Announcement

Collapse
No announcement yet.

পাঠচক্র- ৪১ || ‘মুসলিম উম্মাহর প্রতি ইমামের বার্তা।। শাইখ আইমান আয যাওয়াহিরী হাফিযাহুল্লাহ|| দ্বিতীয় পর্ব

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • পাঠচক্র- ৪১ || ‘মুসলিম উম্মাহর প্রতি ইমামের বার্তা।। শাইখ আইমান আয যাওয়াহিরী হাফিযাহুল্লাহ|| দ্বিতীয় পর্ব

    আন নাসর মিডিয়া মিডিয়া পরিবেশিত
    “‘মুসলিম উম্মাহর প্রতি ইমামের বার্তা

    ।।শাইখ আইমান আয যাওয়াহিরী হাফিযাহুল্লাহ ||
    এর থেকে– দ্বিতীয় পর্ব



    শাইখ আইমান আয যাওয়াহিরী হাফিযাহুল্লাহ: শাইখ রহিমাহুল্লাহ অন্যতম মহান অবদান ছিল – কার্যকরী একক পরিকল্পনা ও পদক্ষেপের অধীনে ইসলামী আন্দোলনগুলোকে একীভূত করার প্রাণান্তকর প্রয়াস ও তীব্র আগ্রহ। একইভাবে অন্যতম অপর একটি মহান অবদান হলো – তাবেদার শাসকবৃন্দকে প্রত্যাখ্যান করা, তাদের বিশ্বাসঘাতকতা স্পষ্ট করে দেয়া এবং তাদের এই পরিচয় জনসাধারণের কাছে তুলে ধরা যে, এরাই হলো ঐ সমস্তছুরি ও বিষাক্ত নখযেগুলোর মাধ্যমে আমাদের শত্রুরা আমাদের মাংসে আঘাত বসাচ্ছে।

    তার অন্যতম আরও একটি অবদান হলো – প্রথমবার ব্রিটিশদের এবং এরপর মার্কিনীদের তাবেদারী, দাসত্ব ও গোলামীর ক্ষেত্রে আলে সৌদের প্রকৃত চেহারা ও মুখোশ উন্মোচন করা এবং উপসাগরীয় অঞ্চলের শাসকদের লাঞ্ছনাকর ইতিহাস তুলে ধরা। সেই ইতিহাসে দেখা যায়, ব্রিটিশ পরিকল্পনায় কীভাবে সৌদি আরবের প্রধানেরা গড়ে উঠেছে!

    পরবর্তীতে মার্কিনীরা মুসলিমদের জাতীয় সম্পদ চুরি ও আত্মসাৎ করার জন্য কীভাবে ব্রিটিশ পরিকল্পনার উত্তরাধিকার লাভ করেছে – সেটাও শাইখ স্পষ্ট করেছেন। এই চুরির বিষয়টি প্রকাশ করার এবং বিশেষ করে মুসলিমদের অধিকারভুক্ত পেট্রোল চুরির বিষয় সম্পর্কে জাতিকে অবহিত করার জন্য তিনি চেষ্টা করেছিলেন।

    এই পেট্রোল চুরিকে তিনি মানবজাতির ইতিহাসেসর্ববৃহৎ ও সর্বাধিক ন্যক্কারজনক চুরিবলে আখ্যায়িত করেছিলেন। তিনিতেল চুরির তথ্য প্রকাশেরএ ময়দানের পথ প্রদর্শক ছিলেন। অল্প যে কয়েকজন মানুষ এই চুরির বিষয়টি প্রকাশিত করেছিলেন, তিনি তাদের একজন ছিলেন। তিনি এই ন্যক্কারজনক কাজ মোকাবেলা করার এবং তা বন্ধ করার দাবি জানিয়েছিলেন।

    তিনি বলতেন, “মুসলিমদের পেট্রোল পশ্চিমা সভ্যতার মেরুদণ্ড। এতদসত্ত্বেও এক ব্যারেল পেপসিকোলার দাম, এক ব্যারেল পেট্রোলের দামের চেয়ে বেশি

    (পেট্রোলের ব্যারেল থেকে কোকাকোলার ব্যারেলের দাম বেশি)

    তিনি মুসলিমদেরকে স্মরণ করিয়ে দিতেন – এ সমস্ত সম্পদ, বিশেষ করেপেট্রোলমুসলিমদের ভূমিতে সামরিক আগ্রাসন ও অবরোধের হুমকি দেখিয়ে চুরি করা হয়।

    অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় যা হৃদয়ে রক্তক্ষরণ সৃষ্টি করে সেটি হলো – ইসলামী আন্দোলনের দাবিদার অধিকাংশই, কাছে থেকে হোক কিংবা দূরে থেকে, তেল চুরির এই বিষয়টা নিয়ে মাথা ঘামায় না। বরং তাদের অধিকাংশই উপসাগরীয় অঞ্চলের শাসকদেরকে তোয়াজ করে চলতে ব্যস্ত। তাদের নৈকট্য লাভের জন্য যেন তারা মুখিয়ে থাকে। এসকল পাপাচারী শাসকেরা প্রকৃতপক্ষে মুসলিমদের সম্পদ-চোরদের দাস। হয়তো এর বিনিময়ে তারা কিছু সুযোগসুবিধা ভোগ করার সুযোগ পায় এবং ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা লাভ করতে পারে।

    এই নির্বোধ চোরেরা ঐতিহাসিক চুরির সুযোগ করে দেয়ার বিনিময়ে, যে সুযোগসুবিধা লাভ করে তাই নিয়ে বিভিন্ন মৌজমাস্তিতে ব্যস্ত হয়ে যায়। বৈশ্বিক শয়তানি অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে জিইয়ে রাখার বিভিন্ন মাধ্যমে নিজেদের অর্থ তারা বিনিয়োগ করে।

    এই নির্বোধ পরাজিত মানসিকতার দাসগুলো সে সমস্ত অর্থের একটা অংশ যদি মুসলিম বিশ্বে ব্যয় করত, তাহলে মুসলিম বিশ্ব দারিদ্রতা, অজ্ঞতা ও অসুস্থতার অনিষ্ট থেকে মুক্তি পেতে পারতো। মুসলিমদের জন্য উন্নত শিক্ষা ব্যবস্থা ও চিকিৎসা ব্যবস্থার সুযোগ তারা সৃষ্টি করতে পারত। মুসলিমদের জন্য যথেষ্ট পরিমাণ অন্ন ও বাসস্থান তারা তৈরি করতে পারত। কিন্তু তারা এগুলো না করে সে অর্থ ফুটবল বিশ্বকাপে ব্যয় করে। নাইট ক্লাবে খরচ করে, জায়নবাদী হোটেল, স্টক এক্সচেঞ্জ ও ব্যাংকে তারা অর্থ বিনিয়োগ করে। এমন অস্ত্রশস্ত্রের চুক্তিতে তারা বিনিয়োগ করে যেসব অস্ত্র তারা ব্যবহার করে না।

    আমেরিকা, পশ্চিমা বাহিনী এবং ভাড়াটে গ্যাংকে নিজেদের ভঙ্গুর শাসন ব্যবস্থার রক্ষার্থে ভাড়া করে নিজ দেশে নিয়ে আসে। এরপর তাদের কাছ থেকে সাহায্য নেয়ার নামে তাদের জন্য অর্থ খরচ করে। অতঃপর এইসব নিরর্থক কাজে অর্থ খরচের বিষয়টা তারা খুবই দাম্ভিকতার সাথে, বুক ফুলিয়ে প্রচার করে। ইসলামী আন্দোলন, ইসলামী দাওয়াতি কার্যক্রম এবং ইলম চর্চার দাবিদার অধিকাংশই এ ব্যাপারে আজ নীরব। শুধু নীরবতা নয়, বরং তাদের অনেকেই এসকল শাসকগোষ্ঠীকে তোয়াজ করে চলে, তাদের প্রশংসা করে। তাদেরকে মুসলিমদের রক্ষাকারী হিসেবে জনসাধারণের সামনে পেশ করে!

    কবি বলেন—

    أغاية الدين أن تحفوا شواربكم يا أمة ضحكت من جهلها الأمم

    আল্লাহর দ্বীনের লক্ষ্য কি এটাই যে, তোমরা নিজেদের গোঁফ ছাঁটাই করবে,


    হে জাতি! তোমাদের অজ্ঞতায় অন্যান্য জাতিরা হেসেছিল!!


    মুসলিমদের থেকে চুরিকৃত উপসাগরীয় অঞ্চলের এই সম্পদ ব্যবহার করেই আমাদের শত্রুরা মুজাহিদিনের কাতার বিক্ষিপ্ত করা, তাদের ঐক্য বিনষ্ট করা এবং ঘুষের মাধ্যমে বিভিন্ন শ্রেণীর বিবেক ক্রয় করে ফেতনা সৃষ্টি করার প্রয়াস পায়।

    হামাদ বিন জসিম বিন জাবের আল সানি (কাতারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী): সিরিয়াতে যখনযুদ্ধবাবিপ্লবশুরু হয় তখন আমরা সকলেই প্রধানত টি অপারেশন রুম দ্বারা কাজ করেছিলাম। একটা ছিল জর্ডানে, আরেকটা তুর্কিতে। জর্ডানের অপারেশন রুমটি প্রথম স্থাপন করা হয়েছিল। জি.সি.সিভুক্ত (gcc) দেশগুলোর মধ্যে সৌদি আরব, আরব আমিরাত, কাতার, আমেরিকাসহ আমাদের অন্যান্য সহযোগীরা জর্ডানের অপারেশন রুম ব্যবহার করে কাজ করেছিলাম। আমরা সকলেই একটি গ্রুপকে সাহায্য করেছিলাম। তুর্কির অপারেশন রুমটি দিয়েও একই পদ্ধতিতে কাজ করা হচ্ছিল। সময়ের সাথে আমরা লক্ষ্য করলাম যে, সেখানে কিছু গ্রুপ এমন ছিল যারা ভিন্ন এজেন্ডা নিয়ে কাজ করছে। আমরা তাদের সকলকে একে একে সরিয়ে দিয়েছি। যখনই কোন গ্রুপের বিষয়ে আমাদের বন্ধু রাষ্ট্র থেকে আপত্তি জানানো হয়েছে তখনই আমরা সেটাকে বাদ দিয়েছি। যুদ্ধ ক্ষেত্রে কখনো কখনো এমন হয় যেভুল গ্রুপকে সাহায্য করা হয়ে যায়।


    চার্লি রোসঃ অবশ্যই।


    হামাদ বিন জসিম বিন জাবের আল সানি (কাতারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী): যখনই কোন দলের ব্যাপারে ভুল ধরা পড়েছে তখনই আমরা সেখানে সাহায্য করা বন্ধ করে দিয়েছি। তার মানে এটা নয় যে, সেখানে আমাদের কোন ভুল হয়নি।

    ভুল হয়েছে, তবে সেটা ইচ্ছাকৃত ছিল না। আমরা জেনে বুঝে ইচ্ছাকৃত ভাবে তাদের সাহায্য করেছিএটা ভুল। তাদেরকে সাহায্য করাতে আমাদের কী স্বার্থ থাকতে পারে? এরা যদি সিরিয়া জয় করতে পারে, এরপর অবশ্যই তারা আমাদের দিকে আসবে। আমরা এটা জানতাম। তাই আমাদের জন্য


    চার্লি রোসঃ সন্ত্রাসী সংগঠনটির কথা বলছেন?


    হামাদ বিন জসিম বিন জাবের আল সানি (কাতারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী): অবশ্যই। অবশ্যই, তারা আমাদের দিকে আসবে। এটাই স্বাভাবিক। আপনি কি ভাবছেন যে আমরা হুমকির মধ্যে ছিলাম না। আমরা অবশ্যই সেসময় হুমকির মুখে ছিলাম।

    হামাদ বিন জসিম বিন জাবের আল সানি (কাতারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী): সিরিয়াতে যখন ঘটনাগুলো শুরু হল তখন আমি সৌদি আরব গিয়েছিলাম। আমি বাদশাহ আব্দুল্লাহ এর সাথে দেখা করি। পুরো বিষয়টা সম্মানিত প্রিন্স এর তত্ত্বাবধানে হয়েছিল। বাদশাহ আব্দুল্লাহ বলেছিলেন, ‘ আমরা তোমার সাথে আছি। তুমি তোমার পরিকল্পনামাফিক কাজ শুরু কর। আমরা তোমার সাথে থাকবো সমন্বয় করে নিবো। তবে পুরো প্ল্যান বাস্তবায়নের দায়িত্ব তোমার হাতে থাকবে

    আমি আর ভিতরে যাচ্ছি না। তবে পুরো বিষয়টার দায়িত্ব আমাদের হাতে ছিল। আরব দেশগুলো থেকে সিরিয়াতে যত রকমের সাহায্য যেত, তার সবই আমেরিকানদের সাথে সমন্বয় করে তুর্কির মাধ্যমে যেত। আমেরিকান বাহিনী তুর্কি সৈন্যদের মাধ্যমে সিরিয়াতে সবকিছু বণ্টন করা হত। আমরা, অন্যান্য আরব দেশ এবং এসকল দেশের সেনারা এতে জড়িত ছিল।


    সেখানে কাজ করতে যেয়ে ভুল হয়ে থাকতে পারে। ভুল কোন গ্রুপকে সাহায্য করা হয়ে থাকতে পারে। তবে এটা অবশ্যইদায়েশছিল না। ভুলেও দায়েশকে কখনো সাহায্য করা হয় নি। তারা যদি দায়েশকে সাহায্য করার অভিযোগ আমাদের দিকে তোলে তবে এটা বাড়াবাড়ি হবে। সেখানে হয়তোনুসরাগ্রুপটিকে কখনো কখনো সাহায্য করা হয়ে থাকতে পারে, তবে আমি নিশ্চিত না। বিষয়টি আমার পুরোপুরি জানা নেই। তবে আমি আপনাকে একটা বিষয় নিশ্চিত করতে পারি, নুসরাকে যদি সাহায্য করা হয়েও থাকে তবে সেটা আমাদের বন্ধু রাষ্ট্রগুলোর সম্মতিতেই হয়েছে। আর যখন নুসরা ব্যাপারে আপত্তি জানানো হয়েছে তখনই সাহায্য করা বন্ধ করা হয়েছে। এরপর নুসরার পরিবর্তে সিরিয়ার স্বাধীনতাকামী অন্যান্য গ্রুপ গুলোকে সাহায্য করা হয়েছে।

    শাইখ আইমান আয যাওয়াহিরী হাফিযাহুল্লাহ: শাইখ রহিমাহুল্লাহর গুরুত্বপূর্ণ অবদানগুলোর মাঝে আরও একটি হলো – যায়নিস্ট বানাবার রাজনীতি এবং যায়নবাদীদের আমলাদের মুখোশ উন্মোচন করেছিলেন। এই আমলাদের মধ্যকার গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রগুলো হচ্ছে – পেট্রোল শেখদের প্রধানেরা, ধর্মনিরপেক্ষ আতাতুর্কী ব্যবস্থা এবং মুসলিম দেশগুলোতে চেপে বসা অধিকাংশ তাবেদার সরকার ও শাসক গোষ্ঠী।

    শাইখ ইবনে লাদেনের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অবদান হলো – ফিলিস্তিনের ইসলামপন্থী দলগুলোর প্রতি এই দাওয়াত পেশ করা যে, তারা যেন তাদের আন্দোলনের পন্থা বিশুদ্ধ করে নেয়। ধর্মনিরপেক্ষ সংবিধান যেন প্রত্যাখ্যান করে এবং ফিলিস্তিনের ধর্মনিরপেক্ষ দেশ বিক্রেতাদের সঙ্গে ঐক্য, সন্ধিচুক্তি ও একাত্মতা স্থাপন করা থেকে যেন তারা বিরত থাকে।

    উসামা বিন লাদেন রহিমাহুল্লাহ কোন পন্থায় ফিলিস্তিনসহ আগ্রাসন কবলিত সকল মুসলিম ভূখণ্ড স্বাধীন হবে সেটি বর্ণনা করেছেন। এর জন্য কার্যকরী পন্থা কোনটি সেটা তিনি দেখিয়ে দিয়েছেন। শত্রুরা তাদের সৈন্য প্রত্যাহার করে আলোচনার টেবিলে আসতে যেন বাধ্য হয়, সে লক্ষ্যে তাদের মাথায় আঘাত করতে হবে।

    শাইখ রহিমাহুল্লাহ সত্য প্রকাশের স্বাধীনতার জন্য ব্যাকুল ছিলেন। তিনি উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন, ফিতনা-ফাসাদ সৃষ্টিকারী জালেম শাসকদের কাছ থেকে দূরে না সরে, হিজরত না করে – এ স্বাধীনতার চর্চা করা তার পক্ষে সম্ভব হবে না। তাই তিনি হিজরত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। নিজের অর্থ-সম্পদ, আপন সম্প্রদায়, ঘরবাড়ি সবকিছু আল্লাহর রাস্তায় তিনি ছেড়ে দেন। আমরা আল্লাহ তায়ালার কাছে দোয়া করি, যেন তিনি তার সকল আমল কবুল করে নেন। তিনি সহ সকল মুহাজির ও মুসলিমদের আমল কবুল করে নেন, আমীন।

    সৌদি সরকার বাদশা ফাহাদের আমলে তাকে প্রস্তাব করেছিল – তার সকল অর্থ-সম্পদ, মালিকানাধীন সবকিছু ফিরিয়ে দেয়ার বিনিময়ে, তিনি যেন সৌদি রাজপরিবারের কুকীর্তি ও মুখোশ উন্মোচন করা বন্ধ করেনকিন্তু তিনি দম্ভভরে এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। তার জবানের বিশ্বস্ততা – তার একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য ছিল।

    সৌদি রাজপরিবারের অশ্লীলতা ও চারিত্রিক অধঃপতন সম্পর্কে তার জ্ঞান থাকা সত্ত্বেও এবং তাদের সকল অনাচার সবিস্তারে তার সামনে থাকা সত্ত্বেও তিনি আপন ভাইদেরকে বলেছিলেন – এগুলো নিয়ে মাথা না ঘামিয়ে শাসনব্যবস্থার ধর্মহীনতা ও ধ্বংসমুখী চরিত্রের প্রতি যেন তারা মনোনিবেশ করেন।

    এসব কারণেই আমেরিকাসহ পশ্চিমা বিশ্ব এবং ইসলামের শত্রুরা মিলে তার দাওয়াতের মূল আবেদন বিকৃত করতে এবং এ সম্পর্কে অপপ্রচার চালাতে ব্যতিব্যস্ত হয়ে ওঠে।

    উসামা বিন লাদেন রহিমাহুল্লাহ মাসুম বা নিষ্পাপ ছিলেন না। ভুলত্রুটির ঊর্ধ্বেও ছিলেন না। কিন্তু তিনি ত্যাগ-তিতিক্ষা ও আত্মবিসর্জনের ব্যাপারে অনুপম আদর্শ ছিলেন। সেইসঙ্গে নম্র চরিত্র, বিনয় ও সদাচরণের ক্ষেত্রে তিনি অসাধারণ ছিলেন। এ কারণেই তার ভাল কাজগুলো অন্যগুলোকে ঢেকে দিয়েছে। নিশ্চয় এটা আল্লাহর অনুগ্রহ, তিনি যাকে ইচ্ছা তা দান করেন।

    কবি বলেন—

    ومن ذا الذي ترضى سجاياه كلها كفى المرء نبلا أن تعد معايبه


    কবিতার অর্থ:

    এমন কে আছে যার সকল আচার-আচরণ আপনি পছন্দ করবেন!

    একজন মানুষের মহত্ত্ব ও আভিজাত্যের জন্য এটুকুই যথেষ্ট যে, তার হাতে গোনা কিছু দোষ ত্রুটি থাকবে।

    আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা তাকে এই মর্যাদা দান করেছিলেন যে, লক্ষ কোটি মুসলমানের অন্তরে তার জন্য ভালোবাসা স্থান করে নিয়েছিল। তিনি সকলের হৃদয় জয় করে নিয়েছিলেন। শুধু মুসলিমরাই নয়, বরং অমুসলিমদের মধ্যে যারা উদার ও সম্ভ্রান্ত, যারা এই পৃথিবীতে বড় বড় অপরাধী চক্রের জুলুম, ফাসাদ ও বিশৃঙ্খলার বিরুদ্ধে – তাদের অন্তরেও তিনি স্থান করে নিয়েছিলেন।

    শাইখ রহিমাহুল্লাহ তার অনেক পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে সফল হয়েছিলেন। একথা প্রমাণের জন্য এটুকুই যথেষ্ট যে, তিনি আমেরিকাসহ ইসলামের সকল শত্রু গোষ্ঠীর আতঙ্কে পরিণত হয়েছিলেন।

    ইসলামের শত্রুরা এতটাই ভীত হয়েছিল যে, আমেরিকা পাকিস্তানি বাহিনীকে নির্দেশ দিয়ে রেখেছিল – তিনি কোনও বাড়ি ভাড়া করলে, তারা যেন সেই বাড়ি বিধ্বস্ত করে দেয়। তারা তাকে সমাধিস্থ করার জন্য কোন স্থান খুঁজে পায়নি। অবশেষে বাধ্য হয়ে গভীর সমুদ্রকে তারা বেছে নিয়েছে। এই সুবাদে মহাসাগর অনেক গুণ, প্রশংসা, সৌভাগ্য ও উচ্চ মর্যাদা হাসিল করেছে।


    কবি বলেন:

    صارت رفاتك في خضم الماء بحرا من الأمجاد والعلياء

    আপনার দেহাবশেষ জলের দ্বারা আচ্ছাদিত হয়ে, আপনার গৌরব ও মর্যাদা সমুদ্রে পরিণত হয়েছে,

    يا ويحهم نصبوا منارا للعلى يهدى به في اللجة الظلماء

    হে হতভাগ্যরা! তারা এমন আলোর মিনার স্থাপন করেছেন, যা অন্ধকারের অতল গহ্বরে সঠিক পথ দেখায়,

    وأريج عز شامخ وكرامة يسري بموج البحر للأنحاء

    তিনি এমন উচ্চ মর্যাদা ও শ্রেষ্ঠত্বের সুবাস, যা সমুদ্রের ঢেউয়ের সঙ্গে সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে।




    আরও পড়ুন
    প্রথম পর্ব

  • #2
    অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় যা হৃদয়ে রক্তক্ষরণ সৃষ্টি করে সেটি হলো –
    ইসলামী আন্দোলনের দাবিদার অধিকাংশই, কাছে থেকে হোক কিংবা দূরে থেকে, তেল চুরির এই বিষয়টা নিয়ে মাথা ঘামায় না।
    বরং তাদের অধিকাংশই উপসাগরীয় অঞ্চলের শাসকদেরকে তোয়াজ করে চলতে ব্যস্ত। তাদের নৈকট্য লাভের জন্য যেন তারা মুখিয়ে থাকে।
    বছর ফুরিয়ে যাবে এতো রিসোর্স আছে https://gazwah.net সাইটে

    Comment

    Working...
    X