দাজ্জাল আগমনের পূর্বে কয়েক ধাপে সমগ্র বিশ্বে খাদ্য সংকট তৈরি হবে। চূড়ান্ত খাদ্য সঙ্কট এমন পরিস্থিতি তৈরি করবে যে, এক সপ্তাহ ঘুরে একটা মহল্লা থেকে খাওয়ার জন্য একটি রুটি পাওয়া যাবে না। আর দাজ্জালের আত্মপ্রকাশ হবে সদ্য প্রস্তুতকৃত গরম গরম রুটি ও ভূনা গোস্তের ভান্ডার নিয়ে। দিনের পর দিন ক্ষুধার্ত থাকা কোনো মানুষের সামনে যদি এমন লোভনীয় খাবার নিয়ে হাজির হয়ে একটি মাত্র শর্তের বিনিময়ে খাবার দেয়া হয় তাহলে তার অবস্থা কেমন হবে তা বোঝার জন্য ২/১ দিন অভূক্ত থেকে সহজেই উপলব্ধি করা সম্ভব।
.
করোনা ভাইরাস ইস্যুতে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে তাতে বাংলাদেশের প্রায় এক তৃতীয়াংশ মানুষ খাদ্য সঙ্কটের সম্মুখীন হয়েছে। যদি পরিস্থিতি এমনই থাকে তাহলে আগামী এক মাসের মধ্য এই সঙ্কটের ভয়াবহতা আরো স্পষ্টরুপে প্রকাশিত হবে। আর এই পরিস্থিতি আগামী ২-৩ মাস ধরে জারি থাকলে ভয়াবহতা কোন পর্যায়ে পৌঁছবে তা সহজেই আনুমেয়।
.
এরুপ পরিস্থিতিতে মুমিনদের জন্য সম্ভাব্য করনীয় এমন হতে পারেঃ
১. রসুল সল্লাল্লাহু আ'লাইহিওয়াসাল্লামের সুন্নাহ ছিলো তিনি যখনই কোন পেরেশানির সম্মুখীন হতেন তখনই সলাতে দাঁড়িয়ে যেতেন। তাই আমরা যেন হালতের বিপরীতে আল্লাহজাল্লা শানহুর দরবারে বেশি বেশি আমল পেশ করি ইনশাআল্লাহ।
২. ইউসুফ আলাইহিস্সালাম স্বপ্নের বিপরীতে শাসককে খাদ্য সঙ্কট মোকাবিলায় যে পদ্ধতি বাতলে দিয়েছিলেন আমরা তার উপর আমল করতে পারি ইনশাআল্লাহ। সহজে অনেকদিন সংরক্ষণ করা যায় এমন খাবার যেমন - চাল, ডাল, গম, ছোলা, চিড়া, মুড়ি, খেজুর, মধু ইত্যাদি খাবার যথাসম্ভব সংরক্ষণ করে রাখা উত্তম হবে ইনশাআল্লাহ।
৩. খাদ্য সংরক্ষণের পাশাপাশি যাদের পক্ষে সুযোগ আছে হাঁস-মুরগী, ছাগল-ভেড়া ইত্যাদি পালনের তাদের উচিত যথাসম্ভব গবাদিপশু পালনের ব্যবস্থা রাখা। খাদ্য সঙ্কটের সময় দুধ, ডিম, গোস্তের যোগান দেয়া যেকারো জন্য অসম্ভব হয়ে দাঁড়াবে।
৪. টাকা-ডলারের বিরপীতে স্বর্ণ, রৌপ্য মজুদ করতে থাকা। অনেক বড় ক্রাইসিস দেখা না দিল স্বর্ণ বা স্বর্ণালঙ্কার হাতছাড়া না করা। নিজের যাবতীয় টাকা-পয়সা ব্যাঙ্কে ফেলে রাখা ক্ষতির কারণ হতে পারে। উত্তম হবে অর্থ-সম্পদ এমন কোথাও বা কোনভাবে মজুদ করা যেন চাইলেই তা হস্তগত করা যায় ইনশাআল্লাহ।
৫. দ্বীনি কারণ ব্যতিত গ্রামাঞ্চল ও মফস্বল এলাকা ছেড়ে শহরাঞ্চলে স্থানান্তরিত না হওয়া। শহরাঞ্চলে অবস্থিত ব্যক্তিদের জন্য সবচেয়ে ভয়াবহতা দেখা দিবে খাবার পানির যোগান ঠিক রাখা। তাই অবস্থানভেদে খাবার পানির পর্যাপ্ত যোগান দেয়া যাবে এমন ব্যবস্থা রাখতে হবে।
৬. প্রয়োজনীয় ঔষধ-পত্র, খাবার স্যালাইন ইত্যাদি পর্যাপ্ত পরিমাণে মজুদ রাখা।
৭. জীবন-যাপনের ক্ষেত্রে নবীওয়ালা, সাহাবীওয়ালা যুহুদ অবলম্বনে পারিবারিকভাবে অভ্যস্ত হতে থাকা।
আল্লাহজাল্লা শানহু এই গাফেল উম্মতকে দ্বীনের উপর ইস্তিকামাত দান করুন, হিদায়াতের সাথে হিফাজত করুন। আমীন....
Comment