আলহামদুলিল্লাহ, ছুম্মা আলহামদুলিল্লাহ। আল্লাহ পাকের অশেষ মেহেরবানীতে ইমারতে ইসলামিয়া আফগানিস্তানের জানবায তালিবান মুজাহিদিনরা একের পর এক এলাকা বিজয় করে নিচ্ছেন এবং কালিমা খচিত পতাকা উড়িয়ে দিচ্ছেন। শুরুতে ও শেষে সকল প্রশংসা কেবল আল্লাহর জন্যই।
আফগানিস্তানের নবম প্রাদেশিক রাজধানীও তালেবানের দখলে
বিশেষ করে বর্তমানে বিভিন্ন প্রাদেশিক রাজধানী নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিচ্ছেন। এরই ধারাবাহিকতায় আফগানিস্তানের ৩৪ প্রাদেশিক রাজধানীর মধ্যে ইতিমধ্যে তালেবান ৯টি দখল করে নিয়েছে। গত শুক্রবার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত তাদের হাতে নয়টি প্রাদেশিক রাজধানীর নিয়ন্ত্রণ চলে এসেছে। আল্লাহু আকবার।
মঙ্গলবার তালেবান তিনটি প্রাদেশিক রাজধানী দখল করে। এগুলো হচ্ছে দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশের ফারাহ নগরী, উত্তরাঞ্চলীয় বাগলান প্রদেশের পুল-ই-খুমরি নগর ও প্রত্যন্ত বাদাশশান প্রদেশের ফৈজাবাদ।
এর আগে নিমরোজ, জাউজান, সার-ই-পুল, কুন্দুজ এবং তাখার প্রদেশকে মুরতাদ কাবুল মিলিশিয়াদের থেকে মুক্ত করেন তালিবান মুজাহিদিনরা। গত সোমবার আফগানিস্তানের দ্বিতীয় বৃহত্তম প্রদেশ সামঙ্গানের রাজধানী আইবাকের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছেন।
তালেবান বাহিনী মঙ্গলবার পুল-ই-খুমরি দখল করে। নগরীটি কাবুল থেকে মাত্র ১২৫ মাইল দূরে অবস্থিত। এই বিজয় বেশ তাৎপর্যপূর্ণ।
আল জাজিরার রব ম্যাকব্রাইড রাজধানী কাবুল থেকে বলেন, এর ফলে খোদ কাবুল এখন নিরাপত্তাগত ঝুঁকিতে পড়ে গেল।
ইইউর সিনিয়র এক কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, তালেবান বাহিনী এখন দেশটির ৬৫ ভাগ এলাকা নিয়ন্ত্রণ করছে। তারা আরো ১১টি প্রাদেশিক রাজধানী দখল করার পর্যায়ে রয়েছে। তাই ১১টি প্রাদেশিক রাজধানীর পতন ঘটতে পারে যেকোনো সময়।
লক্ষ্য অর্জনে সরকারি সেনাদের বিরুদ্ধে তালেবান তাদের অভিযান জোরদার করেছে। তারা একের পর এক এলাকা দখল করে অগ্রযাত্রা অব্যাহত রেখেছে। যেকোনো মুহূর্তে রাজধানী কাবুলের পতন ঘটতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।
পরিস্থিতি এতটাই বিপজ্জনক যে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য তাদের নাগরিকদের দেশটি ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে। ভারত তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে আনতে উড়োজাহাজ পাঠিয়েছে।
ভারতীয় কনস্যুলেট থেকে করা এক টুইটে জানানো হয়েছে, নয়া দিল্লির উদ্দেশ্যে মাজার-ই-শরিফ থেকে একটি বিশেষ বিমান ছেড়ে যাচ্ছে। এ অঞ্চলে থাকা যে কোনো ভারতীয় নাগরিককে ওই বিমানে আফগানিস্তান ছাড়ার আহবান জানানো হচ্ছে। এ জন্য শুধু ভারতীয় নাগরিকদের নিজেদের পুরো নাম ও পাসপোর্টের নাম্বার দেখালেই চলবে
সাবধানতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে ঠিক এক মাস আগে, ১০ জুলাই, কান্দাহার কনস্যুলেট বন্ধ করে প্রায় ৫০ জন ভারতীয়কে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছিল।
সূত্র : আল জাজিরা ও নিউ ইয়র্ক টাইমস এবং দৈনিক পত্রিকা
*********
অন্যদিকে কুন্দুজের জার্মান ঘাঁটি তালেবানের কব্জায়। (আলহামদুলিল্লাহ)
তালেবানদের হাত পতন ঘটা কুন্দুজের জার্মান ঘাঁটিও এখন তাদের দখলে। মিলিশিয়া বাহিনীটি কুন্দুজ দখলের পর গুঞ্জন উঠেছিল যে, জার্মানি হয়তো আবারও সেখানে সেনা পাঠাবে। তবে জার্মানি এবার স্পষ্ট করেই জানিয়েছে, আফগানিস্তানে সেনা পাঠানোর কোনো ইচ্ছাই তাদের নেই। দীর্ঘদিন কুন্দুজে জার্মান সেনাদের শক্ত ঘাঁটি ছিল। তবে দেশটি থেকে বিদেশি সেনাদের প্রত্যাহারের অংশ হিসেবে জুন মাসেই সেখান থেকে সকল জার্মান সেনাকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়।
জার্মানি আবারও সেখানে সেনা পাঠাবে এমন দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী। তিনি এক টুইট বার্তায় বলেন, আপাতত জার্মান সেনা ফেরত পাঠানোর প্রশ্ন নেই।
উত্তর আফগানিস্তান থেকে রাজধানী কাবুল ঢুকতে কৌশলগত দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কুন্দুজ। এখানেই দীর্ঘ ১০ বছর জার্মান সেনার ঘাঁটি ছিল। গত দশ বছরে জার্মান সেনা এ অঞ্চল সম্পূর্ণ নিজেদের আধিপত্যে রেখেছিল। এখন কুন্দুজ দখল করা মানে কাবুলের পথে অনেকটাই এগিয়ে গেছে তালেবান।
*********
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের যে সিদ্ধান্ত তিনি নিয়েছেন, সে জন্য তাঁর কোনো অনুশোচনা নেই। এ ছাড়া আফগান নেতাদের ঐক্যবদ্ধ ও দেশের জন্য লড়াই করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। গতকাল মঙ্গলবার এসব কথা বলেন বাইডেন। খবর বিবিসির।
আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধের বয়স প্রায় ২০ বছর। এখন তারা এ যুদ্ধের সমাপ্তি টানছে। এ প্রসঙ্গে বাইডেন বলেন, এই ২০ বছরে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যয় হয়েছে এক ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি। এ যুদ্ধে হাজারো মার্কিন সেনা নিহত হয়েছে।
বাইডেন বলেন, আফগান বাহিনীকে বিমান–সহায়তা দিয়ে যাবে তাঁর দেশ। এ ছাড়া সেনাদের বেতন-ভাতা, সরঞ্জাম ও খাদ্যসহায়তাও চালু রাখা হবে।
কিন্তু তিনি আর কখনো আফগানে মার্কিন সেনা পাঠাবেন না বলে অনেক আগেই নিজের অঙ্গিকার ব্যক্ত করেছেন।
সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এ আশা করা যায় যে, আল্লাহর ইচ্ছায় খুব শীঘ্রই আফগানিস্তানে ইমারতে ইসলামিয়া পুনরায় নিজেরদেরকে ক্ষমতার আসনে অলংকিত করবেন। আবার কাবুলের আকাশে-বাতাসে কালিমা খচিত পতাকা পতপত করে উড়বে, ইনশা আল্লাহ। আল্লাহর ইচ্ছায় আফগানের জনগণ শরীয়াহর শাসনব্যবস্থার অধীনে মুক্ত বাতাসে স্বাধীনভাবে জীবন যাপন করতে পারবেন।
আমরা আমাদের রবের নিকট সকাতরে প্রার্থনা করি, তিনি যেন আমাদের মুজাহিদ ভাইদের সাহায্য ও বিজয়ধারা অব্যাহত রাখেন। যার দ্বারা বিশ্ব মুসলিমের অন্তর প্রশান্তিতে ভরে যায় আর কুফফার বিশ্বের জালা কয়েকগুণ বেড়ে যায়। আমীন ইয়া রব্বাল আলামীন।
**********
আপনাদের নেক দু‘আয় মুজাহিদ ভাইদেরকে ভুলে যাবেন না।
আপনাদের নেক দু‘আয় মুজাহিদ ভাইদেরকে ভুলে যাবেন না।
Comment