Announcement

Collapse
No announcement yet.

পাঠচক্র- ৩৭ || “ফিলিস্তিনের স্মৃতি ” ।। শহীদ ড. আবদুল্লাহ আযযাম রহ. || তৃতীয় পর্ব

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • পাঠচক্র- ৩৭ || “ফিলিস্তিনের স্মৃতি ” ।। শহীদ ড. আবদুল্লাহ আযযাম রহ. || তৃতীয় পর্ব

    ফিলিস্তিনের স্মৃতি ।।
    শহীদ ড. আবদুল্লাহ আযযাম রহ. ||
    এর থেকে– তৃতীয় পর্ব

    সেখানে আত্মোৎসর্গকারী মুজাহিদদের একটি সংগঠন ছিলো সেটি হলো ফাতাহ[1]। সব আরব রাষ্ট্রের পতনের প্রেক্ষাপটে ফাতাহ ঘোষণা দিয়েছিলো যে তারা ইহুদিদের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাবে। সুতরাং যারা এই লড়াইয়ে এগিয়ে আসতে চায় তারা যেনো এগিয়ে আসে। হে মুসলমানেরা, এগিয়ে আসো। হে আরব, তোমরা এগিয়ে আসো। যারা ফিলিস্তিনকে উদ্ধার করতে চাও তারা এগিয়ে আসো। কিন্তু কিছু অল্পবয়সী তরুণ ছাড়া কেউ এগিয়ে আসে না। তারা তৃতীয় স্তরের সামরিক প্রশিক্ষণে ব্যর্থ হয়েছে এবং অধিকাংশই সেনাবাহিনীতে বাধ্যতামূলক অন্তর্ভূক্তি (Conscription) থেকে পালিয়ে এসেছে। তারা এসেছিলো, কিন্তু এই পরিস্থিতিতে বাস্তবতা ডালাপালা ছড়াতে থাকে এবং প্রয়োজনে বাস্তবতা ভিন্ন ভিন্নরূপে প্রকাশ পায়।

    হে মুসলমানেরা, তোমরা এগিয়ে আসো। মুসলমানেরা এগিয়ে আসে নি । হে জ্ঞানী সম্প্রদায়, তোমরা এগিয়ে আসো। জ্ঞানী সম্প্রদায় এগিয়ে আসে নি। ১৯৬৭ সালের একবছর পর থেকে মুসলমানেরা চেষ্টা শুরু করে। স্বভাবতই মুসলমানেরা ছিলো ঘুমিয়ে। মিসরে ইসলামি আন্দোলন ছিলো মৃত। এই লজ্জাজনক পরাজয়ের মাত্র নয় মাস আগে জাতি হারিয়েছিলো সাইয়িদ কুতুব রা.-কে। তিনি ছিলেন মিসরে ইসলামি আন্দোলনের পুরোধা ব্যক্তিত্ব। আবদুন নাসের বৈপ্লবিক ইসলামি চিন্তাবিদ সাইয়িদ কুতব[2] ও তাঁর দুই সহযোদ্ধাকে ১৯৬৬ সালে ২৯ শে আগস্ট ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ফাঁসিতে ঝুঁলিয়ে শহীদ করে। এই কলঙ্ক মিসরীয় জাতির কপালে চিরদিন লেপ্টে থাকবে। আবদুন নাসের ইসলামি আন্দোলনের ১৭ হাজার কর্মীকে জেলখানায় বন্দি করে এবং তাদের ওপর অমানবিক নির্যাতন চালায়। তার উদ্দেশ্য ছিলো ইসলামি আন্দোলকে চিরতরে শেষ করে দেয়া। ইসলামি আন্দোলনকারীদের জন্যে জামিন নিষিদ্ধ করা হয়। কারো যদি কারাদণ্ডের মেয়াদ শেষ হয়ে যেতো তাকে পুনরায় আটকাদেশ দেয়া হতো। সিরিয়ায়ও ইসলামি আন্দোলন নিস্তেজ হয়ে পড়েছে। সেখানে সমাজতন্ত্রীরা সমাজে প্রভাব বিস্তার করছে এবং ছড়াচ্ছে-

    آمنت بالبعث ربا لا شريك له وبالعروبة دينا ما له ثاني

    *আমরা আন্দোলনকে প্রভু হিসেবে মেনে নিয়েছি যার কোনো শরিক নেই এবং অভ্যুত্থানকে ধর্ম হিসেবে মেনে নিয়েছি যার কোনো বিকল্প নেই।[3]

    এবার জর্ডানের কথা বলি। সেখানে ইসলামি আন্দোলনের নেতারা নিজেদের বিশৃঙ্খলা ঘোচাতে এবং পরাজয়ের ক্ষতের কথা ভুলে যেতে চেষ্টা করলেন। জর্ডানে এবং ইসলামি বিশ্বে ও আরব রাষ্ট্রগুলোতে ইসলামি আন্দোলনের দায়িত্বশীলের সংখ্যা বেড়ে গেলো। তাঁরা আহ্বান জানালেন, হে মুসলমানেরা, তোমরা জেগে ওঠো। তোমরা ফিলিস্তিনের জন্যে জেগে ওঠো। কিন্তু মুসলমানেরা ছিলো গভীর ঘুমে মগ্ন এবং তাদের নাক ডাকার আওয়াজ শোনা যাচ্ছিলো।

    সুখের কথা, কিছু ব্যক্তি এগিয়ে এলেন। এই ব্যক্তিরা ছিলেন ফাতাহর সাবেক ক্যাডার, নায়িফ হাওয়াতমা[4] কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত গণতান্ত্রিক জোটের সাবেক ক্যাডার বা জর্জ হাবাশ[5] কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত ফিলিস্তিন-মুক্তির জাতীয়তাবাদী জোটের সাবেক ক্যাডার। প্রত্যেকেই তাঁদের নিজ নিজ অবস্থান থেকে সহায়তা প্রদানের চেষ্টা করেছিলেন। আবদুন নাসের জর্জ হাবাশকে নিজের পুত্র হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন। প্রতিবেশী প্রত্যেক দেশই কিছু সামরিক লোকবল পাঠিয়েছিলো। কিন্তু এদের মধ্যে দীন-ধর্ম কিছু ছিলো না। সিরিয়া "সিরিয়ান ডেথ প্লাটুন' ও ইরাক ইরাকি ডেথ প্লাটুন' প্রস্তুত করেছিলো; এরা সবাই নিজেদের মতাদর্শ বিস্তারের জন্যে ফিলিস্তিন-জর্ডান সীমান্ত এলাকায় সমবেত হয়েছিলো। মুসলমানেরা এই অঞ্চলে ইসলামের নাম ঘোষণাকারী কোনো দল বা সংগঠন প্রতিষ্ঠা করতে পারে নি। তারা সে এলাকা পর্যবেক্ষণ করে কোন দলগুলো আল্লাহর দীনের কাছাকাছি, কোনটির কুফরি কম, কোন দলের অপরাধ কম বা কোন সংগঠন কম খারাপ ইত্যাদি। তারা ফাতাহকে খুঁজে পায়। অফিসাররা ফাতাহর নেতৃবৃন্দের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বলে, আমরা আপনাদের নামের আওতায় কাজ করতে চাই। তবে শর্ত হলো, কাজের কৌশল আমরা নির্ধারণ করবো, অস্ত্রও থাকবে আমাদের; সবকিছু হবে আপনাদের থেকে পৃথক। তারা বলে, আমরা প্রশিক্ষণ-শিবিরের মতো শিবির স্থাপন করতে চাই। এই প্রশিক্ষণ-শিবির চারমাস পর্যন্ত ছিলো।

    যাই হোক। মানুষের জন্যে আল্লাহপাকের নেয়ামত রয়েছে। তাঁর একটি বড়ো নিয়ামত হলো জিহাদের স্বাদ গ্রহণ করতে পারা। আমি মনে করতে পারি, যে চারমাস আমি সেখানে ছিলাম সেই চারমাসের মধ্যে একবেলা ব্যতীত কোনোবারই তৃপ্তির সঙ্গে খেতে পাই নি। পুরো চারমাস সকালে অর্ধেক রুটি, দুপুরে অর্ধেক রুটি এবং সন্ধ্যায় অর্ধেক রুটি।





    [1] ফাতাহ (فتح): পুরো নাম حركة التحرير الوطني الفلسطيني বা The Palestinian National Liberation Movement. এ সংগঠনের নামকরণ করা হয়েছে সুরা 'আল- ফাতাহ'র নামের অনুকরণে। কারণ এ-সুরায় হুদায়বিয়ার সন্ধি করে মুসলমানরা ফাতাহ বা সুস্পষ্ট বিজয় লাভ করেছে বলে উল্লেখ আছে। ১৯৬৫ সালে ইয়াসির আরাফাতের নেতৃত্বে ফাতাহ প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ২০০৪ সালে তাঁর মৃত্যু পর্যন্ত তিনি এটির প্রধান ছিলেন। সংগঠনটির গঠনতন্ত্রে ২৭ টি ধারা আছে। এটির মূলনীতি চারটি ১ ফিলিস্তিনি জাতীয়তাবাদ; ২. সামাজিক গণতন্ত্র; ৩. সেক্যুলারিজম বা সাম্যবাদ; ৪. দ্বিরাষ্ট্রীয় সমাধান। প্রাথমিক অবস্থায় সংগঠনটি ইসলামিক সংগঠন ছিলো। প্রধান কার্যালয় রামাল্লায় অবস্থিত। বর্তমান প্রধান মাহমুদ আব্বাস। ফাতাহর আছে ৬ থেকে ৮ হাজার যোদ্ধা এবং ৪৫ থেকে ৩০০ রাজনীতিক। ২০০৬ সালের ২৫ শে জানুয়ারির সংসদীয় নির্বাচনে ফাতাহ হামাসের কাছে পরাজিত হয়। ২০০৯ সালে ফাতাহর নতুন কর্মনীতি নির্ধারিত হয়। মূলনীতি ও কর্মপদ্ধতিতে হামাসের সঙ্গে ফাতাহর বিরোধ রয়েছে।

    [2] পুরো নাম সাইয়িদ কুতুব ইবরাহিম হুসাইন আশ-শারিবি। মিসরের আসইয়োত জেলার মুশা গ্রামে ১৯০৬ সালে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা উসমান হুসাইন এবং মা ফাতেমা। কুতুব তাঁর বংশীয় অভিধা। গ্রামেই তিনি প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেন এবং কুরআন শরিফ হিফ্য করেন। ১৯২২ সালে কায়রোর মাদরাসাতুল মুআল্লিমিন আল-আওয়ালিয়্যা (আবদুল আযিয)-এ ভর্তি হন। ১৯২৪ সালে এখানে তিন বছরের কোর্স সমাপ্ত করে ১৯২৫ সালে মাদরাসা-ই-তাজহিযয়্যাতে ভর্তি হন। এখানে চার বছরের শিক্ষা সম্পন্ন করে ১৯২৯ সালের শেষ দিকে দারুল উলুম বিশ্ববিদ্যালয়ে আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগে ভর্তি হন। ১৯৩৩ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের চার বছরের পাঠ সম্পন্ন করেন। একই বছরের ডিসেম্বর তাহজিরিয়া দাউদিয়্যাতে শিক্ষকতার মধ্য দিয়ে কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৪০ সাল পর্যন্ত আরো তিনটি মাদরাসায় শিক্ষকতা করেন। এ-বছরের ১লা মার্চ শিক্ষামন্ত্রণালয়ের সংস্কৃতি বিভাগে যোগ দেন। ১৯৪৮ সালে মন্ত্রণালয় তাঁকে আমেরিকায় প্রেরণ করে। ১৯৫০ সালে আমেরিকা থেকে ফিরে আসেন। ১৯৫২ সালের ১৮ই অক্টোবর তিনি মন্ত্রণায়লয়ে পদত্যাগপত্র জমা দেন। কিন্তু মন্ত্রী তাঁর পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেন নি। ১৯৫৪ সালের ১৩ই জানুয়ারি সাইয়িদ কুতুবের পদত্যাগপত্র করা গ্রহণ হয় এবং অভিযোগ করা হয় যে তিনি মন্ত্রণালয়ে কর্মরত থাকাকালে সরকারবিরোধী সংগঠন ইখওয়ানুল মুসলিমিনের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন।

    ১৯৫০ সাল থেকেই সম্পৃক্ত থাকলেও সাইয়িদ কুতুব ১৯৫৩ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে ইখওয়ানুল মুসলিমিনে যোগ দেন। ১৯৫৪ সালে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং তাঁর ওপর অমানবিক নির্যাতন চালানো হয়। ১৯৫৫ সালের ১৩ই জুলাই পিপল্‌স্ কোর্ট সাইয়িদ কুতুবকে পনেরো বছরের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করে। ১৯৬৪ সালে তিনি কারাগার থেকে মুক্তি পান। ১৯৬৫ সালের ৯ই আগস্ট তাঁকে পুনরায় গ্রেপ্তার করা হয়। ১৯৬৬ সালের ২১ শে আগস্ট সাইয়িদ কুতুবসহ সাতজনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেয়া হয়। ২৯ আগস্ট ভোর রাতে সাইয়িদ কুতুব ও তাঁর দুই সঙ্গীর ফাঁসি কার্যকর করা হয়।

    সাইয়িদ কুতুবের কর্মজীবনকে দুই ভাগে ভাগ করা যায় সাহিত্যিক কর্মকাণ্ড ও ইসলামি কর্মকাণ্ড। দারুল উলুম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র থাকাকালেই তিনি বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় লেখালেখি শুরু করেন। তাঁর রচিত উল্লেখযোগ্য গ্রন্থের একটি তালিকা দেয়া হলো। কবিতা * আশ-শাতিউল মাজহুল/অজ্ঞাত তট, কাফেলাতুর রাকিক/অভিযাত্রীদল, হিলমুল ফাজর/ভোরের স্বপ্ন: দিওয়ানু সাইয়িদ কুতুব/সাইয়িদ কতুবের কাব্য। সাহিত্যসমালোচনা কুতুব ওয়া শাখসিয়্যাত/গ্রন্থ ও ব্যক্তিত্ব; আন-নাকদুল আদাবি উসুলুহু ওয়া মানাহিজুহু/সাহিত্যসমালোচনা নীতি ও পদ্ধতি। ইসলামি শিক্ষা ও দর্শন: আত-তাসবিরুল ফান্নি ফিল কুরআন/ কুরআনের শিল্পশৈলী: মাশাহিদুল কিয়ামাহ ফিল কুরআন / কুরআনে বর্ণিত কিয়ামত-দৃশ্যঃ আল-আদালাতুল ইজতিমাইয়্যাতু ফিল ইসলাম/ ইসলামে সামাজিক ন্যায়বিচার: মারিকাতুল ইসলাম ওয়ার রাসমিয়্যাহ / ইসলাম ও পুঁজিবাদের দ্বন্দ্ব; আস-সালামুল আলামি ওয়াল ইসলাম / ইসলাম ও বিশ্বশান্তি; আমেরিকা আল্লাতি রাআইতু/যে-আমেরিকা আমি দেখেছি; হাযাদ্ দীন/এই ধর্ম: মুস্তাক্বালু হাযাদ্ দীন/এই ধর্মের ভবিষ্যৎৎ আল- ইসলাম ওয়া মুশকিলাতুল হাদারা/ইসলাম ও সভ্যতার সঙ্কট; নাহবা মুজতামায়িল ইসলামি/ইসলামি সমাজের অভিমুখে; তাফসির ফি যিলালিল কুরআন (৩০ খণ্ড); আল- জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ/আল্লাহর পথে জিহাদ। অন্যান্য: তিফলুন মিনাল কারইয়াহ /গ্রামীণ বালক (ছেলেবেলা); আল-আশওয়াক/আকাঙ্ক্ষা (ব্যক্তিজীবনের প্রেম); আল-মুদুনুল মাশহুরা/ খ্যাতির নগরী (উপন্যাস); আল-আতইয়াফুল আরবাআ/চার ছায়ামূর্তি (চার ভাইবোনের চিন্তাধারা); আফরাহুর রুহ/আত্মার সুখ (চিঠির সংকলন); আল- খারিফ/শরৎকাল (আত্মজীবনীমূলক উপন্যাস)।

    [3] হাফিজ আল আসাদ সিরিয়ার রেডিও স্টেশন থেকে এই ঘোষণা দেন। সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের ক্ষেত্রে হাফিজ আল-আসাদ ও তাঁর অনুসারীদের মতাদর্শ ও উদ্দেশ্য এক হলেও ব্যক্তি-পর্যায়ে তাদের বিরোধ ছিলো অনেক। এই হাফিজ আল-আসাদ আল্লাহপাককে জাদুঘরে স্থাপন করেন। (নাউযুবিল্লাহ) তিনি হুমাত শহরের জামেউস সুলতান মসজিদ এবং দামেস্কের উমায়ি মসজিদ ধ্বংস করেছিলেন এবং এই দুটি মসজিদের সব মুসল্লিকে খুন করেছিরেন।

    এই মতাদর্শের কবিরা সমাজতন্ত্র ও জাতীয়তাবাদকে ইসলামের ওপর প্রধান্য দিয়ে কবিতা রচনা করেছিলেন। তার আরো কিছু নমুনা (سلام على كفر يوحد بيننا واهلاً وسهلاً بعده بجهنم) কুফরিকে জানাই সালাম, তা আমাদের ভেতর ঐক্য প্রতিষ্ঠা করেছে এবং তারপর জাহান্নামকে জানাই অভিনন্দন। لاتسل عن ملتي أو مذهبي أنا بعثي اشتراكي عربي আমার ধর্ম ও মতাদর্শ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করো না; আমি বিপ্লবী সমাজতন্ত্রী আরব।

    [4] نايف الحواتمة : ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট ফর দ্য লিবারেশন অব প্যালেস্টাইন (
    DFLP)-এর মহাসচিব। ধর্ম: ক্যাথলিক খ্রিস্টান। মার্ক্সবাদ দ্বারা প্রভাবিত। ১৯৩৫ সালে জর্ডানের সালাত শহরে জন্মগ্রহণ করেন। বয়রুত থেকে সমাজবিজ্ঞান ও দর্শনে লেসান্স ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৫৪ সালে আরব জাতীয়তাবাদী আন্দোলনে যোগ দেন। জর্ডানে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের কারণে তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। কিন্তু ১৯৬৭ সালের যুদ্ধের পর বাদশাহ হুসাইন তাঁর দণ্ড মওকুফ করেন। জর্জ হাবাশের সঙ্গে পপুলার ফ্রন্ট ফর দ্য লিবারেশন অব প্যালেস্টাইন-এর নেতৃত্বে যোগ দেন। ১৯৬৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সে দল ত্যাগ করে এসে গণতান্ত্রিক জোট প্রতিষ্ঠা করেন। নায়িফ হাওয়াতমা ১৯৭৩ সালে পশ্চিমতীর, গাজা এবং অন্যান্য অঞ্চল মিলিয়ে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবি জানান। তিনি ফিলিস্তিন-সমস্যার সমাধানের লক্ষ্যে ইসরাইলের সঙ্গে আলোচনায় বসার কারণে প্যালেস্টাইন লিবারেশন অরগানাইজেশন (PLO)-এর রাজনীতির বিরোধিতা করেন এবং দামেস্কে এ আলোচনার বিরোধিতাকারী আন্দোলন ও সংগঠনগুলোর সঙ্গে মৈত্রীবন্ধন গড়ে তোলেন। ১৯৬৭ সালের পর ২০০৭ সালে প্রথম বারের মত তিনি PLO-এর বৈঠকে যোগ দেয়ার জন্যে পশ্চিতীরে যাওয়ার অনুমতি পান।

    [5] جورج حبشَ[আরব জাতীয়তাবাদী আন্দোলন এবং পপুলার ফ্রন্ট ফর দ্য লিবারেশন অব প্যালেস্টাইন (
    PFLP)-এর নেতা। ধর্মঃ অর্থোডক্স খ্রিস্টান। তাঁর আরো দুটি নাম আল- হাকিম ও আবু মায়সা। মার্ক্সবাদ, লেনিনবাদ ও নাসেরিজম দ্বারা প্রভাবিত। ১৯২৬ সালের ২রা আগস্ট ফিলিস্তিনের আল-লুদ শহরে জন্মগ্রহণ করেন। ইয়াফা ও কুদসে পড়াশোনা করেন। ১৯৪৪ সালে বয়রুতের আমেরিকান ইউনিভার্সিটির চিকিৎসা অনুষদে ভর্তি হন এবং ১৯৫১ সালে চূড়ান্ত ডিগ্রি অর্জন করেন। জর্জ হাবাশ মুসলমানদের সংগ্রামকেই ফিলিস্তিন- পুনরুদ্ধারের একমাত্র উপায় বিবেচনা করেন। তিনি আরব সংহতি ও ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা অর্জনের লক্ষ্যে আরব গেরিলা বাহিনী প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখেন। ছাত্র সংগঠন আল- উরওয়াতুল উসকার অন্যতম প্রতিষ্ঠিতা। তাঁর নেতৃত্বে ১৯৫১ সালে আরব জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (ANM) প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৫৭ সালে জর্ডানে ধারাবাহিক বিস্ফোরণের অভিযোগে তাঁর দল অভিযুক্ত হয়। ফলে তিনি দামেস্কে চলে যান এবং ১৯৬১ সাল পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করেন। এ সময় আবদুন নাসেরের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ হয়। ১৯৬৭ সালে আরব রাষ্ট্রগুলোর পরাজয়ের পর তিনি পপুলার ফ্রন্ট ফর দ্য লিবারেশন অব প্যালেস্টাইন গঠন করেন। ১৯৬৮ সালে তাঁর সংগঠন ইসরাইলি দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে সশস্ত্র লড়াই শুরু করে। ২০০৮ সালের ২৬ শে জানুয়ারি আম্মানে মৃত্যুবরণ করেন জর্জ হাবাশ ।




    আরও পড়ুন​
Working...
X