Announcement

Collapse
No announcement yet.

জাতীয়তাবাদের অভিশাপ।

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • জাতীয়তাবাদের অভিশাপ।

    আজকাল সোস্যাল মিডিয়ায় বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদ এবং জাতির পিতা নিয়ে খুব তর্ক দেখা যাচ্ছে। আওয়ামী পন্থীরা এখন আবার বোল পাল্টিয়ে মুজিবকে বাঙালি জাতির পিতা বলতে চাচ্ছেন। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে শেখ মুজিবের জন্মের হাজার বছর পূর্ব হতে এ অঞ্চলকে মানুষ বাঙ্গাল নামেই চিনতেন, তাহলে শেখ মুজিব বাঙ্গালি জাতির পিতা হন কেমনে ? তাছাড়া বাংলাভাষী পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা, আসামসহ পৃথিবীর নানা স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে, তাহলে শেখ মুজিব বাঙ্গাল অঞ্চলের মাঝে অবিসংবাদীত হয় কেমনে ?

    বাংলা অঞ্চলের ইতিহাস খুজলে দেখা যায় যে, মধ্যযুগে শামসুদ্দিন ইলিয়াস শাহ দিল্লির তুঘলক শাসন পরবর্তী পুরো উপমহাদেশে বিশৃঙ্খলা দেখা দিলে তিনি অঞ্চলের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাজ্যগুলোকে একত্রিত করে এ অঞ্চলের নাম রাখেন বাংলা সালতানাত। তিনি নিজে "শাহ ই বাঙালা" উপাধি ধারন করেন।ইতিপুর্বে এ অঞ্চলের নাম বাঙ্গালা কেউ রাখে নি।এজন্য আধুনিক পন্ডিতগণ শামসুদ্দিন ইলিয়াস শাহ কে মধ্যযুগের বাঙ্গালী জাতির জনক বলে মনে করেন।

    কিন্তু, বাস্তবতা হলো তৎকালীন সময়ে জাতীয়তাবাদ বলতে কোন কিছু ছিলো না। মূলত বৃটিশদের আসার আগ পর্যন্ত জাতীয়তাবাদ বলতে কোন কিছুর অস্তিত্ব এ অঞ্চলে ছিলো না।এজন্য আমরা দেখি, শামসুদ্দিন ইলিয়াস শাহের বাংলা সালতানাতের সীমা আসাম হতে বানারস পর্যন্ত বিস্তৃত, তার পূর্বের তুগলক শাসন আফগান হতে বাংলা পর্যন্ত বিস্তৃত। তার পরের মুঘল শাসন দিল্লি হতে আরাকান পর্যন্ত বিস্তৃত। উপমহাদেশের বাইরের ইসলামি বিশ্ব তুর্কীদের উসমানী খেলাফত ইউরোপ, এশিয়া, আফ্রিকায় বিস্তৃত ছিল। তার পূর্বের উমাইয়্যা, আব্বাসীয় ইত্যাদি বংশীয় শামনের সময়েও আমরা ইসলামি বিশ্বের পূর্ব হতে পশ্চিমে এক উম্মাহর চিত্র দেখতে পায়।

    অপরদিকে, এ সময়ে ইউরোপীয়দের মাঝে ইংরেজ, ফরাসি, স্পেনিশ, জার্মান প্রভৃতি জাতীয়তাবাদে বিভক্ত হয়ে সারাক্ষণ যুদ্ধে লিপ্ত হওয়ার চিত্র ফুটে উঠে।

    কিন্তু, বিংশ শতাব্দীর শুরুর দিক হতে বর্তমান সময় পর্যন্ত দেখা যায় মুসলিম উম্মাহ পূর্ব হতে পশ্চিম পর্যন্ত পশ্চিমাদের আদলে জাতীয়তাবাদের বিষ বাষ্প গ্রহণ করে অসংখ্য ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাষ্ট্রে বিভক্ত হয়ে পরস্পর আত্মকলহে লিপ্ত, অপরদিকে ইউরোপীয়রা এক জাতির ধারণা নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন গঠন করে নিজেদের সীমানা তুলে দিয়ে এক জাতিতে পরিণত।

    মুরগী চোরদের আরো একটা খোড়া যুক্তি হলো আপনি ধর্ম যেকোনো মুহূর্তে পরিবর্তন করতে পারবেন, কিন্তু জাতীয়তা পরিবর্তন করতে পারবেন না।তাদের মতে আপনি হাজার চেষ্টা করলেও আরব হতে পারবেন না, আবার একজন আরব হতে পারবেন না। আসলে জাতীয়তাবাদের অস্তিত্বের বাস্তবতাই বুঝে আসে না। প্রথম বাংলা বিজয়ী মুসলিম বীর বখতিয়ার খিলজি ছিলেন জাতিতে তুর্কী, শুর শাসকরা ছিলো পাঠান, দাস শাসকরা হাবসী, হযরত শাহ জালালের সঙ্গী সাথিরা ইয়েমেনী, খান জাহান আলীসহ তার সাথীরা তুর্কী, তাছাড়া, চট্টগ্রামে অনেক আরবদের অভিবাসনের ইতিহাস পাওয়া যায়। স্বয়ং শেখ মুজিবের পরিবার মাত্র কয়েক শতাব্দি পূর্বে ইরাক হতে এ অঞ্চলে অভিবাসী হয়েছিল।আবার এ অঞ্চল হতেও বহু লোক পৃথিবীর নানা জায়গায় অভিবাসীত হয়েছে। অর্থাৎ, সময়ের পরিক্রমায় মানুষ পৃথিবীর নানা জায়গায় অভিবাসীত হয়ে নতুন পরিবেশের সাথে অভিযোজিত হয়।

    বর্তমানে পাশ্চিমাদের আঁকা কৃত্রিম সীমারেখা আর দালাল শাসকদের কারনে হয়তো মুসলিম বিশ্বের এক অঞ্চল হতে অন্য অঞ্চলে সহজে অভিবাসীত হওয়া যায় না, কিন্তু একজন আমেরিকান যদি বৃটেনে স্থায়ী বসবাসের পর বৃটিশ নাগরিক হতে পারে, একজন বৃটিশ যদি অস্ট্রেলিয়ায় স্থায়ী বসবাস শুরু করার পর অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক হতে পারে তবে আমরাও শুধুমাত্র মুসলিম পরিচয়ের মাধ্যমে ইসলামি বিশ্বের পূর্ব হতে পশ্চিমে দাপিয়ে বেড়াতে পারব, শুধুমাত্র কৃত্রিম সীমারেখা মুছে দিয়ে দালাল শাসকদের অস্বীকার করে এক উম্মাহর ধারনা ফিরিয়ে আনার মাধ্যমে।

    Last edited by tahsin muhammad; 08-26-2022, 09:57 PM.

  • #2
    একজন আমেরিকান যদি বৃটেনে স্থায়ী বসবাসের পর বৃটিশ নাগরিক হতে পারে
    একজন বৃটিশ যদি অস্ট্রেলিয়ায় স্থায়ী বসবাস শুরু করার পর অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক হতে পারে
    তবে
    আমরাও শুধুমাত্র মুসলিম পরিচয়ের মাধ্যমে ইসলামি বিশ্বের পূর্ব হতে পশ্চিমে দাপিয়ে বেড়াতে পারব
    শুধুমাত্র কৃত্রিম সীমারেখা মুছে দিয়ে দালাল শাসকদের অস্বীকার করে এক উম্মাহর ধারনা ফিরিয়ে আনার মাধ্যমে।
    হে পরাক্রমশালী শক্তিধর! কৃপণতা আর কাপুরুষতা থেকে আশ্রয় চাই সর্বক্ষণ ।

    Comment


    • #3
      যারা জাতীয়তাবাদে আক্রান্ত হয়েছে, এবং দাওআত দিলেও ফিরতে চাইনা, আসলেই শায়তান তাদের পূর্ন নিয়ন্ত্রণ করতেছে।।

      নিশ্চয়ই জাতীয়তাবাদ নোংরা ডাস্বিনের চেয়েও খারাপ কিছু,। যেটা থেকে রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সতর্ক হতে বলেছেন।
      Last edited by tahsin muhammad; 01-07-2023, 09:05 PM.
      সর্বোত্তম আমল হলো
      আল্লাহর প্রতি ঈমান আনা এবং মহান মহীয়ান
      আল্লাহর পথে জিহাদ করা।নাসায়ী,শরীফ

      Comment

      Working...
      X