full post in PDF format https://archive.org/download/shatim_...orjalocona.pdf
ইতিপূর্বে বিভিন্ন নীতিশাস্ত্রের আলোকে কটূক্তি খারাপ বলে যুক্তি দেয়া হয়েছে। এতদসত্বেও কোন কোন দার্শনিক অপমানকে বৈধতা দেয়ার কথা ভেবেছেন।
অপমানের বৈধতা প্রসঙ্গ
অপমান নিয়ে গবেষণা করেছেন এমন একজন ব্যক্তি হলেন জিরোম নিউ। তার sticks and stones বইয়ে তিনি বলেছেন, কাউকে অপমান করা তখনই যৌক্তিক হয়, যখন কোন বেয়াদবকে শায়েস্তা করার উদ্দেশ্যে তা করা হয়। তার ভাষায়, where the disappointed expectations are presumptuous, and insulting is a proper putting of someone in their place, a puncturing of pretensions।
কার্ডিফ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিকোলাস শ্যাকেলের মতে, ক্ষমতাসীনদের ক্ষমতার অপব্যবহার করতে দেখলে অপমান করা উচিত। তার ভাষায়, People in power deserve it when they stupidly, arrogantly or indifferently muck up our lives, something they do routinely. They deserve it most especially when they misuse their authority, such as when they do so to display their power by make someone’s life worse or for the purpose of getting their own back on someone who resists their misuse of power. https://blog.practicalethics.ox.ac.u...ise-of-insult/
গুলেপফ বিশ্ববিদ্যালয়ের জাস্টিন কার্টার উপরের উভয়ের অনুরূপ বলেছেন যে, মজলুম পাল্টা অপমান করতে পারবে।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একজন নম্র ভদ্র, আদিল ব্যক্তি হিসাবে তার যামানার শত্রুদের কাছেই প্রসিদ্ধ ছিলেন। ... এতদাসত্বেও তাকে অপমান করা ব্যক্তির প্রতিহিংসা ছাড়া আর কিছু সাব্যস্ত করে না।
পিয়ার্স কলেজের দার্শনিক কেলি উইরাইখ তো অপমান করা থেকে দূরেই থাকতে বলেছেন। একান্ত করতেই হলে যেসব শব্দভাণ্ডার ব্যবহার করতে বলেছেন তা অন্তত শাতিমদের পক্ষে মেনে চলা সম্ভব না। https://ncdj.org/style-guide/
উল্লেখ্য এসকল বস্তুবাদী দার্শনিকদের অনেকেই (যেমন-জাস্টিন কার্টার) নৈতিক আপেক্ষিকতাবাদী; যে তত্ত্বের উন্মাদ দাবিসমূহ কিঞ্চিৎ পূর্বে বর্ণনা করা হয়েছে। সুতরাং ইংরেজিতে বিশ্লেষণ যখন করেছে, তখন সত্য বলেছে ধরে না নিয়ে সকল অবস্থায় অপমান থেকে বিরত থাকার ইসলামি পরামর্শ দিচ্ছি; সেটাও নয় ইংরেজিতেই দিলাম https://darulifta-deoband.com/home/en/qa/8889
এই বিশাল আলোচনার আসলে কোন প্রয়োজন ছিল না। কারণ স্বাভাবিক বিচার -বুদ্ধি থাকলে শাতিমের কাজকে ভাল মনে করার অবকাশ নেই। তবে সামনের আলোচনার ভিত্তি মজবুত করবে ইনশাআল্লাহ্।
এখন প্রশ্ন হল, অপমান এবং কটূক্তি করা খারাপ, কিন্তু তা কি শাস্তিযোগ্য?
বস্তুবাদী দার্শনিকদের প্রায় সবাই অপমান করাকে অনৈতিক মনে করলেও এই ব্যাপারে একমত যে, কটূক্তিকারীকে আইনের আওতায় আনা যাবে না। এর পিছনে কারণ স্পষ্ট; একজন সেকুলারের কাছে সকল ধর্মই সমানভাবে ভুয়া। আর পরিস্থিতি যখন তা-ই, তখন কাউকে বিশেষ সুবিধা প্রদান করা যৌক্তিক হতে পারে না।
জিরোম নিউ-য়ের একটা উক্তি থেকে বিষয়টি স্পষ্ট হয়, I have tried to argue that offense is less of a danger than the stifling of free speech. There might in the end be no limit to religious sensitivities and ultimately no scope for freedom of expression.
তার বক্তব্যের রদ করা কঠিন কিছু না। কিন্তু আজকে সেদিকে না যাই। মূলত, আমাদের মতো সে-ও তার ধর্মের মূলনীতিকে হুমকির মুখে ফেলতে রাজি না; যা সম্পূর্ণ স্বাভাবিক।
এখন আমরা দেখবো শাতিমকে আইন প্রণয়ন করে অপরাধী সাব্যস্ত করা খলীফার পক্ষে যৌক্তিক কিনা।
বিভিন্ন দেশে যেখানে হলোকস্ট কিংবা আর্মেনিয়া হত্যাকাণ্ড অস্বীকার করলেই জেলে যেতে হয়, (https://www.splcenter.org/fighting-h...rs-sent-prison) সেখানে এতটুকু তো প্রমাণ হয়েই যায় যে, বাক-স্বাধীনতা অসীম নয়; বরং অনেক ক্ষেত্রে শাস্তিযোগ্য। আর এখন তো স্পিচ আইন প্রক্রিয়াধীন আছেই। https://academic.oup.com/book/9256/c...ract/155957982
গায়িকাদেরও আজকাল সুশীল কথায় গান গাইতে হয়; যা বাক-স্বাধীনতার অবাধ না হবার ব্যাপারে সামাজিক সম্মতি প্রমাণ করে। https://www.theguardian.com/commenti...-my-heart-sank
দ্বিতীয়ত, ধর্ম আইনের অন্যতম উৎস। ধর্মে শাতিম হত্যার কথা থাকলে তা গ্রহণ করা রাষ্ট্রের জন্য অযৌক্তিক কিছু না। https://bangla.bdlawpost.com/2024/07...of-law-in.html
https://wikioiki.com/%E0%A6%86%E0%A6...6%BF%E0%A6%B8/
তৃতীয়ত, রাষ্ট্র একটি সার্বভৌম সত্ত্বা। সে সার্বভৌম একারনেই যে, সে তার খেয়ালখুশি মতো আইন প্রণয়নের ক্ষমতা রাখে।
এর বিপরীতে কেউ কেউ মানবাধিকার কার্ড ফেলতে পারে। মনে রাখতে হবে, মানবাধিকার আইন মানুষের বানানো। নিজে একজন মানুষ হয়ে আরেকজনের বানানো আইন মানার চেয়ে নিজের বানানো আইন মানা অনেক ভাল। তাছাড়া কিছু লোক নিজেদের বানানো ফিরিঙ্গি আইন সার্বজনীন দাবি করলেই সেটা সার্বজনীন হয়ে যায় না। এমনকি কথিত মানবাধিকার আইনের প্রাথমিক সংস্করণের ব্যাখ্যাও রিদ্দা-র আইনের বিরোধী ছিল না। অর্থাৎ আইনের ব্যাখ্যা কে করছে, সেটাও একটা গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। https://www.bespacific.com/a-history...united-states/
ফলবাদ নিয়ে আলোচনায়, শাতিম কেন জাতীয় নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলার জন্য হুমকি তার 7টি কারণ উল্লেখ করা হয়েছে। সুতরাং জাতীয় নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা বজায় রাখতে রাষ্ট্র তার সার্বভৌম ক্ষমতার বলে শাতিমকে শাস্তির আওতায় আনতে পারে। কথিত মানবাধিকার আইনের ধার ধারার কোন কারণ নেই।
শাস্তির মাত্রা নির্ধারণ-
অপরাধের মাত্রা যত বেশি হয়, শাস্তি তত বেশি। https://en.m.wikipedia.org/wiki/Proportionality_(law)
কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যাক্যালেস্টার বেল বলেছেন, অপমানকারীকে পাল্টা অবজ্ঞার শিকার বানাতে হবে। তার ভাষায়, One way of protecting oneself from feeling insulted would be to muster a targeted counter-contempt towards one's insulters. Such a targeted counter-contempt would protect targets from feeling insulted, and it may help victims of racist and sexist insults maintain their sense of self-respect. https://ndpr.nd.edu/reviews/sticks-a...hy-of-insults/
আমাদের বক্তব্য হল, একজন ব্যক্তিকে চূড়ান্তভাবে অপমান তখনই করা সম্ভব, যখন তার সত্ত্বার অস্তিত্বের গুরুত্বকেও অবজ্ঞা করা হয়। আর এই চরম পর্যায়ে উপনীত হবার কারনও আছে। কারনটা হল, আমি যাকে আমার প্রাণের চেয়ে বেশি গুরুত্ব দেই, সেই সত্ত্বা অবজ্ঞার শিকার হয়েছে। অন্য কথায়, শাতিম আমার অস্তিত্বকেই অবজ্ঞা করেছে।
স্পষ্টত:, এই হাদিস সকল মানুষের ব্যাপারে না, তাই এই যুক্তি অন্য সাধারণ মানুষের ব্যাপারে খাটে না। অন্যদের ব্যাপারে বেল কিংবা কার্ডিফ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিকোলাস শ্যাকেলের পাল্টা অপমানের পথ অনুসরণ করার চেয়ে চুপ থাকা ভাল। কারণ নিজে ঠিক জেনেও তর্কে চুপ থাকলে জান্নাতে উচু ঘর পাওয়া যাবে ইনশাআল্লাহ্।
এই যুক্তি হিন্দুদের গোপ্রীতির অনুরূপ নয়। কারণ মানুষের উপর গরুকে প্রাধান্য দেয়ার মত গাজাখুরী দর্শন, প্রায় সকল প্রকার প্রস্তাবিত নীতিশাস্ত্রের বিরোধী। special pleading ছাড়া গরুকে অন্যান্য পশুর উপরেই প্রাধান্য দেয়া যায় না, সেখানে বিশেষ ব্যক্তির প্রতি altruism মানব ইতিহাসে ও সাহিত্যে অত্যন্ত স্বাভাবিক ঘটনা।
শাতিমের জন্য এই চরম শাস্তির আরও কারণ হল, সে পরোক্ষভাবে আল্লাহ, কুরআন, সকল পবিত্র বিষয় এবং অদৃশ্য জগতের মত প্রকৃত বাস্তবতাকে অস্বীকার করার মাধ্যমে তার নিজের অস্তিত্বকেও অর্থহীন প্রমাণ করেছে। আর ইহজীবন প্রকৃত বাস্তবতা নয়, near death experience এর অতি মজবুত প্রমাণ। মুফতি তাকী উসমানী হাফি: -এর 'দুনিয়ার ওপারে' এই বিষয়ে উল্লেখযোগ্য কর্ম। https://archive.org/download/TaqiUsm...ina.com%29.pdf
যাইহোক, এই যুক্তিতে সকল কাফের হত্যার উপযুক্ত হলেও আইনের বলে তাদের নিরাপত্তা দেয়ার কারণে হত্যা করা যায় না। শাতিম অন্যদিকে সামাজিক চুক্তি ভঙ্গ করে এবং তাকে হত্যাই তখন আইনের শাসন বলে বিবেচিত হয়।
আর প্রাণের চেয়ে মূল্যবান সত্বাকে (সত্তা) অবজ্ঞা করার বিপরীতে অপমানকারীর অস্তিত্বের অধিকারকে অবজ্ঞা করা নিছক দাবিই নয়; আমাদের ভাইয়েরা যে নিজেদের প্রাণের চেয়ে নবীজির সম্মানের ব্যাপারে বেশি উদ্বিগ্ন তা তো আদালত প্রাঙ্গণে তাদের হাসি থেকেই স্পষ্ট। সুতরাং আমাদের দাবি এবং কাজ পরস্পর বিরোধী নয়। বরং সেকুলারদের পক্ষ থেকে তাদের মেটাফিজিক্যাল অবস্থানের ব্যাপারে একনিষ্ঠতা প্রমাণের প্রয়োজন আছে। ভুলে গেলে চলবে না, মৃত্যুকে অবজ্ঞা করার নামই বীরত্ব।
“Valor is the contempt of death and pain.” — Tacitus
বস্তুত, শাতিমের সাজা মৃত্যুদণ্ড অপেক্ষা বেশি কিছু হওয়া উচিত। কারণ সে যাকে অবজ্ঞা করেছে সেটা আমার প্রাণের চেয়ে দামি। কিন্তু দুনিয়াতে যেহেতু মৃত্যুদণ্ড অপেক্ষা অতিরিক্ত শাস্তি দেয়া অসম্ভব, সেহেতু এখানেই সীমিত রাখতে হল।
এখন যেহেতু আমরা শাস্তির মাত্রা মৃত্যদণ্ড হওয়া এবং খলীফা কর্তৃক তা কার্যকর করার বৈধতা সম্পর্কে আন্দাজ করতে পেরেছি; খলীফার অনুপস্থিতিতে তা কার্যকর করা সম্পর্কে পর্যালোচনা করা যাক।
(চলবে ইনশাআল্লাহ্ )
ইতিপূর্বে বিভিন্ন নীতিশাস্ত্রের আলোকে কটূক্তি খারাপ বলে যুক্তি দেয়া হয়েছে। এতদসত্বেও কোন কোন দার্শনিক অপমানকে বৈধতা দেয়ার কথা ভেবেছেন।
অপমানের বৈধতা প্রসঙ্গ
অপমান নিয়ে গবেষণা করেছেন এমন একজন ব্যক্তি হলেন জিরোম নিউ। তার sticks and stones বইয়ে তিনি বলেছেন, কাউকে অপমান করা তখনই যৌক্তিক হয়, যখন কোন বেয়াদবকে শায়েস্তা করার উদ্দেশ্যে তা করা হয়। তার ভাষায়, where the disappointed expectations are presumptuous, and insulting is a proper putting of someone in their place, a puncturing of pretensions।
কার্ডিফ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিকোলাস শ্যাকেলের মতে, ক্ষমতাসীনদের ক্ষমতার অপব্যবহার করতে দেখলে অপমান করা উচিত। তার ভাষায়, People in power deserve it when they stupidly, arrogantly or indifferently muck up our lives, something they do routinely. They deserve it most especially when they misuse their authority, such as when they do so to display their power by make someone’s life worse or for the purpose of getting their own back on someone who resists their misuse of power. https://blog.practicalethics.ox.ac.u...ise-of-insult/
গুলেপফ বিশ্ববিদ্যালয়ের জাস্টিন কার্টার উপরের উভয়ের অনুরূপ বলেছেন যে, মজলুম পাল্টা অপমান করতে পারবে।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একজন নম্র ভদ্র, আদিল ব্যক্তি হিসাবে তার যামানার শত্রুদের কাছেই প্রসিদ্ধ ছিলেন। ... এতদাসত্বেও তাকে অপমান করা ব্যক্তির প্রতিহিংসা ছাড়া আর কিছু সাব্যস্ত করে না।
পিয়ার্স কলেজের দার্শনিক কেলি উইরাইখ তো অপমান করা থেকে দূরেই থাকতে বলেছেন। একান্ত করতেই হলে যেসব শব্দভাণ্ডার ব্যবহার করতে বলেছেন তা অন্তত শাতিমদের পক্ষে মেনে চলা সম্ভব না। https://ncdj.org/style-guide/
উল্লেখ্য এসকল বস্তুবাদী দার্শনিকদের অনেকেই (যেমন-জাস্টিন কার্টার) নৈতিক আপেক্ষিকতাবাদী; যে তত্ত্বের উন্মাদ দাবিসমূহ কিঞ্চিৎ পূর্বে বর্ণনা করা হয়েছে। সুতরাং ইংরেজিতে বিশ্লেষণ যখন করেছে, তখন সত্য বলেছে ধরে না নিয়ে সকল অবস্থায় অপমান থেকে বিরত থাকার ইসলামি পরামর্শ দিচ্ছি; সেটাও নয় ইংরেজিতেই দিলাম https://darulifta-deoband.com/home/en/qa/8889
এই বিশাল আলোচনার আসলে কোন প্রয়োজন ছিল না। কারণ স্বাভাবিক বিচার -বুদ্ধি থাকলে শাতিমের কাজকে ভাল মনে করার অবকাশ নেই। তবে সামনের আলোচনার ভিত্তি মজবুত করবে ইনশাআল্লাহ্।
এখন প্রশ্ন হল, অপমান এবং কটূক্তি করা খারাপ, কিন্তু তা কি শাস্তিযোগ্য?
বস্তুবাদী দার্শনিকদের প্রায় সবাই অপমান করাকে অনৈতিক মনে করলেও এই ব্যাপারে একমত যে, কটূক্তিকারীকে আইনের আওতায় আনা যাবে না। এর পিছনে কারণ স্পষ্ট; একজন সেকুলারের কাছে সকল ধর্মই সমানভাবে ভুয়া। আর পরিস্থিতি যখন তা-ই, তখন কাউকে বিশেষ সুবিধা প্রদান করা যৌক্তিক হতে পারে না।
জিরোম নিউ-য়ের একটা উক্তি থেকে বিষয়টি স্পষ্ট হয়, I have tried to argue that offense is less of a danger than the stifling of free speech. There might in the end be no limit to religious sensitivities and ultimately no scope for freedom of expression.
তার বক্তব্যের রদ করা কঠিন কিছু না। কিন্তু আজকে সেদিকে না যাই। মূলত, আমাদের মতো সে-ও তার ধর্মের মূলনীতিকে হুমকির মুখে ফেলতে রাজি না; যা সম্পূর্ণ স্বাভাবিক।
এখন আমরা দেখবো শাতিমকে আইন প্রণয়ন করে অপরাধী সাব্যস্ত করা খলীফার পক্ষে যৌক্তিক কিনা।
বিভিন্ন দেশে যেখানে হলোকস্ট কিংবা আর্মেনিয়া হত্যাকাণ্ড অস্বীকার করলেই জেলে যেতে হয়, (https://www.splcenter.org/fighting-h...rs-sent-prison) সেখানে এতটুকু তো প্রমাণ হয়েই যায় যে, বাক-স্বাধীনতা অসীম নয়; বরং অনেক ক্ষেত্রে শাস্তিযোগ্য। আর এখন তো স্পিচ আইন প্রক্রিয়াধীন আছেই। https://academic.oup.com/book/9256/c...ract/155957982
গায়িকাদেরও আজকাল সুশীল কথায় গান গাইতে হয়; যা বাক-স্বাধীনতার অবাধ না হবার ব্যাপারে সামাজিক সম্মতি প্রমাণ করে। https://www.theguardian.com/commenti...-my-heart-sank
দ্বিতীয়ত, ধর্ম আইনের অন্যতম উৎস। ধর্মে শাতিম হত্যার কথা থাকলে তা গ্রহণ করা রাষ্ট্রের জন্য অযৌক্তিক কিছু না। https://bangla.bdlawpost.com/2024/07...of-law-in.html
https://wikioiki.com/%E0%A6%86%E0%A6...6%BF%E0%A6%B8/
তৃতীয়ত, রাষ্ট্র একটি সার্বভৌম সত্ত্বা। সে সার্বভৌম একারনেই যে, সে তার খেয়ালখুশি মতো আইন প্রণয়নের ক্ষমতা রাখে।
এর বিপরীতে কেউ কেউ মানবাধিকার কার্ড ফেলতে পারে। মনে রাখতে হবে, মানবাধিকার আইন মানুষের বানানো। নিজে একজন মানুষ হয়ে আরেকজনের বানানো আইন মানার চেয়ে নিজের বানানো আইন মানা অনেক ভাল। তাছাড়া কিছু লোক নিজেদের বানানো ফিরিঙ্গি আইন সার্বজনীন দাবি করলেই সেটা সার্বজনীন হয়ে যায় না। এমনকি কথিত মানবাধিকার আইনের প্রাথমিক সংস্করণের ব্যাখ্যাও রিদ্দা-র আইনের বিরোধী ছিল না। অর্থাৎ আইনের ব্যাখ্যা কে করছে, সেটাও একটা গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। https://www.bespacific.com/a-history...united-states/
ফলবাদ নিয়ে আলোচনায়, শাতিম কেন জাতীয় নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলার জন্য হুমকি তার 7টি কারণ উল্লেখ করা হয়েছে। সুতরাং জাতীয় নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা বজায় রাখতে রাষ্ট্র তার সার্বভৌম ক্ষমতার বলে শাতিমকে শাস্তির আওতায় আনতে পারে। কথিত মানবাধিকার আইনের ধার ধারার কোন কারণ নেই।
শাস্তির মাত্রা নির্ধারণ-
অপরাধের মাত্রা যত বেশি হয়, শাস্তি তত বেশি। https://en.m.wikipedia.org/wiki/Proportionality_(law)
কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যাক্যালেস্টার বেল বলেছেন, অপমানকারীকে পাল্টা অবজ্ঞার শিকার বানাতে হবে। তার ভাষায়, One way of protecting oneself from feeling insulted would be to muster a targeted counter-contempt towards one's insulters. Such a targeted counter-contempt would protect targets from feeling insulted, and it may help victims of racist and sexist insults maintain their sense of self-respect. https://ndpr.nd.edu/reviews/sticks-a...hy-of-insults/
আমাদের বক্তব্য হল, একজন ব্যক্তিকে চূড়ান্তভাবে অপমান তখনই করা সম্ভব, যখন তার সত্ত্বার অস্তিত্বের গুরুত্বকেও অবজ্ঞা করা হয়। আর এই চরম পর্যায়ে উপনীত হবার কারনও আছে। কারনটা হল, আমি যাকে আমার প্রাণের চেয়ে বেশি গুরুত্ব দেই, সেই সত্ত্বা অবজ্ঞার শিকার হয়েছে। অন্য কথায়, শাতিম আমার অস্তিত্বকেই অবজ্ঞা করেছে।
ওমর (রা.) বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনি আমার কাছে সবকিছু থেকে প্রিয়, তবে আমার জান ছাড়া। তখন নবীজী (সা.) বললেন, না ওমর, এতে হবে না। যে সত্তার হাতে আমার জান তাঁর কসম! (ততক্ষণ পর্যন্ত তুমি পূর্ণাঙ্গ মুমিন হতে পারবে না,) যতক্ষণ না আমি তোমার কাছে তোমার জানের চেয়েও প্রিয় না হই। পরক্ষণেই ওমর (রা.) বললেন, হাঁ এখন তা হয়েছে; আল্লাহর কসম! (এখন থেকে) আপনি আমার কাছে আমার জানের চেয়েও প্রিয়। তখন নবীজী (সা.) বললেন, হাঁ ওমর! এখন হয়েছে। (সহীহ বুখারী : ৬৬৩২)।
এই যুক্তি হিন্দুদের গোপ্রীতির অনুরূপ নয়। কারণ মানুষের উপর গরুকে প্রাধান্য দেয়ার মত গাজাখুরী দর্শন, প্রায় সকল প্রকার প্রস্তাবিত নীতিশাস্ত্রের বিরোধী। special pleading ছাড়া গরুকে অন্যান্য পশুর উপরেই প্রাধান্য দেয়া যায় না, সেখানে বিশেষ ব্যক্তির প্রতি altruism মানব ইতিহাসে ও সাহিত্যে অত্যন্ত স্বাভাবিক ঘটনা।
শাতিমের জন্য এই চরম শাস্তির আরও কারণ হল, সে পরোক্ষভাবে আল্লাহ, কুরআন, সকল পবিত্র বিষয় এবং অদৃশ্য জগতের মত প্রকৃত বাস্তবতাকে অস্বীকার করার মাধ্যমে তার নিজের অস্তিত্বকেও অর্থহীন প্রমাণ করেছে। আর ইহজীবন প্রকৃত বাস্তবতা নয়, near death experience এর অতি মজবুত প্রমাণ। মুফতি তাকী উসমানী হাফি: -এর 'দুনিয়ার ওপারে' এই বিষয়ে উল্লেখযোগ্য কর্ম। https://archive.org/download/TaqiUsm...ina.com%29.pdf
যাইহোক, এই যুক্তিতে সকল কাফের হত্যার উপযুক্ত হলেও আইনের বলে তাদের নিরাপত্তা দেয়ার কারণে হত্যা করা যায় না। শাতিম অন্যদিকে সামাজিক চুক্তি ভঙ্গ করে এবং তাকে হত্যাই তখন আইনের শাসন বলে বিবেচিত হয়।
আর প্রাণের চেয়ে মূল্যবান সত্বাকে (সত্তা) অবজ্ঞা করার বিপরীতে অপমানকারীর অস্তিত্বের অধিকারকে অবজ্ঞা করা নিছক দাবিই নয়; আমাদের ভাইয়েরা যে নিজেদের প্রাণের চেয়ে নবীজির সম্মানের ব্যাপারে বেশি উদ্বিগ্ন তা তো আদালত প্রাঙ্গণে তাদের হাসি থেকেই স্পষ্ট। সুতরাং আমাদের দাবি এবং কাজ পরস্পর বিরোধী নয়। বরং সেকুলারদের পক্ষ থেকে তাদের মেটাফিজিক্যাল অবস্থানের ব্যাপারে একনিষ্ঠতা প্রমাণের প্রয়োজন আছে। ভুলে গেলে চলবে না, মৃত্যুকে অবজ্ঞা করার নামই বীরত্ব।
“Valor is the contempt of death and pain.” — Tacitus
বস্তুত, শাতিমের সাজা মৃত্যুদণ্ড অপেক্ষা বেশি কিছু হওয়া উচিত। কারণ সে যাকে অবজ্ঞা করেছে সেটা আমার প্রাণের চেয়ে দামি। কিন্তু দুনিয়াতে যেহেতু মৃত্যুদণ্ড অপেক্ষা অতিরিক্ত শাস্তি দেয়া অসম্ভব, সেহেতু এখানেই সীমিত রাখতে হল।
এখন যেহেতু আমরা শাস্তির মাত্রা মৃত্যদণ্ড হওয়া এবং খলীফা কর্তৃক তা কার্যকর করার বৈধতা সম্পর্কে আন্দাজ করতে পেরেছি; খলীফার অনুপস্থিতিতে তা কার্যকর করা সম্পর্কে পর্যালোচনা করা যাক।
(চলবে ইনশাআল্লাহ্ )
Comment