২৪০ বছর আগে ১৭৮১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতায় বৃটিশদের বিপক্ষে ব্যটল অফ দ্যা ক্যাপস এ সাহায্য করে আমরণ বন্ধুত্বের লিষ্টে জায়গা করে নেই ফ্রান্স।কিন্ত ২৪০ তম বিজয় স্মরণের অনুষ্ঠান থেকে নিজেদের সরিয়ে নিয়েছে ফ্রান্স।কারণ যুক্তরাষ্ট্রের নতুন সামরিক জোট aukus যাতে অন্য দুই সদস্য দেশ হল ইউ কে এবং অস্ট্রেলিয়া। মূলত এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে চায়নার প্রভাব মোকাবেলায় এই জোট গঠন করা হয়েছে। এতে চায়না রেগে যাবে এটাই স্বাভাবিক কিন্ত ফ্রান্স এত বেশি বিচলিত কেন?এর কারণ জানতে হলে আমাদের একটু পেছনে ফিরে যেতে হবে ২০১৬ সালে যখন ফ্রান্স জার্মানি ও জাপানকে হারিয়ে অস্ট্রেলিয়ার সাথে ৪০ বিলিয়ন ডলার মূল্যর সামরিক চুক্তি করে। এই চুক্তি অনুযায়ী ফ্রান্স অস্ট্রেলিয়াকে ১২ টি ডিজেল চালিত সাবমেরিন দিবে এবং ১৫ বছরের একটা পার্টনারশিপে যাবে দেশ দুইটা। কিন্ত নতুন জোট গঠনে অস্ট্রেলিয়া ফ্রান্সের সাথে চুক্তি বাদ দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে নতুন চুক্তি অনুযায়ী ডিজেল চালিত সাবমেরিনের বদলে নিউক্লিয়ার পাওয়ার(এটাতে জ্বালানি হিসাবে নিউক্লিয়ার থাকবে তবে কোন নিউক্লিয়ার অস্ত্র থাকবে না) চালিত সাবমেরিন এর চুক্তি করে।খুব স্বাভাবিক ফ্রান্স যথেষ্ট রেগে যাবে। কারণ প্রাথমিকভাবে ৪০ বিলিয়নের চুক্তি হলেও চুক্তি শেষ হতে হতে ফ্রান্স ১০০ বিলিয়নের কাছাকাছি পেত। আর কোন রকম লুকানো ছাড়াই প্রচন্ড ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ফ্রান্স যখন ফ্রান্সের পররাস্ট্রমন্ত্রী জ্যা ইয়েভেস লি দ্রিয়ান বলেছেন ইউএসএ ও অস্ট্রেলিয়া “পিছন থেকে ছুরি মেরেছে” এবং এও বলেছেন তাদের সাথে কোন রকম আলোচনা ছাড়াই এই চুক্তি করা হয়েছে যা তারা মিডিয়া থেকে প্রথম জানতে পারেন। এখানেই শেষ নয় ফ্রান্স এউএসএ ও অস্ট্রেলিয়া থেকে তাদের রাস্ট্রদূতকে দেশে ফিরিয়ে নিয়েছে আপাতত। অস্ট্রেলিয়ায় নিযুক্ত ফ্রেন্স রাষ্ট্রদূত বলেছেন অস্ট্রেলিয়া “চরম ভুল” করেছে। এটা শুধু অর্থনৈতিকভাবেই নয় শক্তিশালী বন্ধুরাষ্ট্র হিসাবে এই জোটে না থাকাটা ফ্রান্সের জন্য অপমানজনক যখন এই অঞ্চলে ফ্রান্সের বিশাল ভূমিকা রয়েছে। কারণ এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলে অনেক গুলা ছোট ছোট দ্বীপের মালিক ফ্রান্স যেখানে ২০ লক্ষ মানুষ বসবাস করে ও ৭০০০ ফরাসি সৈন্য রয়েছে। প্রকাশ্যে ফরাসি কূটনীতিকদের এমন চাছাছোলা বক্তব্য ও রাষ্ট্রদূতদের দেশে ডেকে পাঠানো কোন ছোট প্রতিক্রিয়া নয়।এমনিতেই ম্যাক্রোসহ আরো কিছু ইইউ(ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন) নেতা বেশ কিছুদিন ধরেই যুক্তরাষ্ট্রের উপর নির্ভরশীলতা কমাতে নিজেদের আলাদা সামরিক জোট এর কথা বলেছে। তারপর কোন সলাপরামর্শ ছাড়া পরাজয়ের পর হুট করে আফগানিস্থন থেকে সৈন্য সরানোয় ইইউ নেতারা যুক্তরাষ্ট্রের উপর আরও কিছুটা নাখোশ হয়েছিল। ইইউ এর আঘোষিত সামরিক নেতা ফ্রান্সের ভূমিকার উপর ইইউ এর সাথে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক নির্ভর করছে অনেকটাই। সেটা যে ভাল দিকে যাচ্ছে না তা আফগানিস্থানের পরাজয় ও নতুন এশিয়া প্যাসিফিকে কোন ইইউ দেশকে যুক্ত না করায় তা বলাই বাহুল্য।
Announcement
Collapse
No announcement yet.
যুক্তরাষ্ট্র – ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সম্পর্ক কি তলানির দিকে??
Collapse
X
Comment