আন নাসর মিডিয়া
কর্তৃক প্রকাশিত
নিরাপত্তা: কখন, কোথায়, কেন ও কিভাবে?
উস্তাদ উসামা মাহমুদ হাফিজাহুল্লাহ||
এর থেকে
পর্ব- ১০
==================================================
===============================
কর্তৃক প্রকাশিত
নিরাপত্তা: কখন, কোথায়, কেন ও কিভাবে?
উস্তাদ উসামা মাহমুদ হাফিজাহুল্লাহ||
এর থেকে
পর্ব- ১০
==================================================
===============================
২. কাউকে অবজ্ঞা করা ও নিরাপত্তা
দ্বিতীয়ত: আরেকটি বিষয় স্মরণ রাখতে হবে। সেটা হলো: নিরাপত্তা অবলম্বন করতে গিয়ে কোন সাথীকে যেন অবজ্ঞা করা না হয়। হাদিসে এসেছে-
بِحَسْبِ امْرِىءٍ مِنَ الشَّرِّ أنْ يَحْقِرَ أخَاهُ المُسْلِمَ. رواه مسلم
“কোন ব্যক্তির মন্দ হওয়ার জন্য তার কোন মুসলমান ভাইকে অবজ্ঞা করাই যথেষ্ট।”(সহীহ মুসলিম)
“কোন ব্যক্তির মন্দ হওয়ার জন্য তার কোন মুসলমান ভাইকে অবজ্ঞা করাই যথেষ্ট।”(সহীহ মুসলিম)
কাজেই নিরাপত্তা অবলম্বনের নামে কোন ভাইকে অবজ্ঞা করা যাবে না। যদি এমনটি করা হয়, তাহলে আমার আপনার; আমাদের সবার দ্বীন এবং জিহাদ সব বরবাদ হয়ে যাবে। তাই নিরাপত্তা অবলম্বনের ক্ষেত্রে আমাদেরকে এমনভাবে চলার চেষ্টা করতে হবে, যেন আমরা নিরাপত্তা বজায় রেখে চলতে পারি এবং যে কোন পন্থায় স্বীয় ভাইকেও আশ্বস্ত রাখতে পারি। এটা করতে হবে মুহাব্বতের সাথে, এটা দয়া ও অনুগ্রহের বিষয়। এমন যেন না হয় যে, নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গিয়ে কারো মন ভেঙ্গে গেলেও কোন সমস্যা নেই। এটা খুবই খারাপ কথা। আমাকে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। চাই তার মন যেমনি থাকুক না কেন? এটা ঠিক নয়। বরং আমাকে উভয়টি করতে হবে। নিরাপত্তাও নিশ্চিত করতে হবে। আবার অপর ভাইকেও নাখোশ করা যাবে না, বরং সন্তুষ্ট রাখতে হবে। যদি কোন কারণে সে আপনার প্রতি অসন্তুষ্ট হয়ে যায়, তাহলে আপনি তাকে বলতে হবে যে, আরে ভাই! ‘দয়া করে নাখোশ হবেন না।’ এই বিষয়টির প্রতি খুব খেয়াল রাখতে হবে।
৩. মিথ্যা বলা ও নিরাপত্তা
তৃতীয়ত: নিরাপত্তা অবলম্বনের ক্ষেত্রে সত্য মিথ্যার বিষয়টিও মাথায় রাখতে হবে। তা হলো: মিথ্যা বলা শরয়ী দৃষ্টিকোণ থেকে হারাম। কুরআনুল কারীমে আল্লাহ তা‘আলা যে সব গুনাহের জন্য লা’নত করেছেন, সে সবের মধ্যে মিথ্যাও অন্যতম একটি গুনাহ। আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেছেন-
أَنَّ لَعْنَتَ اللَّهِ عَلَيْهِ إِن كَانَ مِنَ الْكَاذِبِينَ ﴿النور: ٧﴾
“যদি সে মিথ্যাবাদী হয়, তবে তার উপর আল্লাহর লানত।”(সূরা নূর : ০৭)
হাদিসে এসেছে- রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞাসা করা হল, মু’মিন কি অমুক গুনাহ করতে পারে? মু’মিন কি অমুক গুনাহ করতে পারে? তিনি বললেন, হ্যাঁ, করতে পারে। প্রশ্ন করা হলো, মু’মিন কি মিথ্যা বলতে পারে? তিনি বললেন, না।
তাই আমাদের সদা-সর্বদা স্মরণ রাখতে হবে, মিথ্যা বলা হারাম। মিথ্যা বলা মু’মিনের কাজ নয়। ঈমান এবং মিথ্যা কখনো একত্রিত হতে পারেনা। তাই মিথ্যা বলা থেকে বেঁচে থাকতে হবে। কোন অবস্থায়ই মিথ্যা বলা যাবেনা। তবে কিছু অবস্থায় যে মিথ্যা বলা জায়েয, তা প্রয়োজনের খাতিরে। তাও আবার শরয়ী নিয়মনীতি অনুসারে এবং সুস্পষ্ট কারণে। আমার ধারণা মতে, যদি কোথাও নিরাপত্তাজনিত কারণে মিথ্যা বলা বৈধ হয়। তাও এ মূলনীতিগুলোর আলোকেই হবে। ইনশা আল্লাহ বিষয়টি সামনে আসবে। আমি পুনরায় বলছি- এ সংক্রান্ত যত কথা আছে, সেসব কথা ঐ সকল ভাইদের জন্য যারা নিরাপত্তা অবলম্বন করাকে জরুরী মনে করবে। যে ব্যক্তি নিরাপত্তা অবলম্বনের কারণে মনে ব্যাথা পায়, তার জন্য সবর ব্যতীত আর কোন প্রতিষেধক নেই। নেকধারণা ছাড়া আর কোন বিকল্প পথ নেই। আল্লাহর কাছে নেকীর প্রত্যাশা ব্যতীত আর কোন কথা নেই।
যদি বড় কোন সমস্যা দাঁড়িয়ে যায়, তাহলে সমাধানের পথ হলো: কারো কাছে অভিযোগ না করে; আমীরকে জানানো যে, আমার সাথী ভাই এটা করেছে। এ অভিযোগটিও যখন সে করবে, তখন তার ভাইয়ের সংশোধনের লক্ষ্যে করবে। এজন্য নয় যে, তার হৃদয় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, যার ফলে সে আমার সঙ্গে বাড়াবাড়ি করে ফেলেছে। আমরা আমাদের ভাইদের ক্ষেত্রে ক্ষমাশীল হবো। যেহেতু আমাদের হৃদয় অনেক প্রশস্ত। পরিতাপের বিষয় হলো: স্বীয় ভাইদের ব্যাপারে অন্যদের মন প্রশস্ত থাকে। কিন্তু আমাদের হৃদয় প্রশস্ত থাকে না। আমি পুনরায় সে সব ভাইদেরকে উদ্দেশ্য করে বলব- যারা নিরাপত্তা মেনে চললে মনে ব্যাথা পান, আপনারা আল্লাহ তা‘আলার জন্য সবর করুন। এ ঘটনাটির প্রতি একটু লক্ষ করুন! রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে আনসারী সাহাবাগন এসে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! মুহাজিরীনরা এটা পেয়েছে, আর আমরা এটা পেয়েছি। তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কী বলেছেন? তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদেরকে সবরের দীক্ষা দিয়েছেন। এমনকি এটাও বলেছেন যে, আগেও আমি তোমাদের সাথে ছিলাম। সুতরাং তোমরা হাউজে কাউসারে আমার অপেক্ষা করবে, সেখানে আমাকে পাবে।
তো মনোকষ্টে পতিত হওয়ার পরিপেক্ষিতে যে পরীক্ষা আসে, সে পরীক্ষা আসে আল্লাহর পক্ষ থেকে। তাই আমাদেরকে সবর করতে হবে। এখন বিষয় হলো: বিপদে পতিত এ ভাইটি কি করবে? স্মরণ রাখতে হবে যে, জিহাদের মধ্যে একটা মৌলিক ব্যাপার হলো: মিথ্যাকে সম্পূর্ণ হারাম মনে করা। এ নীতিটি ভালভাবে স্মরণ রাখবেন। অনেক পরিতাপের বিষয় যে, কোন কোন সাথী হাসি-তামাশার ছলে বলে, ‘যদি জিহাদ না থাকতো, তাহলে মিথ্যা বলা হারাম হয়ে যেত।’ যেন জিহাদের জন্য সব মিথ্যাই হালাল হয়ে গেছে। মাশাআল্লাহ! অনেকে নেকী অর্জনের জন্যও মিথ্যা বলে!
এজন্য প্রিয় উপস্থিতি! এ বিষয়টি স্মরণ রাখা উচিত যে, আমি যদি নিরাপত্তা অবলম্বনের নামে মিথ্যা বলি। আর আমার সম্মোধিত ব্যক্তিটি দেখে আমি মিথ্যা বলছি, তাহলে এতে সে ফিতনায় পতিত হবে এবং বলবে এখানে দেখছি সবাই মিথ্যাবাদী! আর যিনি আমাকে উপদেশ দিচ্ছেন, তিনি নিজেই তো দ্বীনের উপর আমল করছেন না। অনেক সময় আমাদের অনেক নতুন সাথী আসে, যারা নিরাপত্তা সম্পর্কিত আলিফ-বা-তা-ছা কিছুই পড়েনি। সে যখন স্পষ্ট দেখে, সাথীরা মিথ্যা বলছে, তখন সে ভাবে যে, সে একটা মিথ্যার দলে এসে ভিড়েছে। ওখানে তো আমার মা-বাবা সবাই বলেন, মিথ্যা বলো না। আর এখানে আমীরগণসহ সবাই মিথ্যা বলে। এজন্য কখনই মিথ্যা বলা নিরাপত্তা নয়। তাও আবার এমন মিথ্যা বলা হচ্ছে, সে ব্যক্তি স্বচক্ষে দেখছে যে মিথ্যা বলা হচ্ছে। এ ব্যাপারে প্রথম কথা হলো: মিথ্যা বলা হারাম। মন এবং দেমাগকে কোনভাবেই মিথ্যা বলতে দেয়া যাবে না। তাহলে আমরা যে যুদ্ধ-জিহাদে আছি, প্রয়োজন হলে আমরা কি করব? এ ক্ষেত্রে একটি কাজ করা যায়। যা সঠিক হওয়ার ব্যাপারে কোন আলিমেরই দ্বিমত নেই। তা হলো: তাওরিয়া অবলম্বন করা। তাওরিয়া ইসলামে একটি বৈধ বিষয়। তাওরিয়া হলো- (যেমন) আমি আপনার সামনে একটা শব্দ বললাম। আমার মন ও দেমাগে সে শব্দ দ্বারা এক অর্থ উদ্দেশ্য। অথচ আপনার মনে শব্দটির আরেক অর্থ ঘুরপাক খায়। যেমন আমি বলছি, আমি শবারগানের দিকে যাচ্ছি। আমি দেখেছি, এক ভাই অন্য এক ভাইকে বলছে যে, আমি অমুক শহরে যাচ্ছি। শহরের নামই নিয়ে নিচ্ছে যে, আমি অমুক শহরে যাচ্ছি। তার জন্য ঐ শহরের নাম নেওয়াই ঠিক হচ্ছে না। আপনি যদি এর সাথে একটি ‘কি তরফ’ অর্থাৎ দিকে শব্দ যুক্ত করেও বলেন যে, আমি অমুক শহরের দিকে যাচ্ছি। তাহলে আপনার কথা সহীহ হয়ে হয়ে যাবে। আপনি আরো লক্ষ্য করুন! আমি বললাম, আমি কান্দাহার যাব, আমি এদিকে যাব, আমি অমুক জায়গায় যাব, এভাবে বলাই ভুল। আমি কান্দাহার যাব কথাটাই ভুল। কাবুল যাচ্ছি এ কথাও ভুল।পেশাওয়ার যাচ্ছি এ কথাও ভুল। এভাবে বলবেন না, এভাবে বলাটা মিথ্যার ভিতরে পড়ে। এভাবে বলুন যে, আমি করাচির দিকে যাচ্ছি। আমি লাহোরের দিকে যাচ্ছি। লাহোরের দিকে যাওয়া কালীন যদি আমি কামরার দিকেও যাই, তবুও লাহোরের দিকেই যাচ্ছি। তাই কথাটিকে ভুল বলার সুযোগ নেই। যদি নিরাপত্তার স্বার্থে এক জায়গার নাম নিয়ে সম্ভাব্য দু’অর্থের মধ্য থেকে যে কোন একটা অর্থ উদ্দেশ্য নেওয়া হয় যাতে কেউ বুঝতে না পারে, আমি কোথায় যাচ্ছি। তাহলে এটা নিরাপত্তা অর্জনের জন্য হওয়ায় খুশির বিষয়। কিন্তু মিথ্যা থেকে বাঁচার স্বার্থে ‘দিকে’ শব্দটি লাগাত হবে। তাওরিয়া কি? এটাই তাওরিয়া। দেখুন! রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন হিজরত করছিলেন, তখন হযরত আবু বকর ছিদ্দিক রাযি. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে ছিলেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং হযরত আবু বকর ছিদ্দীক রাযি. যখন রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন কেউ একজন হযরত আবু বকর রাযি.কে জিজ্ঞাসা করল, উনি কে? হযরত আবু বকর ছিদ্দিক রাযি. বললেন, উনি আমার রাহবার। যাকে বলা হলো তিনি কি বুঝলেন? তিনি বুঝলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে রাস্তা বলে দিচ্ছেন। হযরত আবু বকর ছিদ্দিক রাযি.এর মনে ছিল, তিনি আমাকে জান্নাতের রাস্তা দেখান, আমাকে দ্বীনের পথ দেখান, দ্বীন শেখান। এটা হলো তাওরিয়া। আলহামদুলিল্লাহ! সে পরিভাষা এখন আমাদেরও পরিভাষা। যখন আমাদের কোন স্থানীয় সাথী আমাদেরকে কোন জায়গায় নিয়ে যায়, তখন আমরা বলি, উনি আমার রাহবার। উনার রাস্তা সম্পর্কে ভালো জানা-শুনা আছে। দেখুন! একজনের মনে এক অর্থ উদ্দেশ্য। কিন্তু অন্যজনের মনে আরেক অর্থ উদ্দেশ্য। আরও দেখুন! দ্বিতীয় উদাহরণ হলো: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন সম্ভবত: বদর যুদ্ধে শক্রদের নিকটবর্তী জায়গায় সৈন্যসহ ছাউনি ফেললেন। তখন এক লোক এসে জিজ্ঞাসা করল, আপনারা কোথা থেকে এসেছেন? যেভাবে আমাদেরকে জিজ্ঞাসা করা হয়, আপনারা কোথা থেকে এসেছেন? তো আমরা সোজা আমাদের এলাকা বা শহরের নাম বলে দেই। অথচ এলাকা বা শহরের নাম বলা হলে নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে, হতে পারে। (রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সীরাতে আজ আমরা যে যে পর্যায়গুলো অতিক্রম করছি, সবগুলো পর্যায়েরই দিক-নির্দেশনা বিদ্যমান রয়েছে। আলহামদুলিল্লাহ) তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন- نحن من الماء “আমরা ‘মা’ থেকে এসেছি।” ‘মা’ ছিল শামের একটা দূরবর্তী এলাকার নাম। লোকটি বলল, আচ্ছা! আপনারা এত দূর থেকে এসেছেন। মূলত: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উদ্দেশ্য নিয়েছেন, আমরা পানি থেকে সৃষ্টি হয়েছি। আল্লাহ তা‘আলা কুরআনুল কারীমে ইরশাদ করেছেন-
خُلِقَ مِن مَّاءٍ دَافِقٍ ﴿الطارق: ٦﴾
“সে সৃজিত হয়েছে সবেগে স্খলিত পানি থেকে।”(সূরা ত্বারিক : ৬)
এটাকে তাওরিয়া বলে। তাওরিয়া সকল ওলামায়ে কেরামের ঐক্যমতে জায়েয। তাই আমাদের তাওরিয়া সম্পর্কে জ্ঞান থাকা উচিত। সব ক্ষেত্রে প্রয়োজন হলে তাওরিয়া অবলম্বন করা উচিত, কারণ তাওরিয়া জায়েয। তাওরিয়ার জন্য ভিন্ন কোন মাসআলার দরকার নেই। মিথ্যা সম্পর্কে নীতি হলো- সুস্পষ্ট মিথ্যা মূলগতভাবেই হারাম। কিন্তু কখনো তা বৈধ। আবার কখনো ওয়াজিবও হতে পারে। তবে এ ক্ষেত্রে কিছু নিয়ম-নীতি আছে? নিয়ম-নীতিগুলো রদ্দুল মুহতার নামক বিখ্যাত ফিকহের কিতাবে বিন্যস্তভাবে লেখা আছে। রদ্দুল মুহতারের লেখক বলেন-
واعلم أن الكذب قد يباح وقديجب.
“জেনে রেখ! মিথ্যা বলা কখনো জায়েয, আবার কখনো ওয়াজিব।”
তারপর তিনি এর শর্তগুলো উল্লেখ করছেন-
أن كل مقصود محمود يمكن التوصل إليها بالكذب والصدق جميعا فالكذب فيه حرام.
“প্রত্যেক এমন লক্ষ্য-উদ্দেশ্য, যা সত্য-মিথ্যা উভয়টি দ্বারাই হাসিল হয়। এমতাবস্থায় মিথ্যা বলা হারাম।”
এরপর বলেন-
وإن امكن التوصل اليه بالكذب وحده فمباح إن ابيح تحسين ذالك المقصود.
“যদি শুধুমাত্র মিথ্যা দ্বারাই উদ্দেশ্য অর্জিত হয়, তাহলে এ মিথ্যা বলা বৈধ।
তবে এ শর্তে যে, সে যা অর্জন করছে, তা বৈধ হতে হবে।”
অর্থাৎ একটি বস্তু যা লাভ করা বৈধ। এখন যদি তা অর্জনের জন্য আমি সত্য বলি, তাহলে তা থেকে বঞ্ছিত হব। এমতাবস্থায় যেহেতু সে জিনিসটা অর্জন করা বৈধ। তাই তা অর্জন করার জন্য মিথ্যা বলাও বৈধ।
তারপর আরো বলেন-
وواجب إن وجب تحصيله
“মিথ্যা বলা ওয়াজিব, যদি সে বস্তুটি হাছিল করা ওয়াজিব হয়।”
অর্থাৎ যা অর্জন করা ওয়াজিব। তা যদি কোনভাবেই মিথ্যা বলা ব্যতিত অর্জন করা না যায়, তাহলে সে ক্ষেত্রে মিথ্যা বলে হলেও তা হাছিল করা ওয়াজিব। তিনি উদাহরণ পেশ করে বলেন- জালিম থেকে স্বীয় মুসলমান ভাইকে হেফাজত করা ওয়াজিব। কোন জালিম যদি কোন মুসলমান ভাইয়ের উপর জুলুম করে। যার ফলে নির্যাতিত মুসলিম ভাইটি দৌঁড়ে এসে যদি কোন মুসলমানের কামরায় ঢুকে পড়ে, তখন আপনি যদি বলেন যে, আমাকে তো সত্য বলতে হবে, তা ঠিক হবে না। কারণ এখানে মুসলিম ভাইটিকে হেফাজত করা ফরজ। তাই আপনার জন্য মিথ্যা বলাও এখানে ফরজ। এখানে যদি আপনি সত্য বলেন, তাহলে গুনাহগার হবেন।
এ আলোচনা একটি মূলনীতি। এই মূলনীতির সারকথা হলো: সর্বাবস্থায় আমরা সবাই মিথ্যা থেকে বেঁচে থাকব। চেষ্টা করব প্রয়োজন হলে যেন তাওরিয়া করতে পারি। তারপরও যদি কোথাও মিথ্যা বলতে বাধ্য হয়ে পড়ি, তাহলে মিথ্যা সংক্রান্ত মূলনীতি তো এখানে আলোচনা করা হয়েছে, তা অনুসরণ করব। (ইনশা আল্লাহ)
আরও পড়ুন
Comment