এক শুভানুধ্যায়ী ভাই'কে দেখলাম নজদী-তাইমি বলে একাধারে আক্রোশ ছড়াচ্ছেন।
তিনি প্রশ্ন করেছেন ?
“তাওহীদকে যে ভাগ করা হয় উলুহিয়্যাহ, রুবুবিয়্যাহ, হাকিমিয়্যাহ, আসমা ও সিফাত, এগুলো ভাগ করা বিদআত নয় কেন?
[অর্থাৎ এগুলোকে যারা ভাগ করেছেন উক্ত শুভানুধ্যায়ী ভাই একপ্রকারের আক্রমণ করেই বুঝাতে চাইলেন এগুলো ভাগও বিদআত
অথচ নজিদ-তাইমি'রা এমনটি কেন করছে?]”
তিনি খুব তুচ্ছ করেই প্রশ্ন রেখেছেন এগুলো কেন করা হয় !?
বিষয়টি নিয়ে দেখছি আমাদের কিছু ভাইও ইদানীং বিচলিত হচ্ছেন
[যদিও কারণগুলো আমারও বোধগম্য হয়নি এখনো]
তখন মনে হলো কিছু কথা লিখি যেন শুভাকাঙ্ক্ষীদের কল্যাণ হয় ও আলোচনাটি বোধগম্য হয়।
• দ্বীন ইসলামের দুটি দিক-
১। মুহকাম — যা আল্লাহর পক্ষ থেকে প্যাকেজ হয়ে অবতীর্ণ, এর সংখ্যা, ধরণ পদ্ধতি সবই আল্লাহ কর্তৃক সীমাবদ্ধ, এখানে কমানো, বাড়ানো কুফরি। যেমন; পাচ ওয়াক্ত সলাত, সলাতের সংখ্যা, পদ্ধতি।
২। মুজতাহাদ ফিহ — মুজতাহিদগনের যেখানে গবেষণা করার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। যেমন সাদাকাতুল ফিতর আদায়ের বিষয়ে, অনেকে বলেন খাদ্যই দিতে হবে, অনেকে বলেন যে মূল্য দিলেও হবে।
অন্য ভাষায় এটা এভাবে বলা যায় শরীয়তের কাজ দুই প্রকার।
১। ফিদ দ্বীন [দ্বীনের অন্তর্গত বিষয়, যা মুহকাম]
২। লিদ দ্বীন [দ্বীনে কল্যানে কোন পদক্ষেপ, যেমন মাদ্রাসার পড়াশোনা, বছররে তিন পরিক্ষা ইত্যাদি ইত্যাদি]
কথাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়া শেষ হলে আমরা সামনে অগ্রসর হচ্ছি ইন-শাআল্লাহ।
তাওহীদকে ৩/৪ ভাগে ভাগ করাকি বিদআত?
জওয়াব স্পষ্ট যে,
না এটা বিদআত নয়।
কারণ মূল আকিদার/তাওহীদের মধ্যে কেউই কিছুই বাড়াননি, বরং জাতির কল্যানার্থে বুঝার সুবিধার্থেই ইসলামের স্বীকৃতি তাওহিদুল্লাহ'কে কায়েকটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে সেরেফ বুঝার সুবিধার্থে।
হ্যাঁ যদি তারা এমন কোন তাওহীদ পেশ করতো যার পক্ষে শরীয়তের কোন দলিলই পাওয়া সেক্ষেত্রে বলা যেতো যে এটা তাওহীদ কীভাবে হয়, কিন্তু তারা তো তা করেনি,
☞ বরং ইলাহি/ইবাদাত সংশ্লিষ্ট বিষয়কে বলেছেন উলুহিয়্যাহ,
☞ রব সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বলেছেন রুবুবিয়্যাহ
☞ আর বিচারক সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বলেছেন হাকিমিয়্যা
☞ এবং আল্লাহর আসমাউল হুসনার ক্ষেত্রে বলেছেন আসমা ও সিফাত।
এর প্রতিটির ক্ষেত্রেই আয়াত ও হাদিস ভরপুর রয়েছে।
#নোটঃ
🚫 এই আলোচনায় শাইখ আবু বকর জাকারিয়া সাহেবেরও একটি আপত্তির জওয়াব হয়ে যায়,
আর তা হলো তিনি বলেন তাওহীদ তিন প্রকারেই সীমাবদ্ধ উলুহিয়্যাহ, রুবুবিয়্যাহ, আসমা ও সিফাত।
আর হাকিমিয়্যা বলতে আলাদা কোন তাওহীদ নেই।
তার জওয়াবে আমরা বলবো
আসলে তাওহীদের এই ভাগটি সালাফগন করেছেন,
তাই এটি যে এর মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে বিষয়টি এমন নয়।
বর্তমানে সর্বগ্রাসী আল্লাহর হাকিমিয়্যাহর ক্ষেত্রে শিরক সবচেয়ে বেশি হচ্ছে,
তাই উম্মাহকে সতর্ক করার জন্য তাওহীদকে উক্ত তিন প্রকারে ভাগ করা হয়েছিলো ঠিক সেই সতর্কতার চাহিদার কারণেই আজকে তাওহীদকে চার ভাগ করে হাকিমিয়্যা যুক্ত করা হয়েছে।
#বিশেষ_নিবেদনঃ
শাইখুল ইসলাম ইমাম ইবনে তাইমিয়া রাহিঃ এর প্রতি বিদ্বেষ রাখা শুভানুধ্যায়ী ব্যক্তিকে দেখা যায় যে তিনি আবার দেওবন্দের বিখ্যাত আলিম শাইখ আনওয়ার শাহ কাশ্মীরী রাহিঃ এর প্রশংসা ও সমর্থন করেন।
তখন সেই শুভানুধ্যায়ী ভাইকে জিজ্ঞেস করতে ইচ্ছে হয়,
তাওহীদকে চার ভাগ করা যদি বিদআত হয় তাহলে ইমামুল আছর আনওয়ার শাহ কাশ্মীরী রাহিঃ
এর রচিত বুখারীর ব্যখ্যা গ্রন্থ “ফাইদ্বুল বারী [فيض الباري]
এর মধ্যে শিরককে তিন ভাগ করেছেন
১। শিরক ফিজ জাত
২। শিরক ফিস সিফাত
৩। শিরক ফিত ত্বায়াত
তাহলে শুভানুধ্যায়ী ভাইকি আনওয়ার শাহ কাশ্মীরী রাহিঃ এর উপরও বিদআতের অভিযোগ তুলবেন????
✍️ এক মুওয়াহিদ
Comment