মালির যুদ্ধ শেষ হয়নি
চার্লি ইংলিশ
| আপডেট: ০৪:৩৯, নভেম্বর ২২, ২০১৫ | প্রিন্ট সংস্করণ
মালির হোটেল থেকে জিম্মিদের মুক্ত করে নিয়ে যাচ্ছে নিরাপত্তা বাহিনী২০১৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি অর্থাৎ ফরাসি সেনারা জিহাদিদের সরিয়ে দেওয়ার পাঁচ দিন পর ফরাসি প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদ বিজয়ীর বেশে উত্তর মালির প্রতীকী মরুভূমি শহর তিমবুকতুতে আসেন।
ফরাসি সেনাদের ওই এলাকার সিংহভাগ পুনর্দখল করতে মাত্র ২৩ দিন সময় লেগেছিল, ইসলামিক রিপাবলিক অব আজাওয়াদের ঘোষণা অনুসারে, তার আগের নয় মাস ওই অঞ্চলটি ইসলামিক মাগরেবের (একিউআইএম) আল-কায়েদার দখলে ছিল। খুব কম ফরাসি প্রেসিডেন্ট ও বিশ্বনেতাই সে রকম দুর্দান্ত বিজয় লাভ করতে পেরেছিলেন বা কৃতজ্ঞ মানুষের কাছ থেকে ও রকম অভ্যর্থনা পেয়েছিলেন।
ফ্রান্স তখন এক বিরল ও ঝুঁকিপূর্ণ ভূমি অভিযানের মাধ্যমে উত্তর মালি থেকে জিহাদিদের তাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, যে ধরনের অভিযান ওবামা প্রশাসন তখন একরকম বাতিল করে দিয়েছিল। কিন্তু র্যা ডিসন ব্লু হোটেলে জিহাদি আক্রমণ এই প্রমাণ দেয় যে লড়াই শেষ হয়নি, এখনো চলছে।
২০১২ সালে মালির জিহাদি সমস্যা মূলত দেশটির উত্তরের দিকেই সীমাবদ্ধ ছিল। মালির পাশেই রয়েছে সাহারা মরুভূমি, প্রতিবেশী হিসেবে সাহারা খুব সুখকর জায়গা নয়। এই সাহারা মরুভূমিতে পাচারকারী, জিহাদি ও মাদক চোরাকারবারিদের এক বিষাক্ত চক্র গড়ে উঠেছে, তিমবুকতুর গভর্নর তার নাম দিয়েছেন ইসলামোনারকোট্রাফিকুয়্যান্টস।
লিবিয়ার নেতা মুয়াম্মার গাদ্দাফির পতনের পর মালির সেনাবাহিনীর পক্ষে এই বিশাল মরু অঞ্চল এককভাবে পাহারা দেওয়া খুব কঠিন হয়ে উঠেছে, যাদের হাতে আবার পর্যাপ্ত অস্ত্রশস্ত্রও নেই। দেশটির সেনারা এতটা হীনবল হয়ে পড়েছে যে তাদের অনেকেই ময়দান থেকে ঘরে ফিরে গেছে। এর ফলে দেখা গেল, মালিতে সামরিক অভ্যুত্থান ও ক্ষমতাশূন্যতা সৃষ্টি হলো, যার মধ্যে তুয়ারেগ বিচ্ছিন্নতাবাদী এমএনএলএ ও তাদের জিহাদি সঙ্গীরা ঢুকে পড়ল।
ফ্রান্সের সেই হস্তক্ষেপের আড়াই বছর পর মালি ও তার আন্তর্জাতিক সঙ্গীরা দেশটি পুনর্নির্মাণে কাজ করছে। দেশটিতে ২০১৩ সালে যে নির্বাচন হলো, তার মাধ্যমে ক্যারিশম্যাটিক ও বর্ষীয়ান রাজনীতিক ইব্রাহিম বুবাকার কেইতা আবারও ক্ষমতায় আসেন। পরবর্তী বছর ফরাসি রাষ্ট্রদূতের অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানে ইউরোপীয় সেনাদের উপস্থিতি দেখা গেল, যাঁরা মালির সেনাবাহিনীকে লড়াই-সক্ষম সেনাতে রূপান্তর করার ব্যাপারে খুব সতর্কতার সঙ্গে আত্মবিশ্বাসী ছিলেন।
আলজিয়ার্সে দীর্ঘদিন ধরে যে শান্তি আলোচনা চলছিল, ২০১৫ সালের গ্রীষ্মে বিদ্রোহী জোট ও সিএমএর মধ্যকার এক চুক্তির মাধ্যমে তার পরিসমাপ্তি হয়। আর সাম্প্রতিক সময়ে এটা বাস্তবায়নে বেশ অগ্রগতিও হয়েছে। না, ফ্রান্স যুদ্ধের ময়দান থেকে ভীরুর মতো পালিয়ে আসেনি, তারা মালিতে সেনা মোতায়েন করেছে, তারা সেখানে বৃহত্তর পরিসরে অভিযান চালানোর ব্যাপারে অঙ্গীকারবদ্ধ, যার সংকেত হচ্ছে বার্কহানে।
কিন্তু মালির অবস্থা ইরাক ও আফগানিস্তানের মতো নয়, সেখানকার দ্বন্দ্ব পুরোপুরি শেষ হয়নি। দেশটির উত্তরে এখনো বিভিন্ন নামের সশস্ত্র গোষ্ঠী রয়েছে, একিউআইএম ছাড়াও জিহাদি সংগঠন আল-মুরাবিতুন (যারা বামাকো হামলার দায় স্বীকার করেছে) ও আনসার দ্বীন সেখানে রয়েছে, আবার সিএমএর ছত্রচ্ছায়ায় সেখানে এইচসিইউএ ও এমএনএলএর মতো বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনগুলো কাজ করছে। আবার সেখানে সরকারপন্থী জঙ্গি বাহিনীও রয়েছে, যেমন গানাদা কয় ও গেটিয়া। দেশটির একটি অংশে তার নেতারাও যেতে পারেন না। ফলে ব্যাপারটা এমন দাঁড়িয়েছে যে বিশ্বের শান্তিরক্ষী বাহিনীগুলোর মধ্যে জাতিসংঘের মিনুসমার কাজ অন্যতম বিপজ্জনক কাজগুলোর একটি হয়ে পড়েছে।
সম্প্রতি এই মরুভূমিতে সৃষ্টি হওয়া জিহাদি তৎপরতা নাইজার নদী পার হয়ে মালির কেন্দ্রীয় ও দক্ষিণ অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে, এটা এক বিপৎসংকেত। এ বছরের মার্চে বামাকোর প্রবাসীদের মধ্যে জনপ্রিয় লাঁ তেরাস বারে গুলি ও বোমা হামলা হয়েছে। এরপর আগস্টে মালির মধ্যাঞ্চলের বাইব্লুস হোটেলে হামলা হয়, এতে ১৩ জন মানুষ মারা যায়, এই হোটেলে সাধারণত জাতিসংঘের কর্মীরা যাতায়াত করতেন। পরবর্তীকালে আমরা জানতে পারি, মালির কেন্দ্রীয় অঞ্চলের গোষ্ঠী ম্যাসিনা লিবারেশন ফ্রন্ট (এফএলএম) এ হামলা চালিয়েছিল।
ইউরোপিয়ান কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশনসের অতিথি ফেলো অ্যান্ড্রু লেবোভিচ বলেন, এই যে মালির উত্তরাঞ্চলে হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে, তার অনিবার্য পরিণতি হিসেবেই এসব হামলা হচ্ছে। আন্তর্জাতিক সম্পর্কবিষয়ক প্রতিষ্ঠান চ্যাথাম হাউসের পল মেলির ভাষ্য হচ্ছে, এ ধরনের নিরীহ লক্ষ্যবস্তুতে হামলা ‘বিরক্তি উৎপাদনকারী’ ঘটনা। মাঝেমধ্যে জিহাদিরা এসব হামলা চালালেও সব সময় যে তারাই এই হামলা চালায়, ব্যাপারটা সে রকম নয় যে জিহাদিদের সঙ্গে একিউআইএমের সম্পর্ক আছে। এসব গোষ্ঠীর অনেক যোদ্ধাই প্রতিশ্রুতিবদ্ধ সালাফি, আবার অনেকের কাছে এই গোষ্ঠীর লক্ষ্য কোনো ব্যাপারই নয়। ২০১২ সাল থেকে স্থানীয় অধিবাসীরা দেখছে, এই যোদ্ধারা অনায়াসে এক গোষ্ঠী থেকে আরেক গোষ্ঠীতে চলে যাচ্ছে, তারা জিহাদি গোষ্ঠী থেকে ধর্মনিরপেক্ষ বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীতে যাচ্ছে আবার ফেরতও আসছে, তা সেসব গোষ্ঠীর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য যা-ই হোক না কেন।
জিহাদিদের দলভুক্তির যেমন রাজনৈতিক মাত্রা আছে, তেমনি তার অর্থনৈতিক মাত্রাও আছে। সাধারণত গরিব তরুণেরাই এসব গোষ্ঠীতে যোগ দেন। দেশহীন তরুণেরা, যাঁদের খুব অল্পসংখ্যকেরই জাতিগত আনুগত্য ও অর্থনৈতিক ভবিষ্যৎ রয়েছে। সারা পৃথিবীতেই মালি তার সংস্কৃতির জন্য বিখ্যাত, আর এই সেদিন পর্যন্ত মালির অনেক মানুষই পর্যটন থেকে জীবিকা নির্বাহ করেছে। দেশটির উত্তরে সেই ব্যবসা দীর্ঘদিন ধরেই নেই, আর দক্ষিণেও তা হুমকির মুখে রয়েছে। শুক্রবারের হামলার পর এই পরিস্থিতি উন্নতির সম্ভাবনা আরও কমেছে।
দ্য গার্ডিয়ান থেকে নেওয়া: অনুবাদ: প্রতীক বর্ধন
চার্লি ইংলিশ: লেখক ও দ্য গার্ডিয়ান-এর আন্তর্জাতিক সংবাদ বিভাগের সাবেক প্রধান।
চার্লি ইংলিশ
| আপডেট: ০৪:৩৯, নভেম্বর ২২, ২০১৫ | প্রিন্ট সংস্করণ
মালির হোটেল থেকে জিম্মিদের মুক্ত করে নিয়ে যাচ্ছে নিরাপত্তা বাহিনী২০১৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি অর্থাৎ ফরাসি সেনারা জিহাদিদের সরিয়ে দেওয়ার পাঁচ দিন পর ফরাসি প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদ বিজয়ীর বেশে উত্তর মালির প্রতীকী মরুভূমি শহর তিমবুকতুতে আসেন।
ফরাসি সেনাদের ওই এলাকার সিংহভাগ পুনর্দখল করতে মাত্র ২৩ দিন সময় লেগেছিল, ইসলামিক রিপাবলিক অব আজাওয়াদের ঘোষণা অনুসারে, তার আগের নয় মাস ওই অঞ্চলটি ইসলামিক মাগরেবের (একিউআইএম) আল-কায়েদার দখলে ছিল। খুব কম ফরাসি প্রেসিডেন্ট ও বিশ্বনেতাই সে রকম দুর্দান্ত বিজয় লাভ করতে পেরেছিলেন বা কৃতজ্ঞ মানুষের কাছ থেকে ও রকম অভ্যর্থনা পেয়েছিলেন।
ফ্রান্স তখন এক বিরল ও ঝুঁকিপূর্ণ ভূমি অভিযানের মাধ্যমে উত্তর মালি থেকে জিহাদিদের তাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, যে ধরনের অভিযান ওবামা প্রশাসন তখন একরকম বাতিল করে দিয়েছিল। কিন্তু র্যা ডিসন ব্লু হোটেলে জিহাদি আক্রমণ এই প্রমাণ দেয় যে লড়াই শেষ হয়নি, এখনো চলছে।
২০১২ সালে মালির জিহাদি সমস্যা মূলত দেশটির উত্তরের দিকেই সীমাবদ্ধ ছিল। মালির পাশেই রয়েছে সাহারা মরুভূমি, প্রতিবেশী হিসেবে সাহারা খুব সুখকর জায়গা নয়। এই সাহারা মরুভূমিতে পাচারকারী, জিহাদি ও মাদক চোরাকারবারিদের এক বিষাক্ত চক্র গড়ে উঠেছে, তিমবুকতুর গভর্নর তার নাম দিয়েছেন ইসলামোনারকোট্রাফিকুয়্যান্টস।
লিবিয়ার নেতা মুয়াম্মার গাদ্দাফির পতনের পর মালির সেনাবাহিনীর পক্ষে এই বিশাল মরু অঞ্চল এককভাবে পাহারা দেওয়া খুব কঠিন হয়ে উঠেছে, যাদের হাতে আবার পর্যাপ্ত অস্ত্রশস্ত্রও নেই। দেশটির সেনারা এতটা হীনবল হয়ে পড়েছে যে তাদের অনেকেই ময়দান থেকে ঘরে ফিরে গেছে। এর ফলে দেখা গেল, মালিতে সামরিক অভ্যুত্থান ও ক্ষমতাশূন্যতা সৃষ্টি হলো, যার মধ্যে তুয়ারেগ বিচ্ছিন্নতাবাদী এমএনএলএ ও তাদের জিহাদি সঙ্গীরা ঢুকে পড়ল।
ফ্রান্সের সেই হস্তক্ষেপের আড়াই বছর পর মালি ও তার আন্তর্জাতিক সঙ্গীরা দেশটি পুনর্নির্মাণে কাজ করছে। দেশটিতে ২০১৩ সালে যে নির্বাচন হলো, তার মাধ্যমে ক্যারিশম্যাটিক ও বর্ষীয়ান রাজনীতিক ইব্রাহিম বুবাকার কেইতা আবারও ক্ষমতায় আসেন। পরবর্তী বছর ফরাসি রাষ্ট্রদূতের অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানে ইউরোপীয় সেনাদের উপস্থিতি দেখা গেল, যাঁরা মালির সেনাবাহিনীকে লড়াই-সক্ষম সেনাতে রূপান্তর করার ব্যাপারে খুব সতর্কতার সঙ্গে আত্মবিশ্বাসী ছিলেন।
আলজিয়ার্সে দীর্ঘদিন ধরে যে শান্তি আলোচনা চলছিল, ২০১৫ সালের গ্রীষ্মে বিদ্রোহী জোট ও সিএমএর মধ্যকার এক চুক্তির মাধ্যমে তার পরিসমাপ্তি হয়। আর সাম্প্রতিক সময়ে এটা বাস্তবায়নে বেশ অগ্রগতিও হয়েছে। না, ফ্রান্স যুদ্ধের ময়দান থেকে ভীরুর মতো পালিয়ে আসেনি, তারা মালিতে সেনা মোতায়েন করেছে, তারা সেখানে বৃহত্তর পরিসরে অভিযান চালানোর ব্যাপারে অঙ্গীকারবদ্ধ, যার সংকেত হচ্ছে বার্কহানে।
কিন্তু মালির অবস্থা ইরাক ও আফগানিস্তানের মতো নয়, সেখানকার দ্বন্দ্ব পুরোপুরি শেষ হয়নি। দেশটির উত্তরে এখনো বিভিন্ন নামের সশস্ত্র গোষ্ঠী রয়েছে, একিউআইএম ছাড়াও জিহাদি সংগঠন আল-মুরাবিতুন (যারা বামাকো হামলার দায় স্বীকার করেছে) ও আনসার দ্বীন সেখানে রয়েছে, আবার সিএমএর ছত্রচ্ছায়ায় সেখানে এইচসিইউএ ও এমএনএলএর মতো বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনগুলো কাজ করছে। আবার সেখানে সরকারপন্থী জঙ্গি বাহিনীও রয়েছে, যেমন গানাদা কয় ও গেটিয়া। দেশটির একটি অংশে তার নেতারাও যেতে পারেন না। ফলে ব্যাপারটা এমন দাঁড়িয়েছে যে বিশ্বের শান্তিরক্ষী বাহিনীগুলোর মধ্যে জাতিসংঘের মিনুসমার কাজ অন্যতম বিপজ্জনক কাজগুলোর একটি হয়ে পড়েছে।
সম্প্রতি এই মরুভূমিতে সৃষ্টি হওয়া জিহাদি তৎপরতা নাইজার নদী পার হয়ে মালির কেন্দ্রীয় ও দক্ষিণ অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে, এটা এক বিপৎসংকেত। এ বছরের মার্চে বামাকোর প্রবাসীদের মধ্যে জনপ্রিয় লাঁ তেরাস বারে গুলি ও বোমা হামলা হয়েছে। এরপর আগস্টে মালির মধ্যাঞ্চলের বাইব্লুস হোটেলে হামলা হয়, এতে ১৩ জন মানুষ মারা যায়, এই হোটেলে সাধারণত জাতিসংঘের কর্মীরা যাতায়াত করতেন। পরবর্তীকালে আমরা জানতে পারি, মালির কেন্দ্রীয় অঞ্চলের গোষ্ঠী ম্যাসিনা লিবারেশন ফ্রন্ট (এফএলএম) এ হামলা চালিয়েছিল।
ইউরোপিয়ান কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশনসের অতিথি ফেলো অ্যান্ড্রু লেবোভিচ বলেন, এই যে মালির উত্তরাঞ্চলে হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে, তার অনিবার্য পরিণতি হিসেবেই এসব হামলা হচ্ছে। আন্তর্জাতিক সম্পর্কবিষয়ক প্রতিষ্ঠান চ্যাথাম হাউসের পল মেলির ভাষ্য হচ্ছে, এ ধরনের নিরীহ লক্ষ্যবস্তুতে হামলা ‘বিরক্তি উৎপাদনকারী’ ঘটনা। মাঝেমধ্যে জিহাদিরা এসব হামলা চালালেও সব সময় যে তারাই এই হামলা চালায়, ব্যাপারটা সে রকম নয় যে জিহাদিদের সঙ্গে একিউআইএমের সম্পর্ক আছে। এসব গোষ্ঠীর অনেক যোদ্ধাই প্রতিশ্রুতিবদ্ধ সালাফি, আবার অনেকের কাছে এই গোষ্ঠীর লক্ষ্য কোনো ব্যাপারই নয়। ২০১২ সাল থেকে স্থানীয় অধিবাসীরা দেখছে, এই যোদ্ধারা অনায়াসে এক গোষ্ঠী থেকে আরেক গোষ্ঠীতে চলে যাচ্ছে, তারা জিহাদি গোষ্ঠী থেকে ধর্মনিরপেক্ষ বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীতে যাচ্ছে আবার ফেরতও আসছে, তা সেসব গোষ্ঠীর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য যা-ই হোক না কেন।
জিহাদিদের দলভুক্তির যেমন রাজনৈতিক মাত্রা আছে, তেমনি তার অর্থনৈতিক মাত্রাও আছে। সাধারণত গরিব তরুণেরাই এসব গোষ্ঠীতে যোগ দেন। দেশহীন তরুণেরা, যাঁদের খুব অল্পসংখ্যকেরই জাতিগত আনুগত্য ও অর্থনৈতিক ভবিষ্যৎ রয়েছে। সারা পৃথিবীতেই মালি তার সংস্কৃতির জন্য বিখ্যাত, আর এই সেদিন পর্যন্ত মালির অনেক মানুষই পর্যটন থেকে জীবিকা নির্বাহ করেছে। দেশটির উত্তরে সেই ব্যবসা দীর্ঘদিন ধরেই নেই, আর দক্ষিণেও তা হুমকির মুখে রয়েছে। শুক্রবারের হামলার পর এই পরিস্থিতি উন্নতির সম্ভাবনা আরও কমেছে।
দ্য গার্ডিয়ান থেকে নেওয়া: অনুবাদ: প্রতীক বর্ধন
চার্লি ইংলিশ: লেখক ও দ্য গার্ডিয়ান-এর আন্তর্জাতিক সংবাদ বিভাগের সাবেক প্রধান।
Comment