বিসমিল্লাহির রহমানির রাহীম
আলহামদুলিল্লাহ! সুম্মা আলহামদুলিল্লাহ, ৫ বছর বয়স হতে যাচ্ছে আমাদের প্রিয় ফোরাম দাওয়াহ ইলাল্লাহ-এর। ফোরামের পুরাতন পোস্টগুলো নিয়ে ঘাটাঘাটি করলে এটা অনেকটাই বুঝা যায় যে, দাওয়াহ ইলাল্লাহ ফোরাম প্রতিষ্ঠা হয়েছে ২০১৫ সালের এপ্রিল-মে মাসের দিকে আর এখন চলছে ২০২০ সালের এপ্রিল, অর্থাৎ ফোরামের ৫ বছর পূর্ণ হতে যাচ্ছে আলহামদুলিল্লাহ।আমার যতটুকু মনে পড়ে, যখন দাওয়াহ ইলাল্লাহ ওয়ার্ডপ্রেজ ডটকম চলছিলো তখন থেকেই আমি এর ভিজিটর। ফোরাম থেকে বিভিন্ন মিডিয়া রিলিজ এবং দাওয়াতের উপাদান সংগ্রহ করে করে নিজে উপকৃত হতাম ও দাওয়াতের কাজে ব্যবহার করতাম। তখন ঠিকই লক্ষ্য করেছিলাম যে, কিছু মানুষ সেখানে পোস্ট করেন আবার কিছু মানুষ সেখানে কমেন্ট করেন কিন্তু আমি সেটা করতে পারতাম না, কিছু বুঝতেও পারছিলাম না যে কীভাবে কী হচ্ছে!
অবশেষে ২০১৬ সালের শুরুর দিকে মুহতারাম এক ভাইয়ের কাছ থেকে রেজিস্টার করা শিখলাম। তখন যে আইডিটি করেছিলাম কোনো কারণবশত পরে আর বেশিদিন সেটি ব্যবহার করিনি। এরপর আরেকটি আইডি রেজিস্টার করার নিয়ত করেছিলাম, রেজিস্টার করার সময় নাম নির্ধারণ নিয়ে চলছিলো মাশওয়ারাহ, উপস্থিত ছিলেন কয়েকজন প্রিয় দ্বীনি ভাই, অবশেষে একভাই এর যেহেনে গেলো আফগানিস্তানের একজন শাইখ, শাইখ আবুল ফিদা এর দিকে।
তখন ইমারাতে ইসলামিয়্যাহ থেকে প্রকাশিত আরবি ম্যাগাজিন আস-সামুদ এর মধ্যে শাইখ আবুল ফিদা এর একটি লেখা প্রকাশিত হয়, যার বাংলা অনুবাদও তখন ফোরামে প্রকাশিত হয়েছিলো।
এরপর সেই ভাইয়ের মাশওয়ারায় নাম দিলাম আবুল ফিদা, (আল্লাহ তা‘আলা ভাইকে সিরাতে মুস্তাকীমের উপর পরিচালিত করুক, আমিন)। তখন থেকেই শুরু হলো ফোরামে আমার পথচলা।
দিন দিন এই ফোরাম হয়ে উঠলো আমার প্রিয় থেকে প্রিয় একটি সাইট, এই ফোরামের মেম্বারদেরকে আমি হৃদয় থেকে অনেক অনেক মুহাব্বাত করতাম ও এখনও করি, আলহামদুলিল্লাহ।
দাওয়াহ ইলাল্লাহ ফোরাম অনেক বাধা বিপত্তি পেরিয়ে আজকে এই পর্যন্ত এসে পৌঁছেছে আলহামদুলিল্লাহ, আমার যতটুকু মনে পড়ে, সর্বপ্রথম ডোমেইন ছিলো .info তারপর আসে .ga তারপর .in তারপর এখন আসছে .com । আর দাওয়াহ ইলাল্লাহ ফোরাম আমার জানা মতে একবার হ্যাক হয়েছিলো, সংশ্লিষ্ট ভাইয়েরা আরো ভালো জানবেন আশাকরি।
অনেক ভাইদের কথা মনে পড়ে, তবে কিছু কিছু ভাইকে কখনোই ভুলতে পারবোনা। প্রায়ই তাদের কথা মনে পড়ে, জানিনা এখন কে কী হালাতে আছেন, হয়তো কেউ শহীদ, নয়ত তাগুতের কারাগারে বন্দি, আবার কেউ কেউ এখনো আছেন কিন্তু কাজের ব্যস্ততা বেড়ে যাওয়ায় ফোরামে কম আসেন, লগইন করেন না।
অদেখা সেই সকল ভাইদের জন্য আজকে অন্তর থেকে অনেক অনেক দু‘আ আসে, যারা এই ফোরামের শুরুর দিকে এই ফোরামকে সতেজ রেখেছিলেন, আলোকিত করে রেখেছিলেন।
দাওয়াহ ইলাল্লাহ ফোরামের সফলতা:
দাওয়াহ ইলাল্লাহ ফোরামের সফলতা বর্ণনা করা আমার মত ব্যক্তির পক্ষে সম্ভব নয়, আল্লাহু আকবার, ফোরামের সফলতা বাংলাদেশের জিহাদী প্রেক্ষাপটে অতুলনীয় আলহামদুলিল্লাহ, এর মাধ্যমে মোকাবেলা করা হয়েছিল দায়েশের ফেৎনা, এর মাধ্যমে জবাব দেওযা হয়েছিলো দরবারী মোল্লাদের ভ্রান্তির, এটা এখন অবধি জিহাদী মিডিয়ার কেন্দ্রস্থল অর্থাৎ এখান থেকে উপাদান সংগ্রহ করে শত শত ফেসবুক আইডি, পেজ ও গ্রুপে ছড়িয়ে পড়তো দাওয়াহর উপাদানগুলো।
এটির মাধ্যমে অনেক অনেক ভাই নিজেদের সংশয়ের নিরসন করেছেন, অনেক অনেক ভাই জিহাদের পথে অবিচলতার একটি উপাদান হিসেবে এই ফোরামকে গ্রহণ করেছেন। কখনো বিপদ-আপদের কারণে মন খারাপ থাকলে বা কাটআপ সময় কাটাতে হলে এই ফোরামে ভিজিট করে নিজেদের মনকে প্রশান্ত রাখতেন। যাইহোক এই ফোরামের সফলতা বর্ণনা করে শেষ করতে পারবোনা।
ফোরামের কিছু মেম্বারকে বিভিন্ন সময় মনে পড়ে, আর কিছু ভাইদেরকে খুব বেশি বেশি মনে পড়ে; আর এর সংখ্যাটা অনেক। তাই আমি কিছু ভাইকে স্বরণ করতে চাই, যাদের কথা তুলনামূলক একটু বেশি বেশি মনে পড়ে। জানিনা, এখন কে কী হালাতে আছেন। যদি নিরাপত্তার কোন সমস্যা না থাকে, আশা করবো প্রিয় ভাইগণ এই পোস্টে কমেন্ট করবেন ইনশাআল্লাহ, না করলেও সমস্যা নাই। দু‘আ করবো, আল্লাহ সকলকে নিরাপদে রাখুন, দ্বীনের উপর অটল থাকার তাওফিক দান করুন এবং শাহাদাতের মৃত্যু দান করুন, আমিন।
tipo soltan
umar mukhtar
উভয়ে মুজাহিদিনের সংবাদ দিয়ে আমাদের মনকে সতেজ রাখতেন
আবু মুহাম্মাদ
ইলমি আলোচনার মাধ্যমে অনেক অনেক উপকৃত করেছেন, বিশেষভাবে মনে পড়ে আঞ্জেম চৌধুরীর ঘটনা, তখন আবু মুহাম্মাদ ভাইয়ের আলোচনার মাধ্যমে অনেক উপকৃত হয়েছিলাম।
murabit, molla murhib,
এমন আরো অনেক ভাই রয়েছেন যাদের নাম এখানে উল্লেখ করা হয়নি
আরেকজন ভাই যাকে এখনো মাঝে মাঝে ফোরামে দেখা যায় তিনি ফোরামে এসে তানজিমের সাথে যুক্ত হতে না পেরে খুব আফসোস করতেন, জানিনা ভাই আজো যুক্ত হতে পেরেছেন কিনা, আল্লাহ তা‘আলা ভাইয়ের মনের আশা পূরণ করুক, আমিন। ভাইয়ের আইডির নাম হলো- আল জিহাদ।
আর ফোরামের অতীতের সকল মডারেটর ভাইদের কথা মনে পড়ে, যেমন: titumir, Ahmad faruq, taalibul ilm সহ আরো অনেক অনেক ভাই, আল্লাহ তা‘আলা এসকল সম্মানিত ভাইদের ছায়াকে আমাদের উপর দীর্ঘায়িত করুন, আমাদেরকে জান্নাতে একত্রিত করুন, আমিন।
আরো অনেক অনেক ভাইদের নাম মনে আসতেছে, সকলের নাম এখানে লিখতে গেলে লেখা অনেক বড় হয়ে যাবে।
যাইহোক সকলের জন্য অন্তর থেকে দু‘আ রইলো।
এই পর্যায়ে ফোরামের একটি সফলতার কথা উল্লেখ করবো, সেটি হচ্ছে ইন্টারনেটের জগতে জিহাদী কোন ফোরাম এতো বছর পর্যন্ত দাঁড়িয়ে আছে আমার জানা নাই। ইমারাতে ইসলামিয়ার কিছু ওয়েব সাইট হয়তো অনেক আগে থেকেই চলমান, কিন্তু সেগুলোতো কোনো ফোরাম নয়। আমি বলতে চাচ্ছি, কোনো ফোরাম এতো বছর টিকে ছিলো কিনা বা বর্তমানে আছে কিনা, আল্লাহ পাক ভালো জানেন, আর সব কিছুই আল্লাহ তা‘আলার দয়া ও অনুগ্রহ।
এটি বাংলাদেশের জিহাদী মিডিয়ার অনেক বড় একটি সফলতা বলা যায় আলহামদুলিল্লাহ। আমার জানা নাই যে রণাঙ্গন কায়েমের আগেই কোনো দেশে এই রকমভাবে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে এবং লেখালেখির মাধ্যমে জিহাদী চেতনার উত্থান হয়েছিলো কিনা। আলহামদুলিল্লাহ এটি অনেক বড় একটি সফলতা এই ভূমির জন্য, হিন্দুস্তানের যুদ্ধের জন্য।
অনেক ভাইয়েরা দীর্ঘদিন যাবৎ কাজ করার সফলতার কথা চিন্তা করে মন খারাপ করেন যে, এখনো কেন ময়দানে নামতে পারিনি! আমি সেসব ভাইদের উদ্দেশে বলবো, আপনারা একটু চিন্তা করে দেখুন তো আজ থেকে ৫/৬বছর আগের কথা, যখন এদেশের স্বাধারণ মানুষ এখনকার মত জানতোনা যে, জিহাদ বলে একটা ইবাদাত আছে। আবার অনেকে জিহাদ বলে গণতান্ত্রিক আন্দোলনকেই মনে করতো। আর আল-কায়দাকে মনে করতো ইসলাম ধ্বংসকারী একটি দল (নাউজুবিল্লাহ), আর জেএমবি-কে তো মুসলিমই মনে করতো না।
এদেশের মানুষ জানতোনা জিহাদের প্রয়োজনীয়তা ও ফায়দা কী, মানুষের মধ্যে ছিলোনা কোন অনুভূতি, কিছু হলেই মনে করতো এর সমাধান হলো মুফতি আমিনি (রহ.)-এর ডাকে আন্দোলনে শরিক হওয়া, হরতাল আর মিছিল করা!
কিন্তু আজকের হালাত দেখুনতো!!
গতকাল আমি ইউটিউবে ঘুরতে ঘুরতে একটি ভিডিও পেলাম যেখানে মিযানুর রহমান আযহারীর তালেবান ও আল-কায়েদা নিয়ে বিদ্রুপাত্মক মন্তব্য ছিলো। ভিডিওটি দেখার পর কমেন্ট দেখলাম, কমেন্ট পড়ে দিলটা ভরে গেলো। কারণ, সেখানে একশো এর উপরে কমেন্ট ছিলো, আর প্রায় প্রত্যেকটা কমেন্টেই তালেবান ও আল-কায়েদা নিয়ে খারাপ মন্তব্যের জন্য নিন্দা জানানো হয়েছে।
আর বর্তমান ফেসবুকের হালাত তো আপনাদের জানা থাকার কথা, যখনই কেউ মুজাহিদদের বিরুদ্ধে কোন পোস্ট করে তখন কমেন্টে তার নসিবে কী জুটে তা কল্পনা করলে অবাক লাগে, কেউ কেউ হয়তো একটু বাড়াবাড়ি ধরণের কটু মন্তব্য করেন, কিন্তু তারপরও সবমিলিয়ে বাংলাদেশের অনলাইন মাধ্যমে এই জিহাদী চিন্তাধারার সফলতা প্রশংসনীয়, আলহামদুলিল্লাহ। মাত্র কয়েক বছরের ব্যবধানে এতো ব্যাপক সফলতা আল্লাহ দিয়েছেন, আলহামদুলিল্লাহ, সুম্মা আলহামদুলিল্লাহ।
আরো অনেক বড় বড় সফলতার আলোচনা করা যায়। কিন্তু যেহেতু এই ফোরামে তাগুতদের অনেক আনাগোনা আছে তাই সবকিছু বলা মুনাসিব মনে করছিনা। আর এসব নিয়ে বিশ্লেষণ করতে গেলে লেখা আরো দীর্ঘ হয়ে যাবে।
সবশেষে, আমি ফোরামের সকল মেম্বারদেরকে বলবো- আপনারা-ই এই ফোরামের সৌন্দর্য, আপনাদের লেখা-ই এই ফোরামকে সতেজ রাখবে। তাই এই ফোরামকে সতেজ ও আরো বেশি ফায়দাজনক করে তুলতে এবং এর ফায়দাকে আরো আরো ব্যাপক করে দিতে এই ফোরামকে সর্বত্র ছড়িয়ে দিন ইনশাআল্লাহ।
আর ফোরামের সাথে থাকুন, একটিভ থাকুন নিয়মিত, বেশি বেশি কমেন্ট করুন, মানসম্মত ও সুন্দর সুন্দর পোস্ট করুন, ইলমি পোস্ট সবচেয়ে বেশি জরুরি।
আল্লাহ তা‘আলা আমাদের সকলকে তার দ্বীনের জন্য কবুল করুন, সকলকে গাজওয়াতুল হিন্দে শরিক হওয়ার তাওফিক দান করুন এবং সকলকে শাহাদাতের মৃত্যু নসিব করুকন আমিন, সুম্মা আমিন ইয়া রাব্বাল আলামিন।
Comment