Announcement

Collapse
No announcement yet.

জিহাদ প্রসঙ্গে মাওলানা আব্দুল মালেক হাফিজাহুল্লাহর বয়ান এবং কিছু অভিব্যক্তি (১-২-৩-৪)

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • জিহাদ প্রসঙ্গে মাওলানা আব্দুল মালেক হাফিজাহুল্লাহর বয়ান এবং কিছু অভিব্যক্তি (১-২-৩-৪)

    জিহাদ প্রসঙ্গে মাওলানা আব্দুল মালেক হাফিজাহুল্লাহর বয়ান
    এবং
    কিছু অভিব্যক্তি -০১
    بسم الله، الحمد لله، والصلاة والسلام على رسول الله، وعلى آله وصحبه ومن والاه، وبعد



    এক. কয়েকদিন হলো মাদানীনগর মাদ্রাসায় আমাদের দেশের বরেণ্য আলেম মুহতারাম আব্দুল মালেক হাফিজাহুল্লাহ তালিবুল ইলমদের সামনে দুটি বয়ানে কিছু নসীহা রাহনুমায়ীমূলক কথা বলেছেন হুজুরের প্রতিটি বয়ানেই শিখার মতো অনেক ইলমী উসূলী বিষয় থাকে, যেগুলো প্রত্যেক আলেম তালিবুল ইলমের জন্য জরুরী আল্লাহ তাআলা হুজুরের নেক হায়াত বাড়িয়ে দিন উলামা তলাবাদের মাথার উপর রহমতের ছায়া আল্লাহ তাআলা দীর্ঘ করুন আমীন

    আমি প্রথমে আল্লাহ তাআলার এবং তারপর মাওলানা আব্দুল মালেক হাফিজাহুল্লাহর শুকরিয়া আদায় করে নিচ্ছি যে, আমাদের দেশে ইলমী অঙ্গনে তাঁর মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা এক অভূতপূর্ব বিপ্লব ঘটিয়েছেন ইলমের যে সহীহ তরিকা তিনি উলামা তলাবাদের সামনে পেশ করেছেন, বলতে গেলে দেশে এটি তাজদিদি কাজ আল্লাহ তাআলা হুজুরের কাজগুলো কবুল করে নিন

    দুই. মাদানীনগরের বয়ানে হুজুর ইলমের ময়দানের অনেকগুলো জরুরী উসূল তালিবুল ইলমদের সামনে পেশ করেছেন, যেগুলো সব আলেম তালিবুল ইলমের আজীবন মেনে চলা দরকার যেমন: মাসতুর, মালহুজ, মাহজুফ, মুকাদ্দার, মুস্তাসনা- সব সহ বোঝা; ইলম হজম করা; হিকমাহ তাফাক্কুহ ফিদ-দ্বীন অর্জন করা; কিতাবি ইস্তিদাদের পাশাপাশি ইলমি ইস্তিদাদ অর্জন করা; প্রত্যেক ফনের মৌলিক কিতাবগুলো আগাগোড়া বসিরতের সাথে অধ্যয়ন করা; প্রত্যেক ফনের মাসআলা ফনের ফুকাহাদের থেকে হল করা; উস্তাদের সোহবত ইখতিয়ার করা; উস্তাদ থেকে নিজেকে মুস্তাগনি মনে না করা; নিজেকে যি-রায় মনে না করা, তাহকিকের ময়দানে ফায়েয মনে না করা; সালাফে সালিহীনের সিরাত অধ্যয়ন ইত্যাদি আরও অনেক বিষয় আল্লাহ তাআলা আমাদের সকলকে আমলের তাওফিক দান করুন আমীন

    তিন. আলোচনা প্রসঙ্গে হুজুর জিহাদ মুজাহিদদের ব্যাপারে, খিলাফাহ সিয়াতের ব্যাপারে বেশ কিছু কথা বলেছেন যতটুকু বুঝতে পারছি: কিছু জযবাতি অপরিপক্ক লোকের দ্বারা হুজুর মনে হয় কষ্ট পেয়েছেন ফলে কথাগুলো বলতে হুজুর বাধ্য হয়েছেন

    আসলে অনেক ভাই- আছেন, যারা টুকটাক কিছু বুঝতে না বুঝতেই অন্যের উপর তা চাপিয়ে দিতে চেষ্টা করেন কেউ তাতে দ্বিমত করলে মেনে নিতে পারেন না তার উজর কবুল করেন না বরং অনেক শুরুত কুয়ুদ ছাড়াই তিনি বুঝেছেন, ফলে এক রকম অজ্ঞতাপ্রসূত উগ্রতা তার মাঝে কাজ করে ধরনের ভাইদের ফলে কাজের ময়দানে বেশ ক্ষতি হয়ে যায় আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে মাফ করুন হুজুরের ক্ষেত্রেও হয়তো এমন কিছু ঘটনা ঘটে থাকবে; ওয়াল্লাহু লাম

    তবে হুজুর ভরা মজলিসে ব্যাপকতার সাথে আলোচনাটা যেভাবে করেছেন, আমভাবে দেশের জিহাদি চেতনা লালনকারী বা জিহাদি কাজের সাথে সম্পৃক্ত ভাইয়েরা প্রশ্নবিদ্ধ হন হুজুর বয়ানে নিজেই বলেছেন, বিশেষ কোনো ব্যক্তির সমালোচনা হুজুরের উদ্দেশ্য না তখন নির্দিষ্ট একটা নজরিয়া এবং সে নজরিয়া লালনকারীদের উপর গিয়েই সমালোচনাটা পড়ে

    চার. আমি নির্দ্বিধায় স্বীকার করে নিচ্ছি যে, হুজুর যে ধরনের নজরিয়ার নকদ করেছেন, অনেক লোকই সে নজরিয়ার আওতায় পড়ে এবং এটা শুধু জিহাদের ক্ষেত্রেই নয়, ফিতনা আর অধঃপতনের যামানায় ইলমের প্রত্যেকটা অঙ্গনেই এখন ফিতনা দেখা যাচ্ছে এবং বেশ ব্যাপকভাবেই দেখা যাচ্ছে তবে হুজুরের আলোচনার কেন্দ্র ছিল জিহাদ ফলে জিহাদি কাফেলার ব্যাপারে ভুল ধারণা সৃষ্টি হওয়া অস্বাভাবিক না তাই কিছু কথা না বলে পারছি না

    পাঁচ. আমি কথাগুলো কোনো জিহাদি কাফেলার প্রতিনিধি হিসেবে বলছি না, এগুলো আমার নিজের ব্যক্তিগত অভিব্যক্তি কাজেই আমার কথায় কোনো ভুল হলে সেটা শুধু আমার উপরেই বর্তানো যাবে, কারণে মুজাহিদদের সমালোচনা করা যাবে না একজনের ভুলের দায়ভার আরেকজনের ঘাড়ে চাপাবো না ইনশাআল্লাহ

    ছয়. আমি শুরুতেই বলেছি, আজীবন মেনে চলার মতো অনেক জরুরী কথাই হুজুর পেশ করেছেন সেগুলোতে আল্লাহ তাআলা আমাকেও আমল করার তাওফিক দান করুন তবে জিহাদ জিহাদি কাফেলার ব্যাপারে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হতে পারে এমন কিছু পয়েন্টে আমি আমার অভিব্যক্তি তুলে ধরবো ইনশাআল্লাহ ওয়ামা তাওফিকি ইল্লা বিল্লাহ

    সাত. একটি সামগ্রিক অভিব্যক্তি
    এর আগেও হুজুরসহ মারকাযের কিছু লেখা বয়ানে জিহাদের ব্যাপারে চলমান ফিতনা নিয়ে কথা এসেছে তবে বরাবরই যে একটা শূন্যতা অনুভব করি: কথায় অনেক বেশি ইজমাল-অস্পষ্টতা থেকে যায় কাদের রদ করা হচ্ছে, যাদের রদ করা হচ্ছে তাদের কোন কোন্ বিষয়টার রদ করা হচ্ছে, যাদের রদ করা হচ্ছে তাদের দলীল কি? এর বিপরীতে হুজুর বা মারকাযের মতটা কি, সে মতের দলীল কি, যাদের রদ করা হচ্ছে তাদের দলীলের জওয়াব কি, ফিতনার বিপরীতে যামানার আলোকে শরীয়তের সহীহ তরিকাটা কি? – এসবের কোনো কিছুই স্পষ্ট করা হয় না ফলে একটা ধোঁয়াশার ভেতর থাকতে হয় সর্বদাই

    যেমন এবারের বক্তব্যেওসাহাবি বিদ্বেষী লোক’, ‘গাইরে আলেম মুজাহিদ’, ‘কট্টরপন্থী সালাফী’ ‘ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার-ব্যবসায়ী’- এদের থেকে নতুন নতুন মাসআলা নিয়ে জিহাদ-খেলাফত-সিয়াসতের সহীহ মাফহুমের ভিন্ন ব্যাখ্যা করা হচ্ছে বলে হুজুর দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং চিন্তাধারার যথেষ্ট সমালোচনা করেছেন কিন্তু এখানে অনেক বেশি ইজমাল রয়ে গেছে:
    • সাহাবি বিদ্বেষী’, ‘গাইরে আলেম মুজাহিদ’, ‘কট্টরপন্থী সালাফী’ ‘ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার-ব্যবসায়ীএসব লোক কারা?
    • এদের থেকে কি কি নতুন আবিষ্কৃত মাসআলা নেয়া হচ্ছে?
    • তারা জিহাদের নতুন কি মাফহুম পেশ করছে যা সালাফের যামনায় ছিল না এবং আইম্মায়ে কেরাম বলেননি?
    • এসব নতুন আবিষ্কৃত নজরিয়া মাসআলার পক্ষে তারা কি কি ভ্রান্ত দলীল পেশ করছে?
    • এর বিপরীতে জিহাদ, খেলাফত সিয়াসতের ব্যাপারে ইসলামের সহীহ-সঠিক অবস্থানটি কি এবং ব্যাপারে হুজুর মারযকাযের রায় কি?
    • সহীহ সঠিক অবস্থানের দলীল কি?
    • ভ্রান্তদের দলীলের খণ্ডন কি?
    ধরনের অসংখ্য বিষয় অস্পষ্ট থেকে যাচ্ছে ফলে পাঠক শ্রোতারা জিহাদের ব্যাপারে একটা শঙ্কা ভীতির সম্মুখীন হচ্ছেন কিন্তু সঠিক রাহনুমায়ী পাচ্ছেন না এতে করে আল্লাহ তাআলার ফরযকৃত পবিত্র জিহাদের ব্যাপারে মানুষ জেনে না জেনে ভীতশ্রদ্ধ হয়ে পড়ছেনা-জানি গোমরাহির কবলে পড়ে গেলামএমন এক অজানা শঙ্কায় জিহাদের রাস্তা থেকে অতি সন্তর্পণে পাশ কাটিয়ে যাচ্ছে অথচ একজন রাহনুমা আলেমের দায়িত্ব ছিল যেমনটা আল্লাহ তাআলা তার নবীকে আদেশ দিয়েছেন,
    { يَاأَيُّهَا النَّبِيُّ حَرِّضِ الْمُؤْمِنِينَ عَلَى الْقِتَالِ} [الأنفال: 65]
    হে নবী, আপনি মুমিনগণকে কিতালে উৎসাহিত করুন” -আনফাল: ৬৫



    কাজটি যদি দ্বীনের অন্য কোনো বিধানের ব্যাপারে করা হতো আমরা নিশ্চিত বলতাম, এটি সহীহ তরিকার খেলাফ এমনভাবে সমালোচনা করা যাবে না যে মানুষ দ্বীনের বিধান থেকে সরে যায় বরং সহীহ-সঠিকটা তুলে ধরে, সেটার প্রতি তারগিব দিয়ে বাতিলের খণ্ডন করতে হবে কিন্তু জিহাদের ব্যাপারটা এলেই আমরা কেন জানি উসূল-নীতি ধরে রাখতে পারি না
    ***



    আট. হুজুরের বক্তব্য ০১ (সারমর্ম; হুবহু নস নয়): [আকল-ফাহম-বাসিরাত-তাফাক্কুহ ফিদদিনের অভাবের কারণে এবং মাসতুরের সাথে সাথে মালহুজটাও না বুঝার কারণে তালিবুল ইলমরা এখন যেকোনো নতুনের পিছনে দৌড়াচ্ছেকোনো রেসালায়, কোনো কিতাবে, কোনো বয়ানে নিজেদের তবিয়তের সাথে, মেজাযের সাথে মিলে এমন কোনো দাওয়াত পেয়েছে; ব্যস সেটাকেই হরফে আখের মনে করেনিজের উস্তাদের কাছে এরকম কিছু শুনে না, তো মনে করে উনারা গাফেল]

    অভিব্যক্তি
    হুজুরের পরের আলোচনা থেকে স্পষ্ট যে, এখানে দাওয়াত বলতে জিহাদের দাওয়াত উদ্দেশ্য ব্যাপক কিছু উদ্দেশ্য হয়ে থাকলে, সেগুলোর মধ্যে জিহাদের দাওয়াতটা বিশেষভাবে উদ্দেশ্য মোটকথা, জিহাদের ব্যাপারে দুয়েকটা কিতাব-রিসালা বা বয়ান শুনেই তালিবুল ইলমরা এগুলোকে বিশ্বাস করে বসছে সত্যাসত্য যাচাই না করেই এগুলোর পেছনে ছুটছে শুধু এতটুকুতেই ক্ষান্ত না, নিজেদের উস্তাদদেরকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে জিহাদের ব্যাপারে এ ধরনের কথা উস্তাদরা না বলায় উস্তাদদেরকে গাফেল মনে করছে

    # মেনে নিতে হবে যে, কিছু তালিবুল ইলম বাস্তবেই এমন আছে কিন্তু সকলেই কি এমন? আমরা তো দেখছি ভাল ভাল প্রতিষ্ঠানে পড়ুয়া যি ইস্তি’দাদ তালিবুল ইলম (বরং অনেক উস্তাদও আলহামদুলিল্লাহ) জিহাদে জড়াচ্ছে অথচ জিহাদের রাস্তা যে রক্তমাখা কাটাভরা সেটা কিন্তু তারা জানে যেকোনো সময় গ্রেফতার হতে পারে, জীবনের স্বপ্ন সব ধুলোয় মিশে যেতে পারে জেনেও জড়াচ্ছে জিহাদে জড়ানো এ ধরনের উস্তাদ ও তালিবুল ইলমের সংখ্যা আলহামদুলিল্লাহ যথেষ্ট এবং দিন দিন বাড়ছে তাদের ব্যাপারেও কি বলা যায়, দুয়েকটা রিসালা আর বয়ানেই ……? বরং অনেকে আছেন যারা দীর্ঘদিন যাচাই বাছাই এবং গভীর অধ্যয়নের পর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন; যেমন একজন ভিন্ন ধর্মের শিক্ষিত ব্যক্তি দীর্ঘদিন গবেষণা শেষে ইসলাম গ্রহণ করেন তাদের ব্যাপারেও কি …?

    # উস্তাদদের গাফেল মনে করার কথা যদি বলি, ঢালাওভাবে উস্তাদদের গাফেল মনে করে যে তা না অনেক উস্তাদই সচেতন আছেন বরং অনেকে তো উস্তাদের দাওয়াতেই জিহাদে জড়ায়

    # জিহাদের প্রসঙ্গ বাদ দিয়ে আমরা ইলমি অন্যান্য অঙ্গনগুলো ধরি এবং যুগের অন্যান্য চাহিদাগুলোর কথা ধরি সেগুলোর ক্ষেত্রে কি সব উস্তাদ সচেতন? যদি উত্তর না হয়, তাহলে জিহাদের মতো বিধান (যা বৈশ্বিকভাবে যুগ যুগ ধরে প্রোপাগাণ্ডার শিকার, যেখানে ধরা পড়লে নির্যাতনের শিকার হওয়া সুনিশ্চিত এবং যেটা কুরআনের ভাষ্য মতেই কঠিন বিধান) – এ ব্যাপারে কি অনেক উস্তাদ গাফেল থাকতে পারেন না? যেখানে সাধারণ যুগ সমস্যার ব্যাপারেই শতকরা দুইজন আলেম সচেতন পাওয়া মুশকিল, সেখানে জিহাদের ব্যাপারে অনেক উস্তাদ গাফেল থাকা কি আজিব গরিব কিছু? অধিকন্তু ঢালাওভাবে উস্তাদদের গাফেল মনে করে কথাটা সঠিক না উস্তাদের বরকতেই তো আলহামদুলিল্লাহ অনেকে জিহাদের জড়িয়েছে

    # আমি একটা বাস্তব দৃষ্টান্ত দিই: যখন এদেশে প্রথম মারকাযুদ দাওয়াহয় উলুমে হাদিসের চর্চা শুরু হলো, তখন এদেশের আলেমদের এক বিশাল অংশ একে খুব একটা ভাল নজরে দেখতে পারলো না ‘উলুমে হাদিস আবার কি? কই আমরা তো উলুমে হাদিস পড়িনি, আমরা কি দ্বীনের খেদমত করছি না? হাফেয ইবনে হাজার ফাতহুল বারি লেখার পর উলুমে হাদিসের আর কি পড়ার আছে? সনদ দিয়ে আমরা কি করি, আমাদের দরকার মতন? –ইত্যাদি অজ্ঞতাসূলভ অনেক আজিব ও গরিব কথা শুনা গেছে, যেগুলো শুনে একজন সচেতন আলেম লা হাওলা আর ইন্না লিল্লাহ পড়া ছাড়া কিছু করার নেই। তো উলুমে হাদিসের মতো ইলমের একটা এমন অনিবার্য প্রযোজ্য শাখার ব্যাপারেই যদি আলেমদের বিশাল কাফেলার এ রকম অভিব্যক্তি হয়, তখন আশ্চর্যের কি আছে যে, এর চেয়েও বেশি সংখ্যক আলেম জিহাদ, সিয়াসত, খিলাফতের মতো নাজুক, কষ্টকর ও প্রোপাগাণ্ডার শিকার বিধানের ব্যাপারে যথেষ্ট পরিমাণে গাফেল থাকবেন?

    # অধিকন্তু গাফেল মনে করার সিলসিলা ১ম দিন থেকে শুরু হয় না। কওমি তলাবারা উস্তাদ ভক্ত। উস্তাদের কথায় উঠে বসে। উস্তাদের পা ধুয়ে দেয়াকে সৌভাগ্য মনে করে। উস্তাদ দাঁড়িয়ে থাকতে বললে দাঁড়িয়ে থাকে, কান ধরতে বললে কান ধরে। উস্তাদের বাজার করে দেয়া, উস্তাদের ক্ষেতে কাজ করে দেয়া সৌভাগ্যের সোপান মনে করে। এভাবে একটা নয় দু’ইটা নয়; পাঁচ-দশ-বিশ বছর পর্যন্ত উস্তাদের সোহবতে কেটে যায়। কথায় আছে: ‘সাহিবুল বাইতি আদরা বিমা ফিহি’- ‘ঘরের খবর ঘরের লোকই ভাল জানে’। এ দশ বছর সোহবতে কোনো দিন আমার উস্তাদের মুখে শুনিনি হারানো খেলাফতের স্মৃতি কথা। শুনিনি কাশ্মিরি মা বোনোর আহজারির কথা। শুনিনি আফগান ইরাক সিরিয়ার শিশুদের না খেয়ে মরার করুণ কাহিনি। শুনিনি আল্লাহর শাসন আর কুফরি শাসনের ব্যবধানের কথা। বরং শুনেছি রফয়ে ইয়াদাইন আর আমীন বিল জাহর। শাদ্দে রিহালের মাসআলায় ইবনে তাইমিয়াকে এক হাত দেখে নেয়া। যারা আরেকটু সচেতন তারা বলেছেন, তালেবান আমেরিকার তৈরি। উসামা বিন লাদেন আমেরিকার দালাল। মোল্লা উমর ইসলামের ক্ষতি করেছে। রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করা হারাম। শাতেমে রাসূলদের হত্যাকারীদের মাথায় শয়তান চেপেছে। যারা আরও সচেতন তারা বলেছেন, জিহাদের জন্য ইমাম লাগবে- কিতাবে আছে, আমাদের ইমাম নাই। আকাবিরদের তাজরেবার দ্বারা সাবেত হয়েছে জিহাদের দ্বারা কাজ হয় না। আরাকানিরা আল্লাহর গজবে পড়েছে। আইএস মুসলিমদের তাকফির করে, তাদেরকে তো আমেরিকা মারবেই। শুনেছি সুফিয়ানে কেরাম হলেন প্রকৃত মুজাহিদ। শুনেছি নির্বাচনের জিহাদের কথা। ... ইত্যাদি ইত্যাদি। তখন আমি কিভাবে বলতে পারি, তিনি যুগ সচেতন? আমি উস্তাদকে মুহাব্বাত করি। মাথার তাজ মনে করি। কিন্তু বলে দিতে পারি না, তিনি মুফতি। তাহলে যুগ সচেতন কিভাবে বলতে পারি, অথচ তার হাল আমি দশ বৎসর ধরে জানি?

    # হুজুর বলেছেন, দুয়েকটা কিতাব রিসালা আর বয়ান শুনেই পেছনে ছুটছে তালিবুল ইলমরা এখানেও সেই আগের কথাটা বলতে হয়, ‘সাহিবুল বাইতি আদরা বিমা ফিহি’ আমি দশ বছরের সোহবতে ভাল করেই জানতে পেরেছি আমার উস্তাদ কতটুকু যুগ সচেতন আমি এও দেখেছি, অনেক কিতাবের হাওয়ালা দিয়ে পড়ানোর কারণে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ আমার প্রিয় উস্তাদের কিতাব কেটে দিয়েছে জিহাদের পক্ষে বলার কারণে দফতরে ডেকে নিয়ে তাকে শাসানো হয়েছে এবং বেশি না বুঝতে সতর্ক করা হয়েছে আমি দেখেছি কিভাবে চামড়া কালেকশানের মতো গাইরতহীন কাজটিকে আকাবিরের দোহাই দিয়ে গৌরবের কাজ বানানো হয়েছে আমার দীর্ঘ সোহবতে আমি সব হাকিকত জানি অপরদিকে প্রতিনিয়ত খবর পাচ্ছি কি হচ্ছে ইরাকে আফগানে নাফ নদীতে কিভাবে ভেসে আসছে রোহিঙ্গাদের লাশ। আর আমার উস্তাদ কিভাবে জনসম্মুখে ফতোয়া দিচ্ছেন, রোহিঙ্গাদের পক্ষে জিহাদ করা হারাম, ইলকাউন নাফস ইলাততাহলুকাহ ক্ষতবিক্ষত হৃদয়ে উস্তাদের ফতোয়ায় আরও রক্তক্ষরণ হলো কথাটা তিনি অন্যভাবে স্বাভাবিক করেও বলতে পারতেন। আল্লাহ মাফ করুন! জিহাদ মুমিনের ফিতরতের তাকাজা আমার মা বোনের আহাজরি শুনে আমি কি বসে বসে শুনবো জিহাদ হারাম, ইলকাউন নাফস ইলাততাহলুকাহ? অথচ কুদুরিতেও লিখা আছে জিহাদ ফরয!! হিদায়াতেও আছে সব কিতাবেই আছে আমার ফিতরত তো আল্লাহর ফরযকৃত এ বিধানটির জন্য আল্লাহর রহমতে তৈয়ার হয়েই ছিল কিন্তু আমার উস্তাদের অপব্যাখ্যা এতদিন আমার পথে পর্দা হয়ে ছিল আজ যখন একটা বয়ান শুনলাম, একটা রিসালা পড়লাম- এটা নতুন কোনো কিছু নয়, সত্যটার সামনে যে কৃত্রিম পর্দা ছিল সেটা শুধু সরে গেল দশ বছর পর হারানো ভাইয়ের সাথে দেখা হলে যেমন ভাইকে চেনা যায়, জিহাদের বিধানটির সাথে দশ বছর পর এভাবেই আমার দেখা হল এটি শুধু একটি রিসালা বা একটি বয়ানের প্রভাব নয়, এটি ফিতরত আর শাশ্বত সত্যের প্রভাব

    # অধিকন্তু একটা রিসালা পড়েই বা একটা বয়ান শুনেই পিছনে ছুটছে বিষয়টা এমন না যারা জিহাদে জড়িত তারা উস্তাদের অজান্তেই হয়তো তিন বছর/পাঁচ বছর আগে থেকেই জড়িত এ পাঁচ বছর যাবতই সে জিহাদ নিয়ে পড়াশুনা করে আসছে ময়দানের ভিডিও ও নুসরতের দৃশ্যগুলো দেখে আসছে অস্ত্রের ঝনঝনানি পাঁচ বছরই তাকে মুগ্ধ করে আসছে এ পাঁচ বছর যাবতই সে তার উস্তাদের যুগ-সচেতনতার মাত্রা (!!) দেখে আসছিল আর মনে মনে দুঃখ করছিল, আফসোস করছিল হয়তো কোনো কারণবশত আজ উস্তাদের সামনে প্রকাশ পেলো সে জিহাদি সে মানহাজি সে জযবাতি


    # যামানা এখন আপডেট প্রতিদিনের জিহাদের আপডেট চলে আসে তালিবুল ইলমের হাতে মুজাহিদদের বিজয়ে তালিবুল ইলমরা মিষ্টি খাওয়ার আয়োজন করে। আর উস্তাদ রয়ে গেছেন সেই গতানুগতিক আমীন বিল জাহর, রফয়ে ইয়াদাইন, শাদ্দুর রিহাল কিংবা ইমাম নাই, নির্বাচনের জিহাদ, খানকার জিহাদ ইত্যাদি নিয়েঅতএব, তালিবুল ইলমরা এক দিনেই একটা রিসালা পড়েই, একটা বয়ান শুনেই পিছনে ছুটেছে ধারণাটা ভুল মুহাম্মাদের এক মজলিসের কালিমার দাওয়াতেই বাপ দাদার ধর্ম সাহাবারা কেন ছেড়েছিল? এটা কি এক মজলিসের দাওয়াত? না’কি শাশ্বত সত্য আর ফিতরত? সাথে আছে ‘সাহিবুল বাইতি আদরা বিমা ফিহি’ (চলমান ইনশাআল্লাহ …)
    Last edited by Munshi Abdur Rahman; 03-25-2022, 06:09 AM.

  • #2
    কষ্ট ও দুঃখ তখনই হয় যখন সব দিক থেকে অনুসরণ যুগ্ম ও সচেতন কেহও জিহাদের ব্যাপারে এমন কথা বলে। মুহতারাম! আপনার কথাগুলো আমি পড়ে বুঝলাম ১০/১০ হয়েছে, না বেয়াদবি হয়েছে, না বাড়াবাড়ি হয়েছে। সুবহানাল্লাহ!

    হায়! হুবাহু লিখাটা যদি আবদুল মালেক সাহেব হুজুর হাতে পেতেন!!

    মুহতারাম আপনাকে অনেক অনেক জাযা-কাল্ল-হু খইরন আহসানাল জাযা-!
    হয় শাহাদাহ নাহয় বিজয়।

    Comment


    • #3
      আমরা থামবনা, আমাদের কালিমা যে "লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ"। এই কালিমা কাউকে কোনদিন থামতে দেয়নি, আমরাও থামবনা।
      (হুজুরের বয়ানের কোন অডিও/ভিডিও লিংক থাকলে দেওয়ার অনুরোধ)

      Comment


      • #4
        ১ম বয়ান: https://files.fm/u/63snwud9j
        ২য় বয়ান: https://files.fm/u/dcmabkn4z

        Comment


        • #5
          বক্তব্য ০২: [ব্যাপকভাবে এটা ভাবা শুরু হচ্ছে যে, সবাই গাফেলআকাবেররা গাফেল হযরত থানবি, হযরত মাদানী, আনোয়ার শাহ কাশ্মিরি, শাব্বির আহমাদ উসমানী পুরা আকাবেরে দেওবন্দ- সবাই এটা থেকে গাফেল, যেটা উনারা এখন আবিষ্কার করেছেন]

          অভিব্যক্তি

          এখানেও সেই আগের প্রশ্নগুলো:
          • নতুন আবিষ্কৃত সে জিনসটি কি?
          • জিনিসটি কে আবিষ্কার করেছে?
          • গোটা আকাবেরে দেওবন্দ সবাই সে নতুন আবিষ্কৃত জিনিসটি থেকে গাফেল: এটা কে বলেছে?
          • যে বলেছে সে কি আসলে কোনো হক জিহাদি কাফেলায় জড়িত এবং জড়িত থাকলে এটা কি সে কাফেলার মতাদর্শ, নাকি ব্যক্তি বিশেষের বিচ্যুতি?
          আমার জানামতে মুজাহিদিনে কেরাম নতুন কোনো দাওয়াত নিয়ে আসেননি কুরআন সুন্নাহ সাহাবা সালাফের যে দাওয়াত যামানার আবর্তনে চাপা পড়েছিল, মুজাহিদিনে কেরাম শুধু তা যিন্দা করার প্রয়াস চালাচ্ছেন আর যামানার আবর্তনে যে শরীয়তের অনেক বিধানই চাপা পড়ে গেছে তা তো স্বীকৃত স্বয়ং মারকাযুদ দাওয়ার প্রতিষ্ঠাও তো চাপা পড়া ইলমকে যিন্দা করার জন্যই

          আর আকাবিরদের কথা যদি বলি, তো ঢালাওভাবে আকাবিরদের গাফেল বলেন- মুজাহিদদের এমন কাউকে এখনও দেখিনি অতি জযবায় বিশেষ কোনো ক্ষেত্রে বিশেষ কোনো মাসআলায় অপরিপক্ক কেউ বলে থাকলে থাকতে পারে নতুবা মুজাহিদিনে কেরামই বলতে গেলে আকাবিরদের সবচে যোগ্য অনুসারি মুজাহিদগণ আকাবিরদের নাম ভাঙিয়ে খাওয়ার চেয়ে আকাবিরদের অনুসরণ করে চলাকেই বেশি ভালবাসেন

          এজন্যই তো মুজাহিদদের কেউ সায়্যিদ আহমাদ বেরেলবির মতো শহীদ,
          কেউ শায়খুল হিন্দের মতো নির্বাসিত,
          কেউ মুহাজিরে মক্কির মতো দেশছাড়া,
          কেউ গাঙ্গুহির মতো আদালতের কাঠ গড়ায়,
          কেউ মাদানীর মতো যিন্দান খানায়,
          কেউ নানুতুবির মতো পলাতক

          পক্ষান্তরে যারা আকাবিরের দোহাই দিয়ে চলেছেন, তারা তাগুতের প্রিয়ভাজন হয়ে বহাল তবিয়তে জীবন যাপন করছেন।


          বক্তব্য০৩: [এটা সম্ভব যে, জুমহুর একটা বলবেন তা ভুল আর অল্প সংখ্যক যা বলবেন সেটা সহীহ কিন্তু সবাই একদিকে আর দুয়েকজন একদিকে আর দুয়েকজনেরটাই সঠিক সবারটা ভুল- এটা হতে পারে না]

          অভিব্যক্তি
          এটি শুধু জিহাদ-সিয়াসাত-খিলাফতের ব্যাপারেই নয়, দ্বীনের যেকোনো বিধানের ব্যাপারেই এটি প্রযোজ্য বিশেষভাবে শুধু জিহাদি কাফেলার উপর অভিযোগ উত্থাপন করা যায় না।

          হয়তো বলবেন, জিহাদিরাই এমনসব মাসআলা বলছে, তাই অভিযোগ তাদের উপর

          যদি এমনটাই হয়, তাহলে এমন দুচারটা মাসআলা পেশ করার অনুরোধ, যেগুলোতে গোটা উম্মাহ একদিকে আর দুয়েকজন একদিকে, আর মুজাহিদরা সে মাসআলা মেনে চলছে তবে অনুরোধ থাকবে, নিজেদেরকে শুধু বাংলাদেশে বা উপমহাদেশে সীমাবদ্ধ রাখবো না, গোটা মুসিলম উম্মাহ এবং সবখানের মুতাবার উলামাদের সামনে রাখবো

          বক্তব্য ০৪: [শুধু দলীল উল্লেখ করলে হবে না, ওয়াজহে ইস্তিদলালও লাগবে (অর্থাৎ দলীল থেকে উসূলের আলোকে মাসআলাটি কিভাবে সাব্যস্ত হচ্ছে) অধিকন্তু মুজতাহাদ ফিহি (মতভেদপূর্ণ) মাসআলায় ওয়াজহে ইস্তিদলালসহ দলীল উল্লেখ করা হলেও কথা শেষ হয়ে যাবে না (এবং কাতয়ি ফায়সালা হয়ে যাবে না যে, এটাই চূড়ান্ত এবং বিপরীত বলার সুযোগ নেই।) তাহলে কেন বল, দলীল উল্লেখ থাকলেই সেরে যাবে।]

          অভিব্যক্তি
          কথা সত্য যে, শুধু কুরআনের একটা আয়াত বা একটা হাদিস তুলে দিলেই হবে না, আয়াত হাদিস থেকে মাসআলাটি কিভাবে প্রমাণ হচ্ছে তাও উসূলের আলোকে দেখাতে হবে।

          আর মাসআলা যদি মতভেদপূর্ণ হয়, তাহলে দলীল দিয়ে প্রমাণ করলেও তা অন্যের উপর চাপিয়ে দেয়া যায় না। কারণ, যেখানে কয়েক রকমের মত আছে, সেখানে আমি যেটা গ্রহণ করেছি, আরেকজন সেটা গ্রহণ নাও করতে পারে। এ ধরনের ক্ষেত্রে আমারটা জোর করে অন্যের উপর চাপিয়ে দেয়া অন্যায়। তবে এখানে কথা আছে:

          # মুজাহিদরা অন্যদের উপর চাপিয়ে দিলে যেমন অন্যায়, মুজাহিদরা গ্রহণযোগ্য উলামাদের মতের উপর ভিত্তি করে একটা গ্রহণ করে নেয়ার পর তাদের সমালোচনা করাও অন্যায়। কিন্তু এখন দেখছি সম্পূর্ণই উল্টো। জিহাদের কথা শুনতে না শুনতেই রেগেমেগে আগুন।

          # হুজুর স্পষ্ট করেননি যে, মুজাহিদিনে কেরাম কোন্ মুজতাহাদ ফিহি মাসআলাটি উম্মাহর উপর চাপিয়ে দিতে চাচ্ছেন। যদি হুজুর সুনির্দিষ্ট করে কোনো মাসআলা দেখান, তাহলে হয়তো মুজাহিদিনে কেরাম সে মাসআলার ব্যাপারে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করবেন। হুজুর হয়তো তাগুতরা মুরতাদ কি’না এবং বর্তমান তাগুতশাসিত মুসলিম ভূখণ্ডগুলো দারুল হারব কি’না- এ দু’টি মাসআলা পেশ করবেন। সামনে হুজুরের বক্তব্যে যখন আসবে, তখন এ ব্যাপারে কথা বলবো ইনশাআল্লাহ।

          # হতে পারে জযবাতি কেউ হুজুরের উপর কোনো মুজতাহাদ ফিহি মাসআলা চাপিয়ে দিতে চেয়েছেন। তবে সেটা সে জযবাতি পর্যন্তই সীমাবদ্ধ থাকবে, গোটা কাফেলার উপর চাপানো যাবে না। যেমন বর্তমান কওমি মাদ্রাসার অনেক বক্তা বহু রকমের গলদ কথা বলে যাচ্ছেন। তাই বলে তার দায় গোটা কওমি জগতের উপর চাপানো যাবে না। বরং বর্তমানে দ্বীনের যতটুকু বাকি আছে, তার পিছনে কওমি উলামা তুলাবা ও তাদের ভক্ত-সমর্থকদের কুরবানিই বেশি। এদিকটি লক্ষ রেখেই তখন তাদের সমালোচনা করা যাবে, ঢালাওভাবে নয়। জিহাদের ব্যাপারেও বিষয়টা এমন হওয়া উচিত।

          # আর দলীলের প্রসঙ্গ যদি টানি, তাহলে বলবো, হুজুর হয়তো নিজের মুসতাওয়া (মান ও পজিশন) থেকে কথা বলছেন, নতুবা জিহাদ প্রসঙ্গে আলেম নামধারী অনেকজন এমনসব কথা বলেন, তালিবুল ইলমদের সাথে এ ব্যাপারে এমন জঘন্য আচরণ করেন, যেগুলো হুজুর নিজে দেখলেও হয়তো বরদাশত করতে পারতেন না। আল্লাহ তাআলার এ বিধানটির যেন কোনো মা বাপ নেই।

          কিতাবুস সিয়ারের দরসে যদি তাবলিগ, খানকা বা গণতন্ত্রকে জিহাদ বলা হয় (আর জিহাদকে বলা হয় হারাম বা বলা হয় জিহাদের দিন শেষ বা জিহাদ গাইরে নাফে বা বর্বর) আর এর বিপরীতে তালিবুল ইলম কুরআনের কোনো আয়াত, কোনো হাদিস বা ফিকহের কোনো উদ্ধৃতি পেশ করে, উস্তাদ যদি সেগুলোর কোনো জওয়াব না দিয়ে বরং বলে দেন: শুধু আয়াত পড়ে দিলেই হবে? না কিছু বুঝতেও হবে: তখন তালিবুল ইলম কি করবে? সে কতদিন সবর করবে? যখন কোনো দিনই উস্তাদজি আয়াত হাদিস বা ফিকহের বক্তব্যের গ্রহণযোগ্য উৎসের বরাতে সহীহ কোনো ব্যাখ্যা না দেখিয়ে বরং নিজেরটার উপর জেদ ধরে থাকেন: তখন উস্তাদের ব্যাপারে বদজন্ করতে হবে না – আল্লাহ মাফ করুন- বদজন্ অটোমেটিক চলে আসবে।

          কাজেই দলীলের প্রসঙ্গে শুধু তালিবুল ইলমদের এক তরফা দোষারোপ না করে, উস্তাদদেরকেও কিছু তাম্বিহ করা উচিত।

          বিশেষত এখন নেট দুনিয়ার বিস্তৃতি আর গোপন সূত্রের যোগাযোগের কারণে তালিবুল ইলমরা এমনসব হাওয়ালা-রেফারেন্স পেয়ে যাচ্ছে, যেগুলোর সহীহ জওয়াব না দিয়ে শুধু ধমক দিয়ে বা বেশি না বুঝার নসীহত করে দায় সারা যাবে না।

          বরং সত্য কথা যদি বলি, বর্তমানে অনেক তালিবুল ইলমের জিহাদ বিষয়ে পড়াশুনা অনেক উস্তাদের চেয়ে অনেকগুণ বেশি। এক্ষেত্রে শুধু ধমক দিয়ে বা মানসাব-মাকাম দেখিয়ে তালিবুল ইলমদের বারণ রাখা কষ্টকর, বরং অসম্ভব। বরং এ প্রচেষ্টা যত বেশি শক্ত হবে, উস্তাদের ব্যাপারে বদজনের কালি ততই বেশি গড়িয়ে লেপটিয়ে যাবে।
          (চলমান ইনশাআল্লাহ …)

          Comment


          • #6
            আল্লাহ রাব্বুল আলামিন ভাইয়ের লিখায় আরও বরকত দান করুন ।
            অনেক পড়াশুনা করেও তাগুত চিনবার পারি নাই তবে বার বার মনে হত এরা তো আমেরিকার দালাল এদেরকে মনব কেন ।
            আলহামদুলিল্লাহ যেদিন থেকে তাগুত চিনতে পেরেছি সেদিন থেকে তাগুতের বিরুদ্ধে জিহাদের ময়দাবে নেমেছি ।
            পর্দার আড়াল থেকে এতটূকু বলতে চাই আলহামদুলিল্লাহ জিহাদ নিয়ে কোন দীন হুজুরদের সাতে তর্ক করি নাই ।
            অনেক হুজুরকে জিজ্ঞাসাও করি নাই অথচ হুজুরের কাপড় ধোয়া বাসার রান্নাবান্না করে দেওয়া পেয়াজ কেটে দেওয়া রসুন বেটে দেওয়া সব করেছি আলহামদুলিল্লাহ ।
            এখনো আমার হুজুরদের কে জানাইতে সাহস পাইনা আমার তামান্না আমার দিলের ব্যাথার কথা । প্রায় দুয়া করি উনাদের নাম নিয়ে নিয়ে আল্লাহ তায়ালা উনাদের কে হিফাজত করুন সালিম রখুন আমিন

            জজবা ছিল আছে থাকবে তবে এখন পূর্ণ বিবেক সহকারে আছি আলাহামদুলিল্লাহ

            Comment


            • #7
              আলহামদুলিল্লাহ,, আল্লাহ তায়ালা আপনাদের ইলমে ও কৌশলে বারাকাহ দান করুন আমীন। পর কিছু কথা।
              হুজুরের বয়ানগুলো অডিও আকাড়ে আমাদের ফোরামে দিতে পারলে খুবই উপকার হয়। সুখ শান্তি,সাচ্ছন্দ্য চলাফেরা সবাই আশা করে, মুজাহিদ ভাইয়েরা তাহলে কিসের আশায় তাগুতের ভয়ে দিন পার করে??? আল্লাহ আমাদের বুঝার তাওফিক দান করুন আমীন
              ولو ارادوا الخروج لاعدواله عدةولکن کره الله انبعاثهم فثبطهم وقیل اقعدوا مع القعدین.

              Comment


              • #8
                মুহতারাম! কথা গুলো যতই পড়ছি, ততই দুঃখও ভালো লাগছে, অবাক হয়ে ভাবছি হুজুরের মত একজন এমন কথা গুলো কিভাবে বলে যেতে পারেন! সুবহানাল্লাহ!

                আল্লাহ তা'য়ালা আমাদেরকে হিদায়াত দান করুন! হুজুর যেন কথাগুলো হুবাহু সম্পুর্ন হাতে পায় এ আশা হৃদয়ে। আল্লাহ তা'য়ালা তা পূর্ণ করুন আমিন!

                জাযা-কাল্ল-হু খইরন আহসানাল জাযা- মুহতারাম ভাই!
                হয় শাহাদাহ নাহয় বিজয়।

                Comment


                • #9
                  আলহামদু লিল্লাহ, মাশা আল্লাহ মুহতারাম ভাই অসাধারণ লিখনি! আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ’লা আমাদের সকল কে তাফাক্কুহ ফীদ্দীন দান করুন, আমীন। বারাকাল্লাহু ফী ইলমিকা ওয়া হায়াতিকা ওয়া জাযাকাল্লাহু আহসানাল জাযা।

                  Comment


                  • #10
                    আমরা পৃথিবীতে ক্ষণস্থায়ী ।তাই আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে সকল ফেৎনা থেকে হেফাজত করুন অন্যথায় উপায় নেই আমাদের ।কারণ ফেৎনা যে কোন দিক থেকে আসার সম্ভাবনা রাখে যেহেতু প্রতিটি মানুষের সাথে জ্বীন শয়তান নিযুক্ত রয়েছে চাই সে আলেম হোক বা না হোক ভালো হোক বা মন্দ হোক এমনকি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথেও ছিল তবে আল্লাহ তায়ালা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে তার বিরুদ্ধে সাহায্য করেছেন ফলে সে শয়তান আত্মসমর্পণ করে ফেলেছেন এবং আরেকটি হাদিসে রয়েছে মানুষের উপর এমন একটি যুগ আসবে যখন আলেমরা হবে আকাশের নিচে সবচেয়ে নিকৃষ্ট ।ফেৎনা তাদের থেকে প্রকাশ পাবে এবং এর কুফলাফল তাদের দিকেই ফিরবে । এবং কেউ যদি বলে আল্লাহর জন্য জীবন উৎসর্গ করা ধ্বংস তাহলে ইহা নিতান্তই ভুল হবে কারণ আল্লাহর জন্য নিজের জিবন বিলিয়ে দেওয়ার থেকে গৌরবময় কিছু থাকতে পারে না এবং এর থেকে বড় কোন সুভাগ্যকি হতে পারে যে কেয়ামতের ময়দানে আল্লাহর সামনে দাঁড়িয়ে বলবে আমি আমার সবচেয়ে প্রিয় জীবনটিকে তোমার জন্য উৎসর্গ করতে পেরেছি।
                    পৃথিবীর রঙ্গে রঙ্গিন না হয়ে পৃথিবীকে আখেরাতের রঙ্গে রাঙ্গাই।

                    Comment


                    • #11
                      আলহামদুলিল্লাহ সুম্মা আলহামদুলিল্লাহ।
                      অনেক উপকারী পোষ্ট।
                      আল্লাহ তা'আলা পোষ্টকারী এবং পাঠকবৃন্দ সবাইকে উত্তম বিনিময় দান করুন। আমিন!!!


                      হেদায়াত পাওয়াই মুখ্য নয়, হেদায়াতের উপর অটল থাকাই হল মূল বিষয়
                      Last edited by Munshi Abdur Rahman; 03-14-2022, 01:41 PM.

                      Comment


                      • #12
                        "মুহাম্মাদের এক মজলিসের কালিমার দাওয়াতেই বাপ দাদার ধর্ম সাহাবারা কেন ছেড়েছিল? এটা কি এক মজলিসের দাওয়াত? না’কি শাশ্বত সত্য আর ফিতরত? সাথে আছে ‘সাহিবুল বাইতি আদরা বিমা ফিহি’।"

                        এই অংশটি খুব নাড়া দিয়েছে ভাই।
                        আমি এক ভাই কে প্রশ্ন করেছিলাম, ভাই আমাদের উস্তাদ বা উলামারা কি এই (জিহাদ, ইদাদ,ইত্যাদী)বিষয়ের পড়াগুলো পড়ে নাই বা জানে না? তারা কেন এমন বলে?
                        তিনি বলেছিলেন,আমল ছাড়া যত এলেমই থাকুক তা এলেম না।আর যে, যে বিষয়ে জানে না সে বিষয়ে তার কাছে জানতে চাওয়া ঠিক নয়।
                        তারা তো আসলেই এত পড়া লেখা করেছে যে তাদের লিখা কিতাব পড়ে শেষ করা ও অনেক ক্ষেত্রে অসম্ভব।
                        আল্লাহ তাআলার কাছে শুকরিয়া তাদের পরিচালিত মাদরাসা ও তাদের ইলম দ্বারা আমাদের কে ফায়দা দিচ্ছেন।
                        কিন্তু তাদের জন্য আপসোস তাদের ইলম অনেকাংশেই শুধু পড়া ও পড়ানোর মাঝেই সীমাবদ্ধ।


                        আলহামদুলিল্লাহ আমাদেরকে আল্লাহ তাআলা এই কন্টকময় জান্নাতের পথে নিয়ে এসেছেন,তাদের মধ্য থেকে বাছাই করে।
                        আজীবন যেন এই পথে থাকতে পারি ভাইদের কাছে এই দু'আ চাই।

                        Comment


                        • #13

                          ইংরেজদের কাছে দুশো বছরের পরাজিত মানসিকতা; ইংরেজ খেদাও আন্দোলন হয়েছে ইংরেজ বিতাড়িত হওয়ার পরে বুদ্ধিবিত্তিক পরাজয় মানব রচিত ধর্মের শৃঙ্খলাবদ্ধ। যে দিকে তাকায় মনে করে আমাদের কিছুই করার নেই কেয়ামত খুব কাছে। ইমাম মেহেদীর আগমন খুব নিকটে। আফগানের মোল্লাদের কথা বললে তারা তো পাহাড়ি লড়াকু মানুষ।আমরা ভুলে গেছি আলি কুলি খানের কথা/সাইয়েদ হায়দার ইমামের বিজয় ইতিহাস। আমরা আর শরিয়ার জন্য লড়াই করিনি।আমাদের কে কালিমা খচিত পতাকা এই জমিনে উড়াতে হবে। তখন সবাই দেখবে কালিমার পতাকা পত পত করে উড়ছে কিন্তু হয়তো বোমার আঘাতে আমাদের কবর ও জুটেনি তখন সবাই সালাউদ্দিন আয়ুবির ইতিহাস পড়ে চোখের পানি ফেলবে।মনে পড়লে অপরিচিতদের কথা তখন মাগফেরাতের দোয়া করে দিবেন।

                          Comment


                          • #14
                            হুজুরের এমনই কিছু লেখা পড়েছি, মনে প্রশ্নও জেগেছিলএখন আলহামদুলিল্লাহ যথেষ্ট খোরাক পেয়েছি

                            Comment


                            • #15
                              ما شاء الله
                              بارك الله
                              جزاك الله

                              Comment

                              Working...
                              X