুমি হিন্দুস্থানে গাজওয়াতুল হিন্দে ব্যস্ত থাকবে। উভয়টা মিলেই হবে মালহামতুল কুবরা বা তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ।
যুহায়র ইবনু হারব ও আলী ইবনু হুজর (রহঃ) জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূল (সাঃ) বলেন, "অচিরেই ইরাকবাসীরা না খাদ্যশস্য পাবে, না দিরহাম পাবে। আমরা জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রাসূল (সাঃ)! কার কারণে এ বিপদ আসবে”? তিনি বললেন- অনারবদের কারণে। তারা খাদ্যশস্য ও দিরহাম আসতে দিবে না। কিছু সময় চুপ থেকে তিনি আবার বললেন অচিরেই শামবাসীর নিকট কোন দীনার আসবে না এবং কোন খাদ্যশস্যও আসবে না। আমরা প্রশ্ন করলাম, এ বিপদ কোন দিক থেকে আগমন করবে? তিনি বললেন, রোমের দিক থেকে। অতঃপর তিনি কিছুক্ষণ চুপ থেকে বললেন, আমার উম্মাতের শেষভাগে একজন খলীফা (ইমামুল মাহদি) হবে। সে হাত ভরে ভরে অর্থ সম্পদ দান করবে, গণনা করবে না। সহীহ মুসলিম: অধ্যায় ৫৪/ফিৎনা ও কিয়ামতের আলামত, হাদিস নং: ৭০৫১, পাবলিশার: ইফাবা। বুখারী: অধ্যায় ৮১/ ফিৎনা ও কিয়ামতের আলামত।
২০০০ সালের অব্যবহিত পরেই ইরাকের ওপর অনারব আমেরিকা আর ন্যাটু জোট দ্বারা অবরোধ আরোপ করা হয়, যুদ্ধ চাপিয়ে দেয়া হয়। আন্তর্জাতিক ভাবে ইরাককে বিশ্ব বাজার থেকে বৈকট করা হয়েছিল এবং প্রায় ১০ লাখ ইরাকি সেই যুদ্ধে নিহত হয়েছিল। সাদ্দাম কে ফাঁসিতে ঝুলিয়েছিল এবং সকল সম্পদ ডাকাতি করা হয়েছিল। এটি ছিল হাদীসের প্রথম অংশের সত্যায়ন, ""অচিরেই ইরাকবাসীরা না খাদ্যশস্য পাবে, না দিরহাম পাবে। আমরা জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রাসূল (সাঃ)! কার কারণে এ বিপদ আসবে”? তিনি বললেন- অনারবদের কারণে। তারা খাদ্যশস্য ও দিরহাম আসতে দিবে না।"
রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের চুপ থাকা ও অতঃপর শাম(সিরিয়া) অবরোধের কথা বলার দ্বারা বুঝা যায় ইরাক অবরোধের কিছু দিন পরই সিরিয়া অবরোধ ও যুদ্ধের শিকার হবে। দেখতে দেখতেই ইরাক যুদ্ধের ১০ বছর অতিবাহিত হল।
সংগৃহিতহিন্দুস্তানের এই যুদ্ধটি হবে একটি সর্বদলীয়, সর্বগ্রাসী দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধ। এই যুদ্ধ কিছুতেই মুষ্টিমেয় মুজাহিদীন এবং হিন্দুত্ববাদী ভারতের মাঝে সীমাবদ্ধ থাকবেনা।
বরং এতে অংশ নিবে ভারত, পাকিস্থান, আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, মায়ানমার, শ্রীলংকা। বিদেশি শক্তি হিসেবে চীন, রাশিয়া, আমেরিকা। এবং এটি ভারতীয় উপমহাদেশের কোন একটি অলি-গলিকেও নিস্তার দিবেনা। কোন নবজাতকই তার বিভীষিকা থেকে রেহাই পাবেনা। হাজার বছর ধরে ধূমায়িত যুদ্ধাগ্নি একটুখানি খোঁচাতেই বিষ্ফোরিত হয়ে লেলিহান ছড়াবে। আফগান থেকে বঙ্গ, যেখানেই এর সূচনা হোক না কেন ক্ষণ মুহুর্তেই তা সব দিকে ছড়িয়ে পড়বে!
এ যুদ্ধে অংশগ্রহণকারীদের আমরা সাদরণভাবে তিনটি শ্রেণীতে দেখতে পাব।
এক গণতান্ত্রিক আদর্শ, আধিপত্য, সার্বভৌমত্ব, জাতিয়তাবাদের জন্যে লড়াইকারী পাকিস্থান। বাংলাদেশও এ ক্ষেত্রে অভিন্ন।
দুই হিন্দুত্ববাদের জন্যে লড়াইকারী ভারত। উপমহাদেশীয় সকল ফাসাদের মূলে যারা, যারা ইসলাম ও মুসলিমদের জন্যে তাদের দেশে এক নারকীয় জাহান্নাম বানিয়ে রেখেছে
তিন ইসলাম ও মুসলিমদের হেফাজত এবং বিজয়ের জন্যে জিহাদকারী মুজাহিদীন। যারা আল্লাহর কালেমা সমুন্নত করার উদ্দেশ্যে সবরকম পার্থিব স্বার্থের ঊর্ধে থেকে লড়াই করবে।
এবং বাকি যারা এই যুদ্ধে অংশগ্রহণ করবে তারাও এই তিন শ্রেণীর ছায়াতলেই অংশগ্রহণ করবে। হোক আমেরিকা, রাশিয়া, চীন, মায়ানমার বা দুনিয়ার দূর প্রান্তের হিজরতকারী মুজাহিদীন। প্রত্যেকেই নিজ নিজ মিত্রদের সাথে সমবেত হবে।
যদিও যুদ্ধটির নামকরণ রাসূল (সল্লাল্লাহু আলাইহি) করেছেন। যদিও যুদ্ধটি হবে মালাউন হিন্দুদের সাথে মুসলিমদের যুদ্ধ। যদিও মুজাহীদিনরাই হবে এই যুদ্ধের বরপুত্র ও বিজয়ী। তথাপিও এটি একটি সর্বদলীয় যুদ্ধ হবে। জাত-পাত নির্বিশেষে সবাই এতে অংশ নিবে। সামরিক-বেসামরিক কেউই বাদ যাবেনা মোদ্দা কথা দুনিয়া সৃষ্টি তথা মুহাম্মাদ (সল্লাল্লাহু আলাইহি) এর নবুওয়ত প্রাপ্তির পর থেকে আজ অবধি এবং ক্বিয়ামত পর্যন্ত এমন যুদ্ধ ভারতবাসী প্রত্যক্ষ্য করেনি। আর কখনো করবেনা। নানা কারণেই শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে ভারতীয় উপমহাদেশে বহুমুখী শক্তির উত্থান, আধিপত্য, জ্যেত্যাভিমান, আন্তঃধর্মীয় সংঘর্ষ এক ভয়াবহ যুদ্ধের দিকে ধাবিত করছে ভারতের ভবিষ্যতকে।
তাই গাজওয়াতুল হিন্দ শুধু একদিনের এক আকষ্মিক যুদ্ধ নয় যে কেউ চাইলেই মুখ ফিরিয়ে নিবে বা অজ্ঞতার দোহাই দিয়ে ঘরে বসে থাকবে। বরং এই যুদ্ধ সকল ধর্মের, সকল মতের, সকল পথের, সকল বয়সের প্রতিজনের কাছে উপস্থিত হবে এবং যুদ্ধের উত্তপ্ততা পরখ করাবে।
উপর্যুপরি বৃটিশদের হিন্দুস্থান শাসন, ভারতকে মনস্তাত্ত্বিক দিক দিয়ে বিভক্তি, হিন্দু-মুসলিম বৈষম্য সৃষ্টি, অখন্ড হিন্দুস্থানকে খন্ড-বিখন্ড করণ, বৃটিশদের থেকে হিন্দুস্থানের স্বাধীনতা উদ্ধার।
হিন্দু-মুসলিম আলাদা রাষ্ট্রের চেতনায় ভারত-পাকিস্থান নামের আলাদা রাষ্ট্রের জন্ম হওয়া, দেশ ভাগের সময়
ধর্মীয় দাঙ্গা, নতুন করে ভারতের হিন্দুত্ত্ববাদ রাষ্ট্র হিসেবে আবির্ভাব,
ইসলামের প্রতি চরম বিদ্বেষ ও যুদ্ধংদেহী মনোভাব, অনেকগুলি দাঙ্গা ও হাজারে হাজারে মুসলিম হত্যা, বাবরি মাসজিদের মতো শত মসজিদকে শহীদ ও বিলীন করে দেয়া,
১৯৭১ এ বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্ম, ত্রিমুখী নীতির মেরুকরণ, ৭১ সালে পাকিস্থানের বিরুদ্ধে বাংলাদেশকে ভারতের সহায়তা, পাকিস্থানের পরাজয় ও প্রতিশোধপরায়ণতা, ভারত-পাকিস্থানের পরমাণু অস্ত্রধর রাষ্ট্র হওয়া,
বিশ্ব ক্ষমতা দ্বিমেরুকরণ হওয়া এবং চীন-রাশিয়া ও আমেরিকা-ন্যাটু বেল্টে ভারত-পাকিস্থান আলাদা আলাদা বেল্টের অন্তর্ভুক্ত হওয়া, চিত্রঃ পাকিস্থানের আত্নসমর্পন
উপমহাদেশের সার্বিক আধিপত্য,
কাশ্মির স্বাধীনতা ইস্যুতে ভারত-পাকিস্থানের বিপরীত অবস্থা ও একটি দীর্গ যুদ্ধের মাঝ দিয়ে যাওয়া ভারত-পাকিস্থানের সার্বভৌমত্ব
কাশ্মির ইস্যু উত্তপ্ত হওয়া, কাশ্মির স্বাধীনতা আন্দোলন জোরদার হওয়া, কাশ্মির নিয়ে ভারত-পাকিস্থানের ইঁদুর-বেড়াল নীতি, বিশ্ব
মুসলিমদের কাশ্মিরের প্রতি সংহতি, মুজাহিদীনদের কাশ্মির জিহাদের আগ্রহ, নীতিগতভাবে কাশ্মির ইস্যুতে আস্থা হারানো
পাকিস্থান-জাতিসংঙ্গের চালাকি প্রচেষ্টা, সশস্ত্র লড়াই-ই একমাত্র কাশ্মির সমস্যার সমাধান অনুধাবিত হওয়া, বাংলাদেশের ভারতের প্রতি একমুখী সমর্থন, গোলামি নীতি, বাংলাদেশকে ভারতের দাস রাষ্ট্রে পরিণত করা, একটি মুসলিম প্রধান রাষ্ট্রে সর্বাংশে হিন্দুত্বকরণ,
একনিষ্ট আলিম ও তাওহিদী জনতাকে নিগৃহীত করা, আরাকানে বৌদ্ধদের দ্বারা মুসলিমদের জাতিগত ধর্ষণ-উচ্ছেদ ও গণহত্যা, ভারতের প্রকাশ্য সমর্থন, ভারত-মায়ানমার মিলে যৌথ সামরিক মহড়া, আসামের মুসলিমদের গ্রেপ্তার, নাগিরিকত্ব বাতিল, ঘর-বাড়ি ধবংস করা, ভারতের সাতটি অঙ্গের(Seven Sisters) স্বাধীনতার দাবী ও সংগ্রাম, পানি নিয়ে ভারতের সাথে বাংলাদেশ পাকিস্থানের দ্বন্দ্ব, ভারত-পাকিস্থান উভয় রাষ্ট্রের
কিন্তু সিরিয়া যুদ্ধের কোনই লক্ষণ নেই। ইমাম আনোয়ার আল আওলাকি (রাহিঃ) ইরাক অবরোধের পর পরই বলেছিলেন এখন আমাদের সিরিয়ার দিকে তাকানো উচিত, কেননা হাদীস অনুযায়ী শীঘ্রয় সিরিয়া অবরুদ্ধ হবে! সুবহানাল্লাহ! শাইখ আওলাকি ২০১১ সালে শহীদ হোন এবং সিরিয়া অবরোধ দেখার আগেই!
২০১২ সাল। আরব বসন্তের ধোয়া ক্রমেই বিস্তৃত হচ্ছে। অতঃপর সিরিয়ায় তা পৌঁছাল এবং সশস্ত্র লড়াইয়ে রুপান্তরিত হল। শুরু হল গৃহ যুদ্ধ। কালব বংশের নুসাইরিদের আগ্রাসন, লাখো আহলে সুন্নাহর মৃত্যু, এক কোটি সিরিয়ানদের দেশান্তরি, রাশিয়া, ইরান আর আমেরিকার সিরিয়া যুদ্ধে অংশগ্রহণ এবং স্মরণকালের ভয়াবহ অবরোধ আরোপিত হলো সিরিয়া বাসীর ওপর।
অতঃপর আজ ৬ বছর অতিবাহিত হয়েছে সিরিয়া যুদ্ধের। ১০ লাখ নিহত, এর অধিক সংখ্যায় আহত। ২০১৫ সালেই অবরোধে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ৫০০ জন প্রায়! এটি হচ্ছে হাদীসের বাকি অংশের বাস্তবায়ন
তিনি আবার বললেন অচিরেই শামবাসীর নিকট কোন দীনার আসবে না এবং কোন খাদ্যশস্যও আসবে না। আমরা প্রশ্ন করলাম, এ বিপদ কোন দিক থেকে আগমন করবে? তিনি বললেন, রোমের দিক থেকে। অতঃপর তিনি কিছুক্ষণ চুপ থেকে বললেন, আমার উম্মাতের শেষভাগে একজন খলীফা (ইমামুল মাহদি) হবে। সে হাত ভরে ভরে অর্থ সম্পদ দান করবে, গণনা করবে না।
এখন শুধু খলীফা ইমাম আল মাহদীর আগমন বাকি আছে!
সিরিয়া যুদ্ধই হবে শেষ যুদ্ধ, মহাযুদ্ধ। এই যুদ্ধের শেষ ভাগে ইমাম মাহদীর আগমন ঘটবে। ইমাম মাহদী দামেষ্কের উপকণ্ঠে গুতা শহরে
দুটি ভয়ংকর -নিকৃষ্ট-ভোগবাদী গোয়েন্দা সংস্থা 'র' এবং 'আইএসআই' এর কুট-কৌশল ও চক্রান্ত, বিদেশি পরাশক্তির এজেন্ট হওয়া, ভারত রাষ্ট্রে চরম মুসলিম বিদ্বেষী ও হিন্দু জঙ্গীসংগঠনের ক্ষমতাসীন হওয়া, আরএসএস, শিবসেনা, বজরংদের মুসলিম নিধন মানসিকতা ও একটি চূড়ান্ত যুদ্ধের প্রস্তুতি গ্রহণ, ভারতের সাথে ইজরাইলের বন্ধুত্ত্ব ও একাত্নতা, ভারত-পাকিস্থান সীমান্ত উত্তেজনা ও বার কয়েকের চাপা যুদ্ধ, মায়ানমারের বৌদ্ধ ও ভারতের হিন্দুদের জোটবদ্ধ হওয়া এবং মুসলিমদের বিরুদ্ধে নিজেদের আগ্রাসনসহ জানা-অজানা অসংখ্য কারণ যুগের পর যুগ ধরে গাজওয়াতুল হিন্দ'কে অত্যাবশ্যকীয় করে তুলেছে।
এর বাইরে শাহ নি'আমতুল্লাহর গাজওয়াতুল হিন্দ নিয়ে ৮০০ বছর আগে করে যাওয়া ভবিষ্যদ্বাণী, ইসলামের পুনরায় বিজয়ী হওয়ার যে জাগরণ প্রাচ্য থেকে প্রাশ্চাত্য, সিন্দু থেকে ইউফ্রেটিস নদীর তীর, আর বঙ্গপোসাগর থেকে আটলান্টিক মহাসাগর, ইন্দোনেশিয়া থেকে স্পেন তথা পৃথিবীর সর্বত্রই শুরু হয়েছে তারই ঢেউ আছড়ে পড়েছে উপমহাদেশেও। তাওহীদ ও জিহাদের এক নব জাগরন শুরু হয়েছে। বাশেঁরকেল্লা-বালাকোট বিজয়ের বার্তা নিয়ে ফিরে এসেছে, হিন্দের সমুদ্রে জিঞ্জির ছেঁড়া উচ্চ্বাসের গর্জন ওঠেছে। কাশ্মির থেকে আরাকান আজ জিহাদের জন্যে উর্বর ভূমি হিসেবে আবাদ হয়েছে। মুহাম্মাদ বিন কাসিমের উত্তরসুরীরা আজ হিন্দুস্তানের প্রতিটি ঘরে তাওহীদের কালেমা পৌছে দিতে বদ্ধপরিকর। সাম্রাজ্যবাদী শক্তির পর তৃতীয় শক্তি হিসেবে আজ আবির্ভূত হয়েছে উম্মতের মুজাহিদরা। সবাই তটস্থ। কি চায় তারা! ইসলামের বিজয়, কালিমার বুলন্দি আর মুসলিমদের মুক্তি। আল্লাহর ভূমিতে আল্লাহর আইনের শাসনই কেবল সক্ষম এতে! সুতরাং ভারত-পাকিস্থানের শত্রুতার সাথে আরেকটি নতুন খেলোয়ার মাঠে এসেছে, যারা এতটাই তীব্র, বাঁধভাঙা আর বে-পরোয়া যে সারা বিশ্ব পেরেশান, হয়রান। তারা আল্লাহ ও মুমিন ব্যতীত সবার সাথেই যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। তারা নতুন যুদ্ধা, যুদ্ধের সব পক্ষই তাদের প্রতিপক্ষ, না ভারত, না রাশিয়া-আমেরিকা আর না ইসলামের নাম ব্যবহারকারী পাকিস্থান! সবাই শত্রু। তারাই কেবল বন্ধু যারা আল্লাহর শরীয়তের জন্যে লড়াই করে। সুবহানাল্লাহ!
সুতরাং এইসব কিছু আল্লাহর রাসূলের ভবিষ্যদ্বাণী'কৃত যুদ্ধকে বাধ্যতামূলক ও অবশ্যম্ভাবী করেছে এবং আমাদের প্রজন্মে তা সংগঠিত হবার সব ধাপ পূরণ করেছে। হিন্দ এখন এক অভূতপূর্ব ভয়ংকর যুদ্ধের জন্যে প্রস্তুত!
কে আছ.....কাফেলা বদ্ধ হবে!
কিন্তু বন্ধু, তুমি কি জান যুদ্ধটি কিভাবে তোমাকে নাড়া দিবে এবং কি অবস্থায় তোমার সাথে সাক্ষাত করবে?
তুমি তো ভেবেই নিয়েছ-"একটা যুদ্ধ হয়তো হবে, কিছুটা ভয়ংকর হতেও পারে, কিন্তু তুমি বা তোমার পরিবার পার পেয়ে যাবে, ফাঁক গলে বেড়িয়ে যাবে(!) আরে, এটা তো গাজওয়াতুল হিন্দ, এটি মহাযুদ্ধ/বিশ্বযুদ্ধ হাদীসের ভাষায় মালহামাতুল কুবরা তো আর নয়......!"
না বন্ধু, তুমি ভুলই ভেবেছ, আর ভুলেই থেকে গেলে মাশুল টা চড়া হয়ে যাবে! তুমি কি জান- 'গাজওয়াতুল হিন্দ' মালহামাতুল কুবরা অর্থাৎ বিশ্বযুদ্ধের অংশই হবে! যখন শামে ইমাম মাহদী মালহামা/বিশ্বযুদ্ধে লিপ্ত থাকবেন তখন তুমি হিন্দুস্থানে গাজওয়াতুল হিন্দে ব্যস্ত থাকবে। উভয়টা মিলেই হবে মালহামতুল কুবরা বা তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ।
যুহায়র ইবনু হারব ও আলী ইবনু হুজর (রহঃ) জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূল (সাঃ) বলেন, "অচিরেই ইরাকবাসীরা না খাদ্যশস্য পাবে, না দিরহাম পাবে। আমরা জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রাসূল (সাঃ)! কার কারণে এ বিপদ আসবে”? তিনি বললেন- অনারবদের কারণে। তারা খাদ্যশস্য ও দিরহাম আসতে দিবে না। কিছু সময় চুপ থেকে তিনি আবার বললেন অচিরেই শামবাসীর নিকট কোন দীনার আসবে না এবং কোন খাদ্যশস্যও আসবে না। আমরা প্রশ্ন করলাম, এ বিপদ কোন দিক থেকে আগমন করবে? তিনি বললেন, রোমের দিক থেকে। অতঃপর তিনি কিছুক্ষণ চুপ থেকে বললেন, আমার উম্মাতের শেষভাগে একজন খলীফা (ইমামুল মাহদি) হবে। সে হাত ভরে ভরে অর্থ সম্পদ দান করবে, গণনা করবে না। সহীহ মুসলিম: অধ্যায় ৫৪/ফিৎনা ও কিয়ামতের আলামত, হাদিস নং: ৭০৫১, পাবলিশার: ইফাবা। বুখারী: অধ্যায় ৮১/ ফিৎনা ও কিয়ামতের আলামত।
২০০০ সালের অব্যবহিত পরেই ইরাকের ওপর অনারব আমেরিকা আর ন্যাটু জোট দ্বারা অবরোধ আরোপ করা হয়, যুদ্ধ চাপিয়ে দেয়া হয়। আন্তর্জাতিক ভাবে ইরাককে বিশ্ব বাজার থেকে বৈকট করা হয়েছিল এবং প্রায় ১০ লাখ ইরাকি সেই যুদ্ধে নিহত হয়েছিল। সাদ্দাম কে ফাঁসিতে ঝুলিয়েছিল এবং সকল সম্পদ ডাকাতি করা হয়েছিল। এটি ছিল হাদীসের প্রথম অংশের সত্যায়ন, ""অচিরেই ইরাকবাসীরা না খাদ্যশস্য পাবে, না দিরহাম পাবে। আমরা জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রাসূল (সাঃ)! কার কারণে এ বিপদ আসবে”? তিনি বললেন- অনারবদের কারণে। তারা খাদ্যশস্য ও দিরহাম আসতে দিবে না।"
রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের চুপ থাকা ও অতঃপর শাম(সিরিয়া) অবরোধের কথা বলার দ্বারা বুঝা যায় ইরাক অবরোধের কিছু দিন পরই সিরিয়া অবরোধ ও যুদ্ধের শিকার হবে। দেখতে দেখতেই ইরাক যুদ্ধের ১০ বছর অতিবাহিত হল।
Comment