Announcement

Collapse
No announcement yet.

ভারত নিয়ে তথ্য- ৩ || কলকাতা পরিচিতি

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • ভারত নিয়ে তথ্য- ৩ || কলকাতা পরিচিতি

    ভারত নিয়ে তথ্য- ৩ || কলকাতা পরিচিতি





    কলকাতা সম্পর্কে


    ভারতীয় রাজ্য পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতায় প্রচুর আকর্ষণীয় পর্যটন স্থান রয়েছে, যার ফলস্বরূপ সারা বছর ধরে হাজার হাজার মানুষ এখানে ভিড় করে। হুগলী নদীর পূর্ব তীরে অবস্থিত শহরটি, পূর্ব ভারতের ব্যবসা, অধ্যয়ন ও সংস্কৃতির প্রধান কেন্দ্রস্থল।

    কলকাতার আয়তন ও জনসংখ্যা


    এই শহরের মোট আয়তন হল ৭১ বর্গ মাইল বা ১৮৫ বর্গ কিলোমিটার। শহরের মহানগরী অঞ্চল ৭২৮.৪৫ বর্গ মাইল বা ১,৮৮৬.৬৭ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে অবস্হিত। ২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী, এই শহরের জনসংখ্যা হল প্রায় ৪,৪৮৬,৬৭৯ জন। এটি ভারতের সপ্তম জনবহুল শহর। শহরের মহানগরী অঞ্চলে ১৪,১১২,৫৩৬ জন মানুষ বাস করে এবং ভারতের সবচেয়ে জনবহুল মহানগরী শহর হিসাবে এটি তৃতীয় স্থানে রয়েছে। জনসংখ্যার ঘনত্বে কলকাতায় প্রতি বর্গ কিলোমিটারে ২৪,২৫০ জন বা প্রতি বর্গ মাইলে ৬৩,২০০ জন মানুষ বাস করে।

    কলকাতার ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্য এবং জলবায়ু


    পূর্ব ভারতের এক অংশ নিয়ে কলকাতা শহরটি গঠিত। শহরের স্থানাঙ্ক হল ২২.৮২ ডিগ্রী উত্তর এবং ৮৮.২০ ডিগ্রী পূর্ব। শহরটির গড় উচ্চতা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৭ ফুট উচ্চে। বঙ্গপোসাগর উপকূল, এই শহরের দক্ষিণ দিকে ৬০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। শহর থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দূরে সুন্দরবন জাতীয় উদ্যানটি অবস্থিত। সমূদ্র তীরে অবস্থিত হওয়ায় কলকাতায় ক্রান্তীয় জলবায়ু অনুভূত হয়। এখানে গ্রীষ্মকালীন তাপমাত্রা ২৫ থেকে ৪০ ডিগ্রী সেলসিয়াসের মধ্যে থাকে এবং শীতকালীন তাপমাত্রা ১২ থেকে ২৫ ডিগ্রী সেলসিয়াসের মধ্যে থাকে। মৌসুমী বায়ুপ্রবাহের ফলেই এখানে বৃষ্টিপাত হয়। কলকাতায় ভ্রমণের জন্য শ্রেষ্ঠ সময় হল সেপ্টেম্বর থেকে মার্চ মাস।

    কলকাতা শহরকে নিম্নলিখিত এলাকায় শ্রেণীবিভক্ত করা যেতে পারে: -

    উত্তর কলকাতা – শোভাবাজার, শ্যামবাজার, কাশীপুর, চিৎপুর, সিঁথি, বরানগর এবং দমদম।
    মধ্য কলকাতা – বিবাদী বাগ, এসপ্ল্যানেড, ফ্রী স্কুল স্ট্রীট (মির্জা গালিব স্ট্রীট), পার্ক স্ট্রীট, চাঁদনী চৌক, ডালহৌসি স্কোয়্যার, সদর স্ট্রীট এবং বড় বাজার। এটি শহরের কেন্দ্রীয় ব্যবসায়িক জেলা (সি.বি.ডি) হিসাবে পরিচিত।
    দক্ষিণ কলকাতা – আলিপুর, বালিগঞ্জ, ল্যান্সডাউন, নিউ আলিপুর, টালিগঞ্জ, ভবানীপুর, লেক গার্ডেন্স, যোধপুর পার্ক, যাদবপুর, গল্ফগ্রীন ও কসবা।


    এই শহরের শহরতলীয় অঞ্চলগুলি হল বেহালা, গার্ডেন রীচ, কূদঘাট, ঠাকুরপুকুর, বাঁশদ্রোণী, রাণীকুঠি, গড়িয়া এবং বাঘাযতীন।

    ইতিহাস


    কলকাতা শহরে দুই হাজার বছরেরেও বেশি সময় ধরে জনবসতি রয়েছে। কিন্তু তার লিপিবদ্ধ ইতিহাস খুব বেশি প্রাচীন যুগের নয়। এটি মাত্র তিনশত বছরের পুরনো। ব্রিটিশদের আগমনের সঙ্গে সঙ্গে কলকাতার নাম প্রাধান্য লাভ করে। ব্রিটিশরা ১৬৮৬ সালে কলকাতায় মুক্ত বাণিজ্য করার অধিকার পায়, তারপর ধীরে ধীরে এই শহর তাদের নিয়ন্ত্রণে আসতে শুরু করে। ১৭৫৬ সাল পর্যন্ত ব্রিটিশরা এই শহরের উপর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ উপভোগ করেন। এরপর মুর্শিদাবাদের নবাব সিরাজ-ঊদ-দৌলা এই শহর দখল করেন। তবে ১৭৫৭ সালে পলাশীর যুদ্ধে ব্রিটিশরা এই শহরের অধিকার ফিরে পায়। ধীরে ধীরে কলকাতা ব্রিটিশ রাজের রাজধানী শহরে পরিণত হয়, যা ১৯১২ সাল পর্যন্ত অক্ষুন্ন থাকে।

    কলকাতার জনতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য


    প্রতি ১০০০ জন পুরুষের হিসাবে এই শহরে মহিলার সংখ্যার অনুপাত হল ৮৯৯ জন। এই শহরের সাক্ষরতার হার হল প্রায় ৮৭.১৪ শতাংশ, যা দেশব্যাপী গড় (৭৪%) -এর তুলনায় যথেষ্ট বেশী। কলকাতার অধিকাংশ মানুষই হল বাঙালি। অন্যান্য সম্প্রাদায়ের মধ্যে রয়েছে তামিল, চীনা, ওড়িয়া, নেপালি, অসমিয়া, তেলেগু, আ্যংলো - ইন্ডিয়ান, গুজরাটি, গ্রীক, আর্মেনিয়, মহারাষ্ট্রীয়, তিব্বতি, মালায়ালি, কোঙ্কনি, পার্সী ও পাঞ্জাবি। রাজ্যে প্রধান প্রচলিত ভাষা হল বাংলা। অন্যান্য ব্যবহৃত ভাষাগুলি হল ইংরাজী, হিন্দি ও উর্দূ। মোট জনসংখ্যার প্রায় ৭৭.৬৮ শতাংশ হিন্দু, ০.৮৮ শতাংশ খ্রীষ্টান, ২০.২৭ শতাংশ মুসলিম ও ০.৪৬ শতাংশ মানুষ জৈন সম্প্রদায় ভুক্ত।

    কলকাতার অর্থনীতি


    পূর্ব এবং উত্তর-পূর্ব ভারতের প্রধান ব্যবসায়িক কেন্দ্রস্থল হিসাবে কলকাতা একটি জায়গা অধিকার করে রয়েছে। শহরের প্রধান শিল্পগুলির মধ্যে রয়েছে ভারী ইঞ্জিনীয়ারিং, ইস্পাত, খনিজ পদার্থ, ঔষধপত্র, সিমেন্ট, কৃষি, খাদ্য-প্রক্রিয়া, বস্ত্র, বৈদ্যূতিন, বৈদ্যূতিক উপকরণ, ইঞ্জিনীয়ারিং দ্রব্য, চর্মজাতীয় দ্রব্য, অলংকার, চা, তামাক, মোটরগাড়ি ও পাট। দেশের সবচেয়ে প্রাচীনতম এবং দ্বিতীয় বৃহত্তম বিনিময় কেন্দ্র কলকাতা শেয়ার বাজার (সি.এস.ই), কলকাতায় অবস্হিত। এই অঞ্চলের সবচেয়ে প্রাচীনতম মেট্রো রেল পরিষেবা হিসাবে কলকাতা মেট্রো দক্ষিণ এশিয়ার এক যুগান্তকারী সাফল্য।

    কলকাতার প্রশাসন



    বর্তমানে এই শহরের অধ্যক্ষ (মেয়র) হলেন শ্রী শোভন চ্যাটার্জ্জী, যিনি তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিনিধি। মেয়র-পরিষদ দ্বারা চালিত এই শহরে ১৪১-টি পৌর-বিভাগ রয়েছে, সেগুলির প্রত্যেকটিই একজন সভার অধ্যক্ষ (কাউন্সিলার) দ্বারা চালিত হয়। এই বিভাগগুলি আবার ১৫-টি বরো-তে বিভক্ত। এই শহর কলকাতা পৌর-নিগমের আইনি কর্তৃপক্ষের অধীনে পড়ে।

    কলকাতায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান


    কলকাতার সবচেয়ে বিখ্যাত কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নাম নিচে উল্লেখ করা হল:-

    বিশ্ববিদ্যালয়: -


    আলিয়া বিশ্ববিদ্যলয়, ইন্ডিয়্যান ইনস্টিটিউট অফ ইঞ্জিনীয়ারিং সায়েন্স আ্যন্ড টেকনোলোজি (কলকাতা), কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, ইন্ডিয়্যান ইনস্টিটিউট অফ সায়্যন্স এডুকেশ্যান আ্যন্ড রিসার্চ (কলকাতা),ইন্ডিয়্যান ইনস্টিটিউট অফ ম্যানেজমেন্ট কলকাতা, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়, ইন্ডিয়্যান স্ট্যাটিস্টিক্যাল ইনস্টিটিউট, প্রেসিডেন্সী বিশ্ববিদ্যালয় (কলকাতা), নেতাজী সুভাষ মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়, রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়, প্রেসিডেন্সী বিশ্ববিদ্যালয় (কলকাতা), রামকৃষ্ণ মিশন বিবেকানন্দ বিশ্ববিদ্যালয়, রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়, ওয়েস্ট বেঙ্গল ইউনিভ্যারসিটি অফ জ্যুড়িসিয়্যাল সায়েন্স, সত্যজিৎ রায় ফিল্ম আ্যন্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউট, ওয়েস্ট বেঙ্গল ইউনিভ্যারসিটি অফ হেল্থ সায়েন্সস, ওয়েস্ট বেঙ্গল ইউনিভ্যারসিটি অফ আ্যনিমেল আ্যন্ড ফিশারী সায়্যন্সস, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়।

    ইঞ্জিনীয়ারিং মহাবিদ্যালয়: -


    বিড়লা ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলোজি, বেঙ্গল ইঞ্জিনীয়ারিং আ্যন্ড সায়্যন্স ইউনিভ্যারসিটি (বি.ই.এস.ইউ)।

    চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (মেডিক্যাল কলেজ): -


    নীলরতন সরকার চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় এবং হাসপাতাল, কলকাতা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়, ন্যাশনাল চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়, আর.জি.কর চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়, কে.পি.সি চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় এবং হাসপাতাল, এস.এস.কে.এম চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়, গুরু নানক ইনস্টিটিউট অফ ডেন্ট্যাল সায়েন্স আ্যন্ড রিসার্চ (পানিহাটি), ডঃ আর. আহমেদ ডেন্ট্যাল মহাবিদ্যালয়, কলেজ অফ মেডিসিন আ্যন্ড জে.এন.এম হসপিট্যাল, কল্যাণী আ্যন্ড সাগর দত্ত মেমোরিয়্যাল চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় ও হাসপাতাল, কামারহাটি।

    কলকাতায় হাসপাতাল


    সরকারি হাসপাতাল: -

    বাঘাযতীন রাজ্য সাধারণ হাসপাতাল, বি.আর. সিং হাসপাতাল-পূর্ব রেলপথ- শিয়ালদহ, দক্ষিণ সাবার্বন হাসপাতাল, বরানগর রাজ্য সাধারণ হাসপাতাল, বিজয়গড় রাজ্য সাধারণ হাসপাতাল, বিধাননগর রাজ্য সাধারণ হাসপাতাল এবং গার্ডেনরীচ রাজ্য সাধারণ হাসপাতাল।

    বে-সরকারি হাসপাতাল: -

    আনন্দলোক হাসপাতাল, এসেম্বলী অফ গড চার্চ, বালানন্দ ব্রহ্মচারী হাসপাতাল, এপেক্স হাসপাতাল, ভারত সেবাশ্রম সংঘ হাসপাতাল, বেল ভিউ হাসপাতাল, কলকাতা মেডিক্যাল রিসার্চ ইনস্টিটিউট (সি.এম.আর.আই), বি.পি পোদ্দার হসপিট্যাল আ্যন্ড মেডিক্যাল রিসার্চ লিমিটেড, দিশান্ হসপিট্যাল আ্যন্ড হার্ট ইনস্টিটিউট, কলম্বিয়া এশিয়া হাসপাতাল-সল্টলেক, জেনেসিস হাসপাতাল, দিশা হাসপাতাল, কোঠারি চিকিৎসা কেন্দ্র, আই.এল.এস সুপার স্পেসালিটি ক্লিনিক, মেডিকা সুপারস্পেসালিটি হাসপাতাল, মেফেয়্যার হাসপাতাল (বি.টি রোড), ফোনিক্স হসপিট্যাল আ্যন্ড ডায়্যোগনেস্টিক সেন্ট্যার প্রাইভেট লিমিটেড, পিয়্যারলেস হাসপাতাল, রেনেসাঁ হসপিট্যাল প্রাইভেট লিমিটেড, প্রিয়ংবদা বিড়লা অরবিন্দ চক্ষু হাসপাতাল, শঙ্কর নেত্রালয়, আর.এস.ভি হাসপাতাল (টালিগঞ্জ), শ্রী অরবিন্দ সেবা কেন্দ্র (যোধপুর পার্ক), শহীদ ক্ষুদিরাম বোস হাসপাতাল (বেলঘড়িয়া), সিলভারলাইন চক্ষু হাসপাতাল, শ্রী বিশুদ্ধানন্দ সরস্বতী মারওয়াড়ী হাসপাতাল, শুস্রূত আই ফাউন্ডেশন আ্যন্ড রিসার্চ সেন্টার এবং স্টারলিং হাসপাতাল (শ্যামবাজার)।

    চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় ও হাসপাতাল: -

    নীলরতন সরকার চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় এবং হাসপাতাল, কলকাতা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়, ন্যাশনাল চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়, আর.জি.কর চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়, কে.পি.সি চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় এবং হাসপাতাল, এস.এস.কে.এম চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়, গুরু নানক ইনস্টিটিউট অফ ডেন্টাল সায়েন্স আ্যন্ড রিসার্চ (পানিহাটি), ডঃ আর. আহমেদ ডেন্টাল মহাবিদ্যালয়, কলেজ অফ মেডিসিন আ্যন্ড জে.এন.এম হসপিট্যাল, কল্যাণী আ্যন্ড সাগর দত্ত মেমোরিয়্যাল চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় ও হাসপাতাল, কামারহাটি।

    টার্সিয়ারী ও বৈশিষ্ট্যগত হাসপাতাল: -

    আ্যডভান্সড মেডিকেয়্যার আ্যন্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউট লিমিটেড (এ.এম.আর.আই, ঢাকুরিয়া, সল্টলেক), আ্যপোলো গ্লেন-ঈগলস হসপিট্যাল লিমিটেড, টাটা চিকিৎসা কেন্দ্র, এ.এম.আর.আই উইম্যানস আ্যন্ড চিল্ড্রেন কেয়্যার, উডল্যান্ড হাসপাতাল, ওয়েস্ট ব্যংক হাসপাতাল, বিড়লা হার্ট হাসপাতাল, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ইন্ট্যারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ কার্ডিয়াক সায়্যন্সস, রুবি হাসপাতাল এবং চিত্তরঞ্জন ক্যানসার প্রতিষ্ঠান।

    কলকাতায় পর্যটন আকর্ষণ


    দৃশ্যাবলী -


    কলকাতার প্রধান পর্যটন আকর্ষণগুলি হল: -

    ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়্যাল: কলকাতার বিশিষ্ট স্থান, এই প্রাসাদ ভারতের মহারাণী ভিক্টোরিয়ার ২৫ বছর রাজত্বের স্মৃতিসৌধ রূপে নির্মাণ করা হয়েছিল। স্বাধীনতা পূর্ববর্তী যুগের এই প্রাসাদটি দক্ষিণ প্রান্তে ‘ময়দান’-এ অবস্থিত এবং এটি মুঘল ও ব্রিটিশ স্থাপত্য শৈলীর এক পরিপূর্ণ মিশ্রণ।

    হাওড়া ব্রীজ বা রবীন্দ্র সেতু: বিশ্বের ব্যস্ততম সেতু হুগলী নদীর উপর গড়ে উঠেছে। এটি ৯৭ মিটার উচ্চ এবং ৭০৫ মিটার দীর্ঘ এবং এটি শহরের প্রবেশপথ।

    ময়দান: এটি ‘শহরের শ্বাস অঙ্গ’ হিসাবে পরিচিত এবং এটি ব্রিটিশদের এক সবচেয়ে সুন্দর উপহার।

    বিবাদী বাগ (ডলহৌসি স্কোয়্যার): এটি তিনজন বিপ্লবী বিনয়-বাদল ও দীনেশ-এর নাম অনুসারে হয়েছিল। এটি কলকাতার প্রধান ব্যাবসায়িক কেন্দ্রস্থল এবং দর্শনীয়।

    রাইটার্স বিল্ডিং: এটি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বর্তমান সংগঠন স্থল, এই ভবন ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর আইনজ্ঞদের জন্য নির্মাণ করা হয়েছিল যারা এখানে কাজ ও বসবাস করত।

    ফোর্ট উইলিয়াম: এটি হুগলী নদীর তীরে অবস্থিত এবং অষ্টাভূজাকৃতি। এখানে একটি যাদুঘর রয়েছে যেখানে বিভিন্ন অস্ত্র ও বার্মা অভিযানের বিভিন্ন চিত্র প্রদর্শনের জন্য সাজিয়ে রাখা আছে এবং একটি বিভাগে উত্তর-পূর্ব ভারতের মানুষর হস্তশিল্পের প্রদর্শনী রয়েছে।

    শহীদ মিনার (ওক্টারলোনী মনুমেন্ট): ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের স্মরণে এটির নামকরণ হয়েছিল, এটি ১৮১৪-১৬ সালে নেপাল যুদ্ধে ব্রিটিশ বিজয়ের স্মরণে নির্মিত হয়। এটি চৌরঙ্গীর দিগন্তে অবস্থান করে আছে।

    বিড়লা তারামন্ডল: ১৯৬২ সালে নির্মিত, এটি বিশ্বের সবচেয়ে এক বৃহত্তম তারামন্ডল। তারা এবং নক্ষত্রপুঞ্জ এই তারামন্ডলের ছাদের উপর অভিক্ষিপ্ত হয়।

    রবীন্দ্র সদন: এটি থিয়েটার এবং সঙ্গীতভবন সহ বাংলা সংস্কৃতির এক সমাবেশীয় আসন এবং এর নিকটে অবস্হিত চলচ্চিত্র কেন্দ্র নন্দন। এছাড়াও বাংলা আ্যকাডেমি ও কলকাতা তথ্য কেন্দ্র- এর সন্নিকটেই অবস্থিত।

    জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি: রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের(ক্যাম্পাসে) বিদ্যায়াতনে অবস্থিত, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এই গৃহ ঊনবিংশ শতাব্দীর বাঙালির কলা ও সংস্কৃতির এক প্রধান কেন্দ্র। এখানে সন্ধ্যার সময় ঠাকুর পরিবারের জীবনের উপর ভিত্তি করে পঁয়তাল্লিশ মিনিটের একটি আলোক ও ধ্বনি-র প্রদর্শনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।

    এশিয়াটিক সোসাইটি: ১৭৮৪ খ্রীষ্টাব্দে স্যার উইলিয়্যাম জোনস এটির নির্মাণ করেছিলেন, এটি এশিয়ার প্রথম আধুনিক যাদুঘর এবং এখানে শিল্প ও পুরাকীর্তি এবং একটি বিশাল গ্রন্থাগারের সমৃদ্ধ ভান্ডার রয়েছে।

    ইন্ডিয়ান মিউজিয়াম: এশিয়াটিক সোসাইটির প্রাথমিক অংশ, এই যাদুঘরে ৬০-টি গ্যালারিসহ ৬-টি বিভাগ রয়েছে, যেমন কলা, পুরাতত্ত্ব, প্রাণিবিদ্যা, উদ্ভিদবিদ্যা, ভূবিদ্যা এবং পুরাতত্ত্ব। এটি জওহরলাল নেহেরু রোডে অবস্থিত এবং ‘যাদুঘর’ নামেও পরিচিত।

    মার্বেল প্যালেস: ১৮৩৫ সালে রাজা রাজেন্দ্র মল্লিকের দ্বারা নির্মিত, এই গথিক জমিদারি অট্টালিকায় সারা বিশ্ব জুড়ে নিলাম এবং দখলচ্যূত পরিবারের থেকে সংগৃহীত সুসজ্জিত বস্তু রয়েছে।

    ন্যাশনাল লাইব্রেরী: এই গ্রন্থাগারটি রাজকুমার আজিম-উস-শানের ‘সামার হাউস’-এ অবস্থিত, ১৯০৩ সালের জানুয়ারি মাসে বাংলা ও বিহারের ভাইসরয় লর্ড কার্জন এটির উদ্বোধন করেন। সেইসময় এটির নাম ছিল মেটক্যাফ হল এবং ১৯৪৮ সালে এটি ন্যাশনাল লাইব্রেরী নামে নামকরণ করা হয়েছিল। এখানে কুড়ি লক্ষ্যেরও বেশি পুস্তক এবং পাঁচ লক্ষ্য নথিপত্র রয়েছে।

    বিদ্যাসাগর সেতু: এটি হুগলী নদীর উপরে হাওড়া ব্রীজের দক্ষিণ দিকে অবস্থিত। এটি নির্মাণ করতে ৩.৮৮ লক্ষ্য কোটি টাকা ও ২২ বছর সময় লেগেছিল। এটি ৪৫৭ মিটার লম্বা ও ১১৫ মিটার চওড়া এবং ১০০ মিটার গভীর ভিত রয়েছে।


    ভক্তিমূলক স্থান -

    কলকাতা ধর্মীয় মানুষদেরও হতাশ করে না। এখানে এমন অনেক স্থান রয়েছে যেখানে আপনি আধ্যাত্মিক নির্মলতা অনুভব করতে পারেন।

    কালিঘাট কালী মন্দির- এটি ভারতের ৫২-টি ‘শক্তি পীঠ’-এর মধ্যে অন্যতম এবং এটি দেবী ‘শক্তি’-র পূজাপসনার জন্য একটি প্রধান স্থান। এটি বিশ্বাস করা হয় যে যখন হিন্দু দেবতা শিব, দেবীর মৃতদেহ বহন করে নিয়ে আসছিলেন তখন দেবী কালীর একটি আঙুল এখানে পড়েছিল। মন্দিরে দেবীর একটি কালো পাথরর মূর্তি রয়েছে।

    বেলুড় মঠ- ১৮৯৯ সালে স্বামী বিবেকানন্দ দ্বারা নির্মিত রামকৃষ্ণ মিশনের সদর দপ্তর হল বেলুড় মঠ। এই মঠ ধর্মনিরপেক্ষতা ও ধর্মীয় সহনশীলতার বার্তা প্রদান করে। মন্দিরটির দৃশ্যময়তার দিক দিয়ে তার স্থাপত্যের নিজস্ব পদ্ধতিতে এক অনন্য। এবং বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে এটি একটি মন্দির, মসজিদ ও গির্জার সমণ্বয়।

    দক্ষিণেশ্বর কালী মন্দির- ১৮৪৭ সালে রাণী রাসমণি এই মন্দিরটি নির্মাণ করেছিলেন এবং এটি হুগলী নদীর অন্য অংশে অবস্থিত। এখানে অন্যান্য দেবদেবীর মূর্তিও স্থাপিত রয়েছে যেমন শিব, রাধা-কৃষ্ণ ও সীতা-রাম।

    বিড়লা মন্দির- এই মন্দিরের স্থাপত্য ঐতিহ্যগত শিল্পকর্ম এবং আধুনিক প্রযুক্তির একটি নিখুঁত মিশ্রন।

    আর্মেনিয়ান চার্চ- ১৭২৪ সালে এক আর্মেনিয়, ক্যাভোন্ড-এর দ্বারা এটি নির্মিত হয়েছিল এবং এটি কলকাতার সবচেয়ে এক প্রাচীনতম গির্জা।

    সেন্ট পল’স ক্যাথিড্রাল- এটি ভারত-গথিক শৈলীতে ১৮৩৯ থেকে ১৮৪৭-এর মধ্যে নির্মিত হয়েছিল।

    নাখোদা মসজিদ- এটি বিবাদী বাগের উত্তরে অবস্থিত এবং এটি কলকাতার এক বৃহত্তম মসজিদ। এই মসজিদের বর্তমান কাঠামো ১৯৪২ সালে ওসমান নির্মাণ করেছিলেন।


    সবুজ উদ্যান: -

    বোটানিক্যাল গার্ডেন: ভারতের এই প্রাচীনতম বোটানিক্যাল গার্ডেন, হাওড়া স্টেশন থেকে দশ কিলোমিটার দক্ষিণে শিবপুরে অবস্থিত। ১৭৮৬ সালে কোলোনেল আলেকজান্ডার কোয়াইড এটির নির্মাণ করেছিলেন। এই উদ্যানের মুখ্য আকর্ষণ হল ২৪০ বছরের পুরনো বট বৃক্ষ,যার উচ্চতা প্রায় ২৪.৫ মিটার এবং ৪২০ মিটার পরিধি সমণ্বিত বৃক্ষটি বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘতম বট বৃক্ষ হিসাবে পরিচিত।

    ইডেন গার্ডেন: এটি লর্ড অ্যকল্যান্ডের দুই বোন, এমিলি ও ফ্যানী ইডেনের নামকরণে করা হয়েছিল। ময়দানের উত্তর-পশ্চিম প্রান্তে এটি অবস্থিত। বিখ্যাত ইডেন গার্ডেন স্টেডিয়াম এই উদ্যানের মধ্যেই অবস্থিত।

    হর্টিকালচ্যার গার্ডেন: এটি আলিপুরে অবস্থিত। ১৮২০ সালে, উইলিয়্যাম ক্যারী এটির নির্মাণ করেছিলেন। ফেব্রুয়ারী মাসে এখানে একটি বার্ষিক ফুলের প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়।

    জুওলোজিক্যাল গার্ডেন: ময়দানের দক্ষিণে অবস্থিত, বেলভেডেয়্যার রোড বরাবর, ১৮৭৫ সালে এটি স্হাপিত হয়েছিল।


    বিনোদন মূলক উদ্যান : -

    সায়্যন্স সিটি: কলকাতার পূর্ব অংশে অবস্থিত, এটি সমগ্র ভারতে এই ধরনের প্রথম একটি উদ্যোগ। এই ভবনে একটি দুঃসাহসিক মহাকাশ অভিযান, একটি ঝরনা উদ্যান, জীব বিজ্ঞান দৃষ্টিভঙ্গিমা ও ডাইনোসোরর ভবন রয়েছে। তবে সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিভাগ হল মহাকাশ যাত্রা। এটি একটি গম্বুজ আকৃতির ছাদ সহ বৃত্তাকার প্রেক্ষাগৃহ। এটি সকাল ৯.০০-টা থেকে রাত্রি ৯.০০-টা পর্যন্ত খোলা থাকে।

    নিকো পার্ক: কলকাতার উত্তর-পূর্ব প্রান্তে সল্টলেক সিটি- তে অবস্থিত, এটি কলকাতার ডিসনিল্যান্ড। ‘ঝিল মিল’-নামেও এটির জনপ্রিয় রয়েছে। এটি শিশুদের খুবই আকর্ষণীয়। প্রকৃতি প্রেমিকদের জন্য এখানে নিদারুণ সুন্দর একটি গোলাপ বাগান রয়েছে। এটি পরিদর্শনের সময় হল সকাল ১১.০০-টা থেকে সন্ধ্যা ৮.০০-টা পর্যন্ত (শীতকালে) এবং সকাল ১১.০০-টা থেকে সন্ধ্যা ৯.০০-টা পর্যন্ত (গ্রীষ্মকালে)।

    আ্যকোয়াটিকা: নামটি থেকেই বোঝা যায় যে এটি একটি জলজ উদ্যান (ওয়াটার পার্ক)। এটি কোচকুপুরে অবস্থিত। এটি জলপ্রেমীদের জন্য একটি স্বর্গ।

    মিলেনিয়্যাম পার্ক: গঙ্গা নদীর তীরে, স্ট্র্র্যান্ড রোডের উপর অবস্থিত, এটি প্রকৃতি প্রেমিকদের কাছে সত্যই এক স্বর্গ উদ্যান। এই উদ্যানের নিদারুণ সৌন্দর্যের সাথে লিপ্ত গঙ্গার ঢেউখেলানো তরঙ্গ যে কেউ অনুভব করতে পারেন।


    যাদুঘর: -

    আশুতোষ মিউজিয়্যাম: ১৯৩৭ সালে নির্মিত, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই যাদুঘরে বিভিন্ন শৈল্পিক বস্তু বিশেষত বাঙালি লোকশিল্পের সংগ্রহ রয়েছে।

    নেহরু চিল্ড্রেন্স মিউজিয়্যাম: চৌরঙ্গি রোডের উপর অবস্থিত এই যাদুঘরে হিন্দু মহাকাব্য যেমন রামায়ণ ও মহাভারতের প্রতীয়মাণ পেশ করা আছে।

    বিড়লা ইন্ডাস্ট্রিয়্যাল আ্যন্ড টেকনোলজিক্যাল মিউজিয়্যাম: এই যাদুঘর লোকহিতৈষিক বিড়লাদের দ্বারা নির্মিত। কিছু আকর্ষণীয় মধ্যযুগীয় নমুনা সহ এখানে স্থাপত্য ও আধুনিক সাহিত্যকলার এক সুন্দর সংগ্রহ রয়েছে।

    নেতাজী মিউজিয়্যাম: নেতাজী ভবনে অবস্থিত, এই যাদুঘরে নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু সম্পর্কিত উপাদানের এক বিশাল সংগ্রহ রয়েছে। নেতাজীর জন্ম সপ্তাহের সময় এটির পরিদর্শন এড়িয়ে যাওয়া হয় কারণ বছরের এই ২৩-শে জানুয়ারীর কাছকাছি সময়ে এটি খুব বেশি ব্যস্ত থাকে।


    কিছু দূরে -

    যদি আপনি শহরের কোলাহলে ক্লান্ত হয়ে পড়েন, তবে এই ‘ব্যস্তবহুল শহর’-এর ধারেপাশে এমন অনেক জায়গা রয়েছে যেখানে আপনি যেতে পারেন-
    শান্তিনিকেতনঃ: কলকাতার ১৩৬ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত এই শিক্ষা নিবাসটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রতিষ্ঠিত করেন। এটা প্রকৃতি প্রেমিকদের এক শান্ত এবং নির্মল পরিবেশের উপলব্ধি নিবেদন করে।

    ব্যান্ডেল: এটি কলকাতা থেকে প্রায় ৪৩ কিলোমিটার দূরে প্রাচীনতম গির্জার জন্য প্রসিদ্ধ। এই পর্তুগীজ রাজপ্রাসাদটি ১৬৬০ সালে নির্মিত হয়েছিল।

    ডায়মন্ড হারবার: এটি কলকাতার যোগ্য প্রবেশপথ। এই স্থান থেকে আপনি নদীতে ভ্রমণের জন্য ছোট জাহাজ পেতে পারেন এবং হুগলী নদীর কোলে সারাদিন কাটাতে পারেন। এখানে কলকাতার ধারেপাশের সেরা সৈকত রিসর্ট উপলব্ধ হয়।

    সুন্দরবন: বিশ্বের ঐতিহ্যগত এই স্থান হল পৃথিবীর সবচেয়ে হিংস্র প্রাণী রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের একমাত্র আবাস স্থল। এছাড়াও বিশ্বের এই বৃহত্তম ব-দ্বীপটি চিতল হরিণের বাসস্থানের জায়গা। ভ্রমণার্থীরা এখানে বিভিন্ন বিরল প্রজাতির পাখি দেখতে পেতে পারেন, যেমন বাদামী পাখার মাছরাঙা (ব্রাউন উইংড কিংফিশার), সোয়্যাম্প প্যাটরিডজ, ধূসর মস্তকবিশিষ্ট তিতির, ম্যানগ্রোভ হুইসলার এবং আরও অনেক সুন্দর পাখি।

    চন্দননগর: এখানে অনেক পর্যটন আকর্ষণ রয়েছে, এগুলির মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল ফরাশি ভবনের ধ্বংসাবশেষ। অন্যান্য আরোও আকর্ষণীয় ঘোরার স্থানগুলি হল- রবীন্দ্র ভবন, স্ট্র্যান্ড চার্চ, যাদুঘর ও মন্দির।

    নবদ্বীপ: চৈতন্য মহাপ্রভুর বাসস্থান এই নবদ্বীপ হল ভগবান শ্রীকৃষ্ণের নিবেদিত মন্দিরের আবাসস্থল। এটি ভগবান শ্রীকৃষ্ণের ভক্তদের জন্য একটি জনপ্রিয় তীর্থযাত্রা কেন্দ্র।


    মেলা এবং উৎসব


    কলকাতা সাংসকৃতিক আনন্দের একটি ভূমিস্থল। দূর্গাপূজা (দেবী দূর্গার পূজার্চনা) হল এই শহরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উৎসব। এটি অক্টোবর-নভেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত হয়। কলকাতাবাসী এই সময় দিন-রাত ‘পূজা প্যান্ডেল’-এ ঘুরে কাটায়। গঙ্গাসাগর মেলা হল এই শহরের অন্য আরোও একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎসব। এটি রাজ্যের এক বৃহত্তম মেলা, এটি সাগরদ্বীপে মকর সংক্রান্তি উপলক্ষ্যে অনুষ্ঠিত হয়। লক্ষ লক্ষ তীর্থযাত্রী এই পু্ন্য দিনে গঙ্গা নদী ও বঙ্গোপসাগরের সংগমস্থল অর্থাৎ মোহনার জলে একটি পূণ্যস্নানের ডুব দিতে এই দ্বীপটিতে ভিড় করে। এছাড়াও অন্যান্য আরোও প্রধান উৎসবগুলি হল দীপাবলি, প্রভু জগন্নাথের রথযাত্রা, হোলি, ঈদ ও খ্রীষ্টমাস।

    কলকাতায় অনেক মেলাও অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে সবচেয়ে প্রসিদ্ধ হল কলকাতা বই মেলা। উন্নত মানের আয়োজন সহ এটি ভারতের এক বৃহত্তম বই মেলা। শহরের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ মেলাগুলি হল বস্ত্র মেলা, কলা ও হস্তশিল্প মেলা ও চর্মজাত দ্রব্যের প্রদর্শনী।

    বাসস্হানোপযোগী জায়গা


    কলকাতা প্রত্যেকের জন্য পকেট উপযোগী। আপনি এখানে আপনার বাজেট অনুযায়ী বিলাসবহল, মাঝারি মানের বা কম খরচের হোটেল বেছে নিতে পারেন। এখানে পাঁচ তারকা (ফাইভ স্টার) হোটেলও রয়েছে, যেমন – ওবের*য় গ্র্যান্ড হোটেল, দ্য পার্ক হোটেল, দ্য তাজ বেঙ্গল এবং দ্য হায়াত রিজেন্সি। সঞ্চয়ী হোটেলের মধ্যে রয়েছে হাওড়া হোটেল, প্যারাগন হোটেল এবং স্যালভেশন আর্মি গেস্টহাউস।

    রন্ধ্রনপ্রণালী


    পূর্বের সাংস্কৃতিক কেন্দ্রস্থল হওয়ায়, কলকাতায় বিভিন্ন খাবারের বিচিত্র বিকল্প রয়েছে। এখানে আপনি অতি সহজেই বাঙালি, উত্তর ভারতীয়, দক্ষিণ ভারতীয়, কন্টিনেন্টাল, মূঘলীয়, থাই ও চীনা খাবার পেয়ে যাবেন। সমস্ত খাবারের মধ্যে কলকাতার বিখ্যাত খাবার হল ‘রসগোল্লা’, ‘মিষ্টি দই’ ও ‘মাছের ঝোল’। স্যাফরন, জারাঞ্জ, জায়কা, ভাটিকা, উড়ুপি (ভারতীয়), চাইনিজ প্যাভিলিয়ন, জেন, রেড হট চিল্লি পিপার, অর্কিড (চীনা ও থাই) হল আপনার স্বাদ পরিতৃপ্তির সেরা জায়গা।

    কেনাকাটার উদ্যমতা


    কলকাতায় কেনাকাটা করার প্রসিদ্ধ স্থানগুলি হলঃ -

    মেট্রো শপিং সেন্টার: এটি টাটা সেন্টার থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে হো চি মিন সরণী-তে অবস্থিত। এখানে ২৬০-টিরও বেশি বস্ত্র, জামা-কাপড়, আনুষঙ্গিক দ্রব্য ও অন্যান্য আরোও পণ্যের দোকান রয়েছে। আপনি শুধু নাম করলেই, সেই জিনিষটি সেখানে পাবেন।

    নিউ মার্কেট: যদি আপনি ভালো দর কষাকষি করতে জানেন, তবে এই নিউ মার্কেট আপনার জন্য ঠিক জায়গা। এখানে আপনি আপনার সমস্ত প্রয়োজনীয় ক্ষুদ্রতম ও সস্তার দ্রব্য থেকে শুরু করে বৃহওম ও বহু-মূল্যবান দ্রব্যও পেতে পারেন।

    লিন্ডসে স্ট্রীট এরিয়া: এটি নিউ মার্কেট অঞ্চলের পাশেই অবস্থিত এবং এখানে অবস্থিত সারিবদ্ধ দোকানগুলি খরিদ্দার-এর নিকট স্বর্গ স্বরূপ। শ্রীরাম মার্কেট ও ট্রেস্যার আইল্যান্ড হল এই অঞ্চলে অবস্থিত আরোও অন্যান্য দুটি কেনাকাটার কেন্দ্র।

    পার্ক স্ট্রীট এরিয়া: এখানে বেশ কিছু উচ্চ-শ্রেণীর কেনাকাটার কেন্দ্র রয়েছে, সেগুলির মধ্যে রয়েছে বৈভব এয়্যার কন্ডিশেনড মার্কেট, বরদান, ভিক্টোরয়া প্লাজা, দ্য ফোরাম ও দ্য মেট্রো প্লাজা, মিউজিক ওয়্যার্ল্ড, অক্সফোর্ড বুকস স্টোর এবং দ্য ল্যান্ডমার্ক-ও এখানে অবস্থিত।

    গড়িয়াহাট: প্রচুর দোকান নিয়ে গঠিত গড়িয়াহাট, লিন্ডসে স্ট্রীট এরিয়ার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দিতা করতে পারে। দ্য বালিগঞ্জ এসি মার্কেট এবং দ্য দক্ষিণাপন শপিং সেন্টার হল এখানকার প্রধান দুটি আকর্ষণ। সরকারের বিভিন্ন হস্তশিল্প ও বস্ত্রের বাণিজ্যকেন্দ্র-ও এখানে দেখা যেতে পারে।


    পর্যটন কার্যালয়


    ভারত সরকারের পর্যটন কার্যালয় - কলকাতা এয়ারপোর্ট কাউন্টার, নিউ টার্মিন্যাল বিল্ডিং, কলকাতা।
    ভারত সরকারের আঞ্চলিক পর্যটন কার্যালয় - এমব্যাসি বিল্ডিং, ৪ শেক্সপীয়্যার সরণী, কলকাতা।
    পশ্চিমবঙ্গ পর্যটন উন্নয়ন নিগম - ৩/২, প্রথম তল, বিবাদী বাগ।
    ভারত পর্যটন উন্নয়ন নিগম - ৩জি, এভারেস্ট বিল্ডিং, ৪৬সি, জওহরলাল নেহেরু রোড, কলকাতা।


    ভ্রমণ উপদেশ -

    আপনার হোটেলের অগ্রিম সংরক্ষণ নিশ্চিত করে রাখুন।
    শুধুমাত্র বিশুদ্ধ পানীয় জল পান করুন।
    রন্ধন করা হয়নি এমন খাবার খাবেন না।
    কলকাতার গ্রামীণ অঞ্চলে চিকিৎসার ভাল সুবিধা নেই, সুতরাং আপনি সেখানে যাওয়ার পরিকল্পনা করলে প্রস্তুত হয়ে যাবেন।
    প্রতিনিধি ও দালাল-দের বিষয়ে সতর্ক থাকুন।

    -----------------------------------------------


    আরও বিস্তারিতঃ- http://bengali.mapsofindia.com/west-bengal/kolkata/
    Last edited by Ghora; 07-27-2016, 06:13 PM.
    সালাউদ্দিনের ঘোড়া
    তাওহীদ ও জ্বিহাদের বাণী প্রচারে অবিচল

  • #2
    পশ্চিমবঙ্গের জেলাঃ- https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6...A6%B2%E0%A6%BE

    সালাউদ্দিনের ঘোড়া
    তাওহীদ ও জ্বিহাদের বাণী প্রচারে অবিচল

    Comment


    • #3
      মাশাআল্লাহ, উপকারী।

      Comment

      Working...
      X